বিস্ফোরণ ০৪

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: সোম, ২৪/০৩/২০০৮ - ৮:৪২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মিহির যেমন আশা করেছিলো তেমন হয় নি ঘটনাটা। অনেক আশা নিয়ে গেলেও অফিসিয়াল সিক্রেসী বলবত রাখতে তাকে ক্যামিকেল এনালাইসিসের রিপোর্ট দেখতে দেওয়া হয় নি। মেজর শাহেদ বলেছিলো সকালে গিয়ে সব জানতে পারবে- মেজর শাহেদের হাতে সাদা খাম দেখে আনন্দিত হয়েছিলো মিহির, সকালের প্রাপ্তি এই আনন্দটুকুই।
সেখানে সুন্দর ছাপানো অক্ষরে লেখা আছে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য তদন্তের স্বার্থে বেসামরিক ব্যক্তিকে দেওয়া সম্ভব না। যদি আপনার নিকটে তদন্তে সহায়ক কোনো তথ্য থাকে অনুগ্রহপূর্বক আমাদের জনসংযোগ কর্মকর্তাকে জানাবেন।
আপনার অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
মিহির অবশ্য আশা করেছিলো ভিন্ন রকম, অন্তত এমন বিশাল মাপের প্রাণহানী এবং সম্পদহানীর ঘটনাতে সে প্রথম থেকেই অন্তর্ভুক্ত , সেখানে এমন বেসামরিক ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে সে এমন ধারণাই ছিলো না তার। তবে এটাই বাস্তবতা- এবং এখানে এই সামরিক সদস্য কিংবা তদন্ত কমিটির সদস্য না হওয়ার কারণে গোপণে তথ্য অনুসন্ধান কিংবা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা হয়তো তকে দুস্কৃতিকারি পর্যায়ভুক্ত করবে।অবশ্য মিহির যুক্তরাষ্ট্রের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটির জনসংযোগ কর্মকর্তার কাছেই ইমেইল করেছিলো। তার উৎসাহের কারণ বর্ণনা করেছিলো- আশা করেছিলো তার এই আগ্রহের যথাযোগ্য মূল্য পাবে সেখান থেকে- তেমনটা ঘটবে না সকালের ঘটনা থেকেই এটা আঁচ করতে পেরেছে।

এত রাখঢাকের প্রয়োজনীয়তা কি? যতবেশী ঢাকা হবে তত বেশী সন্দেহ জন্মাবে- তত বেশী রহস্য ঘনীভুত হবে এবং বাতাসে গুজব রটবে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটা বড় কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না- সেখানে এমনও কিছু মানুষ আছে যারা এখানে সংঘটিত প্রতিটা হামলার জন্য সিআইএ কিংবা পেন্টাগন দায়ী এমনটা ধারণা করে।
এবং খুঁজে এমন প্রমাণও তারা উপস্থাপন করে থাকে- আপাতত সেদিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। অপেক্ষা করতে হবে কখন তারা কোন আপডেট দেয়। সাংবাদিকেরা নানা মানুষের সাথে কথা বলবে এবং নানা রকম রিপোর্ট আর এনালাইসিস করবে- সেটাতে লক্ষ্য রাখতে হবে- অবশ্য সেখানের তদন্তে অনেক পক্ষই জড়িয়ে পড়েছে, বাংলাদেশে তেমন কেউই আপাতত জড়িত নেই- বাংলাদেশের মানুষেরা খুবই নিস্পৃহ- এত প্রাণহানী ঘটলো অথচ তেমন প্রতিক্রিয়া হলো না।

বিমানদুর্ঘটনার দায় কেউ নিবে না এটা সত্য- সামান্য দুঃখপ্রকাশ করে যখন বিমানবহরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বললেন, এই প্রাণহানী আমাদের ব্যথিত করেছে- আমাদের নিয়মিত বিমানের শিডিউল ঠিক রাখতে আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে- তবে যাত্রীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই আশা করছি এই দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ আমরা শীঘ্রই জানতে পারব।

অনেকটা সময় চলে গেছে- বিমান কর্মকর্তাদের কেউই আর সামনে আসেন নি। নতুন বিমান যুক্ত হয়েছে তাদের বহরে আর দুর্ঘটনার ক্ষতিপুরণ পায় নি কেউই। আসলেই আমাদের মানুষের ভেতরে এ সংক্রান্ত বোধ কম-

আমেরিক্যান এয়ারের প্রধান দফতরে পাশে অবস্থান নিয়েছেন দুর্ঘটনায় নিহত মানুষদের স্বজনেরা। তারা দ্রুত তদন্ত রিপোর্টের প্রকাশ চাইছে- তাদের কেউ কেউ সন্দেহ করছে এতে বিমানদুর্ঘটনার মূল কারণ কিংবা মূল আলামত সরিয়ে ফেলবার চক্রান্ত করছে সরকার।
সরকার অবশ্য এ আশংকা নাকচ করেছে-

বাংলাদেশের বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্টের সমাপ্তি কি হবে এটা আঁচ করতে পারছে মিহির।

[আপাতত মনে হচ্ছে বিস্ফোরণ যেমনটা প্রত্যাশা তৈরি করেছিলো তেমনটা মিটাতে পারছে না। হয়তো সবাই একটা মাসুদ রানার অনুলিখন চাইছিলো, কিংবা জজমাট রহস্য- তবে দুঃখজনক সত্য হলো রহস্যের তুলনায় আমার কাছে টেকনিক্যাল রিপোর্ট আর এ সম্পর্কিত নানাবিধ জল্পনাটাই প্রধান ইস্যু ছিলো- অহেতুক টেকনিক্যাল ডিটেইলসে গেলে এরপরে আরও আগ্রহ কমে যাবে- আজকেই এটা সমাপ্ত হয়ে যাবে- টেকনিক্যাল ডিটেইলস আর জল্পনার ডালপালা ছড়ানোর লোভ বাদ,]


মন্তব্য

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- প্রথম তিনটা জম্পেশ হয়েছে, এটা অনুরুপ না হলেও কাছাকাছি। মাসুদ রানার জন্য আনোয়ার সাহেবতো আছেনই, বিস্ফোরণটা আপনার মতোই চলুক।

পরের পর্বের প্রত্যাশায়।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পরের পর্বের অপেক্ষায়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।