নিয়মিত বাজারে যেতে যেতে শাক সবজির প্রতি একধরনের ভালোলাগা তৈরী হল। সে ভালোলাগা রান্না করা শাক সবজির প্রতি না; কেবল কাঁচা শাক-সবজির প্রতি। ছাদের টবে বা বাসার সামনে চিলতে জায়গায় যেখানেই রোদ পায়, এমন উর্বর মাটি দেখি, সেখানেই ইচ্ছে করে সবজির চারা লাগাতে। শীতকালে টবের গাছে কসমস বা গাদা ফুল দেখতে যেমন সুন্দর লাগে ঠিক তেমনি টবের ছোট টমেটো গাছে সবুজ, হলুদ বা লাল টসটসে টমেটো ধরে আছে দেখতেও আমার একই রকম ভাল লাগে। সত্যি কথা বলতে, ফুল গাছের চেয়ে ফল বা সবজির গাছই আমি বেশি ভালোবাসি। আমার ভেতরে শিল্প রুচির কিছুটা ঘাটতি থাকলেও থাকতে পারে; কিন্তু চাষী সত্ত্বা যে প্রবল সেটা আমি নিশ্চিত বুঝতে পারছি।
কিন্তু সেই সময় বেশীর ভাগ কম বয়সী বালকের মত আমারও- সবজি গুলো রান্না হয়ে পাতে এলে আর ভালো লাগত না। বিরক্তিকর খাবার মনে হত। ভালো লাগত গরুর মাংসের ভুনা, খাসির রেজালা, মুরগির রোস্ট, পোলাও, কাচ্চি বিরিয়ানি, খিচুরি এসব। যেটুকু সবজী আর মাছ খেতাম তা শুধু আম্মুর চাপে পরে।
সে সময় যাদের চ্যাপার শুটকি ধনেপাতার ভর্তা বা ছোট মাছ, লাউ শাক পছন্দ; তাদের কে দেখলে বিরক্ত লাগতো, আঁতেল মনে হোত। ভাগ্যের অদ্ভুত পরিহাসে আজ আমি তাদেরই একজন।
আমার এই আবাউট টার্ন পরিবর্তনের শুরু পাঁচ বছর আগে যখন উচ্চতর পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে সুইডেনে গেলাম। এবং পরবর্তীতে এই পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী হয় আমার প্রিয়তমেষুর শৈল্পিক রান্নার গুণে। সুইডেনে থাকতাম লিনশপিং নামে এক শহরে যেটা সে দেশের রাজধানী স্টকহোম থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে। সেখানে আমাদের দেশীয় শাকসবজি খুব একটা পাওয়া যেতো না। পুরো শহরে কাঁচামরিচ বিক্রি হত শুধু মাত্র একটি থাই দোকানে। হঠাৎ হঠাৎ ধনেপাতার দেখা পাওয়া যেত, তবে সব সময় না। সে সময় সবজী বলতে মুলত ছিল আলু, টমেটো, ফুল কপি আর ব্রকুলী। এর বাইরে অপরিচিত কিছু সবজী ছিলো কিন্তু কিভাবে খেতে হয় জানা ছিলো না। দাঁত হারিয়ে দাতের মর্যাদা বোঝার মত দেশ ছেড়ে বিদেশে এসে সবজির গুরুত্ব বুঝতে পারি প্রথম বারের মত।
এখন আর সুইডেনে থাকি না, থাকি নরওয়ের ওসলোতে। এটা রাজধানী হওয়ায় বাংলাদেশী সজনে ডাঁটা, লাল শাক, উইস্তা, বক ফুল, পান সুপারী, এমনকি কলাপাতাও পাওয়া যায়। দোকানে দোকানে ঘুরে নানান সবজী আর নানান পদের মাছ খুজে বের করি। কুচো চিংড়ি দিয়ে উস্তা ভাজী খাবারের মেনুতে এখন সব চেয়ে হিট। নতুন কোন দেশীয় সবজী পেলেই কিনে আনি, আগ্রহ নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখি আর ভাবি আমরা কত ভাগ্যবান যে এত মজার এত বৈচিত্র্যপূর্ণ তরিতরকারি জন্মায় আমাদের দেশের ফসলের মাঠে। পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষকে তাদের প্রতিদিনের খাবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ২ থেকে ৩টা সবজী দিয়েই রান্না করতে হয়।
পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে মানুষ যেমন ঘরে টিয়াপাখি থেকে শুরু করে পুতুলের মত সুন্দর কুকুর, বিড়াল পালে ঠিক তেমনি আমি শাক সবজির প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে ঘরে সবজী চাষ শুরু করলাম। নার্সারি থেকে মাটি কিনে আনলাম, দুইটা লম্বা বড় টব কিনলাম, টমেটো আর বেগুনের বীজ কিনে টবের মাটিতে পুতে দিলাম। কোনটাই চারা হয় না। ঘরে পেঁয়াজ থাকতে থাকতে অঙ্করোদগম হলে সেটাও পুতে দিলাম। এদিকে কিছুদিন আগে মিষ্টি কুমড়া খেয়েছিলাম। বউ সেটার বিচি শুকিয়ে সেই টবের মাঝে পুতে দিয়েছে। প্রতিদিনই সবুজ কোন কিছুর অস্তিত্ব খুঁজি টবে কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেলেও চারা গজানোর কোন লক্ষন না দেখে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু একসময় আমাদের দুজনকে খুশীর ভেলায় ভাসিয়ে একটি দুটি করে কুমড়ো চারা মাটি ফুঁড়ে বের হয়ে এলো। আমরা দুজন অফিসিয়ালি কিশান কিষাণী হয়ে গেলাম।
আমাদের দৈনন্দিন কথাবার্তার বেশিরভাগ জুড়েই সেই গাছ গুলো। এক সময় আরো কিছু চারা উঠলো টবের মাটিতে। সেখানে টমেটো আর বেগুন দু`রকম চারাই আছে। কিন্তু তৃতীয় পাতা গজাবার আগে এদের আলাদা করার উপায় নেই। গাছগুলো একটি আরেকটির সাথে পাল্লা দিয়ে বড় হল। আমাদের দুজনের এই ছোট্ট ঘরে তাদের জন্য আর পর্যাপ্ত আলো বাতাস নেই। তাই সেগুলো বাইরে উঠানের নিয়ে রাখলাম। টমেটো আর বেগুন গাছ আলাদা করে দিলাম। কাপড় শুকানোর স্ট্যান্ড টেনে লম্বা করে রশি দিয়ে বেঁধে কুমড়ো গাছের মাঁচা বানিয়ে দিলাম। কুমড়ো গাছ লকলকিয়ে সেই মাঁচায় স্প্রিং এর মত সবুজ আংটা দিয়ে ধরে ধরে উপরে বেয়ে উঠতে লাগলো। বেগুন গাছের পাতা পর্যাপ্ত আলো পেয়ে এমন ভাবে বড় হতে লাগলো কেউ দেখলে সেটাকে সেগুন গাছের পাতা বলেও ভুল করতে পারে।
যেদিন কুমড়ো গাছে ফুল দেখা গেলো সেদিন আর আমাদের আনন্দ দেখে কে। যে কোন আনন্দ অন্য কারো সাথে ভাগ করে নিতে ইচ্ছে করে। তাই বাড়িওয়ালা কে, তার বউ কে এবং শাশুড়িকে ডেকে আমাদের গাছের ফুল দেখালাম। তাদের কে এও জানালাম কুমড়ো ধরলেই তাদের বাসায়ও একটি পাঠিয়ে দিবো। যদিও কোন ফুলটি থেকে কুমড়ো হবে বুঝতে পারছিলাম না। কারণ এই ফুলে আবার ছেলে মেয়ের ব্যাপার আছে। একই গাছে দু`রকম ফুল হয়। ছেলে ফুল বেসন ডাল দিয়ে ভেজে বড়া বানিয়ে খেয়ে ফেলতে হয়। মেয়ে ফুল ধীরে ধীরে কুমড়ায় পরিনত হয়। ছেলে ফুলকে মেয়ে ফুল থেকে আলাদা করার বৈশিষ্ট জানা ছিলো না বলে কোন ফুলই বড়া বানাচ্ছিলাম না। কিছুদিন পরে অবশ্য এদের আলাদা করতে শিখে যাই। তারপরও অতিরিক্ত মায়ার কারণে কোন ফুল ছিঁড়ে বড়া বানিয়ে খেতে পারিনি।
একদিন টমেটো আর বেগুন গাছেও ফুল আসলো। উঠানে মৌমাছি আর ভ্রমরের আনাগোনা লক্ষণীয় ভাবে বাড়লো। এদের মধ্যস্ততায় ফুলগুলোর মাঝে প্রণয় হল। প্রেম-ভালোবাসায় টমেটো গাছ যে এগিয়ে ছিলো তার প্রমাণস্বরূপ সবার আগে টমেটো ফুল গুলোই ফলে রূপান্তরিত হল।
বাংলাদেশে শীতকালটাই শাক-সবজী চাষের জন্য উপযুক্ত হলেও এদেশে গ্রীষ্মকাল ছাড়া অন্য কোন সময় ঘরের বাইরে এসব চাষ করা সম্ভব না। বীজ রোপণ করতে হয় বসন্তের শুরুতেই ঘরের ভেতর; তারপর চারা গজালে সেগুলো বীজতলায় লাগিয়ে দিতে হয়। আমরা এবার শুরু করেছি দেরিতে তাই যখন ফল হবার সময় হল তখন বাইরের তাপমাত্রা কমতে কমতে ১০ ডিগ্রি সে: এর নিচে নেমে এলো। তাই এবার আর কুমড়ার মুখ দেখা হলো না। বেগুন একটি হয়েছিল; ছবি খুজে পাচ্ছি না তাই দেখাতে পারছি না। টমেটো হয়েছিল তিনটি। কুমড়োর স্ত্রী ফুলের গোড়ায় স্ফীত হতে দেখলেও সেটা কে কুমড়া বলে চালিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।
আগামী বছর ঠিক সময় মত আবাদ শুরু করবো ভেবে রেখেছিলাম। শুনেছি চাষবাসে আগ্রহী হলে গ্রীষ্ম কালে এলাকার পৌরসভার কাছ থেকে রাস্তার চত্বরের আইল্যান্ড বা বা পার্কের মত ছোট কোন জমি ধার নেয়া যায়। সেরকম একটি জমি নিয়ে আগামী বছর জোড়েসড়ে হাল চাষ করবো বলে ঠিক করে রেখেছিলাম। কিন্তু মাস-দেড়েকের মাঝে কাজের খাতিরে এক বছরের জন্য আমেরিকা যেতে হচ্ছে তাই নরওয়েতে কৃষি পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখতে হল।
___________________________________________________________________
[পাঠকদের মধ্য থেকে পোস্ট পড়ে বা ছবি দেখে কেউ আনন্দ পেয়ে লেখক কে প্রতিদান দিতে চাইলে বোস্টনে ছোট্ট একটি বাসা ভাড়া নিতে সাহায্য করতে পারেন। কেননা এই ছুটির দিনে ক্রেইগসলিস্টে বাসা না খুঁজে এতক্ষণ ধরে এই পোস্টটি লিখলাম। সহৃদয়বানরা দয়া করে সরাসরি ফেইসবুকে যোগাযোগ করুন]
মন্তব্য
একই অবস্থা আমারো।
পোস্টটা খুব ভালো হয়েছে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কথা থেকে যে কী হয়ে গেলো; শেষ পর্যন্ত তরিতরকারির প্রেমে পরে গেলাম!
অনেক ধন্যবাদ।
মাছ খাইনা বলে শুটকির প্রতি ভালোবাসা নাই কিন্তু একটু লাউ শাকের জন্য এখন মনে হয় জীবন দিয়ে দিতে পারি। কতদিন খাই না
আহারে! লাউশাকটা অবশ্য এখানেও পাওয়া যায় না।
শুটকি এখনো পারিনা বাকি ভাগ্যের পরিহাস আমিও মেনে নিয়েছি।
দারুণ লাগল পড়তে।
সব শুটকি আমিও খেতে পারিনা। তবে যেগুলো খেতে পারি সেগুলো খুব মিস করি।
অনেক ধন্যবাদ।
আমি মোটমাট তিনটে সবজি-ই খাই-- সিমের বিচি, কচুর ছড়া আর আলু। বহু চেষ্টার পরও আর কোন সবজি এ জনমে জিবে রোচেনি। মাছের দিকে আর না যাই, লোকে হাসবে।
তবে বাগানের নেশা আছে। মায়েরও। ছাদের ঐটুকু জায়গায় টবে লাগানো কুমড়ো কিংবা পুঁইশাকের পাতা ছিঁড়ে এমনভাবে মহিলা ফেরেন, ভাব দেখলে মনে হয় যেন তাজমহল থেকে মর্মর পাথরের টুকরো খুলে আনছে।
নিজের হাতের পোঁতা গাছ কিনা।
পোস্ট ভাল্লাগলো।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মাসুদ সজীব
একটু ঈর্ষান্বিত হলাম। আপনি দেশের বাইরে, বৈরি আবহাওয়াতেও চাষবাসের সুযোগ পাচ্ছেন আর আমি ঢাকায় থেকেও এতো বছরে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পারলাম না। আরো ছবি দিতে পারতেন। এসব ছবি দেখতেও ভালো লাগে। হ্যাপি ফার্মিং!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ব্যস্ততার ফাঁকে চেষ্টা করুন সুযোগ করে নিতে। কী আছে আর জীবনে!
ধন্যবাদ।
কিষাণ-কিষাণী বনে যাওয়ার গল্প ভাল লাগল খুব।
আপনার ছবি আঁকাআঁকি-র খবর কি?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ। আমি তো সত্যি সত্যি ছবি আঁকিয়ে না তাই ছবি নিয়ে আলাদা পোস্ট দেবার সাহস পাই না। তবে মাঝে মাঝে পোস্টের ফাঁকফোকরে দুই একটা ছবি অ্যাটাচ করে দিয়ে দেয়ার ইচ্ছে আছে।
আমরাও এবছর বিপুল উৎসাহে আমাদের বাসার সামনের জায়গাটুকুতে আর টবে গাছ লাগানো শুরু করেছিলাম। টমাটো, স্পিনাচ, লেটুস, হালাপেনো মরিচ। দুর্ভাগ্যবশত, তখন আমাদের বাসার ম্যানেজমেন্ট বদল হয়, নতুন কম্পানি ল্যান্ডস্কেপিং এর নামে গাছ মারার ওষুধ (হার্বিসাইড) স্প্রে করে দেয় আগাছা কমানোর জন্য। আগামী বছর আবার চেষ্টা করে দেখব।
শুভেচ্ছা
আগামী বছরের জন্য শুভকামনা রইলো।
আপনার চাষীসত্ত্বা আরো প্রবল হোক।
ভালো পোষ্ট, ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
আপনিও ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
লেখা ভাল লেগেছে। তবে ছবিগুলো
অন্যনদী
অনেক ধন্যবাদ।
খাওয়া দাওয়ার কথাটা বাদ দিলে এই জাতীয় কাজ একটা স্বাস্থ্যকর সময় কাটানোর মাধ্যম। সারাদিন পিসির সামনে বসে না থেকে, বা দেশি ভাইদের সাথে গিবত চর্চা থেকে এই ধরণের কাজ নিজের জন্য ভালো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ধন্যবাদ।
বাহ! আমার বাবারও গার্ডেনিংয়ের শখ। এর টানেই বারে বারে ইউএসএ বা অষ্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে ছুটে আসে। আমাদের সাথে ঢাকায় না থেকে গ্রামে ছুটে যায়। দেখা যাক- আপনার পোষ্ট পরে উতসাহ পাচ্ছি। আব্বুর সাথে গ্রামে গিয়ে শখের কৃষিবিদ হওয়া যেতে পারে (ছুটির দিনে)
(নির্লিপ্ত নৃপতি)
নিজের হাতে মাটি মেখে যখন কোন গাছের বীজ লাগাবেন আর একদিন দেখবেন মাটি ফুঁড়ে দুটি বীজ পত্র বের হবে তখন যে কী অদ্ভুত অনুভুতি হয় তা নিজের অভিজ্ঞতায় না হলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। পুরো প্রক্রিয়াটাই দারুণ ম্যাজিকাল। আপাত নিষ্প্রাণ শষ্য দানার ভেতর শক্তিধর এক প্রাণ লুকিয়ে আছে। আপনি বীজটি রোপণ করলেই কেবল সেটি প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।
আমার এটা তো প্রায় ইনডোর প্ল্যান্ট লাগিয়ে ঘর সাজানোর মত সামান্য ব্যাপার। ইচ্ছে করে গ্রামের জমিতে বিশাল আকারে চাষ বাস শুরু করতে!
নিজের বাড়ি নাই, যেবাড়িতে থাকি সেখানে বিশাল বিশাল ঘর আছে কিন্তু বারান্দা নাই। গাছ লাগানোর উপায় নাই। বাড়ি পাল্টাবো, এবার একটা বড় বারান্দাওয়ালা বাড়িতে থাকতে চাই। সঙ্গে যদি একটু খোলা ছাদ পাই, চাষী হতে আমারো ভালো লাগে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শুভ কামনা রইলো আপনার চাষী হবার বাসনায়।
সুন্দর পোস্ট। সব্জী বাগান করতে ইচ্ছা করে কিন্তু আলসেমীর জন্য হয়ে ওঠে না। আরো ছবি থাকলে ভালো হতো।
ছবি কিন্তু খুব একটা কমও দেয়া হয়নি! তারপরও আরো ছবি দেখতে চাইলে ছবির উপর মাউস পয়েন্টার রেখে ক্লিক করলে আমার ফ্লিকার অ্যাকাউন্টে চলে যাবেন সেখানে আরো ছবি দেখতে পাবেন।
আপনার পোষ্টটা আমাকে নস্টালজিক করে দিল। এই তো সেদিন......মাত্র ২৬ বছর আগে আমাদেরও ছোট্ট একটা বাগান ছিল। নতুন বাড়িতে উঠেছি মাত্র। নতুন জায়গা। নতুন মাটির সোঁদা গন্ধ। বাগান করার এত বড় জায়গা জন্মেও ছিল না। রাজ্যের গাছপালা ফুলফল সবজি লাগানো হলো বাগান জুড়ে। নতুন কুঁড়ির যে ছোট্ট দুটো পাতা, সে কি অসাধারণ লাগতো। আপনার প্রথম ছবিগুলো দেখে সেই গাছগুলোর কথা মনে পড়লো। গাছে ধরে থাকা কাচাপাকা টমেটোর মতো সুন্দর দৃশ্য পৃথিবীতে কটা আছে। ভীষণ আপ্লুত হলাম পোষ্ট পড়ে, ছবি দেখে। আমাদের সেই বাগানটা হারিয়ে গেছে বলেই হয়তো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হারিয়ে যাওয়া বাগান আপনার জীবনে আবার ফিরে আসুক, এই কামনা করি।
আহা! মনটা মেদুর হয়ে গেলো গো ভাইজান!!
____________________________
হারিয়ে যাওয়া বাগান আপনার জীবনে আবার ফিরে আসুক, এই কামনা করি।ভুল কমেন্টের ঘরে লিখে ফেলেছিলাম!
কৃষি চর্চা ভাল লাগলো, আবারো বুঝতে পারলাম আমাদের মাটির গুরুত্ব।
-আরাফ করিম
ভাল লাগলো। কৃষি চর্চা চলুক।
উৎসাহ দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
বছর ৩-৪ আগে আমি গ্রামের বাড়িতে আমাদের একটা উঁচু জমিতে চারিদিকে ঘেরাও দিয়ে বেশ কিছু চারা বৃক্ষ রোপণ করেছিলাম। গ্রামে থাকিনা বলে কিছুটা অযত্নে আর অবহেলায় বেশিভাগি মারা গেছে কিংবা নষ্ট হয়ে গেছে। ৪টা গাছ এই প্রতিকূলতাকে জয় করে টিকে গেছে, আজ সকালে গেলাম তাদের কাছে। অদ্ভুত এক প্রশান্তির ছোঁয়া পেলাম, তাদের শাখা প্রশাখা জেগেছে আকাশকে ছুঁবে বলে। আকাশকে ছুঁতে না পারলেও আমার সবটুকু ভালোলাগাকে তারা ছুঁয়ে গেছে। নিজের সন্তানের মতই বড় আপন মনে হলো, মনে হলো এ আমার ই সৃষ্টি।
আমি থাকি অফিসের দেওয়া বাসায় ব্যাচেলর একটা ফ্ল্যাটে। যেখানে টব লাগানোর কোন সুযোগ নেই। কিন্তু আপনার লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের বাসার ছাদে কৃষি আবাদের ব্যবস্থা করে ফেলেছি আজকে বিকেলে। অনেকগুলো ফলের টব কিনলাম, সাথে মাটি দিয়ে শীতকালীন সবজি রোপণ। তারা যদি যৌবনে পূর্ণ যৌবনা হয় তাহলে সচলে তাদের ছবি দিয়ে একটা লেখা দেওয়ার ইচ্ছে ও আশা রাখলাম। ভালোথাকবেন।
মাসুদ সজীব
শুভকামনা রইলো আপনার শীতকালীন সবজী বাগানের প্রতি। বাগান নিয়ে আপনার লেখা পোস্টটির জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকবো।
নতুন মন্তব্য করুন