গোড়ার কথা :
মূলত তাদের জন্যই লেখার চেষ্টা করব যারা ক্লাস বা কাজের ফাঁকে আঁকছেন কিন্তু দিকনির্দেশনার অভাবে মনমতো পথে এগোতে পারছেন না। আমার উদ্দেশ্য তাদের কাছে আঁকাআঁকির বিস্তারিত নিয়ম ও মাধ্যমগুলোর বিভিন্ন বিষয়ে খুঁটিনাটি যতদূর সহজে সম্ভব তুলে দেওয়া। যদি উপকারে আসে, তৃপ্তি পাবো।
আমি নিজে কার্টুন আঁকি, গল্পের ইলাস্ট্রেশন করি, ক্যারিকেচার করি, এবং সুযোগসুবিধেমতো গ্রাফিক্স ডিজাইনও করি। ভেবে দেখলাম, যে মানের কার্টুন, ইলাস্ট্রেশন, ক্যারিকেচার করতে চাই তার জন্য প্রয়োজনীয় বেসিক ‘gesture drawing’, ‘anatomy’, ‘character design’ এগুলো আমার এখনো সেভাবে শেখা হয় নি। তাই নতুন করে প্র্যাক্টিস শুরু করছি, আমি আমার স্কেচ খাতায় যা আঁকব এবং নিজে যেভাবে বুঝবো সেভাবেই তুলে ধরবো। বেসিক লাইন ড্রয়িং, কন্সেপ্ট ড্রইং, থেকে অ্যাডভান্স ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটরের এর কাজ পর্যন্ত যাবো পর্যায়ক্রমে।
আঁকতে যা লাগবে:
১. স্কেচ খাতা থাকলে ভালো তবে আমি A4 পেইজে প্র্যাক্টিস করতে পছন্দ করি, কারণ পেইজটা নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে। আপনারা A3 স্কেচ খাতা কিনতে পারেন।
২. পেন্সিলের 2H, H, HB, 2B, 4B, 5B, 6B, 8B বলতে বুঝায় হাল্কা দাগ থেকে গাঢ় দাগ। যতো H বাড়বে শিষ ততো শক্ত হবে, ভোঁতা হবে দেরিতে, তাই সূক্ষ্ম কাজ ও হাল্কা কাজ করতে সুবিধে। HB মাঝামাঝি। B যতো বাড়বে দাগ গাঢ় হবে শিষ ততো নরম হবে, মোটা আর গাঢ় দাগ দিতে সুবিধে। আমি 4B দিয়ে প্র্যাক্টিস করি। আপনারা HB, 2B অথবা 4B ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ইরেজার: প্রথমে যেকোনো একটা দিয়ে শুরু করতে পারেন। তবে ইরেজারের ক্ষেত্রেও 2B, 4B আছে। চুইঙ্গামের মতো নরম ইরেজারও আছে। 4B নরম ইরেজারটা কিনতে পারেন। আঁকাআঁকির সরঞ্জাম ভালো ও সস্তায় কেনার দোকান জানা আছে। জানতে চাইলে জানাবো।
আজকের প্রসঙ্গ: দাগ
সব ধরনের আঁকা দাগ দিয়েই শুরু হয়। দাগের ওজন ও গতি ঠিক থাকলেই দাগ ভালো লাগে। দাগের একঘেয়েমি দূর করতে দাগ টানার দিক ও ওজনের পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। কিছু রিয়েলিস্টিক ছবিতে গম্ভীর অনুভূতি আনতে দাগের ওজন সমান রাখা হয়। উদাহরণস্বরূপ সত্যজিৎ রায়ের ইলাস্ট্রেশানগুলো দেখতে পারেন। তবে সব দাগের মাপেই সব অনুভূতি দেওয়া সম্ভব সেটা নিয়ে আলোচনা করবো যখন ‘ক্যারেক্টার ডিজাইন’ প্রসঙ্গে কথা হবে। দাগ টানার সময় পেন্সিল্টা আস্তে করে ধরে একটানে সহজ ভাবে টান দিয়ে আঁকতে হবে। দাগের ওজন পরিবর্তনেরর জন্য পেন্সিলের চাপ বারাতে কমাতে হবে। ছবির ১ ও ২ নং দাগের দিক একই হলেও ওজনে পার্থক্য আছে। সবুজ দাগ দিয়ে বুঝিয়েছি দাগ টানার দিক। লাল দাগ দিয়ে বুঝিয়েছি দাগ দুই পাশে সমান হলে একঘেয়ে অথবা গম্ভীর অনুভূতি আসে।
অ্যাকশান লাইন :
‘Action line’ শব্দটি মনে রাখবেন। অ্যাকশান লাইন মানে হলো যে ক্যারেক্টারটি আঁকবেন তার কাজের ভঙ্গি এক দাগে প্রকাশ করা। হতে পারে ক্যারেক্টারটি দাঁড়ানো, হতে পারে দৌড়াচ্ছে, হতে পারে লাফ দিচ্ছে। নিচের ছবিতে উদাহরণ দিচ্ছি। ২টি ভিন্ন অ্যাকশান লাইন দিয়ে শুরু করলাম। ১নং ক্যারেক্টারটি উড়ে যাচ্ছে ও ২নং ক্যারেক্টারটি ধীর গতিতে যাচ্ছে। সবুজ দাগ দিয়ে দাগ টান দেওয়ার দিক নির্দেশ করছি।ক্যারেক্টার কীভাবে ডিটেইল করবো এটা পরে অবশ্যই আলোচনা করবো আপাতত ‘অ্যাকশান লাইন’ ব্যপারটি বুঝাতে চাইছি।
উপরের কোনোকিছু বুঝতে সমস্যা হলে প্রশ্ন করতে পারেন। পরের লেখাতে ‘gesture drawing’ নিয়ে আলোচনা করবো। কেউ যদি বাড়ির কাজ নিতে চান নিবেন। আমার ই-মেইলে পাঠালে আমি দেখে দিতে পারবো।
মন্তব্য
চমৎকার সিরিজ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সিরিজ আরো লম্বা হোক, সাথে পর্বগুলিও আরেকটু বড় হোক।
করব হিমু ভাই ধন্যবাদ :)।
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
============================
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
তুলিপসন্দ আঁকাইন ভাই,
ইস, সচল হলে এই সিরিজটিকে ৫ দিতাম! আবার শিশু হয়ে তোমার ইশকুলে ভর্তি হতে ইচ্ছে করছে!
রোমেল চৌধুরী
আপনার ব্লগস্পট ঘুরে আসলাম। সাদা চোখে দুর্দান্ত লাগলো আপনার কাজ। এগিয়ে যান।
আঁকা আমার দ্বারা হবে না। তারপরও এই সিরিজটি আগ্রহ নিয়েই পড়ছি।
________________________________
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো...
দুর্দান্ত। আপনারেই খুজতেছিলাম। বাড়ির কাজ দেন। তবে আগেই কইয়া রাখি আমি কিন্তু ক্লাস ওয়ানেই ড্রয়িংএ লাড্ডু খাওয়া পাবলিক। আর পোস্টগুলা আরেকটু লম্বা কইরেন।
অনন্ত
খাতা পেন্সিল নিয়ে প্রস্তুতি নেন পরের পর্ব আসছে। অনেক কিছু আছে।
============================================
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
============================
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
এতদিনে আঁকা-বুঁকি শেখার একটা পোস্ট পেলাম। একটা অনুরোধ, পর্বগুলা একটু ডিটেইলসে এ লিখবেন।
বানান!
আর লেখাগুলা একটু বড় কইরো, মানে বিবরণ গুলা। ইশকুলে আছিই, যদিও ফাঁকি মারতে আমি ওস্তাদ!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আরে ! আপনাকেই তো খুঁজছিলাম ভাইয়া!
আমি বাড়ির কাজ নিতে চাই!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
চমৎকার! চলুক সিরিজটি।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
চমৎকার সিরিজ!! যদিও যারা আঁকতে পারেন তাদের অমানুষ মনে করি
আনন্দী কল্যাণের মন্তব্য দেখে, আমি জানালার বাইরে থেকে হাজির আছি।
.
___________________________________________
ভাগ্যিস, আমার মনের ব্যাপারগুলো কেউ দেখতে পায় না!
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
আপনি তো বড়োই ভালো লোক, বলতে না বলতেই নতুন লেখা! আরো লিখুন (আর আঁকুন), খুব আগ্রহ নিয়ে বসে পড়লাম পড়ার জন্য। আর হ্যাঁ, আট্টু বড়ো হলে আম্মো খুশি হই।
চমৎকার সিরিজ.... অবশ্যই চলবে।
তবে একদিনের জন্য আরেকটু লিখলে প্র্যাকটিসটা ভাল হত।
সুস্বাদু। আবার খাবো।
মনে মনে এই রকম একটা লেখাই খুচ্ছিলাম।
ভাই, গতির দিকটা একটু দেখবেন।
আঁকাইনের ভক্ত হয়ে যাচ্ছি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পাংখা লাগল, দেখি নিজে একবার টেরাই মাইরা দেখি। পঞ্চ তারকা দাগায় গেলাম
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
হুম ! এইবার দেখি আঁকাআকিটা শিখে ফেলা যায় কিনা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কাজের জিনিস দিসেন ভাই।
অলস সময়
আপনার পাঠশালায় ছাত্র হিসাবে যোগ দিলাম।
আমাকে শেখাতে আপনার খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না আশা করি। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে। চার বছর বয়সী ভাগ্নীকে তিন টানে হাতি আঁকা শেখাতে গেলাম। আঁকা শেষ হবার ভাগ্নী বললো, মামা এটাতো হাতি না! এটাতো গরু!
কাকস্য পরিবেদনা
লোভনীয় সিরিজ। চলুক!
বস!!!!!!!!আপনাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ ।।।।।।। আপনার অত্যন্ত মনোযোগী ছাত্র।।।।।
আরেহ্! সিরিজ পছন্দ হল! ইমেইল ঠিকানা, বাড়ির কাজ, কই পাব?! আমিতো এমনি এমনি-ই আঁকি! (ওকে বেশি হয়ে গেল.. আঁকতাম!)
জলদি দেন পরের পর্ব!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ই-মেইল ঠিকানা, যখন বাড়ির কাজ দিব তখন পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ
============================
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
============================
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
গ্রাফিক্স ডিযাইনকে এখন জীবনের পাথেয় করে নিতে যাচ্ছি, ঈশ্বরই ভালো জানেন ঠিক করছি কিনা। ছোটবেলায় ছবি আঁকতাম ঘরে বসে, এখন স্কেচ করতে ভালো লাগে। স্কেচ করতে গিয়ে কিংবা ছবি আঁকতে গিয়ে যে উপলব্ধিটা আমার সব সময় হয়েছে, সেটা হলো confident line। আমি এভাবেই বলি। আমার কনফিডেন্ট লাইনের বড় অভাব। একটা কিছু আঁকতে গিয়ে চৌদ্দবার ইরেযার ঘষি। যেকোনো কিছু আবার আঁকতেও সাহস পাইনা, মনে হয় কনফিডেন্স পাইনা। তাই imitate করি। সামনে কিছু একটা রেখে আঁকি, কিংবা একটা ছবির নকল করি। হয়ে যায়। অনেকের কাছে ভালো লাগে, কিন্তু আমি তৃপ্তি পাই না। কারণ আমি যেটা করছি, জেনে করছি না, কনফিডেন্স বাড়ছে না। আজ যে জিনিসটা এঁকে প্রশংসা পেলাম, কালই হয়তো সেই জিনিসটা হুবহু আঁকতে পারবো না। কারণ, জেনে করিনি কাজটা- হয়ে গেছে।
নিজের পর্যবেক্ষণ শক্তি দিয়ে আর কত শেখা যায়? ঠিক এমন সময় আঁকাইন এলেন সুখবার্তা নিয়ে। খুব ভালো লাগছে পোস্টগুলো। গত পোস্টটাও ভালো লেগেছে।
একটা চাওয়া: গত পোস্টে আপনি যে যন্ত্রের amazon.com লিংক দিয়েছিলেন, সেটা তো আমরা পাবো না, আমরা কিভাবে শ্রেফ মাউস দিয়ে ফটোশপে যুঝতে পারি, সেটা আশা করি বিবেচনা করবেন।
আপনার ছাত্র হয়ে শিখবো, এবং অবশ্যই আঁকবো, ইনশাল্লাহ। বাড়ির কাজ পাঠাতে পারবো কিনা জানিনা, কারণ আমার স্ক্যানার-জাতীয় কিছু নেই।
চালিয়ে যান।
আমি নিজেও অনেক কিছু জানতাম না। আস্তে আস্তে অনেক কিছু শিখতে হয়েছে। আমি যা যা শিখেছি, সব নিয়েই আলোচনা করব।
ওয়াকম যাদের নাই, তাদের জন্য মাউস দিয়ে রঙ করার টিউটোরিয়াল দিয়ে শুরু করব এবং শেষে অ্যাডভান্স টিউটোরিয়াল হিসেবে ওয়াকম এর টিউটোরিয়াল যাবে।
আমি খুব বেশি ডিজিটাল পেইন্টিং করি নাই ৫টার মত মনে হয়। আমার অনেক কিছু শেখার বাকী এখনো।
মাউস দিয়ে করা আমার আগের একটা পেইন্টিং দিলাম।
ধন্যবাদ।
[img=auto][/img]
============================
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
============================
শুধু ভালোবাসা, সংগ্রাম আর শিল্প চাই।
নতুন মন্তব্য করুন