[ডিসক্লেইমারঃ এই ব্লগ পাঠলব্ধ শিক্ষণের প্রয়োগে কাহারও ইন্টারভিউ ব্যার্থতার দায় ব্লগরব্লগরকের উপর বর্তাইবে না]
চাকরীর ইন্টারভিউ দেওয়া ও নেওয়ার খুচরো অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)
ধরো তোমার অফিসের পেটিক্যাশবক্স থেকে কিছু টাকা খোয়া গেছে। এই ক্ষেত্রে একজন রিজিওনাল ফাইনান্স ডিরেক্টর হিসেবে তোমার করণীয় কি আছে বলে তুমি মনে করো? তার মানে, আমি বলতে চাইছি যে তুমি কিভাবে গোটা বিষয়টাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হ্যান্ডেল করবে?
এই দিয়েই শুরু করছি টেকনিক্যাল ইন্টারভিউয়ের কিছ নমুনা। এই প্রশ্নটা আমাকে করা হয়েছিলো ২০০৬ সালে একটা বৃটিশ হেলথ স্পেশালিস্ট এনজিওর হর্ন-অব-আফ্রিকার রিজিওনাল ফাইনান্স ডিরেক্টর পদের ইন্টারভিউতে। টেকনিক্যাল ইন্টারভিউই হচ্ছে ইন্টারভিউয়ের মধ্যে সবথেকে সহজ অংশ। কারন, এই পর্বের মোটামুটি সব কথোপকথনই আপনার এ্যাকাডেমিক এবং অভিজ্ঞতাসংশ্লিষ্ঠ। বিশেষকরে আপনি যদি কোনও ফ্রন্টলাইন বা মিড লেভেলের ইন্টারভিউতে বসেন, তবে চোখ বুজে বলা যায় এখানে আপনাকে আটকানো দায়।
তো, এখানে আমি আমার উত্তর শেয়ার করি যাতে আপনারা ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিক থেকে বিষয়টাকে পর্যালোচনা করতে পারেন-
আসলে যদি রিজিওনাল ফাইনান্স ডিরেক্টর হিসেবে বিষয়টাকে দেখতে হয়, তবে আমার ইনভলভমেন্ট এখানে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন পর্যায়ে, যদিও কান্ট্রি ম্যানেজমেন্ট লেভেলেই এটার সুরাহা হয়ে যাওয়া উচিৎ। তবে যদি বিষয়টাকে গোড়া থেকে শুরু করতে বলো, তো প্রথমেই দেখতে হবে লেজার ব্যালান্স এবং এ্যাভেইলেবল ক্যাশ ব্যালান্সের মধ্যে পার্থক্য, তার মানে খোয়া যাওয়া টাকার পরিমান। এরপর ভাউচার্সের সাথে লেজার পোস্টিং এবং রিসিটগুলোর সাথে ভাউচার এ্যামাউন্ট মিলিয়ে দেখতে হবে যে কোনও পোস্টিংএ ক্লারিক্যাল মিস্টেক হয়েছে কিনা। যদি সবকিছুই ঠিকঠাক মতো পাওয়া যায় তবে ওই নির্দিষ্ট সময়ে যারা পেটিক্যাশ থেকে টাকা তুলেছে তাদেরকে জনে জনে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে যে কাউকে টাকা বেশি দিয়ে দেওয়া হয়েছে কিনা। এভাবে যদি কোনওভাবেই রিকনসাইল করা সম্ভব না হয় তবে তো সেই খোয়া যাওয়া টাকা ক্যাশ কাস্টোডিয়ানের পারসোনাল এ্যাকাউন্ট থেকে রিয়ালাইজ করতে হবে।
ইট’স ঠু হার্শ! ডোন্ট ইউ হ্যাভ এনি আদার আইডিয়া?
ওয়েল, এটা যদি ডাকাতি বা লকার ভেঙে চুরি হতো, তবে হয়তো ম্যানেজমেন্ট ডিসিশানের মাধ্যমে টাকাটা রাইট-অফ করা যেতো। কিন্তু এখানে তার কিছুই ঘটেনি। এটা পরিষ্কার ক্যাশিয়ারের গাফিলতি। এই টাকা রাইট-অফ করলেও সেটা কোনও ডোনারের বুকেই চার্জ করা যাবেনা কারন কোনও ডোনারই এটাকে মেনে নেয় না। আর এটাকে যদি সংস্থার নিজস্ব ওভারহেডে চার্জ করা হয়, তবে একটা ব্যাড প্রিসিডেন্স তৈরী হয়ে যাবে এবং পরবর্তীতে এইরকম ঘটনা আবারো ঘটলে এই অর্ডার অব প্রিসিডেন্সে সেই টাকাও রাইট-অফ করতে হবে। অনেকেই ভবিষ্যতে এই সুযোগের অপব্যবহার করতে পারে। পেটি ক্যাশ ফান্ডে খুব বেশি টাকা থাকার কথা নয়। সুতরাং তার থেকে খোয়া যাওয়া টাকাও বড়সড় কোনও এ্যামাউন্ট নয়। সুতরাং আই স্টিল রেকমেন্ড ফর রিয়ালাইজেশন। এতে করে সেই ক্যাশিয়ার এবং অন্য কর্মীরাও সতর্ক হয়ে যাবে।
আমার কাছে সেদিন ইন্টারভিউ শেষ হতেই কেমন যেনো মনে হয়েছিলো প্যানেল আমার ইন্টারভিউতে সন্তষ্ট হতে পারেনি। যার প্রমান পেলাম ঘন্টা চারেকের মধ্যেই তারা আমাকে রিগ্রেট লেটার মেইল করে পাঠিয়ে দেয়াতে।
এই উদাহরণটা দিলাম এজন্যে যে আমি সবসময় আমার পারসপেক্টিভে অনড় থাকার চেষ্টা করি। তবে, ইন্টারভিউ করতে গিয়ে অনেককেই দেখেছি বিভ্রান্ত হয়ে পড়তে এবং নিজের মতামত নিয়ে কম্প্রোমাইজ করতে। যেমন, প্রশ্নকর্তা আপনার উত্তরের প্রেক্ষিতে একটা কাউন্টার অপশন দিয়ে বসলো এবং তাতে আপনার মতামত জানতে চাইলো। এটা সত্যি যে আপনার উত্তরটাই যে সর্বশ্রেষ্ঠ বা আপনার পারসপেকটিভই যে ধ্রুব, তা কিন্তু নয়। এইসব ক্ষেত্রে আমি যদি দেখি যে কাউন্টার অপশনটা আমারটার থেকে দুর্বল, আমি বিনীতভাবে বলে দেই যে, হ্যাঁ আপনি যা বললেন তা হয়তো ঠিক আছে এবং অনেক ক্ষেত্রে এটা এমনকি বেটারও হতে পারে। কিন্তু আমাদের স্পেসিফিক কনটেক্সটে আমারটাকেই বেটার মনে হচ্ছে কারন আমি বিভিন্ন সময়ে এর প্রত্যক্ষ কিছু সুফল পেয়েছি। তবে হ্যাঁ, আপনি যেটা বললেন সেটা যদি আপনাদের সংস্থার একমাত্র স্ট্র্যাটেজিক অপশন হয়, সেক্ষেত্রে আমার ফ্লেক্সিবল এ্যাটিচ্যুড আমাকে হেল্প করবে যেটা আগেও করেছে- এ্যাপয়েন্টেড হলে আমি সেটা দ্রুততার এ্যাডাপ্ট করতে পারবো।
আমরা ইন্টারভিউ প্যানেলে প্রশ্নগুলো ভাগ করে নেই, কে কোনটা জিজ্ঞেস করবে সেটা। প্যানেলে সবসময়েই একজন এইচআর প্রতিনিধি থাকে যার টেকনিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড এই ইন্টারভিউয়ের সাথে সংশ্লিষ্ঠ না’ও হতে পারে। কিন্তু তার পরও তার ভাগে কিছু টেকনিক্যাল প্রশ্ন পড়ে জিজ্ঞেস করার জন্যে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি যে প্রার্থী এইচআর প্রতিনিধির প্রশ্নগুলোতে অযাচিত জ্ঞ্যানের জাহির করে থাকে। বুঝাতে চেষ্টা করে যে সে এইচআর প্রতিনিধির থেকে অনেক জ্ঞ্যানী। এটা করলেই শেষ। এটা এক ধরণের বেয়াদবী যা কোনও অবস্থাতেই আমরা মেনে নেই না। আর সবথেকে বড়ো একটা কথা হলো প্রার্থী যদি তার আচরন দিয়ে ঔদ্ধত্ব প্রকাশ করে ফেলে, প্যানেল কিন্তু কখোনোই সেই প্রার্থীকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারেনা। পৃথিবীতে বিনয় এমনই একটা জিনিস যার দ্ধারা মানুষের উপকার হোক বা না হোক, কোনও ক্ষতি হয়না। এবং বিনয় সবসময় মানুষকে অন্যের কাছে বড়ো করে এবং অন্যের কাছ থেকে বিনয় পাওয়ার রাস্তা খুলে দেয়।
তবে হ্যাঁ, সবাই যদি রিলিভ্যান্ট ব্যাকগ্রাউন্ডওয়ালা হয়, তবে প্রশ্নকর্তারা কিভাবে মুল্যায়ন করবে? প্রায় সবাই তো একই ধরণের উত্তর করবে এবং প্রায় একই মার্ক পেয়ে যাবে, তাইনা! নাহ, এখানে ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। একটা বিষয় উপস্থাপনার বা ব্যাখ্যার পারঙ্গমতার কারনেই কখোনো কখোনো আকর্ষণীয় হয় আবার কখোনো বা একঘেঁয়ে হয়ে যায়। আমাকে একবার এক ইন্টারভিউতে জিজ্ঞেস করা হলো সাসটেইনেবল লাইভলিহুড ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে কিছু বলতে এবং আমি এই পদে নিয়োগ পেলে এই এসএলএফ-এর আলোকে কিভাবে তাদের প্রকল্পগুলোর উন্নয়ন করবো। এখানে কিন্তু আমার কাছে এর সংজ্ঞা জানতে চাওয়া হয়নি। যারা এই প্রশ্ন করেছে তারা এর সংজ্ঞা ভালোভাবে জানে বলেই প্যানেলে বসেছে এবং প্রশ্নটি করেছে। এখন আমি যদি গড়গড় করে এর সংজ্ঞা, ইহা কতো প্রকার ও কি কি, ইহা দ্বারা কি উদ্ধার হয়, এইসব বলে যেতে থাকি, তবে আমি নিশ্চিত ফেল। আমাকে বলতে হবে বাস্তবতার নীরিখে এটা প্রোগ্রামের সাথে কিভাবে ফিট করানো যায় এবং প্রেক্ষিত থেকে প্রেক্ষিতে এটার কি কি ধরণের ভিন্ন ভিন্ন ইমপ্লিকেশন হতে পারে, এইসব। মোদ্দা কথা, প্যানেল শুনতে চায় আমি কতোটা বাস্তবতার প্রেক্ষিতে একটা বিষয় দেখি এবং কি ধরণের ইনোভেটিভ আইডিয়া প্রকাশ করতে পারি।
ইন্টারভিউতে সময় কিন্তু বড় একটা বিষয়। সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে না পারলে কিন্তু বিপদ। আজকাল তো প্রায় সব ইন্টারভিউর আগেই সম্ভাব্য সময় বলে দেওয়া হয় যে ইন্টারভিউ আনুমানিক কতটুকু সময় ধরে হবে। একসময় আমার এই বিষয়ে বেশ সমস্যা ছিলো তবে বেশ কিছুকাল হলো এটাকে কাটিয়ে উঠেছি। এটা হয় বেশিরভাগ টেকনিক্যাল অংশে। অনেক সময় আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হয় প্যানেলকে আপনার মনের কথা বোঝাতে। এক্ষেত্রে, আমি অধিকাংশ সফল প্রার্থীকে দেখেছি যে তারা উত্তর দেওয়াতে খুবই স্পেসিফিক, অনর্থক এবং অপ্রয়োজনীয় বাক্যালাপ করেনা, এবং নিজের উত্তর সম্পর্কে শতভাগ কনফিডেন্ট না থাকলে এ্যাঁ-উঁ-ক্যাঁ-ক্যুঁ; ওহ ইয়া, আই মিন, য়্যু নো- এইসব না করে সেটা স্পষ্ট বলে দেয়। তবে আপনি যেনো একঘন্টার ইন্টাভিউ তাই হাতে মাত্র একঘন্টা সময় নিয়েই বসে না পড়েন। আলাপ অনেক সময় প্রলম্বিত হতে পারে এটা মাথায় রাখবেন। গতবছর স্কাইপে একটা ইন্টারভিউ করছিলাম বাগদাদে অবস্থানরত এক প্রার্থীকে। স্লো ব্যান্ডউইডথের কারনে ইন্টারভিউ বারবার বাধাগ্রস্থ হচ্ছিলো এবং প্রার্থীকে খুবই পটেনশিয়াল মনে হচ্ছিলো, তাই ইন্টারভিউ চালিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলাম। এক পর্যায়ে প্রার্থী বললো যে যেহেতু ইন্টারভিউ এক ঘন্টার হওয়ার কথা তাই সে সোয়া ঘন্টার প্রস্তুতি নিয়ে বসেছে। এর পরই তাকে একটা মিটিংএ ছুটতে হবে। তো কি আর করা, ইন্টারভিউ অসম্পূর্ণই রেখে যেতে হলো। এই পর্বেই লেখাটা শেষ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু করছি না। শেষ পর্বে ডু’স এবং ডোন্ট ডু’স নিয়ে দুটো কথা লিখবো বলে ভাবছি নাহলে এই লেখার দৈর্ঘ অনেক বেড়ে যাবে এবং পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে নিশ্চিত।
অনেক পদে মোটরসাইকেল চালানো জানতে হয়। এক্ষেত্রে মোটরসাইকেল চালনার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে গিয়ে অনেক মজার মজার কথা শুনেছি। আমার নিজের ২০০ সিসি মোটরবাইক আছে, আমি একজন অফরোড বাইকার, আমি ক্লাস এইট থেকেই মোটরসাইকেল চালাই, ইত্যাদি। কিন্তু আমরা শুনতে চাই শ্রেফ আপনি চালাতে জানেন কিনা, লাইসেন্স আছে কিনা, এই দুটোই। তবে আপনি এস সাথে একটু যোগ করতে পারেন এভাবে যে আপনি সংশ্লিষ্ট কাজে গত ৫ বছর ধরে দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে বা শহরগুলোতে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে আসছেন। এটুকু বেশি বললে অবশ্য সমস্যা হয়না।
ইন্টারপারসোনাল স্কিলস- এই বিষয়ক প্রশ্নমালা আমার ব্যাক্তিগত মতে একটা ইন্টারভিউয়ের সবথেকে জটিল অংশ। এখানে উত্তরের ধরাবাধা কোনও নির্দেশনা থাকেনা এবং উত্তরগুলো হয় খুবই ব্যাক্তিগত পারসপেকটিভ নির্ভর। তবে কেউ যদি সরাসরি ম্যানেজমেন্টের পাঠ্যপুস্তক থেকে উগরাতে শুরু করে, তার জন্যে এখানে ভালো করা কঠিন। এখানেও সেই একই কথা, বইতে কি লেখা আছে তা কম বেশি সবাই জানে কিন্তু দৈনন্দিন কর্মজীবনে আপনি তাকে কিভাবে প্রয়োগ করে সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জন করবেন, সেটাই আপনার কাছ থেকে প্যানেল শুনতে চায়।
এই ধরুন লিডারশীপ স্কিলস নিয়ে কথা এলো। প্রশ্ন এলো যে তুমি লিডারশীপ নিয়ে কি ভাবো? প্রশ্ন শুনেই কিন্তু আপনাকে বুঝে যেতে হবে যে আপনাকে কতটুকু উত্তর করতে বলা হয়েছে। এখন আপনাকেই ঠিক করতে হবে যে আপনি একবারেই আপনার লিডারশীপ সম্পর্কিত ভাবনাগুলো বলে ফেলবেন নাকি কিছুটা বলে আবার অপেক্ষা করবেন! একটা কথা মনে রাখবেন যে প্যানেল কিন্তু আপনাকে লিডারশীপ নিয়ে দ্বিতীয় কোনও প্রশ্ন না’ও করতে পারে।
বিভিন্ন সময়ে শোনা এই প্রশ্নের কয়েকটি উত্তর শেয়ার করি যার ব্র্যাকেটের মন্তব্যগুলো একান্তই আমার নিজস্ব। এখানে অবশ্য আমি আর উত্তরদাতাদের শ্রেণীবিভাগ করলাম না।
উত্তর-১: এ্যা লিডার ইজ বর্ণ, নট মেড অথবা লিডারশীপ ইজ হোয়াট এ্যা লিডার ডাস ....... (আপনি কিন্তু নিশ্চিত ধরা খেয়ে গেলেন)।
উত্তর-২: এ্যা লিডার হু শোজ দ্যা পাথ বিয়িং ইন ফ্রন্ট ........ (আপনার ধরা খাওয়া মোটামুটি মিশ্চিত)।
উত্তর-৩: এ্যা লিডার ডিভোটস হিম/হারসেল্ফ টু এ্যাচিভ অর্গানাইজেশনাল গোলস এন্ড অবজেকটিভস থ্রু গাইডিং দ্য টিম টুওয়ার্ডস কালেক্টিভ এ্যান্ড এফিশিয়েন্ট এফোর্টস ............. (ভালোই বলেছেন)।
উত্তর-৪: এ্যা লিডার কন্টিনিউয়াসলি মোটিভেটস এন্ড গাইডস দ্য টিম টু এ্যাচিভ অর্গানাইজেশনাল গোলস এন্ড অবজেকটিভস সো এ্যাজ টু এনসিওর দ্য অর্গানাইজেশন এজ এ সাকসেস ফুল ওয়ান ............ (বেশ ভালো)।
দেখুন উপরের কথাগুলো কিন্তু ঘুরে ফিরে খুব আলাদা কিছু বলছেনা। কিন্তু পরিষ্কার পার্থক্য দেখতে পাবেন কথাগুলোর ব্যাপ্তিতে। তো, এখন যদি আমাকে প্রশ্ন করেন যে উত্তর-৩ আর উত্তর-৪ তো প্রায় একই কথা বলছে- তবে কেনো এখানে উত্তর-৪ বেশি ভালোভাবে মূল্যায়িত হবে? আপনার প্রশ্ন ঠিক আছে, কিন্তু লক্ষ করে দেখবেন লিডারের ভিশনটাকে। উত্তর-৩ এর লিডার সব বলেছে কিন্তু সে অর্গানাইজেশনকে কোথায় দেখতে চায় সেটা বলতে ভুলে গেছে। ঠিক এই পয়েন্টেই উত্তর-৪ কোনও ভুলের সুযোগ রাখেনি। সে ঠিকই বলেছে যে সে অর্গানাইজেশনকে একটা সফল অর্গানাইজশন হিসেবে দেখতে চায়।
প্রশ্ন হচ্ছে লিডারশীপ নিয়ে এতো কথা কেনো, তাইনা? লিডারশীপ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় এজন্যে যে কার ভিতরে লিডারশীপের বোধ কেমন কাজ করে সেটা বের করে আনতে। প্রার্থীকে যদি নিয়োগ দেওয়া হয় তবে সে তার টিমে কিভাবে লিডারশীপের চর্চা করবে, এটা অনুধাবন করতে। তাছাড়া আধুনিক যুগে টিম এ্যাপ্রোচে কাজ হয় খুউব বেশি, ইন্ডিভিজুয়ালিস্টিক এ্যাপ্রোচ ক্রমশ বাতিলের খাতায় উঠে যাচ্ছে। সুতরাং টিমের আউটপুট নিশ্চিত করতে হলে একজন ম্যানেজার যতটুকু ভূমিকা রাখতে পারে তা থেকে একজন লিডারের কার্যকরীতা অনেকগুণ বেশি। ম্যানেজার টিম ম্যানেজ করে কিন্তু নেতৃত্ব দেওয়ার মতো প্রকৃত বৈশিষ্ঠ তার থাকবে একটা অবশ্যম্ভাবী নয়। কিন্তু একজন লিডারকে অবশ্যই প্রথমে একজন ভালো ম্যানেজার হয়ে তারপর লিডার হতে হয়।
এই ফাঁকে বলে ফেলি, আমি এই প্রশ্নের সামনে পড়লে সাধারনত কি বলি- “ইট’স এ্যা সেট অফ ইনফ্লুয়েন্সিং আট্রিবিউটস, এ্যাকচুয়ালি কম্বিনেশন অফ মোটিভেশন, গাইডেন্স, আন্ডার্স্ট্যান্ডিং, সিমপ্যাথি, এন্ড সো অন দ্যাট এনাবল অর এনহ্যান্স ইনডিভিজুয়াল অর টিম’স ক্যাপাসিটি টু এ্যাচিভ অর্গানাইজেশনস সাকসেস এন্ড টু কনট্রিবিউট টুওয়ার্ডস অর্গানাইজেশনাল ভিশন। এ লিডার শেয়ার্স অল দ্যা সাকসেসেস এমং দ্য টিম বাট শোল্ডার্স অল দ্যা শর্টকামিংস বাই ওনসেলফ।”
পরের পর্বে (সম্ভত সেটা হবে শেষ পর্ব) ইন্টারপারসোনাল স্কিলসের বাকী দু’একটা বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করবো।
[একটা জরুরী কথাঃ আমি ব্লগ লিখি সম্পূর্ণ স্বতস্ফুর্তভাবে। তাই ভাষাগত বিষয়টা তেমনভাবে দেখা হয়ে ওঠেনা। এই ব্লগে ব্যাপক বাংলিশ ব্যবহার করা হয়েছে এবং এগুলো স্বতস্ফুর্তভাবেই এসেছে। এর মানে এই নয় যে আমি এগুলো বাংলায় লিখতে পারতাম না। তবে বাংলায় লিখলে এর সঠিক অর্থ ব্যাক্ত করা হয়তো দুরুহ হয়ে পড়তো কারন দৈনন্দিন জীবনে আমি এবং আমার অধিকাংশ পরিচিতজন এই কথাগুলো ইংরেজিতেই বলে থাকি। তা সত্বেও এটা কারো কাছে দৃষ্টিকটু ঠেকলে সেজন্যে আন্তরিকভাবে দুঃখিত]
মন্তব্য
প্রশ্নের উত্তর হিসেবে যে উদাহারণগুলো দিয়েছেন, সেগুলা কেমন যেন মুখস্ত করে গিয়ে উগরে দেয়া বুলির মত লাগলো, আপনারা কী মুখস্ত বানী শুনতে চাচ্ছেন উত্তর হিসেবে, না প্রার্থীর নিজস্ব চিন্তাভাবনা , তাৎক্ষণিক উত্তর এ বেশি আগ্রহী। তাৎক্ষণিক ভাবে বললে এত ভারিক্কি কথা চট করে মুখে আসার কথা না। আমার তো মনে হয় কেউ এসে মুখস্ত বানী শোনালে তাকে আমি বাতিলের খাতায় ফেলে দিতাম, নিজস্বতা নাই বলে। বা যারা স্বতস্ফূর্ত উত্তর না দিয়ে শিখে আসা বুলির উপর নিরভর করেত আদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে বলে আমার মনে হত।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
টেকনিক্যাল বিষয়গুলোতে অনেকটা মুখস্থ বুলির মতোই মনে হতে পারে কারন এগুলোর অধিকাংশই বিষয় স্পেসিফিক। কিন্তু বাস্তবে মুখস্থ বুলির থেকে ইনোভেটিভ উত্তর শুনতেই প্রশ্নকর্তারা বেশি পছন্দ করে এবং অভিজ্ঞ ইন্টারভিউয়ারা বুঝতে পারে যে প্রার্থী কোনটা মুখস্থ থেকে উগরে দিয়েছে আর কোনটা স্বতস্ফুর্তভাবে নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থেকে দিয়েছে। তবে সমস্যা হলো মুখস্ত না থাকলে টেকনিক্যাল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায়না। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ডেফিনিশনকে আপনি কতটুকু বাস্তবতার নিরীখে উপস্থাপিত করতে পারলেন, সেখানেই মুন্সীয়ানা। ভারিক্কি কথার বিষয়টা আসলে সহজে বিচারে আনার মতো নয়, ডিপেন্ড করে আলাদা আলাদা প্রার্থীর স্বতন্ত্র ক্যাপাসিটির উপরে। অনেকেরই চমৎকারভাবে গুছিয়ে কথা বলতে পারার ক্ষমতা আছে যেটাকে শুনলে মুখস্থ বুলি বলেই মনে হতে পারে। আবার অনেকে মুখস্থ করেও তা ঠিকমতো উগরাতে পারে না। এ সবই ব্যাক্তিগত সক্ষমতার বিষয়। তবে একটা বিষয় খুবই সত্যি যেটা আপনি শেষ লাইনে বলেছেন, আত্মবিশ্বাসে যাদের ঘাটতি আছে তারাই বেশি মুখস্থনির্ভর। এবং এরা মুখস্থ বিষয়টাকে ইম্প্রোভাইজ করতে পারেনা সহজে। ধন্যবাদ।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
টেকনিকাল ইন্টারভিউতে সম্ভবত ইন্টারপার্সোনাল স্কিল কম দেখা হইয়...ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে বললাম...
আপনার পর্যবেক্ষণ ঠিক আছে। তবে বিষয়টা হচ্ছে কোন লেভেলের জন্যে ইন্টারভিউ হচ্ছে- যদি ফ্রন্টলাইনের জন্যে হয়, সেখানে ইন্টারপারসোনাল অংশটা বলতে গেলে থাকেই না। আবার যদি মিড লেভেল ধরেন, সেখানে টেকনিক্যাল এবং ইন্টারপারসোনাল- দুটোই সমান গুরুত্ব পায়। কিন্তু আবার সিনিয়র ম্যানেজারিয়াল লেভেলগুলোতে টেকনিক্যাল থেকেও বেশি গুরুত্ব পায় ইন্টারপারসোনাল ইস্যুগুলো যেমন ম্যানেজারিয়াল স্কিলস, কোঅর্ডিনেশন, কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট, নলেজ ম্যানেজমেন্ট, স্টাফ ডেভেলপমেন্ট, ইত্যাদি।
আবার কিছু কিছু পজিশন আছে যেগুলো হাইলি টেকনিক্যাল এবং কোনও ধরণের ম্যানেজমেন্ট রেসপনসিবিলিটি থাকেনা, সেইসব ক্ষেত্রে ইন্টারপারসোনাল স্কিলস নিয়ে ঘাটাঘাটিও তেমন একটা হয়না। ধন্যবাদ।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অত্যন্ত জরুরী বিষয় নিয়ে চমৎকার লেখাটি এত তাড়াতাড়ি শেষ করার ঘোষনা দিচ্ছেন কেন বার বার?! আপনার মূল্যবান পরামর্শ থেকে অনেকেরই অনেক উপকার হচ্ছে। আমি তো হাপুস-হুপুস করে পড়লাম এবং ম্যালা কিছু জানলাম।
আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ এরকম একটি টপিক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবার জন্য।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ উচ্ছলা, এ নিয়ে আসলে ম্যালা কিছু লেখার নেই। তবে নিশ্চই লক্ষ করেছেন, মন্তব্যগুলোতে অনেক ভালো আইডিয়া বেরিয়ে আসছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধন্যবাদ কবি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সঙ্গে আছি।
সিরিজ চলুক।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ তিথী।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
তাজ ভাই,
অভিজ্ঞতার গল্পগুলো শুনলে সেটি অনেক বেশি কাজে দেয় বলে মনে করি।
ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
ইংরেজি বাক্য গুলো ইংরেজি অক্ষরে লিখলে পড়তে সুবিধা হয় (আমার নিজের)।
ধন্যবাদ মানিক। এটা ভালোই বলেছো, ইংরেজিগুলো বরং রোমান হরফে লিখলেই হতো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনি কি করে আপনার অধীনস্তদের ম্যানেজ করেন? এই প্রশ্নটির জন্য সঠিক ভাবে উত্তর দিতে পারিনি । এক্ষেত্রে কি ধরনের উত্তর আশা করেন?
এই কমন প্রশ্নটি আমাকে করলে আমি সাধারনত যে উত্তর দেই-
আমি পার্টিসিপেটরি ওয়েতে টিম ম্যানেজমেন্টের চর্চা করি। শুরুতেই টিমের সদস্যদের সংস্থার ভিশন, গোলস এবং অবজেকটিভসগুলো এবং তাদের প্রত্যেকের জব রেসপনসিবিলিটিগুলো ব্যাখ্যা করে দেই যাদের কাজ করতে গিয়ে তাদের মধ্যে কোনওরকম অস্পষ্টতা বা বিভ্রান্তি না থাকে। আমি টিমের মধ্যে ফলপ্রসু হরাইজন্টাল এবং ভার্টিক্যাল কমুনিকেশন নিশ্চিত করি যাতে টিমের সব সদস্যই তাদের মতামত ব্যাক্ত করতে পারে।টিমের সদস্যদের চলমান প্রক্রিয়ায় কোচিং, মেন্টরিং ও অন-দ্য-জব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতা প্রদান করে থাকি যাতে তারা ক্রমাগত দক্ষতার এবং পেশাদারিত্বের উৎকর্ষ সাধন করতে পারে। এছাড়া আমি অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ পারফরম্যান্স ম্যানেজমেন্টের চর্চা করে থাকি যার মধ্যে আছে নিয়মিত ১-২-১ আলোচনা, পিরিওডিক পারফরম্যান্স রিভিউ এবং বার্ষিক এ্যাপ্রেইজাল।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নতুন মন্তব্য করুন