(১১)
কলিগ বন্ধুর সাথে সকালে বেরিয়েছি অফিসিয়াল কাজে। বেশ দূর যেতে হবে। মাধ্যম তো সেই পায়ে হাঁটা। কিন্তু আমার মধ্যে তখন বিদায়ী বাঁশির সুরের আচ্ছন্নতা। তাই এক নতুন বিচ্ছেদি দৃষ্টি দিয়ে দেখছি সব। যেতে যেতে অনেক দূরেই চলে গেছি, প্রকৃতি যেখানে আরো অনেক গভীর। দুপুর পেরিয়ে ফিরে আসছি যখন, কটকটা রোদের তীব্র ঝাঁঝ ছাতায় মানলেও হাঁটার ক্লান্তির সাথে গরমের তীব্রতায় ঘেমে নেয়ে একশেষ দুজন। বিষখালির পাড়ে পাড়ে হাঁটছি। বিস্তির্ণ ধানি জমি। কতো রকমের নাম জানা না জানা সবুজ গাছগাছালি ঝোপঝাড় বন খাল নালা পানি বালু। প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রচুর তাল আর নারিকেলের গাছের আধিক্য। একটু পর পর তাল গাছের সারি। কাণ্ডশীর্ষে গলায় ফাস লাগানো কলসিগুলোর খোলা মুখে বাঁশের চোঙা, যা গাথা রয়েছে তালের কাঁধির যেকোন একটা কচি তালের বিশেষভাবে কর্তিত অংশে। গাছের গায়ে ছাল তুলে নগ্ন পরিষ্কার অংশ থেকে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করার পদ্ধতি তালের বেলায় ভিন্ন। রস সংগ্রহের এই পদ্ধতি খেয়াল করলে মনে হবে রসবিচারে রসালো অঞ্চলের গাছ হয়েও তালগাছ মোটেও রসালো নয়। অন্যদিকে শুষ্ক মরু অঞ্চলের প্রতিনিধি হয়েও এই খেজুর গাছের অসমতল কাণ্ড বা গুড়িটা এতো রসালো বা রসদানকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো কী করে, তা ভাবলে বেশ আশ্চর্য হতে হয় বৈ কি।
ক্লান্তির সাথে তৃষ্ণায় গলা খাঁ খাঁ করছে। ক্ষুৎপিপাসায় কাবু হয়ে একটু ছায়া দেখে একটা গাছের নীচে জিড়িয়ে নিতে বসে পড়লাম দুজনেই। কিন্তু পানি পাই কোথায় ? চোখ গেলো কাছের আরেকটি তালগাছের শীর্ষে। লোকটি বিশেষ কায়দায় গাছে চড়ে একটা দড়ি দিয়ে নিজেকে গাছের সাথে লুজ করে পেচিয়ে পেছনের দিকে শূন্যে শরীরটাকে ছেড়ে দেয়ার সাথে সাথে দড়িটা তাকে টেনে ধরলো। যেন একটা ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে আছে এই ভাব নিয়ে লোকটি রসে ভর্তি হয়ে ওঠা কলসিটা খুলে তাঁর কোমড়ে বাঁধা একটা গাছের ডালে তৈরি প্রাকৃতিক আংটায় বিশেষভাবে ঝুলিয়ে দিলো। আর কোমড়ের অপর পাশে ঝুলানো খালি কলসিটা গাছের সাথে যথানিয়মে বেঁধে আটকে দিয়ে ধীরে ধীরে বিশেষ কায়দায় নীচে নেমে এলো। তাকেই ডাকলাম আমরা।
জনমানবহীন নির্জন তল্লাটে গ্লাস মেপে রস বিক্রি হয় না। মূলত পাটালিগুড় তৈরি জন্যই এই রসের কারবার। এই রস থেকে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে পাটালিগুড় তৈরি হয়ে গোটা দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। লাভজনক অর্থকরী ফসল। অর্থ উৎপাদনের অন্যতম প্রধান খাত হিসেবে ব্যক্তিপর্যায়ে তাল গাছ লিজ নেয়া অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যবসা এখানে। পিপাসা মেটাতে লোকটি এমনিতে মগে করে রস দিতে চাইলেও আমরা এই গরীব বেচারার থেকে বিনা পয়সায় রস খেতে নারাজ। অবশেষে বড় এক কলসি রসই কিনে নিলাম নির্ধারিত বিশ টাকা মূল্যে। কোন মুলামুলি ছাড়া একদামে কিনে নেয়ায় লোকটি বিস্মিত হলেও আমরা বিস্মিত এতো বড়ো রসের কলসি মাত্র বিশ টাকা !
দু’মগ করে দু’জনে চার মগ রস তো গিললাম না, মনে হলো যেনো অমৃত পান করছি। ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত বলে নয়, সদ্য নামানো তালের রস আদতেই খুব সুস্বাদু। কিন্তু দু'মগেই পেট ঢোল হয়ে গেছে। টাকাসহ গোটা কলসিটাই ফেরত নিতে নিতে লোকটি বোধ করি ভাবলো, প্যাণ্ট শার্ট পড়া কেতাদুরস্ত এই ভদ্রলোক দুটোর নিশ্চয়ই মাথায় ছিট আছে। এই গরমে রসের হাড়ি পেটে যেতেই চোখে যে রঙ জমতে শুরু করেছে, তা কি আর বুঝতে পেরেছি তখন ! আহা, পৃথিবীটা কতো তৃপ্তিকর আনন্দময় ওঠছে ! একটা মধুর তন্দ্রায় পেয়ে গেছে দুজনকেই। হালকা ঝিরিঝিরি বাতাস তো নয়, স্বর্গ থেকে অন্সরীদের আঁচল দোলানো নৃত্য যেন ! রসে জমতে জমতে এই নৃত্যের মধ্যেই মজে গেলাম।
হাঁক ডাক শুনে চোখ মেললাম। সেই লোকটি। সূর্য অস্তাচলে। রসের কলসি পাল্টাতে এসে জনমানবহীন নির্জন তল্লাটে ঘাসের উপরে সেই ভদ্রলোক দুটোকে অঘোরে পড়ে থাকতে দেখে যা বুঝার বুঝে ফেলেছে। হায় হায় ! এখান থেকে অফিসে ফিরতে তো রাত হয়ে যাবে ! টর্চও সাথে আনা হয় নি। এরকম পরিস্থিতি হবে কেউ কি ভেবেছিলাম ! লোকটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তড়িঘড়ি হাঁটা দিলাম। ভয়ানক বিপদের কথা। যেভাবে বাহ্যজ্ঞান লুপ্ত হয়ে পড়েছিলাম, মুহূর্তেই সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়াটা কোন বিষয়ই ছিলো না। মনে মনে লোকটির প্রতি কৃতজ্ঞতায় ভরে ওঠলো বুক।
পথেই সন্ধ্যা পেরিয়ে ঘুটঘুটে রাত নেমে এলো। একে তো জোয়ারে টইটম্বুর খাল নালা আশপাশ। তার ওপরে সবকিছু অন্ধকারে একাকার হয়ে যাচ্ছে। আতঙ্ক চেপে ধরলো দুজনকেই। হঠাৎ একটা টর্চের তীব্র আলো এসে পড়লো। জনাকয়েক লোকের সাড়া পেলাম। স্যার নি ? রাত হয়ে যাওয়ায় সহকর্মীরা আন্তরিক দায়িত্ববোধ নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছে। আবারো কৃতজ্ঞ হলাম।
(১২)
কী ব্যাপার , আজ লঞ্চের সাড়া পেলাম না যে ? লঞ্চ কি আসে নি ? লঞ্চডুবি হয়েছে কোথাও ? না, লঞ্চডুবি হবে কোত্থেকে ! লঞ্চই তো চলেনি আজ। মানে ! ধর্মঘট। অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ ধর্মঘট শুরু হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সব রুটে। দাবি দাওয়া নিয়ে আগে থেকেই সরকারকে হুমকী ধামকী দিয়ে আসছিলো। সরকার কোন গা করে নি বলে এবার এরা সত্যি সত্যি ধর্মঘটে নেমে গেছে।
এ অঞ্চলের একমাত্র যাতায়াত মাধ্যম নৌপথ। দূরবর্তী গন্তব্যে যাওয়ার জন্যে লঞ্চের বিকল্প নেই। দেশের বিশাল একটা অঞ্চলের মানুষ এই লঞ্চমালিক আর সরকারের দ্বৈরথে দিব্যি জিম্মি হয়ে গেলো ! আমার রিলিজের ডেট আরো এগারো দিন বাকি। এর মধ্যে যে একটা সমাধান হয়ে যাবে, তাতে আমি নিশ্চিৎ। কিন্তু একদিন যায় দুদিন যায় তিনদিন যায় চারদিন পাঁচদিন এমন কি সপ্তা কেটে গেলো, কোন সাড়াশব্দ নেই। ধর্মঘট চলছেই। এবার ভেতরে ভেতরে একটু চুপসে গেলাম। তবু তীব্র আশায় আশাবাদী হলাম, দশদিনের মধ্যে একটা হেস্তনেস্ত তো হবেই। আবার অস্বস্তি, কিন্তু যদি না হয় ?
দশদিন গত হয়ে গেলো। ধর্মঘট ভাঙলো না। কঠিন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। রিলিজের জন্য অনিশ্চিৎকাল অপেক্ষায় থেকে শেষপর্যন্ত যদি অফিস অর্ডার ফিরে যায় ! তাহলে আবার কবে কোন কালে পুনরায় অর্ডার হবে তার কি কোনো ঠিক ঠিকানা আছে ? না, নিজেকে এভাবে অনিশ্চয়তার হাতে ছেড়ে দিতে রাজী নই আমি। সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম, আগামীকাল ঠিকই রিলিজ নিয়ে নেবো। মাঝখানে পাঁচদিনের ট্রানজিট লীভ ধরে সাত দিনের দিন যোগদান করতে হবে নতুন কর্মস্থলে। এই সাত দিনেও কি যাওয়া যাবে না ? পরিহাসছলেই আমার সমস্ত জিনিস পত্র সহকর্মীদের কাছে অকশনে তুললাম। অত্যন্ত সস্তা বিধায় কাঁঠাল কাঠের কিছু ছোটকাটো ফার্নিচার বানিয়েছিলাম কয়েকজন মিলে গোটা একটা গাছ কিনে। বহু কারিশমা করে যে টি-টেবিলটা বানাতে খরচ হয়েছিলো সাড়ে পাঁচশ’ টাকা, ওটার সর্বোচ্চ দাম ওঠলো একশ’ টাকা। তাই সই। এভাবে তিনশ’ টাকার জিনিস ত্রিশ টাকা, চারশ’ টাকার জিনিস বিশ টাকা। এরকম অদ্ভুত অকশন শেষে ওয়ানটাইম খাটের কোন দরদাতা না পেয়ে এবার হাতেমতাঈ হতেও দ্বিধা রইলো না। শেষপর্যন্ত মায়ার সংসারে খালিহাতে আসা যাওয়ার মতোই যেভাবে এখানে এসেছিলাম, অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করলাম যে কেবল সেগুলোই আবার ফেরৎযাত্রার সঙ্গি হতে যাচ্ছে ! কাঁধে ঝোলানো ব্যগভর্তি বই আর কাপড়-চোপড় এবং হাতে ঝোলানো বেডিংটাই !
যথাসময়ে রিলিজ নিয়ে নিলাম। এদিকে এগারো দিনেও অনির্দিষ্টকালের লঞ্চ ধর্মঘট চলতেই থাকলো। পরেরদিন সকালে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যাত্রা করার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নৌকা ভাড়া করার খোঁজে বেরুলাম। উদ্দেশ্য কোনভাবে বরিশাল পর্যন্ত পৌঁছানো। তাহলে ওখান থেকে বাসে করে সোজা ঢাকা। কিন্তু আমুয়াবন্দর থেকে নৌপথে এতদূরের রাস্তা বৈঠানির্ভর নৌকায় অকল্পনীয় ! অতঃপর সিদ্ধান্ত নিলাম ভেঙে ভেঙে রাস্তা কমাতে থাকবো। প্রতি জায়গায় নতুনভাবে নৌকা ভাড়া করে করে যখন বা যেদিনই পৌঁছাই। পকেটে পুরো মাসের বেতন। প্রয়োজনে যাতায়াতে সব যাবে। তবুও আমি এই বদ্ধ আয়তন ভেঙে বেরুতে চাই। সেই মতোই প্রথম ভাগের নৌকা ভাড়া করে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে গেলেও ঘুম আর হলো না এক অনিশ্চিৎ অজানা অস্থিরতায়।
সকালের প্রাতঃরাশ সেরেই ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে নিলাম। সব সহকর্মীসহ যাঁদের সাথে মেলামেশা ছিলো স্থানীয় অনেকেই এসেছেন নদীর পাড়ে। যেখানটায় প্রতিদিন বিকেলের অনিবার্য গন্তব্য ছিলো এতোদিন। নৌকায় সওয়ার হতেই মাঝি বৈঠার এক ধাক্কায় নৌকাটাকে ডাঙাছোঁয়া মুক্ত করে ভাসিয়ে দিলো। সাথে সাথে বুকের কোথাও যেন এমনই এক ছিন্ন হবার টান পড়লো। দুলে ওঠলাম। মুক্ত জলে ভাসার আনন্দে, না কি এতোদিনের মায়া পড়া ছোট্ট এই ডাঙা থেকে ছিন্ন হলাম বলে, জানি না। তবে বুকের ভেতর কী যেন গুমড়ে গুমড়ে ওঠতে চাইলো। এই সেই ডাঙা, উনত্রিশে এপ্রিলের এক ভয়াবহ প্রলয়েও আমাকে আগলে রেখেছিলো গভীর যত্নে। আর আজ বেয়াড়া আমি তার কোলকে জোর করে ছিন্ন করলাম !
ধীরে ধীরে ডাঙা দূরে সরে যেতে থাকলো। সহকর্মীরা তখনো পাড়ে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছে। আমিও নাড়ছি। দূর থেকে হঠাৎ তাদের মধ্যে একটা চাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। চিৎকার করে হাত ইশারায় আমাকে পেছনের দিকে কী যেন দেখাতে চাচ্ছে। পেছন ঘুরেই দেখি নদীর ঠিক মাঝখানটাতে গুটগুট করে ছোট্ট লঞ্চটা এগিয়ে আসছে ! কী ব্যাপার ! ধর্মঘট কি তাহলে... ! হাত তুলে দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। ধীরে ধীরে গতি কমে এলো লঞ্চটার। মাঝ নদীতেই নৌকা থেকে আমাকে সরাসরি লঞ্চে তুলে নিলো। বরগুনা থেকে ছেড়ে এসেছে বরিশালের উদ্দেশ্যে। আহ্ ! বেরিয়ে যাওয়া দীর্ঘশ্বাসের সাথে বুকটা খুব বেশি খালি হয়ে যেতেই বুক ভরে নদীর জলল হাওয়া টেনে নিলাম আবার।
বাঁক ঘুরেই লঞ্চটা আবার ভরাবর্ষার দু’কুলহারা বিষখালিতে পড়তেই আমুয়া বন্দরটা চোখের সামনে থেকে ধীরে ধীরে অপসৃত হয়ে গেলো। আহা, এ জীবনে আর কখনো কি আসা হবে এখানে ! তীব্র তৃষ্ণায় বুকটা ফেটে যেতে চাইলো। লঞ্চের পেছনে কেবিনে গিয়ে এক গ্লাস জল চেয়ে নিলাম। মুখে নিতেই খিচরে এলো, পানি এতো পানসে বিস্বাদ কেনো !
লোকটির চোখে কৌতুক, বিস্বাদ হইবো ক্যান ? এইডা তো মিষ্টি পানি !!!
-------------------------------
(স্মৃতিভ্রষ্ট নোট)
প্রায় দেড় যুগ পর আমুয়াবন্দর থেকে হঠাৎ একটা মোবাইল কল এলো ! বিস্ময় নিয়ে জানলাম, ওখানে এখন সরাসরি বাসও চলে ! হয়তো অনেক কিছুই হয়ে গেছে নতুন। এই পুরনো চোখ দুটোর গভীরে আঁকা সেই পুরাতন জীবনের দৃশ্য কেবল স্মৃতিই এখন। মিলিয়ে নেয়ার মতো সে সবের কিছু আর অবশিষ্ট আছে কিনা তাও জানি না। তবু মাঝে মাঝে মনে হয়, সত্যি কি নেই ? স্মৃতিরা কি শুধুই দীর্ঘশ্বাস ? একবার বেরিয়ে গেলে প্রশ্বাসের সাথে একটুও কি ফিরে আসে না ? এর উত্তর আমার জানা নেই। যেভাবে জানা নেই কারা এর উত্তরটুকু সত্যিই জানেন ! #
মন্তব্য
স্মৃতি তো ফিরে আসার জন্যই, তবে তা মেলানোর দরকার কি?
সচলায়তনে নতুন এসে সিরিজ হিসেবে আপনার লেখাটাই প্রথম পড়েছি.. সৌভাগ্য আমার!!!
আমারও সৌভাগ্য।
ধন্যবাদ আপনাকে, এই সময়টা সাথে থাকার জন্য।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আমুয়া বন্দরে একবার নামার সুযোগ হয়েছিল। সেবার আমরা যাব বরগুনা জেলার আমতলী থানার তালতলী দ্বীপে, ১৫ দিনের জন্য। সঙ্গে যিনি ছিলেন তাঁর জন্মস্থান আমুয়ায়। প্রথমে বরিশাল থেকে ঝালকাঠী, ঝালকাঠী থেকে গিয়ে আমুয়ায় একবেলা কাটিয়ে পরের লঞ্চে বরগুনা। বরগুনা থেকে পরে ইঞ্জিনচালিত ছোট্র নৌকায় রাখাইন-অধ্যুষিত তালতলী। পথে ক্রমশ নৌযানের আকৃতি ছোট হয়েছে। অবশ্য তালতলী থেকে রাসপূর্ণিমায় কূয়াকাটা যেতে একটু বড়ো লঞ্চে চড়তে হয়েছে। বিষখালীর মোহনা হয়ে পাতরা জঙ্গলকে বাঁয়ে রেখে তীর ঘেঁষে বঙ্গোপসাগরে পড়তে আমার আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয় হয় অবস্থা সেবার। সেই প্রথম আমার সমুদ্রে যাওয়া।
সে অনেক কাহিনি : যাবার পথের, তালতলী অবস্থানের, (সম্ভবত) পঞ্চম আন্তর্জাতিক স্কাউট জাম্বুরিতে স্থানীয় উপকরণ ও লোকশিল্পী সহযোগে গণসাহায্য সংস্থার হয়ে লোকসংস্কৃতি বিষয়ক স্টল সজ্জার, কূয়াকাটাস্থ রাস উৎসবের, সৈকতে বসে রাখাইন পানীয় খাবার, কবিতার। সেটা ১৯৯৫-এর ঘটনা।
আমার কি কখনো লেখা হবে এসব?
একসঙ্গে এত তাড়ি আমি জীবনে খাই নি। তা-ও টাটকা। আহা কখনো যদি আমারও মিলত এমন প্রসাদ!
ভালো লাগল আপনার এই সিরিজ।
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
মুজিব ভাই, তীব্র আপত্তি আপনার এই কথায়। লেখা হবে না কেন ? আপনারা না লিখলে লিখবেটা কে !
এক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতা যে আরো অনেক সমৃদ্ধ বুঝতে পারছি। একটু একটু করে শুরু করে দিন।
অপেক্ষায় থাকলাম।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
জোলো মাটির রেখাচিত্র শেষ হয়ে গেলো?
০২
এইটাকে এইবার একটু ঘষামাজা করেন স্যার
ভালো একটা নাম যোগ করে একটা বই করেন
আপনার কথায় বড্ড প্রাণিত হচ্ছি স্যার।
কিন্তু সামর্থ যে সীমাবদ্ধ !
জোলো মাটিতে আমাকে সঙ্গ দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
শেষ?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কি করমু কন ?
সিরিজ লম্বা হইয়া গেলে পাবলিক ভেচকাইয়া যাইবো না ?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
মন্তব্য না করে পারছি না, আমি কিন্তু লীলেনদার সাথে একমত।
আমি অবশ্য আপনাকে না বলেই প্রিণ্ট নিয়ে নিয়েছি, আবার একশ্বাসে পড়ে ফেলবো বলে।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
দেখেন দাদা, একমত পোষণ করার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।
কৃতিত্ব হচ্ছে দ্বিমত পোষণ করায় ।
প্রিণ্ট নিয়েছেন তো ! একশ্বাসে পড়লেই বুঝতে পারবেন কেন দ্বিমত পোষণ করতে হবে।
(যদিও ভেতরে ভেতরে খুশি হয়েছি। কিন্তু সেটা কি আর বলা যায় !)
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
হাঁটুপানির জলদস্যু
আরে ভাই ! কথায় কথায় এমন বুইড়া আঙুল দেখান ক্যান !
ছোটবেলায় কিন্তু এই বেঙ দেখানো লইয়া বহুৎ ঝগড়া করছি।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
সচল ডট নেট দিয়ে আমার ব্লগে ঢুকলাম। ডানে আমার কোন আর্কাইভ লিস্ট দেখছি না !
শুধু লেখার আকার মুক্তি পর্যন্ত আছে। যদিও আকার বাড়াতে বা নরমাল চাইলে পেইজ সাদা হয়ে যায় আর ম্যাসেজ আসে-
টেম্পেরারিলি আনএভেইল্যাবল। প্লীজ ট্রাই এগেইন লেটার।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন