মনোবিকলন না কি ছিটগ্রস্ততা...! (গদ্যপ্রলাপ)

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: বুধ, ২৪/০৯/২০০৮ - ১২:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দ্বিতীয় অংশ:

এরকম সমস্যায় একটাই উপায়। মেডিটেশন ! বিছানায় চিৎ হয়ে একনিবিষ্টে ছাদের দিকে হা করে তাকিয়ে লাশের মতো জপতে থাকলাম, আমি অমুক, বয়স এতো, সাংঘাতিক ধরনের মহাজ্ঞানী পুরুষ। স্ত্রী অমুক, কটমটিয়ে তাকানোর বাতিক থাকলেও মানুষ খারাপ না। তবে নির্বোধ রমণী। পৃথিবীর সবাই ভয়ঙ্কর ধরনের লেখক হয়ে উঠুক এটা তার ফেভারিট চাওয়া, শুধু অথর্ব স্বামীটি বাদে। একমাত্র সন্তানের নাম অমুক, বয়স এতো, নাকের দুধ না শুকালেও জলজ্যান্ত বিদ্যাসাগর, একেবারে ট্যাবলেট সংস্করণ। আর আমি ? জগতের এমন কোন বিষয় নেই যা আমার অগম্য। একেবারে নখদর্পণে। ইচ্ছে করলেই আমি যে দিকে তাকাই ভূত ভবিষ্যৎ সব বলে দিতে পারি......

মেডিটেশনে কাজ দিতে শুরু করেছে ! চোখে মুখে শীতল পরশ টের পাচ্ছি। শুধু শীতলই নয়, হিম ঠান্ডা ! আহ্, বিদ্যুৎহীন অন্ধকারেও মেডিটেশনের কী দ্রব্যগুণ ! আমার মনে পড়তে লাগলো মাসুদা ভাট্টির পোস্ট ভি এস নাইপলকে নিয়ে নোবেল বিজয়ী আত্মম্ভরী মর্ষকামী, জুলিয়ান সিদ্দিকীর তিতিক্ষা, ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের ধর্ম নিয়ে কী ভয়ঙ্কর পোস্ট লালন কি জাত সংসারে, গৌতমের কনফেশন নিজেকে যাচাই করা হয় না অনেকদিন, আর অতন্দ্র প্রহরীর দুঃখ বিলাস বুড়ো হয়ে যাচ্ছি ! এখনো বাকি রয়ে গেছে ফারুক ওয়াসিফের গান ও কবিতা শোনা, ফারুক হাসানের ফের্মার শেষ উপপাদ্য মিলানো, এস এম মাহবুব মুর্শেদের পিটসবার্গের ধুসর পান্ডুলিপির খোঁজ করা, হাসান মোরশেদের অরুন্ধতী পাঠ এবং দেবোত্তম দাশের সূর্যাস্ত সহ আরো কতো কিছু ! এবং অন্ধকারে আমি সব দেখতে পাচ্ছি ! কে বলেছে অন্ধকার ! ঝলমলে আলো। কিন্তু সামনে দাঁড়ানো এ কে ? ফ্রিজিং ওয়াটার বোতল হাতে এমন দজ্জাল চেহারার রমণীকে আমি কি আগে দেখেছি কোথাও ? ওমা, অশিষ্টের মতো কথাও তো বলছে দেখি !
কী ব্যাপার ? হেমায়েতপুরের সিরিয়াল দিয়েছো কবে ? তোমার যা অবস্থা, ওখানেও রাখবে না ! এই জঞ্জাল শেষ পর্যন্ত আমার গলাতেই ঝুলবে ! অসুবিধা নাই, এর চিকিৎসাও আমার জানা আছে।
এ..এ..এ্যাঁ..!!! মেডিটেশন কি উল্টো হয়ে গেলো ? আবার করতে হবে !
ধপাশ করে চিৎ হয়ে পড়লাম !

প্রথম অংশ:

আজ সচলে লগইন করে যারা যারা পোস্ট দিয়েছেন এবং বিভিন্ন পোস্টে মন্তব্য করেছেন, প্রত্যেকে যার যার মোটমাট লেখা ও মন্তব্য সবগুলো একত্রে ধারাবাহিক সমাবেশ ঘটালে এগুলো দেখে কার কতটুকু মনোবিকলন ঘটেছে তা কি আদৌ যাচাই করা সম্ভব ? মনোসমীক্ষণবাদী দার্শনিক ফ্রয়েড থাকলে কী করতেন জানি না। এ থেকে নতুন কোন থিওরী বেরিয়ে আসতো কিনা তাও বলতে পারবো না। আর আজকে আমি কোন কারণে ছিটগ্রস্ত হয়ে ওঠেছি কিনা সেটা গবেষণার বিষয় হলেও হতে পারে। তবে সচলে ঢুকেই ভারি ভারি লেখাগুলোর দিকেই আজ মনোযোগ আকৃষ্ট হলো বেশি।

সব দিন এমনটা হয় না। কোনদিন হয়তো কোথায় কোথায় ফান থাকতে পারে ধারণা করে সেখানে ঢু মারি। আবার কোন দিন হয়তো কাব্যে পেয়ে বসে। কোন দিন মন্তব্য করার বাতিকে এমন জাপটে ধরে যে তা থেকে আর ছুটতেই পারি না। আবার এমনও দেখা গেছে সেদিন লগইন না করেই দু’তিন ঘণ্টা আয়েশ করে ঘুরাঘুরি করলাম এবং বহুৎ তৃপ্তি বোঝাই হয়ে হাঁসের মতো গড়িয়ে গড়িয়ে বিছানায় উঠে গেলাম। কিন্তু আজ এমন সব আকর্ষণীয় লেখায় সচলের পাতাটা সমৃদ্ধ হয়ে ওঠলো যে খুঁজে খুঁজে সেগুলোতেই ডুব সাঁতার দিতে থাকলাম আর দমবন্ধ হবার আগে নিজেকে আবিষ্কার করলাম আমি হাঁপাচ্ছি। কারণ আমাদের সচলদের জন্য আমি সত্যিই গর্ববোধ করি এ জন্যেই যে চোখ একটা নয়। ফ্রান্সিস বেকনের সেই মৌমাছিদের মতো তাঁদের অনেকগুলো চোখ। এবং এ চোখগুলো দিয়ে তাঁরা যাই আহরণ করছেন কী চমৎকার মধু বানিয়ে এনে ছেড়ে দিচ্ছেন সচলের পাতাটাতে। এটা যেন পাতা নয়, জলজ্যান্ত মৌচাক একটা।

কিন্তু মধুর অনেক গুণাগুণের মতোই এটাও নিশ্চয় বিরাট গুণ যে, সাধ্যের বেশি গিললেই মাঘের শীতেও নাকি রাতভর ঠিকানা হয়ে ওঠে পাশের শীতল ডোবাটাই। আমার অবস্থাও কি তাই ? অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করলাম মাত্র গুটিকয় পোস্টে ঘোরাঘুরি করেই এবং মধু একটু বেশি খেতে গিয়েই মরিমরি অবস্থা। মহামতি ফ্রয়েড থাকলে হয়তো একটা সমাধান চাওয়া যেতো। আড়চোখে ফোলা বেলুনের মতো নিজেকে বিশালভাবে দেখে মুই কি হনুরে ভাবতে ভাবতে যেভাবে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলছিলাম, হঠাৎ এভাবে সর্বসমক্ষে ফুস করে চুপসে গেলাম ! মাথার ভেতর কোষগুলো তার সমস্ত সংবেদনশীলতা নিয়ে কিলবিল করতে লাগলো এবং এক সময় সচল ছেড়ে সোজা বিছানায় চিৎ হয়ে পড়ে রইলাম। কেন এমন হবে ? মাথার ধারণমতা কি ক্রমেই পড়ে আসছে ? এ ব্যাপারে মহাজ্ঞানীরা কে কী বলেছেন মনে করতে চেষ্টা করলাম। কী আশ্চর্য, মাথার ভেতরটা এক্কেবারে ফাঁকা ! এবং আরো আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম একটু আগে কোথায় কী মন্তব্য করেছি তাও ক্রমেই ঝাপসা হয়ে আসছে ! এখন উপায় ?

তৃতীয় অংশ:

প্রযোজ্য নয়।

শেষ অংশ:

ফ্রয়েড নেই তো কী হয়েছে ? আমার মেধাবী সব সচল বন্ধুরা আছে না ! নিশ্চয়ই একটা না একটা তরিকা বেরিয়ে আসবেই। এটা কি মনোবিকলন না কি ছিটগ্রস্ততা ? তবে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে শুনেছি কেসহিস্ট্রি না কি যেনো দিতে হয়। সে হিসেবে আমার আজকের কেসহিস্ট্রি অতি সরল। গতকালকের সেই ঘটনাটায় রাতে ঘুম ভালো করে হয়েছে কি না তা ভাবার আগেই আটটায় বিছানা ছেড়ে কোনভাবে চোখমুখ গুঁজে সোজা অফিসে গিয়ে কাজকাম বাদ দিয়ে গরুখোঁজা শুরু করলাম বিডিআর এর ন্যায্যমূল্যের দুধের ইনটেক প্যাকেট কার কাছে আছে ? ক’দিন আগে বিএসটিআইর অনুমোদন সীলবিহীন ২০০৭ সালের ডালভাত কর্মসূচির জন্য বাংলাদেশ রাইফেলস এর আমদানিকৃত অতিস্বল্প মূল্যের দুধ নামের বিশেষ বস্তুটি নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে আমার ব্যক্তিগত ব্লগস্পট হরপ্পায় পোস্টের পাশাপাশি বেশ কতকগুলো পত্রিকায় প্যাকেটের দুদিকের ছবি সহ ই-মেল করি। বিশেষ কোন চ্যানেলেও দেয়া হয়। গতকাল ফিরতি মেইল এবং টেলিফোনে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ইনটেক প্যাকেট দরকার। খুঁজতে গিয়ে দেখি বাজার থেকে সব গায়েব ! এখন উপায় ? সিলেটে রিং করলাম। হতাশ। ব্রাম্মনবাড়িয়ার সাংবাদিক বন্ধুকে করলাম। তথৈবচ। গোটাদিনের শেষে বাসায় এসেই সোজা সচল। কিন্তু মাথার মধ্যে তখন চটকাচ্ছে সেই দুধ। কার কাছে যেন আছে, কিন্তু মনে করতে পারছি না। গতকাল আবার বিডিআরএর ডিজি নাকি বিরসমুখে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কোন এক চ্যানেলে, একবছর আগে এই দুধ আমদানি করা এবং এগুলো পরীক্ষিত। তাই যদি হবে, রাতারাতি সব মাল গায়েব কেন ? মাথা কি দুভাগে কাজ করে ? কোথায় একটা সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি প্যাকেট পাবো। এ যে প্রেস্টিজের ব্যাপার ! এদিকে একই সাথে সচলেও হানা দিচ্ছি। কার কার এখানে ? আগে তো বলেছিই। তবু আজকের কৃতকর্ম নীচে কপি করে দিলাম। কাজটা কি ঠিক করছি, না কি বেঠিক হয়ে যাচ্ছে তাও বুঝতে পারছি না। সাইকোলজীর ভাষায় একে কী বলে ?
এই যদি আমার আজকের কাহিনী হয়, তাহলে সচল বন্ধুদের কাছে আমার আরজি, বলেন তো ইহা কি মনোবিকলন, না কি সত্যিই ছিটগ্রস্ততা ? আমি কি আদৌ সুস্থ আছি ?

আজকের কৃতকর্ম:

তিতিক্ষা-৯
লিখেছেন জুলিয়ান সিদ্দিকী [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ০০:০৭)
ক্যাটেগরী: উপন্যাস | সাহিত্য | তিতিক্ষা | যুবা (১৮ বছর বা তদুর্দ্ধ)

| রণদীপম বসু | মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ১৭:৩২
মাঝখানে কয়েকটা পর্ব না পড়ায় বোধ করি পেছনের সূত্র ধরতে পারি নাই। পরে একসময় পড়ে ফেলবো। তবে জুলিয়ান ভাই, যখনি পর্ব হিসেবে পোস্ট দেবেন এমন জায়গায় বিরতি টানতে হবে যেন একটা সাসপেন্স তৈরি হয়ে থাকে। যেমন এ পর্বে যদি আপনি উদ্ধৃত অংশের পরেই বিরতি দিতেন, তাহলে কেমন হতো ?
উদ্ধৃতি
তারপর বলে, 'রবু আমার ভাই! তার লগে আমি ঘুমাইলে অসুবিধা কি?'
জয়নাব বোকার মত হেসে বলে, 'তোমার তো অসুবিধা নাই, তয় আমার আছে!'
অবশ্য আমার ব্যক্তিগত অভিমতের সাথে একমত হতে হবে এমন কোন কথা নেই। এখানে লেখক সার্বভৌম।
চলুক।

দুঃখবিলাস : বুড়ো হয়ে যাচ্ছি!
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ০৯:৩৬)
ক্যাটেগরী: ব্লগরব্লগর | এরশাদাদু (৭০ বছর বা তদুর্দ্ধ)

| রণদীপম বসু | মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ১৯:৩১
প্রথম প্রথম যখন বাসে ট্রেনে হঠাৎ করে উঠতি তরুণ ছেলেপেলেরা আঙ্কেল সম্বোধন শুরু করলো, রক্ত চড়ে যেতো মাথায়, শালারা বলে কী ! ধীরে ধীরে ব্যাপারটা থিতু হয়ে সয়ে যাবার পর চিন্তা বিস্তৃতিকে পেছনে ফেলে অজান্তেই গভীরতার দিকে যেতে থাকলাম, বুঝলাম মানুষের জীবন আসলে একটা না, অনেকগুলো। একেকটা জীবনের বয়স একেকরকম। গতিপ্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন। চিন্তা ভাবনাও।
মানুষ আসলে একই মোড়কে অনেকগুলো জীবন পেরিয়ে হেঁটে যায়। যে ভাবে, সে একটা উপলব্ধিতে হয়তো পৌঁছে। আর এ উপলব্ধিও ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন। কখনো বিষাদ, কখনো অতৃপ্তি, কখনো এতিমমনস্কতা, কখনো বা উদ্বেল হয়ে পড়া, ইত্যাদি ইত্যাদি।
যৌবন তোর টলোমলো কচুপাতার পানি
তুমুল বয়সে রুচির অহঙ্কার দিয়ে যে গানটিকে খুব অশ্লীল মনে হতো, এখন সেই গানের কথাগুলোই কী ভয়াবহরকমের সত্য হয়ে গোটা অস্তিত্বকেই কাঁপিয়ে দিতে চাচ্ছে ! সবই সময়। আহ্
টাইম, য়্যু আর এ্যান ওল্ড জীপসি ম্যান..।

ভি এস নাইপল – নোবেল বিজয়ী আত্মম্ভরী মর্ষকামী
লিখেছেন মাসুদা ভাট্টি (তারিখ: মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ১৩:৩৪)
ক্যাটেগরী: আলোচনা | “দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ হোয়াট ইট ইজ – দ্য অথোরাইজড বায়োগ্রাফি অব ভি এস নাইপল”- | যুবা (১৮ বছর বা তদুর্দ্ধ)

| রণদীপম বসু | মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ১৯:০২
উদ্ধৃতি
স্যার ভিদিয়া প্রসাদ নাইপল, যিনি ভি এস নাইপল হিসেবেই সর্বাধিক পরিচিত,
মাসুদা আপা, ভি এস নাইপল এর পুরো নামটার ক্ষেত্রে একটু অস্পষ্টতামুক্ত হতে চাচ্ছি।
যে বইটার জন্য তাঁকে ২০০১ সালে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় বলে কথিত, 'দ্য এনিগমা অব অ্যারাইভাল' এর প্রমিত হোসেন কর্তৃক একই শিরোনামে বাংলা অনুবাদকৃত বই এর ভূমিকায় তাঁর পুরো নামটি দেয়া আছে বিদ্যাধর সূর্যপ্রসাদ নাইপল। আরেকটু সংক্ষেপ করলে বাংলা উচ্চারণে মনে হয় ভিদিয়া প্রসাদ না হয়ে বিদ্যা প্রসাদ-ই হবে।
যাক, আমার প্রসঙ্গ ভিন্ন।
রেজওয়ান যে মন্তব্যটি করেছেন-
উদ্ধৃতি
বিষয়টি আমাকে ভাবায় যে আমরা কেন লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার রচনার বিচার করতে চাই। আর তার সামাজিক প্রেক্ষাপট আমাদের সমাজের মত না হতেও পারে। কাজেই আমরা কিসের সাথে কিসের তুলনা করছি সেটাও ভেবে দেখার বিষয়।

কেন লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার রচনার বিচার করতে চাওয়া হয় সেটা নিয়ে সম্ভবত সমালোচকদের মধ্যেই দৃষ্টিভঙ্গিগত দুটো ভাগ রয়েছে। বিশ্বসাহিত্যে সৃজনশীল প্রতিটা সৃষ্টিই আসলে এক একটা মাস্টার পিস। হেমিংওয়ের ফেয়ারওয়েল টু আর্মস বা মার্কেজের হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড যেমন এর আগে আরেকটা লেখা হয়নি তেমনি নাইপলের এনিগমা অব অ্যারাইভালও আরেকটা লেখা হয়নি। আমাদের মতোই রক্ত মাংসের মানুষ হয়েও এরা যে এই ইউনিক সৃষ্টিগুলো করছেন তার উৎস কার্যকারণ সম্পর্ক প্রাণী ও বস্তু বিষয়ক বা জীবন ও জগৎ সম্পর্কিত বিশেষ বা তীর্যক দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য রচনা কেন কী করে সম্ভব হলো এইসব বিষয়ে মানুষের চিরায়ত কৌতুহল তো থাকবেই। এজন্যেই তো এতো গবেষণা এতো আলোচনা এতো কচলানি হচ্ছে এবং হতেও থাকবে এবং তা থেকে নতুন নতুন আরো কতো বিশ্লেষণধর্মী দৃষ্টিসচেতনতা খুলতে থাকবে। নইলে রবীন্দ্র নজরুল নিয়ে কাউকে আর থিসিস করতে হতো না, কোন পিএইচডি ধারীর দেখাও হয়তো আমরা পেতাম না বা জীবনানন্দ কি আত্মহত্যা করেছিলেন না কি দুর্ঘটনায় প্রয়াত হয়েছিলেন তা নিয়েও কোন কৌতুহল কারো থাকতো না এবং তার গদ্য বা কবিতা কীভাবে কিসের প্রভাবে এত বিষাদগ্রস্ততায় আক্রান্ত তার খোঁজখবরেরও প্রয়োজন হতো না। তাহলে কোন লেখক-স্রষ্টার জীবনী রচনারও প্রয়োজন পড়তো না।
দ্বিতীয়তঃ লেখকদের সামাজিক প্রেক্ষাপটের ভিন্নতা এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ তো হতেই পারে। তবে একজন ব্যক্তিমানুষের চরিত্র যখন একজনের কলমে ফেরেস্তা হয় বা আরেকজনের কলমে শয়তানের রূপ ধরে বা আরেকজনের কলমে জন্তু চেহারা পেয়ে যায়, সবগুলোই সত্য বলেই প্রেক্ষাপটের বিশ্লেষণে আসতেই হয় আমাদেরকে।
তবে একেক সমাজের প্রেক্ষাপট একেকরকম হলেও মানুষের কিছু চিরায়ত বোধ বা উপলব্ধি সমাজনিরপেক্ষ। ভালোবাসা কষ্ট আনন্দ দুঃখ ইত্যাদি ইত্যাদির চিরায়ত বোধটাকে কিভাবে অংকিত করা হচ্ছে তাও দেখার বিষয় বৈ কি।
প্রকাশ ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু মায়ের স্নেহ বা পিতার বাৎসল্য বা প্রেমাষ্পদের ভালোবাসার মৌলিক স্রোতের সাথে যদি স্রষ্টার জীবনাচারে ভিন্নতা দেখা দেয়, তাহলে এমন প্রশ্ন ওঠা অত্যন্ত স্বাভাবিক যে লেখক কি আদৌ কি নিজস্ব কোন বিশ্বাস বা আদর্শ ধারণ করে তা লিখছেন, না কি মানুষ ও সমাজকে আরোপিত প্রতারণার মাধ্যমে ভণ্ডামী করছেন। যিনি এরকম ভণ্ডামীতে লিপ্ত থাকেন তাঁর সৃষ্টিকে দারুণ মেধাবী হয়তো বলা যেতে পারে, কিন্তু মহৎ বলার উপায় আছে কি ?
ধন্যবাদ মাসুদা আপা। চমৎকার একটি বিষয়ে পোস্ট দেয়ার জন্য। আর স্বনামখ্যাত দৈনিকের অশ্লীলতার দৃষ্টিভঙ্গিটা যে আসলে কী, তা এরা নিজেরাও বুঝেন বা জানেন কিনা সন্দেহ। পত্রিকায় সিনেমার রমরমা পোস্টার ছাপতে পারবে, সাণ্ডার তেলের উদ্দীপক বিজ্ঞাপন ছাপতে পারবে, সর্বরোগহরি সালসার মাধ্যমে ধাতুদৌর্বল্য দুরীকরণের মহৌষধের বিজ্ঞাপনও ছাপতে পারবে। এতে শ্লীলতার মানহানী ঘটে না। সমস্যা হয়ে যায় সাহিত্যে এসে। কী আর বলবো। আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে মাথার উপরের দিকে নিতে চাইলে কী হবে, এরা জোর করে নিজেদের মতো করে আমাদের দৃষ্টিটাকেও কোমরে নীচে রাখতে চায়, কি জানি বেয়াদপি হয়ে যায় ! রুচিবোধ যাই হোক, বেয়াদব না হলেই হলো। হা হা হা !

নিজেকে যাচাই করা হয় না অনেকদিন
লিখেছেন গৌতম (তারিখ: মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ১০:০৪)
ক্যাটেগরী: ব্লগরব্লগর | মুখোমুখি

| রণদীপম বসু | মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ১৯:৪৭
মানুষ পৃথিবীর সবাইকে ফাঁকি দিতে পারলেও নিজেকে সে কখনোই ফাঁকি দিতে পারে না। আর যখনই এমন কোন কৃতকর্মের দায় তার বিবেকবোধের দরজায় ধাক্কা মারতে শুরু করে, তখনই সে হয়ে যায় একা। এবং নিজের মুখোমুখি দাঁড়াতে ভিত হয়ে ওঠে।
তালাচাবির পাসওয়ার্ডটা যারা ভুলে যায় তাদের আর ফিরে আসা হয় না কখনো। অতএব পাসওয়ার্ড যত্নে রাখুন। এখন না হোক, একসময় না একসময় অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও নিজের মুখোমুখি হতেই হবে। উপায় নেই।
আমি ঠিক জানি না, আপনি কতোটা গভীর উপলব্ধি দিয়ে এই ভয়ঙ্কর সত্যিবচনগুলো এতো চমৎকার আবৃত্তি করলেন !
শুভেচ্ছা রইলো।

লালন কি জাত সংসারে
লিখেছেন যুধিষ্ঠির [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ০৩:৩৯)
ক্যাটেগরী: ব্লগরব্লগর | চিন্তাভাবনা | irreligion | non-religious | ধর্ম | যুবা (১৮ বছর বা তদুর্দ্ধ)

| রণদীপম বসু | মঙ্গল, ২০০৮-০৯-২৩ ২০:৫৬
ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা তুলে ধরেছেন তা নিয়ে আলোচনায় নামা মানে মস্তিষ্কের সবগুলো সচল কোষ ও ইন্দ্রিয়কে ঝালাপালা করে দেয়ার সামিল। তার চে আমি বরং আমাদের লোক-দার্শনিক বলে কথিত আরজ আলী মাতুব্বরের একটা উক্তিকে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় উদ্ধৃত করি। ঢাকা বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় আমন্ত্রিত হয়ে (যে সভাটি কোন কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি) পাঠের উদ্দেশ্যে তাঁর তৈরিকৃত বক্তৃতার এক জায়গায় তিনি বলছেন-
উদ্ধৃতি
কেউ কেউ মনে করতে পারেন যে, আমি ধর্মের বিরোধিতা করছি। বস্তুত তা নয়। পশু, পাখি, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি সমস্ত জীবের এমনকি জল, বায়ু, অগ্নি ইত্যাদি পদার্থেরও এক একটি ধর্ম আছে। ধর্ম একটি থাকবেই। তবে তার সঙ্গে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার থাকা আমার কাম্য নয়। মানব সমাজে ধর্মের আবির্ভাব হয়েছিলো মানুষের সার্বিক কল্যাণের জন্যই। কিন্তু বর্তমানে প্রচলিত ধর্মগুলো মানুষের কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই করছে বেশি, অবশ্য জাগতিক ব্যাপারে। ধর্মবেত্তারা সকলেই ছিলেন মানবকল্যাণে আত্মনিবেদিত মহাপুরুষ। কিন্তু তাঁরা তাঁদের দেশ ও কালের বন্ধনমুক্ত ছিলেন না। তাঁদের প্রবর্তিত সেকালের অনেক কল্যাণকর ব্যবস্থাই একালের মানুষের অকল্যাণের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই ধর্মীয় সমাজবিধানে ফাটল ধরেছে বহুদিন আগে থেকেই। সুদ আদান-প্রদান, খেলাধুলা, নাচ-গান, সুরা পান, ছবি আঁকা, নারী স্বাধীনতা, বিধর্মীর ভাষা শিক্ষা, জন্মনিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ধর্মবিরোধী কাজগুলো এখন শুধু রাষ্ট্রীয় সমর্থনপুষ্টই নয়, লাভ করেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বিশেষত গান, বাজনা, নারী, নাচ ও ছবি - এ পাঁচটির একত্র সমাবেশ দেখতে পাওয়া যায় সিনেমা, রেডিও এবং টেলিভিশনে। কিন্তু সেসবের বিরুদ্ধে সনাতনপন্থীরা কখনো প্রতিবাদের ঝড় তোলেননি। অথচ প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন ফজলুর রহমান, বযলুর রহমান, আ. র. হ. এনামুল হক, আবুল ফজল প্রমুখ মনীষীগণের দু’কলম লেখায়। কতকটা আমারও।
বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের ফলে ধর্ম হোঁচট খাচ্ছে পদে পদে। কোনো ধর্মের এমন শক্তি নেই যে, আজ ডারউইনের বিবর্তনবাদ বাতিল করে দেয়, নাকচ করে মর্গানের সমাজতত্ত্ব এবং ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত করে কোপার্নিকাস-গ্যালিলিওর আকাশ তত্ত্ব, নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব এবং আইনস্টাইনের আপেকিতা তত্ত্বকে। মধ্যযুগে যুগমানবের আসনে সমাসীন ছিলেন তৎকালীন মুনি-ঋষি ও নবী-আম্বিয়ারা। তাঁরা ছিলেন গুণী, জ্ঞানী ও মহৎ চরিত্রের মানুষ, তবে ভাববাদী। তাঁদের আদেশ-উপদেশ পালন ও চরিত্র অনুকরণ করেছেন সেকালের জনগণ এবং তখন তা উচিতও ছিলো। কিন্তু সেই সব মনীষীরা এযুগের মানুষের ইহজীবনের জন্য বিশেষ কিছুই রেখে যাননি, একমাত্র পারলৌকিক সুখ-দুঃখের কল্পনা ছাড়া। এ যুগের যুগমানবের আসনে সমাসীন আছেন - কবি-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, দার্শনিক ও বিজ্ঞানীরা। এঁরা সবাই এযুগের গুণী, জ্ঞানী ও মহৎ চরিত্রের মানুষ। তবে এঁরা হচ্ছেন মুক্তমন, স্বাধীন চিন্তার অধিকারী ও বাস্তববাদী। এঁদের অবদান ছাড়া এ যুগের কোনো মানুষের ইহজীবনের এক মুহূর্তও চলে না। তাই এঁদের সম্মিলিত মতাদর্শ আমাদের মস্তকে গ্রহণ করা উচিত ভাববাদের আবর্জনার বোঝা ফেলে দিয়ে। বর্তমান যুগে বিজ্ঞানবিরোধী কোনো শিক্ষাই গ্রহণীয় নয়। এখন প্রশ্ন হতে পারে যে, এঁদের সম্মিলিত মতাদর্শ কি? এক কথায় তার উত্তর হচ্ছে - মানবতা। হয়তো ঐ মানবতাই হবে আগামী দিনের মানুষের আন্তর্জাতিক ধর্ম তথা ‘মানবধর্ম’।
অতএব লালন বলে লালন কী জাত সংসারে বুঝতেই পারছেন।
ড.আহমদ শরীফের একটি কথাকে আমি দারুণভাবে ধারণ করি, যার মর্মার্থ-
মানুষ না বুঝেই জন্মসূত্রে আস্তিক। কিন্তু একজন নাস্তিক তাঁর মেধা মনন বুদ্ধি বিবেচনা ও আহরিত জ্ঞানের মাধ্যমে ধারাবাহিক অধ্যাবসায়ের মধ্য দিয়ে নাস্তিক হয়ে ওঠে। তাই একজন নাস্তিক যতটুকু মানবিক, একজন আস্তিকের কাছে তার কিছুই আশা করা যায় না। আর এজন্যই দেখা গেছে একজন নাস্তিক কখনোই সমাজের কোন অমঙ্গলের কারণ হন নি, বরং সমাজের হিত চিন্তায় নিজেকে ব্যাপৃত রাখেন। অন্যদিকে সমাজের যত অনিষ্ঠকারী ঘটনা এ যাবৎকাল ঘটেছে বা ঘটবে তার মূলে রয়েছে অবিবেচক আস্তিকরুপধারী ভণ্ডরাই।
আহমদ শরীফের কথাগুলো নিজের বয়ানে স্মৃতি থেকে বললাম। হুবহু হবে না, তবে সারমর্ম এটাই। এ নিয়ে অনেক হুলুস্থুল যুক্তি তর্ক বিতর্ক করা যেতে পারে। কিন্তু নিশ্চিৎভাবেই বিষয়টি ঠান্ডা মাথায় যুক্তির সততা দিয়ে নিজে নিজে ভাবার মতোই। নিজে নিজে বলছি এজন্যই যে, আমরা যখন বিতর্কে লিপ্ত হই তখন তাতে জেতার অনমনীয় মানসিকতা অনেকক্ষেত্রেই নিজেকে সৎ থাকতে দেয় না। নিজের সাথে তো আর প্রতারণা চলে না।
মন্তব্য লম্বা হয়ে যাচ্ছে। আর মন খুলে বলার অবকাশও কম। তবে আমি আশা করি সবাই অন্তত আমি কি হিন্দু না মুসলিম না বৌদ্ধ না খ্রিষ্ঠান না অন্যকোন ধর্মাবলম্বী তা ভুলে নিজেকে একজন যুক্তিশীল মানুষ হিসেবে যদি নিজের মুখোমুখি নিজে দাঁড়াতে পারি, তাহলে হয়তো চিন্তার অনেক জটই নিজে নিজেই খোলাশা হয়ে যেতে পারে।
তবে একটা কথা ঠিক, হ্যাভ আর হ্যাভনট-এর মাঝামাঝি কোন কিছু থাকা যেমন অসম্ভব, তেমনি যুক্তিশীলতায় মাঝামাঝি অবস্থান আসলে কোন অবস্থানই না। আত্মপ্রতারণা নয়তো ভণ্ডামী।
ধন্যবাদ সবাইকে।


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

দেশে কি এখনও কদুরতৈল পাওয়া যায়? ভাবতেসি আপনের জন্য এক বোতল কদুরতৈল নিতে পারি কি না। দেখা-সাক্ষাৎ অবশ্য পরের কথা।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

রণদীপম বসু এর ছবি

হেমায়েতপুরে না রাখলে তাহলে এটাই কি সেই রমণীয় চিকিৎসা ! তিনাকে কি জিজ্ঞেস করে দেখবো ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তানবীরা এর ছবি

আজকের দিনটাকে সচল মনবৈকল্য দিবস হিসেবে ঘোষনা দিলে কেমন হয়, অনেকেই এক পথের যাত্রী। তবে হ্যাটস অফ আপনাকে, মন বৈকল্য নিয়ে এতো লম্বা লম্বা মন্তব্য করে গেছেন।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রণদীপম বসু এর ছবি

মনোবৈকল্য দিবস ! হায় হায় ! তাহলে এইখানকার লাইনও লম্বা !

আর আপা, বৈকল্যে না পেলে কেউ এতো লম্বা লম্বা মন্তব্য লিখতে যায় ? হা হা হা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

আজ অফিসের এতো চাপের মধ্যেও, বিরতিতে সবকটা লেখা গোগ্রাসে গিল্লাম, মিথ্যে বলবো না আজ যেনো "এক সে বড়কর এক"। মন্তব্য করারই সময়ই পাই নি।

রণদীপমদা সকিছু বলেই দিয়েছেন,
তবু এত ভালো লেখকের/লেখার সমাবেশ!!! আমি গর্বিত এই ভেবে যে আমি এই পরিবারেরই একজন সদস্য,

------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

রণদীপম বসু এর ছবি

আরে ভাই এখানেই তো সমস্যা ! এতো ভালো লেখকের/লেখার সমাবেশ হলেই বুঝবেন যে লেখকরা আমাদের মতো পাঠককে গরু ভাবতে শুরু করেছেন। বিশ্বাস হলো না ? তাহলে আপনাকে উদাহরণ টেনেই বলি ? এই যে আপনি বললেন 'সবকটা লেখা গোগ্রাসে গিল্লাম', এতে কী বোঝা গেলো ? আপনি মানুষের অবস্থায় থাকতে পারেন নি। বাংলা অভিধানে 'গোগ্রাস' শব্দটির প্রকৃত অর্থ স্পষ্টভাবে বলা আছে 'গরুর মতো গ্রাসে'।

তাহলে এবার আপনিই বলুন, লেখকদের এই স্বেচ্ছাচার কি মেনে নেয়া যায় ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

হি হি হি, ভালই বলেছেন, লেখকরা যে অন্য কিছু ভাবতে শুরু করে নাই তাতেই রক্ষে, দেখেন আরো কি কি সব ভাবতে শুরু করে।

আইছা ছ্যাগ্রাসে কি তা হলে 'ছাগলের মতো গ্রাসে' !!!

------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

রণদীপম বসু এর ছবি

ছ্যাগ্রাসে !
ভালোই বলেছেন। বাংলা অভিধানে অবিলম্বে এই শব্দটিকে অন্তর্ভুক্তকরণের দাবী জানাচ্ছি।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রণদীপম বসু এর ছবি

তবে 'ছ্যামুড়াইয়া' হলে আরো ভালো হয়। ছাগলের মতো মুড়াইয়া গিলা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

আয়নায় তাকালেই দেখি-ভন্ড আর প্রতারক একজন আমার চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছে আমারই দিকে।

---------------------------------------------------------

আমরা যারা শিখিনি চাষবাস,ফসলের গীত
গুলালিতে পাখি হত্যা

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

রণদীপম বসু এর ছবি

আরে খাইছে ! আপনি এখনো হা করে কী দেখছেন ! তারাতারি পুলিশে সোপর্দ করেন। সাংঘাতিক অবস্থা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

লেখার ধরণটা খুব মজার লাগল। তবে তানবীরা আপুর প্রস্তাবটা ভেবে দেখার মত চোখ টিপি
__________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

রণদীপম বসু এর ছবি

প্রহরী ভাই, তানবীরা আপুর প্রস্তাবটা ভেবে দেখার আগে পাগলা গারদের আবাসন সমস্যার বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে। সচলে এরকম একটা ওয়ার্ড খুললে মন্দ হতো না। এ ব্যাপারে মডুরা কী বলেন জানতে চাই ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।