অন-লাইন ভিজিট করছিলাম। হঠাৎ চাকাঅলা চেয়ারটা দুলতে লাগলো। রাত তিনটা বেজে মিনিট পাঁচেক। যা ভাবছি তা কি সত্যি ? হাঁ তাইতো ! ভূমিকম্প। কিন্ত কি আশ্চর্য কোথাও কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছি না কেন ? পাশের ঘরে শুয়ে থাকা স্ত্রীকে হাঁক দিলাম, তুমি কি টের পাচ্ছো কিছু ? কোন সাড়া পেলাম না। দৌঁড়ে গেলাম। দেখি নির্বিকার শিশুসন্তানের কপাল বুলিয়ে হয়তো কোন ভবিষ্যৎ স্বপ্নে বিচরণ করছে জেগে জেগে। বললাম, কী ব্যাপার, কিছু টের পাওনি ?
কই না তো !
বুঝলাম ভূমিকম্পের মাত্রা খুব বেশি ছিলো না।
অথচ আমি তখন কী করবো কী না করবো, এই রাতে ঢাকার মিরপুরের নির্জন ফ্লাটের খাঁচাবন্দী খরগোশের মতো তড়পাচ্ছি। এই যদি বিল্ডিংটা ধ্বসে পড়ে ! বেরোব কী করে ! গেইটে যে স্পেশাল লক, ওটার চাবি তো আমার মতো ভাড়াটেদের কাছে নেই ! মৃত্যুটা কি গার্মেণ্ট শ্রমিকদের মতোই হবে ?
যাক্, শেষ পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে এলো। আর স্বাভাবিক বলছি কেন ? অস্বাভাবিক হলোই বা কখন ? আশেপাশে সবাই ঘুমে ব্যস্ত। বুঝাই যায় অল্পমাত্রার ভূমিকম্প কারো স্বাভাবিকতায় কোন ব্যাঘাত ঘটায় নি। শুধু আমার মতো রাত জেগে জেগে যারা আকামের ঘটি পুরছেন আর ঢালছেন, তারাই হয়তো……।
ভূমিকম্প নিয়ে আমার অস্থির হয়ে ওঠার কারণ হয়তো অবচেতনে ঢুকে যাওয়া আশঙ্কা। বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যৎ বাণী, ঢাকায় তীব্র মাত্রার ভূমিকম্প হলে সত্তর ভাগ বাড়িঘর ধ্বসে পড়ে একটা বিপর্যয় ঘটে যাবে মুহূর্তেই। তাৎক্ষণিক যারা মারা যাবে তারাতো গেলোই। কিন্তু যারা বেঁচে যাবে তাদের পরবর্তী মৃত্যুটা হবে আরও করুণ। একটা ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের অসহায় শিকার হয়ে গ্যাসহীন পানিহীন বিদ্যুৎহীন আশ্রয়হীন খাদ্যহীন উদ্ধার-তৎপরতাহীন অচিন্তনীয় নরকের দিশদশাহীন এক অনিবার্য অনিশ্চতায় অতঃপর মরে পচে গলে…..। আহ্, চিন্তা করতেও শিরশির করে ওঠে সত্তা।
আমাদের আগামী গন্তব্য কি এতোই অনিশ্চিৎ ! আরো অসংখ্য অনিশ্চয়তার মধ্যেও ভূমিকম্পের মারাত্মক সম্ভাবনার বেল্টে দাঁড়িয়ে ভাবি, সবার চোখের সামনে ঢাকার রাংগস ভবনে একজন শ্রমিকের লাশ যেখানে মরে পচে গলে আটকে থাকে তিনদিন, সেখানে এতোবড়ো ধ্বংসযজ্ঞ সামলে ওঠে এই ঢাকা আদৌ কি আর কখনো বাসযোগ্য নগরী হয়ে ওঠতে পারবে ? না কি আগামীর বাসযোগ্যহীন এক অভিশপ্ত নগরীর দুর্ভাগা নাগরিক আজ আমরা পলে পলে এগিয়ে যাচ্ছি কোন জঘন্যতম পরিণতির দিকে…?
মন্তব্য
ব্যাপারটা আসলেই খুব হতাশাজনক।আমি জানি না ঢাকার নতুন বানানো (অন্ততপক্ষে ১৯৯৯ পরবর্তী) বিল্ডিংগুলো ঠিক কি ধরণের সাইসমিক ডিজাইন কোড মেনে চলে, তবে আশা করি (!!!) রাজউক খুবই শক্তভাবে সেগুলো এনফোর্স করে। খালি ড্যাম্পার দিয়ে আসলে সবধরণের ভূমিকম্প মোকাবেলা করা যায় না।
সরকারের সাহায্যের আশায় আসলে বসে না থেকে এক্সিট স্ট্র্যাটেজিগুলো আগে থেকেই নিজেদের ঠিক করে রাখা উচিত। আর জরুরী অবস্থায় যেসব জিনিস থাকা খুবই দরকার, সেগুলা আগে থেকেই একটা প্যাকেটে করে হাতের কাছে রাখা ভাল। এই লিন্কটাতে সারভাইভাল কিট সম্পর্কে একটা জেনারালাইজড ধারণা পাওয়া যাবে। সব লাগবে না, তবে কয়েকটা থাকা খুবই দরকার।
ঢাকার ভূমিকম্পটা মনে হয় রিখটার স্কেলে ৪.৫ এর কম ছিল।নাহলে এখানে আসত।
আন্দামানের কাছে ভূমিকম্প হয়েছে। ওই কম্পনের শক-ওয়েভ হবে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সি এন এন এ বলছে সুনামি ওয়াচের কথা।
NOAA-এর বুলেটিনে বলেছে এখনো কোন সুনামি দেখা যায়নি।
মনে করিয়ে দিলেন! ২০০৫ এর মার্চ/এপ্রিলের দিকে। আমরা তখন জাপানের ফুকুওকায় থাকি। এক রাতে হঠাৎঘর-বাড়ি ভয়ঙ্কর ভাবে দুলতে শুরু করল, মনে হচ্ছিল আমি এবং আমার সাথে এই বাড়িরও পায়ের তলায় মাটি নেই! বাইরের দিকে কুঁউ কুঁউ করে অদ্ভুত গোঙানী ধরণের শব্দ। কিছু বোঝার আগেই ওপর থেকে গ্লাস, বোতল,টিউব লাইট, পাথরের শো-পিস একটার পর একটা গায়ের উপর এসে পড়ছে!আমরা অন্ধকারে হাতড়ে টেবিলের তলায় ঢুকলাম...। টেবিলও দৌড়াচ্ছে ঘরের এ-মাথা থেকে ওমাথা! এর পর প্রায় একসপ্তাহ আফটার শক্ এসেছে দিনে এক-দুইবার করে; প্রতিবারই মনে হয়েছে এইবার বুঝি মরে যাচ্ছি......! ভূমিকম্পের কথা শুনলে আমার এখনো প্রচন্ড ভয় করে ! .।---------------------------------------------------------------------------.....সবটুকু বুঝতে কে চায়!
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
ওরে রণদা, পুরান পোস্ট দিয়ে কাজ চালিয়ে দিচ্ছেন!
আমি তো বেশ টের পেলাম, আমার মত ঘুমকাতুরে লোক ঘুম থেকে উঠে বসে ছিলাম (ঘরের লুকে বলে আমাকে এনেসথেসিয়া ছাড়া ওপারেশন করা ঝাবে)! ওপরের তলার লোকজনেরও সাড়া পেলাম!
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
When I'm right nobody remembers; when I'm wrong nobody forgets!
When I'm right nobody remembers; when I'm wrong nobody forgets!
কিছুই টের পাই নাই। কী কুম্ভকর্ণের ঘুম রে বাবা!
..................................................................
ঐ যে হাঁটছি মুদ্রা দোষে নাকটা ঘষে
আড্ডা মানেই সেকেণ্ড হাফে খেলছি সোলো
গুজবো না শার্ট আমার পাড়া স্মার্ট পেরিয়ে
সে রোদ্দুরের স্মরণ সভাও লিখতে হল
আমিও টের পাইসি। তবে ঐ পর্যন্তই, ঘুম থেকে ওঠার প্রয়োজন মনে করি নাই। কারণ এই ঘিঞ্জি শহরে ভূমিকম্প হলে কোথায় আশ্রয় নেয়া যাবে? কোথাও না। তারচেয়ে মরলে ঘুমের মধ্যে মরাই ভালো।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
অয়রেবা ভূমিকম্পে আমরার গর বাড়ি নাই হই গেছে!
নাজমুস সামস
ভুমিকম্পের খবর আজ পত্রিকায় পড়লাম। কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে স্বস্তির নি:শ্বাস ছাড়লাম!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ঘুম ভেঙে গিয়েছিল,দেখি বিছানা দুলছে।প্রথমে ভাবছিলাম হঠাত্ ঘুম ভাঙার ইফেক্ট।
এখানে দেখি ভুমিকম্প, জলোচ্ছাস এত সব ভয়ংকর ! ভাগ্গিস ঘুম ভাঙ্গেনি।
নৈশী।
বড় ভূমিকম্প হলে ঢাকার যে কী হয়!!
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ঘুমায়া ছিলাম, টের পাই নাই!
- ঢাকা ছেড়ে দেন। ওয়ানস্টপ সমাধান।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভয় লাগে, প্রচন্ড ভয়
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আপনার লেখাগুলো আমার খুব ভাল লাগে। আপনি আসলেই রাত জেগে পড়াশুনা ও লেখালেখি করনে যে এটা স্পষ্ট বুঝা যায়। আপনার লেখাটা পড়েছি। এখানে আপনার একটা কথার সাথে একমত হতে পারলঅম। আপনি বলেছেন যে, মৃত্যুটা কি গার্মেণ্ট শ্রমিকদের মতোই হবে ? আপনার এই কথার সাথে এক মত হইতে পারলাম। আমি আপনার মত লিখতে পারি না। কিন্তু মানুষকে মূল্যায়ণ করতে শিখেছি । আমি জানি, গরীব, ধনী, হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ, ছোট জাতের মানুষ এসব বুঝি না, আমি শুধু জানি সবাই মানুষ। অতএব, আপনি গার্মেন্ট শ্রমিকদের জীবনকে ছোট আর আপনার জীবন কে বড় ভাবতে পারেন না। এতে আরও কারো মনে কষ্ট লাগুক আর লাগুন আমার মনকে ব্যতিত করেছে। আমি এজন্য বলব- আপনি জেনে থাকবেন যে, বর্তমানে পোষাক শিল্প বিদেশে পোষাক রপ্তানি করে এবং বাংলাদেশের পোষাক রপ্তানি করে যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রথম। এই পোষাক শিল্পের চালিকা শক্তি হিসেবে বা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে গার্মেন্ট শ্রমিকরা । মোট কথা, কাউকে ছোট বলে অবহেলা করা উচিত না। কারো মরণ এলে কেউ তাকে ফিরাতে পারবেন না, সেটা ভূমি কম্পেই হোক আর অন্য ভাবে হোক। এত চিন্তার কারণ নেই। মূলকথা, ছোট আর বড় হোক তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দেয়া উচিত।
মোঃ ইয়াকুব আলী,
কুয়াকাটা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী।
ইয়াকুব ভাই,
প্রথমেই মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করছি, আপনার মন্তব্যটা দেরিতে আমার চোখে পড়ার জন্য উত্তরটাও দিতে দেরি হয়ে গেলো।
আপনার অনুভবকে যথাসম্মান জানিয়েই বলছি, আসলেই কি আমি গার্মেন্টস শিল্প-শ্রমিকদেরকে হেয় করেছি কোথাও ? আমার বক্তব্যের টোনটা সম্ভবত আপনাকে বুঝাতে পারি নি। আমি তাঁদেরকে কোনোভাবে হেয় তো করিই নি, বরং তাদের ঘটতে থাকা দুর্ভাগ্যটাকেই আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। এযাবৎ ঢাকায় যত ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তার মধ্যে সবসময় ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা গেছে যে গার্মেণ্টস শ্রমিকরাই খাঁচাবদ্ধ একটা অবস্থার মধ্যে খুব অসহায় ও দুর্ভাগ্যজনক নিয়তিকে বরণ করেন। বিশেষ করে কলাপসিবল গেট বন্ধ থাকায় শেষপর্যন্ত বের হতে না পেরে পুড়ে মরার চূড়ান্ত ট্র্যাজিক ঘটনাটি প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘটেছে। তাদের এ দুর্ভাগ্যকে কখনোই কি মেনে নেয়া যায় !
আমি তো সেই তুলনাটাই এখানে ইঙ্গিতে করেছি। আপনাকে যে বুঝাতে পারি নি এটা অবশ্যই আমার ব্যর্থতা। কিন্তু তা নিশ্চয়ই গার্মেন্টস শ্রমিকদের অসম্মান করার মতো কোন প্রবণতা নয় !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন