| চতুষ্পদী কষ্টগুলো… |২৬-৩০|

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: রবি, ১৪/০৭/২০১৩ - ১২:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(২৬)
আমার চোখে জলের ছোঁয়া- ভাবছো তুমি কান্না তাকে !
কান্না হাসির এপার ওপার চোখ কি জানে অথৈ সাঁতার,
কী হবে আর কান্না মেপে !
শিশির-ধোয়া মগ্নতাকেই ধরছি এমন স্বপ্ন এঁকে।
.
(২৭)
জলের চোখে চোখ রেখেছো
বোঝোনি তাই- চোখের জলও হাসতে জানে;
কষ্ট-বুকের নরম ছোঁয়ায়
কষ্ট পেতেই কষ্টরা যে গোপন সুরে স্বপ্ন বোনে।
.
(২৮)
আশ্চর্য সে অভিসারে ছিলে কি তুমি ?
অথচ তোমার নামেই রটে গেলো কলঙ্ক আমার !
ফুল পাখি নদী গাছ- এ সবই কথার কথা,
মানুষ ভুলে না তার আদিম অহঙ্কার !
.
(২৯)
রাতের বার্ধক্য নেই-
যতই গভীর হয়, রাতও গর্ভিণী হয় নৈঃশব্দের কোলে;
সময়ের পাড় কেটে ঘড়িটা কাতরায় শুধু টিক টিক টিক, আর
সেসব কিছুই নয়, আমি শুনি রাতভাঙা তোমার শীৎকার !
.
(৩০)
শব্দের বিভ্রমে তুমি আসো তুমি যাও-
জানি না সত্যিই তুমি আছো কি কোথাও !
ভেতরে বাইরে বলো উঁকি দেই এদিক ওদিক-
আমার কষ্টের ছোঁয়া তুমি কি আদৌ টের পাও !

(চলবে…)

[২১-২৫] [*] [৩১-৩৫]


মন্তব্য

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চলুক, পড়ছি।

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তারেক অণু এর ছবি

২৭ হিট!

রণদীপম বসু এর ছবি

হুমম !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ছাইপাঁশ  এর ছবি

আপনার পোস্টে ঢোকার আগে একটি ছবি দেখি। কিন্তু ঢুকলে আর দেখি না কেন?!

রণদীপম বসু এর ছবি

এমনিতে যদি এই ছাইপাশ পড়তে না ঢোকেন, তাই ভুলিয়ে-ভালিয়ে ঢুকিয়ে দেয়ার ফন্দি আর কী ! হা হা হা !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় রণদীপম, প্রথমেই বলে নি-ই, চমৎকার হয়েছে, সিরিজের মান টান-টান।
তার পর, একটা ছোট, খুব ছোট শব্দ-সন্ধান নিয়ে কথা। মনে হয় সাহস করে বলতে পারি, পারি তো, তাই না?
গত বছর ফেব্রুয়ারী-তে সিরিজের ৫ নং কবিতায় আপনি লিখেছিলেন
"আমিও জেনেছি পুড়ে- আগুনে আগুন পুড়ে,"
তার পর মন্তব্যে একটি সংশয়দীর্ণ প্রশ্ন/খোঁজ রেখেছিলেন এই বলে যে
"সম্ভবত আমি একটি অর্থগত বানান ভুল করেছি ! এটা কি এরকম হওয়ার কথা-
আগুনে আগুন পোড়ে," বানান বিশারদরা কই !!
আমি বানান বিশারদ একেবারেই নই। কিন্তু একাত্ম হতে চাওয়া পড়ুয়া হিসেবে বলতে চাই - আমার মনে হয়েছে যে আপনার কাঙ্খিত প্রকাশটির উপযুক্ত পংক্তি-টুকরো হত - "আগুনে আগুন পোড়ে,"! ফেব্রুয়ারীতে আমি সচলায়তনের দরবারে এসে হাজির ছিলাম না, তাই চমৎকার কবিতাগুলি পড়তে এত দেরী হয়ে গেল। ফলে, আমার ধারণাটা জানাতে এত দেরী হয়ে গেল।
আবার, জানিয়ে যখন ফেললাম-ই তখন এ ও বলি, আমার মনে হয়েছে আরো ভাল লাগত যদি আজকের
(২৭) নং কবিতায়
"বুঝোনি তাই- চোখের জলও হাসতে জানে;"-র বদলে পেতাম
"বোঝোনি তাই- চোখের জলও হাসতে জানে;"
এবং
(২৮) নং কবিতায়
"মানুষ ভুলে না তার আদিম অহঙ্কার !"-এর বদলে পেতাম
"মানুষ ভোলে না তার আদিম অহঙ্কার !"
ব্যাস, আর কিছু না, শুধুই মুগ্ধতা! গুরু গুরু
- একলহমা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মাঝখানে কিছুদিন সচলে ঢোকা হয়নি সময়ের অভাবে। দুদিন ধরে সচলের পুরনো পোস্টগুলো পড়ছি। আপনার মন্তব্যগুলো আলাদা করে চোখে পড়েছে। ভালো লেগেছে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রণদীপম বসু এর ছবি

খুব যথার্থ জায়গাতেই নজর পড়েছে বৈকি ! এই ও-কার আর উ-কার এর ব্যবহার নিয়ে সত্যিই একটা ঝামেলায় থাকি। আগে সচল বুনোহাঁসটা বানানের মাস্টারি করতো। এখন নিজের মাস্টারিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় আমাদের জন্য একটু বেদিশা অবস্থা হয়ে পড়েছে ! হা হা হা ! তাই নিজেকে যতোটা সম্ভব সংশোধন করার সুযোগ হিসেবে আপনার এই উদ্যোগটাকে ভীষণভাবে স্বাগত জানাচ্ছি। এখানে বিব্রত হওয়ার অবশ্যই কিছু নেই। আপনি নির্দ্বিধায় এটা করবেন আগামীতেও আশা রাখি। এবার আসা যাক সন্দিগ্ধ বিষয়ে।

এই ক্রিয়াবাচক আর বিশেষণবাচক শব্দ নিয়ে জটিলতার অন্ত নেই। বাংলা একাডেমীর ব্যবহারিক বাংলা অভিধানে পুড়া=দহন করা (ক্রিয়া) এবং পোড়া=দহন (বিশেষণ) বলছে। সেক্ষেত্রে দ্বিধাবোধ থাকলেও আপনার প্রস্তাবিত ‌'আমিও জেনেছি পুড়ে, আগুনে আগুন পোড়ে' বাক্যটাকে অধিকতর নান্দনিক বোধ হচ্ছে। বানান বিশেষজ্ঞদের আপত্তি না থাকলে এটা সানন্দে গ্রহণ করতে আমার কোন আপত্তি নেই।

বুঝোনি আর বোঝোনি এর মধ্যে বৈয়াকরণ-দৃষ্টিতে কোনো অর্থ ভিন্নতা না থাকায় শব্দগ্রাহ্যতায় অধিকতর আকর্ষণ বিবেচনায় আপনার মতামতকে সমর্থন জানাচ্ছি। 'বোঝোনি তাই- চোখের জলও হাসতে জানে' -তেই সহমত।

তবে ভুলে আর ভোলে এর ভাবগত অর্থেই কিছুটা মতদ্বৈধতা রয়েছে মনে হয়। আমার দৃষ্টিতে ভোলানো বলতে যারা প্রবঞ্চনা বা ঠকানো বা আকৃষ্ট করা অর্থ বলছেন তাদের মতকেই যথার্থ মনে হয়। সেক্ষেত্রে 'মানুষ ভুলে না তার আদিম অহঙ্কার' চরণটাকে অক্ষুণ্ন রাখতে চাচ্ছি। এ যুক্তিটাকে কি খুব অযথার্থ মনে হবে ?

এভাবেই সম্পাদনা করে নিচ্ছি। পাশাপাশি আপনার মনন-দৃষ্টি পরম বন্ধু হিসেবে আমার সৃষ্টির পাশে-পাশে থাকবে সবসময়, এই দারুণ আশাবাদ ও আগ্রহটুকু ব্যক্ত করছি।
কেবল ধন্যবাদ নয়, সাথে কৃতজ্ঞতাটুকু জানিয়ে রাখছি।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

কবি গো কবি,
বুঝছি সবি
এমন কথা
ধৃষ্টতাই।
জলের কোলে
ডুবব বলে
জলের সাথে
সই পাতাই।

সার্থক কবিতা একটু আগে পড়ে যা মনে হয়েছে এখন পড়লে ঠিক সেই রকম-ই লাগবে তেমনটি নাও হতে পারে। এমন-কি অন্য অর্থ-ও বেরিয়ে আসতে পারে। যেমন হল এখন। "মানুষ ভুলে না তার আদিম অহঙ্কার !" কথাটা-র মধ্যে তার শেষ দাঁড়ানোর জায়গা, তার "আদিম অহঙ্কার" আর তার বর্তমান অবস্থান, সেই অহঙ্কার-কে সরিয়ে রাখতে বাধ্য হওয়া এই দুইয়ের মধ্যে যে করুণ দ্বন্দ-টা ধরা পড়েছে, সেটা "ভোলেনা" বললে আসছেনা। কবি আপনি ঠিক কি ভেবেছেন সেটা তো সবচেয়ে ভালো জানেন আপনি। কিন্তু আমি কবিতার পড়ুয়া দেখলাম আমার দৃষ্টকোণ থেকে। দেখা যাচ্ছে দুদিক থেকেই জয়তু "ভুলেনা"। এরপরে একগাল হাসি দিতেই লাগে। হাসি
আর, আপনার পাশে ডেকে নেওয়ার জন্য অনেক ভালবাসা ও শুভেচ্ছা।
- একলহমা

রণদীপম বসু এর ছবি

যেহেতু কবিকে কখনোই কবিতার ব্যাখ্যা দিতে নেই, তাতে পাঠকের স্বাধীন কল্পনা ও উপলব্ধি ক্ষুণ্ন হয়- এ বিশ্বাস লালন করি আমি, তাই কাব্যের ব্যাখ্যায় পাঠক স্বাধীনতা সার্বভৌম থাক্, তা নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।

তবে আপনার চমৎকার লিরিকটার প্রশংসা না করলে নিজের কাছেই অপরাধী হয়ে যাবো। আমার ধারণা, আপনার নিজস্ব সৃষ্টিশীলতাকে আমাদের কাছে কোনো অজ্ঞাত কারণে অপ্রকাশিত রাখছেন। এ ব্যাপারে একজন আগ্রহী পাঠক হিসেবে নিশ্চয়ই আপত্তি উত্থাপনের পুরো অধিকার আমার রয়েছে ! জীবনের এই সচল স্রোতে আপত্তিটুকু জানিয়ে রাখলাম। ভালো থাকবেন।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আয়নামতি এর ছবি

চলুক

রণদীপম বসু এর ছবি

আপনাকেও বুড়ো আঙুল চলুক দেখালাম !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মানুষ ভুলে না তার আদিম অহঙ্কার

আরেকটা কথা, যতি চিহ্নের আগে স্পেস বসার কথা না... একটু দেখবেন?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রণদীপম বসু এর ছবি

আপনার অনুসন্ধানী দৃষ্টি ঠিকই ধরেছে নজু ভাই। সাধারণত স্পেস বসে না। ওটা আসলে আমার স্বেচ্ছাকৃত। বিস্ময়বোধক চিহ্নটার এমন গায়েপড়া ভাবটা কি আপনার কাছে আপত্তিকর মনে হয় না! আমার কাছে এতোটা ঢলে পড়ার আদিখ্যেতা ভালো লাগে না বলে একটা স্পেস দিয়ে আমিই বিস্ময়বোধক চিহ্নটাকে এভাবে একটু সরিয়ে রাখতে পছন্দ করি। কাজটা কি খুব বেশি নিন্দনীয় বলে মনে হয় !
হা হা হা !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।