প্রথম পর্বে বলেছিলাম, বন্ধুর ফেসবুক স্ট্যাটাসের কথা -
"আমার সাম্প্রতিককালে একটা চাকরি হয়েছে। ইউনিভার্সিটির চাকরি, প্রফেসরকে রিসার্চে সাহায্য করা। টাকা পয়সার দিক দিয়ে হয়ত ছোটখাট চাকরি, কিন্তু কাজটা গবেষনার সাথে সম্পর্কিত এবং একই সাথে আনন্দের ও। তাই চলে যাচ্ছিলো। এদিকে আমার মাস্টার্সের সমাবর্তন ঘনিয়ে আসায়, বসের কাছে ছুটি চাইলাম। বস সাথে সাথে অভিনন্দন জানিয়ে ছুটি মঞ্জুর করে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন - সাথে কে কে যাচ্ছে? গার্লফ্রেন্ড/বাবা/মা/ভাই/বোন? বললাম নাহ, এই মুহূর্তে তো কেউ দেশ থেকে আসছেনা, আর গার্লফ্রেন্ড ও নাই, একাই যাবো। সাথে সাথে আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন - ঠিক আছে, কোথায় কয়টার সময়ে জানিও, আমি যাবো তোমার সমাবর্তনে। সত্যি বলছি প্রায় অপরিচিত এবং মোটামুটি অসামাজিক মানুষটার কাছ থেকে এমনটা একদমই আশা করিনি, তাই তাকে দেখতে না দিয়ে আস্তে করে চোখের পানি মুছে ফেললাম।"
একই সাথে আমরা পড়েছিলাম কিভাবে বিভিন্ন ফেসবুক ছেলেবেটি সেই স্ট্যাটাসের মূল ভাব নিজের স্ট্যাটাসে প্রকাশ করেন। সেই ধারাবাহিকতায়, এই পর্বে আমরা দেখব আরো কিছু ছেলেবেটির স্ট্যাটাস -
৬) এবারের সেলেব্রিটি একই সাথে `ভন্ড, জেমস ভন্ডের` যেমন ভক্ত, তেমনি ভক্ত মুরাদ টাকলার। বাংলা সাহিত্যে ওনার অসামান্য সংযুক্তি রিভার্স মুরাদ টাকলা। অর্থাৎ উনি রোমান হরফে বাংলা না লিখে বাংলা হরফে ইংরেজি লেখেন। উনি বন্ধুর স্ট্যাটাসখানা পুরাটাই খারিজ করে দিয়ে, নিজেই লিখে পাঠালেন একটা স্ট্যাটাস, সাথে নিজের সানগ্লাস পরা এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবিও দিলেন স্ট্যাটাসে সংযুক্ত করে দেওয়ার জন্য। উনার থিম ফিউশন। ভন্ড, জেমস ভন্ড এবং রিভার্স মুরাদ টাকলার ফিউশন।
-
"মোখলেস সেদিন আমাকে জোর করে চাকরির একটা ইন্টারভিউ দিতে নিয়ে গেল। ইন্টারভিউয়ের আগে আমি সিড়ির কোনে বিড়ি খাচ্ছিলাম হঠাৎ ইনবক্সে একটা ম্যাসেজ আসলো। একজন একটা স্ক্রিনশট পাঠিয়ে মেসেজ দিয়েছে - বস কুদ্দুছে আপনারে গাইল পারছে।
আমি হাসলাম, কুদ্দুছে বড় বাড়ছে। মাথা ঠান্ডা করে মেসেজটা পড়লাম। তারপর ধীরে ধীরে বিড়িটা শেষ করে উত্তরে লিখলাম - ইউ নো ইটস পলিটিক্স, দে উড ডু এনিথিং টু সিকিউর ফান্ডিং। স্ক্রিনশট দিতেছে, বিকজ ইউ নো দে আর গাটলেস। দে আর এফ্রেইড ঠু ফেইস মি।
অথচ এই কুদ্দুইছারে অনলাইনে আনছি আমি, আমারে বস ছাড়া কথা বলতোনা। ইনব্ক্সে রিপ্লাই এ বললাম কুদ্দুছরে যেন বলে দেয়- এ উইন্টার ডাজনট গো ইন ওয়ান মাঘ, এনাদার উইন্টার ইজ কামিং, ইউ ন নাথিং কুদ্দুইচ্ছা।
বলে উঠতে যাবো, হঠাৎ দেখি ব্ল্যাক গ্লাসের একটা গাড়ি, ভেতরে ব্ল্যাক সানগ্লাস, ব্ল্যাক কোট পরা ড্রাইভার। বুঝলাম আই এম এ টার্গেট নাও, ডান পকেটে হাত দিয়ে ঠান্ডা মেটালের অনুভূতি পেলাম, আমার মেশিনটাকে শক্ত করে ধরলাম। শার্টের পকেট থেকে সানগ্লাসটা বের করে চোখে দিলাম। আই অ্যাম এজ রেডি এজ ইউ আর মি. `ব্ল্যাক কোট ব্ল্যাক সানগ্লাস`। গাড়ির ড্রাইভারের চোখের দিকে তাকালাম, দেখি তার দৃষ্টি আমার ডান পকেটের দিকে। উই আন্ডারস্টুড ইচ আদার, সে ধীরে ধীরে গাড়ি নিয়ে চলে গেল। আই লিভ ফর এনাদার ডে"
৭) এখন যার কথা বলবো, উনার বিশেষত্ব হলো বিজ্ঞাপন। অর্থাৎ উনি যাই করুন না কেন, যেই স্ট্যাটাস ই দেন না কেন, তার মাঝে এক টুকরো বিজ্ঞাপন গুঁজে দেবেন। সেটা হতে পারে, গাড়ির বিজ্ঞাপন, বাড়ির বিজ্ঞাপন, বই এর বিজ্ঞাপন, মই এর বিজ্ঞাপন এমন কি নিজের বিজ্ঞাপন। চলুন দেখি এরকম বিজ্ঞাপনী ফ্লেভারের স্ট্যাটাস।
আনিয়েলা হর্কেজ?
নাম শুনে বুঝলাম, এবার আমার পালা। ইন্টারভিউ দিতে এসেছি। দুরু দুরু বুকে ঢুকে পরলাম এমডির রুমে, যেখানে ইন্টারভিউ হবে।
আপনি আনিয়েলা হর্কেজ? সিভি থেকে চোখ সরিয়ে পুরু চশমার উপর দিয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন এমডি।
জি। সংক্ষিপ্ত করে উত্তর দিলাম।
এই নামে এক্জন বিখ্যাত লেখক আছেন, জানেন?
এবার আমার অবাক হওয়ার পালা। বুঝলাম এমডি সাহেবের একটা গুণ হলো তিনি এখনো নিয়মিত বই পড়েন, এই কর্মব্যস্ততা ও ভীষণ চাপের মধ্যেও সাহিত্য পাঠ করেন, গল্পের বই পড়েন।
আমি নিজের পরিচয় দিলাম। এমডি সাহেবের স্মৃতিশক্তি অসাধারণ এবং বিস্ময়কর ভাবে, হাজার হাজার বইয়ের মধ্যেও এই লেখকের বই এর কথা তিনি মনে রেখেছেন। জানালেন ওনার প্রিয় বই, আমার লেখা "ডায়রিয়ার দিনগুলিতে মোবাইলে ফেসবুকিং"। ইন্টারভিউ আর কি নেবেন, বই নিয়েই আলোচনা করলেন।
চাকরিটা আমি পেয়েই গেলাম।
৮) এইবারের জঁনরার ছেলেবেটিরা মূলত নারী। উনারা নারী অধিকার নারী স্বার্থ নিয়ে সোচ্চার কিন্তু নারীর প্রতি চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে যেয়ে লুল পুরুষ ফলোয়ারদেরকে হারাতে চান না। ওনাদের স্ট্যাটাসের নারী চরিত্ররা হুমায়ুনের গল্পের মতন ই অসম্ভব রুপবতী, গুণবতী, মায়াময়ী এবং সর্বংসহা। আগা গোড়া নারীবাদি স্ট্যাটাসের মাঝে তারা এক্টুশ খানি পুরুষতান্ত্রিক স্যান্ডউইচের পুর দিয়ে দেন। এরকম একজন ছেলেবেটি আমাদের পাঠিয়েছেন, নারীবাদী ফ্লেভারের স্ট্যাটাস -
সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠে, সবার নাস্তা রেডি করে, স্বামীকে অফিস বড় ছেলেকে স্কুল এ পাঠিয়ে, বুয়াকে ছোট ছেলের দায়িত্ব বুঝিয়ে যখন ইন্টারভিউ দিতে পৌছুলাম তখন এসিতেও দরদর করে ঘামছি আমি!! সবে ইন্টারভিউয়ার ভদ্রলোককে হেলো বলে বসেছি, তখনি ওর টেক্সট- হাই গর্জিয়াস,কেমন চলছে তোমার ইন্টারভিউ?? ইউ মাস্ট বি লুকিং স্টানিং!! একটা সেলফি পাঠাও না,হানি!! টেক্সট টা পেয়ে বরাবরের মতই বিব্রত হলাম আমি!! উফ কি যে অস্বস্তি!! উফ এই ভন্ডামি আমি আর নিতে পারছিনা!!এই অপ্রোজনীয় প্রশংসার টেক্সট এ আমার ফোন এ মেমরি ভরে গেছে!! সারাক্ষণ আমার চোখ, চুল, ঠোট, আমার কার্ভ এর প্রশংসা!! ইট হ্যাজ বিকাম আ নাইট মেয়ার টু মি!! ইন্টারভিউ যিনি নিচ্ছিলেন, তিনিও লক্ষ্য করলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কী ব্যাপার? মোবাইলে কেন মনোযোগ দিচ্ছি? জরুরী কিছু নাকি। আমি ইতস্তত করে বললাম নাহ, আমার হাজব্যান্ড। ভদ্রলোক অবাক হলেন। কিন্তু আমি ওনার দৃষ্টি অনুভব করি, আমার সারা শরীর ঘুরে আসে, কোন অংশে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময়ে থেমে থাকে। আমি হাসি। বিবাহিত পুরুষেরা তো এমন ই। তাদের চেয়ে বউদের উপর আমার মেজাজ খারাপ হয়। বেয়াক্কেল মেয়েছেলে গুলো সব। বশ করতে পারো না স্বামীকে?
- হাজব্যান্ড না বয়ফ্রেন্ড? হেসে হঠাৎ জিজ্ঞেস করলেন উনি।
আমি হেসে বললাম, হাজব্যান্ড - আমার সাথে প্রেম করবে কে?? দুইবাচ্চার মা,বুড়ি,চার্মলেস!!
-নো ডিয়ার,দ্যাট্স নট ট্রু!! মেয়েদের যৌবন শুরু হয় ত্রিশের পরে!! সংসার সেটেল্ড, বাচ্চা জন্ম দেয়া শেষ, এবার এনজয় কর লাইফ। বুঝলেন? ইন ফ্যাক্ট উই কেন বি ফ্রেন্ডস। এবার আমার অবাক হওয়ার পালা।
আমি একটু উষ্ণ হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ইস দিস এন ইন্টারভিউ?
- ইন্টারভিউ এ টেকনিক্যাল প্রশ্ন ই করতে হবে এমন কোন বাঁধা ধরা নিয়ম আছে? আপনি বরং আপনার স্বামী সম্পর্কে বলুন। ধরে নিন এইটা পার্ট অব ইন্টারভিউ।
আমাকে বলতে হবে আমার স্বামী কেমন!! আমি খানিকটা ইতস্তত করে কয়েকটা টেক্সট পরে শোনালাম!! তারপর বললাম- এটা কোনো প্রেমিকের নয় আমার এগারো বছরের পুরনো স্বামীর পাঠানো টেক্সট!!
হাহা করে হেসে উঠলেন ভদ্রলোক। লাকি ইউ। ইউ গট দ্যা জব!
৯) এবার 'দ্যা ইনবক্সারের' পালা। এই প্রকৃতির ছেলেবেটিরা কথায় কথায় ইনবক্সকে ধরে টান দেন। ধরা যাক, ছেলেবেটি মহাশয়ের কোন মহান উপদেশ বা বাণী প্রসববেদনা উঠেছে, কিন্তু উপযুক্ত পিতার অভাবে(অর্থাৎ সাম্প্রতিক কোন আলোচিত ঘটনা) স্ট্যাটাস প্রসব করতে পারছেন না। এরকম ক্ষেত্রে, উনি ইনবক্স ধরে টান দেন। অর্থাৎ স্ট্যাটাসখানা শুরু করেন, "ইনবক্সে আমার কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছেন..." বলে। অনেকে আবার এর চেয়েও এক ধাপ এগিয়ে, তারা ইনবক্সেও না কুলায় উঠলে, টেলিফোন অর্থাৎ - "সেদিন ফোন করে এক পাঠিকা বললেন ...." কিম্বা সামনা সামনি সাক্ষাৎকেও উপলক্ষ্য বানিয়ে নেন - "কালকে লাঞ্চ খাচ্ছিলাম হোটেল সালাদিয়ায়, হঠাৎ দেখা এক পাল ভক্তের সাথে। তারা জানতে চাইলেন..."। মূখ্য উদ্দেশ্য হলো, আপনি যদি তাকে ফলো করা ভেড়ার পালের একজন হয়ে থাকেন, তাহলে যেন অবিলম্বে তাকে ইনবক্সে একটা দুইটা ম্যাসেজ পাঠায়ে দেন। চলুন দেখা যাক, এরকম একজন ছেলেবেটি আমাদের কী স্ট্যাটাস পাঠালেন,
"একটা ইনবক্স মেসেজের প্রচণ্ড ভাললাগা একটা লাইন শেয়ার করছিঃ ছেলেবেটি, তোমার লেখা আর কথা থেকে যারা বুদ্ধি পরামর্শ পায়, তারা যদি তোমাকে ট্যাকাটুকা দিতো, তাহলে যেকোন ক্যারিয়ার কাউন্সিলরের চেয়েও তোমার ১০০গুণ বেশী আয় হত। মেসেজ যিনি পাঠিয়েছেন, তিনি একটা ব্যাতিক্রম, কিন্তু ইনবক্সে শুধু ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলতে আমার আর ভাল লাগে না। খুব খুব বেশি বিরক্ত লাগে!! শুধু ক্যারিয়ার নিয়ে জানতে আমার বন্ধু হওয়ার কী দরকার? আমার সব কনটেন্টই তো পাবলিক-করা! একটু কষ্ট করে পড়ে নিলে কী হয়? আর চাকরীর ইন্টারভিউ এ ফার্স্ট হয়েছে, এমন কারোর ফ্রেন্ডলিস্টে থাকলে চাকরি পাওয়া যাবে, এটা কোন আইনের বইতে লেখা আছে?
হ্যা, আমি ইন্টারভিউ-এ ফার্স্ট হয়েছি, চাকরি পেয়েছি। কিভাবে আপনিও চাকরি পাবেন, তা নিয়ে লেখালেখি করছি। কিন্তু আপনার মতন দামড়া ব্যাটাদের একটা সিলি মেসেজের জন্য অনেক অনেক সুন্দরীর গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ চলে যায় ১০০টা মেসেজের পর। আর আমার চোখেও পড়ে না। বলেন, এটা কি ঠিক? :/ বিশ্বাস করেন, আমিও একটা মানুষ!! আমার দিনও ২৪ ঘণ্টায়। জনসেবা করা আমার একমাত্র কাজ নয়! ইনবক্সে কোন সুন্দরীর 'হাই-হ্যালো' দেখলে আমিও খুব খুশি হয়ে লাফিয়ে উঠি; ঠিক আপনার মতোই! তাহলে কেন, আপনারা আমাকে এভাবে ম্যাসেজ দিয়ে দিয়ে বিরক্ত করেন?"
১০) সর্বশেষ গ্রুপের ছেলেবেটিরা সহী মোছলমান, ধর্ম নিয়া থাকেন, খেলার সাথে রাজনীতি না মেশানোর মতন ওনারা ধর্মের সাথে রাজনীতি মেশান না। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ফাঁসির রায় নিয়ে কেউ আনন্দোল্লাস করলে তার বিরুদ্ধে ওনারা। যদিও যুদ্ধাপরাধীদের কৃতকর্ম সম্পর্কে এরা একেবারে নিশ্চুপ। রোহিংগাদের জন্য, ফিলিস্তিনিদের জন্য, মার্কিন সেনার হাতে নিহত আফগান বা ইরাকিদের জন্য এদের প্রাণ কেঁদে কেটে একাকার, কিন্তু সিরিয়া, লিবিয়া বা আইসিস কিম্বা তালেবানদের হাতে নিহত ইরাকি বা আফগানদের জন্য বিন্দুমাত্র সমবেদনা নাই। মোদ্দা কথা হালাল উপায়ে যদি মুসলিম মুসলিমকে মারে, তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু কোন বিধর্মীর হাতে মুসলমানের কিছু হলেই কইলাম দুইটা কথা আছে। দিনের বড় একটা সময় এরা ফেসবুকে ব্যায় করে নাস্তিক, ইহুদী নাসারার বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিতে, কিন্তু সুবিধা নেওয়ার বেলায় তাদের তৈরী কম্পিউটার বা ফেসবুক ব্যাবহার করতে পিছপা হয়না। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে যেয়ে খেতে খেতে ইন্ডিয়ানদের বিরুদ্ধে বিষাদগার করা। হিপোক্রেসির চুড়ান্ত! তাছাড়া ধর্ম আর সমাজ সেবার নাম করে অনেকেই ইহজাগতিক রুটি রুজির ও ব্যাবস্থা করে ফেলছেন। এরকম একজন মহান ছেলেবেটি আমাদের পাঠিয়েছেন এছলামী ফ্লেভারের স্ট্যাটাস।
অর্থ উপার্জনের সংজ্ঞাটা এখন বদলে গেছে। বেশিরভাগ মানুষই এখন চাকরি করে। চাকরি মানে কী? একটা বিশাল যন্ত্র। যারা চাকরি করছে তারা এর অংশ। এসব যন্ত্র যারা চালাচ্ছে তারা আমাদের ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করছে। যা আয় করছে তার সামান্য অংশ আমাদের দিচ্ছে। আমরা সেই টাকা দিয়ে মুরগির হাড় চিবুচ্ছি কিংবা ইলিশের পেটি খাচ্ছি। এরকম একটা চাকরির জন্য ইন্টারভিউ এর ডাক পেয়েছিলাম। যাইনি আর।
রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহ করেছেন। চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ইমাম আব্দুস সবুর ভাই এসেছেন। ট্রাকে নিয়ে এসেছেন অর্ধেক ট্রাক গোপালভোগ আম। দাম ঠিক করা হয়েছে মাত্র ৮০ টাকা/কেজি। আমাদের দ্বীনী ভাই যারা বিষ এবং ভেজালমুক্ত আম বা লিচু খেতে চান তাদের কাছে আম লিচু ছাড়াও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা, বিনামূল্যে। দামটাও হাতের নাগালে থাকছে। এই ব্যবসা থেকে যে লাভ থাকছে তার একটি অংশ আমরা রিকশাওয়ালা, বস্তিবাসী এবং মাদ্রাসার বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য ব্যয় করব ইন শা আল্লাহ। সবাইকে গ্রীষ্মফল খাওয়ানো ও খাওয়ার আমন্ত্রণ রইল। অর্ডার করার লিঙ্ক কমেন্টে।
আর তাছাড়া আপনারা যারা নিজেরা খেতে চান না, কিন্তু মাদ্রাসার দরিদ্র অসহায় শিশুদের ফরমালিন মুক্ত আম লিচু খাওয়াতে চান, তারা টাকা পাঠাতে পারেন। বিক্যাশ নাম্বার পাবেন দ্বিতীয় কমেন্টে।
জাজাকাল্লাহ খায়রান।
উল্লেখ্য, সচলায়তনের পাঠকদের জন্য ছেলেবেটিরা স্ট্যাটাস দেওয়া ছাড়াও আরো কিছু টিপস শেয়ার করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পাঠকের ফিডব্যাক। এই জন্য আপনার কিছু ফেইক আইডি লাগবে। স্ট্যাটাস দেওয়ার পরে সেই সব আইডি থেকে লগ ইন করে লাইক এবং কমেন্ট দিতে হবে। কমেন্টে সব রকম ফেসবুক পাঠকের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে, যেমন - দুই একজন মুরাদ টাকলা থাকতে হবে। এমন কিছু ভক্ত থাকতে হবে যারা কারণ ছাড়াই আপনাকে স্যার বলে সম্বোধন করবে, গদগদ হয়ে আপনার প্রশংসার বন্যা ভাসিয়ে দিবে। কিছু ধার্মিক ভক্ত যেমন সৃষ্টিকর্তার কাছে আপনার মঙ্গল কামনা করবে, আবার কিছু মৌলবাদী ধার্মিক আপনার টাইমলাইনে পোস্ট করা কারো ছবির ওড়না ধরে টানাটানি করবে। সবশেষে দুই একজন থাকবে যারা বন্ধু তালিকায় এড করার জন্য সাধাসাধি করবে। ব্যাস তাহলেই আপনি সেট। একটা আলোচনার আবহ তৈরী হবে, আর সেই আবহে লাইকে কমেন্টে ভরে যাবে আপনার স্ট্যাটাস।
সবাইকে হ্যাপি ফেসবুকিং।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ আমি এবং আমার বন্ধু ব্যাতীত এই ব্লগে উল্লেখিত সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তব কারোর সাথে মিল খুঁজে পেলে তা অনভিপ্রেত কাকতাল মাত্র।
মন্তব্য
সতর্কীকরণ দেইখা বুঝলাম, আমার কল্পনাশক্তি এতই ভাল যে সেটা বাস্তব হয়ে যায়!
বাই দ্য ওয়ে, প্রথম পর্বের পর দ্বিতীয়-তৃতীয় এইগুলা বাদ দিয়া শেষ পর্ব ক্যান? হুয়াই?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কয়েকদিন কিছু ছেলেবেটিরে স্টকিং করে আমার নাভিশ্বাস উইঠা গেছে। এই ব্যাব্সায় আর আমি নাই।
আনিয়েলা হর্কেজ?
"ডায়রিয়ার দিনগুলিতে মোবাইলে ফেসবুকিং"।
ওফ! চরম!!
____________________________
বইটা কিনবেন কিন্তু।
কী কল্লেন!
_________________
[খোমাখাতা]
আঁই কিচ্চি?
কট। 'রাখী সাওয়ান্ত'।
আই গেস, 'দুঃশাসন'।
কিন্তু শালীন আফা আসেন নাই, দুবলা আফা বাদ পড়েছে, হিজাবী সুচন্দার গঠনা মিস করেছেন, সিডর আর সিডরসখীর কথা নাই...
ধুর, কী আর লিখলেন তাহলে!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
শালীন আফা তো ওরকম ফেমাস না, এরটা ওরটা টুকলি করে আর মেকাপ করে তার দিন কাইটা যায়। দুবলা আর হিজাবী সুচন্দারে তো ছিনলাম না! কত কিছ জানার বাকী!
দুবলা আর হিজাবী সুচন্দা একই ব্যক্তি ভাবছিলাম। না?
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আপনিই লিখে দ্যান, নিষেধ নাই তো।
facebook
আনিয়েলা হর্কেজ
আমি মইরা যামু, ক্যামনে পারো, ম্যান??
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
"একটা লেক্সাস গাড়ি বিক্রি হবে"
মাথা ঘুরিচ্ছে ভাইডি। ক্যামনে লিখেন এইসব?
"ডায়রিয়ার দিনগুলিতে মোবাইল ফেসবুকিং" এইটা চরম হইসে
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
বইটা কিনতে ভুলেন না কিন্তু।
আরেকটা গবেষনায় বসতে হবে। এরে তারে ধরতে হবে। কারণ মাত্র একজনরে চিন্তে পারছি।
কিন্তু যথাবিহিত সম্মানপূর্বক বইলতেছি, বুলগ সাব্বাশ হয়েছে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ভাল থাকতে চাইলে এদের না চিনাই ভালা।
কাউকেই চিনতে পারলাম না।
কাল্পনিক তো, না চিনাই স্বাভাবিক
'আনিয়েলা হর্কেজ' এর 'ডায়রিয়ার দিনগুলিতে মোবাইলে ফেসবুকিং' - এই একজনকে চিনলাম, আর ইনবক্সার আর এছলামী প্যাটার্ন চিনলাম, অন্যগুলো বুঝি নাই।
বাঁচতে হলে জানতে হবে। :-P
আরেহ যাহ্, শেষ! শুরু না হইতেই! ওয়ান মোর, ওয়ান মোর!
facebook
কী কন! অনেক বড়ই তো হয়েছে!
লেখা পড়ে ব্রেইনস্টর্মিং করতে বেশ ভাল লাগে। কমপক্ষে তিনজনকে ধরতে পারছি নিজে (যদিও সব কাল্পনিক)।
-হুঁকোমুখো হ্যাংলা
একদম কাল্পনিক।
‘আনিয়েলা হর্কেজ’টা মারাত্মক । একেবারে জমাটি লেখা।
দেবদ্যুতি
ধন্যবাদ।
একজনকে চিনতে পারলাম। খারাপ হয়নাই।
অলস সময়
ধন্যবাদ।
অসাধারন লেখেছেন
ধন্যবাদ।
এত জলদি শেষ করে দিলেন?? আরো কত আইটেম বাকী!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ছেলেবেটি ফলো করতে যেয়ে জেরবার।
চিন্যালাইছি...
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
শেষ পর্ব মানে!
না না, আরও কয়েক পর্ব লিখেন। কতো বাকি রয়ে গেলো!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
এই পর্বটা বেশি জমেনি, পরের পর্ব আসুক।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ফেসবুকিং বাড়ায় দিতে হবে, কাল্পনিক কেউরে চিন্তেছিনা ক্যান?
তয় লেখা জম্পেশ
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
নতুন মন্তব্য করুন