দীর্ঘমেয়াদে সামরিক শাসন থাকাটা সামরিক বাহিনী এবং সাধারণ জনগণ উভয় পক্ষের জন্যই বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৮৩র সামরিক শাসন আর সামরিক বাহিনীর প্রতি ভীতি ২০০৭এ এসে প্রায় বিলুপ্ত- এরপরেও যদি সামরিক বাহিনী আসে তবে দেখা যাবে অদুর ভবিষ্যতে সামরিক বাহিনীর প্রতি যে ভীতি এবং যে বিচ্ছিন্নতাবোধ তা আর নেই-
বাস্তবতা হলো সামরিক বাহিনীর ক্ষমতায় অংশীদারিত্বের মেয়াদটা সংক্ষিপ্ত হলে যদি সামরিক বাহিনী জরুরী অবস্থা জারি করে তবে তা ভালোভাবে পালিত হয়- কিন্তু যদি সেটার মাত্রা নির্দিষ্ট সময়কালের গন্ডী পার করে তখন সবাই একটা সত্য বুঝতে পারে যে আদতে গাধা সিঙ্ঘের চামড়া জড়িয়ে অহেতুক চিৎকার করছে- এই চিৎকারের ভেতরে আসলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই- মান্য করবার কোনো প্রয়োজন নেই- নেশার সামগ্রীর সমস্যা হলো এটার মাত্রা বাড়াতে হয় নিয়মিত ভাবে- এখন বাংলাদেশের অবস্থাও এমনই- বাংলাদেশের মানুষ এখন জরুরী অবস্থার নেশায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে-তাদের বশ করবার জন্য এখন আরও বেশী কঠোর কোন বিধি প্রয়োজন-
এই সামরিক সরকারের ক্ষমতার মাত্রা এবং এর যোগ্যতা আর দক্ষতার দুর্বলতা চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে- এখন এটা প্রতিষ্ঠিত যে গাধাদের দল যতই চিতকার করুক না কেনো আদতে এরা ঢোঁড়া সাপ- ফোঁস করবে তবে দংশাবে না- আর বর্তমানের হাইব্রীড তত্ত্বয়াবধায়ক সরকারের অবস্থা করুন শঙ্করের মতো- কিছু কিছু গাছের কলম করলে তা প্রজনন শক্তিরহিত হয়ে যায়-
কিংবা আমাদের সুশীল সমাজের শিক্ষিত ঘোড়ার সাথে সামরিক গাধাদের মিলনে যে ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে সেটা আদতে খচচর একটা ব্যবস্থা- এই ব্যবস্থা কষ্টসহিষ্ণু , অনেক বিপত্তি হজম করতে পারে - তবে আদতে কোনো ভাবেই গণতন্ত্র প্রসব করতে পারবে না- প্রজাতির বিপর্যয় ঘটে গেছে এখানে- এই প্রজাতি প্রকৃতি সমর্থন করে না- তাই প্রকৃতা চায় না এটা নতুন কোন বংশধারা হিসেবে অবস্থান করুক-
ব্যবসায়ীরা সব সময়ই খচচর ব্যবহার করে আসছে- এই খচচর প্রজাতি গাধার মতোই কষ্ট করে মালিকের অনুগত থাকে- এবং বেগার খাটুনি খাটতে পারে- আবার ঘোড়ার মতো কিছু বৈশিষ্ঠ্য ধারণ করে এরা- ঘোড়া যেমন দ্রত গতিতে ছুটতে পারে- এরাও তেমনই দ্রুত গতিতেই বিভিন্ন বিধিব্যবস্থার ভেতরে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে- এবং নিজেদের প্রজাতিগত একটা বৈশিষ্ঠ্য এদের আছে- এরা খুব বেশী বাক্যবাগীশ হয়- যাদের বিষ নেই তাদের যেমন কুলোপানা চক্কর আছে তেমন যাদের বংশ বিস্তারের ক্ষমতা নেই তারা অনেক বড় বড় কথা বলে-
তারা সব সময়ই এমন একটা ভাব তৈরি করতে সচেষ্ট যে তাদের হাতেই আসলে নতুন দিনের পতাকা- আর আমাদের খচচর সমাজের প্রতিভূ হলো বিভিন্ন তথ্য প্রবাহ কেন্দ্রের পরিচালকেরা-
সিপিডি, প্রথম আলো- ডেইলী স্টার- আমাদের সময়- কিংবা এমন সব পত্রিকার সম্পাদক আর সাংবাদিক শ্রেনী আর অবসরপ্রাপ্ত সব আমলারা মূলত খচচর হয়ে গিয়েছেন- এদের আবেশী খচচরত্ব কখোনো বাড়ে কখনো কমে- মূলত নির্ভর করে শাসন ক্ষমতায় বর্তমানে কোন পক্ষ অবস্থান করছে-
আর এরা সত্য প্রকাশের কথা বললেও সব সময় সব রিপোর্ট প্রকাশ করতে চায় না- তাদের কাছে তথ্য থাকে আর তথ্য নিয়ে বাণিজ্যের সুযোগ থাকে- তাই চাঁদপুরের পাট কলের শ্রমিকেরা গণ হারে আত্মহত্যা করলেও তা খবরের সংবাদ হয় না- বেতন না পেয়ে মরে গেলেও সেটা জনগণের অগোচরে থাকে-
আর চাঁদ পুরের পাট কলের মালিক কে? জ্ঞাতি ভাইয়ের স্বার্থ দেখলেই যদি পরিবার তন্ত্র না হয় তবে আদতে আমাদের কোনো ভাবেই পরিবার তন্ত্রর অস্তিত্ব স্বীকার করতে হয় না-
খালেদা জিয়া তারেক কিংবা সাঈদ ইস্কান্দারকে দলীয় প্রধান মনোনীত করলেও আদতে কোনো ক্ষতি নেই- পরিবারের সদস্য হিসেবে তারাই অধিক যোগ্য- বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা যদি পাব্লিক লিমিটেড কোম্পানী না হয়ে প্রাইভেট কোম্পানীর মতো হয় তবে ক্ষতি কি? আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব একটা জনপ্রিয় বুলি ছিলো দেশ ২২ পরিবারের হাতে জিম্মি- এবং এ কথা বলে ততকালীন রাজনৈতিকেরা ইংগিতে বুঝাতে চাইতেন আদতে বাঙ্গালীদের শোষণ করা হচ্ছে আর এই শোষণ করছে আদতে পশ্চিম পাকিস্তানের ২২টা পরিবার-
ফজলুল কাদের চৌধুরী রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন- তার ব্যবসাও বড় ছিলো- এমন কি যখন দেশে শত্রু সম্পত্তি আইন প্রতিষ্ঠিত হলো তখনও লাভের গুড় পেয়েছিলো এই রাজনৈতিক মানুষেরা- এই পরিবারগুলো বাদ দিলে নব্য ধনীদের তালিকায় আদতে কতগুলো নাম যুক্ত হয়েছে? দেখা যাবে সেই ২২ পরিবার না হলেও এদের জ্ঞাতিরাই কোনো না কোনো ভাবে আমাদের ক্ষমতার অঙ্গনে পরিচিত- আর এদের উপদেষ্টা হিসেবে কতিপয় সুশীল খচচর কাজ করে যাচ্ছে-
তবে আমার মনে হয় যখন হঠাত করেই সামরিক বাহিনীর সদস্যেরা সাধারণ মানুষের মতো আচরণ করতে থাকে- যখন সামরিক উর্দি ছুড়ে ফেলে কোনো এক দিন সফেদ পাঞ্জাবি পড়ে ঈদের জামাতে দাঁড়ায় তখন তেমন ভীতিকর না থেকে হাস্যকর ভাঁড় হয়ে যায় তারা-
মাসুদ চৌধুরীকে দেখলাম- গলফ টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করছে- বেচারাকে দেখে কেনো যেনো বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মনে হলো- ক্যামেরার সামনে নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে- ইতিকর্তব্য অনুমাণ করতে না পারায় তার ভেতরের বুদ্ধিবৃত্ত্বিক দীপ্তি নেই- আর এখানে দুর্নীতি বিষয়ক উত্তেজক ভাষণ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই- তার দুর্নীতি বিরোধী বক্তব্য শুনলে বেশ জোশ আসে শরীরে- অনেক কিছুই উত্তেজিত হয়ে যেতে চায়- আর তাদের সপরিবারে যখন কোনো অনুষ্টানে দেখি তখন আর বেশী উত্তেজিত হয়ে যাই- তাদের পরিবারে পুষ্টির অভাব নেই- তাদের মসৃন চামড়া আর সুন্দর মুখাবয়ব দেখে দাঁড়িয়ে থাকে-
ইশ্বর তাদের মঙ্গল করূন আর আমাদের বেশী বেশী সুযোগ দিন সুযোগ গ্রহনের তৈফিক দিন- তারা যখন দুর্নীতি দমনে অতিশয় ব্যস্ত থাকবেন তাদের অবহেলিত পরিজনের বিনোদনের কাজে আমদের নিয়োজিত রাখতে পারি ]
আমিন সুম্মা আমিন-
মন্তব্য
টাইটেলটা চুম্বক ও শতকরা ১০০ ভাগ যথার্থ হয়েছে।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
হা, ইশ্বর তুমি রাসেলের সহায় হও। আমিন, সুম্মা আমিন।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ইয়ে...ঐ বিনোদন না কি যেন কইলেন ....
(বিপ্লব)
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নতুন মন্তব্য করুন