নাসা মঙ্গল গ্রহে পানির খোঁজ পেয়েছে। সেই নিয়ে সারা পৃথিবী উত্তেজিত! বিজ্ঞানীরা প্রাণের সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তিত, ধার্মিকেরা ধর্মগ্রন্থে এর পূর্বাভাস খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত। কিন্তু এক শান্তিনিকেতনে কোন উচ্চবাচ্চ নেই। কারণ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই ১৮৯০ সালেই মঙ্গলে পানি দেখেছিলেন। কবিগুরু বলে কথা, পানির খোঁজ পেয়েই মনের আনন্দে তিনি গেয়ে উঠলেন -
আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর
অর্থাৎ কী আনন্দের ব্যাপার! মঙ্গলে (পানি) আছে - ইহাই সত্য। সেই আমলের বৈজ্ঞানিক গোপনীয়তার কথা কবি জানতেন, তাই আবিষ্কারের কথা সাংকেতিক ভাষায় লিখতে থাকেন। নইলে ইহুদী নাসারারা সেইটা চুরি করে নিজের নামে ছাপিয়ে দিবে। তাই হয়ত তিনি এক্সপ্লিসিটলি পানি শব্দটা লিখে যান নাই। কিন্তু কবিতার পরেও আরো কয়েক জায়গায় তিনি এর ইশারা দিয়ে গেছেন।
বিজ্ঞানী মাত্রই জানেন যে আবিষ্কারের সাথে এও বলতে হয় কি প্রক্রিয়ায় আবিষ্কার করা হয়েছে। যেন অন্য কেউ চাইলে তা পুনরায় করে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে। তাই এর পরেই তিনি গাইলেন যে কিভাবে তিনি এই আবিষ্কার করলেন-
মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগনমাঝে
অর্থাৎ মঙ্গল যখন আকাশে উদ্ভাসিত হলো, তখন কবি আকাশের দিকে তাকালেন, আর তখন ই ব্যাপারটা দেখতে পেলেন। এই আবিষ্কারের গুরুত্ব অনুধাবন করেই কবি বুঝলেন যে বিশ্বজগতে এই সংবাদের গুরুত্ব কতখানি হতে পারে। সমগ্র বিশ্বে তিনি বিখ্যাত হবেন আর টাকা/পয়সা/মণি/মুক্তা, যশ, খ্যাতি সবই তার পায়ে এসে লুটাবে। তাই তিনি বললেন -
বিশ্বজগত মণিভূষণ বেষ্টিত চরণে
কিন্তু হায়, সেই আমলের অনুন্নত বিজ্ঞানের কারণে কবির এই আবিষ্কার অন্তরালেই থেকে যায়। এর পরেই কবির মাথায় নতুন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আসলো। উনি বুঝতে পারলেন, এই যে আমাদের বিশ্বব্রহ্মান্ড। এরা স্থির না। বরং এরা শূণ্যের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলেছে অবিরত। খিটমিটে পদার্থ বিজ্ঞানীরা কবিতা পড়লে বহু আগেই কবিগুরুর থেকে এইটা জেনে নিতে পারতেন। অথচ তার ও প্রায় ৩০ বছর পরে বিগ ব্যাঙ থেকে সম্প্রাসারণশীল মহাবিশ্বের ধারণা নতুন করে প্রবর্তিত হয়। কিন্তু দেখুন কবি কিন্তু ঠিকই লিখে গেছিলেন -
গ্রহতারক চন্দ্রতপন ব্যাকুল দ্রুত বেগে
অর্থাৎ গ্রহ, তারকা, চাঁদ, সূর্য সবাই দৌড়ের উপরে আছে। দ্রুত বেগে ব্যাকুল হয়ে ছুটে চলেছে। কবির মন, সদা চঞ্চল। অস্থিরমতি কবির এই পর্যায়ে আবার মনে পড়ে, মঙ্গলের কথা। তখন তিনি আবার ইঙ্গিত করেন -
করিছে পান, করিছে স্নান, অক্ষয় কিরণে
ধরণী'পরে ঝরে নির্ঝর, মোহন মধু শোভা
ফুলপল্লব-গীতবন্ধ-সুন্দর-বরনে
অর্থাৎ মঙ্গলে যে শুধু পানি আছে, তা না। প্রাণ ও আছে। তাদের তিনি দেখেছেন। তাদের তিনজনকে কবি নাম দিলেন মোহন, মধু আর শোভা। তারা ফুল লতা পাতা দিয়ে তাদের লজ্জ্বা নিবারণ করে। তারা দেখতে সুন্দর। অবশ্য কবি মানুষ তার চোখে সবাই সুন্দর। মঙ্গলের যেই পানি নিয়ে এখন এত হাউকাউ, তারা সেই পানি খায় এবং সেই পানিতে গোসল করে। যদিও জিনিসটা স্বাস্থকর না। তাই পানি খাওয়ার আগে পানি তারা কিরণ অর্থাৎ সৌর শক্তি দিয়ে ফুটিয়ে নেয়। মনোযোগী পাঠক হয়ত লক্ষ্য করবেন যে কবি বলেছেন, অক্ষয় কিরণ। অর্থাৎ সৌর শক্তি যে শক্তির নিত্যতা সূত্র সমর্থন করে, সেইটার সংকেত দিয়ে কবি বুঝাতে চেয়েছেন যে সৌর শক্তি থেকে অন্য শক্তির রুপান্তর সম্ভব। কিন্তু এইটা আজকের আলোচ্য বিষয় না বলে, আমরা আর বিস্তারিত সেই আলাপে গেলাম না।
সুতরাং নাসাসহ সকল বৈজ্ঞানিক সংগঠনের কাছে আমাদের আর্জি, কবিগুরু শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তার আবিষ্কারের প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হোক।
মন্তব্য
হা হা হা! ব্যাপক মজা পেলাম পড়ে! আপনার ব্যাখ্যার স্টাইল দেখে মুগ্ধ হলাম, ইশকুলে পড়াকালীন কয়েকজন শিক্ষক পেয়েছিলাম, যারা ধর্মগ্রন্থকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দেবার জন্যে এরকম 'ইশারা' খুঁজে বেড়াতেন। মনে পড়ে গেলো!
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
নিয়ম করে রবিঠাকুর পড়ুন, জীবনের সকল সমিস্যার সমাধান পাবেন।
আপ্নে খেলা রাজনীতি মঙ্গল পানি রবীন্দ্রনাথ আনন্দ সব কিছু একসাথে মিশাইয়া ফেলছেন মিয়া ভাই।
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
তাও ভাল ধর্মরে টানেন নাই
খাইছে!
কে? কী?
আপনে নাস্তেক। আপ্নের পুসি কায়।
ছিহ, এইভাবে খেলার সাথে রাজনীতি মেশাবেন না। ৫৭ ধারায় নালিশ করে দেব কিন্তু।
জটিলস্য জটিল হইসে।
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
ধমাধম ধর্মাবলম্বীরা কি এই পোস্টের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করতে পারবে?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দারুণ।।।।।
হু
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ওরে কঠোর
হা হা হা! সেই রকম হইছে!
মুসল্মান কবি কাজী নজরুলের লেখা থেকে হিন্দু কবি রবীন্দ্রনাথ এসব চুরি করেছেন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হা হা হা
বলদ মানুষ
বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট
-পিয়াল
াাাা
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
যাদের বোঝার দরকার তারা কিন্তু বুঝবে না। দারুণ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কে বলেছে বুঝবে না। অনেকেই দেখবেন হিন্দু কবি রবীন্দ্রনাথকে পচানো হয়েছে বুঝতে পেরে লাইক/শেয়ার দিবে।
রেগে ছিলাম অনেক, আপনার লেখা পড়ে মন গলে পানি হয়ে গেলু
নাসা কিন্তুক অন্য কথা বলছে:
ছবির সূত্র: http://apod.nasa.gov/apod/ap050401.html (এরা রসিক আছেন বটে)
মঙ্গলে যে শুধু পানি পাওয়া গেছে তাই না, ওখানে নারী(!) ও দেখতে পাচ্ছেন অনেকে:
এখান থেকে
আরেকজন অবশ্য হেঁটে বেড়াচ্ছেন:
দুনিয়ার মানুষ বড়ই কল্পনাপ্রবণ।
শুভেচ্ছা
বুরখা পিন্দে আছেনাকি!?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ঐটা রবি বাবু জানেন। রবীন্দ্রনাথ + মঙ্গল + নারী + বসন লিখে গুগল করুন।
অস্থির ছিল! এককালে এই রকম লতায় পাতায় প্যাচানো লিংক দেখে তাজ্জব বনে যেতাম। এও সম্ভব! নিশ্চয়ই এর মধ্যে কিছু আছে। এখন মজা লাগে। সেই লতা-পাতা এমন সবুজ-শ্যামল-সুন্দর লেখা দেখলে আরও ভাল লাগে।
সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক খবর। কোনরকম যোগসূত্র পাইলে ৫৭ ধারা কতপ্রকার ও কি কি শিখিয়ে দেয়া হবে!
লেখা সিরাম হয়েছে!
ফারাসাত
তবে এই কমেন্টটা চরম --
"Kristof (United Kingdom): I agree 100%. Travelling to the moon or mars completely contradicts the Lord's teachings. If Lord wanted us on mars or the moon, then he would've put us there."
ঐগুলা যে পানি কেমনে বুঝলেন? ওইগুলা কি জানেন? ওইগুলা হইল গিয়া জ্বীনের পিশাব, মূ'মীনরা যখন জিকির-আযগারে ব্যস্ত থাকে তখন খারাব জ্বীনরা ভয়ের চোটে ঐখানে গিয়ে পাহাড়ের উপর উঠে, তারপর পিশাব করে দেয়। যেখানে কোন মূ'মীন মানুষ নাই সেখানে আল্লাহ-পাক কেন পানির নহর সৃষ্টি করবে?
হা হা হা হা হা হা
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
facebook
দেবদ্যুতি
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এখনো সময় আছে ধর্ম টর্ম লাইনে যান। খুব শীঘ্রই জাকির নায়েক জাতীয় কেউ হয়ে যেতে সময় লাগবে না।
অনেক অনেক ভালো লাগলো
ডেঞ্জারাস!
আপনি তো মঙ্গল দ্বীপ জ্বেলে, অন্ধকারে দুচোখ আলোয় ভরে দিলেন ভাই।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
মেলাদিন পরে একটা উচ্চমার্গের স্যাটায়ার পড়লাম । লাগে বলে মেফোস্টোফিলিস ...
মামুনুর রশীদ
mamun babu 2001 at gmail dot com
===================================
হাজারো মানুষের ভিড়ে দাড়িয়ে আমি মানুষেরেই খুঁজে ফিরি
নতুন মন্তব্য করুন