আমি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাভিত্তিক সমস্যাগুলো নিয়ে পড়াশোনা করেছি এবং ৪৯’এ যখন ঢাকায় এলাম, দেখতে পেলাম ভাষার ব্যাপারটা এখানেও ঠিকঠাক মতো চলছেনা। সবাই সবার মাতৃভাষাকে ভালোবাসে, ঠিক যেমন আমি আমারটিকে ভালোবাসি। এবং ঠিক একারনেই আমি বাঙালীদের মাতৃভাষার আন্দোলনকে সমর্থন দিয়েছি।
এক স্বাক্ষাতকারে বলছিলেন ডক্টর সৈয়দ ইউসুফ হাসান, একজন উর্দূভাষী ভাষাবিদ এবং সাহিত্যিক। আজ থেকে ঠিক দুই বছর আগে ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী যাকে ভাষা আন্দোলনের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদকে ভুষিত করে আমরা তাকে যেমন সন্মানিত করেছি, ঠিক তেমনই নিজেরাও সন্মানিত হয়েছি।
ছোটবেলায় ছোট্ট একটি জেলাশহরের এক শিশু হিসেবে স্বেতবর্ণের মানুষ খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতাম। মাথায় সেভাবে আসতো না যে এরা কোনদেশের মানুষ। মনে করতাম এরা সবাই ইংরেজ বা আমেরিকান। আর কালো মানুষগুলোকে সবাইকে মনে হতো আফ্রিকান। গোল গোল চোখ করে অপলকে দেখতাম এই ধবল মানুষগুলোকে। অনেক বড় হওয়া পর্যন্ত কোনও কালোবর্ণের মানুষ দেখিনি টিভিতে রূটস-এ ছাড়া।
মনে আছে, ১৯৭৭ সালের কথা। আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো খুলনার সেই সময়কার বিখ্যাত লায়ন্স স্কুলে ভর্তি করতে, ইদানিংকালে যেটা স্কুল এবং কলেজ। তখনকার প্রথা ছিলো নবাগতকে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যাওয়া। লজ্জা মুখে চোরের মত ঢুকলাম তার কক্ষে। দুর থেকে তাকে দেখে একটু ভয়ও পেয়েছিলাম, এ তো দেখি একজন ইংরেজ! আমি এখন কিভাবে তার সাথে কথা বলবো। কিন্তু অবাক হয়ে গেলাম তার কন্ঠের নির্ভেজাল বাংলা শুনে। যদিও সেই বাংলার উচ্চারণটা একটুখানি অন্যরকম ছিলো, কিন্তু ভাষায় কোনও ঘাটতি শুনিনি। সেই তিনিই আমার পরম শ্রদ্ধেয় ডক্টর সৈয়দ ইউসুফ হাসান স্যার। স্যারকে কোনওদিন বেত হাতে নিতে হয়নি বা চপেটাঘাত করতে হয়নি। তেমনই হয়নি কোনওদিন ছাত্রের প্রতি কটুবাক্য বর্ষণ করতে। স্কুলের ছাত্রদের নামে বাইরে থেকে কোনও অভিযোগ এলে স্যারকে দেখেছি শিশুর মতো হাউমাউ করে কাঁদতে। একেক দিন একেক শ্রেণীতে হঠাৎ হঠাৎই উপস্থিত হতেন একবাক্স চকোলেট নিয়ে। এরকম অসংখ্য স্মৃতি আছে স্যারকে ঘিরে যা কখোনো ভোলার নয়। স্যার যতোদিন ছিলেন, ততোদিন শিক্ষকদের মধ্যে কোনওরকম দলাদলি ছিলোনা। সবাইকে ঠিক সময়টাতেই ক্লাসে যেতে হতো এবং যথেচ্ছ টিউশনি করার সূযোগ ছিলোনা। ম্যানেজিং কমিটি কোনওদিন স্যারের মাথার উপর ছড়ি ঘুরিয়ে স্যারকে তাদের আজ্ঞাবহ বানাতে পারেনি।
স্যারের জন্ম ৪ নভেম্বর ১৯২৬ সালে বিহারের পাটনায়। ১৯৪৯ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলাবিভাগে স্নাতোকোত্তর সনদ অর্জন করেন। এরপর সেই বছরেরই অক্টোবরে স্যার ঢাকায় চলে আসেন। স্যার লিখেছিলেন,
পাকিস্তানে বাংলা-এবং উর্দূর সহাবস্থান থাকা উচিত। এবং সিন্ধিসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠিভিত্তিক ভাষাগুলোর প্রতিও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা থাকা উচিত।
পরে প্রগতিশীল লেখক সংঘের পক্ষ থেকে তিনি লিখেছিলেন,
যদি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তবে তাদের সংঘ বাংলাকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্টভাষার দাবীতে আন্দোলনে যাবে। এটা কোনও ফাঁকা বুলি ছিলো না, বরঞ্চ এই দাবী ছিলো বৈজ্ঞানিক। কারন গোটা পাকিস্তানের মোট জনগোষ্ঠির ৫৪ শতাংশ বাংলাভাষাভাষী।
বাঙালীর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহনের কারনে তাকে ১৯৫২ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত চারদফায় মোট এক বছরেরও বেশি সময় কারাবাস করতে হয়। যদিও কোনও বারেই তার বিরুদ্ধে কিছু প্রমানিত না হওয়ায় তাকে মুক্তি দিয়ে দিতে হয়। ১৯৫২’র সেপ্টেম্বরে চিনে অনুষ্ঠিত এক শান্তি সমন্মেলনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রতিনিধিত্বকারী ৫ জনের দলে স্যার ছিলেন যে দলের নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবর রহমানের সাথে স্যারের অন্যন্ত সুসম্পর্ক ছিলো।
৭১’এ আমাদের মহান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের বিহারীদের একটা বিরাট অংশ পাকিস্তানে পাড়ি জমালেও স্যার তার আত্মীকৃত মাতৃভূমি বাংলাদেশ ছেড়ে কোথাও যাননি বা যেতে চাননি। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন না করলেও সবসময়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে সমর্থন যুগিয়েছেন। যদিও স্বাধীনতার ঠিক পরপরই একটি ট্রাকে চড়ে একদল লোক এসে তার বাড়িঘর তছনছ করে তার যথাস্বর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়। তিনি যানেন না ওরা কারা ছিলো। তিনি কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করেছেন যে একজন বিহারী হওয়া স্বত্বেও তিনি বাংলাদেশে কখোনেই কোনওরকম বৈষম্যের স্বীকার হননি, ওই একমাত্র দূর্ঘটনাটি ছাড়া। হানাদার পাকিস্তানীদের নৃসংশতায় অধিকাংশ বিহারীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতার বিষয়টিও স্যার বলেছেন।
স্যারের সাথে দেখা নেই সেই ৮০’র দশকের শুরু থেকে। সুযোগ পেলে একবার দেখা করবো তার সাথে। বয়সের ভারে নিশ্চয়ই নুয়ে পড়েছেন আমার শ্রদ্ধেয় স্যার। তার সুস্থজীবন এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
মন্তব্য
তার সুস্থজীবন এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
facebook
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
শ্রদ্ধা রইল। সুস্থ থাকুন উনি।
আপনি এটা লিখেছেন সেজন্য ধন্যবাদ নিন
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অজানা একটি বিষয় জানানোর জন্য ধন্যবাদ|
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ, একটি ব্যতিক্রমী তথ্য জানাবার জন্য।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনার একটা দ এ দীর্ঘ ঊকারপ্রীতি আছে দেখতে পাই। দূ বর্ণসমাবেশ বাংলায় কিন্তু বেশ দুর্লভ। প্রচলিত শব্দের মধ্যে কেবল "দূর" আর "দূর্বা"য় দূ বসে। বাকি সব দু।
প্রীতি-ট্রিতি কিছু না। অজ্ঞতার কারনে হয়েছে। হয়তো কোথাও কখোনো দেখেছিলাম ..................।
ধরিয়ে দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ডাকঘর | ছবিঘর
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দারুণ লেখা।
ডক্টর সৈয়দ ইউসুফ হাসানকে শ্রদ্ধা।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
চমৎকার লেখা, স্যারের জন্য শ্রদ্ধা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এই মহান ভাষা সৈনিক দীর্ঘজীবি হোন।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
শ্রদ্ধা জানাই এই মহান ভাষাসৈনিকের প্রতি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
চমৎকার!
আমিও আপনার স্যারের সুস্থজীবন এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি। কিন্তু আপনি তাঁর সাথে দেখা করতে চাইলে তাড়াতাড়ি দেখা করে ফেলুন - পরে আফসোস করার চাইতে এটাই ভাল।
****************************************
আপনি ঠিক বলেছেন। এখনই দেখা না করলে হয়তো, কে জানে, একজন বৃদ্ধ মানুষ, কখন আছেন কখন নেই। স্যারের ঠিকানা জানা নেই। তবে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় গেলে স্যারের ঠিকানা হয়তো জানা যাবে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
এরকম একটা অজানা সত্যকে এই রকম একটা অস্থির সময়ে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমাদের নতুন প্রজন্মের সাথে এই ধরণের নিভৃতচারী মানুষগুলোকে পরিচয় করিয়ে দেয়া প্রয়োজন।
স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা রইল।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দেখা করে, কথা বলে তারপর আরেকটা পোস্ট দিননা, আরো একটু জানি এই মানুষটি সম্পর্কে, এই পোস্টটি অবতরনিকা হোক। স্যারের জন্য শ্রদ্ধা আর তার ছাত্রের জন্য শুভকামনা
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অজানা তথ্য জানানোর জন্য ধন্যবাদ!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সম্ভবত একটা শব্দ অত্যন্ত হবে, অন্যন্ত নয়।।
স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা।।
ঠিক করে দিয়েছি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
টিভিতে ডক্টর সৈয়দ ইউসুফ হাসানের একটা সাক্ষাৎকার দেখলাম ২-৪ দিন আগে।
****************************************
মিস করলাম।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নতুন মন্তব্য করুন