| চতুষ্পদী কষ্টগুলো… |৩১-৩৫|

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: সোম, ২৯/০৭/২০১৩ - ৯:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(৩১)
তুমুল বৃষ্টিতে ভিজে কেন যে বেরোলে তুমি-
জানো না কি, লজ্জারাও ধুয়ে যায় বৃষ্টির জলে !
অমন জলল ভাস্কর্য দেখে জানবে সবাই-
আমার বুকের নদী সে-কোন্ সঙ্গমে ছুটে কষ্টের ছলে !
.
(৩২)
তোমার লজ্জার কাছে নতজানু হয়ে আছি বলে
কতো কী যে আখ্যা দেয় লোকে !
কোত্থেকে জানবে ওরা, যদি একবার বলো-
তোমাকে জড়িয়ে ধরে নির্দ্বিধায় ঝাঁপ দেবো চিত্রার জলে !
.
(৩৩)
এমন নির্জন ঘাটে কী হবে শান বাঁধিয়ে আর-
তোমার পায়ের ছাপ না-ই যদি পড়ে !
জলকেলিহারা জলে মাছেরা নিঃস্ব হলে-
তুমিহীন কে আর নামবে বলো পদ্মদীঘি জলে !
.
(৩৪)
সবগুলো মুদ্রা একত্রে মুখর হলে তোমার কথারা নাচে
সবগুলো স্বর মেলে দেয় পেখম যদি, তোমার কথারা হাসে;
সবগুলো রঙ একত্রে রঙিন হলে তোমার কথারা গায়,
আর একইসাথে সবকিছু তোমাতে উচ্ছল হলে চারধারে হলাহল আশ্চর্য নৈঃশব্দে হারায় !
.
(৩৫)
মোহন আঁধারে এসো- জলকেলিরত হবো তুমি আর আমি
আর জ্যোৎস্না চন্দনে গুলে স্বপ্ন-মিথুন হবো;
তুমি ছুঁবে জল, তোমাকে আমি-
জলে জলে ছুঁয়ে যাবো জলল হৃদয় !

(চলবে…)

[২৬-৩০] [*] [৩৬-৪০]


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

জলল হৃদয় ! বাহ, প্রথম শুনলাম শব্দটা

রণদীপম বসু এর ছবি

কাব্যের স্বাধীনতা তো এখানেই !
এককালে যখন ধুমাইয়া কবিতা গ্যাঁজাইতাম, আর সেই বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক 'আজকের কাগজ' এর সাহিত্য পাতায় সেগুলোর ধূঁয়া উঠাইতাম, তখন এরকম কতো শব্দ যে নিজের মতো করে বানিয়েছি ! সেই আজকের কাগজও নাই, সেই চুরি যাওয়া ডাইরিগুলাও নাই, কবিতাগুলাও নাই ! দেড় যুগ আগের ভাঙাহাঁটের স্মৃতি রোমন্থন আর কী ! হা হা হা !!
ধন্যবাদ অণু।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তিথীডোর এর ছবি

লজ্জারাও ধোয়ে না 'ধুয়ে' যায় হবে রণদা?

সরি, মুড খিঁচড়ে আছে আসলে বেশ কিছুক্ষণ ধরে। লিখতে/ পড়তে গিয়ে খালি টাইপোতে আটকাচ্ছি। ইয়ে, মানে...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রণদীপম বসু এর ছবি

অথচ আমার ড্রাফটে 'ধুয়ে' থাকলেও পোস্টের আগে আগে বাংলা একাডেমীর অভিধান দেখে শব্দটাকে 'ধোয়ে' বানিয়েছি ! হা হা হা !
তবে কি ভুল করেই ভুল করলাম !! (বানান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ কাম্য!)

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় কবি, মূল পোস্টের মন্তব্যে পড়ে আসছি। এখন শুধু তিথী দিদিমণির সাথে তাল মিলিয়ে বলতে চাই যে আপনার নিজের ড্রাফটের উপরে আস্থা রেখে 'ধুয়ে'-কে 'ধোয়ে' করে না ধোয়ালেই ভাল ছিল।
তবে আমার একেক সময় মনে হয় আপনি ইচ্ছে করেই আড্ডাবাজীর জন্য মাঝে মাঝে এইরকম করে দেন! দেঁতো হাসি
- একলহমা

রণদীপম বসু এর ছবি

হা হা হা ! খুইয়ে ফেলে আবার ফিরে পাওয়ার মধ্যে এক অন্যরকম আনন্দও আছে বৈ কি !
'ধোয়া'তে পাঠক (বিশেষ করে পাঠিকারা) তৃপ্ত না হলে কী আর করা, নাহয় 'ধুয়ে'ই দিলাম ! গোল্লায় যাক্ অভিধান ! হা হা হা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাহ! জলল হৃদয় ছুঁয়ে গেল হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রণদীপম বসু এর ছবি

গলে না গেলেই হয় ! ইয়ে, মানে...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ছবিটাতে চোখ আটকে গেল।

রণদীপম বসু এর ছবি

ছবিটা বছর দুয়েক আগে মিরপুর বোটানিক গার্ডেনে তোলা ! 'চুঁইয়ে পড়া নির্জনতা !'

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

মুগ্ধ ----

স্বয়ম

রণদীপম বসু এর ছবি

ধন্যবাদ !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আয়নামতি এর ছবি

সুন্দর!
--------------------------------------------
'ধোয়ে' কে ভুল বলতে বিশেষভাবে অজ্ঞ এই আমিই যথেষ্ট রণদা দেঁতো হাসি
প্রমাণ চাইলে অবশ্য কবি নীরব ইয়ে, মানে... হুকোমুখো বৃটিশদের উচ্চারণ এমন হবার কথা খাইছে

রণদীপম বসু এর ছবি

কী আর করা ! গণতন্ত্র বলেও তো একটা কথা আছে, তাই না ? অভিধান গেলে আরেকটা পাওয়া যাবে, কিন্তু পাঠিকা হারালে কবির আর থাকলোটা কী !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

কবিতা তো যেমন হওয়ার তাই হয়েছে - যাচ্ছেতাই রকম ভাল। কিন্তু কোশ্চেন হ্যাজ।
সাধারণ লোকে যাকে বলে ডুবে ডুবে জল খাওয়া কবির হাতে তাই কি হয়ে গেল জলল প্রেম?
না কি একেই বলে প্রেমের জোয়ারে ভেসে যাওয়া? কবিরা যে কি সব বলে, আর কি সব করে! চোখ টিপি
- একলহমা

রণদীপম বসু এর ছবি

কবিরা নিরীহ প্রাণী বলে কি ডুবে ডুবেও একটু স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে না ! নাহয় জলই একটু খেলো !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কবিদের স্বাধীনতায় হাত দিতে নাই, তবু জিগাই, পাখিটা গেল কই? চাল্লু

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রণদীপম বসু এর ছবি

এখানেই তো কবি নীরব ! এবং কেঁদে দেয় !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চারধারে হলাহল আশ্চর্য নৈ: শব্দে হারায়

-হারিয়ে গেলাম গো দাদা।

রণদীপম বসু এর ছবি

বেশি দূর হারায়েন না ! অন্তত ফেরা'র রাস্তাটা খেয়াল রাইখেন ! নইলে একুল-ওকুল দু'কুলই যাবে গো দাদা !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রোমেনা আফরোজ এর ছবি

খুব ভালো লাগলো।।এমন নির্জন ঘাটে কী হবে শান বাধিয়ে আর।।সত্যিই তো কোন একজন বিশেষ মানুষের জন্য সৃষ্টি করা করা সৌন্দর্য অর্থহীন হয়ে যায় যদি তাঁর ক্ষনিক দৃষ্টিও না পড়ে।।।

রণদীপম বসু এর ছবি

প্রেমিকের নিঃসঙ্গতার কষ্ট আরেকটা প্রেমিক মন ছাড়া কে বুঝবে !
অনেক ধন্যবাদ।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।