মোটকুদের দেশে - ২ : নাম বিড়ম্বনা

সাফি এর ছবি
লিখেছেন সাফি (তারিখ: শনি, ০৭/১১/২০০৯ - ৫:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যারা এখনও ব্যপারটা জানেন না, তাদের জন্য মোটকুদের দেশে -১ পড়ার অনুরোধ থাকল। আর বাকিরাতো জেনেই গেছেন যে আমি তল্পি তল্পা, ঘটি, বদনা, রাধুনির মসলা, আমের আচার, বঙ্গর কাপড় চোপড় আর আমার সাধের ভুড়িখানা নিয়ে বউ এর পিছুপিছু মোটুদেশে চলে এসেছি। বাংলাদেশ থেকে যেই অধ্যাপকের সাথে যোগাযোগ করে এসেছিলাম, চলে আসার দুদিন পরে ভাবলাম বসরে সালাম দিয়ে আসি। এবারই প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাত, এর আগে যাবতীয় যোগাযোগ হয়েছে তড়িৎডাকে। সুতরাং যেয়ে নিজের পরিচয় দিতেই সে চিনে ফেলল, তবে আমার আনুষ্ঠানিক নামের প্রথম নামটা (দেও্য়ান) দিয়ে। আমার বাপ-মা নাম রাখার সময়তো এত হিসেব করে ফার্স্ট নেম, মেইডেন নেম আর ফ্যামিলি নেম রাখে নাই, তাই আমার প্রথম নামটা আমার পারিবারিক নাম, মাঝের নামটা মোহাম্মদ আর শেষ নামটা নিজের নাম। মোটুদের হিসেবে পুরাই উল্টা। পরিচয়ের পরপরই সে তো আমার পারিবারিক নাম দিয়েই আমাকে তার বাকি ছাত্রদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, অফিসিয়ালি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবন্ধন করতে যেয়ে দেখি ই-মেইল, আইডি সবই পারিবারিক নাম দিয়েই। মাঝখান থেকে ভার্সিটিতে পরিচিত হয়ে গেলাম দেওয়ান নামে। খুবই অস্বস্তিকর ব্যপার যাকে বলে।

ধীরে ধীরে এখানকার বাকী বাংলাদেশী ছাত্রদের সাথে পরিচিত হলাম, এবং যেই নামে আমি সর্বাধিক পরিচিত, আমার ডাক নাম (সাফি), সবাইকে সেই পরিচয়ই দিলাম। সুতরাং বাঙ্গালী মহলে সাফি নামই বহাল থাকল। এরকমই চলছিল, হঠাৎ একদিন, এক ভাইয়া ফোন করে জানাল স্থানীয় মসজিদে বিয়াপক খানাপিনার ইন্তেজাম আছে, সুতরাং যেন প্রস্তুত হয়ে থাকি, উনি এসে নিয়ে যাবেন। যাবার পরেই সবার সাথে আলাপ হতে লাগলো, বেশীর ভাগই মধ্যপ্রাচ্যের থেকে আসা। পরিচিত হতে হলে, নাম বলতে হয়। কিন্তু এবার আমি বুদ্ধিমান হয়ে গেছি, নিজে থেকেই বেকুবের মতন পারিবারিক নামেই পরিচয় দিলাম (চিন্তা করলাম যে চিনলে সবাই এক নামেই চিনুক)। কিন্তু তাতে নতুন মুশকিল হলো, নামটা বাংলা হওয়ায় অনেকেই তা উচ্চারণ করতে পারেনা, কয়েকজন আবার জিজ্ঞেস ও করল -"এ আবার কেমন নাম? তোমার অন্য কোন নাম নেই?" কয়েকজনকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম 'এটা আসলে একটা পদবী' কিন্তু বেটারা বুঝেনা। আমি আর থাকতে না পেরে বল্লাম, আমার নাম "দেও্য়ান মোহাম্মদ ইবতেশাম"। শুনেতো তারা ব্যপক খুশি, চারিদিক আলহামদুলিল্লাহ আর মাশাল্লাহ শুরু হয়ে গেল, দু্ একজন আবার ভর্ৎসনাও করল, আমার নাম মোহাম্মদ না বলে কেন আমি এ সব হাবিজাবি কঠিন কঠিন নাম বলছি? তখন থেকে এখানকার মুসলিম সমাজে মোহাম্মদ নামে পরিচিত হয়ে গেলাম।

মসজিদের ব্যপারটা আরেকটু বলি। কোন এক কারণে এখানে মসজিদ মোটামুটি এখানকার মুসলমান সমাজের মিলনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয় - সংখ্যালঘু হয়ে গেছি বলে হয়ত। তবে আমার মতন গুনাহগার বান্দাদের জন্য মসজিদ হল মোটামুটি ভালমন্দ খাওয়ার একটা জায়গা, বিশেষ করে রোজার সময় দেখলাম খাওয়ার সমারোহ (যদিও দু-একদিন পরেই এরাবিয়ান খানায় অভক্তি চলে আসে, ওদের অভিধানে মসলা মানে লবণ আর গোল মরিচ)। কিন্তু তাও প্রবাসে এসে লবণবিহীন পানসে বিরিয়ানিই বা কয়জন খাওয়ায়? আর স্বাদে যাই হোক, নামে তো বিরিয়ানিই বটে। আর সবার উপরের কথা হলো 'মাগনা খাও্য়া' । এই ফ্রি ফুড কালচারের ব্যপারটা মোটুদেশে আসার পর থেকে দেখছি। কেউ কিছু করতে চাইলেই ই-মেইল করে দেয় 'free lunch will be provided', সুতরাং ছুট ছুট ছুট। মাগনা খাওয়ার ওসিলায় যদি কেউ আসে কথা শুনতে। আমরাও কাউকে নিরাশ করিনা, নরম মন, পরার্থে সর্বদাই ব্যকুল।

লেখার এপর্যায় এসে আবিষ্কার করলাম, লেখাটা অনেকটা আরবদের বিরিয়ানির মতন হয়েছে স্বাদে, লবণ নাই। তাই এক চিমটি লবণ নিচে দিয়ে দিলাম -


মন্তব্য

ভ্রম এর ছবি

হাহা ভিডিওটা সুপার কিউট! যদিও আগে অনেকবার দেখেছি তাও প্রতিবার দেখলেই দাঁত বের করে হাসি...হেহে...
লেখা ভালো লেগেছে। নাম নিয়ে ঝামেলায় মনে হয় বাইরে এসে সবাইকেই পরতে হয়। আমার নিজের নাম নিয়েই তো কত কান্ড হয় এখনো। কখনো সব মনে করে লিখবো।
বাংলাদেশে আমার এক সহপাঠী ছিলো। "সৈয়দা মরিয়ম বিনতে মনিমুন্নাহার মোস্তাফিজ(মৌমিতা)"। বেচারী পরীক্ষার খাতায় এইরকম ছোট ছোট করে নাম লিখেও কখনো "(মৌমিতা)" পর্যন্ত যেতে পারতোনা জায়গার অভাবে, এই নিয়ে তার দুঃখের শেষ ছিলোনা। হঠৎকেনো ওর কথা মনে পরলো জানিনা দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি (লগান্তিস নাই) এর ছবি

ইশকুলে এক পোলারে চিন্তাম। আবুল কাশেম মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন। ও নাইনে রেজিস্ট্রেশনের সময় পুরা নাম আঁটাইতে পারে নাই ফরমে। বিরাট ক্যাচাল!

আপনার গল্পে, সেইদিনের কাহিনীটা মনে পড়ে গেলো!

আরেকটা কথা বলি। একেবারে নিজস্ব অভিজ্ঞতা। নামের কোনো অংশে যদি খালি মোহাম্মদ শব্দটা থাকে তাইলে পুব-পচিম সব দেশেই আপনি ঐ নামে পরিচিতি পেয়ে যাবেন, অটোমেটিক। শত কান্নাকাটি করেও লাভ নাই! মন খারাপ

সাফি এর ছবি

হ আমার ক্লাশে গোটা পাঁচেক মোহাম্মদ আছে, কিন্তু আমার মাঝের নাম বলে বেঁচে গেছি হয়ত। আমার এক বন্ধু ছিল, আবু সালেহ মোহাম্মদ রাশেদ মাহমুদ শিশির। মে্ট্রিক পরীক্ষার সময় ফর্ম ফিলাপে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হয়ে গেল, এ এস এম রাশেদ মাহমুদ শিশির। যাই হোক , আপ্নেও মোহাম্মদ নাকি?

আলমগীর এর ছবি

ইশকুলে এক পোলারে চিন্তাম। আবুল কাশেম মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন।

নামে-বেনামে মেম্বররে গুঁতান ক্যান? আপনে লুক খারাপ, মেম্বর মিছা কয় না।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- মেম্বর নিজেই খারাপ লুক, আপনেরেও পোকরা গমের দলে টানতাছে! আমি কই আমার বাল্য বন্ধুর দুঃখের কথা, আর মেম্বর আমার নামে জেনকিন্স স্ট্রীটে সংবাদ সম্মেলন ডাকে! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সাফি এর ছবি

সৈ্য়দা আপার জন্য সহানুভূতি রইলো দেঁতো হাসি আপনার লেখার প্রতিক্ষায় রইলাম হাসি সঙ্গে ছবিরও

আলমগীর এর ছবি

বোকার মতো প্রশ্ন করি: মোটকুদের দেশ কোনটা?

অতিথি লেখক এর ছবি

এমঋকা মনে লয়??? চিন্তিত

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মোটকুদের দেশ বলে আসলেই কোন দেশ আছে কি? মোটকু শব্দটাই আমার কাছে হ্যারাছমেন্টের মত শোনায়।

সাফি এর ছবি

আসলে দেশ নাই, কিন্তু এই দেশে এসে চারিদিকে এদের অবস্থা দেখে নিজেই নাম দিসি। শব্দটাতো হ্যারাসমেন্টই - আমার চেয়ে ভাল আর কে জানে?

সাফি এর ছবি

হ ঠিকই ধরসেন, এখানে ব্যপারটা কইসিলাম কেন এই নাম

সাফি এর ছবি

অতিথি ভাই বলে দিসে আলমগীর ভাই। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

দেওয়ান মোহাম্মদ ভাই কেমন আছেন দেঁতো হাসি
হোমওয়ার্ক কেমন চলতাছে দেঁতো হাসি

---------------------
আমার ফ্লিকার

সাফি এর ছবি

এখানেও আবার হোমো ওয়ার্ক কেন? মুড়ি খা রেগে টং

উত্তল দর্পণ [অতিথি] এর ছবি

সাফি ভাই এই দ্যাখেন দেঁতো হাসি, দেঁতো হাসি, দেঁতো হাসি

সাফি এর ছবি

দেখলাম ভাই। এত হাসির কারণ কি?

প্রবাসিনী এর ছবি

মোহাম্মদ, নাম নিয়ে বিড়ম্বনায় আমাদের একটু বেশিই পড়তে হয়, বাংলাদেশিদের নামগুলো বেশ flowerly/fluffy। নিজের কথাই বলি, আমার নামে আমাদের পারিবারিক নামটা নাই। দেশ ছেড়ে আসার পর বেশ বিড়ম্বনায় পড়তাম প্রথম প্রথম। আমার এক বান্ধবীর ধারণা ছিল আমি দত্তক নেয়া, না হলে নাকি পারিবারিক নাম না থাকার কোন কারনই নাই।

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

সাফি এর ছবি

আমি বিশাল ঝামেলায় পড়ি কোথাও যদি নিজের নামের সাথে স্ত্রী এর নাম নিবন্ধন করতে যাই। তাঁর নামের লেজে আমার নাম নেই, এই ব্যপারটা এরা মানতেই পারেনা।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

তানভীর আনোয়ার এর ছবি

নাম বিড়ম্বনা বোধহয় এখানকার সব বাংলাদেশীরই কমন ঘটনা। এক অফিসে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে যখন ভাবলাম সব সময় মোহাম্মদ নামের সম্বোধন শুনতে ভাল লাগবেনা, তখন নিজেই নিজের নামের অপভ্রংশ করে তানভীর থেকে Tan হয়ে গেলাম ইয়ে, মানে...

সাফি এর ছবি

তুই কি আমার বন্ধু তানভীর নাকিরে? তুই কইরাই মন্তব্য করলাম, রং নাম্বার হইলে চরি।
এখন একটা কাল্পনিক কথোপকথন -

a- Where is Tan?
b- Tan went to market.

অনুবাদ কর

অতিথি লেখক এর ছবি

হো হো হো

মনজুর এলাহী

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

লেখাটা গ্রম চাউমিনের মত দোস্ত, আর শেষের সস টা অসাধারন!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

সাফি এর ছবি

দোস্ত আমাগো যেই সাইজ তাতে ঝাউ কেন, সুন্দরবনেও লুকায় থাকা মুশকিল।
সস দেবার ব্যপারটাই এটা যেন সসের গুণে লেখা উৎড়ে যায় খাইছে

সৌরভ এর ছবি

ভালো লাগলো। বাংলাদেশে নাম রাখার ব্যাপারে নিয়ম চালু করা দরকার। আমি তো এককাঠি উপরের সমস্যায়, "এমডি" বিভ্রাটে আক্রান্ত।

ভিডিও দেখতে পারলাম না। আমার দেশে নাকি কপিরাইট আইনের জটিলতায় আমাকে দেখতে দেয়া যাবে না বলছে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সাফি এর ছবি

সৌরভ ভাই, এই ভিডিও দেখতে না পারলে মহা দু:খের ব্যপার। এখানে ক্লিক করে দেখেন তো ডাউনলোড হয় কিনা?
এমডি এর ব্যপারে ঝেড়ে কাশেন

সৌরভ এর ছবি

নামের আগে এমডি নিয়ে বিপদে থাকি রে ভাই।
আমি তো ডাক্তারও না, ম্যানেজিং ডিরেক্টরও না।

হাহা, ভিডিও দেখে মন ভালো হয়ে গেছে। সামলায় ক্যামনে চারটা!


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

হিমু এর ছবি

ভালোই লাগলো রে দেওয়ান কাগু দেঁতো হাসি



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সাফি এর ছবি

খাইসে আমি আপ্নের কাগু হইলে তো মুশকিল। নাকি কাকের গু কইলেন সংক্ষেপে? চিন্তিত

সৌরভ এর ছবি

বলেন কী, ইনিই তাহলে বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারের বিখ্যাত কাগু আলিফ দেওয়ান? অ্যাঁ


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

মাশীদ এর ছবি

হে হে হে!
চলুক!
খাইছে


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

সাফি এর ছবি

চলবে 'এনশাল্লাহ'

রায়হান আবীর এর ছবি

টোফেল রেজিস্ট্রেশন করতে যেয়ে আমিও বাটে পড়ে গেলাম। ঠিক ঠাক মতো দিয়ে দেখি আমার নাম উলটা হয়ে গেছে দেঁতো হাসি

আমাদের ভার্সিটিতে যত প্যালেস্টাইনী পোলাপান আছে সবার নাম "মুহাম্মদ"/ "আহমেদ" দেঁতো হাসি


পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা

সাফি এর ছবি

আমার নামটাও ফার্স্ট / ফ্যামিলি নেমের পাল্লায় পড়ে একটু প্যাচ খেয়ে গেছে। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আমার এক বন্ধুর নাম-- আবু ওমর মোহাম্মদ শেহাব উদ্দীন আইয়ুব।তো ও GRE পরীক্ষার সময় কী নামে রেজিস্ট্রেশন করছিল এইটা ভুইল্যা গেছিলো দেইখ্যা ওরে প্রথমবার GRE পরীক্ষা দিতে দেয় নাই। ওরে অবশ্য আমরা বন্ধুমহলে গরু ডাকি, তবে সেইটার কারণ ভিন্ন- (ও আক্ষরিক অর্থেই এতকিছু জানে যে ওর চারপাশে থাকলে নিজেদের গরু মনে হয়--তাই আমরা ওরেই গরু ডাকি)।

সাফি-- আপনার রম্য লেখার হাত চরম। পড়ে ব্যাপক মজা পেলাম দুইটা পর্বই।

আমার জীবনকাহিনী দেখি আপনার সাথে পুরাই মিল্যা গেল। মেধাবী বান্ধবী বিয়ে করার শাস্তিস্বরূপ আমারেও এখন উচ্চশিক্ষার পথে পাড়ি দিতে হইতাছে(চরম দু:খের ইমো)।

রাজিব মোস্তাফিজ

সাফি এর ছবি

রাজিব ভাই,
এখন GRE রেজিস্ট্রেশন করতে পাসপোর্ট লাগে এবং পাসপোর্টের নামে নিবন্ধন করতে হয়। আগে এমন নিয়ম থাকলে আপনার বন্ধুর ১০,০০০ টাকা বেঁচে যেত।

আপনি কোন দেশে আইতেসেন?

সাইফ তাহসিন এর ছবি

এক চিমটি নুনের গান গামু না, কারন লেখা তার চাইতেও মজাক হইসে। আপনার লেখা পইড়া ব্যাপক লজ্জা পাইলাম, কি সব আবজাব লিখে ভরে ফেলেছি। তবে, নাম বিভ্রাটের ঘটনা নতুন কিছু না, এখনো মাঝে মাঝে আমাকে ডাকলে আমি বুঝি না, কাকে ডাকছে! তবে, যাদের নাম আশফাক তাদের জন্যে আমার দুঃখের পরিমানটাও বেশি।

আমার নামের শেষাংশ, আমার কন্যার এবং স্ত্রীর ৩টা, যেখানেই নাম লেখতে যাই, সেখানেই একবার পুরা বেপারটা বুঝায় বলতে হয়, মহা জ্বালা। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সাফি এর ছবি

আপনার লেখা পইড়া ব্যাপক লজ্জা পাইলাম

আপ্নেনা নিজেরে দুর্মুখ দাবি করেন? এই তার নমুনা?
নাম ব্যখ্যা করার অভিজ্ঞতা আমারও হইসে, মহা বিরক্তিকর, মিজাজ খারাপ কইরা দেয়

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমার নামেও মোহাম্মদ আছে, রহমান আছে। এগুলো নিয়ে কখনও বিড়ম্বনায় পড়িনি। আমাকে মোহাম্মদ, রহমান কিংবা মুস্তাফিজ যে নামেই ডাকে সাড়া দিই। খারাপ লাগার কিছু নেই, এটাইতো আমার নাম।
তবে মজা লাগে ডাচ্‌দের নাম রাখা নিয়ে। সাধারণত বাড়ীর বড় ছেলে দুইটার নাম থাকে দাদা আর নানা’র নামে। মা যদি বিধবা হয় তাহলে মাঝে মাঝে প্রথম সন্তানের নাম হয় মা’র প্রথম স্বামীর নামে। প্রথম সন্তান মেয়ে হলে নানীর নাম, দ্বিতীয়টা দাদীর নাম পায়। কোন কারনে এক সন্তান মারা যাবার পর একই লিঙ্গের আরেক সন্তানের জন্ম হলে সে সেই মৃত সন্তানের নাম পায়। নামের ক্ষেত্রে সিনিয়র জুনিয়রের প্রচলনও এদের মাঝে আছে, এটা হয় নামের শেষে -je বা -the, -ie and –ke যোগ করে। তাই এদের নামের সংখ্যা কম, হাতে গোনা যায়।

.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

সাফি এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই,
খারাপ লাগেনা, তবে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন নামে চিনলে কিছু ভোগান্তি আছে। বিশেষ করে কেউ খুঁজতে এলে।

ডাচদের ব্যপারটা জানতে পেরে মজা পেলাম, ধন্যবাদ। ইরানিদের ও দেখলাম শেষ নামটা দাদার, মাঝের নামটা বাবার আর প্রথম নামটা নিজের

ওডিন এর ছবি

দুঃখের কথা আর কি কমু, এই দেশের মাটিতেই নাম নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় আমারে- কোন এক রহস্যময় কারনে আমার 'ভালো নাম' রাখা হয় নাই- দুইটা ডাকনাম ছিলো- তার মধ্যে আব্বাহুজুরের দেয়া ডাকনামটাই আসল নাম হিসেবে চলতেসে- তাই এখনো শুনি- 'ভালো নামটা বলতো', 'ভাই আপনার পুরো নাম বলেন', 'স্যার আপনার নামটা একটু ডিটেইলসে বলবেন কি'

জীবনের এই অতিগুরুত্বপূর্ন ব্যপারটায় আমাদের যে কোন হাত ছিলো না জনগন কে কেম্নে বুঝাই?

---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

সাফি এর ছবি

হুমম। সত্যি শুনে অবিশ্বাস্য ঠেকছে। নাম শুনতে মঞ্চায়।

অদ্বিতীয় এর ছবি

ব্যাপক চিন্তার ব্যাপার চিন্তিত মাগনা খাইতে গিয়ে আবার হুজুর হয়ে যেয়েন না!!! মামুকে আজকেই বলতেছিলাম যে মানুষের কোন গ্যারান্টি নাই! আজকে যে আল্ট্রা মডার্ন কালকে সে পাক্কা মুসল্লি! কোন দিক দিয়ে পটে যাবেন টেরও পাবেন না!

অদ্বিতীয়

অদ্বিতীয়

শাফি [অতিথি] এর ছবি

হি হি আমার নাম দেহি ভায়ের নামের লগে মিল খাইছে এলা অ্যাঁ, (নাকি, ভায়ের নামের লগে আমার ডা মিল খাইছে... চিন্তিত) কিন্তু কিঞ্চিৎ তফাৎ আছে বইলা শান্তি পাইলাম। আমি শাফি। দেঁতো হাসি আমার মায়ের নামে মিল কইরা নাম রাখছিল্ তো.....আমি মাঝে মাঝে অবশ্য ইশটাইল মাইরা শাফি জেআর (Shafi Jr.) লিখি (আন অফিশিয়ালি আর্কি) হে হে... দেঁতো হাসি

অদ্বিতীয় লিখেছেন:
ব্যাপক চিন্তার ব্যাপার চিন্তিত মাগনা খাইতে গিয়ে আবার হুজুর হয়ে যেয়েন না!!! মামুকে আজকেই বলতেছিলাম যে মানুষের কোন গ্যারান্টি নাই! আজকে যে আল্ট্রা মডার্ন কালকে সে পাক্কা মুসল্লি! কোন দিক দিয়ে পটে যাবেন টেরও পাবেন না!

অদ্বিতীয়

ভাই মুসল্লি হলে কুনো ঝামেলা আছেনি? আল্টা মডান হইলে "আল্টা (পাক্কা) মুসল্লি" হইতে সমস্যা কুডায়? আমি নিজে মুসলিমের পুলা তো তাই জানতে এক্কেরে মেলাডি আগ্রহ প্রকাশ করতাম চাই। বাকিডা আন্নের ইছ্ছা।

শাফি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।