এবার কান্ড পাকিস্তানে

রেনেট এর ছবি
লিখেছেন রেনেট (তারিখ: শনি, ০৩/০৫/২০০৮ - ৫:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্বঃ আশরাফুল ও মাশরাফিদের সাথে একদিন

(এ পর্যন্ত বেশিরভাগ সিকুয়্যালই তার মূল পর্বকে ছাড়িয়ে যেতে পারে নি। কি সিনেমায়, কি সাহিত্যে। এ সত্য জেনে এবং মেনেই আমার সিকুয়্যাল লেখার চেষ্টা। প্রথমটার মত ভালো হবে না, এটা আমি লেখার আগে থেকেই জানি। যারা পড়ে হতাশ হবেন, তাদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।)

এক
বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ও একমাত্র ওয়ানডে খেলার পর আমি আর জাতীয় দলের পথ মাড়াইনি। আর এমনিতেও আমি অস্ট্রেলিয়ায় এসেছি পড়াশোনা করার জন্য, আশরাফুলদের মত সারাদিন ব্যাট-হকিস্টিক নিয়ে থাকলে আমার চলবে ?

তাই সেই ওয়ানডের পর সবাইকে বিদায় দিয়ে আমি আমার ধান্দায় লেগে গেলাম।

জাতীয় দলের সবাই আমার উপর একটু ক্ষ্যাপা বলেও মনে হল। ওরা কি সচলায়তনে আমার লেখা গল্পটা পড়ে ফেলেছে নাকি? আমার তো ধারণা ছিল ওরা কেউই লেখাপড়া পারে না, সেই ভরসাতেই লিখেছিলাম। কোন দিক দিয়ে কি হয়ে গেল, ঠিক বুঝতে পারলাম না।

দল দেশে ফিরার আগে যখন এয়ারপোর্টে সবাইকে বিদায় দিতে গেলাম, আশরাফুল ভাইয়ের সাথে কোলাকুলি করতে গিয়েছি, তখন উনি আমার দিকে এমনভাবে তাকালেন, যেন জীবনে আমাকে এই প্রথমবারের মত দেখলেন। অথচ ১ দিন আগেই আমি তাকে চরম বিপদ আর বেইজ্জতির হাত থেকে বাঁচিয়েছি। তখন তাকে আউট হতে না দিলে যদি তিনি মাঠেই কোন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসতেন তবে বুঝি খুব ভালো হত?

এজন্যই পরের উপকার করতে নেই।

তা আমার ও তাতে থোড়াই কেয়ার...আরে যা যা...তোরা প্রতি ম্যাচে হারবি আর দর্শকদের গালি খাবি, আর আমি এখানে পার্টি করব আর ডলার কামাবো।

কিন্তু কপালের লিখন, না যায় খন্ডন।

জাতীয় দলে আবার আমার ডাক পড়লো। আমি যেতাম না, কিন্তু একটা কারণে না গিয়ে পারলাম না। এবার খেলা পাকিস্তানের সাথে!

পাকিস্তানীদের খেলায় হারাতে না পারি, ব্যাট দিয়ে বাড়ি দিয়ে ওদের দুএকটার মাথা তো ফাটাতে পারবো, এটা ভেবেই আমার ভারী আনন্দ হতে লাগলো।

তবে চমকের এখানেই শেষ নয়। আরো চমক আছে। ধীরে ধীরে বলছি।

দুই
ওই ওয়ানডের পর মাস ছয়েক কেটে গেছে, আমার তখন সামার ভ্যাকেশন। ততদিনে বাঙালি, ইন্ডিয়ান, নেপালী হরেক রকম বন্ধু বান্ধব জুটে গেছে। দিনগুলো বেশ আনন্দেই কাটছিল। এমনসময় একদিন হঠাত ফারুক ভাইয়ের ফোন। ফারুক ভাই কয়েকদিনের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন শুনেছি, উনার শালার বিয়ে খেতে, তবে কথা হয়নি।

একথা ওকথা বলার পর তিনি আসল কথা পাড়লেন। দেখ রেনেট, আশরাফুলকে নিয়ে কিছু ঝামেলা চলছে,আর ও নিয়মিত পারফর্ম ও করতে পারছে না...তাই আমরা ভাবছি ওকে ক্যাপ্টেন পদ থেকে সরিয়ে দিব। আমার ঝট করে এয়ারপোর্টের স্মৃতি মনে পড়ে গেল, আর আশরাফুলের সাম্ভাব্য পদচ্যুতির কথা শুনে কেন জানি আমার মনে একটু আনন্দ হতে লাগল।
আমি খুশি ভাব গোপন করে বললাম, কেন, কি হয়েছে আশরাফুল ভাইয়ের? উনি ভালোই তো খেলছিলেন...
ফারুক ভাই বললেন, কাউকে বলো না যেন, শুধু তোমাকেই বলছি। আশরাফুল ছেলেটা একটা বিরাট বড় ফাজিল। বছর খানেক ধরে আমার শালীর সাথে প্রেম করছে, গত মাসে হঠাত করে বলে, ওর পক্ষে এ সম্পর্ক রাখা সম্ভব না, ওর মা অন্য জায়গায় মেয়ে টেয়ে দেখছে ইত্যাদি...
-তাই নাকি?
- তা না হলে আর বলছি কি? সে যাকগে, তোমাকে যে জন্য ফোন করা, নতুন ক্যাপ্টেন কে হবে, তা আমরা ঠিক করতে পারছি না,একেকজনের ভোট একেকজনের পক্ষে...। শেষ পর্যন্ত তোমাকেই পাওয়া গেল, যার প্রতি কারো কোন অভিযোগ নেই, আর তাছাড়া, অস্ট্রেলিয়ায় থেকে তুমি নিশ্চয়ই বেশ ভালো ইংরেজি শিখেছো...টিভিতে সাক্ষাতকার ভালো দিতে পারবে। আশরাফুল হাবলাটার মত উত্তর শিখিয়ে দিতে হবে না...
- কিন্তু ফারুক ভাই, আমার তো এদিকে পড়াশোনা...
- এখন তো সামারের ছুটি...আপাতত তুমি ৩ মাসের জন্য দলের দায়িত্বটা নাও ভাই, এরপর ভেবে চিন্তে আরেকজনকে ঠিকই বের করে ফেলব।
আমি আর কি করব, ফারুক ভাই এত করে বললেন, রাজী না হয়ে পারলাম না।
ফারুক ভাইকে বললাম, আমি খেলতে পারি, কিন্তু এক শর্তে।
- কি শর্ত?
- দলের খেলোয়াড় আমার পছন্দ অনুযায়ী হতে হবে।
ফারুক ভাই কিছুক্ষণ কি যেন ভাবলেন। এরপর রাজী হয়ে গেলেন।
সো, মিট দ্যা নিউ ক্যাপ্টেন অফ বাংলাদেশ, রেনেট।

তিন
আমি ক্যাপ্টেন হয়েছি শুনে আমার কদর হঠাত করে খুব বেড়ে গেল। আগে যেসব খেলোয়াড়দের আমি ভাই ভাই করে ডাকতাম, তারাই এখন আমাকে ভাই ভাই করে ডাকে। আর দল নির্বাচনে আমার ভুমিকাই মুখ্য শোনার পর থেকেই চলতে থাকে বিভিন্ন তদবির। এমন কি কুইন্সল্যান্ড থেকে বুলবুল ভাই পর্যন্ত ফোন করে বললেন, আমি যদি চাই, তিনি অবসর ভেঙ্গে ফিরে আসবেন! বুঝেন তাহলে অবস্থা!

আমি অবশ্য ফারুক ভাইকে সাফ সাফ জানিয়ে দিলাম, আমার দলে পাইলট ভাই আর রফিক ভাইকে চাইই চাই। উনাদের অবসর ভাঙ্গানোর ব্যবস্থা করেন।

অবশেষে আমার পছন্দের দল নিয়ে আমরা উড়াল দিলাম পাকিস্তানে।

চার
দল নিয়ে আমার চিন্তা ভাবনা খুব সোজা। যেমন, যারা ঠিক গত ম্যাচে সেঞ্চুরী বা হাফ সেঞ্চুরী করেছে, তাদের দলে না নেয়া। বাংলাদেশের ইতিহাসে পর পর দুই ম্যাচে ভালো খেলেছে, এমন কোন ইতিহাস আছে বলে আমার জানা নেই।

এই কথা শুনে নাফিসের মুখ শুকিয়ে গেল। ও মাত্র দেশের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের সাথে খুব ফাটিয়ে খেলেছে।

আর একটা কথাও জানিয়ে দিলাম সাফ সাফ। যেসব খেলোয়াড়ের পাকিস্তান প্রীতি আছে, তারা যত ভালো খেলোয়াড়ই হোক না কেন , তাদের আমার দলে জায়গা হবে না। কেউ কেউ দেখলাম একটু ব্যাজার হল। তা হলে হতেই পারে। পাকিস্তান প্রশ্নে আমি আপোষহীন।

আমি ঠিক করলাম, তামিমের সাথে ওপেন করবে বাংলাদেশের জয়াসুরিয়া রফিক ভাই।

ওদের দুজনকে বলে দিলাম, মাঠে নেমে গোল্লার মত ঠোকাঠুকি করা যাবে না। প্রথম ৫ ওভারে পুরা ফাটিয়ে খেলতে হবে। প্রথম ৫ ওভারে ৫০ রান তুলতে পারলেই পাকিদের মাথা গরম হয়ে যাবে। আর ওদের মাথা একবার গরম হয়ে গেলেই কেল্লা ফতে। এমনিতে ওরা নিজেদের বাঘের বাচ্চা মনে করলেও বাঙালিদের তেজের সামনে যে ওরা ভেজা বেড়াল হয়ে যায়,একাত্তরে তাতো আমরা দেখেছিই।

ঠোকাঠুকি করার দরকার হলে পরের ব্যাটসম্যানরা করবে (আমিই আবার ৩ নাম্বারে কিনা!) ওপেনারদের কাজ হল একটা বৈশাখি ঝড় সৃষ্টি করা।

ফারুক ভাই আশরাফুলকে বাদই দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি হিসেব করে দেখেছি, আশরাফুল গড়ে ১৭/১৮ মাস পর একটা ঝাকানাকা ইনিংস খেলে। আর ওর শেষ ঝাকানাকা ইনিংস খেলেছিল প্রায় ১৬ মাস আগে। তাই আমার মনে হচ্ছিল,ওর ঝাকানাকা ইনিংসের সময় হয়ে এল বলে। এই ম্যাচে একটা ঝাকানাকা ইনিংস খেললে পরের খেলায় নাহয় ওকে 'বিশ্রাম' দেয়া যাবে।

সাকিবকে ও বাদ দিতাম, কিন্তু ওর বোলিং এর কথা চিন্তা করে ওকে দলে রাখলাম। এছাড়াও দলে থাকল পাইলট ভাই, রাজ্জাক, মাশরাফি, রাসেল, ফরহাদ আর আফতাবকে। (আফতাবকে নেয়ার আমার মোটেও ইচ্ছা ছিল না, ফারুক ভাইয়ের অনুরোধে রাখতে হল)

দল গঠনের পর এবার ট্যাক্টিস ঠিক করার পালা।

ঠিক করলাম, হিন্দি বা উর্দু কারো কারো জানা থাকলেও মাঠে বা মাঠের বাইরে ওদের সাথে ওদের সাথে সমানে বাংলায় কথা বলব। শুধু ফাকে ফুকে ২/১ টা গালি হিন্দি বা উর্দুতে দিব। গালি যাকে দেয়া হল, সে যদি বুঝতেই না পারলো, তাহলে আর গালি দিয়ে লাভ কি! আমি অবশ্য ২ টা হিন্দি/উর্দু গালি জানি। কুত্তে আর কামিনে। মনে হচ্ছে শব্দের শেষে এ কার লাগিয়ে দিলেই চলবে। যেমন হারামজাদে, ...পুতে, ভুট্টে, জিন্নে। নিজের প্রতিভায় নিজেই মুগ্ধ হলাম।

দ্বিতীয়ত, ইনজামামকে চার ছয় মারতে দেয়া হবে না। ওকে দৌড়ে রান নিতে হবে। ত্রিশ রানের মত দৌড়ে নিতে হলে ও নিজেই মনের দুঃখে রান আউট হয়ে যাবে। আর ইনজামাম ক্রিজে থাকা অবস্থায় সব বল ওর এন্ডেই থ্রো করতে হবে। এতে করে হয় ও আউট হবে, নাহলে ও ওর সঙ্গীকে আউট করাবে।

এরকম আরো অনেক প্ল্যান করা হল। খেলার মাঠে এখন এগুলোর প্রয়োগ ঠিক মত করতে পারলেই হয়।

পাঁচ
পাকিস্তানের সাথে প্রথম ম্যাচ। জীবনের প্রথম বারের মত টস করতে নামব। তাই ম্যাচের আগের দিন টস করার ও প্র্যাক্টিস করলাম কিছুটা। বিভিন্ন ভাবে টস করে দেখলাম। কোনভাবে টোকা দিলে কোন পিঠ উঠে, এসব আর কি।

পরের দিন শুরু হল খেলা। টস করতে গেলাম। শোয়েব মালিক আমাকে দেখেই একটা হাসি দিয়ে বললো, ছোটা ভাই, ক্যায়সা হো?
আমি ইংরেজীতে বললাম, আমি উর্দু পারি না। হয় ইংরেজীতে বলেন, নাহয় বাংলায় বলেন।
তা শোয়েব যে ইংরেজি বা বাংলা কোনটাই পারে না, তাতো আমি জানিই। অতএব বিনা বাক্য ব্যয় এ আমার সাথে টস করতে নেমে গেল। কিন্তু একি! আমি এত শখ করে টস করা শিখলাম, আর টস করতে দেয়া হল কিনা ওই মুখপোড়াটাকে!
পাকিস্তান টসে জিতল। ওরা ব্যাট করবে। আমি ও দলবল নিয়ে মাঠে নেমে গেলাম।

ছয়
মাশরাফি আর রাসেল নতুন বলে বল করবে। আমি এবার আর বাউন্ডারী লাইনে দাঁড়ালাম না। ফার্ষ্ট স্লিপে দাঁড়ালাম। যদিও আমার ফিল্ডিং আগের মতই আছে, তারপর ও ওখানে দাঁড়ালাম দুটো কারণে, এক, পাইলট ভাই কিপিং করলে ফার্ষ্ট স্লিপের ফিল্ডারের কোন কিছু না করলে ও চলে এবং দুই, আগের বার বাউন্ডারী লাইনে ফিল্ডিং করার সময় আমাকে মোটেও টিভিতে দেখায় নি। ফার্ষ্ট স্লিপে ফিল্ডিং করলে টিভিতে ঘন ঘন দেখাবে।

যাহোক, পাকিরা ব্যাটিং শুরু করল। এমন একটা সময় ছিল, যখন পাকি ওপেনাররা বাংলাদেশের সাথে খেলা হলে হেলমেট ছাড়াই মাঠে নামত, আর খেলোয়ারদের দিকে তাকিয়ে পিত্তি জ্বলানো হাসি দিত।

সেদিন আর নেই। গত বছর মাশরাফির একটা বল আফ্রিদির কানে এমনভাবে লেগেছিল, যে ও পরবর্তী ৩ মাস এক কানে কম শুনেছে। আজকে তাই দুই ওপেনারের মাথায় হেলমেট দেখা যাচ্ছে।

এককালে মঈনকে দেখতাম উইকেটের পিছনে থেকে সমানে সাবাস সাকি সাবাস সাকি বলে ষাঁড়ের মত চিল্লাত। তা আমাদের পাইলট ভাই ও কোন অংশে কম যান না। তিনি ও মাশরাফিকে মাসী মাসী বলে ডাকতে লাগলেন।

প্রথম ১০ ওভারের বোলিং ভালই হোল। উইকেট পড়লো ৩ টা, রান উঠলো ৩৮। ২ টা মাশরাফির, একটা রাসেলের।

এরপর মাঠে নামলো মটু, মানে ইনজামাম। শালা এই মটুটার জন্যই মুলতানে প্রথম টেস্ট টা জিততে জিততেও জেতা হল না।
তা মটু আজ কি খেয়ে মাঠে নেমেছে খোদাই মালুম, নেমেই পিটানো শুরু করলো।

আমি ও রাগের চোটে কুত্তে, কামিনে, ইনজামামে ইত্যাদি বলা শুরু করলাম। তা মটুর মনে হয় গায়ের চামড়া ও ভারী। এসব গালি ওর গায়ে ও লাগলো না। তখন মাশরাফি এসে বলে, রেনেট ভাই, আপনারে দিয়া এগুলা হইবো না। আপনি অন্য জায়গায় ফিল্ডিং করতে যান, আমি মটুরে কিছু আধুনিক গালি শিখাইতেছি। বলেই সব দাঁত বের করে একটা হাসি দিল।

তা, মাশরাফির গালি প্রতিভার প্রতি আমার আস্থা আছে। তাই আমার জায়গাটা ওকে ছেড়ে দিয়ে আমি অন্য জায়গায় চলে গেলাম।

মাশরাফি কি বলল জানি না, ইনজামামকে কিছুটা উত্তেজিত দেখা গেল।

ফলাফল, ২ ওভারের মধ্যেই ইনু মামা রান আউট! তা আগে যদি বুঝতে পারতাম, তাহলে তো মাশরাফিকে দিয়ে বোলিং না করিয়ে ৫০ ওভার স্লিপেই দাঁড় করিয়ে রাখতাম! অবশ্য যাওয়ার আগে মটু ৫৪ রান করে গেল।

যাহোক, এরপর একে একে ব্যাটসম্যান আসলো আর গেল। পিটালো ঠিকই, কিন্তু কোন বড় জুটি গড়তে পারলো না।

৫০ ওভার শেষে রান দাঁড়ালো ২৪৩।
এবার আমাদের পালা।

সাত
তামিম আর রফিক নেমে পড়লো ব্যাটিং এ। ওদেরকে বলে দিলাম, ধুন্ধুমার ব্যাটিং চাই। তামিম এমনিতেই পিটানোর অপেক্ষায় থাকে, আর তার উপর আমার ঢোলের বাড়ি। তার উপর সাথে যাচ্ছে রফিক। পাকিদের আজকে কি অবস্থা হয় ভেবেই আমার ভালো লাগলো।

কিন্তু তামিম খুব একটা সুবিধে করতে পারলো না। দ্বিতীয় ওভারেই আউট।

আমি নেমে পড়লাম।

রফিক ভাই দেখি মোটামুটি খোশ মেজাজেই আছে। আমাকে দেখে বলল, টেনশনের কোন কারন নাই রেনেট ভাই, আপনি খালি ঠেক দিয়া যান। পাকি হালাগো আইজকা আমি পাইছি।

তা আমি ঠেকই দিয়ে গেলাম, না সরি, সমীহ করে খেললাম। তা আমি ঠেক দিলে কি হবে, ওদিকে রফিক ভাই জ্বালাও পোড়াও কর্মসুচী শুরু করে দিয়েছেন। কাউকে কোন পাত্তা দিচ্ছেন না। কি শোয়েব, কি আসিফ, কি মালিক। তা রফিক ভাইয়ের এহেন রুদ্রমুর্তি দেখে আমার ও চার ছয় মারার সাধ জাগলো।

পাকি হারামজাদাগুলোর উপর আমার বেজায় রাগ। একবার বাংলাদেশে এসে ওরা ইজাজ আহমেদ, সাঈদ আনোয়ারকে দিয়ে বোলিং করিয়েছিল, এতটাই তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করত আমাদের। আর শহীদ আফ্রিদির উপর রাগ আমার আরেক কাঠি বেশি। ওর মধ্যে কি এমন আছে, যেটা দেখে এক বাঙালি মেয়ের প্লিজ ম্যারি মি আফ্রিদি প্ল্যাকার্ড লিখে স্টেডিয়ামে নিয়ে যেতে হবে? দাঁড়া, আজ তোকে ছক্কা মেরে যদি তোর কালো মুখ ভোঁতা না করে দিয়েছি, তবে আমার নাম রেনেটই না!

আমার মনোভাব শোয়েব মালিক কিভাবে বুঝলো কে জানে? আফ্রিদিকেই নিয়ে আসলো পরের ওভারে। ওর একেকটা বল আমার কাছে মনে হতে লাগলো একাত্তরের শত্রুর গুলি। এদের সবকটাকে মাঠছাড়া করতে না পারলে যেন আমার শান্তি নেই। শালা তোরা আমাদের উপর এত জুলুম করলি, শেষে বিড়ালের মত লেজ গুটিয়ে পালালি, আর এখন আবার আমাদের সাথেই রংবাজি করতে চাস? তোর বাবা মা তোকে ইতিহাস পড়ান নাই? পড়ে না থাকলে খেলা শেষ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়তে বস।

আমার হঠাত মাথা খারাপ হওয়া দেখে রফিক ভাই কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন। আমাকে এসে বারে বারে মাথা ঠান্ডা রাখতে বললেন। কিন্তু এগারটা জ্বলজ্যান্ত পাকিস্তানিকে সামনে দেখে মাথা ঠান্ডা রাখি কিভাবে? আমার কেবলই মনে হতে লাগল, এরাই আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়েছে, মা বোনের ইজ্জত নিয়েছে, হাজার হাজার মাকে সন্তান হারা করেছে। আমি যেন সবকিছু চোখের সামনে পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি। নাহ, এদের পিটিয়ে তক্তা না করা পর্যন্ত আমার শান্তি নেই। আম্পায়ারগুলো আছে বলে রক্ষা, নাহলে আমার ইচ্ছা হতে লাগলো ব্যাট দিয়ে বল নয়, ওদের দুয়েকটাকে বাড়ি মেরে শুইয়ে দিই।

যা হোক, আফ্রিদির ১ অভারে ১৪ আর আরেক ওভারে ১৯ রান নেয়ার পর আমার রক্ত কিছুটা ঠান্ডা হোল। আর ইদুরমুখোটাও আর বোলিং করার সাহস পেল না। এর মধ্যে রফিক ভাইয়ের হাফ সেঞ্চুরী হয়ে গেছে, আর আমার ৩৫। দলের রান ২৫ ওভারে ১ উইকেটে ১৩০। বাকী ২৫ ওভারে ১১৪ রান দরকার। এমন সময় রফিক ভাই আউট হয়ে গেলেন।

এরপর নামলো আশরাফুল। ওকে দেখে আমি ও কিছুটা এগিয়ে গেলাম, কিছু উপদেশ দিলাম। কথায় আছে না, যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ? আমিও এখন তাই করছি।

যাহোক, আশরাফুলকে বললাম, দেখ, ফারুক ভাই তোমাকে দল থেকে বাদই দিতে চেয়েছিল, শুধু আমি বলাতে রাখল। তুমি নাকি ফারুক ভাইয়ের শালীর সাথে ব্রেক আপ করছ?

আশরাফুল দেখলাম খেপে উঠলো একেবারে। কি! আমার নামে এতবড় অপবাদ!ফারুকের শালীর পিছনে কে ঘুরে? ওই মেয়েই তো আমার পিছনে পিছনে ঘুরত। আর আমাকে বাদ দিয়ে দিবে? বললেই হল? দাঁড়ান, আজকে যদি একটা সেঞ্চুরী না করছি, তো আমার নাম আশরাফুলই না।

শুরু করলাম দুই উন্মাদ খেলা। একজন পাকিস্তানিদের উপর খ্যাপা, একজন ফারুকের উপর খ্যাপা। কিন্তু ফল হল একই। বল একটার পর একটা যেতে থাকলো বাউন্ডারির বাইরে। শালা বল! এতবার মাঠের বাইরে পাঠাই, তারপর ও ফেরত চলে আসো?

পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের মুখের হাসি উবে গেছে। ওরা এখন নিজেরাই নিজেদের মধ্যে রাগারাগি, ঝগড়া করছে। কেউ মিসফিল্ডিং করছে, তো কেউ ক্যাচ ফেলে দিচ্ছে। আমাদের গালিগালাজ ও করার চেষ্টা করল। আমি ইংরেজীতে বললাম, খামাখা গালি দিয়া শক্তি খরচ কইরো না, আমি উর্দু বুঝি না। খেলা তাড়াতাড়ি শেষ কর আগে, তারপর তোমার কাছে উর্দু শিখুম নে। বলেই একটা মিষ্টি হাসি। এতদিন জানতাম, আমার হাসি দেখলে খালি আমার বান্ধবীরই মেজাজ খারাপ হয়। আজকে দেখলাম, ওদের ও মেজাজ খারাপ হচ্ছে।

যাহোক, আমাদের পিটানোর চোটে পাকিরা দিশেহারা হয়ে গেল। খেলা প্রায় শেষ। হাতে আছে ১০ ওভার, রান বাকি ১৫। আশরাফুল ৮৩, আমি ৬৭।

নাহ, আশরাফুলের একটা সেঞ্চুরী পাওনাই হয়ে গেছে। আমি তাই যতটা সম্ভব স্ট্রাইক ওকে দেয়ার চেষ্টা করলাম।

আর ২ রান দরকার জেতার জন্য, আশরাফুলের রান ৯৫। ছক্কা মারা ছাড়া উপায় নেই।

তা আমাদের আশরাফুল কি ছক্কা মারতে ভয় পায় নাকি? মেরে দিল ছক্কা। বল কোথায় গেল জানি না। আমরা দুইজন ক্রিজের মাঝে লাফাতে লাগলাম।


মন্তব্য

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍জট্টিল! জব্বর জোশ হইছে!
হাসতে হাসতে কাহিল।

পাকিস্তানীদের খেলায় হারাতে না পারি, ব্যাট দিয়ে বাড়ি দিয়ে ওদের দুএকটার মাথা তো ফাটাতে পারবো, এটা ভেবেই আমার ভারী আনন্দ হতে লাগলো।

(বিপ্লব)

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

রেনেট এর ছবি

আপনার মন্তব্য পেয়ে প্রাণে একটু পানি ফিরে পেলাম। লেখার সময় নিজেই সন্দিহান ছিলাম এটি আদৌ কিছু হয়েছে কিনা।
ধন্যবাদ। হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍আরেকটা (বিপ্লব)
ভুলে গিয়েছিলাম।

আর একটা কথাও জানিয়ে দিলাম সাফ সাফ। যেসব খেলোয়াড়ের পাকিস্তান প্রীতি আছে, তারা যত ভালো খেলোয়াড়ই হোক না কেন , তাদের আমার দলে জায়গা হবে না। কেউ কেউ দেখলাম একটু ব্যাজার হল। তা হলে হতেই পারে। পাকিস্তান প্রশ্নে আমি আপোষহীন।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব দেবো। কিন্তু কী পাবো তার বদলে? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

গতিশীল খেলা!হাসতে হাসতে......পড়ে শেষ করলাম।খুব জমছে...।
-নিরিবিলি

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ নিরিবিলি।
আপনি এখনও সচল হন নাই? অ্যাঁ
গোধুলীদা কি করে?
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

রায়হান আবীর এর ছবি

গোধূদা কইথহেক্কা আইলো...
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

রেনেট এর ছবি

আমার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ও সচলায়তন লেখাটায় যান...। গেলেই বুঝিতে পারিবেন হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

রায়হান আবীর এর ছবি

হায় হায় এ কি হইল...

ধুসর গোধূলি এর ছবি
রেনেট এর ছবি

আপনার আর নতুন করে বেক্কল হওয়ার দরকার কি? দেঁতো হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হক কথা !
নতুন করে উনার বেক্কল হওয়ার দরকার কি?
খেলা এবং গল্প দুটোই চরম লাগলো।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জাঝা



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

রেনেট এর ছবি

বদ্দার মন্তব্য বড়ই রেয়ার। ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আমি হাসতে হাসতে শেষ ....... গড়াগড়ি দিয়া হাসি খুব মজা লাগল, নেক্সট কোন দেশ??
P.S. আচ্ছা আপনি অস্ট্রেলিয়ার কোথায় আছেন বলেন তো, মানে যদি একটা অটোগ্রাফ ..... খাইছে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

রেনেট এর ছবি

আর বলবেন না, সোমবারে একটা প্রেজেন্টেশন, মঙ্গলবার আরেকটা। ভেবেছিলাম উইক এন্ড টা আসলেই ধুমসে শুরু করব কাজ। শেষ পর্যন্ত পুরো শুক্রবার বিকালটা শেষ করলাম এই গল্প লিখে।
অটোগ্রাফ চান? লাইনে দাঁড়ান দেঁতো হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

দ্রোহী এর ছবি

খুব মজা লাগলো। [যদিও সিক্যুয়েল তার মুল পর্বকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।]


কি মাঝি? ডরাইলা?

রেনেট এর ছবি

থাক, আপনি জামাই মানুষ বলে কিছু বললাম না হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভালো লেগেছে।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ আখতার ভাই। আপনি পাকি হালাগোরে নিয়া একটা সেইরকম ছড়া লেখা যায় কিনা দেখেন। গালাগালির সাপ্লাই লাগলে আমি আছি দেঁতো হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

আরিফ জেবতিক এর ছবি

-এইবারও ফাটছে।

----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ বেগতিক ভাই! আপনি নতুন কিছু লিখুন তাড়াতাড়ি।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

চরম! আগের পর্বের চেয়েও মজাদার।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রেনেট এর ছবি

শুনে আনন্দিত হলাম হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

নজমুল আলবাব এর ছবি

বুম্ এই নামে একটা ইমোটিকন চাই। এখন নাই তাই গুল্লি

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

রেনেট এর ছবি

হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

পরিবর্তনশীল এর ছবি

খাইছে!
এটা আমার আগের পর্বের চেয়ে কোন অংশে কম লাগে নাই।
পাঁচ পাঁচ।
আপনাকে সাবধান করে দিচ্ছি...
লেখার শুরুতে অপচেস্টা।...এসব লিখবেন না।
তাইলে কিন্তু খবর আছে কইলাম। দেঁতো হাসি
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

রেনেট এর ছবি

ঠিক আছে, লেখার শুরুতে অপচেষ্টা আর লিখব না। কিন্তু পড়ার পরে মেজাজ খারাপ হলে আমাকে আর গালি গালাজ করতে পারবেন না। আগে থেকেই বলে দিলুম।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হায়!
এ তো লংকাকান্ড

রেনেট এর ছবি

শ্রীলংকাকে নিয়ে লিখতে বলছেন? চিন্তিত
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসতে হাসতে হুটোপুটি! আগেরটার চেয়ে কোন অংশে কম ভাল হয়নি।

ফেরারী ফেরদৌস

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ ফেরারী ভাই। নিজে কিছুদিন আগে ও অতিথি লেখক ছিলাম তো, তাই অতিথিদের কাছ থেকে মন্তব্য পেতে ভালো লাগে হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
পাঁচ তারার বেশি থাকলে দিতাম সেটা! অতি উপাদেয় লেখা! পুরাটা গিললাম এক নিঃশ্বাসে! প্রথমটার চেয়ে খুব বেশি খারাপ হয়েছে তা বলব না, দুইটার মজা দুইরকম! দেঁতো হাসি
নেক্সট মিশনের জন্যে গুড লাক! চোখ টিপি

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ বি ডি আর ভাই! নেক্সট কাকে টার্গেট করা যায় বলুন তো?
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ইন্ডিয়া না হয় শ্রীলংকা! দেঁতো হাসি
ভাজ্জি বা মালিংগা-কে নিয়ে কিছু লিখবেন না তা কি হয়! চোখ টিপি

রায়হান আবীর এর ছবি

সিকুয়েল এর ওই সমস্যা। চমক থাকেনা...আগের টা যেমন প্রথমে বুঝতে পারি না, ঘটনা কি...এইবার তো সেটা জানা ছিল। কিন্তু এই বারেরটাও অনেক জোশ হইছে। বিশেষ করে আপনার লেখার স্টাইল খুবই সুন্দর।
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

রেনেট এর ছবি

এজন্যই সিকুয়েল লেখাটা বেশ রিস্কি। তবে আমার মনে হয় না, এ সিরিজ আর লম্বা হবে। পাকিস্তানীদের একটা ডলা দেওয়ার শখ ছিল। শখটা পূরণ করলাম।
শখের দাম লাখ টাকা হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

রায়হান আবীর এর ছবি

অতি সুন্দর ডলা দেওয়ার জন্য (বিপ্লব)
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

রায়হান আবীর এর ছবি

ইন্ডিয়ার শীশান্ত নামে একটা ওভার স্মার্ট আছে না...ওইটারে নিয়া কিছু করা যায় কিনা দেখেন।
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

রেনেট এর ছবি

খেলার মাঠের ধারা বিবরণী দিয়ে আর কোন গল্প থাকবে না। তবে অন্য কোন এঙ্গেলে গল্প লেখাই যায়...
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

বিপ্রতীপ এর ছবি

এইবারেও ছক্কা! দেঁতো হাসি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ বিপ্রতীপ ভাই! হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

নিঝুম এর ছবি

পাকিস্তানীদের একটা ডলা দেওয়ার শখ ছিল। শখটা পূরণ করলাম।
শাবাশ বাঘের বাচ্চা ( তোর ছবিটাই বলে সে কথা)।

তা মাঠে লম্ফ ঝম্ফ বাদ দিয়ে কর্ণেল চাচ্চু রে নিয়া কিছু লিখন যায় না?আশা করি তাহা এই চরম ক্রিকেটিয় উপখ্যান থেকেও জম্পেশ হবে...তোর হবে বাছা...চালা...
---------------------------------------------------------
শেষ কথা যা হোলো না...বুঝে নিও নিছক কল্পনা...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

রেনেট এর ছবি

শাবাশ বাঘের বাচ্চা ( তোর ছবিটাই বলে সে কথা)।

মস্করা করস?
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

খেকশিয়াল এর ছবি

হাসতি হাসতি মরি গেলাম হো হো হো (বিপ্লব)

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

রেনেট এর ছবি

হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

তীরন্দাজ এর ছবি

সাবাস!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ, তীরুদা।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

একটু লম্বা লাগলো। "মাসী মাসী" আর "কুত্তে, কামিনে, ইনজামামে" -- এই দুই জায়গায় হাসতে হাসতে শেষ। চার-ছক্কার বিবরণ কমিয়ে ফারুকের শ্যালিকার মত কাল্পনিক ঘটনা বা এই রকম অসামান্য সংলাপ আরেকটু বাড়ালে একটু আঁটোসাঁটো হত। রান বা ছক্কার হিসেব তো সবাই দিতে পারে। আপনার গিফটটা অন্য জায়গায়।

রেনেট এর ছবি

ভালো পয়েন্ট। পরবর্তীতে লেখার সময় মাথায় থাকবে। আপনাকে ধন্যবদ।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতিথি লেখক এর ছবি

হাহ হাহ হাহ দারুন হচ্চে সিরিজগুলো।
চলুক।

এরপর ইন্ডিয়াকে নিয়ে লিখেন আর অনুরোধ তখন রবিশাস্ত্রী আর হারশা পাগলরে একটু বেশি কইরা সাইজ কইরেন হাসি

আপনার আগের পোস্টগুলো আপনার ব্লগে নিয়ে আসার অনুরোধ রইল। কারণ যখন বন্ধুদের আপানর লেখার কথা বলছি তারা খুঁজে পাচ্ছে না মন খারাপ

আমরা আপনার পুরা পাঙ্খা হয়ে যাচ্ছি।

--এজাজ

রেনেট এর ছবি

ধন্যবাদ এজাজ ভাই।
পুরানো লেখা আমার ব্লগে নিয়ে আসা কিছুটা সময় সাপেক্ষ কাজ। কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে। তবে কিছুদিন সময় লাগবে।
আমার লেখা কেউ তার বন্ধুদের পড়তে বলে শুনে মজা/ভালো লাগলো।
তবে এ সিরিজটি আর আগাবে কিনা, এ মুহুর্তে বলতে পারছি না। একই টাইপের টপিক নিয়ে লিখলে পাঠকদের কাছে ব্যাপারটা একঘেয়ে হয়ে উঠতে পারে।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতিথি লেখক এর ছবি

রেনেট ভাই, আগের পর্বের চেয়ে কোন অংশেই কম হয় নাই। বরং প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হওয়াতে আরো বেশি জমছে...এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম পুরাটা...
আরো কিছুদিন ক্যাপ্টেন থাইকেন কিন্তু...

রিজভী

--------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;

রেনেট এর ছবি

ক্যাপ্টেন আর কতদিন থাকতে পারবো কে জানে! ফারুক ভাইয়ের শালী ইতিমধ্যে আমাকে রাত বিরাতে ফোন করা শুরু করে দিয়েছে।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আগে পড়া হয় নাই... এখন পড়লাম... ভালো হইছে...
কিছু মনে না করলে ছোটমুখে বড় পরামর্শ দিতে চাই...
যে সিরিজ বা খেলা হয়ে গেছে সেটা লেখার চেয়ে ভবিষ্যতের কোনও ম্যাচের আগাম (সামনেই ত্রিদেশীয় ম্যাচ আছে) লেখলে ভালো হইতে পারে মনে হয়।
আর বর্তমানের লোকগুলারে নিয়া লেখলে বিষয়টা আরো বেশি সময়োপযোগি হইতো... ফারুক তো এখন নির্বাচক নাই... আকরামরে আনতে পারতেন... ইনজামামও দলে নাই... এই ব্যাপারগুলা কেমন পুরান খেলা বানায়ে ফেলে... লাইভ হয় না।
তবে লেখাটা দারুণ... বিশেষ করে কুত্তে কামিনে জিন্নে ভুট্টে... হা হা হা হা...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রেনেট এর ছবি

পুরানো খেলোয়াড়/কর্মকর্তা উল্লেখ করছি গল্পটা যে পুরোটাই আমার উর্বর মস্তিস্কের কল্পনা, তা বোঝানোর জন্য।
তা না হলে, এটি বর্তমানের/ সত্য ঘটনা বলে অনেকে বিভ্রান্ত হতে পারে, অথবা আমার বিরুদ্ধে কেউ মানহানির মামলা করে ফেলতে পারে।
সেফ সাইডে থাকা আর কি।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

খেলার মাঠে রান করে যান। রানহানি না ঘটনে মানহানি নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। চোখ টিপি

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

নিবিড়কে ধন্যবাদ, নাইলে তোমার এই লেখাগুলা না পড়া থাকতো। নতুন লেখা কই?

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বস লেখা ! !
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

সাইফ তাহসিন এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি কোট করতে গিয়া দেখলাম, প্রায় ১ লাইন অন্তর অন্তর কোট করতে মন চায়, তাই সেই কাজে ইস্তফা দিলাম।

রেনেট বস, আগের লেখায় কমেন্টাইয়া আইসা দেখি ২য় পর্ব লেখা হয়ে গেসে বহুত আগেই। সিরিজ করেছ কিনা সেটা খুজে দেখতে হবে। তবে এরকম লেখার প্রয়োজন আছে, আমার মতে আমাদের দেশের ক্রিকেট দলের সাইকোলজিকাল মানোন্নয়নের দায়িত্ব হওয়া উচিত তোমার, ২-৩ টা লেখা পড়লেই তাদের মাঝে খেলোয়াড়ের ভাব প্রবল হবে আর বাথরুম দৌড়ানি কমবে। যাক একদিকে ফারুক ভাইয়ের শালী আরেক দিকে অনিকেতদার শালী, তোমার তো দেখি চরম টাইট অবস্থা দেঁতো হাসি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

আরে এই পোস্টটা কিভাবে চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল জানি না।
আমার মনে হয় আমাদের দেশের আগামী সব ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে এরকম লেখার দায়িত্ব রেনেটের নেয়া উচিত।
আর আমাদের ক্রিকেট টীমের প্রত্যেকের জন্য সচলায়তনে এই পোস্ট গুলো পড়া বাধ্যতামূলক করা হোক।

মূলত পাঠক এর ছবি

বাহা বাহা কী লিখলেন ভাই!

রেনেট এর ছবি

শিমন, সুহান, সাইফ ভাই, অনিন্দিতা আপু, মূলোদা সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ কষ্ট করে এসে পড়ে যাওয়ার জন্য হাসি
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

এম রিয়াদ শরীফ এর ছবি

জব্বর! মজা পাইলাম আপনার লেখা পরে... চালিয়ে যান!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।