আসন অবস্থায় দেহটা অনেকটা ধনুকের মতো দেখায় বলে আসনটির নাম ধনুরাসন (Dhanurasana)|
পদ্ধতি:
সটান উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দু’টো হাঁটুর কাছ থেকে ভেঙে পায়ের পাতা যতদূর সম্ভব পিঠের উপর নিয়ে আসুন। এবার হাত দু’টো পেছনদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে দু’হাত দিয়ে দু’পায়ের ঠিক গোড়ালির উপরে শক্ত করে ধরুন এবং পা দু’টো যতদূর সম্ভব মাথার দিকে টেনে আনুন। বুক, হাঁটু ও উরু মেঝে থেকে উঠে আসবে। শুধু পেট ও তলপেট মেঝেতে থাকবে। এবার উপরদিকে তাকান। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে এবং ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এই অবস্থায় থাকুন। এরপর হাত-পা আলগা করে আস্তে আস্তে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। একটু বিশ্রাম নিয়ে আসনটি ২/৩ বার করুন। প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
উপকারিতা:
এ আসন মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় রাখে। মেরুদণ্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও তার পাশের পেশী সতেজ ও সক্রিয় রাখে। বুকের পেশী ও পাঁজরের হাড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং বুক সুগঠিত করে। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তলপেটের উপর দেহের সমস্ত ভার পড়ে বলে ঐ অঞ্চলের পেশী, স্নায়ুজাল সবল ও সক্রিয় থাকে এবং পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র, প্লীহা, যকৃৎ খুব ভালো কাজ করে। যাদের বুক বয়স অনুযায়ী সরু ও অপরিণত, তাদের এ আসনটি অবশ্য করা উচিৎ। আসনটি অভ্যাসে দেহের মধ্যভাগের অপ্রয়োজনীয় মেদ দূর হয়, মনের চঞ্চলতা দূর করে এবং স্বভাবে ধৈর্য্য বৃদ্ধি করে। কোন স্ত্রী-রোগ বা পেটের রোগ সহজে আক্রমণ করতে পারে না।
ধনুরাসনের সঙ্গে পদহস্তাসন ও শশঙ্গাসন অভ্যাস রাখলে কোনদিন লাম্বার স্পন্ডিলোসিস বা স্লীপড্ ডিস্ক জাতীয় কোন রোগ হতে পারে না।
নিষেধ:
যাদের হৃদযন্ত্রে বা গলদেশের ভেতরে কোন রোগ আছে, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আসনটি করা উচিৎ নয়।
# পূর্ণ-ধনুরাসন (Purna-Dhanurasana)
পদ্ধতি:
প্রথমে ধনুরাসন ভঙ্গিমায় বসুন। এবার হাত দু’টো আস্তে আস্তে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে দু’হাত দিয়ে দু’পায়ের বুড়ো আঙুল ধরুন। এখন পায়ের পাতা দু’টো টেনে এনে মাথার ব্রম্হতালুর উপর রাখুন। কনুই ভেঙে সামনের দিকে আসবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এই অবস্থায় থাকুন। এরপর আস্তে আস্তে হাত-পা আলগা করে, শুয়ে বিশ্রাম নিয়ে আসনটি ২/৩ বার করুন। শেষে প্রয়োজন মতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
উপকারিতা:
আসনটিতে ধনুরাসনের সব উপকার আরো ভালো ও কম সময়ে পাওয়া যায়।
নিষেধ:
ধনুরাসনের নিষিদ্ধতা এ আসনটিতেও মেনে চলতে হবে।
# আকর্ণ-ধনুরাসন (Akarna-Dhanurasana)
পদ্ধতি:
সামনে পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসুন। বাঁ পা হাঁটু থেকে ভেঙে ডান উরুর উপর রাখুন। এবার বাঁ হাত দিয়ে বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল ধরুন এবং বাঁ পায়ের পাতাটি বাঁ কানের কাছে টেনে নিয়ে আসুন। এখন ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে এবং এ অবস্থায় ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ থাকুন। এরপর হাত-পা ছেড়ে দিয়ে বসে বিশ্রাম নিন। এভাবে হাত পা বদল করে আসনটি কয়েকবার (চারবার) করুন। প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
এ আসনকেই একটু ভিন্নভাবেও করা যেতে পারে। সামনে পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসে বাঁ পা হাঁটু থেকে ভেঙে ডান উরুর উপর রাখুন। এবার ডান হাত দিয়ে বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল ধরুন এবং বাঁ পায়ের পাতাটি ডান কানের কাছে টেনে নিয়ে আসুন। এখন বাঁ হাত দিয়ে ডান পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করুন এবং কোমর থেকে শরীরের উপরাংশ একটু বাঁকিয়ে মোচড় দিয়ে ২০ সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এই অবস্থায় থাকুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এভাবে হাত-পা বদল করে আসনটি কয়েকবার করুন। প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
উপকারিতা:
আসনটি বিশেষ করে হাত, পা ও পিঠের দু’পাশের পেশী এবং স্নায়ুজাল সতেজ ও সক্রিয় রাখে। উরু ও কোমরের সন্ধিস্থলের নমনীয়তা অক্ষুণ্ন রাখে, হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আসনটি অভ্যাস রাখলে বাত বা সায়টিকা কোনদিন হয় না, আর থাকলেও অল্পদিন অভ্যাসে ভালো হয়ে যায়।
এ আসন মেয়েদের জন্য বিশেষ উপকারী। আসনটি বস্তিপ্রদেশের ও উরুর সন্ধিস্থলের পেশী ও স্নায়ুজাল সুস্থ ও সক্রিয় রাখে। ফলে কোন স্ত্রী-রোগ হতে পারে না এবং সন্তান প্রসবের সময় দৈহিক কোন বাধার সৃষ্টি হয় না।
# ধনুরাসনের বৈচিত্র্য:
এই ধনুরাসনটি আসলেই একটি বিচিত্র আসন। এর মূলানুগ চর্চা ছাড়াও প্রায়োগিক চর্চায় এ আসনের বহু বিচিত্র রূপ দেখা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু আসন নিচে দেখানো হলো।
@ এক পদ ধনুরাসন (Eka Pada-Dhanurasana)
@ উর্ধ্ব-ধনুরাসন (Urdhva-Dhanurasana)
@ এক পদ উর্ধ্ব-ধনুরাসন (Eka Pada Urdhva-Dhanurasana)
@ এক হস্ত উর্ধ্ব-ধনুরাসন (Eka Hasta Urdhva-Dhanurasana)
@ পদাঙ্গুষ্ঠ ধনুরাসন (Padangustha-Dhanurasana)
@ দণ্ডায়মান ধনুরাসন (Dandayamana-Dhanurasana)
@ অর্ধ-ধনুরাসন (Ardha-Dhanurasana)
[Images: from internet]
(চলবে...)
মন্তব্য
যাউক
এবার ছবি দেখে মনে হচ্ছে ছেলরাও ইয়োগা করে
না হলে তো ভেবেছিলাম এটা একটা নারীবাদী ব্যায়াম
মেয়েদেরকে অনুপ্রাণিত করতে এবার ছেলেদের ছবি দেয়া হয়েছে। আশা করি বহিনেরা এবার ইয়োগাচর্চায় আত্মনিয়োগ করবেন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এইটা মানে ধনুরাসন অনেক কঠিন। করতে গেলে খবর আছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
খবর হলেই বুঝবেন যে ব্যায়াম হচ্ছে।
যেভাবে কঠিন বলছেন, আসলে সেভাবে কঠিন কি ? প্রথম অবস্থা থেকে আপনিই শুরু করে কিছুদিন নিয়মিত হয়ে দেখুন না, দেখবেন নিজেই কী কঠিন ব্যায়াম উপহার দিচ্ছেন !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এঁদের হাত-পা মনে হয় এতিম। বাড়ি থেকে দূরে যেখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ায়, কেউ কটকট আওয়াজ করে ডাক দেয় না...
হাত-পা'কে আটকে রাখার কোন মানে নেই। আপনিও এদেরকে এতিম করে দিন না ! যেখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াক।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বেশি রিস্কি হয়ে যায় মনে হয়... অন্তত ছবিগুলো দেখে তাই-ই মনে হয়!
_______________
একটি ছাগলের দুটি কান,
তুই আমার জানের জান।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
মোটেও রিস্কি না।
শরীরের উপর জোর না করে প্রথমে যেটুকু হয় সেভাবেই শুরু করে দেখুন, আস্তে আস্তে কী চমৎকার মানিয়ে যায় !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
- কয়েকটা ফটুক দেখে রীতিমতো ইয়ে পাইছি এইবার। কিন্তু পোলা মানুষের ফটুক ঢুকানোর ষড়ডন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই। এইটা আচনে জান-বুঝকে করছেন!
আর যাত্রাই শুরু করছেন একটা ইয়অলা ফটুক দিয়া। আর কোনো ফটুক পান নাই? বড় করে দেখেন। ভদ্রমহিলা বগল সাফ করেন না মনে হয় অনেক দিন!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
উদ্দেশ্যমূলকভাবে মেয়েদের নিন্দা-অপবাদ দেয়া হচ্ছে ! তীব্র প্রতিবাদ।
পোলা-মানুষের বগলতলা দেখেছেন ! ওই আসনে রিপ্লেস করার মতো ছেলে বা মেয়ের আর কোন ছবি পাই নাই। নইলে এই বিবমিষামার্কা ছবিটা দিতাম না। ইণ্টারনেটে মেয়েদের ছবির ছড়াছড়ি। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যটাই মুখ্য হয়তো। বিভিন্ন ইয়োগা সেণ্টারের বিজ্ঞাপন সবই।
আসলে ইণ্টারনেটে ছেলেদের কোন শৈল্পিক ছবি পাই না। পেলে আগে ওটাই ব্যবহার করি। মেয়েদের ছবির ক্ষেত্রেও শৈল্পিক ও প্রকৃত আসনাবস্থার ছবিটাকে অগ্রাধিকার দেই।
কিছু আসন রয়েছে যার কোন ছবি নেট খুঁজে এখনও আবিষ্কার করতে পারিনি বলে ব্লগে তুলতে পারছি না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আচ্ছা, ফাইযলামি বাদ - সিরিয়াসলি বলি ।
যদি পারেন, নিজেই কিছু ছবি স্কেচ করে দেন ।
অথবা যদি সম্ভব হয় আপনি সেই আসনে বসেন, কারো হাতে ক্যামেরা ধরিয়ে দিয়ে ।
কারো শ্যালিকাকে বসিয়ে আপনি ক্যামেরা হাতেও দাঁড়িয়ে যেতে পারেন - এটা করতে পারলে মন্দ হয়না ।
( আগের বাক্যাটা ফাইযলামি )
-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
বলেন কী !
নিজেই নিজের গোমড় ফাঁক করে দেবো নাকি !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এই সংখ্যাটা ডিসকোয়ালিফাইড । পুরুষের ছবি দেয়ার অপরাধে ।
-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
মামা, এইসকল মেয়েছেলেদের লগে ফরিছয়টা করাইয়া দেননা? তাইলে আমি কাইল থেইক্কাই জুগাসনে লাইজ্ঞা যাইতাছি কনফারম!
দুশ্চিন্ত কইরেন না ! লাইজ্ঞা গেলেই হেগোর পরিচয় পাইয়া যাইবেন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন