প্রিয়.কমের একটি খবরে দেখলাম এ.টি. এম শামসুজ্জামানের একুশে পদক ২০১৫ পাওয়া নিয়ে নিন্দা জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের পক্ষে বিবৃতিদাতাদের মধ্যে যার নাম প্রথমে উল্লেখিত হয়েছে সেই মেজর(অব) হাফিজ বিএনপি-জামাতের গত টার্মে পানিসম্পদ মন্ত্রী থাকাকালে যুদ্ধাপরাধী দেলওয়ার হোসেন সাইদীর এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন -- প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে টানানো ব্যানারে এই তথ্যটি পড়ে সেসময় অনেক দু:খ করেছিলাম। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের বাকি সদস্যরা্ও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য নানা ধরনের চেষ্টা তদবির করে যাচ্ছেন, নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে যাচ্ছেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল তাদের 'মুক্তিযোদ্ধা' পরিচয়কে অনেক আগেই ভুলুণ্ঠিত করে একেবারে ধূলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন -- তাই তাদের কথাকে গুরুত্ব দেয়ার কোনো কারণ নেই।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ.টি. এম শামসুজ্জামান আসলেই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকা রেখেছেন কিনা? জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল তাদের রেফারেন্স মেনেছেন ড. আহমদ শরীফ, কর্নেল নূরুজ্জামান এবং শাহরিয়ার কবির সম্পাদিত ‘৭১-এর ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ বইকে । তাদের ভাষ্যমতে -- ‘৭১-এর ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ বই-এর ৭ নম্বর অধ্যায়ে লেখা হয়েছে সে সময়ে টেলিভিশন ও রেডিওতে অনুষ্ঠান করে কারা কারা পাকিস্তান সরকারকে সহযোগিতা করেছিলেন। এটিএম শামসুজ্জামান ও নাজমুল হুদা রেডিওতে মামা-ভাগনা নামক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের পক্ষে এবং মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কবিতা পাঠ করতেন। ওই বইয়ে তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
আমার হাতের কাছে বইটি না থাকায় ফেসবুকে বন্ধুদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম। দুই বন্ধু নিশ্চিত করলো যে ‘৭১-এর ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ বইয়ের ২য় সংস্করণে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই -- কিন্তু ৪র্থ সংস্করণে এ.টি.এম শামসুজ্জামানের নাম উল্লেখিত আছে ! পরিচিতদের মধ্যে খান আতা আর রওশন জামিলের নামও দেখতে পেলাম।
এ.টি. এম শামসুজ্জামানের অভিনয় আমার ভালো লাগে, তাকে আমার একজন শক্তিমান অভিনেতা বলেই মনে হয়। বিশেষ করে 'গেরিলা' সিনেমাতে তার অভিনয় আমার দুর্দান্ত লেগেছে। কিন্তু তিনি যদি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কোনো ভূমিকা রেখে থাকেন তাহলে তাকে একুশে পদক দেয়া আমি সমীচীন মনে করি না। বাংলাদেশ এমন অন্ধকার সময়ও পাড়ি দিয়ে এসেছে যখন শর্ষিনার পীরের মত একজন স্বাধীনতাবিরোধীও পেয়েছে স্বাধীনতা পদক! সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন আমরা না করি।
ফেসবুক লিংক: url=https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10152635139475814&set=p.10152635...
মন্তব্য
বইয়ের পাতার স্ক্যান কপি দিয়ে দেন
এটিএম শামসুজ্জামান পরে এ ব্যাপারে কোনও বিবৃতি দিয়েছেন কি? ঐসময় টিভি/বেতারে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই পরে "অস্ত্রের মুখে বাধ্য" হওয়ার দাবী করেছেন।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হিমু ভাই নিচে বইয়ের পাতার স্ক্যান কপি দিয়েছেন এবং ধ্রুব আলম বইয়ের পিডিএফের লিংক দিয়েছেন -- তাদেরকে ধন্যবাদ । যারা অস্ত্রের মুখে বাধ্য হওয়ার দাবি করেছেন তাদের কেউ কেউ কি আবার খান আতার মত সুবিধাজনক সময়ে ডিগবাজী দিয়েছেন? যে কারণেই হোক আমি মনে করি মুক্তিযুদ্ধের সময় কেউ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোনো ভূমিকা রেখে থাকলে তাকে স্বাধীনতা পদক আর একুশে পদক দেয়া ঠিক না।
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
তালিকায় শাহনাজ বেগম (পরবর্তীতে সম্ভবত শাহনাজ রহমতুল্লাহ), শবনম মুস্তারী, আবেদা সুলতানা, সৈয়দ আবদুল হাদী আর খুরশীদ আলমও আছেন দেখছি।
খান আতাউর রহমানও এ তালিকায় আছেন। ২০০৩ সালে আলবদর সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল তখন ঘুমাচ্ছিলো।
এই বইয়ের তথ্যগুলি ঠিক কতটুকু নির্ভরযোগ্য? অনেকে যে ইচ্ছা না থাকা সত্বেও, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের প্রতি নৈতিক / মানসিক সমর্থন থাকা সত্ত্বেও, নিজের বা পরিবারের প্রাণভয়েই বাধ্য হয়ে অনুষ্ঠান করেছেন তা হয়তো মিথ্যা নয়? কিম্বা এমনি অনুষ্ঠানই করেছেন হয়তো, মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী প্রচারণা চালাননি? এখানে উল্লেখিত খান আতা আর রওশন জামিল পাকিস্তান আমলে পাকিস্তানের বুকে বসে জহির রায়হানের পরিচালনায় সেই অসাধারণ পাকিস্তান-বিরোধী ছবি "জীবন থেকে নেয়া"-তে অভিনয় করেছেন। এটা কি কম সাহসের পরিচয় ছিল? এর থেকে কি তাদের আসল মনোভাবের কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায় না? আপনার কি মনে হয়?
****************************************
আমার মনে হয় আপনি যে প্রশ্নটি করতে চাইছেন, সেটা হচ্ছে এই তালিকা কতোটুকু নির্ভরযোগ্য। বইতে শুধু একটা দাপ্তরিক নথি তুলে ধরা হয়েছে। সেই নথি যারা প্রস্তুত করেছেন, তারা একাত্তর সালে এই নামের মালিকদের আচরণ পর্যালোচনা করেই হয়তো তালিকা বানিয়েছেন। তালিকা প্রণয়ন কতোটুকু সঠিক হয়েছে, তা জানি না।
খান আতা "জীবন থেকে নেয়া" সিনেমায় অভিনয় করেছেন, এটা যেমন সত্য, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা তাকে পিটিয়ে নর্দমায় ফেলে দিয়েছিলো, সেটাও সত্য। তিনি আমার পরিচিত এক ভদ্রলোককে ধরে শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমা চাইতে গিয়েছিলেন। শেখ সাহেব নাকি তখন তাকে বলেছিলেন, বাঙালি হয়ে যা। শেখ সাহেবকে গুষ্টিসুদ্ধু খুন করার পর এই খান আতা ছুটে গিয়ে খুনীদের তোয়াজ করে গান লিখে সুর করে গেয়েটেয়ে একেবারে একাকার করে ফেলেছিলেন। তার আসল মনোভাবের ইঙ্গিত যে কোত্থেকে মিলবে, বোঝা ভার।
আপনি হয়তো আরো লক্ষ করবেন, তখন বেতার ও টিভিতে অনেক কলাকুশলী ছিলেন, সবার নাম এই তালিকায় আসেনি। তালিকার এনাদের ভূমিকা হয়তো একটু অগ্রণী ছিলো। একাত্তর সালে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদ কার না ছিলো, বলুন? কিন্তু কিছু লোকের নিজের বা স্বজনের জীবনরক্ষার তাগিদের পাশাপাশি পাকিস্তানরক্ষার তাগিদও কম ছিলো না।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল যেহেতু এই তালিকায় থাকা একজনের একুশে পদক প্রাপ্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছে, তাদের উচিত এই তালিকায় থাকা সবার প্রতি অভিন্ন অবস্থান পোষণ করা। সেটা যে তারা করছেন না, এটাই আমার বক্তব্য।
এটিএম শামসুজ্জামানের উচিত এই তালিকায় তার ভুক্তির ব্যাপারে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেওয়া। তিনি যদি পাকিদের পক্ষে কোনো অত্যুৎসাহী আচরণ করে থাকেন, আর সে কথা গোপন রেখে পার পেয়ে যেতে চান, তাহলে তাকে একুশে পদক দেওয়া উচিত নয় বলে আমি মনে করি। আর যারা এটিএমের পুরস্কার প্রাপ্তির বিরোধিতা করছে, তাদের উচিত সমান আওয়াজে খান আতার একুশে পদক প্রত্যাহারের দাবি তোলা।
খান আতার অন্য ব্যাপারগুলি জানতাম না। "জীবন থেকে নেয়ার" জন্যই তার প্রতি একটা সফ্ট স্পট ছিল। আপনার কথাই হয়তো ঠিক!
****************************************
আমারও একই অবস্থা। কম জানা একটা অভিশাপ
এজন্যি আরো বেশি বেশি করে ব্লগ পড়তে হবে। ব্লগ ছাড়া এইসব বস্তু নিয়ে কেউ চেচামেচি করে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
একটা অনুরোধ। প্রিয় ডট কমের কোন লিংক না দিয়ে অন্যকোথাও হতে লিংক দেবেন। প্রিয় ডট কম চুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এদের লিংক সচলের গায়ে দেখতে ভালো লাগে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
। প্রিয়.কম নিয়ে আমারও সমস্যা আছে। কিন্তু আমি যেহেতু ফেসবুকের সুবাদে প্রিয়.কমেই খবরটা প্রথম দেখেছি তাই লেখায় প্রিয়.কমের সূত্র উল্লেখ করাটাকেই সঠিক কাজ বলে মনে হয়েছে।
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
হুমমম... ক্রসচেক করে দেখলাম।
যেই অংশে (পৃষ্ঠা-১৫২) ইনাদের নাম রয়েছে সে অংশের পূর্বে কমিটির সুপারিশ হলঃ
লঘুপাপ বোধ করি। তবে পাপ যে তাতে সন্দেহ নাই।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এই সংবাদ তো জানতাম না। আমিতো তার অভিনয় আর ভাষার জন্য আমার অভাজনের মহাভারত বইয়ের ভূমিকার এক জায়গায় এটিএমের নামও উল্লেখ করেছি
কি আর করা -- সব কিছু তো আর সব সময় জানা সম্ভব হয় না। দেশে গেলে আপনার অভাজনের মহাভারত বইটা কেনার চেষ্টা করব।
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
অফটপিক হয়ে যাবে তাও হাসি পেল এটা পড়ে:
শাহরিয়ার কবির, আহমদ শরীফ -এঁদের উপর একটা বিশেষ গ্রুপের অ্যালার্জি আছে শুনেছিলাম।
হুমম, সেটাই। কিন্তু নিজেদের দরকারের সময় তাঁদেরকে রেফারেন্স মানতে মনে হয় ওই বিশেষ গ্রুপের আপত্তি নাই
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
এটিএম শামসুজ্জামানের খবরটা পড়েছি গতকাল।
হিমুভাই মারফৎ মাত্রই যা জানলাম তা সত্যিই মর্মান্তিক লাগলো।
ইশশ খান আতাকে কোথায় উঠিয়ে রেখেছিলাম!
বাকি আরো কিছু নামও তো দেখা যাচ্ছে। এ সম্পর্কে তারা কি তাদের অবস্হান পরিস্কার করেছেন???
হিমুভাইয়ের সাথে পুরোপুরি সহমত, আওয়াজ যখন তোলাই হচ্ছে সব পাপীষ্ঠদেরই এ আওতায় আনা হোক।
তালিকা দেখেই কাউকে রাজাকার বলে দেওয়া যায় না। ৭১ এ কাউকে অস্ত্রের মুখে, কাউকে পারিবার নিশ্চন্থ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নানান কায়দায় পাকিস্থানের পক্ষে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। যেমন ড সাজ্জাদ হোসেন ৭১ এ ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের সই করা একটি বার্তা পাকিস্থানের পক্ষে প্রচার করেছিলো। সেই তালিকায় নাম ছিলো মুনীর চৌধুরীর মতো মানুষের ও! কিন্তু একটু ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যায় সেখানে গাপলা আছে। মুনীর চৌধুরীর নামের পাশে তার সিগনেচার নেই, উপরের সিগনেচার তার পাশে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, সাধারণ দৃষ্টিতে এটি চোখে পড়বে না হয়তো। এছাড়া অনেককে অস্ত্রের মুখেও এই বিবৃতিতে নাম লেখাতে হয়েছে। (বইটি সাথে নেই বলে সেই তালিকাটি দিতে পারছি না, পরে যুক্ত করে দিবো)
আবার অনেকেই স্বপ্রণোদিত ভাবে যুক্ত হয়েছে পাকিস্থানের পক্ষে। খান আতা-সাজ্জাদ রা তার উৎকৃষ্ট উদাহারণ। আশা করি এটিএম শামসুজ্জামান নিজের বিষয়টা পরিষ্কার করবেন।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
বইটির ১৪৪ পৃষ্ঠায় (৪র্থ সংস্করণ) উল্লিখিত ঐ ৫৫ জনের লিস্টে মুনীর চৌধুরী, কবির চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমিন, আবদুল আলীম, খান আতা, সাবিনা ইয়াসমিন, সরদার ফজলুল করিম অনেকের নামই রয়েছে। এর পরবর্তী অংশে ১৫৫ পৃষ্ঠায় এটিও বলা হয়েছেঃ
পরবর্তী অংশে কারা এই বাধ্য হওয়ার দাবি করেছেন সেই বর্ননাও রয়েছে।
"একাত্তরের ঘাতক দালালেরা কে কোথায়" বইটিকে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা হাফিজউদ্দীন বোধহয় "অধিকার" এর ৬১ জনের তালিকার মতন তালিকা বলে ভেবেছেন। তার ভুল ভাংবে এমন আশা করিনা। আমরা যেন না জেনে কোনও বিভ্রান্তি না ছড়াই সেটির প্রত্যাশাও রইল।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ড. সাজ্জাদের সহযোগিতায় করা একাত্তরে পাকিস্থানের পক্ষে তৈরীকৃত বিবৃতি দেওয়া মানুষদের তালিকার কিছু অংশ একটু দেখে নেই।
১।[img][/img]
২।[img][/img]
এখন এই বিবৃতিকে একমাত্র আসমানী কিতাব ধরিয়া যদি রাজাকার বলা হয় তাহলে মুনীর চৌধুরীও রাজাকার হয়ে যায়! এই বিবৃতিতে যেমন জোর করে অনেকের সাক্ষর আদায় করে নেওয়া হয়েছে তেমনি অনেকেই স্বেচ্ছায় পাকিস্থানের পক্ষ নিয়েছে। তবে কে সত্যিকার পাকিস্থানের পক্ষে ছিলো আর কে ছিলো না সেটি বিচার করতে এমন বিবৃতি কখনো একমাত্র মানদন্ড হতে পারে না।
এটি ব্যাতিত ও এই কাজটি যে অসৎ উপায়ে করা হয়েছে তার প্রমাণ প্রথম ছবিতেই রয়েছে। প্রথম ছবিতে কবীর চৌধুরীর নামের পাশে কোন সই নেই। সেখানে নাম আছে আটজনের অথচ সই আছে সাতজনের। এতেই প্রমাণিত হয় এই কাজটি কতটা সততার সহিত করা হয়েছে। সুতারাং যাহারা এমন একটা কাগজের বিবৃতিকে একমাত্র সত্য মানিয়া সহজে কাউকে রাজাকার বলে তাহাদের সাথে হেফাজতে জামাত তথা ছাগুর সাথে কোন পার্থক্য নেই।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
ধন্যবাদ!
যে দলের জন্মই রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে, যে দল চিহ্নিত রাজাকারদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছে, যে দল এখনও রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে জোট করে সেই জোটের নেতৃত্বে আইএস, আলকায়দার সমতুল্য নিষ্ঠুরতায় নিজের দেশের মানুষকে লাগাতারভাবে পোড়াচ্ছে- সেই দলের বিবৃতি, তাও আবার কোন গুরুতর স্বাধীনতা বিরোধিতার জন্য নয়, পেটের দায়ে করা চাকরীর বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে কৃত কর্মের উছিলা তুলে দেয়া একটি বিবৃতির রেফারেন্স দিয়ে দেয়া পোস্টিটিকে মেনে নিতেই আমার খটকা লাগছে। লেখাটি ঐ বিবৃতির রেফারেন্সে না দিয়ে এমনিতেই একটি জেনেরিক আলোচনাকারে দিলে আরও ভাল লাগতো।
এটিএম সাহেব যদি এমন কোন কাজ করে থাকেন তবে তাকে এ পুরস্কার দেয়ার পক্ষে আমি নই। উনার ঐ সময়ের কাজ সম্বন্ধে আমার জানা নেই। তবে উনাকে যতটুকু দেখেছি, তাদের স্বাধীনতার পক্ষে যায় এমন কিছু করতে দেখিনি।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধা দল যতদিন নিজ দল থেকে চিহ্নিত রাজাকারদের না সরাবেন, যত দিন তারা জামাতের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সম্পর্ক ত্যাগ না করবে, যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তানের সাথে লিয়াঁজো করে রাজনীতি করা বন্ধ না করবে ততদিন তাদের এ ধরণের বিবৃতি দেয়ার কোন অধিকার নেই। তারা যে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধা এবং স্বাধীনতার প্রতি তাদের অঙ্গীকারের জন্য এ বিবৃতি দেয়নি, দিয়েছে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য, তা বাংলার একজন দুধের বাচ্চাও জানে। কাজেই তাদের বিবৃতিকে গুরুত্ব না দিয়ে দুর্জনের পাতা ফাঁদ হিসেবে বিবেচনা করে আামাদের উচিত তাকে বর্জন ও বিরোধিতা করা।
- পামাআলে
এই নীলিমা ইব্রাহিমের রিপোর্টে কিন্তু তাদের ছয় মাস পরে কাজে যোগদানের পুনর্বিবেচনার কথার সুপারিশের বলা হয়েছে , তখন ভীতি আর ত্রাসের রাজত্ব ছিল , হয়ত কিছু বিরত থাকতে পারত তারা । তখন সব অভিনয় শিল্পী , বেতার শিল্পী , ৮০% বাধ্য ছিল ধরে নেওয়া যায় । যে তালিকা দিয়েছে সবাই তো আছে , যেমন - ফাতেহ লোহানি , মুহাম্মদ খুরশিদ আলম , খান আতাউর রহমান , শবনম মুস্তারি ,আবেদা সুলতানা ,এস এ হাদি , আলেয়া ফেরদোসি ।যেমন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ আবু হেনা মোস্তাফা কামাল এই রিপোর্টে বলেন " ৭১ এর মে মাসে আমাকে রাবির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে এবং ২৪ ঘন্টা ধরে একটানা জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পরে তারা আমকে ছেড়ে দেয় । সেনাবাহিনীর একজন লিয়াজো অফিসার বাসায় এসে আমাকে খোলাখুলি ভাষায় নির্দেশ দেয় যে জীবিত থাকতে হলে রেডিওতে অনুষ্টান করতে হবে । রাবি ক্যাম্পাসই তখন প্রকৃতপক্ষে সেনা ছাউনি ছিল । ঐ নির্দেশ অগ্রাহ্য করে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয় নি ।বর্ণনাতীত আত্মগ্লানির ভিতর দিয়ে ঐ সব অনুষ্টান আমাকে করতে হয়েছে " । রিপোর্টে কিন্তু এটাও বলেছে " এই পর্যবেক্ষণ কমিটি মূল নীতি হিসেবে শিল্পিদের ভয়াভহ পরিবেশ , দৈনন্দিন জীবনের দারিদ্র ও সংযাত এবং বিশেষ করে শিল্পীদের জীবিকার কথা স্মরণ রেখেছে " । রিপোর্টে শওকত আকবর নামে একজন কে বেতার এবং টিভি থেকে নিষিদ্ধের আবেদন জানানো হয় ।তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ লুঘু দন্ড বিধায় তাদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল বলে আমার মনে হয় । আর এত গুলি বছর পরে সে বিরদরপে অভিনয় করে গেল কেউ তার পূর্ব ইতিহাস খুজে দেখল না , কেউ গালমন্দ করল না , কেউ নিষিদ্ধ দাবি করল না কেন ? কমিটি তে সাংবাদিক এ বি এম মুসা ছিল কয় সে তো মারা যাওয়ার আগে তার ব্যাপারে কিছুই তো বলে যায় নি , কেন ? সে অভিযুক্ত হলে তার মতামত নেওয়া যায় এই ব্যাপারে , কিন্তু পুনরায় কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি মানে তৎকালীন সরকার তাকে সুযোগ দিয়েছে । আহমদ শরিফ , শাহারিয়ার কবির তারাও তো বলতে পারত , বইটা বের হয় ১৯৮৭ সালে ফেব্রুয়ারিতে এতগুলি বছর গেছে , রিপোর্টটা জমা দেয় ১৩/৫/১৯৭২ সালে , এতদিন পরে সবাই খুঁজতে গেছে কেন ?
অনেকেই বইটি খুঁজছেন। তাই [url=http://www.mediafire.com/view/799vi8vu8q98r2l/17._একাত্তরের_ঘাতক_ও_দালালেরা_কে_কোথায়.pdf]লিঙ্ক[/url] দিলাম।
১৯৭২ সালের ৭ই মার্চ দৈনিক বাংলার সম্পাদক বরাবর লেখা এই চিঠি দুটিতে অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ও মকবুলা মঞ্জুর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যেসব শিল্পী পাকিস্তানী বাহিনীকে সহায়তা করেছিল তাদের কঠোর শাস্তির দাবী জানান।
দালাল কণ্ঠশিল্পী সম্পর্কে – / ক্ষমা প্রদর্শন?
নতুন মন্তব্য করুন