ল্যান্ডফোনটা বেজে ওঠতেই ছিদ্দিক সাহেব ছো মেরে রিসিভারটা তুলে নিলেন। খুব মিষ্টি করে ‘হ্যা-ল্লো’ শব্দের একটা মিহি তরঙ্গ ছড়িয়ে দিলেন। কিন্তু কোথায় যেন একটা ভুল হয়ে গেলো। অবতারমার্কা হাসিমুখটা চোখ-চোয়ালসহ ক্রমেই কঠিন হয়ে ওঠতে লাগলো।
অফিসটার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটাকে অফিস বলেই মনে হয় না। প্রতিটা সহকর্মীর পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়ার সমন্বিত প্রক্রিয়াটির সাথে একটা পারিবারিক আবহ মিশে থাকে নিবিড়ভাবে। ভাব বিনিময়ের মুক্ত পরিবেশ এতোটাই আন্তরিক, একটা পরিবারই যেন। এবং অফিসটার সবচেয়ে বড় অসুবিধাটাও হচ্ছে এটাকে অফিস বলে মনে হয় না, এটাই।
তবু ছিদ্দিক সাহেবকে আজ খুবই অসহিষ্ণু দেখালো। ‘ কী বললে ? ছেলে বৃত্তির টেস্টে টেকে নাই ! তুমি কি ঘোড়ার ঘাস কাটো নাকি ? যত্তোসব... ! ওই সব টিউশন ফি টি আমি দিতে পারবো না !’ বলেই রিসিভারটা ঠাশ করে রেখে দিলেন।
বিষয়টা পাশের ডেস্কের অরুণবাবুর চোখ এড়ালো না। হঠাৎ চেয়ার ছেড়ে উঠে লাগোয়া সামনের ডেস্ক ঘেঁষে দাঁড়ালেন।
রহমান ভাই, একটা কৌতুক বলি ?
রহমান সাহেব কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখ ঘুরিয়ে সাগ্রহ সম্মতিতে চেয়ে রইলেন।
ভিক্ষুক: স্যার, দশটা টাকা দেন, চা খামু।
ব্যক্তি: দশ টাকা দেন মানে ! ঐ মিয়া, চা’র কাপ কতো ?
ভিক্ষুক: পাঁচ টাকা !
ব্যক্তি: তয় তুমি দশ টাকা চাইলা যে ?
ভিক্ষুক: স্যার, গার্লফ্রেন্ডরে নিয়া খামু।
ব্যক্তি: (বিস্ময়ে চোখ বড় বড় করে) অ্যাঁ! বলো কী ! ভিক্ষা কইরা আবার গার্লফ্রেন্ডও জুটাইয়া ফালাইছো নাকি !
ভিক্ষুক: জী না। ঐ গার্লফ্রেন্ডই তো আমারে ভিক্ষুক বানাইছে !...
হা হা হা ! শ্রোতারা মজা পেলেও ছিদ্দিক সাহেব তার কুতকুতে চোখ দুটো বড় বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ণ বানিয়ে চেয়ে রইলেন রহমান সাহেবের দিকে। রহমান সাহেব আড় চোখে খেয়াল করলেন কি না কে জানে। হাসতে হাসতে বললেন, দারুণ বানিয়েছেন তো বাবু !
আরে নাহ্ ! অরুণবাবুর উত্তর। আমি বানাইমু কী ? এই যে ডাকে এসেছে। বলেই সীলগালা ছেঁড়া খামটা দেখিয়ে দিলেন।
অতি গোপন একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে মধ্যবয়সী ছিদ্দিক সাহেব তার স্ফীত শরীরটাকে চেয়ারে এলিয়ে দিলেন।
(২৮/০৭/২০০৮)
মন্তব্য
পছন্দ হয়েছে কৌতুকটা। মাথায় রাখতে হবে। কখনো সেই দিন এলে যদি কাজে লাগে!
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
হা হা হা ! সেই দিন কোন দিন ?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
যেদিন আপনার গাড়ির জানালায় ঠকঠকিয়ে দশ টাকা চাইবো।
রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!
আরে খাইছে ! দেশে তো আকাল ঘনাইয়া আইতাছে দেখতাছি ! সব বেটারা ফকির হইতো চায় !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
খুবই মজার কৌতুক।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷
হুমম, পয়সা দিয়া ভাইবেন না কেউ ভিক্ষা কইরা খাই।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
উদ্ধৃতি
ঐ গার্লফ্রেন্ডই তো আমারে ভিক্ষুক বানাইছে !...
তাইলে কোনো মাইয়া ফ্রেন্ড হইতে আইলে কি কমু- দূরে থাক?
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
এইটাই বুদ্ধিমানদের জন্য সুবিবেচনার কাজ হইবো।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আজকাল ভাই 'ভিক্ষুক'দেরই জয়জয়কার!
পড়ে মজাই লাগলো।
মূর্তালা রামাত
হা হা হা মজার
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
কৌতুকটা আগেই শুনেছিলাম, আবার নতুন করে শুনে মজাই পেলাম।
গল্পটা কি কৌতুক দেবার একটা খোলস ছিল? বুঝি নাই...
কৌতুকটা আগেই শোনা। আজকাল মোবাইল এ ফ্রি এসএমএসের যুগে পোলাপাইন সারাদিন এইসব চালাচালি করে। কেন জানি এমন ধরণের এসএমএস পেলে আমার মেজাজ খারাপ হয়...
তারপরও কৌতুকটা অনেক মজার...
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
গল্পটা কৌতুকের খোলশ ছিলো না মোটেও, বরং তার উল্টো। কখনো কখনো মেয়েদের উজ্জ্বল টিপ বা ঠোঁটপালিশ বা কোন অলঙ্কার যখন বেশি উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠে, চেহারা মার খেয়ে যায় তখন। কৌতুকটাও বোধ করি গল্পটাকে মার খাইয়ে দিলো বেশি উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠায়। অথচ ওটা ছিলো গল্পের হার্টলিঙ্ক মাত্র।
কৌতুকটাকে প্রয়োজনের বেশি উল্লেখযোগ্য না ভেবে দেখুন তো গল্পটিতে কোন মেসেজ দেয়া গেলো কি না ?
(কিছু ব্যর্থতা থাকে যা পথের ভ্রান্তি চিহ্নিত করে আসলে ফস্কে যাওয়া সাফল্যটাকে চিনিয়ে দেয়।)
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ঘুরে ফিরে পাবলিক তাও ফকিরই হইতে চায়।
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
হা হা... ছিদ্দিক সাহেব দেখি আগারটাও খাচ্ছেন গোড়ারটাও কুড়াচ্ছেন ভালোভাবেই। .... অফিসে বইসা বইসা ফোনের মইধ্যে পরকীয়া কইরা চাকরী কেমনে টিকাইলেন উহাই চিন্তার বিষয়। ...
I think , therefore i am - Descartes
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
আমের সাথে ছালাটাও যায় কি না, আমি ভাবছি সেইটা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
প্রোবলেম কী? একখানে দেখলাম সবাই নষ্ট হইবার চায়! এহানে দেখতাছি ফকির হইবার চায়!
বসুদা, বাপ-মা তো আপনারে পাইলে ছ্যাঁচা দিব। দেশময় নষ্ট-ফকির বৃদ্ধি পাইতাছে--এইটার পিছনে কি আপনের হাত আছে ?
আমিও তো ভাই হেইটাই। হাত পাততে পাততে আমার হাত কি আর হাত আছে ? তয় আগে আমি নিজেরে নষ্ট-ফকিরের রাজা ভাবতাম। এখন দেখি সে গুড়ে বালি ! কই থাইকা যে একেকজন নষ্টরাজ বাদশাফকির এর আবির্ভাব ঘটতে লাগলো ! চাইয়া দেখি আমি হেগোর কাছে নিতান্তই প্রজা ছাড়া আর কিছুই না !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বন্ধুত্ব পাতাতে এলেই বিয়ে করে ফেলবেন। ব্যস! ঝামেলা খতম!
কী ব্লগার? ডরাইলা?
নতুন মন্তব্য করুন