গ্রানাডার পথে...-২

কবি এর ছবি
লিখেছেন কবি [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৯/১০/২০০৮ - ২:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গ্রানাডা আসার পরের ৩দিন সুখকর ছিল না।

গ্রানাডা ছিমছাম মাঝারী গোছের শহর, আর পাচটা ইঊরোপীয়ান শহরের মতই সাজানো-গোছানো। আর এই এই শহরেই শুরু করতে হল বাসা খোজার অভিযান।

দেশে তো টু-লেট লেখা দেখলেই বাসায় ঢু মেরে জিজ্ঞেস করলেই হয়। কিন্তু এখানে? এইখানে সিস্টেম হল বিদেশী ছাত্রদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিজে থেকে খালি বাসার তালিকা নতুন ছাত্রদের বিতরন করে। সেখানে বাসার বর্ননা ও দামদর বিস্তারিত দেওয়া থাকে।যদি বাসা দেখতে চান তাহলে যোগাযোগের টেলিফোন নাম্বার দেয়া আছে, কথা বলে টাইম টেবিল ঠিক করতে হয়। আর এখানেই হল যত বিপত্তি। প্রায় ৯৯শতাংশ বাড়ীওয়ালা ইংলিশ বোঝে না।তার ঊপর এখানে আবার বাসা ভাড়া করতে হবে কম করে ১ বছরের,কিন্তু আমার ২য় সেমিস্টার ফ্রান্সে,আমাকে ৫মাসের জন্য ভাড়া নিতে হবে । ৪-৫টা ফোন করে বুঝে গেছি আমারে দিয়ে হবে না।

ঊদ্ধার করল আমাদের মাস্টার্স এর স্প্যানীশ পোলা "আইটর"। সেও ৪-৫টা ফোন করে ২টা আপোয়েন্টমেন্ট নিতে পারল। ২য় বাসাটা পছন্দ হয়ে গেলো। ৮তলায়, জানালা দিয়ে আল-হামরা প্রসাদের মাথা দেখা যায়। বাসার সামনের বড় দালানটা না থাকলে অনেকটা দেখা যেত।বাসার মালিক স্পেনের ন্যাশ্নাল পুলিশ। এখানে পুলিশ দুই কিছিমের,লোকাল আর ন্যাশ্নাল। ভদ্রলোক ভাংগা ভাংগা ইংলিশ বলে। অনেক করে বুঝায়া বললাম যে ৫মাস পরে আমার জায়গায় ফ্রান্স থে্কে পোলাপান আসবে, সেখান থেকে কেঊ আমার রুমে ঊঠে যাবে। অবশেষে রাজি হলেন, মাসপ্রতি ২২০ ইঊরো কেবল রুমের ভাড়া, সাথে হাবিজাবি বিল নিয়ে ২৬০ এর মত পড়বে। নিয়ে নিলাম । ঐদিন রাতেই ঊঠে গেলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা আসা মাত্রই ঘাড়ের ঊপর চড়ে বসল। সকালে স্প্যানীশ ভাষার ক্লাস আর বিকালে মাস্টার্স এর ক্লাস। এদিকে প্রফেসর আবার বাংলাদেশ নিয়ে আমাকে প্রেজেন্টেশন দিতে বলছে। এই বাংলাদেশ নিয়ে এই ভিডিওটা বেশ চমতকার।

স্প্যানীশ ভাষার ক্লাসে বার জন। বেশীরভাগ আমেরিকা থেকে আসা টিনেজ পোলাপান। জার্মানী আর নেদারল্যান্ড এর ইরাস্মাস স্টুডেন্ট ২জন আছে। মাস্টার্স এর পিচ্চি ক্লাস, ২জন স্প্যানীশ, ২জন চাইনিজ, ১জন আ্মেরিকান আর আমি।

আমেরিকান টিনেজ পোলাপাণের সাথে ক্লাসে প্রথমে কেমন কেমন জানি লাগত। ক্লাসে বালিকাই বেশী। এরা কেবল কল কল খল খলই করে না, ঊহা শুনি্য়া পরা্নটাও কিঞ্ছিত ছল ছল করিয়া ঊঠে। ২-৩ দিনের মাঝেই সব বন্ধু হয়ে গেলো।

আমি আর চাইনিজ ২ডা হইল স্প্যানীশ ক্লাসের সবচেয়ে বড় আবা্ল। স্প্যানীশ সংখ্যা পড়ানো ্মাত্রই সবার বয়স বলা শুরু হয়ে গেলো। নিজেকে বুড়া হিসাবে আবিষ্কার করলাম। ভেইন্টি -ই কুয়াত্রো (২৪) হয়েও আমি ক্লাসের বুড়াদের একজন।

এক্ মাসের ইন্টেন্সিভ স্প্যানীশ ভাষার ক্লাস শেষ হয়ে গেলো। লিখিত মৌখিক দিলাম। রেজাল্ট জানিনা, মনে হয় পাশ করছি।

মাস্টার্স এর ক্লাস ক্লাসের মত চলে আমি আমার মত চলি, প্যাচ টা লাগে যখন এসাইন্মেন্ট প্রেজেন্টেশনের টাইম গুলা একদম নাকের ডগায় চইলা আসে....................


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

বয়সে বুড়া হইলে কি, সাইজে বাঙালী দেখতে তো ছোটই।
(আপনে বাঙালী তো?) চিন্তিত
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

কবি এর ছবি

খাটি বাংলাদেশী।

শাহান এর ছবি

ভাল হচ্ছে .... আগেরবারের তাড়াহুড়া ভাবটা কমে আসছে ।

কবি এর ছবি

আপনি কি CIT02 এর শাহান?

রণদীপম বসু এর ছবি

চিন্তা কইরেন না। এমরিকান মাইয়ারা নাকি বুইড়া ফ্রেন্ড পছন্দ করে ! সব ঠিক হইয়া যাইবো।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

কবি এর ছবি

এই টিনেজারদের ফ্রেন্ড তো হয়েই গেছি।
তয় বুজেনই তো বাংগালী ফ্রেন্ড আর আমেরিকান পাই এর ফ্রেন্ড এর মাঝে বিস্তর ফারাক।
ঃ=(

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এই পর্বটা অনেক ভাল হইছে ... তাড়াহুড়া কইরো না, বেশি বড় হয়ে গেলে সব লেখার দরকার নাই, বাট যেটুকু লিখবা ডিটেইলসে লেখার চেষ্টা কইরো ... আর সাথে ছবি দিতে পারলে আরো ভালো হবে ...

আমার স্পেন যাওয়ার খুব শখ ... বিশেষ করে বার্সেলোনায় ... ন্যু ক্যাম্পে বইসা একটা খেলা দেখতে পারলে আর কিছু লাগে না ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

কবি এর ছবি

স্পেনের কনফারেন্সে পেপার দে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।