খচ্চর সমাজে গাধারাই মহামান্য-

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: শনি, ০৯/০২/২০০৮ - ৬:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দীর্ঘমেয়াদে সামরিক শাসন থাকাটা সামরিক বাহিনী এবং সাধারণ জনগণ উভয় পক্ষের জন্যই বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৮৩র সামরিক শাসন আর সামরিক বাহিনীর প্রতি ভীতি ২০০৭এ এসে প্রায় বিলুপ্ত- এরপরেও যদি সামরিক বাহিনী আসে তবে দেখা যাবে অদুর ভবিষ্যতে সামরিক বাহিনীর প্রতি যে ভীতি এবং যে বিচ্ছিন্নতাবোধ তা আর নেই-

বাস্তবতা হলো সামরিক বাহিনীর ক্ষমতায় অংশীদারিত্বের মেয়াদটা সংক্ষিপ্ত হলে যদি সামরিক বাহিনী জরুরী অবস্থা জারি করে তবে তা ভালোভাবে পালিত হয়- কিন্তু যদি সেটার মাত্রা নির্দিষ্ট সময়কালের গন্ডী পার করে তখন সবাই একটা সত্য বুঝতে পারে যে আদতে গাধা সিঙ্ঘের চামড়া জড়িয়ে অহেতুক চিৎকার করছে- এই চিৎকারের ভেতরে আসলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই- মান্য করবার কোনো প্রয়োজন নেই- নেশার সামগ্রীর সমস্যা হলো এটার মাত্রা বাড়াতে হয় নিয়মিত ভাবে- এখন বাংলাদেশের অবস্থাও এমনই- বাংলাদেশের মানুষ এখন জরুরী অবস্থার নেশায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে-তাদের বশ করবার জন্য এখন আরও বেশী কঠোর কোন বিধি প্রয়োজন-
এই সামরিক সরকারের ক্ষমতার মাত্রা এবং এর যোগ্যতা আর দক্ষতার দুর্বলতা চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে- এখন এটা প্রতিষ্ঠিত যে গাধাদের দল যতই চিতকার করুক না কেনো আদতে এরা ঢোঁড়া সাপ- ফোঁস করবে তবে দংশাবে না- আর বর্তমানের হাইব্রীড তত্ত্বয়াবধায়ক সরকারের অবস্থা করুন শঙ্করের মতো- কিছু কিছু গাছের কলম করলে তা প্রজনন শক্তিরহিত হয়ে যায়-

কিংবা আমাদের সুশীল সমাজের শিক্ষিত ঘোড়ার সাথে সামরিক গাধাদের মিলনে যে ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে সেটা আদতে খচচর একটা ব্যবস্থা- এই ব্যবস্থা কষ্টসহিষ্ণু , অনেক বিপত্তি হজম করতে পারে - তবে আদতে কোনো ভাবেই গণতন্ত্র প্রসব করতে পারবে না- প্রজাতির বিপর্যয় ঘটে গেছে এখানে- এই প্রজাতি প্রকৃতি সমর্থন করে না- তাই প্রকৃতা চায় না এটা নতুন কোন বংশধারা হিসেবে অবস্থান করুক-

ব্যবসায়ীরা সব সময়ই খচচর ব্যবহার করে আসছে- এই খচচর প্রজাতি গাধার মতোই কষ্ট করে মালিকের অনুগত থাকে- এবং বেগার খাটুনি খাটতে পারে- আবার ঘোড়ার মতো কিছু বৈশিষ্ঠ্য ধারণ করে এরা- ঘোড়া যেমন দ্রত গতিতে ছুটতে পারে- এরাও তেমনই দ্রুত গতিতেই বিভিন্ন বিধিব্যবস্থার ভেতরে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে- এবং নিজেদের প্রজাতিগত একটা বৈশিষ্ঠ্য এদের আছে- এরা খুব বেশী বাক্যবাগীশ হয়- যাদের বিষ নেই তাদের যেমন কুলোপানা চক্কর আছে তেমন যাদের বংশ বিস্তারের ক্ষমতা নেই তারা অনেক বড় বড় কথা বলে-
তারা সব সময়ই এমন একটা ভাব তৈরি করতে সচেষ্ট যে তাদের হাতেই আসলে নতুন দিনের পতাকা- আর আমাদের খচচর সমাজের প্রতিভূ হলো বিভিন্ন তথ্য প্রবাহ কেন্দ্রের পরিচালকেরা-
সিপিডি, প্রথম আলো- ডেইলী স্টার- আমাদের সময়- কিংবা এমন সব পত্রিকার সম্পাদক আর সাংবাদিক শ্রেনী আর অবসরপ্রাপ্ত সব আমলারা মূলত খচচর হয়ে গিয়েছেন- এদের আবেশী খচচরত্ব কখোনো বাড়ে কখনো কমে- মূলত নির্ভর করে শাসন ক্ষমতায় বর্তমানে কোন পক্ষ অবস্থান করছে-

আর এরা সত্য প্রকাশের কথা বললেও সব সময় সব রিপোর্ট প্রকাশ করতে চায় না- তাদের কাছে তথ্য থাকে আর তথ্য নিয়ে বাণিজ্যের সুযোগ থাকে- তাই চাঁদপুরের পাট কলের শ্রমিকেরা গণ হারে আত্মহত্যা করলেও তা খবরের সংবাদ হয় না- বেতন না পেয়ে মরে গেলেও সেটা জনগণের অগোচরে থাকে-

আর চাঁদ পুরের পাট কলের মালিক কে? জ্ঞাতি ভাইয়ের স্বার্থ দেখলেই যদি পরিবার তন্ত্র না হয় তবে আদতে আমাদের কোনো ভাবেই পরিবার তন্ত্রর অস্তিত্ব স্বীকার করতে হয় না-

খালেদা জিয়া তারেক কিংবা সাঈদ ইস্কান্দারকে দলীয় প্রধান মনোনীত করলেও আদতে কোনো ক্ষতি নেই- পরিবারের সদস্য হিসেবে তারাই অধিক যোগ্য- বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা যদি পাব্লিক লিমিটেড কোম্পানী না হয়ে প্রাইভেট কোম্পানীর মতো হয় তবে ক্ষতি কি? আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব একটা জনপ্রিয় বুলি ছিলো দেশ ২২ পরিবারের হাতে জিম্মি- এবং এ কথা বলে ততকালীন রাজনৈতিকেরা ইংগিতে বুঝাতে চাইতেন আদতে বাঙ্গালীদের শোষণ করা হচ্ছে আর এই শোষণ করছে আদতে পশ্চিম পাকিস্তানের ২২টা পরিবার-

ফজলুল কাদের চৌধুরী রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন- তার ব্যবসাও বড় ছিলো- এমন কি যখন দেশে শত্রু সম্পত্তি আইন প্রতিষ্ঠিত হলো তখনও লাভের গুড় পেয়েছিলো এই রাজনৈতিক মানুষেরা- এই পরিবারগুলো বাদ দিলে নব্য ধনীদের তালিকায় আদতে কতগুলো নাম যুক্ত হয়েছে? দেখা যাবে সেই ২২ পরিবার না হলেও এদের জ্ঞাতিরাই কোনো না কোনো ভাবে আমাদের ক্ষমতার অঙ্গনে পরিচিত- আর এদের উপদেষ্টা হিসেবে কতিপয় সুশীল খচচর কাজ করে যাচ্ছে-
তবে আমার মনে হয় যখন হঠাত করেই সামরিক বাহিনীর সদস্যেরা সাধারণ মানুষের মতো আচরণ করতে থাকে- যখন সামরিক উর্দি ছুড়ে ফেলে কোনো এক দিন সফেদ পাঞ্জাবি পড়ে ঈদের জামাতে দাঁড়ায় তখন তেমন ভীতিকর না থেকে হাস্যকর ভাঁড় হয়ে যায় তারা-
মাসুদ চৌধুরীকে দেখলাম- গলফ টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করছে- বেচারাকে দেখে কেনো যেনো বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মনে হলো- ক্যামেরার সামনে নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে- ইতিকর্তব্য অনুমাণ করতে না পারায় তার ভেতরের বুদ্ধিবৃত্ত্বিক দীপ্তি নেই- আর এখানে দুর্নীতি বিষয়ক উত্তেজক ভাষণ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই- তার দুর্নীতি বিরোধী বক্তব্য শুনলে বেশ জোশ আসে শরীরে- অনেক কিছুই উত্তেজিত হয়ে যেতে চায়- আর তাদের সপরিবারে যখন কোনো অনুষ্টানে দেখি তখন আর বেশী উত্তেজিত হয়ে যাই- তাদের পরিবারে পুষ্টির অভাব নেই- তাদের মসৃন চামড়া আর সুন্দর মুখাবয়ব দেখে দাঁড়িয়ে থাকে-

ইশ্বর তাদের মঙ্গল করূন আর আমাদের বেশী বেশী সুযোগ দিন সুযোগ গ্রহনের তৈফিক দিন- তারা যখন দুর্নীতি দমনে অতিশয় ব্যস্ত থাকবেন তাদের অবহেলিত পরিজনের বিনোদনের কাজে আমদের নিয়োজিত রাখতে পারি ]
আমিন সুম্মা আমিন-


মন্তব্য

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

টাইটেলটা চুম্বক ও শতকরা ১০০ ভাগ যথার্থ হয়েছে।

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

নজমুল আলবাব এর ছবি

হা, ইশ্বর তুমি রাসেলের সহায় হও। আমিন, সুম্মা আমিন।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ইয়ে...ঐ বিনোদন না কি যেন কইলেন ....

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আমাদের সুশীল সমাজের শিক্ষিত ঘোড়ার সাথে সামরিক গাধাদের মিলনে যে ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে সেটা আদতে খচচর একটা ব্যবস্থা

(বিপ্লব)

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।