ক্রিক ডিমিক্কো এবং ক্রিস স্যান্ডারস পরিচালকদ্বয় ছবিটির কৌতুকময় কার্টুনিয় চিত্রায়নে কোথায় কোন মর্মান্তিকতার স্পর্শ রাখেননি। যদিও মানবিকতার পরিস্ফূটন ঘটিয়েছেন প্রতিটি চরিত্রের মাঝেই। অবিলুপ্ত গুহাবাসী পরিবারের সদস্যদের দিন যাপনের শৈল্পিক কল্পনার ডানা এমন তীব্রভাবে শাখা প্রশাখা মেলে এগিয়ে যেতে থাকে যে প্রতিনিয়ত নতুনত্বের স্বাদে দর্শকের বিস্মিত চোখ পলক ফেলার ফুসরত পায়না। ৯৮ মিনিটের এই অভিযাত্রার প্রতি মুহূর্তে আছে সীমাহীন উত্তেজনা আর কৌতুকময় মিষ্টি রোমাঞ্চ।
বাবা পরিবারের প্রধান; যার নাম গ্রাগ। এই চরিত্রটির নেপথ্যে আছেন, নিকোলাস কেজ। তার দরাজ কণ্ঠস্বর দারুণ মানিয়ে গেছে চরিত্রটির সাথে। পরিবারের যে সদস্যটিকে নিয়ে গ্রাগের সব চেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা সে তার মেয়ে এয়েপ। এই দুর্গম পৃথিবীতে কৌতূহল যে কত ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনতে পারে গুহাবাসী এই বলিষ্ঠ তরুণী তা কিছুতেই বুঝতে চায় না। এয়েপ আর গ্রাগের মাঝে পিতা এবং কন্যার চিরায়িত অনন্যসাধারণ মানবিক সম্পর্কটির হৃদয়গ্রাহী চিত্রায়ণ নিশ্চিত ভাবে প্রতিটি দর্শককে তার নিজের পরিবারের আপনজনের কথা মনে করিয়ে দিবে। গ্রাগ পরিবারের প্রধান হিসাবে সবসময় তার পরিবারটির প্রতিরক্ষায় মুল ভূমিকা পালন করে এসেছে। বাইরের ভয়ঙ্কর পৃথিবী থেকে বাঁচতে প্রায়ই তাদেরকে গুহার অন্ধকারে দিন কাটাতে হয় টানা বেশ কয়েকদিন। কেবল ক্ষুধা লাগলেই এই পরিবারটি বেরিয়ে আসে শিকারের জন্য। শিকারের দৃশ্য চিত্রায়নে চরিত্র গুলোর থ্রিডি এনিমেশন মুভির অনবদ্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বেকায়দা ছুটাছুটি শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের বেজার মুখে হাসি ফোটাবে।
চারিদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদের মাঝে টম এন্ড জেরির মত প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বেচে থাকার এমনি এক সময়ে ছবির দৃশ্যপটে নতুন অনুষঙ্গ নিয়ে নায়ক গাই এর আলোকময় আগমন। শুরু থেকেই দর্শকের সকল মনযোগ কেরে নেবে গাই এর উদ্ভাবনী প্রতিভা আর গাই এর প্রতি এয়েপ এর প্রেমময় মুগ্ধতা।
এই পর্যায়ে কাহিনীর মেরুকরণে একদিকে আধুনিক মানুষের প্রথম প্রতিনিধি গাই, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত বিপদের আশঙ্কায় পরিবারের স্বজনদের রক্ষায় অতিসতর্ক গ্রাগের সাহসিকতা; এভাবেই সিনেমার কাহিনী এগিয়ে চলে পাহাড়ি ঢালু নদীর মত দ্রুত বহমান আঁকাবাঁকা পথে।
উত্তেজনায় ভরপুর এই ছবিটির কিছু প্রাণীর আকৃতি-প্রকৃতি অতিরঞ্জনের সীমারেখা থেকে থেকে কতটুকু দূরে আছে তা বিচার করার ভার চলচ্চিত্রের দর্শকের হাতে ছেড়ে দেয়াই আমার মত। ছবির প্রাণী বৈচিত্র্য দেখে সুকুমার রায়ের একটি ছড়ার কথা মনে পরে:
হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না)
হয়ে গেল "হাঁসজারু" কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে - "বাহবা কি ফুর্তি !
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।
" টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা-
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে কাঁচা লঙ্কা?
ছাগলের পেটে ছিল না জানি কি ফন্দি,
চাপিল বিছার ঘাড়ে, ধড়ে মুড়ো সন্ধি!
জিরাফের সাধ নাই মাঠে ঘাটে ঘুরিতে,
ফড়িঙের ঢং ধরি' সেও চায় উড়িতে।
গরু বলে "আমারেও ধরিল কি ও রোগে?
মোর পিছে লাগে কেন হতভাগা মোরগে?"
হাতিমির দশা দেখ, - তিমি ভাবে জলে যাই,
হাতি বলে, "এই বেলা জঙ্গলে চল ভাই।"
সিংহের শিং নেই, এই তার কষ্ট-
হরিণের সাথে মিলে শিং হল পষ্ট।
মন্তব্য
এ্যানমেশন দারুন লাগে। বর্ননা শুনে মনে হল ভালই লাগবে। দেখার ইচ্ছা রইল।
রিভিউ-এর জন্য ধন্যবাদ।
-আরাফ করিম
দেখে ফেলুন। অ্যানিমেশন ভালো লাগলে এই ছবিটিও ভালো লাগবে। গ্যারান্টি!
এই ছবির সবথেকে মজার সিন হল শেষে ছবি তোলার অংশটুকু। হাসতে হাসতে শেষ।
লেখা ভাল লেগেছে।
ঠিক বলেছেন! মনে পরলেই হাসি পাচ্ছে!
আইস এজ এর কিছুটা মিল পেলাম। তবে অনেক মজা।
হুম। অনেক মজা।
গল্প শুনে দেখার ইচ্ছে জাগলো,ইচ্ছে কে জাগ্রত করে দেওয়ার জন্যে আপনাকে
মাসুদ সজীব
পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
গতকাল "প্লেইনস" দেখলাম। ভালো লাগলো। এটা দেখা হয়নি। আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে দেখতে হবে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
দেখে ফেলুন। আশা করি ভালো লাগবে।
প্লেন এ পয়সা নষ্ট। ক্লিশে কাহিনি।
খেয়াল করে দেখুন, এটা কিন্তু পিক্সারের না, শুধু ডিজনির। এর পেছনে, ডিজনির উদ্ডেশ্য ছিল, 'কারস' এর ইমেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করা, টয়, জামাকাপড় বিক্রি করা; এটার পেছনে তেমন যত্ন ছিল না।
দেখেছি, আমার দারুণ লেগেছে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমারও দারুণ লেগেছে।
বর্ণনা ভাল লাগল। ছবি দেখতে হবে মনে হচ্ছে।
- একলহমা
ধন্যবাদ দিদি, থুক্কু দাদা!
নিয়েন্ডারথালের সাথে হোমো স্যাপিয়েন্সের একীভূত হওয়ার অনুমিতিকে কেন্দ্র করে গল্প সাজানো হয়েছে। বিবর্তন সম্পর্কে কাঁচা ধারনা দিলেও কমেডি হিসেবে কিন্তু খারাপ না।
--মদন--
ছবিটা ল্যাপ্টপে পড়ে আছে আজ কয়েক দিন হল। ব্যস্ততার জন্য দেখা হয় না। আপনার বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে দেখা টা জরুরী হয়ে পড়ল।
দেখে ফেলেন। ব্যস্ততার ফাঁকে একটু নির্ভেজাল হাসি হেসে নিন।
ছবি দেখি নাই, দেখতে হবে মনে হচ্ছে।
-নিয়াজ
দেখুন
দেখব
facebook
দেখতে হবে।
এনিমেশন ফিল্ম দেখতে হেব্বি মজা লাগে।
তাহলে তো এটা আপনার জন্য ফরজে কাফা!
দেইখ্যালাইছি...
এনিমেশন মানেই দেখতে হবে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আজকে দেখব, এইজন্য আর রিভিউ পড়লাম না আপাতত। Despicable me 2 আর এইটা একসাথে দেখার জন্য রেডি হইছি।
ভালা বুদ্ধি! কাহিনী সম্পর্কে ধারনা থাকলে এক্সপেকটেশন বেশি হতে পারে। কোন ধরনের এক্স্পেকটেশন ছাড়া দেখতে বসাই ভালো।
দেখে ফেলব দ্রুত
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
দেখুন। আশাহত হবেন না।
চমৎকার ছবি, বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য।
রিভিউ ভালো লেগেছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই।
দেখিনাই এখন ও, তবে রিভিউ পড়ার পর মনে হচ্ছে সিনেমাটা দেখাই যায়।
দেখে ফেলুন।
প্লেনে দেখছিলাম সিনেমাটা, খারাপ না। তবে গল্পের ধাপগুলো একটু বেশি প্রেডিক্টেবল আর মেলোড্রামাটিক।
বাসায় বসে আয়েশ করে দেখলে হয়তো আরেকটু বেশি ভালো লাগতো। তবে মেলোড্রামাটিক তো বটেই।
আমি রিভিঊ পড়ে ছবি দেখতে ভালোবাসি।
আর এজন্যই পুরনো দেখা ছবি দেখতে আমার কখনো বিরক্ত লাগেনা।
রিভিউ এর জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন কমল।
-----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
আপনাকেও ধন্যবাদ।
সিনেমা তো দেখতে ইচ্ছা করতেসে এইটা :)
দেখ।
ক্রুডস ভাল লেগেছে কারন সেটা প্রাগঐতিহাসিক পটভূমিতে দেখানো বেশ আধুনিক একটা গল্প। আমেরিকান পারিবারিক সিটকমের মোটামুটি বস্তাপচা একটা থিম হল বাবা-বয়ফ্রেন্ডের ক্য়াচাল। ক্লুনির ডিসেন্ডেন্ট্স বা মুনলাইট কিংডম - এগুলোতে অবশ্য় এরকম থিমকে কিছুটা ঝারপুছ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ক্রুডসের সবচাইতে অভিনব প্রসংশসনীয় বিষয় এর কেন্দ্রীয় চরিত্র আমেরিকান এনিমেশনের আরসব মেয়ে চরিত্রগুলোর মত লাজুকলতা নয়। জাপানি এনিমেশন, বিশেষ করে মিয়াজাকির কেন্দ্রীয় নারী/মেয়ে চরিত্রগুলো অনেকদিন থেকে প্রগতিশীল।
"শ্বাপদ সঙ্কুল পৃথিবী"
এই দাবী কি করা হয়েছে ক্রুডসের কোথাও যে ওটা পৃথিবী আর এর চরিত্রেরা মানুষ? ওটা তো অন্য় কোন গ্রহও হতে পারে।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তেব্যের জন্য।
ছবির কোথাও যেহেতু এই দাবি করা হয়নি যে মানুষের মত দেখতে প্রাণী গুলো মানুষ না, তাদের আবাস ভূমিটিও পৃথিবী না তাই চট করে এটিকে অন্য কোন গ্রহ বলে মনে করারও কোন কারণও দেখি না। বরং ছবির কাহিনী, চরিত্রের আচার আচরনের বৈশিষ্ট গুলো পৃথিবী বলেই ইন্ডিকেট করে। (যদিও স্থান কাল পাত্র দর্শকের কল্পনার যে কোন গ্রহে হলেও ক্ষতি নেই।)
নতুন মন্তব্য করুন