সমালোচনা লেখা যাবে তবে তা শুধু মাত্র মৃত লেখকদের সাহিত্য আলোচনা হবে, জীবিত ব্যক্তির সাহিত্য সমালোচনা এবং ব্যক্তি আক্রমন সমার্থক। এই বোধ হয় উহ্য আছে এখন, লেখা বিষয়ে কোনো মন্তব্য যা জীবিত লেখক প্রসুত এবং যেটা উপভোগ্য মনে হয় নি এটাও চেপে পরস্পরের পিঠ চাপড়াতে হবে- এ গোত্র ও গোত্র, এ পাড়া ও পাড়া বিভাজন কবে হলো জানি না, তবে সামপ্রতিক কালে লিখতে গিয়েও নিজেকে সংবরণ করতে হয়- পাড়ার রকে দাদারা বসে আছে-
সমালোচনা হবে গঠনমূলক এবং সেখানে আত্মমৃপ্তি থাকবে, বলা থাকবে এই লেখাটা পড়ে প্রাণ আপ্লুত হয়েছে, যদিও লেখাটা পড়ার সময় একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, হাতের কাছে ধারালো কোনো বস্তু থাকলে সেটা সিন্দুকে ভরেই পড়তে হবে লেখা, যদিও পড়তে পড়তে এক হাজার বার মনে হবে- ম্যান হি সাকস, হি সাকস বিটারলি- মে বি ইট ইজ এ কমপ্লিট ওয়েস্ট ওফ টাইম- তবে সমালোচনা লেখার সময় বলতে হবে, এটা তার অন্যাণ্য লেখার মতো সুখপাঠ্য নয় আরও বেশী নিবির মনোযোগ দাবি করে-
সত্যতা হলো এটাই আমার পড়া একমাত্র লেখা এবং আমি আর এ জিনিষ পড়তে আগ্রহী না। ইফ ইউ সাক একসেপ্ট ইট- মে বি ইউ ক্যান ডু বেটার দিন দিস, ইফ নট পারহ্যাপস ইটস বেটার ইউ কুইট- ইউ হ্যভ নো রাইট টু বদার পিপল। ইফ সামহাউ দেয়ার ইজ নো একসেপ্টেন্স অফ ইউর ক্রিয়েটিভিটি বিকজ সিম্পলি ইউ সাক, নট বিকজ ইউ আর এহেড অফ ইয়োর টাইম এন্ড ওয়ার্ল্ড ইজ নট প্রিপেয়ার্ড ইয়েট টু একসেপ্ট ইয়োর ট্যালেন্ট।
সমস্যা হলো সচলায়তন কি এখন প্রস্তুত এসব প্রসঙ্গ আলোচনার জন্য? আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা বলে ভিন্ন কথা। তাই মডারেটরের ছুঁড়ি কাঁচিকে কোনোমতে পাশ কাটানোর ক্রমাগত চেষ্টাটাকে সঙ্গী মেনে নিতে হচ্ছে।
পাঠকে পাঠকে মতভেদ থাকবে, একেকজনের রুচি একেক রকম হবে এবং সবাই বোদ্ধা না- এই একটা বিষয় মেনে না নিয়ে সাবাইকে বোদ্ধা হতে হবে এমন একটা প্রথা নির্মানের চেষ্টা কোনো সুফল বয়ে আনবে না।
কথাটা দুঃখে বলছি- নিজের সমালোচনা নিয়ে উচ্চধারনা পোষন করি না তবে এটুকু বিশ্বাস করি সমালোচনা আন্তরিক এবং যাথাযথ অনুভবের প্রতিফলন হতে হবে- খোঁড়া সমালোচনা কিংবা অহেতুক স্তাবকতার বাইরে গিয়ে যদি কোনো শিল্প উপভোগঅযোগ্য মনে হয় বলে ফেলা ভালো- শিবির তৈরি করে এটা ব্যক্তি আক্রমন, এটা অহেতুক ঝামেলা গাকানোর চেষ্টা এসব ইতরামি না করে বেড়ে ওঠার একটা প্রক্রিয়া শুরু হওয়া দরকার। আত্মগর্ব, আত্মমর্যাদাবোধ ভালো, নিজের বিষয়ে উচ্চধারণা পোষন করাও ভালো তবে সেটাকে মানসিক ব্যধিতে রুপান্তরের কোনো চেষ্টা না করাই ভালো।
শিল্প শেষ পর্যন্ত- একটা পণ্য এবং শিল্পী আমজনতার কাছে সে পণ্য বেচতে আসে- কারো কারো ক্রেতা নির্দিষ্ট শ্রেণীর মানুষ. তারা সেই নির্দিষ্ট শ্রেণীর অনুভব লিখবে, এই অনুভব সার্বজনীন হবে এমনটা ভেবে নেওয়ায় একটা ব্যধি। শাহবাগী ঘারানা আর মগবাজার ঘারানার শিল্পিদের ভেতরেও ব্যবধান থাকবে- কিশোর কণ্ঠে যে কবিতা লিখে তার কবিতা প্রথম আলোতে খেলো মনে হবে। আবারও সেই ভোক্তা জগতের প্রশ্ন।
এখন একজন সাম্ভাব্য ভোক্তা হিসেবে আমার নিজের চাহিদা এবং চাহিদা পুরণ না হওয়ার আক্ষেপ লেখার স্বাধীনতা আমার থাকবে না কেনো? আমার মূল প্রশ্নটা এখানেই এবং উপস্থিত মহামান্য কতৃপক্ষ একটু খোলাসা করে বলবেন আমাকে যদি আপনার কোনো দোকানে গিয়ে একটা শার্ট কেনার পরে মনে হয় এটা তৃপ্তিদায়ক না তবে ক্রেতা হিসেবে সেটা নিয়ে অভিযোগ বা আক্ষেপ জানানো সুযোগ থাকলে তারা কি সেটা গ্রহন করবে?
এই কারখানায় সবার মনের খোরাক তৈরি হোক এমনটাই কামনা করছে সবাই। এবং এটাকে আরও আকর্ষণীয় করবার তাগিদটাও এ কারণে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এবং উত্তোরোত্তর সমৃদ্ধি অর্জন। আপন সৃষ্টিকে সবাই সেরা বললে যে আত্মতৃপ্তি আসে সেটুকু বাহবা পাওয়ার জন্যও অনেকে ব্যকুল থাকে।
সেটুকু বাহবা পাওয়ার লোভ ত্যগ করে নিজের উৎকর্ষ সাধন কারো লক্ষ্য হলে সে হয়তো সমালোচনা গ্রহনে উদার হতে পারে তবে সে উদারতা এবং মনোভাব এখানে অনুপসি'ত। এমন কি সে পরিপক্কতা এখনও গড়ে উঠে নি অনেকের ভেতরে- এই পরিবেশে একটা পথই খোলা থাকে- সিদ্ধান- নেওয়া যে কোনো রকম সক্রিয় অংশগ্রহন করবো না- কোনো রকম সমালোচনা এমন সব লেখার যার এখানে প্রকাশিত হয়েছে কিংবা লেখক ভুলক্রমে এখানের কারো সুহৃদ এবং যারা জীবিত তাদের কোনো সমালোচনা লিখবো না- বরং মৃত ব্যক্তির সাহিত্য পর্যালোচনা করবো- স্তাবকেরা হয়তো মনক্ষুন্ন হতে পারে- তারা আবারও আপত্তিকর অভিযোগ তুলতে পারে- সেটাকে মৃত ব্যক্তির প্রতি অসম্মান বর্ষণ ভাবতে পারে তাই সঠিক সিদ্ধান- হলো বাল সমালোচনাই করবো না- না থাকবে বাঁশ ঝাড় না তৈরি হবে বাঁশ।
মন্তব্য
হুমম। আমি এই লেখা যতটা বুঝলাম তাতে বলতে পারি সমালোচনাধর্মী লেখা এখানে কমই এসেছে তবে একেবারে যে আসেনি তা নয়। একজনের লেখার উপর ব্লগের একজন নামকরা মানুষ সমালোচনা লিখেছেন তার উদাহরণ আছে। আবার সম্পূর্ণ ভিন্ন মতের ব্লগারদের মধ্যে বাক্যবাণ ছোঁড়াছুঁড়ির উদাহরণও আছে।
আপনি হয়তো আরো অনেক কিছু বলতে চেয়েছেন যা আকারে-প্রকারে বুঝতে পারছি (যদি ঠিক বুঝে থাকি), কিন্তু তার উত্তর দেওয়ার জন্য আমি অপেক্ষা করার পক্ষপাতি। প্রতিক্রিয়া দেখানোর থেকে প্রগতি উত্তম। তাতে সবারই লাভ।
আপনি হয়তো একটা বিষয় লক্ষ্য করে থাকবেন সচলায়তনে যদিও সম্পূর্ণ-ভিন্ন-মেরুর মানুষের আনাগোনা নেই, প্রতিবেশী অন্যব্লগের মূলসূরই কিন্তু বিবাদ। "শাহবাগী ঘারানা আর মগবাজার ঘারানা" দিয়ে আপনি (হয়তো) যা বোঝাতে চাইছেন তার বাইরেও ভিন্ন মতের ভোক্তা আছেন, যারা শাহবাগীও নন আবার মগবাজারীও নন। আমার ধারনা সাধারণ পাঠককূলে এদের সংখ্যাই বেশী।
আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় সেটা হলো সমালোচনা করার জন্য বিষয়ের উপর ব্যাপক জানাশোনা প্রয়োজন। সমালোচনাকারীর জ্ঞান ও মানসিক গভীরতারও একটা ব্যাপার আছে। আমি সচলায়তন কাঁপিয়ে হয়তো একটা সমালোচনা লিখতে পারবো, কিন্তু আমার দৌড় কতদূর তা আমি জানি। সমালোচনাকে সমালোচনা হিসেবে গ্রহণ করার মানসিকতারও একটা বিষয় আছে।
আপনার লেখার কিছু কিছু বিষয় অসম্পূর্ণ যেমন, আপনি সমস্যার কথা বলেছেন কিন্তু সমাধানের কোন পথ দেখাননি। যাহোক আপনার লেখার সমালোচনা করে সমালোচকের খাতায় নাম লেখালাম। সমালোচনাটা কেমন হল জানাবেন। এটা আদৌ সমালোচনা হল কী-না তাও জানাবেন। শুভেচ্ছা রইল।
এই একটা জায়গাতে আমার আপত্তি আদতে- সমালোচককে বিদ্যাদিগগজ হতে হবে এমন প্রথাটা নির্মান করলো কে? কিংবা সমালোচনার জন্য মাথার চুল পাকিয়ে ফেলতে হবে এটাও এক ধরনের ধুর্ততা- সমালোচনা পাঠকের অনুভব- সেটা পাঠকের মন্তব্য- এইখানে যেমন পাঠকের মন্তব্যের সুযোগ আছে তেমনটা হয়তো অন্য কোথাও নেই- ভালো লেগেছে এমন মন্তব্যের চেয়ে যোগাযোগের সম্ভবনা আছে এমন মন্তব্য তাই উপভোগ্য-
তবে ভারিক্কি পরিপক্কতা বিষয়টা সমালোচনার মূল বিষয় না- কতিপয় মানুষ এমন একটা ধারণা নির্মানের চেষ্টা চালাচ্ছে- তুমি কি বলবে হে কালকের ছুকরা- এখনও দুধ দাঁত পড়ে নি- এমন ঋণাত্বক বক্তব্যও পক্ষান্তরে সমালোচনা- একটা অবস্থান দেখানো এবং সেখানে স্থিতু করে দেওয়া-
সচলায়তনের বিষয়ে আমার বর্তমান উপলব্ধি বদলাচ্ছে ধীরে ধীরে এটা একটা প্রতিষ্ঠান হয়ে যাচ্ছে দিন দিন- আর এই প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠাটাকে আমি ভয় পাচ্ছি -
সচলায়তন নিজের এই প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরোধী সমালোচনা গ্রহনের মতো পরিপক্কতা দেখাবে এমন বিশ্বাস আমার কমে আসছে-
-------------------------------------------------------
বাংলায় হাগি, মুতি, বাঁচি
------------------------------------
আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।
একমত। সমস্যা হলো, আন্তরিকতা ও নিরপেক্ষতার সাথে অন্যের সমালোচনা করতে পারা এবং একই সাথে সমালোচনা গ্রহণ করতে পারার যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ অতি বিরল। তাই দেখা যায়, গঠনমূলক সমালোচনার ফলও 'হিতে বিপরীত' হয়ে যায়। পৃথিবীটা পারফেক্ট হলে কতোই না ভালো হতো!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
বুঝলাম। লোকে সমালোচনা করতে দ্যায় না আপনাকে। আপনার অনেক কষ্ট।
হাঁটুপানির জলদস্যু
- ক্যারা রে!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
০১
প্রফেসর রাজ্জাকের একটা কথা মনে পড়ে গেলো
একবার টিএসসির অডিটোরিয়ামে তাকে কী যেন কী কারণে সংবর্ধনা দেয়া হ্চেছ
বাঘা বাঘা বক্তারা তার প্রশংসা করছেন
সব শেষে উঠলেন প্রফেসর রাজ্জাক। বললেন- ওইখানে বইসা বইসা মনে হইতেছিল আমি আর জিন্দা নাই। আমি মুর্দা
কারণ জিন্দাকালে বাঙালিতো এতো প্রশংসা করে না
০২
আমাদের জাতীয় জীবনে আপনার মতো মানুষে অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের তরুণ সমাজ যদি আপনার আদর্শ অনুসরণ করে জীবন গঠনে উদ্যোগী হয় তা হলে বহির্বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি অনেক অনেক উজ্জ্বল হবে এবং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে
(সরকারি স্টাইলে আপনার মরোণোত্তর সমালোচনা)
০৩
আপনি সম্ভবত মানুষটা সুবিধার না
(আপনার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী স্বাধীন সমালোচনা)
মাঝে মাঝে আমারও তাই মনে হয়- আমি বোধ হয় মানুষটা সুবিধার না-
-------------------------------------------------------
বাংলায় হাগি, মুতি, বাঁচি
------------------------------------
আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।
একমত।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
-------------------------------------------------------
" জিন্দাকালে বাঙালিতো এতো প্রশংসা করে না " এটা অর্ধ সত্য । খুদ কুড়ো পাবার আশায় প্রভাবশালিদের অতি প্রশংসা (চামচামি ) করতে বাঙালি'র জুরি নেই । বরং মুর্দা গেলে কাজে লাগব না বলে নতুন বস এর কাছে যায়।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নতুন মন্তব্য করুন