কস্য মিদং কার্যঞ্চাগে অনেকের কাছেই পরিচিত একটি গৎ বিশেষকরে জমি কেনাবেচার বিষয়ে ধারনা থাকলে এই গৎ তো আপনার পরিচিত হতেই হবে। তেমনই ইরেকটি ইংরেজি গৎ হচ্ছে টু হুম ইট মে কনসার্ন। পরের ইংরেজিটা প্রায় সবার পরিচিত হলেও প্রথম গৎটির পাঠোদ্ধার বড়োই কঠিন বিষয়। সম্প্রতি একজন তরুন আইনজীবিকে জিজ্ঞেস করেও সদুত্তর পাইনি। তারপরও এটি বহুযুগের পুরোনো একটি গৎ এবং অতিশীঘ্র এর অবলুপ্তির কোনও সম্ভাবনা বা কারনে দেখা যাচ্ছেনা।
উইকিসূত্রে,
দায়াবদ্ধতা হচ্ছে নীতিশাস্ত্র এবং শাসন- এই শাস্ত্রদ্বয়ের মধ্যকার একটি ধারণা যা বিভিন্নরকম অর্থ বহন করে থাকে। এটা প্রায়শঃই প্রত্যাশা অনুযায়ী হিসেব দেওয়া ছাড়াও দায়িত্ব, জবাবদিহিতা, দায়, ইত্যাদি ধারণার সমার্থক। এটি হচ্ছে স্ব স্ব ক্ষেত্রের প্রশাসন, শাসন এবং বাস্তবায়নসহ কৃতকর্ম, গ্রহীত সিদ্ধান্ত ও প্রণীত নীতির স্বীকৃতি এবং দায়িত্বগ্রহন, এবং এর ফলে সৃষ্ট ফলাফল জানানো, ব্যাখ্যা করা এবং জবাবদিহিতার একটি দায়বেষ্টনী।
তো কথা হচ্ছে, ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই কথাটি শোনেনি এমন মানুষ বোধ হয় এই বাংলাদেশে পাওয়া যাবেনা। যখনই প্রজাতন্ত্রের কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা দ্বারা কোনও জনহানিকর কিছু ঘটে, বড়োকর্তা ভারী গলায় বলে ওঠে, ঠিক যেনো সেই কস্য মিদং কার্যাঞ্চাগের মতো আরেকটি গৎ, ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কি ব্যবস্থা নেওয়া হলো তা জনগণের জানার বাইরেই থেকে যায়।
সাম্প্রতিককালে কাদেরের উপর ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের ঘটনাটি ব্যাপকভাবে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছিলো মিডিয়া এবং ব্লগারদের কারনে। যদিও আমরা জানতে পেরেছি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যেসব নির্যাতন, শুধু পুলিশ কেনো, অন্যান্য সরকারী দপ্তরগুলোতে অহরহ ঘটছে, এবং যেখানে বড়কর্তা গাল ফুলিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এই স্বত্ত্বাধিকারী বুলি আওড়াচ্ছে, তার কতগুলো ঘটনার ক্ষেত্রে পরে জনগন সেই তথাকথিত ব্যবস্থা নেওয়ার ফল জানতে পেরেছে?
দায়াবদ্ধতায় কেবলমাত্র দায়গ্রহনই নয়, বরং জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হয়। এটা ছাড়া দায়াবদ্ধতা সম্পূর্ণ হয়না। দেশের নাগরিক হিসেবে সকলেরই অধিকার আছে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের কৃতকর্মের খতিয়ান দেখতে চাওয়া। কিন্তু আমাদের আমলাতন্ত্র এবং তাদের স্কন্ধদাতা সরকারগুলো এব্যাপারে বড়োই রক্ষণশীল। এব্যাপারে বড়ো রাজনৈকিত দলগুলো কেউ কারোর চেয়ে কম নয়। সরকারে এলেই তাদের আসল চেহারার উন্মোচন ঘটে এবং দেখা যায় কতোটা নির্লজ্জ তারা হতে পারে আমলাতন্ত্রকে স্বরাজ দিতে। আর বোধহয় সে কারনেই চাকরী শেষ হতে না হতেই মখা আলমগীরের গায়ে উঠে যায় মুজিব কোট আর এমকে আনোয়ারের গায়ে সাফারী স্যুট। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এই শব্দচাবি দিয়ে গুগলানুসন্ধান করে কয়েক হাজার তথ্যসূত্র পেলাম। এগুলোর খবর কমবেশি সবাই শুনে থাকবেন। কিন্তু যেটি তেমনভাবে শুনে থাকবেন না, তা হলো এই তদন্ত শেষে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটা।
আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো গদগদ কন্ঠে জনগণকে তাদের ক্ষমতার উসৎ বলে প্রচার করে বেড়ায়। কিন্তু যদি তারা সেটা আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে তবে সরকারগুলোর উচিত হবে জনস্বার্থে প্রজাতন্ত্রের অভিযুক্ত কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হলো, না কি অভিযোগ থেকে মুক্তি প্রদান করা হলো, তা প্রকাশ করা। সরকারগুলোকে ভূলে গেলে চলবে না যে জনগণ তাদেরকে ক্ষমতায় বসায় আবার সেই জনগণই তাদের ক্ষমতা থেকে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
মন্তব্য
সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হচ্ছে মেধা ও পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে মূল্যায়ন। আমি একটি উদাহরণ দেই - কর্পোরেট অভিজ্ঞতা নিয়ে যারা সরকারী চাকুরীতে ঢুকে এবং যারা একেবারে ফ্রেশ ঢুকে তাদের মধ্যে বেশ পার্থক্য দেখা যায়। উদাহরণস্বরুপ ফ্রেশ ইনটেক একটি চিঠি ড্রাফ্ট করবে তার অধঃস্তনকে দিয়ে - তারপর তিনবার প্রুফ রিড করে আধা ঘন্টা পর একটি চিঠি সই করবে যেখানে কর্পোরেট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন নিজেই হয়ত কম্পিউটারে টাইপ করে ফেলল ১০ মিনিটে। কিন্তু এই পারঙ্গমতার মূল্যায়ন কিন্তু হবে না। ভাল কাজ করে ব্যপারটা চাউর হলে তার ভাগ্যে পরবে অতিরিক্ত কাজ। আর ওই লেট লতিফের প্রমোশন হবে একই সাথে সিনিয়রিটি এবং তেলানো ভিত্তিতে।
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে জুনিয়ররা সিনিয়রদের ব্যাপারে অভিযোগ করলে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেয়া হয় কালে ভদ্রে। যদি কেউ আদৌ তা করে তার পরিণতি হয় ভয়াবহ। কারন অন্য সিনিয়র সেই দোষী সিনিয়রের ব্যাচমেট - জীবন বিষিয়ে ছাড়বে - তাই সিনিয়রদের কেউ ঘাটায় না।
রাষ্ট্র দ্বারা এইসব তথ্য প্রকাশ করতে দেবে না আমলারা। ব্লগাররাও পারে এমন উদ্যোগ নিতে - যেমন রাশিয়ার পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্লগ রসপিল.ইনফো (http://www.ft.com/cms/s/0/7a387122-02f3-11e0-bb1e-00144feabdc0.html#axzz1mBpU4U4J)
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
এখানে সংবাদ মাধ্যম এবং মিডিয়ার বেশ ভালো একটা ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। মিডিয়া যদি এই বিষয়গুলো নিয়মিত জনসমক্ষে এনে উপস্থাপন করতে পারে, তখন জনগন এবং প্রকৃত সুশীল সমাজ তার ভিত্তিতে সরকারকে চাপে রাখতে পারে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
"প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের সকল অপকর্মের এবং এবং তার প্রেক্ষিতে গৃহীত ব্যবস্থার তথ্য প্রকাশ চাই"।
মাবুদে এলাহি ! এ দুঃসাহসিক কথা বলেন কি করে!?
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
একথা বলার কারনে যদি আমার কল্লা যায় অথবা নিদেনপক্ষে রামপ্যাঁদানী খেতে হয়, তবে বুঝবো আমার এই লেখা স্বার্থক। যাদের দৃষ্টিতে আনতে এই লেখা, তাদের একজন হলেও লেখাটি পড়েছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দাবী যা করেছো তাতে দ্বিমত নেই। তবে এই দাবী পূরণের ঘটনা তোমার আমার জীবদ্দশায় কেন আগামী পাঁচশ' বছরেও ঘটবে না। বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রকে নূন্যতম যারা চেনেন তারা জানেন এটা কেমন ব্যবস্থা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডব, কায়দামতো ইয়ে খেলে বিলাইও মান্দার গাছে উঠে যায়। সম্প্রতি ইনডিয়ায় কতিপয় বাহাদুর দুষ্টু ছবি দেখতে গিয়ে ধরা খেয়ে কি কাণ্ডটাই না হলো!
রেজওয়ানের মন্তব্যের জবাবে লিখেছি, মিডিয়া এখানে পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। যদি মিডিয়া এরকম প্রকাশ্যে বস্ত্রহরণের নিয়মিত মহড়া কিছু দিতে পারে, দেখবা কিছু না কিছু চেঞ্জ ঠিকই আসবে। কোনও পাগলও চাইবা জনগন তার ডিংডং দেখে যাক। এজন্যে মিডিয়াগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে কাজ করার পরিবেশ দিতে হবে।
আমি তোমার সাথে একমত, আমলাতন্ত্র কোনওদিন এই সৎ পথে যাবেনা। তবে অন্য উপায়ে তাদেরকে যদি জবাবদিহিতার মধ্যে আনা যায়, মন্দ কি! এই ধরো, অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবি ফোরাম, পাবলিক ক্লায়েন্টস এ্যাসোসিয়েশন, মিডিয়া, ইত্যাদি .................. এরা প্রকাশ্যে সরকারের কাজকামগুলোকে চ্যালেঞ্চ করলে কেমন হয়? তবে হ্যাঁ, এই ফোরামগুলোর ক্যাপাসিটি বিল্ডিংএর দায়িত্ব আবার মানুষের জন্য ফাউণ্ডেশনকে না দেওয়া হয়। এরা শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট অনিয়ম নিয়ে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে থাকবে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নতুন মন্তব্য করুন