সূর্য-নমস্কার (Surya-namashkara) বা (Sun-salutation) একটি উত্তম খালিহাতে ব্যায়াম। যে কোন ব্যায়াম বা খেলাধূলার পূর্বে কয়েকবার সূর্য-নমস্কার করে নিলে দেহ যথেষ্ট ব্যায়ামোপযোগী হয়ে ওঠে। রক্তের গতি ও দেহের তাপ যে কোন ব্যায়ামের পক্ষে উপযোগী করে তোলার জন্য পদ্ধতিটি বিশেষ কার্যকরি। তাই দু’-এক ক্ষেপ সূর্য-নমস্কার করে তারপর যোগাসন আরম্ভ করলে দ্রুত এবং ভালো ফল পাওয়া যায়।
ভারতীয় যোগ-দর্শন প্রণেতারা সূর্যকে দেবতা জ্ঞানে এবং সেই দেবতাকে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে প্রণাম জানিয়ে যোগ-ব্যায়াম করতে বলে গেছেন। তাঁরা বিশ্বাস করতেন প্রথমে সূর্যকে প্রণাম করে তারপর যোগ-ব্যায়াম শুরু করলে তিনি খুশি হয়ে তাঁর দেহের প্রাণশক্তি অভ্যাসকারীর দেহে পাঠিয়ে দেন, অর্থাৎ যোগ-ব্যায়ামকারী প্রাণশক্তিতে ভরপুর হয়ে ওঠে। একালের বিজ্ঞান-মনস্ক অভ্যাসকারী যারা সূর্যের জারিজুরি সব জেনে গেছেন, ভক্তিজ্ঞান কম থাকলেও, তারাও এই বিশেষ ব্যায়ামটি করলে একই ফলাফল পাবেন।
ব্যায়ামটির ভঙ্গিমাগুলো দেখতে যোগাসনের মতো হলেও সূর্য-নমস্কার যোগ-ব্যায়াম নয়। এর মূলেই তফাৎ। কেননা, যোগাসন অভ্যাস করতে হয় স্থিতিতে, আর সূর্য-নমস্কারের ভঙ্গিমাগুলো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত হবে গতিতে। তার মধ্যে কোথাও স্থিতি নেই, ঠিক ড্রিলের মতো। ১ ঃ ২ ঃ ৩ ঃ ৪ ঃ ৫ ঃ ৬ ঃ ৭ ঃ ৮ ঃ বলার বা উচ্চারণ করার সাথে সাথে ১ ঃ ২ ঃ ৩ ঃ ৪ ঃ ৫ ঃ ৬ ঃ ৭ ঃ ৮ ঃ নম্বর ভঙ্গিমাগুলো পর পর করে যেহে হয়। আবার ৮নং ভঙ্গিমা থেকে ১নং ভঙ্গিমায় ফিরে আসতে হয়। ১ থেকে ৮ এবং ফের ৮ থেকে ১-এ ফিরে এলে তবেই একবার সূর্য-নমস্কার হয়।
পদ্ধতি:
১ ঃ হাত দু’টো নমস্কারের ভঙ্গিমায় রেখে পা জোড়া ও শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ান।
২ ঃ এখন এ অবস্থায় হাত মাথার উপরে তুলুন। হাত দু’টো কানের সঙ্গে লেগে থাকবে।
৩ ঃ এবার গোড়ালি থেকে কোমর পর্যন্ত সোজা রেখে দেহের উপরাংশ যতটা সম্ভব পেছনদিকে বাঁকিয়ে নিয়ে যান। হাত কানের সঙ্গে লেগে থাকবে।
৪ ঃ এখন আবার ২ নং অবস্থানে ফিরে এসে গোড়ালি থেকে কোমর পর্যন্ত সোজা রেখে দেহের উপরাংশ নিচু করে হাত দু’টো সামনে পায়ের কাছে রাখুন।
৫ ঃ এবার হাতের তালু মাটিতে রেখে পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে উবু হয়ে বসুন।
৬ ঃ এক পা পেছনে ছড়িয়ে দিয়ে মাথা উঁচু করুন।
৭ ঃ এখন অপর পা-ও পেছনে ছড়িয়ে দিন। হাতের তালু এবং পায়ের আঙুলের উপর দেহের সমস্ত ভার থাকবে।
৮ ঃ এবার নিচু হয়ে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করুন, অর্থাৎ হাত দু’টোর অবস্থান অপরিবর্তিত রেখে গোটা দেহটাকে উপুর অবস্থায় মাটিতে শুইয়ে দিন।
এরপর উল্টোদিক থেকে পর পর ভঙ্গিমা করে অর্থাৎ ৮ থেকে ৮-৭-৬-৫-৪-৩-২-১ এভাবে ফের ১-এ ফিরে আসুন। তাহলেই একবার সূর্য-নমস্কার পূর্ণ হবে।
[Images: from internet]
(চলবে...)
মন্তব্য
এইটা একটু সহজ-সহজ মনে হচ্ছে। চর্চা করব।
এইটা মূলত ইয়োগা শুরুর আগের ওয়ার্ম-আপ। এটা আগে করে নিলে আসন চর্চা একটু সহজ ও অধিক কার্যকরী হয়।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
খালি অন্যের ছবি দিয়া ইয়োগাবাণী দিলে আমরা উৎসাহী হবো না
একদিন আসর বসাবো আর আপনার পোস্ট থেকে সবগুলা ছবি প্রিন্ট করে নিয়ে আসবো
একটা একটা করে আমাদেরকে করে দেখাতে হবে
কেমনে করতে হয়
পোদ্দারি তো পরের ধন দিয়াই করতে হয় ! নিজের ধন দিয়া কেউ পোদ্দারি করে নাকি...!!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আমেরিকানরা কি আপনার লেখা পড়ে উদ্বুদ্ধ হলো?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নতুন মন্তব্য করুন