এরই মাঝে দুদিন বাংলাদেশ নিয়ে পত্রিকাটির প্রথম পাতা জুড়ে বিশাল নিউজ হলো। রানা প্লাজা নামক ভবন ধ্বসের মন খারাপ করা খবর। অন্য আট-দশ জন প্রবাসীর মত আমারও টেলিভিশন-পত্রিকায় বাংলাদেশ শব্দটি দেখলে বা শুনলে দৃষ্টি আটকে যায়, কান খাড়া হয়ে যায়। ডিকশনারি খুলে হোক, গুগোল ট্রান্সলেটর দিয়ে হোক কিংবা এদেশী কোন বন্ধু কে জিজ্ঞেস করে হোক বোঝার চেষ্টা করি খবরটিতে কী বললো।
আজ হঠাৎ মনে হল পুরোন খবরের কাগজে আর কি কি খবর এসেছিলো বাংলাদেশের তা খুজে দেখলে কেমন হয়। এ খবর গুলো পড়েই তো এখানকার মানুষদের আমাদের এবং আমাদের দেশ সম্পর্কে প্রথম ধারনাটা তৈরী হয়।
আজকের এই পোস্টটি মুলত আফটেনপোস্টেন নামের বহুল জনপ্রিয় একটি নরওয়েজিয়ান দৈনিক পত্রিকা থেকে ছবি, টুকরো খবর আর ক্যাপশন নিয়ে করা হয়েছে। আরেকদিন লিখবো এদের ন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেলে আমাদের দেশ নিয়ে কী ধরনের প্রোগ্রাম দেখায় তাই নিয়ে।
২০ মার্চ ২০১৩
৮৪ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসারত অবস্থায় বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ইন্তেকাল করেন।
২৩ মার্চ ২০১৩
৯ মে ২০১৩
১০ মে ২০১৩
১৫ মে ২০১৩
২ জুন ২০১৩
* প্রতি সপ্তাহে ছয়দিন ১০-১২ ঘন্টা করে
* প্রতি ঘন্টায় ১ ক্রোনা (নরওয়েজিয়ান এক টাকা) করে
* অসুস্থতাকালীন ছুটি নেই
* কাজ চলাকালীন সময় সর্বোচ্চ তিনবার টয়লেটে যাবার ব্রেক পায়।
৬ জুন ২০১৩
প্রতি সপ্তাহে হরতালের কারণে বাসারের চুলকাটার দোকানের ব্যবসায়ও মন্দা।
(এই ছবিটির নিচে তিনটি প্যারায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।)
১। `পরিবারতন্ত্র´ই দেশ পরিচালনা করছে
২। চারিদিকে শুধু ভিক্ষুক
৩। বাংলাদেশে কি ইসলামিস্টদের উত্থান হচ্ছে?
২৩ জুন ২০১৩
শায়লার (২৩) মেয়ে নিপার যখন জন্ম হয় তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ১৩ বছর। টেক্সটাইল ফ্যাক্টরি রানা প্লাজা ধ্বংস হবার সময় তার হাত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি তখন ৫ম তলায় কর্মরত ছিলেন।
বাংলাদেশে প্রতি ৫জন মেয়ের মাঝে ১ জনের বিয়ে হয় ১৫ বছর পার হবার আগেই: লাইজুর বিয়ে হয় ১৩ বছর বয়সে।
কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল: গ্রামের অন্যতম প্রধান অর্থকরি ফল।
খেলতে খেলতে কাজ: লক্ষ্মীপুরে এটি একটি পানির পাম্প যেখানে শিশুরা বসে উঠানামা খেলার সাথে সাথে মিঠা পানি পাম্প করছে।
[ গ্রাহক ফরম ]
মন্তব্য
হুম্ম, আমি নরওয়ের যে নিউজপেপারে প্রথম বাংলাদেশের নাম দেখেছিলাম তাতে খবর ছিল এক অসলোবাসী বাঙ্গালী মহিলার পরিবারের চাপে শুধুমাত্র ধর্মের কারণে এক পাকিস্তানি কে বিয়ে করে এবং পরে সেই পাকিস্তানি স্বামীর অত্যাচারে পুলিশের কাছে আশ্রয় নেয়া।
facebook
হুম। আপনার একটি লেখায় বা ফেইসবুকের স্ট্যাটাসে উল্লেখ্য করেছিলেন। এসব পড়লে খুব অসহায় লাগে।
শেষ ছবি’টা খুব মজা লাগলো। অবাক বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের ভাল ভাল খবরগুলো ছাপা হয় না, আমাদের অর্জন কিন্তু কম নয়।
অবশ্যই আমাদের অর্জন কম নয়। কিন্তু ভালো খবর গুলো হয়ত আমাদের খারাপ খবর গুলোর ইনটেনসিটি ছাপিয়ে আন্তর্জাতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ খবর হয়ে উঠতে পারে না!?
হুমম...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লিখব শিগগিরি।
আমাদের সফলতার খবরগুলো ঢাকা পড়ে যাচ্ছে অনেকটা প্রচারের কারণেও। দেশের পত্রিকাগুলো দেখবেন বেশির ভাগ খারাপ, ব্যর্থতার খবরগুলো মোটা হেডলাইনে ছাপায়। আমরা নিজেরাই তো নিজেদের সফলতার কথা বলি না। সেখানে ওদের আর দোষ কি?
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
ওদের কে দোষ দিচ্ছি না। বিদেশের মানুষ পত্রিকায় আমাদের সম্পর্কে কি পড়ে তাই শুধু তুলে ধরতে চেয়েছি।
আমাদের সফলতার পরিমান আরো বাড়াতে হবে। ভালো কাজের সুফল যখন নিজেদের ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বের মানুষরাও পেতে থাকবে, তখন সেই খবর গুলোও বিভিন্ন দেশী পত্রিকায় আসতে থাকবে নিশ্চয়ই।
আপনার মন্তব্যের সাথেও একমত। সব কিছুর বহুল প্রচারের এই যুগে নিজেদের সফলতা গুলো প্রচারেও মনযোগী হওয়া উচিৎ।
হুমম - মনটা খারাপ হলো
নিজেদের দেশ সম্পর্কে নেগেটিভ খবর প্রচার হতে দেখলে মন তো খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আরো কষ্টের বিষয় হলো খবর গুলো মিথ্যে নয়। পজেটিভ খবর বাড়ানোর জন্যে আমাদের নিজেদেরকেই আরো বেশি বেশি পজেটিভ কাজ করতে হবে।
আমরাও কি বাইরের ভালো খবরগুলো খুব একটা পাই ! খারাপ খবরগুলোরই প্রচার অগ্রাধিকার পায় সংবাদ-মাধ্যমগুলোতে। মনে হয় এটাই দেশে-দেশে প্রধান মিডিয়া-ট্রেন্ড !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
মনে হয় তাই হবে। খারাপ খবর গুলোই তো তুলে ধরা উচিৎ যাতে ভুল শুধরে নেয়া যায়, ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া যায়। কিন্তু সাথে ভালো খবরও যদি পত্রিকার পাতায় নিজ যোগ্যতায় জায়গা করে নেয় তাহলে এতটা অপমানিত লাগে না!
চমৎকার বৈদেশিক জীবন চলছে দেখি নরওয়েজিয়ান শিখতে পারলে সেইটার উপর ইতিহাস নিয়ে আরেকটা লেখা দিয়েন
ভাষা শেখায় ব্রেক পরতে যাচ্ছে। আম্রিকা যাইতাছি গা। এইবার ইংলিশ শিখবো। তুমি লেখা দাও না কেন? তোমার লেখার হাত তো বেশ ভালো। আগামি ৩ দিনের মধ্যে তোমার একটা লেখা দেখতে চাই সচলে।
ছোট খাটো একটা চাকুরী শুরু করলাম। ব্যাপক দৌড়ের উপড় আছি
আকর্ষণীয় খবর হিসেবে খারাপ খবর সবসময়-ই ভাল খবর-কে টেক্কা দেবে। তাই খবরের ব্যাবসায়ীর কাছে খারাপ খবরের বিশেষ খাতির থাকবেই। সেটা নিয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়ে কাজের কাজ কিছু হবে না। অনেক গুরুতর কথা হল খারাপ-গুলো এত খারাপ কেন যখন কি না সেগুলো আদতে হবার-ই কথা ছিল না! আর, চিহ্নিত করার পর-ও যে সেগুলো পাল্টায় না, উপমহাদেশের দেশগুলোর জন্য সেটাই সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডী।
- একলহমা
একটি দুটি ভালো খবরও কি আন্তর্জাতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে না?
খুব আগ্রহ নিয়া লেখা গুলা পড়লাম, এটুকু ভেবে আশ্বস্ত যে আমাদের দুই নেত্রির চুলাচুলির খবর তারা এখনো জানে না !
জানেনা আবার!
ভালো লাগলো পোস্টটা।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ধন্যবাদ আপনাকে
ভিনদেশী পত্রিকার আমাদের সম্পর্কে কি ধারনা দেখে মন খারাপ হল। আসলে আমরাই এর জন্য দায়ী, আমাদেরকেই পজেটিভ খবর তৈরি করতে হবে, লেখা ভাল লাগলো
ইসরাত
ধন্যবাদ ইসরাত।
এইটা আমি আমেরিকাতেও দেখি, বাংলাদেশ নিয়ে পজিটিভ নিউসের অভাব।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সব জায়গায় বোধহয় একই রকম।
আচ্ছা, নরওয়ের সাধারণ মানুষের ভাবনাতে বাংলাদেশ কোন জায়গায় আছে?
-এস এম নিয়াজ মাওলা
এক কথায় আমার পক্ষে বলা মুসকিল। যাদের বাংলাদেশ সমন্ধে কোন ভাবে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বা যাতায়াত আছে তাদের অনেকের কাছে ভালো ভালো কিছু কথাও শুনেছি। এমনো হতে পারে আমি বাংলাদেশ থেকে তারা আমাকে আমার দেশ সম্পর্কে কিছু ভালো কথা বলেছে।
নতুন মন্তব্য করুন