ঠিক কবে থেকে যে চশমা পরি তা নিজেও অনেক চেষ্ঠা করে মনে করতে পারলাম না। ট্যানলাইনের মতন, আমারও নাকের উপরে চশমা তার ছাপ রেখে গেছে। বললে তো হাসবেন, কিন্তু মাঝে মাঝে চশমাতেও চুলকাতো। ভালোই ছিলাম, কিন্তু বিপত্তি ঘটালেন আমার উনি, শুভ। ল্যাসিক করলে বলে আর চশমা পড়া লাগবেনা, এই নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান করে মাথা খারাপ করে দেওয়ার জোগাড়। আরে ব্যাটা বিয়ের আগে
তো চশমাতে কোনই আপত্তি ছিলনা। কি মিষ্টি মিষ্টি কথা তখন তার! - "চশমার আড়ালে থাকা এই চোখের জন্যে নাকি তিনি মহাকাব্য লিখে ফেলতেন"। অথচ চোখের ভয় আমি আধমরা, কেউ চোখে আঙুল বা ছুরি দিবে, কাটাকাটি করবে কল্পনা করতেই পেটের মধ্য হাত পা সেঁধিয়ে যাবার দশা। "অমেটাফোবিয়া"(Ommetaphobia) বা চোখে আঘাত লাগার ভীতি আছে যাদের, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমার জন্য কি ভয়ঙ্কর একটা ব্যাপার।
এই অমেটাফোবিয়া থেকেই আমার চশমা পড়ার শুরু, চোখ খারাপ থেকে কিন্তু না। প্রথমে তো পাওয়ার ছাড়াই পরতাম, মনে হত ক্রিকেটারদের গার্ডের মতন আমিও চোখে কিছু একটা পরে আছি, স্বস্তি পেতাম। কিন্তু আস্তে আস্তে চোখ খারাপ হওয়া শুরু করল। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকল চশমার পাওয়ার আর শুভর ঘ্যানঘ্যানানি। সবসময়ের মতনই এক সময়ে ঠিকই আমাকে পটিয়ে পুটিয়ে রাজি করিয়ে ফেললো। ন্ডাক্তারের সাথে কথা বলে অবশেষে ল্যাসিক করেই ফেললাম। ভালই চলছিলাম, স্বীকার করতে দোষ নেই। একটু একটু মনে হচ্ছিল যে ল্যাসিক না করালে আসলে বোকামিই হত। নাকটা যদিও চশমাকে খুব মিস করত, শুধু খালি খালি লাগত। তবে ধীরে ধীরে অভ্যস্তই হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এখন আবার কি যে হল - আসো আবার ডাক্তারের চেম্বারে। আর বিপত্তিটা সেখানেই।
লেন্স নিতে হবে, অথচ নিজের হাতে লেন্স নিয়ে চোখে পড়া আমার জন্য মোটামুটি অসম্ভ্ব একটা ব্যাপার। অন্য কেউ পড়িয়ে দিবে সে আশা করা আরোই বোকামি, কারণ আমি ভয়ের চোটে চোখই খুলবনা। কারও হাত চোখের দিকে আসতে দেখলেই কার সাধ্য আছে আমার চোখ খুলিয়ে রাখার! এদিকে ডাক্তার নিয়ম কানুন বলে হাতে লেন্স ধরিয়ে দিয়েছে। ওদের সামনে পড়ে দেখাতে হবে। নইলে বাসায় নিতে দিবেনা। কিন্তু লেন্স হাতে নিয়ে চোখের কাছে নিতে গেলেই চোখ বন্ধ করে ফেলছি। লজ্জার ব্যাপার। এদিকে মোটামুটি সবাই বিরক্ত হয়ে গেছে। চোখের কারণে এমনই সমস্যা হচ্ছে যে লেন্স পরা ছাড়া আপাতত কোন উপায়ও নেই। ডাক্তারের জন্য আরও গোটা বিশেক রোগী অপেক্ষা করে বসে আছে, আমাকে এর বেশী সময় দিতেও পারবেনা তারা। শেষে এক এসিস্টেন্ট ঠেলে ঠুলে আমাকে চেম্বারের পাশে বাথরুমে ঢুকিয়ে দিলো, চোখ ধুয়ে যেন সময় নিয়ে লেন্স পড়ে আসি। তাছাড়া বাথরুমে আয়নাও আছে, দেখে দেখে পরতে পারবো। এর মধ্যে ডাক্তারও অন্যান্য রোগী দেখতে পারবে। আড় চোখে শুভর দিকে তাকিয়ে দেখি মিটমিট করে হাসছে শয়তানটা। নিশ্চয়ই বাসার সবাইকে কিভাবে আমি লেন্স পরার চেষ্টা করলাম সেটা অভিনয় করে দেখানোর পাঁয়তাড়া কষছে। "দাঁড়াও, বাসায় গেলেই হাসি বের করছি, আজ থেকে মাটিতেই শুতে হবে - তখন দেখব কে হাসে।"
চারদিকে তাকিয়ে দেখ্লাম, বাথরুম ও বটে এদের। ছোট্ট একটা ঘর, জানালাও নেই। বেসিনের পাশে একটা কমোড, উপরে নিঃশব্দে একটা এক্জস্ট ফ্যান ঘুরছে। তবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এই যা। টিম টিম করে বেসিনের উপরে ছোট্ট একটা বাল্ব জ্বলছে, তাতে হোঁচট না খাওয়ার মতই আলো হচ্ছে। অবশ্য এই বাথরুমে কেউ নিশ্চয়ই বই পড়তে আসবেনা! কোন মতে, আরেকবার প্যাকেটের গায়ে লেখা ইনস্ট্রাকশন পড়লাম। এর পর যা আছে কপালে - এক হাতে লেন্স নিয়ে আরেক হাতে জোর করে চোখ খুলে লেন্স পড়ানোর চেষ্টা শুরু করলাম। কিন্তু চোখ খুলে রাখা দায়, লেন্স চোখের সামনে নিতেই চোখ ভয়ে বন্ধ করে ফেলছি। এইরকম চলতে চলতে হঠাত চোখে লেন্সের গুঁতা লেগে গেল। সাথে সাথে রাজ্যের ভয় যেন আমাকে পেয়ে বসল। একি! আমি কিছু দেখতে পারছিনা কেন? ভাল করে দু হাতে চোখ ডললাম, নাহ কিচ্ছু দেখতে পারছিনা। কোন মতে হাতড়ে হাতড়ে কল খুলে, চোখে পানি দিলাম। সেই একি অন্ধকার! আমি কি তাহলে অন্ধ হয়ে গেলাম? শেষ পর্যন্ত আমার ভয়েরই জয় হল? চারদিকে তাকাচ্ছি, নিকষ কালো অন্ধকার, কোথায় বেসিন, কোথায় কি! দুচোখ বেয়ে কান্না গড়িয়ে পরছে। তাহলে আমি অন্ধই হয়ে গেলাম। এই সুন্দর পৃথিবীর আর কিছুই দেখতে পাবনা? বাবা, মা, শুভ সবার চেহারা মনের আয়নায় দেখতে পাচ্ছি। এভাবেই তাহলে চলতে হবে? কিভাবে পারব আমি? শরীরে এক বিন্দু শ্ক্তি পাচ্ছিনা, একটু বসতে পারলে ভাল হত। কান্নাও থামাতে পারছিনা। দরজায় শুভর টোকা শুনতে পারছি, আর কি যেন বলছে। আমার কান্নার শব্দ কি ও শুনে ফেলেছে বাইরে থেকে? কিভাবে চলব আমি বাকি জীবন? কতকিছু দেখার বাকী ছিল! জীবনের প্রায় পুরোটাই তো বাকী। এমনি সময়ে, হঠাৎ কোথায় যেন এক ভয়ানক গর্জন শুরু হলো, আর ঠিক তখনই জেনারেটর চালু হয়ে চারদিক আবার আলো হয়ে গেল।
মন্তব্য
ভালৈছে ... একচোখে গুতা লেগে দুইচোখ একেবারে অন্ধ হয়ে গেল!!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
গরু হারালি এমনই হয় মা
একবার হইসে কী - আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। রাতের খাবার খেতে যাওার আগে পড়ছিলাম, আর ঝিমুচ্ছিলাম। ঝিমুতে ঝিমুতে ৩০ সেকেন্ডের একটা ছোট্ট স্বপ্ন দেখলাম। দেখলাম আমি অনেক উঁচু একটা পাহাড়ের চূড়া থেকে পড়ে যাচ্ছি। পড়ছি তো পড়ছিই, পড়তে পড়তে চিন্তাও করে ফেললাম - নিচে পড়লে একেবারে ভর্তা হয়ে যাব, কী করা যায়! কিছুই করার নাই। পড়তে পড়তে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন আমার ভর্তা আমি দেখতে পাব।
যখন পতনের শেষ হল, তখন শরীরটা ধপাস করে পড়ল। আমি আমি দেখলাম আমার মাথাটা সাম্নের টেবিলের উপর দড়াম করে বাড়ি খেল
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
ঘুমের মধ্যে এমন হৈসে আমার, মনে হয় যে পরে যাচ্ছি, ঠিক তখনই ব্যালান্স করার জন্য পা চালায় দেই
ল্যাসিক এর ভয়ে এই ভয়ানক চউক্ষু দুইটারে চশমা দিয়াই ঢাইকা রাখি।
সাদা চশমা না কালা?
আমারো সেই একই কুচ্চেন, এক চোখে গুতা লেগে দুই চোখে আন্ধার দেখে ক্যাম্বায়? আবার কইয়েন না গরু হারাইছে।
গরু আর কয়বার হারাবি মেম্বর!
আসলে গল্পের সময়কাল তো খুবই ক্ষুদ্র, কারেন্ট চলে যাওয়া থেকে জেনারেটর চালু হওয়া পর্যন্ত। তীব্র ভয়ে এই সময়ে যুক্তিবোধ লোপ পাওয়ায় এরকম লজিকাল প্রশ্ন হয়ত মাথায় আসেনি।
আপ্নে কে কেট উইন্সলেট নাকি, র্যাল্ফ ফিনেস?
গল্পের মধ্যেও জীবন থেকে নেয়ার ঘটনা থাকে। 'সত্যি তুমি বেদনা', এই কথাটা এই গল্পের লেখক যেমন হাঁড়ে হাঁড়ে জানেন, তেমনি মানেন আমার মন্তব্যের উপরের মন্তব্যকারী।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাবী ইতালী থেকে ফিরলে আপনেও জানবেন হের ধুগো
সংসারজাতীয় যেকোনও দুঃখগাথায় ধুগো'দারে হাজির পাওয়া যায়।
মনির হোশেন "ঝিনুক নিরবে সহো"র শ্রেষ্ঠতম উদাহরণ!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
জটিল রে ভাই ... আমার বোন ল্যাসিক করা মাগার আমি ঐ পথে হাঁটুমনা চিন্তাইছি ...
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
হ চশমাই ভালো
ভালু পাইচি। এই চশমার জন্তনা নিয়ে আমারও বেহাল দশা
আমার চশমা লাগেনাই এখনও
ট্যানলাইন দেখে মনে পড়ে গেলো ট্যানকার্ভের কথা।
আপনের জন্য
মজা লাগল ভাইয়া। আমার চোখ অবশ্য বেশ ভাল, চশমা ছাড়াও চলে যায়।
কয়েকটা শব্দে হোঁচট খেয়েছি, মেসেজে দিলাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ আপু।
মেসেজ আবার চালু হয়েছে তাই তো জানতাম না, চেক করে জানাচ্ছি। আগাম ধন্যবাদ
সম্পাদনা ঃ মেসেজ পাইনাই
কী আর করা। এখানেই আবার লিখি।
চেষ্ঠা >চেষ্টা, হঠাত >হঠাৎ, এক্জস্ট >এগজস্ট, শ্ক্তি > শক্তি, পটিয়ে পুটিয়ে >পাটিয়ে, অসম্ভ্ব > অসম্ভব, এসিস্টেন্ট > অ্যাসিন্টেট।
[র/ ড় :
চশমা পড়া >পরা, গড়িয়ে পরছে >পড়ছে, লেন্স পড়ে > পরে আসি, ওদের সামনে পড়ে> পরে দেখাতে হবে, পাঁয়তাড়া > পাঁয়তারা।]
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেক ধন্যবাদ আপু। চেষ্টা করব ঠিক করে লিখতে। বানানশুদ্ধি জারি থাকুক
আমার চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছে বেশ কিছুকাল। চশমাও আছে। কিন্তু পড়ালেখায় কষ্ট হলেও কষ্ট করে ওটা কখোনেই পরিনা, ব্যাগে পড়ে থাকে। অবশ্য বাইরে রোদে গেলে একটা রিমলেস রে-ব্যান পরি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
শুরুতে অবহেলা করলে শুনেছি, পরে পস্তানো লাগে। সুতরাং ছোট থাকতে সমস্যার সমাধান করা ভাল।
রে ব্যান ব্যবহার করতে সমিস্যা হৈলে আমরা তো আছিই
চক্ষু দিয়া দিমু কিন্তু রে-ব্যান দিমু না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আহা সামান্য চশমাই তো
ল্যাসিকরে ডরাই
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
ডরাইলেই ডর...
কিন্তু, এইখানে 'হান্দাইবো' কী?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
চোখের কোন গ্যাঞ্জামে এখনও পড়ি নাই রক্ষা!!!
_____________________
Give Her Freedom!
আমিও না
ল্যাসিক করার পরেও লেন্স লাগে নাকি? কি শুনাইলেন এইটা!!! আমিও ল্যাসিক পার্টি। একবারে ঝামেলা শেষ।
লেন্স এর গেঞ্জাম প্রতিদিন খুলো , পড়, কতকিছু খেয়াল রাখা লাগে রে বাবা। যার চশমা খুলে ঘুমাইতে মনে থাকে না তারে দিয়ে ঐসব হবে না। একবার ঘুম থেকে উঠে দেখি চশমার কাচ দুইটা স্যান্ডুইচের মত দুই ভাজ হয়ে আছে, একটা ডাঁটি তখনো কান থেকে ঝুলছে।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
দৃশ্যটা চিন্তা করলাম
ল্যাসিক বিষয়ক অংশটা এক ছোট ভাইয়ের কাছে জিজ্ঞেস করে জানা। তার বক্তব্যমতে, ল্যাসিকের পরে পাওয়ার কম/বেশী হলে বিশেষে মাপের লেন্স দিয়ে এডজাস্ট করা হয়
তাইলে ছোট ভাই যেখানে ল্যাসিক করাইছে সেটা ভালো জায়গা না। আমি ছয় বছর ধরে চশমা, লেন্স মুক্ত হয়ে ঘুরে বেরাচ্ছি। আগে মাইনাস ৪ পাওয়ারের চশমা পড়তাম। অপারেশানেও লাগছে মাত্র ১০ সেকেন্ড। ৫ সেকেন্ড একটা লাল বাত্তির দিকে তাকায় থাকলাম, কাহিনী শেষ, ছুরি কাচির বালাই নাই। দেশে থেকেই করাইছি।
একটাই আফসুস, এখন আর আমারে জ্ঞানী লাগে না।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ছোট ভাই নিজে অবশ্য করায় নাই করাবে করাবে ভাবছে। তবে সে শুনেছে কোথায় জানি যে ল্যাসিকের পরেও অনেক সময় কারেকটিভ লেন্স ব্যবহার করা লাগে। ল্যাসিক ব্যাপারটা দেখি আসলেই জলবৎ তরলং।
আমিও তাই ভাবতেসিলাম, ল্যাসিক করাইলে যদি লেন্স লাগে তাইলে আর ল্যাসিক করমু কেন? লেন্স বাদ দিলাম আন্ধা হওয়ার ভয়ে, এখন ল্যাসিকে যদি একই ক্যাচাল থাকে
আগে কোনো এক যুগে হয়তো শক্ত কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করতো কিন্তু এখন সফট কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করে। চোখে গুঁতা লাগার প্রশ্নই আসে না। ল্যাসিক করে সাধারণতঃ চোখের অসম লেন্সটাকে ঠিক করতে (মাইওপিয়া, হাইপারপিয়া এবং অ্যাসট্যাম্যাটিজম)। অথচ এক্ষেত্রে সেরকম কিছুর ইঙ্গিত দেয়া হয়নি। মনে হতে পারে চোখের পাওয়ার ঠিক করতে ল্যাসিক করতে বলা হচ্ছে। তারপর হঠাৎ কনট্যাক্ট লেন্সের প্রসঙ্গ এসেছে, যেন ল্যাসিক করলে কনট্যাক্ট লেন্স পরতে হয়। অথচ ল্যাসিক না করেও এটা করা যায়। খামাখা অমেটাফোবিয়া শব্দটা ব্যবহারও অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে।
টেকনিক্যাল সমস্যাগুলো বাদে ইন্টারেস্টিং হয়েছে গল্পটা। গল্প লেখা চালু থাকুক।
(নিজে গল্প লিখতে পারিনা তো তাই অন্যের খুঁত ধরে বেড়াই।)
ইয়ে! আমি তো চোখের পাওয়ার ঠিক করাইতেই ল্যাসিক করাইছি। আমার ভালই পাওয়ার ছিল। কিন্তু মানুষে যে কত ফালতু কারনে ল্যাসিক করাইতে যায় ডাক্তারের চেম্বারে বসে দেখা। মেয়েরা আসে বিয়ের আগে চোখ ঠিক করাইতে, ছেলেরা সেনা বাহিনীতে ঢুকার জন্য। সাধারনত -২,০ এর চে কম পাওয়ার হইলে বা বয়স কম হইলে ল্যাসিক করা রেকমেন্ড করেন না ডাক্তার রা। তারপরেও উপরোক্ত পাব্লিকে জোর করে হলেও ল্যাসিক করতে চায়।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
অনুগ্রহ করে লিংকটা থেকে দেখুন ল্যাসিক কি এবং কেনো করা হয়।
পড়লাম। লেজারের নিচে চোখ পেতে দেয়ার আগে ল্যাসিক সংক্রান্ত যত লিঙ্ক পাওয়া যায় সব পড়েছি।
আমি ল্যাসিক করার প্রচলিত কারনগুলার কথা বললাম।
চাশমিশ মেয়েদের বিয়ে হয় না দেখে ল্যাসিক করানোর যে ট্রেন্ড আছে সেটা হাইলাইট করতে চাচ্ছিলাম। অনেক অপ্রয়োজনে মানুষ ল্যাসিক করাচ্ছে।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আম্রিকার নার্ড কালচারে আবার চাশমিশ মেয়েরা খুবই জনপ্রিয়। সাথে যদি, কমিক পছন্দ করে বা ভিডিও গেমার হয় তাহলে যাকে বলে সোনায় সোহাগা
হিজাবী মেয়েদের কথা কেউ ভাবে না । আমি ছাড়া।
কামাড়ুজ্জামানের মেয়ে কি হিজাবী?
আপ্নের ডিমান্ড কি ফরসা মেয়ে? অসূর্যস্পর্শ্যা ? তাইলে হিজাবী বালিকা দেখেন! অন্তত চক্ষুটুকু তো দেখে নেবেন, চাশ্মিশ হইলে তাও ঢাকা।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ডিমান্ড কথাটা শুনলেই মনে হয় শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে ইলেকট্রিক কানেকশনের ডিমান্ড নোট জমা দিতেছি! ডিমান্ড না, এ হচ্ছে সহজ সরল এক দ্বীনী যুবকের তৃষিতহৃদয়আশ। ফরসা-চশমা নিয়া আমার মাথাব্যথা নাই, আমি খুঁজছি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের পর্দানশিন নামাজি নন-সিয়ামিজ যমজ বোন বা প্রায় একরকম দেখতে দুই খালাতো বোন। যারা নিয়মিত পর্দা করবে, নামাজ পরবে, রোজা রাখবে, আমার আয়রোজগার থেকে জাকাতের টাকা ঠিকঠাক পাইপয়সা গুণে আলাদা করে রাখবে, বাসায় কোনো মিলাদ মাহফিলে মেহমানদের জন্য রুহ আফজা বানাবে, এমব্রয়ডারি করে "ভুলো না আমায়" আর ক্কাবা শরিফের ছবি দেয়ালে টাঙাবে, বড়বৌ বলে ডাক দিলে বড়জন মিহি গলায় কেশে উত্তর দিবে, ছোটবৌ বলে ডাকদিলে ছোটজন আরো মিহি গলায় কেশে উত্তর দিবে ... মোটকথা একটা ইসলামি অ্যাটমসফিয়ার থাকবে বাসায়। আমি সহজসরল মানুষ, সহজসরল জীবন ভালুবাসি। দুই বৌকে নিয়ে মার্জিত সুন্দর জীবন গড়তে চাই।
দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে, শুনেছেন কিনা জানিনা। কালো ছেলেদের ভাগ্যে সুন্দর মেয়ে থাকে আর বদ ছেলেদের ভাগ্যে লক্ষী মেয়ে জোটে। পুরা ফালতু একটা কথা। কিন্তু যদি সত্যি হতো তাহলে পৃথিবীর সেরা লক্ষী মেয়েটা আপনার ঘাড়ে পরতো।
দেখেন ভাইডি, আমি বদ, এই কথা খুউপ কষ্টে চুপচাপ সহ্য করে নেয়া যায়। কারণ পৃথিবীতে সবাই ঠিক কথা বলে না। একটা ভুল কথা বলার অধিকার আপনার আছে। তাই বইলা আমারে কালা কইলেন??? এই কি ইঞ্ছাপ?
কালাই ভালা
লক্ষী মেয়ে পাবেন, সুন্দর তো বলি নাই!
আর যারা যুগপৎ কালা ও বদ?
লক্ষ্মী। ওটার প্রায়োরিটি বেশি।
এইখানে ঠিক 'কী' নিয়া কথা হৈতাছে?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জনৈক ঈমানদাড় মানুষের দাড় বসানোর প্রচেষ্টা নিয়া
মনির হোশেন, ভাবী কি ইতালি থেকে ফিরছে?
কতো নম্বর ভাবী? এতো এতো ভাবী, কার কথা কোনশুম জিগান, বুঝি না বাড়া!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এই ভাবী কি লক্ষী?
না, স্বরসতী।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনে কি কৈতে চাচ্ছেন জনৈক ঈমানদাড়ের 'দাড়' নাই?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দাড় আছে, দাড় বাওয়ার মাঝি নাই।
বৈঠা ছাড়া না বৈঠা সহ মাঝির কথা কন?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হিজাবী বউ পাইতে কালা, নাকি বদ নাকি দুইটা এক্লগে হইতে হইবো এইটা বাইর করার চেষ্টা চলতেছে
হিজাবী বৌ পাওয়ার সমীকরণ আলাদা। চোখের পর্দা মেইন্টেইন করতে হবে, সবসময় সানগ্লাস দিয়ে চলতে হবে।
খাইছে এইরাম পর্দা হইলে তো খালি তাকায়া তাকায়া সব ছারখার কইরা দিব পাবলিকে
বড় বঊ হইতে হয় লক্ষী আর ছোট বউ সুন্দর। আপনি আগে বদ হন, তারপর বড় বৌরে নিয়া হানিমুনে রৌদ্রস্নান করে ক্কালা হয়ে আসেন। ছোটবৌ মিল যায়েগা।
বাট কিন্তু সপ্তাহের দিন সংখ্যা বেজোড়, বছরের দিন সংখ্যাও তাই। ইনসাফ করতে তাই একখান উটও যোগাড় করিয়েন।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
তারপরেও এমি/ বার্নাডেটের থেকে পেনির কদর বেশি। নার্ড কালচারে কয়টা ছেলে আছে বলেন? PC Quest এর চে Sports Illustrated এর কাটতি বেশি কী না বলেন?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আমি এটা নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটি করেছি এক সময়। যতটুকু বুঝেছি সেটা হোলো এরকম।
অ্যাসটিগম্যাটিজম, যেটা অতিরিক্ত হলে ত্যাড়া বলে, সবারই খানিকটা থাকে। অ্যাসটিগম্যাটিজম থাকলে সেটার কারনে কনট্যক্ট লেন্স তৈরী করা একসময় সম্ভব হতোনা। তাই চশমা ছেড়ে কনট্যাক্ট লেন্স ধরতে চাইলে ল্যাসিক করিয়ে নিতে হোতো।
কিন্তু এখন সেটার প্রয়োজন পড়ে না। আমি দুচোখে দুধরণের কন্ট্যাক্ট পরি। স্বাভাবিক এবং অ্যসটিগমাটিজম জনিত একটা। তুলনামূলকভাবে ল্যাসিকের সমস্যা অনেক গুরুতর। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে কমপ্লিকেসি দেখা যায় না। কিন্তু যদি সমস্যা দেখা দেয়, সেটা অনেক ঝামেলা করতে পারে।
ল্যাসিক চিকিৎসার উদ্ভব হয়েছিল জটিল সমস্যা সারাতেই। কিন্তু এখন অনেকে শখ করে ল্যাসিক করায়। আমিও বোধহয় শখের গ্রুপেই পড়ি।
চোখ প্রথম খারাপ হয়েছিল যে কারনে, (নাকের কাছে এনে বা অন্ধকারে বই পড়া ইত্যাদি) সেগুলা এড়ায় চলতে হবে। নয়ত আবার চোখ এর লেন্স ধেবড়ে যেতে পারে। একটা লেন্স আর কত চাঁছা যায়? তবে বুড়ো বয়সে এসে যখন হাইপারপিয়া হবে তখন আবার চশমা পড়তে হবে।
ল্যাসিক এর খারাপ উদাহারনও দেখেছি। আমেরিকাতে ল্যাসিক করানো এক ছেলে প্রায় কানা হতে বসেছে ঠিকমত অপারেশান না হওয়ার ফলে। ৩-৪টা কারেক্টিভ সার্জারি করতে হয়েছে। মেলা গেঞ্জাম।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ধন্যবার মুর্শেদ ভাই। গল্প্টা লেখার সময়, ল্যাসিক সম্পর্কে আমার আসলে ভুল ধারণা ছিলো। চোখের পাওয়ার ঠিক করার সার্জারি হিসেবেই তাই এসেছে গল্পে। কারেন্ট চলে যাওয়ার সাথে টেম্পোরারি ব্লাইন্ড্নেসকে রিলেট করাতে যেয়ে বিপত্তিটা হয়েছে। আর ভয়টাকে কার্যকরী দেখাতে যেয়ে অমেটোফোবিয়াকে আনতে হয়েছে। এক্দম পুরোপুরি গল্প বলতে যা বুঝায়, সেই হিসেবে এইটাই আমার প্রথম গল্প। মন্তব্যগুলো পড়ার পরে মনে হলো, বাথ্রুমে গোসোল করা অবস্থায় চোখে সাবান যাওয়ার সাথেও এই ব্যাপারটাকে মেলানো যেত - তাতে হয়ত বুনটটা আরেকটু শক্ত হতো। ভবিষ্যতে এগুলো খেয়াল রাখবো। আর ক্রিটিকাল এনালাইসিস ভালু পাই - এইটা খুবই জরুরী।
ভাল থাকবেন।
ল্যাসিক নাকি ভালু না!
তবে গল্পের ধাক্কাটা জমেছে ভালু।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ল্যাসিক সবাই তো ভালুই বলে।
আমার চশমাই ভাল।
খুব ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
নতুন মন্তব্য করুন