ঢাকা থেকে চিটাগাং যাওয়ার জিএমজির ফ্লাইট নাম্বার ২৩১, মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হলো- মাটি থেকে ২ মাইল উপরেই প্লেনটা বিস্ফোরিত হয়েছিলো- আকাশ থেকে উক্লার মতো বড় বড় টুকরো পড়লো- সেই আকাশ থেকে নেমে আসা অভিশাপের আঘাতে মারা গেলো আরও ১০ ১২ জন। অবশ্য পুলিশ কোনো কূল-কিনারাই করতে পারলো না এই আকস্মিক বিস্ফোরণ কেনো ঘটলো। রেড এলার্ট জারি করা হলো দেশব্যাপি- সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা বেষ্ঠনী তৈরি করা হলো- বিভাগীয় সমস্ত শহরের সেনাবাহিনীর কর্ডন প্রস্তুত হয়ে থাকলো-
সার্বিক যুদ্ধাবস্থার ভেতরে গুজবের নগরীতে নানা রকম গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে- কেউ বলছে এটা আল কায়েদার আক্রমন- কেউ বলছে এটা স্যাটেলাইট থেকে লেসার মেরে ধ্বংস করা হয়েছে- এটা নির্মম হত্যাকান্ড- কেউ বলছে এটা ফ্যানাটিকদের কাজ- ইসলামপন্থী জঙ্গিদের বিষয়ে বারংবার সাবধান করে দেওয়ার পরেও সরকার শুনে নি- এটা সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা- টিভি চ্যানেলগুলোর গাড়ী ঘটনাস্থলে পৌঁচেছে ঘটনা ঘটার ২ ঘন্টার ভেতরেই-
ব্ল্যাক বক্সের সন্ধান করছে মিলিটারি গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা। প্লেনের গতি ছিলো সম্ভবত ৪০০ মাইল প্রতি ঘন্টা- ২ মাইল উপর থেকে পড়তে সময় লাগবে খুব বেশী হলে মাত্র ২ মিনিটের মতো- আর এই দুই মিনিটে সম্ভবত বিস্ফোরণের জায়গা থেকে মাত্র ২০ মাইল সামনে আগাতে পারবে প্লেনটা- আমাদের প্রায় ৬০০ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে খুঁজতে হবে ধ্বংসাবশেষ- মিহির ল্যাপটপ থেকে চোখ উঠিয়ে বললো শাহেদকে।
জায়গাতো কম না- যদি মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হয় প্লেনটা তাহলো সব দিকেই ছড়িয়ে পড়বে সুতরাং আমাদের ফেনী নোয়াখালী আর কুমিল্লা তন্ন তন্ন করে খুঁজতে হবে-
ভাগ্য ভালো হলে আস্ত বিমানের কোনো টুকরা পেয়েও যেতে পারি- তবে সে আশা করা উচিত হবে না- যেটুকু পাওয়া যাবে- সেখানে পাওয়া যাবে সব নিয়ে এসে জড়ো করতে হবে কুমিল্লার সেনানিবাসের মাঠে- নির্দেশটা পেয়ে ৩৪ পদাতিক বাহিনীর সেনাদের তৎপরতা বেড়ে গেলো-
টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হলো- ঘটনা ঘটবার পরপরই রাষ্ট্রপতি বিশেষ ভাষণে দেশের জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন- আমাদের প্রিয় সেনাবাহিনী তাদের জীবন দিয়ে দেশকে রক্ষা করবে- ঢাকার আকাশে যুদ্ধ বিমান উড়ছে- রাডারগুলো সচল হয়েছে- সেনাবাহিনী বিমানবাহিনি নৌবাহিনি প্রস্তুত হয়ে বসে আছে-
বিকাল নাগাদ কিছুই ঘটলো না- ঢাকাস্থ পররাষ্ট্র দপ্তরগুলোর ফোন পাগলের মতো বেজে চললো- দেশ বিদেশের সাংবাদিকেরা যতটা দ্রুত সম্ভব ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন-
সবাই উৎকণ্ঠায় সময় কাটাচ্ছে- কিছুই ঘটছে না এটাই আরও বেশী আতংকিত করে রেখেছে সবাইকে- পরদিন দুপুরে পাওয়া গেলো ব্ল্যাকবক্সটা- টেপ থেকে বিশেষ কিছুই জানা গেলো না- ঢাকা থেকে চিটাগাং যেতে লাগে মাত্র ৪৫ মিনিট- প্লেনটা ছেড়েছিলো দুপুর ১২টায়- সে সময়ে রেকর্ড শুরু হয়েছিলো- শেষ হয়েছে এর ২০ মিনিট পরে- পাইলট মে ডে বলবার কোনো সুযোগ পায় নি- হায় আল্লাহ এটা কি ঘটছে?
এই নিয়ে জল্পনা কল্পনা চললো- সাংবাদিকেরা ভিনগ্রহের আক্রমণের রসালো কাহিনী ফাঁদতে গিয়েও ফাঁদতে পারলো না- রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সকল সংবাদমাধ্যম এবং টিভি সাংবাদিক এবং সম্পাদকদের ডেকে অনুরোধ করা হয়েছে যেনো তারা একটু রেখে ঢেকে সংবাদ ছাপান- সেনাবাহিনী প্রধানের নির্দেশ ছাড়া যেনো কোনো সংবাদ প্রকাশ করা না হয়-
তাই পরদিন সকালের পেপারে ছিলো নিহতদের জন্য শোকগাঁথা- ফ্লাইট নাম্বার ২৩১এর যাত্রীদের স্বজনদের আর্তি আর আর্তনাদের সংবাদ- প্লেনে যাত্রী ছিলেন সব মিলিয়ে মাত্র ৬৫ জন- পাইলট ক্রুসহ এই ৭০ জনের কেউই বেঁচে নেই- অবশ্য কেউ বুঝেও উঠতে পারলো না কেনো এই হত্যাকান্ড ঘটানো হলো- কারা ছিলো এই ঘটনার নেপথ্যে-
যাত্রীদের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের পুলিশ রেকর্ড চেক করা হলো- তাদের বেশির ভাগই ব্যবসায়ী- তবে ব্যবসায়িক স্বার্থে কেউ একজনকে হত্যা করতে চেয়ে পুরো প্লেনটাই ধ্বংস করেছে এমন উদ্ভট জল্পনার সাহসও পেলো না কেউ- সব মিলিয়ে মাত্র ৪ জনের নাম পাওয়া গেলো পুলিশের খাতায়- তবে তাদের কেউই বিস্ফোরক আইনে কখনই গ্রেফতার হয় নি-
খোঁজ নিয়ে জানা গেলো এদের ভেতরে দু জন ছিলো ঢাকা পলিটেকনিকের প্রাক্তন ছাত্র- সেখানে ইসলামী জঙ্গীদের বসবাস- তাদের সাম্ভাব্য দোষী ধরে নিয়ে প্লেনের ধ্বংসাবশেষে খোঁজা হলো লিফলেট-
কিছুই পাওয়া গেলো না- ঘটনা ঘটবার এক সপ্তাহের মাথায় পুলিশ আর সেনাবাহিনীর বিশেষ সংস্থা ছাড়া এই ঘটনাকে নিছক একটা অব্যখ্যাত দুর্ঘটনা ভেবে নিয়ে সবাই নিজের মতো জীবন যাপন শুরু করলো-
বাংলাদেশের কোথাও আর কোনো সন্ত্রাসী হামলা ঘটে নি- ভারত এবং পাকিস্তানের আভ্যন্তরীন কোনো জঙ্গী সংস্থার রিক্রুট এ কাজ করেছে এমন অভিযোগে মুখর থাকলো বিশেষ দুটি রাজনৈতিক দলের সমর্থক দৈনিকের পাতা- সম্পাদকীয়তে এবং চিঠিপত্র বিভাগে নানাবিধ জল্পনার সংবাদও এক সময় মিলিয়ে গেলো-
এফবিআইয়ের বিশেষজ্ঞ দল প্লেনের টুকরো টুকরো জুড়ে বিস্ফোরণের জায়গাটা বের করলো- খুবই অবাক হলো তারা- বিস্ফোরণ ঘটেছে কেবিন লাগেজের ওখানে- সাধারণত সেখানে কোনো বিস্ফোরক স্থাপন করা সম্ভব না-
বিমানবন্দরের কড়া নজরদারির ভেতরে একটা জ্যান্ত বোমা কেউ ওখানে রাখতে পারবে এমনটাও বিশ্বাসযোগ্য না- তাই প্লেনের ক্লিনার আর লাগেজ এটেনডেন্টকে আটক করে গেরা করা হলো- আসন বিন্যাস থেকে জানা গেলো সেই আসনের আশেপাশে সিট ছিলো আদনান কবির , হাবিবুর রহমান আর জুবায়েদুল আলমের- এ ছাড়া আর কেউ সেই কেবিনে লাগেজ রাখলে সেটা নিয়ে কিছু বলা যাবে না- তবে সাধারণত এই ৩ সীটের যাত্রীরাই সাধারণত সংলগ্ন কেবিনে লাগেজ রাখে-
আদনান কবিরের স্ত্রী বাবা এবং মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো- হাবিবুর রহমান ঢাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী- হঠাৎ করেই তার উত্থান- সন্দেহের তালিকার উপরেই থাকলো তার নাম- তার ব্যবসায়িক শত্রুদের তালাশ করা হলো-
যতভাবে সম্ভব বিচার বিশ্লেষণ করে ঘটনার কোনো হদিশ করা গেলো না-অবশেষে এই তদন্ত স্থগিত রেখেই চলে গেলো বিশেষজ্ঞ দল।
এই ঘটনার ৩ মাস পরে সিয়াটলের আকাশে রহস্যময় ভাবে বিস্ফোরিত হলো আরও একটা প্লেন-
মন্তব্য
- লন এইবার হালুয়া। চট্টগ্রাম থাইকা ডাইরেক্ট ফ্লাইট - এক্কেবারে সিয়াটল!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কটঠিন।
তবে তিন যাত্রির একজনের নামের সংগে এক বন্ধুর নাম হুবহু মিলে যাওয়ায় একটু চিন্তাযুক্ত হলাম। বিশেষ কোন ব্যাংকের উপর ক্ষ্যাপা নাকি ?
এক বসায় শেষ করেন মিয়া। বেহুদা ঝুলাইয়া রাখলেন।
হাঁটুপানির জলদস্যু
সিয়াটলবাসীরা সাবধান! আকাশের দিকে চোখ রাখুন।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
সিরিয়াস ডরাইছিলাম।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
আপনে কন ডরাইছিলেন ? আমি তো প্রথম প্যারাটা পইড়া বিডিনিউজ খুইলা বসছি। ভাবলাম না জানি কি মিস করসি !!! হ্যায় যে আসলেই গল্প লিখসে এটা প্রথমে মাথায় আসে নাই। ভাবসি কাউরে মনে হয় ধোলাই দিবে।
- হ, কোনো আগামাথা বুঝোন যায় না হের লেখার। হালায় পুরা ফাউল একটা!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমিও!
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
আমার কিছু কওনের নাই। জটিল
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
গল্প শেষ করেন মিয়া, মাথামুথা আউলাইয়া গেল গা !
- খেকশিয়াল
অফটপিকঃ
খাইছে! খেঁকশিয়াল!!!
কেউ আমারে বাঁচান!
---------------
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা
গতকাল অফলাইনে পড়তে গিয়ে চমকে উঠেছিলাম ।
পরের পর্ব আসবে?
এখানে কিন্তু কোনো প্লেনে বিস্ফোরণ হয়নি। তবে একবার একজন প্লেন হাইজ্যাক করে মুক্তিপণ নিয়ে আবার সেই প্লেনে চড়েই পালিয়ে গিয়েছিল, তাকে আর ধরাও যায়নি।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ভাই জলদি করেন পরের পর্ব। আর সহ্য হচ্ছে না।
পুরা পাংখা।
ভাল লাগছে।
---------------
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা
পানিতে ঝাঁপাইয়া পড়বার পরের অবস্থাতে আছি এখন- বুঝতেছি না কি হইতেছে- কি হইবো তাও বুঝতেছি না-
-------------------------------------------------------
বাংলায় হাগি, মুতি, বাঁচি
------------------------------------
আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।
নতুন মন্তব্য করুন