। প্রফেসর ইউনূস ও অমর্ত্য সেন, ভিন্ন স্রোতেও এক অভিন্ন মুখ !

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: রবি, ২৩/০৮/২০০৯ - ৫:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

.
দু’জনকে দুই মেরুর অর্থনীতিবিদ বলা হয়। কেন বলা হয় তা বুঝি না আমি। অর্থনীতি আমার পঠিত বিষয় নয়, কিংবা এ বিষয়ে খুব একটা জানিও না। যেটুকু জানি, দুজনই বাঙালি, অর্থনীতির ছাত্র ও অধ্যাপক এবং নোবেল লরিয়েটও। অমর্ত্য সেন (Amartya Sen), একজন তাত্ত্বিক অর্থনীতিবিদ, যাঁকে কল্যাণমূলক অর্থনীতির প্রবক্তা বলা হয়। তিনি তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, দুর্ভিক্ষের সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক ক্ষীণ, বরং খাদ্যের অসম বণ্টন ও ক্রয় ক্ষমতা বা খাদ্য সংগ্রহের বিপর্যয়ই দুর্ভিক্ষের মূল কারণ। বিশ্বের যেসব দেশ বিভিন্ন সময়ে যে বছর দুর্ভিক্ষে পতিত হয়েছিলো, তিনি দেখিয়েছেন, বিস্ময়করভাবে সেই বছর সেই দেশটিতে খাদ্যের বাম্পার ফলনের রেকর্ড রয়েছে অর্থাৎ গড় উৎপাদনের চাইতে ফলন বেশি ছিলো। আরো অনেক অনেক বিষয়ই ছিলো, যা এ বিষয়ে বিজ্ঞজনরাই ভালো বলতে পারবেন। অর্থনীতির তাত্ত্বিক দুনিয়ায় অনন্য অবদানের জন্য অমর্ত্য সেনকে ১৯৯৮ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

অন্যদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে (Muhammad Yunus) প্রাযোগিক অর্থনীতিতে ক্ষুদ্রঋণ তত্ত্বের জনক কিংবা পথিকৃৎ বলা হয়, যার ইংরেজী পরিভাষা মাইক্রো-ক্রেডিট নামটাকে পাল্টে বর্তমানে মাইক্রো-ফিনান্স নামেই অভিহিত করা হচ্ছে সর্বত্র। জামানতের বিনিময়ে যাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ নেবার ক্ষমতা বা যোগ্যতা কোনটাই নেই এবং যারা জনগোষ্ঠির ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ, তাদের জন্য পেশা বা দক্ষতাভিত্তিক জামানত বিহীন প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের ব্যবস্থা করে প্রচলিত ব্যাংকিং ধারণাটাকে উল্টে দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। বলা হয়ে থাকে, দারিদ্র্য থেকে মুক্তিই শান্তির পথে যাত্রা শুরুর প্রথম ও প্রধান নিয়ামক। এই দুঃসহ দারিদ্র্য থেকে মুক্তির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বিশ্বব্যাপি ক্ষুদ্রঋণের কার্যকারিতার সফল স্বীকৃতি স্বরূপ ড. ইউনূস’কে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। দু’জনই আমাদের গর্ব এবং গোটা মানব জাতির সম্পদ এঁরা। তাঁদেরকে নিয়ে তাই সবার কৌতুহল একটু বেশি থাকাই স্বাভাবিক। আমার কৌতুহলের জায়গাটা একটু ভিন্ন।

যতটুকু জানি ব্যক্তিগত জীবনে দুজনই খুব সাদাসিধে জীবন যাপন করেন এবং উভয়েই একটি করে কন্যা সন্তানের (যারা পরবর্তী জীবনে স্বনামখ্যাত) জনক হয়ে তাঁদের নিজ নিজ প্রথম বিয়ের বিচ্ছেদ ঘটে। এই অদ্ভুত মিলগুলো আমার কৌতুহলের বিষয়বস্তু নয়। দুজনেই খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ এবং মানুষ ও দারিদ্র্য নিয়ে দুজনের চিন্তা ও দর্শন জগৎ নিয়ত ঘুরপাক খায় বলে জানি। অথচ চিরায়ত মানবজাতির কল্যাণকামী এই দু’জন নাকি দুমেরুর স্বীকৃত আর্থ-দর্শনে বিশ্বাসী ! অর্থনীতি বুঝি না বলে এই গেরোটা আর আলগা করা সম্ভব হয় না আমার। অথচ ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, গ্রেট ম্যান থিঙ্কস এলাইক। আমার কৌতুহলটা এই এলাইকনেস বা সাযুজ্যটাকেই খুঁজতে থাকে। সম্প্রতি দুজনেই আবার প্রায় একই সময়ে মিডিয়াতে আলোড়ন তুললেন। প্রফেসর ইউনূস গত ১২ আগষ্ট ২০০৯ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ গলায় পরলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার হাত দিয়ে। আর অমর্ত্য সেন তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ ‘দ্য আইডিয়া অব জাস্টিস’-এর প্রকাশনায় ‘আয় দারিদ্র্য নিরূপণের সঠিক মাপকাঠি নয়’ বলে এক চিন্তা-দর্শন ছড়িয়ে দিলেন। বিষয় সংশ্লিষ্টতা ধরে রাখতে আমরা বরং তাঁদের দুজনের দারিদ্র্য বিষয়ক চিন্তা-দর্শনেই এক পলক দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারি।

গত ১৮ আগস্ট ২০০৯ তারিখের অনেকগুলো দৈনিকে অমর্ত্য সেনকে নিয়ে ‘আয় দারিদ্র্য নিরূপণের সঠিক মাপকাঠি নয়’ শিরোনামে একটি খবর কম-বেশি প্রকাশিত হয় পিটিআই অনলাইন নয়াদিল্লির বরাত দিয়ে। খবরটি হলো-

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তার নতুন বইয়ে বলেছেন, বেশিরভাগ সরকার ব্যক্তি বা পরিবারের মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে যেভাবে মানুষের দারিদ্র্য পরিমাপ করে থাকে, তা সামাজিক দৃষ্টিতে কল্যাণের একটি ত্রুটিপূর্ণ ধারণা। অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ অমর্ত্য সেন তার সর্বশেষ বই ‘দ্য আইডিয়া অব জাস্টিস’-এ বলেছেন, দারিদ্র্য নিরূপণের আয়ভিত্তিক পদ্ধতি মানুষ কতটা ভালো জীবনযাপন করে, তা পরিমাপের যথাযথ প্রক্রিয়া নয়। এ পদ্ধতিতে বার্ষিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাপ অর্থের কম উপার্জন করে এমন লোকদের দরিদ্র হিসেবে গণ্য করা হয়। এটা সঠিক মাপকাঠি নয়।
অমর্ত্য সেন এ পদ্ধতির পরিবর্তে জীবনযাত্রার এবং জীবনযাত্রা বাছাইয়ের সামর্থ্য বা সক্ষমতাকে অগ্রাধিকার দেন। অমর্ত্য সেন বলেন, পরিবারের ভেতর আয় বণ্টনে তারতম্যের কারণে আয় থেকে যতটুকু ধারণা পাওয়া যায়, দারিদ্র্য তার চেয়ে অনেক বেশি তীব্র হতে পারে।
তিনি বলেন, সম্পদ ও দারিদ্র্যের সম্পর্ক অনেকটা জটিল। এটি পরিবর্তনশীল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তার প্রাকৃতিক ও সামাজিক উভয় পরিবেশের বৈশিষ্ঠ্যের ওপর নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।
সেন বলেন, আয় ব্যক্তির জীবনযাত্রার মানের সূচক নয়। মানুষের জীবনযাত্রার মান ভৌত পরিবেশের বৈচিত্র্য, সামাজিক পরিবেশের তারতম্য ও সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতের পার্থক্যের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বার্ধক্য, প্রতিবন্ধিতা ও অসুস্থতা ইত্যাদি বাধা মানুষের উপার্জন ক্ষমতা হ্রাস করে। এমন বাধা আয়কে সক্ষমতায় রূপান্তরিত করাকেও কঠিনতর করে তোলে। কেননা, অপেক্ষাকৃত বয়স্ক বা অধিক শারীরিক প্রতিবন্ধীকে একই জীবনযাত্রা অর্জন করতে অধিকতর পরিশ্রম করতে হয়। দারিদ্র্য অনুধাবন ও দারিদ্র্য মোকাবেলায় সরকারী নীতি নির্ধারণে সক্ষমতা বঞ্চিতদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন অসুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হতে পারে।
সম্ভবত এটিই অমর্ত্য সেনের উল্লিখিত বইটির চুম্বক বক্তব্য, যা তাঁর দারিদ্র্য সম্পর্কিত চিন্তা-দর্শনকে সঠিকমাত্রায় প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে বলেই মনে হয়।

অন্যদিকে একটি প্রায়োগিক গবেষণার বীজ তিন দশক ধরে একটু একটু করে প্রস্ফুটিত হয়ে কিভাবে বিশাল মহীরুহে রূপান্তরিত হয়ে ছায়া মেলে দিলো গোটা বিশ্বে, সেই অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে ডক্টর ইউনূস তাঁর “গ্রামীণ ব্যাংক ও আমার জীবন” গ্রন্থের প্রথম বাংলাদেশ সংস্করণ ২০০৪-এ দীর্ঘ ভূমিকাটি শুরু করেছেন এভাবে-
‘গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমার মনে একটা প্রগাঢ় প্রতীতী জন্মেছে যে, সকল মানুষের মধ্যে সীমাহীন সৃজনশীলতা লুকিয়ে আছে। এটা শুধু আবিষ্কারের অপেক্ষায় থাকে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন কাটাবার ভাগ্য নিয়ে কোনও মানুষ জন্মগ্রহণ করেনি। যাঁরা দরিদ্র তাঁদের এই দারিদ্র্য আমরা তাঁদের উপর চাপিয়ে দিয়েছি। দু’ভাবে আমরা এটা তাঁদের উপর চাপিয়ে রেখেছি। প্রথমত তাঁদের নিজস্ব সৃজনশীলতা সম্মন্ধে সন্ধান পাবার কোনও সুযোগ আমরা তাঁদের জন্য রাখিনি। দ্বিতীয়ত তাঁদের দারিদ্র্যের জন্য আমরা তাঁদের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের দায়িত্বমুক্ত রাখার সুবন্দোবস্ত করে রেখেছি।
দৃঢ়ভাবে এবং গভীরভাবে আমার মনে এই বিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে যে, আমরা এমন একটি পৃথিবী তৈরি করতে পারি যেখানে একজন মানুষও দরিদ্র থাকবে না। এটা সম্পূর্ণ আমাদের সমবেত ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। এই রকম একটা পৃথিবী সৃষ্টি করা সম্ভব হবে যদি সবাই মিলে এটা আমরা চাই। যা নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখি, শুধুমাত্র তা-ই আমরা অর্জন করতে পারি। অর্জনের আগে স্বপ্ন দেখাটা একটা জরুরি শর্ত। দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবী সৃষ্টি করা যে কোনও অলীক স্বপ্ন নয় সেটা গ্রামীণ ব্যাংকের কাজ করতে গিয়ে প্রতিদিন প্রমাণ পেয়েছি। সামান্য পুঁজি হাতে পেয়ে গরিব মহিলা কীভাবে নিজেকে বিকশিত করতে থাকে সেটা দেখে যাচ্ছি অবিরামভাবে । এতে আমার বিশ্বাস কেবল দৃঢ়তরই হচ্ছে। এ পর্যন্ত বিশ্বাসে কখনও ফাটল ধরার কোন অবকাশ ঘটেনি।
শুধু ক্ষুদ্রপুঁজির ব্যবস্থা করলেই দারিদ্রের সমাধান হয়ে যাবে এ কথা মনে করলে বড় রকমের ভুল করা হবে। আমি বারে বারে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি ক্ষুদ্রপুঁজি আসলে গরিব মানুষের জন্য একটা উপলক্ষ সৃষ্টি করে। একে কেন্দ্র করে মানুষ নিজের দিকে তাকাবার সুযোগ পায়, নিজের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ পায়। টাকা মানুষকে পরিবর্তন করে না। মানুষ নিজেই নিজেকে পরিবর্তন করে। কিন্তু তার হাতে একটা হাতিয়ার দরকার। যতদিন হাতে তলোয়ার আসেনি ততদিন বীর যোদ্ধা বুঝতে পারেননি তিনি কত বড় বীর। যতদিন হাতে রংতুলি আসেনি ততদিন শিল্পী বুঝতে পারেননি তিনি কত বড় শিল্পী। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হলে অবশ্যই পুঁজির তলোয়ার দরকার। এই লড়াইয়ে তাঁর জেতা সহজ করার জন্য আরো আনুষঙ্গিক অনেক কিছু দরকার। যেমন প্রথম থেকে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে, দারিদ্র্য গরিব মানুষের নিজের তৈরি জিনিস নয়। এটা তাদের ওপর চাপানো একটা পরিস্থিতি। মানুষ সম্মন্ধে আমাদের ধারণা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, তার ভিত্তিতে তৈরি আমাদের নীতিমালা সব মিলে দারিদ্র্য সৃষ্টি করেছে। দারিদ্র্য দূর করতে হলে মানুষ ও তার সম্ভাবনা সম্বন্ধে আমাদের ধারণা পাল্টাতে হবে, তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো রচনা করতে হবে, নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তবেই সহজে এবং স্থায়ীভাবে দারিদ্র্য দূর হবে।”
ভূমিকাংশটির এই উদ্বৃতির মধ্যেই ডক্টর ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ তত্ত্বের প্রয়োগিক দর্শনটি নিহিত বলে মনে হয়। এবং দারিদ্র্যকে তিনি কিভাবে দেখেন তার আভাসও এতে ফুটে উঠে।

এছাড়াও অন্তত একযুগ আগেই তাঁর দৃষ্টিতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যের দারিদ্র্যমুক্তির দশটি নির্ধারক চিহ্ণিত করা হয়েছে এভাবে-
(১) সদস্যের পরিবার পরিজন নিয়ে সম্মানজনকভাবে বসবাস করার জন্য টিনের ছাউনিযুক্ত ঘর অথবা ন্যূনতম ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকা মূল্যের ঘর আছে এবং পরিবারের সদস্যদের মেঝেতে না ঘুমিয়ে চৌকি কিংবা খাটে ঘুমানোর ব্যবস্থা আছে। (২) নিরাপদ নলকূপের পানি অথবা পানি ফুটিয়ে/ ফিটকারী/ আর্সেনিক মুক্ত/ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করে পানি পান করেন অথবা পানি বিশুদ্ধ করার জন্য যখন দরকার কলসী ফিল্টার ব্যবহার করেন। অর্থাৎ খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করেন। (৩) সদস্যদের পরিবারের ৬ বছর ও ততোধিক বয়সের ছেলে-মেয়ে যারা শারীরিক ও মানসিকভাবে স্কুলে যেতে সম তারা সবাই লেখাপড়া করেন। (৪) সদস্য নিজ আয় থেকে সাপ্তাহিক ২০০/- (দুইশত) টাকা বা তার বেশি কিস্তি প্রদান করেন। (৫) পরিবারের সকল সদস্য স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করেন। (৬) পরিবারের সদস্যদের নিত্য ব্যবহার্য কাপড়-চোপড় আছে। শীত নিবারণের জন্য শীতবস্ত্র যেমনঃ কাঁথা, চাদর, সুয়েটার, লেপ, কম্বল ইত্যাদি এবং মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করার জন্য মশারি আছে। (৭) সদস্যদের সংসারের উন্নতির জন্য বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা থাকা, যেমনঃ বাড়ির আঙ্গিনায় শাক সব্জি চাষ, গাছ লাগানো ইত্যাদি। যাতে করে সদস্যগণ বাড়তি আয় থেকে কিস্তি পরিশোধের সুযোগ পান। (৮) ব্যাংকে গড়ে বছরে অন্ততঃ ৫০০০/- টাকা সঞ্চয় জমা থাকে। (৯) পরিবারের সদস্যদের সারা বছর ধরে তিন বেলা খাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে অর্থাৎ পরিবারে কোন খাদ্যাভাব নেই। (১০) পরিবারের সদস্যগণ স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন। পরিবারের কেউ রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে সাথে সাথে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়াসহ চিকিৎসা খরচ নির্বাহ করার সামর্থ্য রয়েছে।

দারিদ্র্যমুক্ত অবস্থা নির্ণয়ে ড. ইউনূস চিহ্ণিত গ্রামভিত্তিক জীবনযাত্রার মাননির্ভর এই নির্ধারকগুলো পড়ে চমকে ওঠি অমর্ত্য সেনের দারিদ্র্য নিরূপণ বিষয়ক বর্তমান ধারণার সাথে মিলিয়ে ! আর অনভিজ্ঞ চিন্তাচ্ছন্নতার মধ্যেও কেন যেন মনে হচ্ছে, পরস্পর ভিন্নমেরুর হলেও দারিদ্র্যকে চিহ্ণিত করার ক্ষেত্রে দু’জনের মধ্যে কোথায় যেন একটা অদ্ভুত মিল বা গভীর সামঞ্জস্য রয়ে গেছে। ভিন্ন স্রোতের অভিন্ন সঙ্গমে এসে খাপে খাপে মিলে যায় যেন ! আমার অস্বচ্ছ ধারণা দিয়ে তা প্রকাশ বা ব্যাখ্যা করতে আপাত অক্ষম হলেও ঘুরেফিরে যে বোধটা বারবার এসে ভেতরে নাড়া দিয়ে যায়, তা হলো- সত্যিই, গ্রেট ম্যান থিঙ্ক এলাইক…!


মন্তব্য

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

তত্ত্বের দিকটা বাদ দিলে এই দুই ব্যক্তির মধ্যে যেই পার্থক্য অনেকটা হয়ত এরকমঃ
অমর্ত্য সেন মূলত তত্ত্বের দিকে আছেন। তিনি মূলধারার অর্থনীতির সাথে একমত হয়ে বাজারের শক্তিকে অনেক উপরে স্থান দেন। ইউনুস বাজারের শক্তিকে অগ্রাহ্য করেননা কিন্তু সামাজিক একটা আলাদা প্রয়াসের দরকার আছে বলে মনে করেন। তবে ইউনুসের মূল সম্মাননার কারন তার তত্ত্ব নয়। বরং তার কাজ। তিনি তত্ত্বের প্রয়োগে মাঠে নামার পক্ষে ছিলেন। আর এইভাবে তিনি গ্রামীন ব্যংক তৈরি করে পৃথিবীর সামনে একটা মডেল উপস্থাপন করেছেন। সোশাল ইনভেস্টমেন্টের দ্বার উন্মোচন করেন। সবখানে সেটা মাইক্রোক্রেডিট থাকেনি। ঋন দেবার পাশাপাশি সঞ্চয়, বীমা এসব আর্থিক সেবা সমন্বিত হলেই সাধারন ভাবে মাইক্রো ফাইনান্স কথাটি ব্যবহার করা হয়। তাই ইউনুস যদি অর্থনীতিতে নোবেল পেতেন অবাক হবার কারন থাকত। কিন্তু তার ধারনার বাস্তব প্রয়োগের দিকটা দেখলে এর প্রয়োগের মাত্রাটাই বড় হয়ে দেখা দেয়। বিষয়টির মূলসুর ক্ষুদ্রঋন হলেও এখানে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার এবং লড়াইটাকে টেকসই করার সুরটাই মুখ্য। এখানে দান নয় বরং ঋন দেয়া হয়। তাতে করে ব্যক্তির আত্মসম্মান বোধ অটুট থাকে। আবার যেহেতু গ্রুপ লেন্ডিং-এর মাধ্যমে ঋন দেয়া হয় এতে করে সম্মিলিত চেষ্টা, জবাবদিহিতা এসবের পরিবেশ তৈরি হয়। কেউ চাইলেও অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারেনা। দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইতে এই মাত্রাগুলো বেশ জরুরী বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। তবে এর অনেক ঝুঁকিও রয়েছে। এটা অপারেশনের মতই পেইনফুল। আর এটা নিয়ে অনেক গবেষনা সারা বিশ্বে চলছে। বাংলাদেশেও কিছু গবেষনা হয়েছে এবং হচ্ছে। আশা করা যায় একসময় এই ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে এবং ঝূকির দিক গুলো কমে আসবে আস্তে আস্তে।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ রণ'দা।

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ রিয়াজ ভাই।
উপস্থাপিত বিষয়টাকে একান্তই আমার নিজস্ব দৃষ্টি দিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি এবং প্রকাশ করেছি। পাঠকরাও তাঁদের মতামত এখানে নির্দ্বিধায় দিতে পারেন এবং তা-ই আশা করছি। এতে করে পোস্টটি তার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে সমৃদ্ধ হবার সুযোগ পাবে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আপনার পোস্টটাতে কোন সমস্যা দেখছিনা রণ'দা। আমি কেবল আমার ধারনার একটা সারাংশ দিলাম মাত্র। আপনার পোস্টের আলোচনা আমার বেশ চমৎকার এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে হয়েছে। অমর্ত্য সেন আর ইউনুস দুইজনকেই আমি উঁচুমাপের মানুষ মনে করি অন্তত তাদের নিজেদের ক্ষেত্রে। অমর্ত্য সেনের নতুন বইটার কথা আপনার কাছ থেকে শোনার পর থেকেই বইটা যোগার করার কথা ভাবছি। আসলে তাঁর কিছু লেখা অনুবাদ করার কথা ভাবছিলাম। সময় পেলে চেষ্টা করব।

এই দু'জনের কাউকেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে চিনি না। অধ্যাপক ইউনুসের সাথে জীবনে একবার দেখা হয়েছিল বাংলাদেশের কয়েকজন শ্রদ্ধাভাজন অর্থনীতিবিদের সাথে একটা মিটিংয়ে (আমার কাজ ছিল নোট নেয়া)। সেখানে অর্থনীতিবিদদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, আলোচনার গভীরতা আমাকে মুগ্ধ করেছিল। আর অমর্ত্য সেনের সাথে আমার পরিচয় তার লেখার মাধ্যমে। তাঁর মেধা আর চিন্তার গভীরতা আমাকে মুগ্ধ করে যেমন মুগ্ধ করে ইউনুসের কমিটমেন্ট।

সীমাহীন বৈপরিত্যের মাঝেও আপনি ভিন্নসুরে যে এই কথা গুলোকে আমাদের সামনে বার বার তুলে ধরছেন এজন্য ব্যক্তিগত ভাবে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এই জন্য যে এটাকে আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে নিজেরও দায়িত্ব মনে করি। আপনার পোস্টগুলো আসছে বলেই আমিও আমার অল্প ক্ষমতার চিন্তাগুলো এখানে উপস্থাপনের সুযোগ পাচ্ছি। কেমন যেন দায়বদ্ধতা কাজ করে এই ব্যপারটা আসলেই। রাজনৈতিক এবং আদর্শিক বিরোধের জের ধরে তার যে অবস্থান একটা নির্মোহ (অবজেক্টিভের বাংলা হল কি?) দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করি তাঁকে তাঁর কাজকে। বাংলাদেশের অর্থনীতি চর্চায় নানা কারনে বাম আদর্শের প্রভাব অনেক বেশি। বড়মাপের অর্থনীতিবিদদের মধ্যে বেশিরভাগই নানা কারনে বাম ঘেষা। সেই দিক দিয়ে আম্রিকায় পড়াশোনার সুবাদে হোক বা যে কারনেই হোক ইউনুসের অর্থনীতি চর্চায় অর্থনীতির মূলধারার (ক্লাসিকাল) প্রভাব অনেক বেশি। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তিনি মাইনরিটি। আবার বাজার অর্থনীতিকেও তিনি প্রচলিত পন্থায় মেনে নিতে রাজি নন। সেই দিক থেকেও তিনি ইউনিক এবং কিছুটা বন্ধুছাড়া।

ক্ষুদ্রঋন নিয়ে যত গবেষনা হয়েছে সেখানে কোথাও একে দারিদ্র বিমোচনের সিলভার বুলেট মনে করা হয়না। আবার একটা ভিত্তিহীন ধারনাও মনে করা হয়না। বরং এর তাত্ত্বিক আর ব্যবহারিক দিক নিয়ে নানা দেশে নানা আঙ্গিকে ব্যপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষনা হচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতা যেমন উঠে আসছে তেমনি বিভিন্ন দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার নিরিখে "Same shirt fit to all" ধরনের কৌশলযে কাজ করবেনা সেটাও প্রমানিত। কিন্তু বাংলাদেশের কোন ব্যক্তির কাজ পৃথিবীময় আদর্শ হিসাবে পরিগনিত হবার এমন নজির আরেকটি খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে।

আমার ইচ্ছে আছে সময় করে বইপুস্তক ব্যবহার করে ক্ষুদ্রঋন নিয়ে একটা সাধারন পোস্ট দেব। আপনার মত গুছিয়ে লিখতে পারলে অনেক ভাল লাগত। সেক্ষেত্রে হয়ত বই পুস্তকের সাহায্য নেবার দরকার পড়ত না।

এই দু'ই বাঙালী পৃথিবীর মানুষের কাছে এত শ্রদ্ধার পাত্র আর আমরা তাকে যেভাবে মূল্যায়ন করি সেটা ভাবলে খুব খারাপ লাগে। খুব সোজা সাপ্টা অচতুর ভাষায় বললাম আমার কথা। ঠিক করেছি ভবিষ্যতে ব্যক্তি ইউনুসকে না ঘেটে প্রাতিষ্ঠানিক ইউনুসকেই বেশি বোঝার চেষ্টা করব। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

রণদীপম বসু এর ছবি

রিয়াজ ভাই, আমাকে লজ্জা দেবেন না প্লীজ। যে কথাটা আমি আগেভাগেই স্বীকার করে নেই তা হচ্ছে, আমি অর্থনীতির ছাত্র নই কিংবা অর্থনীতির জটিল তত্ত্বগুলো সত্যিই বুঝি না। তাই আমার এই চিন্তাচ্ছন্নতার সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়েই বিষয়গুলোকে সরল-সোজা ও মোটা দাগে নিজের মতো করে দেখতে অভ্যস্ত আমি। অবশ্য সূক্ষ্ম ও জটিলভাবে দেখার যোগ্যতাও আমার নেই। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়াভিজ্ঞ আপনাদের পর্যবেক্ষণ-প্রসূত বিশ্লেষণ নিঃসন্দেহে আমাকে বা আমার মতো পাঠককে কৌতুহলী ও আগ্রহী করে তুলতে পারে।

সেই আগ্রহ নিয়ে আপনার পোস্টের অপেক্ষায় থাকলাম।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

গৌরীশ রায় [অতিথি] এর ছবি

লিখার মেটির বিচারে এই লিখা কোন ভাবেই রেটিং এক পাবার যোগ্যতা রাখে না ।
তুলনামূলক বিচার পদ্ধতিতে লিখাটি যথেষ্টই কৃতিত্বের দাবিদার।
অভিনন্দন
এমন লিখা আরও পড়ার প্রত্যাশা রাখি।

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ গৌরীশ দা।
এখানে রেটিং-এর বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়ার বা আহত হবার কিছু নেই। কেননা পোস্টটি অন্য কোন পোস্টের সাথে প্রতিযোগিতায় নামে নি। বরং এতে করে পাঠক-আগ্রহ যাচাই করার একটা সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তা জনমতের ঝাপসা প্রতিফলন বলতে পারেন। ঝাপসা বলছি এজন্যে যে, স্বচ্ছভাবে বুঝার কোন উপায় আমার জানামতে এ সিস্টেমে সম্ভবত নেই। থাকলে ভালো হতো। হিট সংখ্যাকে যদি পোস্টটি পড়েছেন এমন পাঠক সংখ্যা ধরিও, সব পাঠকের রেটিংসহ মন্তব্য দেয়ার সক্রিয়তা না দেখানোয় আসলে প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হয় না। তাই রেটিং এক দিয়ে এসব জঞ্জাল নিয়ে ফুটো বলার সৎসাহস প্রকৃত কত পার্সেন্টের রয়েছে তাও জানা হয় না। আর তাই আমাদের জনসংখ্যার অগ্রবর্তী অংশের কত পার্সেন্ট এ বিষয়টাকে পছন্দ করছেন না তা জানতে পারছি না।

নৈতিক বিচারে যেহেতু পোস্টটিকে আপত্তিকর বলা যাচ্ছে না তাই 'এ বিষয়' বলতে সম্ভাব্য তিনটা জিনিস বুঝানো যেতে পারে। এক, বিনাযুক্তিতে ঈশ্বর এক এর মতোই কোন যুক্তিবোধ-টোধ বুঝি না, ড. ইউনূস নামটাই অপছন্দ, অতএব এ ধরনের লেখাতে অনাগ্রহ জানানো। দুই, সার্বিক মান বিচারে লেখাটি প্রকৃতই নিম্ন-রেটিং পাওয়ার যোগ্য। তিন, এ বিষয়ক লেখা নিয়ে এই লেখক অযথা পৃষ্ঠা দখল করুক তা কাম্য নয় বলে একধরনের প্রতিবাদ। এর বাইরেও আরো দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ থাকতে পারে। তবে শেষ বিচারে কোন সিদ্ধান্তেই আসা যায় না।
ফলে এই রেটিংটাকে একান্তই কোন ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছার তাৎক্ষণিক প্রকাশ হিসেবেই ধরে নিচ্ছি। এবং অবশ্যই ইচ্ছার এ বহিঃপ্রকাশকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। কারণ জাতি হিসেবে আমরা আমাদের বহু ইচ্ছাকে প্রকাশ করতে না পেরে হীনমন্যতায় আক্রান্ত হতে হতে ক্রমশই জটিল থেকে জটিল হয়ে যাচ্ছি, যা আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার করছে।

তাই আবারো ধন্যবাদ জানাই সবাইকে। নিজকে যত বেশি উন্মুক্ত করবেন, ততই ভালো থাকবেন। এটা আমার বিশ্বাস।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রেজওয়ান এর ছবি

অমর্ত্য সেন তার সর্বশেষ বই ‘দ্য আইডিয়া অব জাস্টিস’-এ বলেছেন, দারিদ্র্য নিরূপণের আয়ভিত্তিক পদ্ধতি মানুষ কতটা ভালো জীবনযাপন করে, তা পরিমাপের যথাযথ প্রক্রিয়া নয়। এ পদ্ধতিতে বার্ষিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাপ অর্থের কম উপার্জন করে এমন লোকদের দরিদ্র হিসেবে গণ্য করা হয়। এটা সঠিক মাপকাঠি নয়।

এই কথাটি সত্যি। গ্রামের একটি সচ্ছল পরিবারের মাসিক ব্যায় আর রাজধানীর একটি ধণ্যাঢ্য পরিবারের পশ রেস্তোরায় একরাতের ভোজের খরচ প্রায় সমান। কিন্তু দারিদ্রের সীমা আসলে আপনি কোথায় নির্ধারন করবেন? উন্নত দেশগুলোতেও এমনকি ওয়েলফেয়ার স্টেটেও কোথাও কোথাও দারিদ্রের ছিটেফোটা খুঁজে পাওয়া যায়।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

রণদীপম বসু এর ছবি

সেজন্যই সুনির্দিষ্ট কোন আয় নয়, বরং জীবনযাত্রার সন্তোষজনক একটা মান অতিক্রম করাকেই দারিদ্র্যের নিরূপক মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা যুক্তিযুক্ত বলে আমারও ধারণা। আর এই মান অবশ্যই স্থান কাল পাত্র ও পরিবেশভেদে একটা পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায়।

ধন্যবাদ রেজওয়ান ভাই, মন্তব্যের জন্য।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভালো তুলনা করেছেন। আমার ভালো লেগেছে।

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ পিপি দা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

তুলনাটা বেশ সহজবোধ্য করে দেখিয়েছেন রণদা। চলুক

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

রণদীপম বসু এর ছবি

জটিলভাবে দেখার চোখ নেই যে আমার !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

বর্ষা [অতিথি] এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো।

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ বর্ষা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সাধু এর ছবি

ঋন অথবা চেরিটি সম্পর্কে মানুষের প্রচলিত সামান্তবাদী ডগমাকে চ্যালেন্জ করে দারিদ্র মোকাবেলার যে প্রায়গিক কর্মধারা নিয়ে ডঃ ইউনুস তার সাফল্য প্রমান করতে সক্ষম হয়েছেন সেটাকে বাংলাদেশের একটা গোষ্ঠির কাছে অচ্ছুত্ মনে হলেও বিশ্ব কিন্ত লুফে নিয়েছে । আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে আজও, যারফলে সেভাবে তাকে গ্রহন করা হয়নি । আপনার লেখায় এ বিষয় গুলো সুন্দরভাবে উঠে এসেছে । ডঃ ইউনুস বিষয়ে আপনার বেশ কয়েকটা পোষ্ট পরপর এসেছে, তারথেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছি । পোষ্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।
ইমেইল :

রণদীপম বসু এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ সাধু ভাই।
ড. ইউনূস ও তাঁর সৃষ্টি বা কাজ নিয়ে যেমন আগামীতে অনেক গবেষণা হবে, তেমনি আমাদের সমকালীনতায় আবদ্ধ সীমাবদ্ধতাগুলোর দিকেও নিশ্চয়ই আগামীদিনের সমাজতাত্ত্বিক গবেষকরা কৌতুহলী দৃষ্টি দেবেন। সেই নিরিখে আমাদের এখনকার অর্থহীন কর্মকাণ্ডগুলো যে সম্ভাব্য চিহ্নক প্রবণতার সহায়ক তথ্য হয়ে ওঠবে না, তা-ই বা কে বলতে পারে !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

পোস্টটা ভালো লেগেছে। শুভেচ্ছা রইলো।

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ নিয়াজ ভাই। আপনাকেও শুভেচ্ছা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

আহা রে......... বড়ই কষ্ট পাইলাম। কেউ আমারে হাসপাতালে নে রে......... হায়রে পূঁজিবাদ তুই ধন্য, তোরে সাদা, নীল, সবুজ সালাম ( সব রঙ্গীন সালাম লাল সালাম হয় না )। রণ'দা ইউনুস্যায় কত লোকেরে পথে বসাইছে তা জানলে বা নিজ চোখে দেখলে এই কথা কইতেন না। আসলে যার পোড়ে সেই জানে পোড়ার কী জ্বালা। আমার কথায় কষ্ট পাইলে মাফ কইরা দিয়েন।

তওসিফ খান

Hasan Rahman এর ছবি

একটি বহূ পুরানো লেখা! আমি আগে পড়িনাই, তাই এত দেরিতে মন্তব্যের জন্য দুঃখিত। আপনি এই তথ্য কোথায় পাইলেন যে সেন এর প্রথম বিয়ের একটাই মেয়ে! উনি এবং নবনিতা দেব সেন দুই মেয়ে, অন্তরা এবং নন্দনা, অন্তরা একজন সাংবাদিক, আর নন্দনা অভিনেত্রি। আপনে একটু উইকিপিডিয়া দেখে নিয়েন অনুগ্রহ করে। ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।