(একটাই দুঃখ, সাথে একটা ভালো ক্যামেরা ছিলোনা। সেই ২০০৫ সালে কেনা একটা Samsung i5 অটো দিয়েই ছবি তুলেছি। ক্যামেরাটা তার উপর নষ্ট ছিলো, ভালো ছবি উঠছিলোনা। আফসোস।)
সোমালিয়ার সিকিউরিটি ফেজ-৪ থাকায় অধিকাংশ সংস্থাগুলো বিদেশী কর্মীদের ৬ সপ্তাহ পর পর ৭ দিনের একটা পেইড ছুটি আরও কিছু খরচ দেয় বিদেশের কোথাও ঘুরে আসতে। পলিসির ভাষায় একে বলে রেষ্ট এন্ড রিকিউপিরেশন বা সংক্ষেপে আরএন্ডআর। ২০০৯এর নভেম ...(একটাই দুঃখ, সাথে একটা ভালো ক্যামেরা ছিলোনা। সেই ২০০৫ সালে কেনা একটা Samsung i5 অটো দিয়েই ছবি তুলেছি। ক্যামেরাটা তার উপর নষ্ট ছিলো, ভালো ছবি উঠছিলোনা। আফসোস।)
সোমালিয়ার সিকিউরিটি ফেজ-৪ থাকায় অধিকাংশ সংস্থাগুলো বিদেশী কর্মীদের ৬ সপ্তাহ পর পর ৭ দিনের একটা পেইড ছুটি আরও কিছু খরচ দেয় বিদেশের কোথাও ঘুরে আসতে। পলিসির ভাষায় একে বলে রেষ্ট এন্ড রিকিউপিরেশন বা সংক্ষেপে আরএন্ডআর। ২০০৯এর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি আমার আরএন্ডআর ডিউ হয়েছিলো কিন্তু চার বাংলাদেশি সোমালি জলদস্যুদের হাতে কিডন্যাপড হওয়াতে যেতে কয়েকদিন দেরি হয়ে গেলো। গন্তব্য বিগ ফাইভ খ্যাত কেনিয়ার মাসাই মারা। এই বিগ ফাইভ হলো বাফেলো, এলিফ্যান্ট, লায়ন, লিওপার্ড ও রাইনো। প্রাণীবান্ধবদের স্বপ্ন একটাবার সেখানে যাওয়ার। পৃথিবীর সবথেকে আকর্ষণীয় প্রাণীবিচরণক্ষেত্র। মাসাই মারা হচ্ছে কেনিয়া আর তানজানিয়ার বিরাট একটা বড় ভূখন্ডের কেনিয়ান অংশ। এর তানজানিয়ার অংশ সেরেনগাতি নাতে পরিচিত। প্রতিবছর অগাষ্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে পর্যন্ত এ্যানিমাল মাইগ্রেশন হয়। লাখে লাখে প্রাণী মাসাই মারা থেকে সেরেনগাতির দিকে ছুটে চলে। এ্যানিমাল প্লানেট এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলের নিয়মিত দর্শকরা অবশ্যই টেলিভিশনে এই এ্যানিমাল মাইগ্রেশন দেখে থাকবেন। মাসাই মারা মানে হচ্ছে মাসাই গ্রাম। মাসাই কেনিয়ার একটা আদিবাসী গোষ্টী।
আমার বৃটিশ-বাঙালি বন্ধু কাম বস আমার জন্যে আগে থেকেই রিজার্ভেশন দিয়ে রেখেছে তার ক্রেডিট কার্ড থেকে এ্যাডভান্স পেমেন্ট করে। ঠিক হলো আমি অফিসের গেষ্ট হাউজে না উঠে বন্ধুর বাসাতেই উঠবো। বন্ধু একা থাকে এখানে। মা, ভাই-বোনেরা গ্লাসগো এবং লন্ডনে থাকে। বন্ধুর লন্ডনে একটা বাড়ি আছে যেখানে আপাততঃ তার সাবেক স্ত্রী বিনা ভাড়ায় থাকে। যাহোক, নাইরোবিতে বন্ধুর বাসাটা অত্যন্ত সুন্দর এবং বলাই বাহুল্য ভাড়া বেশ চড়া। নাইরোবির অভিজাত স্প্রিং ভ্যালী এলাকায় বাসা। বাসার একদিকে পাহাড়ের ঢাল আর তিনপাশের প্রতিবেশিরা যথাক্রমে কেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট, সোমালিয়ার সাবেক মৃত প্রেসিডেন্টের পরিবার এবং কেনিয়ার বর্তমান অর্থমন্ত্রী। বোঝেন ঠ্যালা। এছাড়া বন্ধু নিজে রেঁধে খায়, অসাধারণ তার রান্নার দক্ষতা। একটু অপ্রাসঙ্গিক হলেও এটুকু বলার লোভ সামলতে পারলামনা।
তিনদিনের একটা প্যাকেজ নেওয়া হয়েছে "লেটস গো সাফারি" ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস থেকে। তিনদিন আর দুই রাত। মোট চার্জ হবে ৮০০ ডলার থেকে কিছু বেশি। সবকিছুই এর মধ্যে। আমরা যদি দলে দুজন হতাম তবে প্রত্যেকের চার্জ ৫০০ ডলার থেকেও কম হতো। আমাকে একটা ডাবল বেড রুমের চার্জ দিতে হলো কারণ ওদের কোনও সিংগল রুম নেই। তিনজন হলে খরচ আরও কমতো; আর চারজন হলে আরও। স্পটে যাওয়ার পর প্রতিদিনের জন্যে ২০ ডলার করে ট্যাক্স দিতে হবে সরকারকে। প্যাকেজের বাইরে অন্য কিছু চাইলে তার জন্যে আলাদা ফিস; যেমন বার্ড ওয়াচ, বেলুন সাফারি, মদ, মাসাজ, ইত্যাদি।
খুব ভোরে রওনা করলাম উইলসন এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে মাসাই মারা যাওয়ার প্লেন ছাড়বে। যথাসময়ের আগেই গিয়ে পৌঁছলাম। তখনও চেক-ইন শুরু হয়নি। সিকিউরিটি চেক করে ভিতরে ঢুকে বসলাম। উইলসন এয়ারপোর্ট কেনিয়ার অভ্যন্তরীন ফ্লাইটের জন্যে। অত্যন্ত ছোট একটা এয়ারপোর্ট বিল্ডিং তবে প্লেনের আনাগোনা বেশ। বেশ বড় একটা অংশ মালবাহি এবং কাট (এটা সম্পর্কে বিস্তারিত অন্যদিন লিখবো) পরিবহনের বিমান। খুব সকালে দৌড় দিয়েছি, নাস্তা করতে পারিনি। আর তারপর যদি বিড়িও না টানা যায়। সিকিউরিটিকে বলে বেরোলাম। বিড়ি টানলাম দুটো। আবার ভিতরে ঢুকে দোতলায় নাস্তা করে আবার বিড়ি টানতে বেরোলাম। কিছুক্ষণ পর চেক ইন শুরু হলো। বোর্ডিং পাস নিয়ে আবারও অপেক্ষা, তারপর ডাক আসলো। ফ্রি সিটিং এ্যারেঞ্জমেন্ট। ঠেলাঠেলি করে উঠছে সবাই, পছন্দের উইন্ডো বা আইলের সিট দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে যেনো। আমি পেলাম মাঝের একটা সিট। এ্যানাউন্সমেন্টের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হলো যে প্লেনটা তিন জায়গায় থামবে। যারা মারা সেরেনা হোটেলে থাকবে, তারা তৃতীয় স্টপেজে নামবে। আমিও সেই দলে। তৃতীয় ষ্টপেজে নামতেই দেখি বেশ কতকগুলো ছোট্ট ছোট্ট সেসনা দাড়িয়ে আছে। প্লেনের দরজায় দাড়িয়ে একজন কেনিয়ান-ইনডিয়ান পাইলট নাম ধরে ডেকে চলেছে। আমিসহ বেশ কয়েকজন সাড়া দিলাম। এর মধ্যেই বড় প্লেন থেকে আমাদের লাগেজ নামানো হলো। পাইলটরাই হাতে হাতে লাগেজ নিয়ে সেসনায় ভরতে লাগলো। এবার যাত্রা শুরু। ৫ মিনিটের ফ্লাইট। দ্বিতীয় পাইলট একজন কেনিয়ান তরুনী। সে জানালো যে আমরা খুবই লো আলটিচ্যুডে উড়বো। টেক অফের পর নেমে আসবো মাত্র ৫০০ ফিট আলটিচ্যুডে আবার ল্যান্ডিংএর আগে আবার উঠে যাবো হাইতে। টেকনিক্যাল বিষয়, তবে শুনেছি। একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে নির্দিষ্ট কৌনিক মাপে এবং নির্দিষ্ট গতিতে নামতে হয় ল্যান্ডিংএর জন্যে। প্লেন থেকে দেখছি, অদ্ভুত দৃশ্য। ঝাঁকে ঝাঁকে প্রাণী দৌড়ে চলেছে, শুয়ে বসে আছে, ইত্যাদি। ওঠা নামার মাঝেই সময় চলে গেলো। সবোর্চ্চ ১০ মিনিট। একটা মেঠো এয়ারষ্ট্রীপে নামলাম। আরও বেশ কয়েকটা সেসনা সেখানে দাঁড়িয়ে, আরও দাঁড়িয়ে অনেকগুলো সাফারি জীপ। এয়ারপোর্টের খাজনা-পাতি পরিশোধ করে জিপে চড়লাম হোটেলে যেতে। সাথে আরও কয়েকজন। আমি আর এক বিদেশীনি সিংগল। বাকি সবাই কাপল বা ফ্যামিলি।
হোটেলের নাম মারা সেরেনা। প্রিন্স আগা খানের মালিকানাধীন সেরেনা হোটেলের যে চেইন, এটা তার একটা। হোটেল দেখে তো চক্ষু চড়কগাছ। ভেবেছিলাম পাহাড়ের মাঝে আর কি থাকবে, কিছু কুঠির টাইপের রুম আর ডাইনিং। পাহাড় কেটে কেটে কি অপূর্ব কাজ! সারি বেঁধে রুমগুলো। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় যেন ছবি। সুইমিং পুল, স্পা, বার, ইন্টারনেট ক্যাফে, স্যুভেনির শপ, কি নেই। রুমগুলো তো দারুন, আরামদায়ক বেড, ছোট্ট একটা বারান্দা, হট এন্ড কোল্ড শাওয়ার।
চেক ইন করার পর ক্লার্ক বললো যে লাঞ্চের পর প্রথম ড্রাইভ। সময় বলে দিলো। রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে সোজা ডাইনিংএ। ব্যুফে লাঞ্চ সেরে রিসেপশনে দিয়ে দেখি এলাহি কান্ডকারখানা। আফটারনুন ড্রাইভ শুরু হবে তাই সবাই হাজির। তা কমপক্ষে ২০০ মানুষ তো হবেই। বাইরে সারি সারি সাফারি জিপ যাত্রা শুরু করতে তৈরী। ড্রাইভার কাম গাইডরা যাকেই সামনে পাচ্ছে তারই নাম জানতে চাইছে। তার লিষ্টের সাথে মিলে গেলেই গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবেই আমি আর গাইড জুলিয়াস পরষ্পরকে খুজে পেলাম। দেখি সেই একাকী বিদেশীনি তার গাইড খুঁজছে, আমাকে নিচুস্বরে বললো যে সে আমাদের গ্রুপে আসতে পারে কিনা। জুলিয়াসকে বললাম যে মেয়েটাকে আমাদের গ্রুপে নেয়া যায় কিনা। জুলিয়াস বিনীতভাবে অপারগতা জানিয়ে বললো যে ভিন্ন ভিন্ন ক্লায়েন্টে ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজ থাকে তাই এটা সম্ভব না। তবে জুলিয়াস দ্রুত মেয়েটার সেবায় হাজির হয়ে গেলো এবং তার গাইডকে খুঁজে দিলো। কিঞ্চিত হতাশ হলাম।
জুলিয়াস প্রথমেই কিছু সাধারণ নিয়মকানুন আর আচরণবিধি বলে দিলো। আমাদের দলে এক ইটালিয়ান কাপল। স্ত্রীর বয়স হবে ৯০র কাছাকাছি আর স্বামীর ৮০ এর নিচে না। আরেক অষ্ট্রেলিয়ান দম্পতি, দুজনেই ৪০ আর ৫০ এর মাঝামাঝি। আর হতভাগা আমি। এই আমাদের ৫ জনের দল। প্রসঙ্গতঃ বলি, কয়েকদিন আগে বিবিসির ট্রাভেল শোর টাইটেল ক্লিপে দেখলাম সেই অতিবৃদ্ধ ইটালিয়ান দম্পতিকে। তারাও কথাপ্রসঙ্গে বলছিলেন যে তারা সারাটা বছর ঘুরেই বেড়ান। পাহাড়ি পথ বেয়ে বেয়ে নেমে আসলাম সমতলে। প্রথমেই সামনে পড়লো একঝাঁক জেব্রা আর ইমপালা। তখনই প্রথম জানলাম যে জেব্রাদের গায়ের ছাপ বায়োমেট্রিক, ওয়ান পিস মেড কারিগর ডেড। কতো যে ওরা গুনে শেষ করা যায়না। আরও জানলাম মাসাই মারায় ৫ প্রজাতির হরিন দেখা যায় তবে সংখ্যায় ইমপালা সবথেকে বেশি। আরও আছে ওয়াটারবাখ, টাপির, বাকি দুটোর নাম মনে করতে পারছিনা।
জেব্রা আর ইমপালার কাছে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে আবার যাত্রা শুরু করলাম। বেশিদুর যেতে হলোনা। একটা গাছের নিচে শুয়ে সিংহমামা। প্রকান্ড আকৃতির। একটু নড়েচড়ে শুচ্ছে মামা। কোনও শোকতাপ নেই। এরই মধ্যে জুলিয়াস তার রেডিওতে খবর ছড়িয়ে দিলো। আরও একটা দুটো করে আরও গাড়ি আসতে লাগলো। গাড়িগুলো সিংহমামার খুব কাছে পজিশন নিতে লাগলো। সিংহমামা নির্বিকার।
কিছু পাখি দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম। অত্যন্ত সুন্দর পাখিগুলো। বর্ণিল পালকে যেন রোদ পিছলে যাচ্ছে। তবে সত্যি যে মালাওইর লিওন্ডে ন্যাশনাল পার্কে পাখিদের যে সমারোহ দেখেছিলাম তা ভোলার না। মাসাই মারায় অবশ্য আলাদা বার্ড সাফারি আছে যেখানে পাখিদের বৈচিত্র দেখা যায় তবে আমার সেখানে যাওয়া হয়নি।
জুলিয়াস এবার আমাদের নিয়ে চললো নদীর ধারে। কুমিরে গিজগিজ করছে ছোট্ট খাল। তেমন নড়াচড়া নেই।
জুলিয়াস আমাদের পানিপানের বিরতি দিলো। দলে বিড়িখোর আমি একা। বিড়ি টানলাম। জুলিয়াস সতর্ক করে দিলো যাতে বিড়ির ‘বাট’ ভালো করে নিভিয়ে ফেলি। নাহলে শুকনো ঘাসে আগুন লেগে এমনকি দাবানল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। জুতোর তলা দিয়ে এমন ডলা দিলাম যে ফিল্টারটাও ছিন্নভিন্ন না হওয়া পর্যন্ত থামলাম না। হঠাৎ একটা টাপির কুমিরের গায়ের উপর দিয়ে দৌড়ে খাল পার হয়ে গেলো। তার পিছনে তার বাচ্চা। বাচ্চাটা কয়েকবার পা পিছলে গেলেও কোনও কুমিরই সেটাকে কিছু বললোনা। বাচ্চাটা নিরাপদে পার হয়ে গেলো। আমরা তো ভয়ে অস্থির যদি কুমির বাচ্চাটাকে ধরে ফেলে। মনে মনে আল্লাহকে ডাকছি যেন বাচ্চাটা নিরাপদে পার হতে পারে। খালের ওপারে মা টাপিরটা ব্যাকুল চোখে দাঁড়িয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত বাচ্চাটা পার হয়ে গেলো। এমন একটা দৃশ্য কিন্তু আমাদের কারোরই ছবি নেওয়ার কথা মনে আসেনি একবারও।
এগোচ্ছি, দলে দলে জিরাফ, জেব্রা, ইমপালা আর ওয়াটারবাখ দেখতে দেখতে। বনের পাশে বিরাট একটা মাঠে একদল জিরাফ। আপন মনে হেঁটে চলছে, দাঁড়াচ্ছে, পাতা খাচ্ছে। মাঠের একপাশে গিরিখাত। খাতের পাশে দাড়ানো জিরাফগুলোকে মনে হচ্ছে যেন দিগন্তের মাঝে মাথা উঁচু করে দাড়ানো এক জীবন্ত পাহাড়।
ওয়াটারবাখ সম্পর্কে কি বলি, আমার মনে হয় দুনিয়ায় এতো শান্ত প্রাণী বোধহয় আর নেই। কি শান্ত! মায়াভরা চোখ। কোনওরকম চঞ্চলতা নেই। মুগ্ধ হয়ে ওদের দেখি। প্রাণীদের চাঞ্চল্যের মাঝে যেমন সৌন্দর্য আছে তেমনই শান্তভাবের মাঝেও সৌন্দর্য আছে। তুলনা করা কঠিন যে কোনও বেশি টানে।
এবার রেডিও মেসেজ আসলো যে চিতা দেখা যাচ্ছে, একদল। বলে রাখি, কেনিয়ায় মানুষ সাধারণতঃ বাড়ির বাইরে ইংরেজিতেই কথা বলে। সুহাইলি বা কিকুইউ কথা বাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব মানুষ যারা স্কুলের শিক্ষা পায়নি, তারা অবশ্য সুহাইলি, কিকুইউ বা অন্যান্য আদিবাসী ভাষায় কথা বলে। এখানে রেডিওতে যতো কথাবার্তা হচ্ছে তার প্রায় সবটাই ইংরেজিতে। জুলিয়াস ব্যাখ্যা করার আগেই আমরা মুল খবরটা পেয়ে যাচ্ছি। বিশাল খোলা জায়গার মাঝে একটা মাটির ডিবি। তার উপরে বসে আছে একদল চিতা। আবছা দেখতে পাচ্ছি, বেশ দুরে থাকার জন্যে। প্যাঁচপ্যাঁচে কাদা। সাবধানে গাড়ি যাবে। দেখলাম দলে দলে গাড়ি এসে জুটছে, কমপক্ষে ৫০টা। শুধু সেরেনার গাড়িই না। অন্য হোটেলের গাড়িও আছে। দুর থেকে দেখলাম একটা গাড়ি ডিবির পাশে আছে। জুলিয়াস বললো ওই গাড়িটা দুইদিন ধরে ওখানে আছে চিতার ছবি নেবে বলে। ওরা পালাক্রমে ভিডিও করে আর ঘুমায়। কোনও কিছুর দরকার হলে রেডিওতে জানিয়ে দেয়। জুলিয়াস ফোর হুইল চালু করে দিয়ে কাদা ভেঙে ছুটে চললো। মাঝে মাঝেই চাকা স্কিড করে যাচ্ছে আর জুলিয়াস দক্ষ হাতে সামলে নিচ্ছে। ডিবি থেকে একটা দূরত্বে গিয়ে জুলিয়াস দাড়ালো। আস্তে আস্তে প্রায় সবগুলে গাড়ি সেখানে পৌছে গেলো। এবার একটা অর্ধবৃত্ত করে সবগুলো গাড়ি একসাথে এগোতে লাগলো। কাছাকাছি যাওয়ার পর সবগুলো গাড়ি দাঁড়িয়ে গেলো। এরা ৫জন, মা আর চারটে বাচ্চা, একবারে দুধের শিশু না, ওরা বেশ বড় বাচ্চা। মা স্থির হয়ে বসে আছে, মাথা ঘুরিয়ে এদিক ওদিক দেখছে আর বাচ্চাগুলো গড়াগড়ি করছে কিন্তু ডিবি থেকে নামছেনা। খেলছে, একটা আরেকটার লেজ, কান কামড়ে দিচ্ছে। অদ্ভুত দৃশ্য। শিহরণ অনুভব করলাম, এতো কাছ থেকে চিতা দেখা। অসাধারণ!
আমরা দুপুরে যখন যাত্রা শুরু করেছিলাম তখন একটা রেডিও মেসেজ এসেছিলো যে একটা হাতির বাচ্চা হয়েছে। আমরা এখন সেইদিকে যাচ্ছি। রোদ পড়ে আসছে। সেকেন্ড সিটে বসা ইটালিয়ান বৃদ্ধা চোখ থেকে কালো রে-ব্যান খুলে একটা কার্টিয়ার পরলেন। আস্তে আস্তে আমরা হাতির দলের দিকে এগিয়ে চললাম। পেলাম সেই চার ঘন্টা বয়সের হাতিশিশুকে। কি যে সুন্দর তা বলে বোঝানো যাবেনা। একপা দুইপা করে হাঁটছে আবার গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে। এখনও ঠিক হাঁটার ব্যালান্স পাচ্ছেনা। ওকে ঘিরে আশেপাশে আছে আরও কয়েকটা বড় হাতি। জুলিয়াস বললো যে হাতি অত্যন্ত দলবদ্ধ প্রাণী। যখন কোনও হাতির প্রসব সময় কাছে আসে, দলের বেশ কয়েকটা মাদী হাতি চলে আসে। বাচ্চা শক্তপোক্ত না হওয়া পর্যন্ত ওরা বাচ্চাকে পাহারা দিয়ে রাখে যাতে চিতা, সিংহ, লিউপার্ড বা অন্য কোনও কার্ণিভোরাস প্রাণী এসে বাচ্চাকে খেয়ে না ফেলে। তাছাড়া সর্বভূক বেবুনগুলো বেজায় পাজি, সূযোগ পেলে ছাড়েনা।
হাতি দেখে ফিরতে ফিরতে দেখা পেলাম বিগ ফাইভের প্রথমটা, বাফেলো। রাজসিক ভাব নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। দৃষ্টি তার শান্ত কিন্তু অর্ন্তভেদী। মনে হলো ওটা আমার ভিতরটা পড়ে ফেলছে।
ফিরে আসলাম প্রথম দিনের সফর শেষে। হোটেলে ফিরেই দেখি সাজসাজ রব। বাইরে হেলিকপ্টার। কেনিয়ার সাবেক এক প্রেসিডেন্ট এসেছেন তার পার্টির নীতিনির্ধারণী মিটিং করতে। অল্প কয়েকজন সিনিয়র নেতার সাথে।
সন্ধ্যায় হোটেলের রিসেপশনের সামনে যে দুটো কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন আছে, তার একটায় বসে গেলাম। অসম্ভব চড়া বিল। তা’ও বসে গেলাম। একজন লোক ছোট্ট একটা ডেস্কে বসে বেলুন সাফারির বুকিং নিচ্ছে কিন্তু আমি আগ্রহী হলাম না। আধ ঘন্টার জন্যে প্রায় ৫০০ ডলার বিল। প্রথম দিনের ছবিগুলো বাড়িতে মেইল করলাম আর ফেসবুকে আপলোড করলাম। রাতে দেখলাম একদল মাসাইয়ের কালচারাল প্রদর্শণী। কিছুই তার বুঝলাম না। মুখ দিয়ে বিচিত্র শব্দ করে লাইন ধরে হাটতে লাগলো আবার জায়গায় জায়গায় একটু বসলো। আর শব্দ চলতে থাকলো। তারপর ডিনার করে ঘুম; খুব ভোরে উঠতে হবে। আমার রুমের ঠিক বাইরে ৫০ মিটার মতো দুরে একটা অসুস্থ বাফেলো শুয়ে ছিলো। থেকে থেকে বেচারা ফোঁস ফোঁস করে উঠছিলো। খারাপ লাগছিলো কিন্তু কিছু করার নেই।
দ্বিতীয় দিন। খুব ভোরে উঠে যাত্রা শুরু হলো। আমরা হোটেলের ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসলাম। ধু ধু প্রান্তর। অনেকক্ষণ চলার পর দেখি দুটো বেলুন যাত্রা শুরুর জন্যে তৈরী। কতো বিশাল বেলুন তা বলে বোঝানো যাবে না। বড় তো হতেই হবে। প্রায় ৫০ জন মানুষের লোড বিয়ারিং ক্ষমতা তো থাকতে হবে। এরপর পেলাম খোলা মাঠের মধ্যে এক সিংহমামাকে। রাজসিক ভঙ্গিতে মামা হেলে দুলে হেঁটে চলছে। যথারীতি অনেকগুলো গাড়ি মিলে একটা অর্ধবৃত্ত করে সিংহটাকে ঘিরে ফেলতে লাগলো। তারপর সিংহটাকে একটা বৃত্তের মধ্যে এনে ফেললো। সিংহ নির্বিকারে বৃত্তের মাঝে ঘুরতে লাগলো। এসময়েই একটা ভয়ঙ্কক কাজ করলাম। জুলিয়াসের সাথে আইকন্টাক্টের মাধ্যমে। গাড়ির পাশ থেকে যাওয়ার সময়ে হাত বুলিয়ে দিলাম সিংহমামার পিঠে। জুলিয়াস অন্যদের বললো যে যদিও এটা ঠিক হবে না তবুও কেউ স্পর্শ করতে চাইলে বডিতে হাত দিন। কোনক্রমেই যেনো লেজে হাত না লাগে। আসলে বয়স হলেও বান্দরামী যায়না। বা, ওই যে কথায় বলে, বান্দর বুড়ো হলেও গাছে চড়ে।
এসময়েই দেখি মাথার উপর দিয়ে শোঁ শোঁ করতে করতে একটু বেলুন উড়ে চললো তানজানিয়ান বর্ডারের দিকে। বেলুনারোহিরা ঝুকেঁ সিংহমামাকে দেখতে লাগলো আর হৈচৈ করতে লাগলো।
আমরা কিন্তু সেই মাঠেই আছি। গাড়িগুলো আস্তে আস্তে সরতে লাগলো। সিংহও অন্যদিকে হাঁটা ধরলো। হঠাৎ করেই মঞ্চে আবির্ভাব ঘটলো কতগুলো চিতার আর শিয়ালের। চিতা আর শিয়াল যে কতবড় পাজি তা এবার দেখা গেলো। চিতাগুলো সিংহকে ঘিরে ধরে ভেংচি কাটতে লাগলো। একটা সিংহের পিছনে গিয়ে লেজে এক কামড় বসিয়েই দে দৌড়। চার-পাঁচটা চার-পাঁচ দিকে। সিংহ একটার পিছনে দৌড়াচ্ছে এর ফাঁকে অন্য একটা চিতা সিংহের পিছনে এসে ঠ্যাংএ এক চাটি মেরে আবার দৌড়। সিংহ আবার ঘুরে সেটাকে ধাওয়া করতে লাগলো। আবার অন্য একটা পিছন থেকে লেজে এক চাঁটি মেরে দে দৌড়। এভাবে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে চিতাগুলো সিংহকে নাস্তানাবুদ বানিয়ে ছাড়লো। তবে সিংহের কপালে আরও ভোগান্তি ছিলো যদি কি না এতক্ষণ চিতাগুলো তার সাথে যা যা করেছে শিয়ালগুলো চিতার সাথে তাই না শুরু করতো। প্রায় গোটা পঞ্চাশেক শিয়াল এবার চিতাগুলোকে ঘিরে ধরলো। প্রতিটা চিতার পিছনে দশটার মতো করে শিয়াল্। ওগুলো ভেংচি কাটতে কাটতে আস্তে আস্তে চিতার গায়ে হাত দিতে শুরু করলো। তারপর চিতা শিয়ালগুলোর একটার পিছনে ধাওয়া শুরু করলো। চিতা তো শিয়াল থেকে অনেক বেশি ক্ষিপ্র। ধরে ফেললো শিয়ালকে? কিন্তু না। চিতা যখন শিয়ালকে প্রায় ধরে ফেলে ঠিক তখনই শিয়াল আচমকা মাটিতে গড়িয়ে পড়লো। চিতা তার গতি কন্ট্রোল করতে যেটুকু মুহুর্ত সময় নিলো শিয়াল তার আগেই উঠে উল্টো দিকে দৌড়। একেই বলে শিয়ালের পান্ডিত্য। চার-পাঁচটা সেটআপে একই খেলা চলতে লাগলো অনেক্ষণ আর সিংহমামা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখতে লাগলো। ওখানেই এক ঘন্টারও বেশি সময় কাটিয়ে দিলাম ভালো একটা ক্যামেরার জন্যে আফসোস করতে করতে।
এরপর দেখা হলো আরও কতগুলো বাফেলোর সাথে। শান্ত কিন্তু অন্তর্ভেদি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ওদের পিঠে, আশেপাশে কতগুলো সাদা বক।
আমাদের জন্যে বাইরে ব্রেকফার্ষ্টের আয়োজন ছিলো। এর নাম হিপ্পো পুল ব্রেকফাষ্ট। একটা নদীর পাড়ে যেতেই একদল মাসাই তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে, হাতে বল্লম নয়ে এগিয়ে এসে আমাদের স্বাগত জানালো। নদীর পাড়ে সারি সারি চেয়ার টেবিল বিছানো আর ঝোপের পাশে পায়ে হাটা রাস্তা আর রাস্তার পাশে ব্যুফে টেবিলগুলো একটার পর একটা। এখানে কর্তব্যরত সবাই মাসাই পোশাকে সজ্জিত। আমাদের শ্যাম্পেন দিয়ে অভ্যার্থনা করা হলো। মাথায় জিলবাব পরা এক ইনডিয়ান নারী অবলীলায় শ্যাম্পেনের গ্লাস নিয়ে চুকচুক করে খেতে লাগলো। আমি এ্যালকোহল সেবনে আমার আপত্তি জানানোর পর বারটেন্ডার বিগলিত হাসি দিয়ে আমাকে আশ্বস্ত করলো যে তারা ‘হালাল শ্যাম্পেন’ সার্ভ করবে। ওখানে শিশুদের জন্যে আলাদা লাইন। আমি সেই লাইনের সবশেষে দাঁড়ালাম। তারপর দিলে সেই তথাকথিত হালাল শ্যাম্পেন। দারুন মজা। ওটা আসলে স্পার্কলিং গ্র্যাপস জ্যুস। নাস্তা করে পুলের পাশে দাঁড়িয়ে বিড়ি টানতে টানতে দুরের একটা হিপ্পোকে দেখতে লাগলাম।
একজন মাসাই এসে হিপ্পো সম্পর্কে জ্যানদান করতে লাগলো যদিও তার দেওয়া তথ্য হিপ্পো সম্পর্কে আমার শোনা জ্ঞ্যানের থেকে একটু ভিন্ন। এখানে দেখলাম পোর্টেবল টয়লেট আছে। হাগু-পিসু, সব মাইনাসেরই ব্যবস্থা আছে। সবকিছুই অর্গানাইজড। এর মধ্যেই হঠাৎ করে একঝাক বেজির মতো প্রাণী বেরিয়ে আসলো কিচি কিচ করতে করতে। দেখতে আমাদের দেশীয় বেজি এবং বিড়ালের মাঝামাঝি তবে আকারে বেশ বড়।
ব্রেকফার্ষ্ট সেরে হোটেলে ফিরলাম। হোটেলের পাশে ঝোপে আবার একটা বেজি দেখলাম। এটা অবশ্য আমাদের দেশের বেজির মতো।
বিকেলে বেরিয়ে প্রথমে চিতা দেখতে গেলাম। গাছের ছায়ায় শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। সম্ভবতঃ খেয়ে উঠেছে।
এবার খবর পেলাম ঘুমন্ত সিংহমামার। কাছে যেতে দেখি মামা আড়মোড়া ভেঙে উঠলেন, পানি পান করলেন, মাইনাস করলেন, তারপর আবার ঘুমোতে চলে গেলেন।
ওখান থেকে বেরিয়ে চললাম গন্ডারদর্শনে। কিন্তু গন্ডারের আর দেখা নেই। পথে হাতির ধাওয়া খেলাম। এই দলেও একটা ৩-৪ দিনের নবজাতক আছে। গাড়ি বেশি কাছে চলে গিয়েছিলো। পালের থেকে একটা হাতি বেরিয়ে এসে শুঁড় উচু করে আমাদের হালকা ধাওয়া করে ভাগিয়ে দিলো। তারপর দেখতে পেলাম গন্ডার তবে বেশ দূর থেকে। একজোড়া গন্ডার, জোড়ের সহোদর। একটা মাদী আর একটা মর্দা। আমি হেঁটে কাছে যেতে চাইলেও অনুমতি পেলাম না। তাই দুর থেকে দেখেই সন্তষ্ট থাকতে হলো।
হোটেলে ফেরার পথে একটা বনবিড়াল দেখলাম। ঘাসের মধ্যে চুপচাপ বসে আছে। কি ধান্ধা আছে ওর মনে, তা কে জানে!
রাতে হোটেলে হালকা গানের আসর। একজনই শিল্পী, স্থানীয় এক তরুন। গলাটা ভালোই কিন্তু গিটারে হাত তেমন না, শুধু সাধারণ মেজর-মাইনর কর্ডস ধরে গান করছে। তাতেই চলে যায়। রাতে ডিনার পায়, সাথে দু’টো বিয়ার আর অতিসামান্য কয়েকটা টাকা। এই হচ্ছে পারিশ্রমিক। আমি আসর শেষে ওর সাথে দু’একটা কথা বললাম। ছেলেটা দুরের কোনও এক শহরে কলেজে পড়ে। ছুটির সময়ে এসে গান করে কিছু রোজগার করে নিয়ে যায়। এতে ওর পড়া চালিয়ে যেতে সুবিধা হয়। আমি আমার ওয়ালেটে রাখা একটা অরিজিনাল ‘ফেন্ডার’ গিটার পিক ওকে গিফট দিলাম। কৃতজ্ঞতার ওর চোখ চিকচিক করে উঠলো।
এসে পড়লাম শেষ দিনে। আজ দলে যোগ হয়েছে একজোড়া কেনিয়ান তরুন-তরুনী তবে ওরা দম্পতি না। হোটেল থেকে বেরোতেই দেখি সামনে বেশ কয়েকটা সিংহ বসে আছে।
ওদের পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে যেতে বাইরে থেকে হোটেলের ছবি নিলাম। সারি সারি স্যুটগুলোকে বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় বাচ্চাদের খেলনা রেলগাড়ির মতো।
আজ জুলিয়াস প্রথমেই নিয়ে চললো সুউচ্চ একটা মালভূমির মতো জায়গায়। পাহাড় বেয়ে অনেক উচুতে ওঠার পর বিস্তির্ণ সমভূমি। গাড়ি থেকে নেমে একটু হাঁটাহাটি করলাম। সাধারণ প্রায় সব হরিণপ্রজাতির প্রাণীই এখানে আছে। একটা বুড়ো টাপিরের ছবি নিলাম। কেমন সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছে। এখানে দাঁড়ালে মাসাই মারার একটা বিরাট অংশ দেখা যায়।
ওখান থেকে আস্তে আস্তে নামতে থাকলাম সমতলের দিকে। তারপর এগোতে লাগলাম লিওপার্ডের খোঁজে। পথে একটা ঈগল আর দুটো শকুন চোখে পড়লো।
এখানে চলতে পথে প্রায়ই পানির ধারা বা কর্দমাক্ত জায়গা পেরোতে হয়। এরকম একটা জায়গায় এসে ফেঁসে গেলাম। গাড়ি আটকে গেলো। অনেক চেষ্টায় ফল হচ্ছিলো না বরং গাড়ি আরও ডেবে যাচ্ছিলো। জুলিয়াস কল করে রেঞ্জারকে আসতে বললো কারণ যে কোনও মুহুর্তে বন্যপ্রাণী আক্রমন করে বসতে পারে। রেঞ্জার এসে রাইফেল লোড করে বসে থাকলো। এরপর আমি আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগালাম। হাইলিফট জ্যাক লাগিয়ে বুড়ো-বুড়ি ছাড়া সবাইকে বললাম চাকার নিচে পাথর ঢুকাতে। আর বললাম কেউ যেনো জ্যাকের সরাসরি সামনে না যায়। গাড়ির আড়ালে যায়। কারণ ওই জ্যাক যদি একবার ছুটে যায়, সামনে যা পড়বে তা একদম টুকরো টুকরো করে দেবে। ইতালিয়ান বৃদ্ধা যেহেতু গাড়ির ভিতরেই বসে ছিলেন, তাকে বলা হলো কোনওরকম নড়াচড়া না করতে। এভাবে প্রায় দুই ঘন্টা আটকে থাকার পর মুক্তি পেলাম। চললাম হোটেলের পথে।
পথে যেতে যেতে টেলিভিশনের মাধ্যমে চিরচেনা সেই ইমপালার লড়াই চোখে পড়লো। শুধু দেখা হলোনা একটাও লিওপার্ড।
সারা গায়ে কাদায় মাখামাখি। হোটেলে ফিরে ব্রেকফার্ষ্ট করলাম। বিশ্রাম নিয়ে আশেপাশে হাটাহাটি করে তারপর লাঞ্চ। লাঞ্চের পর আরেকটু জিরিয়ে নিয়ে তারপর বিদায়। ছোট্ট প্লেন কয়েকটা হোটেলের এয়ারষ্ট্রীপ থেকে যাত্রী কুড়িয়ে নিয়ে সোজা চলে আসলো নাইরোবিতে। ফিরে চললাম সারাজীবন বয়ে চলার মতো কিছু সুখস্মৃতি সাথে নিয়ে।
মন্তব্য
দারুণ লাগলো ভাই। সৃষ্টিকর্তা এত সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন এইসব, সামনে থেকে দেখতে এরা না জানি আরো কত সুন্দর!
আসলেই ছবির দেখা আর সামনাসামনি দেখার মধ্যে বিস্তর ফারাক। ছবিতে দেখলে ঠিক রোমাঞ্চটা আসল মাত্রায় উপভোগ করা যায়না। আপনাকে ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দারুন !
আপনাকে ধন্যবাদ পড়াচোর।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বর্ণনা খুউউউউউউউউউউব ভালো লাগল।
অনেক ধন্যবাদ।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপাতত শুধু ছবিগুলোই দেখলাম। দারুণ লাগলো। বিশেষ করে ইমপালার লড়াই আর সিংহের পানি খাওয়ার ছবি। ভাবছি, আমরা তো শুধু ছবিতে দেখছি...আর আপনি দেখেছেন সামনা সামনি...নিশ্চয়ই অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়েছে আপনার।
ধন্যবাদ বইখাতা। এই অভিজ্ঞতাকে অসাধারণ বলে বিশেষায়িত করলেও মনে হয় একটু কম করা হচ্ছে। বর্ণনা করা আসলে সম্ভব না।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দারুণ অভিজ্ঞতা! এমনটা কয়জনের হয়!
মন খারাপ হল ছবির কোয়ালিটি দেখে। আসলেই একটা ভাল ক্যামেরার দরকার ছিল।
ফাহিম হাসান
এ আফসোস থেকেই যাবে। সেই তাড়না থেকেই ডিএসএলআর কেনা। আপনাকে ধন্যবাদ ফাহিম ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
চমৎকার বর্ণনা এবং ছবি।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
ধন্যবাদ রেজওয়ান ভাই। আপনার ছবির হাত কিন্তু জটিল!
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ দুর্দান্ত ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ভাইরে, ইতা কি দেখাইলেন!? আমি কবে যামু! (
বর্ণনাও ব্যাপক হইছে।
যেতে চাইলেইতো হয় ............ সুযোগ পেলে ছাড়বেন না। পরামর্শের জন্যে আমি আছি। ধন্যবাদ আপনাকে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আরিব্বাস! সব পাখি আর জন্তুগুলোর নাম কেউ বলে দিতে পারেন্না? পিপিদা?
পাখির নামে আমি অজ্ঞ কৌস্তভ ভাই। পিপি ভাই অবশ্য হেল্প করতে পারেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বক-জাতীয় পাখিতে আমি একটু কাঁচা রে ভাই তবে খুঁজলে হয়তো কয়েকটার নাম বের করা যাবে। সে সময়টুকু এখন যে নাই
এত সুন্দর পৃথিবী...!!!
tofayel71@gmail.com
পৃথিবী আসলেই খুব সুন্দর। দেখার চোখে দেখলে সবই সুন্দর। পড়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ তোফায়েল ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আসলেই লাইফ টাইম এক্সপিরিয়েন্স। ইস, কবে যে যেতে পারবো?
আপনাকে হিংসা হচ্ছে খুব। তবে হ্যাঁ, একটা ভালো ক্যামেরা থাকাটা দরকারী-ই ছিল কিন্তু ব্যাপার না নিশ্চয়ই কেননা মনের ক্যামেরাই তো আসল ক্যামেরা। আপনি যা দেখেছেন তাতো সারাজীবনে ভুলবেন না সেটা।
অফটপিক: এনিমেল মাইগ্রেশন নিয়ে দুদিন আগেই একটা লেখা পড়লাম, তাঞ্জিনিয়ান সরকার একটা হাইওয়ে করতে চাচ্ছে যেটা এনিমেল মাইগ্রেশন রুটের উপর দিয়ে যাবে। সেটা নিয়ে সেখানকার পরিবেশবাদীরা বেশ সোচ্চার কেননা তাতে এই বিশাল সংখ্যক প্রাণীর উপরে যে ইম্প্যাক্ট পরবে তা অচিন্তনীয়। এজন্য তারা বিকল্প কিন্তু অনেক দীর্ঘ একটা রুট প্রস্তাব করেছে। এখন দেখা যাক, তাঞ্জিনিয়ান গর্ভমেন্ট কোনটা বেছে নেয়, অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা নাকি তাদের বিখ্যাত ওয়াইল্ড লাইফ।
_________________________________________________
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
ধন্যবাদ পাগল ভাই। মনের চোখে তো না হয় আমি ধরে রাখলাম কিন্তু যারা ওখানে যায়নি তাদের দেখানোর জন্যে তো ভালো ক্যামেরা দরকারী ছিলো।
সেরেনগাতি হচ্ছে তানজানিয়ার একটা অন্যতম আয়ের মাধ্যম। মাসাই মারা থেকেও সেরেনগাতি বিশ্বে বেশি জনপ্রিয়। আশাকরি সরকার হেরিটেজ ঠিক রেখেই যা করার করবে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনারা কোন হোটেল এ ছিলেন ? আমি ছিলাম কিকোরক হোটলে । হোটেলের পেছনের জলাশয়েই প্রায় শ খানেক জলহস্তী ছিল। আপনার ছবিগুলো ঝাপসা হওয়ায় কিছুটা হতাশ হলাম । মাসাইমারার মত জায়গায় ভাল ক্যামেরা ব্যবহার না করলে ছবি তুলে শান্তি পাওয়া যায় না। আপনি কি ওয়াইল্ড বিষ্টের মাইগ্রেশন পেয়েছিলেন ? সাধারনত নভেম্বর পর্যন্ত মাইগ্রেশন থাকে। আমি প্রায় তিন ঘন্টা বসে থেকে চিতাবাঘের শিকার দেখতে পেয়েছিলাম। ঐ অভিজ্ঞতা সত্যিই অতুলনীয়। আপনার বর্ননা চমৎকার হয়েছে।
ধন্যবাদ ভাই, আমি ছিলাম মারা সেরেনা হোটেলে। মাইগ্রেশন মিস করেছি সময়মতো যেতে পারার সুযোগ ছিলোনা, তাই। তবে যা পেয়েছি তাই তো অনেক। চিতার শিকারও অল্পের জন্যে মিস করেছি। ওই যেখানে সিংহ-চিতা এবং চিতা-শিয়াল ধাওয়া-ধাওয়ি চলছিলো ওখানেই চিতারা একটা শিকার ধরে খাচ্ছিলো।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দারুণ লাগলো! সিংহের গায়ে আবার হাতও বুলিয়ে এসেছেন, খুবই হিংসা হচ্ছে।
ধন্যবাদ দিফিও ভাই। আসলে হাত বুলানোর বিষয়টা উল্লেখ না করলেই ভালো হতো। কাজটা তো ঠিক হয়নি আসলে। বনের প্রাণীকে তার বন্য রূপে রাখাই ভালো। ওদের বিরক্ত করাটা আসলেই বেঠিক একটা কাজ। তবে ওই যে বললাম, বান্দর বুড়ো হলেও গাছে চড়ে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
রাতঃস্মরণীয় ভাই,
সাধারণতঃ মাসাইমারা'তে রাইনো দেখা যায় না। সে অর্থে আপনি খুবই লাকি, রাইনো দেখতে পেয়েছেন। আমরা পারিনি। তবে আমরা উগান্ডার গারাম্বা ন্যাশনাল পার্কে গরিলা ট্র্যাকিং করেছি, সোর্স অব নাইল দেখেছি, বুজাগালি ফলের খরস্রোতে র্যাফটিং করেছি মেরিল স্ট্রিপের ধরণে, জীবন মৃত্যুর দোলাচলে নিজেকে ঝুলিয়ে দিয়ে বানজি জাম্প করেছি, ইতুরী অরণ্যে পিগমিদের সাথে সাথে লাজুক চোখের ওকাপিও দেখেছি। নেক্সট 'আর এন্ড আরে' ওগুলো দেখে নিতে ভুলবেন না যেন, সুযোগ বারবার আসে না।
কবুল করতেই হবে, লাইফ ইজ মোর দ্যান ফিকশন এ্যাট মাসাই মারা! মারা নদীতে ওয়াইল্ড বিস্ট মাইগ্রেশন না দেখলে বুঝাই যায় না ওরা কত সংঘবদ্ধ ও নেতৃত্বের মন্ত্রে বিশ্বাসী। আমাদের মতো 'সবাই-মোড়ল' জাতির অনেক কিছুই শেখার আছে ওদের কাছে!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
রোমেল ভাই, মাথা নষ্ট করে দিয়েন না! আপনি তো ভাই গভীর আফ্রিকাচারী। লেখেন না কেনো???
আমি তো এখন আর আফ্রিকায় নেই। আমি গত সপ্তাহে পাকিস্তানে চলে এসেছি। আর সহসা আফ্রিকা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে গত পরশু সম্রাট অশোকের "তক্ষশীলা" দেখে আসলাম। ২,০০০ বছরের পুরোনো সভ্যতার নিদর্শণ। অশোকের রাজদরবারের উপর দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিলো যেন আমিই সেই অশোক। আর দেখলাম খ্রীষ্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৫০০ খৃষ্টাব্দ এই শহস্রাব্দের বৌদ্ধ পুরাকীর্তি। দু'একেই লিখবো।
ভালো থাকেন রোমেল ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
পাকিস্তানীরা 'তক্ষশীলা'কে বলে 'ট্যাক্সিলা'। ২০০২ এর ডিসেম্বরে সেখানে ছিলাম আমি! গৌতম বুদ্ধ সেখানে শুদ্ধধ্যানে শীর্ণকান্তি হয়েছিলেন। লাহোর মিউজিয়ামে ফাষ্টিং বুদ্ধের যে ভাস্কর্যটি আছে সেটি ওখান থেকেই নিয়ে যাওয়া! সেই প্রাচীন নগরীর কিছু ছবি আমার সঞ্চয়ে আছে এখনো আর আছে বুদ্ধের মিনিয়েচার আবক্ষ মূর্তি কিছু। কালোপাথরের, কষ্টিপাথরের নয়। তক্ষশীলা পেরিয়ে গিয়েছিলাম সীমান্তশহর পেশোয়ারে। চিকেন কাড়াইয়ে নানরুটি ডুবিয়ে চিবিয়েছি একে ৪৭ হাতে ধরা আফগান গেরিলার সাথে, একই চারপায়ায় বসে। তারপর তার অতিথি হয়ে গিয়েছি খাইবার পাস অবধি। সিন্ধু পারের সভ্যতা আমাকে ডেকেছে কতদিন। শুনেছি সালিমার বাগানের অলিদের গান, দেখেছি ওয়াগগা বর্ডারে পাকিস্তানী আর ভারতীয় বর্ডার গার্ডের বুকের পাটা ফোলানো প্রতিযোগিতাময় কুচকাওয়াজ। 'দিওয়ানে আম' আর 'দিওয়ানে খাস' আকবর বাদশার কাছাকাছি নিয়ে গেছে এই হরিপদ কেরানিকে যেমন, তেমনি এসেছি ফিরে, শেরে বাংলার স্বাক্ষরে, লাহোর সম্মেলনের স্মৃতিফলকের কোল ঘিরে। শুধু,
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপরে
একটি শিশির বিন্দু!
এই দেউলিয়া আত্মার লজ্জ্বা কি দিয়ে ঢাকি বলুন?
তক্ষশীলা
ওয়াগগা বর্ডার
শালিমার বাগানপেশোয়ারের পথেলাহোর মিউজিয়ামআমার দেশ-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ছবিগুলো দেখে যে কারো লোভ লাগবে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আপনাকেও ধন্যবাদ নীড় সন্ধানী।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আসেন জীবন বদল করি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বড়ই লস করবেন তাহলে হাসান ভাই। আমার জীবন অনিশ্চয়তায় ভরা। ঝুঁকির মাঝে থাকি প্রায় সবসময়। সারাক্ষণ ভয়ে থাকি এই বুঝি চাকরি যায় বা জীবন যায়। তার পরও এই জীবন আমাকে টানে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আসেন জীবন বদল করি
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ ভাই, উপরের প্রতিমন্তব্য দ্রষ্টব্য।
ইদানিং আপনাকে এতো কম দেখা যাচ্ছে কেনো ভাই?
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
রুদ্ধশ্বাসে পড়লাম! আপনাকে কিছুটা হিংসে হচ্ছে, ক্যামেরার কারনে আপনার উপর রাগও হচ্ছে, তবে সর্বোপরি আপনার কাছে কৃতজ্ঞও বোধ করছি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সাঙ্ঘাতিক!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
লেখাটা সুন্দর।।।ছবিগুলো দারুন।
ধন্যবাদ আপনাকে জলদস্যু।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দারুণ ছবি।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ অনিন্দ্য ভাই।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপ্নেরে আর হিংসাই না। আপ্নে এইসবের চল্লিশ পঞ্চাশ হাত উপ্রে আছেন।
আপ্নে হিংসাইতে পারেন!!! বিশ্বাস যায় না দাদো। পারলে তো হিংসাইবেন। হাহাহাহাহাহাহা
এমনি ভালো আছেন তো?
======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নতুন মন্তব্য করুন