আগের পর্বের পর...
(০৮)
২৯ এপ্রিল ১৯৯১। এখানে এসেছি তিন সপ্তাও পুরো হয়নি তখনো। আগের দিন থেকেই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের দশ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেখানোর ঘোষণা প্রচার হচ্ছে রেডিওতে। এখানকার বিনোদনের একমাত্র ইলেকট্রনিক্স মাধ্যম হচ্ছে রেডিও। তা আবার এক ব্যান্ডের ছোট্ট রেডিওর প্রচলই বেশি। হাতের মুঠোয় নৌকায় মাঠে ঘাটে হাটে বাজারে সহজ বহনযোগ্যতা আর তুলনামূলক সাশ্রয়ী হিসেবে আনাচে কানাচে মানুষ আছে অথচ খশখশে যান্ত্রিক আওয়াজের সাথে কথা-সুর ভেসে আসবে না তা চিন্তাও করা যায় না। বিনোদন বিলাসী বাসাবাড়িতে কারো কারো হয়তো চার পাঁচ ব্যাটারির শক্তিখেকো তিন ব্যান্ডের বড় রেডিও বা টুইন ইন ওয়ানও রয়েছে। থেকে থেকে ঘোষণা হচ্ছে, চট্টগ্রাম কক্সবাজার ফেনী নোয়াখালী ভোলা খুলনা বরিশাল পটুয়াখালী ঝালকাঠি বাগেরহাট পিরোজপুর বরগুনা জেলাসমূহ এবং তৎসহ উপকূলীয় অঞ্চলসমূহকে দশ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হচ্ছে। সাগর প্রচণ্ড উত্তাল থাকবে এবং দশ থেকে পনের ফুট কোথাও কোথাও আরও বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলীয় দ্বীপ ও নিম্নাঞ্চলের অধিবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে।
সকালে ঘর থেকে বেরুতেই অফিসের সামনেতক নদীর উপচে আসা সচল পানি দেখে ভড়কে গেলাম ! যথারীতি সূর্য উঠা পরিষ্কার আকাশ, মেঘের কোন চিহ্ণই নেই। ব্যাপার কী ! সহকর্মী জানালো, আজ পূর্ণিমা, ভরাজোয়ারের ফুলে ফেঁপে ওঠা পানি এগুলো। কিছুক্ষণ পরই ভাটার টান পড়লে নেমে যাবে। ওহ্, তাহলে এটাও অতিসাধারণ প্রাকৃতিক ঘটনা। কিন্তু দশ নম্বর মহাবিপদসংকেতের কী হবে ? বুকের ভেতর প্রচণ্ড ঢিপঢিপ, কোন কাজ করতেই বল পাচ্ছি না। অথচ কী আশ্চর্য, এখানকার মানুষদের মধ্যে দুশ্চিন্তার কোন বিন্দুবিসর্গও টের পাওয়া যাচ্ছে না ! সব কিছুই কী স্বাভাবিক ! বাজার হাট ব্যবসা বাণিজ্য জীবন যাপন কোথাও কোন অসঙ্গতি বা ছন্দপতনের ছিটেফোটাও না দেখে বেশ অবাক হচ্ছি আর নিজেও কেন জানি ভেতরে ভেতরে সাহস ফিরে পাচ্ছি। আমাদের অফিসের পাশের ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের সদ্যনির্মিত দোতলা পাকা ভবনেও যথারীতি কর্মব্যস্ততা। তবে কি এই দশ নম্বর বিপদসংকেতকে আমরা দূর থেকে যেরকম ভীতিকরভাবে জানি, বাস্তবে তা এতো ভয়ঙ্কর নয় !
দুপুর বারোটাতক পরিষ্কার ঝলমলে রোদ্দুরে ঘূর্ণিঝড়ের কোন আলামতই দেখা গেলো না। এর পর রোদটা কেমন মজে আসতে লাগলো। বেলা দুটোর দিকে সবকিছু কেমন থমথমে হয়ে গেলো। রোদ সম্পূর্ণ মরে গেছে। আকাশে বাতাসে প্রকৃতিতে একটা গুমোট স্তব্ধতা। আমার বুকের ভেতর আরো বেশি। দোকানপাটগুলো দ্রুত বন্ধ হয়ে যেতে লাগলো। হাটভাঙা মানুষের বাড়িফেরার স্রোত। ইউনিয়ন পরিষদের দোতলা ভবনটাতে দলে দলে মহিলাপুরুষ এসে বাচ্চাকাচ্চাসহ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। কীসের অফিস আদালত ! অফিস বন্ধ করে দোতলার খোঁয়াড়ে উঠে গেলাম। সহকর্মীরা মিলে অহেতুক আড্ডায় সাহস ফিরে পাওয়ার বৃথা কসরত শুরু হলো। তিন ব্যান্ডের রেডিওটাতে নতুন ব্যাটারী লাগিয়ে অন করে দেয়া হলো। কাছাকাছি স্টেশন হচ্ছে খুলনা বেতার। ঘেরঘের আওয়াজে ঢাকা বা অন্য স্টেশনগুলোর কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। অবশেষে খুলনাতেই মিটার ফিক্সড করে রাখা হলো। মুহুর্মূহু ঘোষণা হচ্ছে, ঘণ্টায় দুশ থেকে দুশ পঞ্চাশ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে। পনের থেকে বিশ ফুট উঁচু তীব্র জলোচ্ছ্বাসে সবকিছু ভেসে যেতে পারে। তাই চিড়া গুড় জাতীয় শুকনো প্যাকেটজাত খাবার দিয়াশলাই ও নিত্যপ্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্যাদি মোটা ও পুরু পলিথিনের ব্যাগে শক্ত করে বেঁধে কোন শুকনো উঁচু জায়গায় আড়াইহাত মাটির নীচে পুঁতে রাখার জন্য বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এ মুহূর্তে কিছুই করার নেই। সে সময় উত্তীর্ণ।
গুমোট স্তব্ধতা ভেঙে একটু একটু বাতাস বইতে শুরু করলো। হঠাৎ নীচে অফিসের দরজায় কে যেন জোরে জোরে কড়াঘাত করছে। সহকর্মী একজন নীচে নেমে গেলেন। সাথে নিয়ে এলেন পাশের শাখার এক সহকর্মীকে যিনি নাকি এখানকার প্রাক্তন সহকর্মীও। হাতে ব্যাগ। ছুটিতে বাড়ি রওয়ানা দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় লঞ্চ বন্ধ। এখানেই রাতটা কাটিয়ে পরদিন যাবেন। কিন্তু আমাদের জীবনে কি পরদিন আর আদৌ আসবে ? মা বাবা ভাই বোন বন্ধু বান্ধব আত্মীয় পরিজন এবং প্রিয়তম মানুষটির জন্য বুকের ভিতর হু হু করে কান্না বইতে লাগলো। আহারে, কেন যে মরতে এই যমের রাজত্বে এসেছিলাম !
দোতলার দক্ষিণ দিকের গরাদ বা ছোট্ট জানালাটা খোলা থাকলো বাইরের পৃথিবী দেখার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে। কিছুদূর সামনেই প্রকাণ্ড তালগাছটা মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। তারও পরে নদীর পাড় এবং নদীর বড় একটা অংশ দেখা যায়। বিশেষ করে নদীর বড় মোড়টা এখান থেকে সরাসরি দেখা যায় এবং ওপাড়ের লঞ্চঘাটের আংশিক এখান থেকে আঁচ করা যায়। রেডিওর ঘোষণা অনুযায়ী প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড় উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আমরা সহকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাগুলো সেরে নিলাম। ঢিলেঢালা পোশাক শক্ত করে শরীরে আটকে কোমরে গামছাটাকে কষে বেঁধে অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ টর্চলাইটটা গুঁজে নিলাম। টাকাপয়সাগুলোও পোশাকের নিরাপদ অবস্থানে রেখে দিলাম। সবাইকে একটা কথাই বলে নিলাম, জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেলে স্রোতের বিপরীতে সাঁতরে শক্তিক্ষয়ের দরকার নেই। স্রোত যেদিকে নেয় নিয়ে যাবে, শুধু ভেসে থাকার চেষ্টা করতে হবে। কী হাস্যকর এসব কথাবার্তা, অথচ কী গুরুত্ব দিয়ে বলছি। অনভিজ্ঞতা আর কাকে বলে !
বাতাসের বাড়ি খেয়ে তালগাছের পাতাগুলো ফড়ফড় করে কাঁপছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর বিকেলের অন্ধকার সন্ধ্যা নামিয়ে দিয়েছে। বাতাস এখন উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী বইছে। বেগ বাড়ছে তীব্র থেকে তীব্রতর। জোয়ারের সময়। এই বাতাসই যখন ঘূর্ণির রূপ নিয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তরে বইতে শুরু করবে, পূর্ণিমার ভরা জোয়ারের সাথে ঘূর্ণিঝড়ের প্রলয়ঙ্করী মোচড় যে আমাদেরকে তীব্রবেগে ভাসিয়ে কে জানে কোথায় নিয়ে চুরমার করে দেবে, তা কেবল সময়ের ব্যাপার। এই টিনের ঘর তো প্রথম তোড়েই দুমড়েমুচড়ে যাবে। এমন ভয়াল আগামী সামনে রেখে সত্যি সত্যি সন্ধ্যা হলো ঠিকই, কিন্তু এ কী ! একটা অপার্থিব ভুতুরে লাল হলুদে মেশানো আলোয় সব কিছু কেমন যেন আধিস্পষ্ট হয়ে ওঠতে লাগলো। এটাই ধ্বংসের পূর্ব মুহূর্ত কিনা কে জানে। এবং তখনি শুরু হলো তাণ্ডব ! চারদিকে ভৌতিক শব্দ, প্রকাণ্ড তালগাছটার শক্ত পাতাগুলো কিসে যেন খাবলে খাবলে তুলে নিয়ে যেতে লাগলো। শো শো সা সা হুম হুম ভো ভো ধুরুম ধারুম আওয়াজের সাথে সাথে আমাদের টিনের দোতলা শক্ত ঘরটা কাগজের মতো কাঁপতে লাগলো। সহকর্মীরা কাঁপতে কাঁপতে দোয়াদরুদ পড়া শুরু করলো। কেউ কেউ ঠাকুর ঠাকুর রোল তুলে দিলো। আশে পাশে কোথা থেকে যেন শঙ্খ আর উলুধ্বণি, এর পরেই কারো সর্বশক্তি দিয়ে আজানের চিৎকারও তলিয়ে যেতে থাকলো। আমি কিছুই শুনছি না আর। বোধবুদ্ধিচিন্তাশক্তি একটু একটু করে লোপ পেতে শুরু করেছে। জীবিত আছি না মরে গেছি সে ধন্ধের মধ্যে থেকেই জানলা দিয়ে বাইরে তাকাতেই ভয়াবহ দৃশ্যটা চোখে পড়লো নিমেষেই। হলুদ ভোঁতা আলোয় স্পষ্ট, সামনের বিশাল নদীটাতে একফোটা পানি নেই ! পাতালের অন্ধকার নদীর গভীরে ! এমন দানবীয় অসহ্য বীভৎস দৃশ্য দেখে চোখ বন্ধ করবো, নিজের শরীরের উপর সে নিয়ন্ত্রণ আর নেই। সম্ভবত জ্ঞান হারাতে যাচ্ছি আমি। এই মহাপ্রকৃতির কাছে পুতুল হয়ে যাওয়া সহকর্মীদের কার কী অবস্থা তখন বলতে পারবো না। বহু দূর থেকে যেন কোন যান্ত্রিক শব্দ হচ্ছে, আর এর মধ্য থেকেই মাঝে মাঝে মানুষের শব্দ, এখন একশ আশি কিলোমিটার বেগে তীব্র ঘূর্ণি হাওয়া বয়ে যাচ্ছে.. এই গতিবেগ দুশো থেকে দুশোপঁচিশ কিলোমিটারে উঠতে পারে.. ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লন্ডভন্ড ও তলিযে যাওয়া বরগুনার সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে.. ঘূর্ণিঝড় শেষে প্রয়োজনীয় উদ্ধারকাজ চালানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে আছে বলে.. জানিয়েছেন।.. বহু কষ্টে এটা স্মরণ করতে পারলাম যে এখান থেকে বরগুনার দূরত্ব খুব বেশি নয়।
হঠাৎ কারো নাক ডাকার শব্দে যেন চেতন পেলাম। আমাদের সেই বাড়ি গমনেচ্ছু সহকর্মী এই প্রলয়কান্ডের মধ্যেও বেঘোরে নাক ডাকাচ্ছেন ! আবছা আলোয় সময় দেখার চেষ্টা করলাম। দশটা বেজে কত মিনিট যেন। একটু একটু করে স্থান সচেতন হয়ে ওঠছি। সহকর্মীরা পাথরের মূর্তির মতো স্থির হয়ে আছে যে যার জায়গায়। আমিও জানলাটার পাশে সেই আগের মতোই বসে আছি। বাইরে প্রবল ঝড় বইছে। ঘরটাও কাঁপছে আগের মতোই। কিন্তু কী আশ্চর্য, ভেতরে ভয় ডর কিছুই আর টের পাচ্ছি না। বুদ্ধিবৃত্তিও মনে হয় ফিরে আসছে। কেননা তখনি বেঁচে থাকার সপক্ষে যুক্তিসিদ্ধ আলামতগুলো একে একে যাচাই করে নিতে পারছি। এই যেমন বুঝতে পারছি বাতাস এখনো উত্তর থেকে আগের মতো দক্ষিণেই বইছে। আমাদের উত্তরে দোতলা বড় ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের ভবনটা বাতাসের থেকে থেকে আঘাত হানা ধাক্কাগুলো ঢালের মতো আটকে দেয়ায় বোধ করি আমাদের ঘরটা এখনো উড়ে যায়নি। আর উল্টো বাতাস তার দানবীয় তীব্রতায় গোটা নদীটাকেই এদিকে না এনে দক্ষিণে সাগরের দিকেই ঠেলে দিয়েছে। না জানি এই বিশাল পানির পাহাড় কতো লোকালয় ভাসিয়ে নিয়েছে ! ওটাই আবার উল্টোমুখী হয়ে ফিরে আসতে কতোক্ষণ !
কোন ভয় ডর কাজ করছে না আর। হতে পারে বেঁচে থাকার এতটুকু আশাও ভেতরে কোথাও আর অবশিষ্ট নেই বলে কিছু হারানোর আশঙ্কাও অন্তর্হিত হয়ে গেছে। সশরীরে মৃত্যু এসে সামনে দাঁড়ালেও মনে হয় এখন নির্বিকার সমর্পণ হতে পারবো তার কাছে। কেবল এক অনির্দিষ্ট কালের আপেক্ষিক সময়ের ফাঁদে আটকা পড়ে অনিশ্চিৎ অপেক্ষার প্রহর গোনা এখন। রাত দুটোর দিকে ঝড়ের তীব্রতা কমে এলো। বিরতিহীন এতো দীর্ঘ অবিচ্ছিন্ন সময়ের নার্ভাসনেসে ভোঁতা হয়ে যাওয়া নার্ভের উপর থেকে একটু একটু করে চাপ কমে আসতে শুরু করলো। এবং তখনি হঠাৎ টের পেলাম যে, বেঁচে থাকার আনন্দ মানুষের এক শাশ্বত বোধ ! বেঁচে আছি, এই দুর্বহ উচ্ছ্বাসই আনন্দে মরে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। তখনো জানি না, বাইরের পৃথিবী আদৌ তার আগের চেহারায় আছে কি না !
[চলবে...]
মন্তব্য
উদ্ধৃতি
বেঁচে আছি, এই দুর্বহ উচ্ছ্বাসই আনন্দে মরে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
-কখনো কখনো বেঁচে থাকাটা বুঝি প্রকৃতির মহৎ কোনো শিল্পকর্ম হয়ে ওঠে।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
যদি দেখার মতো চোখটা অবশিষ্ট থাকে...
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
খাইছে... এ তো ব্যাপক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হুঁম, ব্যাপক...
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বিশ্বাস করুন, তুফানটা আমার উপড় দিয়েও গেছে। আপনি সেখানে ছিলেন, আর আমি নেটে। এইটুকুই শুধু পার্থক্য!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
উফ্, একটুর জন্যে তো আপনিও বেঁচে গেলেন দেখছি !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
লেখার মধ্যে দিয়ে নদীটার "বীভৎস" চেহারাটা মনে হয় নিজ চোখে দেখলাম....
কল্পনা আক্তার
.............................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
নদী আসলে বীভৎস নয়। রুদ্র প্রকৃতি কখনো কখনো নদীর চেহারায় এতো বীভৎসতা এঁকে দেয় যে, এ দৃশ্য না দেখলে কখনোই বিশ্বাস করতাম না আমি।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আপনার বর্ণনা পুরো ঝড়টাকেই নিজের চোখে দেখিয়ে দিলো
০২
আগের লেখার লিংকগুলো উপরে দিলে পুরো প্রিভিউটা খেয়ে ফেলে
নিচে দেন স্যার
যথা আজ্ঞা জনাব।
এরপর থেকে আগের লেখার লিংকগুলো নিচেই দেবো।
আর এখনই যাবেন না স্যার। জুতসই একটা নামকরণের বিষয়ে আগের লেখায় কী যেনো বলেছিলেন। আমি কিন্তু সত্যিই আশায় আশায়...
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
যাচ্ছি না স্যার
মাথায়া অনেকগুলো ঘুরছে কিন্তু এই লেখাটার জন্য কোনোটাই পছন্দ হচ্ছে না
একটু গোছাতে পারলে আপনাকে মেইল করব
সচল মেইল বোধহয় কয়েকদিন বন্ধ থাকবে
আপনার অন্য মেইলটা আমাকে পাঠান
এ
হুম............ সেইবার আমার খুব কাছের কেও মারা না গেলেও আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল । তবে পিচ্চে ছিলাম কিছু বুঝার উপায় নাই আমার ।
নিবিড়
২৯ এপ্রিলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি মোটামুটি হলেও পূর্বাঞ্চলের চেয়ে হতাহতের পরিমাণ তুলনামূলক কম হওয়ার পেছনে যুক্তিসঙ্গত একটা ব্যাখ্যা ছোট্ট করে দিয়েছি পরের পর্বে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ঢাকা শহরে একটা ন'তলার বাসার টপ ফ্লোরে এ বছরের শুরুতে উঠেছি। এরই মধ্যে গ্রীষ্মের কালবৈশাখী, বর্ষাকালের বৃষ্টি আর এখনকার শরতের আচমকা দমকা বাতাস দেখা হয়ে গিয়েছে; ঠিক দেখা নয় - শোনা! কালবৈশাখীর কথা বাদ দিলাম; ৫০/৬০ কিমিতে বাতাস ছুটলেই বন্ধ দরজা-জানালার ফাঁক গলে ঢোকা বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দেই বুকে কাঁপন ধরে যায়।
সেখানে সেই ঝড়! ওরে বাবা!!
আসলেই কি নদী শুকিয়ে পড়েছিলো (মাফ করবেন, কল্পনাতেও এই দৃশ্য তৈরী করতে পারছিনা বলে এই কথা বললাম)
ঝড়টা যে প্রলয়ঙ্করি ছিলো তাতে কোন সন্দেহ নেই। লক্ষলক্ষ মানুষ হতাহত ছাড়াও বহু মানুষ জলোচ্ছ্বাসে নিরুদ্দিষ্ট হয়েছিলো। সেই থেকে উড়ির চর নামটাও বাঙালির পরিচিত একটি দুর্ভাগা দ্বীপের নাম হলো।
বাতাসের গতিবেগ যা উল্লেখ করেছি তা তো মেপে দেখার কোন কায়দা নেই। বিরতিহীন রেডিও বুলেটিনকেই পরিমিতি হিসেবে ধরে নিয়েছি। তবে তা যে আমার জীবনের ভয়ঙ্করতম অভিজ্ঞতা। আর এটা কল্পনাতেও আসার কথা নয়। সেদিন পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে এমনিতেই কুল উপচানো নদী থাকার কথা। অথচ উল্টো বাতাসে কী ভয়াবহ দৃশ্য। পরের পর্বে তার ব্যাখ্যাটা ছোট্ট করে দেয়া আছে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আপনার কাহিনি কি উড়ির চর কে নিয়ে তাইলে তো আমি পাশের দ্বীপেই ছিলাম , সন্দ্বীপ ।
নিবিড়
ঘূর্ণিঝড় ট্যাগ দেখে ঢুকলাম। দেখি ২৯ শে এপ্রিল, ১৯৯১। সে রাতের কথা লিখে রেখেছিলাম এখানে। আপনার অভিজ্ঞতা সেটা আবার মনে করিয়ে দিল।
= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।
আপনার পোস্টটি পড়ে এলাম। দুর্দান্ত লেখা দিয়েছেন। ওই সময়ের একটি নির্ভরযোগ্য তথ্যচিত্র। আসলেই যে কী ভয়ঙ্কর ঝড় ছিলো, যারা দেখে নাই তারা কল্পনাও করতে পারবে না।
ঝড়ের পরদিন রেডিওর খবরে চট্টগ্রাম সম্পর্কে যা শুনেছিলাম, আপনার লেখাতেও সে বিষয়টা এসেছে। আমার পরবর্তী পর্বে খবরে শোনা চট্টগ্রামের বিষয়টা খুব সামান্য এসেছে জাস্ট তথ্য হিসেবে।
ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট ভ্রমণের জন্য।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ছোটবেলা মামার বাড়ী যাওয়া হতো প্রায়ই, টিনের চাল, মামা ভীষন ভীতু ছিলেন, ঝড় উঠলেই আমাদের খাট থেকে নামিয়ে মেঝেতে দেওয়া হতো।
ঘুমে কাবু আমরা তখন মেঝেতে বসে বসেই ঝিমুচ্ছি। কোনোদিনই মামার বাড়ী ভাঙতেও দেখলাম না চালও উড়ে যেতে দেখলাম না।
তবে আপনার বর্ণনার ঝড় কাঁপন ধরানোর মতো
রণদীপমদা, সেই ছোট্ট বেলার কথা মনে পড়িয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
আপনার ছোট্ট বেলার স্মৃতিটা খুব জটিল হলে তো মনে করিয়ে ভালো কাজ করি নি। কিন্তু কী করবো, জটিল স্মৃতিই মানুষ মনে রাখে বেশি। হা হা হা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন