তাল আগ্নেয়গিরি- এক বিকেলের অশ্বারোহণ

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি
লিখেছেন রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০৬/১২/২০১৪ - ১০:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেশ কয়েকবার ফিলিপাইনে যেতে যেতেও যাওয়া হয়নি বিভিন্ন কারণে। এবার নভেম্বরে যাওয়া হলো শেষ পর্যন্ত। ওখানে বেশ বড়সড় একটা ট্রেনিং-এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় বস যেতে বললো। তো ঢাকা থেকে তড়িঘড়ি করে শ্রীলঙ্কা গিয়ে, সেখানে দুইদিন থেকে কিছু জরুরী কাজ সেরে যাত্রা করলাম ফিলিপাইনের পথে। পাঁচ পথে যাওয়া যেতে পারতো ম্যানিলায়- কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, হংকং ও দুবাই ঘুরে। আকাশে বেশি সময় হলেও ট্রানজিটসহ সার্বিকভাবে কম সময়ের বিবেচনায় দুবাই হয়েই গেলাম। এটা সম্ভবত আমার এক উড়ালে সবথেকে দীর্ঘ ভ্রমণ, প্রায় ১০ ঘন্টা লাগে দুবাই থেকে ম্যানিলা। অনেক আগে নাইরোবি থেকে ডাকার ও বামাকো গিয়েছিলাম, তা’ও মনে হয় এতোটা লম্বা যাত্রা ছিলো না।

এনাম ভাইয়ের রান্না চিকেন ও ডাল দিয়ে রাতের খাওয়া খেলাম। এই এনাম ভাই আমার সিনিয়র বন্ধু, হিউম্যানিটারিয়ান ওয়াশ (ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিন) সেক্টরের একজন গ্লোবাল গুরু। একদিন পরে ম্যানিলা থেকে উড়ে গিয়ে পড়লাম সিবু দ্বীপে যেখানে ট্রেনিং হবে। বিভিন্ন পদমর্যাদার ৪০ জন সহকর্মী এলো বিভিন্ন স্তরের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়ে। হেটেরোজেনাস গ্রুপের সাথে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করা বিশেষ করে ট্রেনিং দেওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং কিন্তু আমি এই চ্যালেঞ্জ বেশ উপভোগ করি। ট্রেনিং চললো চার দিন ধরে এবং সময়টা বেশ ব্যাস্ত কাটলো।

এর পরের গন্তব্য যথাক্রমে বান্টায়ান দ্বীপ এবং সেখান থেকে অরমোক দ্বীপ। আরও এক সপ্তাহের সূচী। যাওয়ার মাধ্যম হয় ফেরি নয়তো ওয়াটার জেট, দ্রুতগামী লঞ্চ। বান্টায়ানে ওই ওয়াটার জেট যায়না, যায় শুধু ফেরি। সে ফেরিতে আবার এসি কেবিনও আছে। বান্টায়ানের সান্টা ফে বিচ বেশ নামকরা।

অনেক পর্যটকের দেখা পেলাম। উল্লেখ্য, ষাটোর্ধ পশ্চিমা বুড়োগুলো একটা দুটো করে ফিলিপিনো তরুনী বগলদাবা করে নিয়ে ঘুরছে এবং হোটেলে রাত কাটাচ্ছে। এবং এই তরুনীদের অর্ধেকেরই বয়স ১৮ থেকে কম। কিছু পশ্চিমা মানুষ সান্টা ফে-তে রেস্টুরেন্ট খুলে বসেছে। একজন সহকর্মী জানালো এখানে অপরিকল্পিত গর্ভধারণের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে পাশাপাশি এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকিও পুরোমাত্রায় বিদ্যমান। কিন্তু তার পরও ফিলিপাইনের মেয়েরা কনডম ব্যবহারে খুব একটা সিরিয়াস নয়।

বান্টায়ানে দ্রুত সন্ধ্যা নামা ও কাজের চাপ থাকায় বিচে ঘোরা হয়নি। সন্ধার পরে গিয়েছিলাম কিন্তু কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া আর কাউকেই চোখে পড়েনি। তবে ফিরে আসার আগে অনটোং গুহায় গেলাম। গুহাটি খুবই ছোট ও অগভীর কিন্ত রিসর্ট কর্তৃপক্ষ ওটাকে বেশ সাজিয়ে রাখার ফলে গুহা বলতে আমাদের মনের চোখে যেমনটি ভেসে ওঠে ঠিক তেমনটি নয়।

অরমোকে বলার মতো কিছু নেই কারণ মাত্র এক রাতের অবস্থান ছিলো। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে ফেরি বন্ধ থাকায় এক দিন মিস করেছি। সেখানে দেখা হয়ে গেলো স্নেহাষ্পদ ইঞ্জিনিয়ার মুনিরের সাথে এবং নেপালী বন্ধু বিষ্ণুর সাথে। মুনির গরুর গোস্ত ও মুশুরীর ডাল খাওয়াতে চেয়েছিলো কিন্তু আবারও সেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে ওয়াটার জেট বন্ধ হয়ে যেতে পারে সেই আশঙ্কায় বিকেলের টিকেট বদলে দুপুরেই সিবু চলে আসতে হলো।

শিবের গীত শেষ করে এবার ধান ভানতে শুরু করি। পরদিন ম্যানিলা ফিরে প্ল্যান করলাম তাল ভলকানো দেখতে যাবো। জীবন্ত এক আগ্নেয়গিরি যা এযাবত ৩৩ বার অগ্নুতপাত ঘটিয়েছে। এটির অবস্থান লুজোন অঞ্চলের ভলকানো দ্বীপে। তাল হ্রদের মাঝে অবস্থান এই ভলকানো দ্বীপের। ভোরে যাত্রা শুরু করার পরিকল্পনা থাকলেও বেরোলাম সকাল ১০টায়। আমার সাথে আরও দু’জন। বাংলাদেশের দুঃসাহসী লজিস্টিশিয়ান ইয়াসমিন বেগম এবং নেপালের বিনোদ প্রসাদ শ্রেষ্ঠা।

সড়কপথে প্রথম আমাদের যেতে হবে তাগাইতাই শহরে। সেখান থেকে ছোট বাহনে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নামতে হবে তাল হ্রদের পাড়ে। এ্যাপার্টমেন্টের সামনে থেকে জীপনি চড়ে বাস টার্মিনালে এলাম। যানটির নাম জীপ না হয়ে জীপনি হলো কেনো বা জীপনি না হয়ে জীপ হলোনা কেনো তা জানা হয়নি। আমাদের ছোট বেলায় চড়া সেই কাঠ বড়ির লম্বা নাকের জীপের মতো তবে এদের গুলো স্টীলের পাতে মোড়া আর বাহারী নকশায় সজ্জিত।

বাস টার্মিনাল থেকে সোজা তাগাইতাই যায় এমন বাস পেলাম না। একটা বাসে কিছুদূর যেতে হবে, তারপর বাস বদলে তাগাইতাইয়ের বাসে চড়তে হবে। বাসে আমরা ৩ জন একটা থ্রি সিটার পেলাম। তারপর আমাদের গন্তব্যের কথা মনে করে আচমকা আমি হাসতে শুরু করে দিলাম। ইয়াসমিন আমার হাসি দেশে কৌতুহলী হয়ে কারণ জানতে চাইলো। আমি তাকে বললাম আপা তাড়াতাড়ি আমাদের পিছনে চেক করেন। উনি পিছনে ফিরে তাকিয়ে বললো পিছনে তো অন্য প্যাসেঞ্জার! আমি শেষে বললাম যে এই বাসের গন্তব্য হচ্ছে “পাছায় রতনদা”। সুতরাং পিছনে দেখেন রতনদা কত দূরে। রতনদা আসলে আমাদের পাছা তো সামলাতে হবে। এবার তার হাসির পালা। আমাদের দুজনের হাসি দেখে বিনোদ কৌতুহলী হলে ওকেও ব্যাখ্যা করতেই তিনজনের একসাথে হাসি শুরু হলো আর আশপাশের যাত্রীরা আমাদের হাসি দেখতে থাকলো।

পাছায় রতনদা থেকে বাসে চড়ে গেলাম তাগাইতাই। সেখানে সংক্ষিপ্ত লাঞ্চ সেরে, এটিএম থেকে টাকা তুলে উঠলাম অন্য এক যানে। মটর সাইকেলের সাথে ছোট্ট একটা একচাকাযুক্ত বাক্স লাগানো যার মধ্যে দুই জন বসতে পারে। বিনোদ বসলো চালকের পিছনে। প্রায় ৩০ মিনিট লাগলো তাল হ্রদের পাড়ে পৌঁছতে। সেখান থেকে ইঞ্জিনের নৌকায় আরও ৩০ মিনিট ভলকানো দ্বীপ। আমরা মাঝ হ্রদে, এমন সময় বাতাস ছেড়ে বড় বড় ঢেউ আসতে লাগলো। আমরা বাংলাদেশের মানুষ, আমাদের কাছে এইসব ঢেউ কোন ব্যাপার না। কিন্তু ল্যন্ডলকড দেশ নেপালের মানুষ বিনোদ তো আর এতে অভ্যস্ত নয়। সে দ্রুত লাইফ জ্যাকেট পরে নিলো।

নৌকা ওপারে ভিড়তেই এক নারী একটা পাটাতন সেট করে দিলো আমাদের নামার সুবিধার্থে। ফিরে যাওয়ার সময় তাকে ৫০ পেসো দিতে হবে। আমার শারিরীক কারণে উর্ধমূখী হাঁটায় একটু অসুবিধা হয় তাই আমি একটা ঘোড়া নিলাম। বারবার অনুরোধ করেও ইয়াসমিন বা বিনোদকে ঘোড়া নেওয়াতে পারলাম না। অনেক বছর বাদে ঘোড়ায় চড়া তাই খুবই অস্বস্তি লাগছিলো এবং তাল পাচ্ছিলাম না। তাছাড়া এই ঘোড়াট বেশ ছোট ছিলো। সর্বশেষ চড়তাম বাংলাদেশ আর্মি ভ্যাটেনারি থেকে কেনা “শ্যামা” নামের দৈত্যাকৃতির একটা গেল্ডিং-এ। এক কাকা নিলামে কিনেছিলো। তবে আমি কোনদিনই ওটায় একা দূরে ছুটতে সাহস পাইনি।

যাইহোক, যে ঘোড়াটি নিলাম এর নাম জ্যাক এবং সহিসের নাম জন। জন জানালো আমাদের ৫ কিলোমিটার যেতে হবে তাই আমি যেনো আমার বন্ধুদের বলি ঘোড়া নিতে। আমাদের অবশ্য হাতে সময় কম ছিলো কিন্তু ওরা দুজন আমার কথায় কর্ণপাত করলো না। বিনোদ এর আগেও এখানে এসেছে এবং হেঁটেই উঠেছে। তবে পথে যত মানুষ আমাকে পেরিয়ে যাচ্ছিলো বা বিপরীত দিক থেকে নেমে আসছিলো, তারা সকলেই ঘোড়ায় চড়া ছিলো। আমরা প্রথম যখন একটা বাঁক অতিক্রম করি তখন থেকেই এক নারী এবং একজন যুবক দুটি ঘোড়া নিয়ে ওদের পিছনে পিছনে চলছিলো আর ওদের ঘোড়া নিতে অনুরোধ করে যাচ্ছিলো। ওরা যতোই না না বলোছিলো, তারা তাতে হতাশ না হয়ে ওদের সাথে সাথেই চলছিলো। আমি ঘোড়ায় চড়ার কারণে ওদের থেকে বেশ এগিয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পরে জনকে বললাম একটু বিরতি দিতে যাতে আবার আমরা একসাথে হতে পারি। জন একটা দেঁতো হাসি দিয়ে বললো যে আমার বন্ধুরাও ঘোড়া নিয়ে নিয়েছে। এর কয়েক মিনিট পর আমরা তিনজন আবার এক হলাম। আমি ওদের হালকা ঠাট্টাও করলাম ওদের ঘোড়া নেওয়া নিয়ে। তবে এটা আমাদের সময় বাঁচিয়ে দিলো অনেক।

প্রায় ২৫ মিনিটে আমরা তাল আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখে পৌঁছলাম। এই প্রথম আমি কোনও আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ দেখছি। আসতে আসতে পথে অবশ্য অনেক জায়গাতেই দেখলাম বাষ্প বেরোচ্ছে। কোথাও সরু ধোঁয়া আবার কোথায় বেশ বড়। চুড়া থেকে আবার জ্বালামুখটা অনেক নিচে। জন বললো ওখানে যাওয়া বেশ দুরুহ তবে অনেক সাহসী পর্যটক ওখানে যায়। সেক্ষেত্রে পুরো দিনের প্ল্যান করে আসতে হয়। সব ঘোড়া আবার ওখানে যাওয়ার উপযুক্ত নয়। বড় এবং শক্তিশালী ঘোড়া নিতে হয়। দেখতে পাচ্ছি জ্বালামুখটা একটা পানিতে ভরা পুকুরের মতো হয়ে আছে। ওই পানি সর্বক্ষন ফুটুছে এবং খুবই উত্তপ্ত। তার পাড় থেকেও ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ভাবছিলাম এতো বড়ো একটা মুখ থেকে যখন লাভা উদ্গীরণ শুরু হয় তখন তো আশপাশের কিছুই অবশিষ্ঠ থাকার কথা নয়।

পাশেই একটা শাখা মতো বেরিয়েছে পাহাড়ের। ওটা নাকি আগে ছিলো না। লাভা জমে জমে ওটা তৈরী হয়েছে এবং তার উপর ধুলোর আস্তর জমতে জমতে ওটাও পাহাড়ের একটা শাখার মতো হয়ে উঠেছে। তবে ওটার রঙ তামাটে।

পথে আমাদের বিরতির সময় দুটো ছেলে আমাদের ছবি নিয়েছিলো তাদের ক্যামেরায়। হঠাত দেখি তারা এসে হাজির সেই ছবির ফ্রেমবন্দী প্রিন্টেড কপি নিয়ে। আমরা ফ্রেম ছাড়া সেই ছবি কিনে নিলাম। এবার ফেরার পালা। ঠ্যালা টের পেলাম ঘোড়ায় চড়ে উঁচু থেকে নামতে গিয়ে। মনে হচ্ছিলো এই বুঝি খাদে পড়লাম। ইয়াসমিন জীবনে এই প্রথম ঘোড়ায় চড়েছে কিন্তু তার আচরণের কোনও নার্ভাসনেস দেখলাম না। সমানে তার ঘোড়ার সহিস নারীর সাথে গল্প করে চলেছে।

নেমে এলাম আমরা, হ্রদ পার হলাম। এবার কিন্তু আর তেমন বাতাস বা ঢেউ ছিলোমা। সুর্য তখন ডুবছে। ইয়াসমিন আর আমি তখন চাইমের কিছু পুরোনো গানের কলি ভাজছি।

তারপর ফিরে চললাম ম্যানিলার পথে যেভাবে এসেছিলাম সেভাবেই। তবে রাস্তার জ্যাম এড়াতে ম্যানিলা শহরে ঢোকার আগেই পাছায় রতনদা থেকে ট্রেনে চাপলাম।

(জীপনির ছবিটি গুগল থেকে নেওয়া)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর বিবরনে সুন্দর সব ছবি। মন ভরে গেল।
অপর্ণা মিতু

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ জানবেন অপর্ণা মিতু। হাসি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

শেষের ছবিটা কি অসাধারণ!

গুহাটি খুবই ছোট ও অগভীর কিন্ত রিসর্ট কর্তৃপক্ষ ওটাকে বেশ সাজিয়ে রাখার ফলে গুহা বলতে আমাদের মনের চোখে যেমনটি ভেসে ওঠে ঠিক তেমনটি নয়।

আমাদের এমন অনেক প্রাকৃতিক নিদর্শন থাকলেও যত্নের অভাবে সেগুলো দেশী-বিদেশী পর্যটকদের চোখের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে!

পোস্ট উপভোগ্য।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

যত্নের খুবই প্রয়োজন। আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন অনেক প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক নিদর্শণ বিদ্যমান। তবে সৌন্দর্যায়ন করতে গিয়ে এর আসল রূপটি নষ্ট করার কোনও মানে হয়না।

আপনাকে ধন্যবাদ অতিথি। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মন মাঝি এর ছবি

এই প্রথম আমি কোনও আগেয়গিরির জ্বালামুখ দেখছি।

চিন্তিত

চলুক

****************************************

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

টাইপো ঠিক করে দিয়েছি। ধন্যবাদ মাঝি ভাই। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মন মাঝি এর ছবি

-

****************************************

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চোখ টিপি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ভাল লাগলো ভ্রমণ কাহিনী।

কি যেন একটা ধাঁধাঁ ছিল,

ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল,
৬ মাসের পথ মর্দ, ৬ দিনে গেলো

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

হ্যাঁ, এটা তো বহুল প্রচলিত। কিন্তু এটা আমার কাছে এখনও ধাঁধাঁ কারণ ঘোড়ায় চড়িয়া চলিলে আবার হাঁটিয়া চলিলো কেমনে?

ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

বাহ, বাহুল্যবর্জিত বর্ণনা, সেই সাথে ঝকমকে ছবি। পড়ে আরাম পেলুম।

তরুণ বয়সে একবার ঘোড়ায় চড়বার ট্রেনিং নিতে হয়েছিল। বাধ্যতামূলক ছকে বাঁধা ট্রেনিং। অ্যাডভেঞ্জারের চাইতে সেখানে কৌশল রপ্ত করার প্রয়াসই বেশি। দাবা খেলায় ঘোড়ার আড়াই ঘরের চালের কথাই কেবল জানা ছিল। প্রথম দিনের ট্রেনিঙয়ে শেখালো ঘোড়ার চার চালের কথা-- ওয়াকিং, ট্রটিং, ক্যান্টারিং, গ্যালোফিং। তারপর ঘোড়ায় চড়িয়ে দেয়া হলো শিক্ষার্থীদের। দশাসই দশটি ঘোড়ায় চড়ে বসেছি আমরা দশজন শিক্ষার্থী। মাথায় কাউবয় হ্যাট। তিনজন করে গুড-ব্যাড-আগলির গ্রুপ। আর সবশেষে আমি--দলছুট নিমাই। ঘোড়া চলা শুরু করলো। গদাই-লস্করি চালে। বেশ মজাই লাগছিলো। কিছুদূর পেরিয়ে ট্রেনার স্বর উঁচু করে দীর্ঘ হাঁক দিলেন--ট্র-অ-অ-ট। হাঁটা পরিবর্তন করে ঘোড়া চলা শুরু করলো দুলকি চালে। ওরে বাবা, আমরা কিছু টের পাবার আগে টের পেল আমাদের পশ্চাতদেশ! সেদিনের ট্রেনিং শেষে ঘরে ফিরতে হয়েছিল অবশ পশ্চাতদেশ নিয়ে। এখনও অশ্বারোহণের রোমাঞ্চের সাথে সাথে হর্স ট্রটিং-এর আতঙ্ক আমায় অল্প হলেও পেয়ে বসে। অজান্তেই পশ্চাতদেশ পরীক্ষার প্রবণতায় বাম হস্ত পশ্চাতগামী হয়।

বহুদিন পর লিখলে! যাক তবু লিখলে! হাসি

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমাদের কৈশোরে মিনাবাজার হলে জাহানাবাদ সেনানিবাস থেকে ঘোড়া আসতো। বিশাল বিশাল একেকটা স্ট্যালিয়ন, গেল্ডারিং। ১ টাকায় ১৬ ঘুল্লি তবে পয়সা না থাকলেও ট্রেইনারেরা ফ্রি ৬-৮ ঘুল্লি দিয়ে দিতো। ওটা ছিলো কেবলমাত্র ছোটদের জন্য, বড়দের উঠতে দেওয়া হতো না। শ্যামার পিঠে অনেক উঠলেও বেশি ট্রটিং করিনি ভয়ে। আর পশ্চাদ্দেশের বেদনা তো আছেই। শ্যামা তো অনেক প্রশিক্ষিত ঘোড়া ছিলো কিন্তু তার পরও আমার বেশি সাহস হয়নি।

ধন্যবাদ দাদা। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বাহ্! দারুণ অভিজ্ঞতা!হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ মুরুব্বী। আমি ঢাকায় ফিরে কল দেবো। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বাহ্! দারুণ অভিজ্ঞতা!হাসি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

সুন্দর। গৃহবন্দি আমার চোখের দেখাই সুখ।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ জানবেন সুলতানা সাদিয়া। হাসি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সুলতান এর ছবি

অনেকদিন পরে লিখলেন ভাই! ভাল্লাগছে লেখা।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ মানিক। অনুপা আর তুমি কেমন আছো? হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মরুদ্যান এর ছবি

জ্বালামুখ এত বড়!!! আগ্নেয়গিরির তাহলে মোটামুটি পুরোটাই পানির নীচে?

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

সেটাই হওয়া স্বাভাবিক। চুড়াটা সমতল থেকে কৌণিক ৫ কিলোমিটার, সে হিসেবে খাড়া ভাবে হয়তো ২ কিলোমিটার হবে। সেখান থেকে আবার খাড়া ৫০০ মিটারের মতো নিচে হবে জ্বালামুখের পুকুরটি। আমি অবশ্য পুকুরটির গভীরতা কতো তা জানিনা।

ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

শাব্দিক এর ছবি

নতুন দেশের গল্প শুনতে আর ছবি দেখতে বেশ ভাল লাগল।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

একা পথিক_ এর ছবি

দারুন !!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।