খুদে রসগল্পের এই সিরিজে প্রকাশিতব্য অধিকাংশ গল্পই সোভিয়েত যুগের। রুশ ছাড়াও ইউক্রেনীয়, বেলারুশীয়, জর্জিয়ান বা অন্য সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর লেখকদের লেখা গল্পের অনুবাদও ছাড়া হবে এই সিরিজে। গল্পগুলো অবশ্যই মজার কৌতুকের মতো হাসি-উদ্রেককারী নয়, তবে পাঠকদের মনের ভেতরে একটা মুচকি হাসি যদি অন্তত জেগে ওঠে, তাতেই আমার তৃপ্তি।
অধিকাংশ গল্পই রুশ ভাষা থেকে অনূদিত। কয়েকটি ইউক্রেনীয় থেকে।
আজকের গল্পটি এক ইউক্রেনীয় লেখকের।
ঋণস্বীকার: সিরিজের নাম আমি ঠিক করেছিলাম "রুশ রসগল্প"। পরে হিমুর প্রস্তাবিত স্মৃতিজাগানিয়া "ছোট্ট গোল রুটি" নামটা খুব মনে ধরে গেল।
_________________
উপন্যাস রচনারহস্য
ভাসিলি দেনিসভ-মেলনিকভ
- আমাকে এখন যেতে হবে, - বললো লেখক পেত্রোভের পরিচিত এক মেয়ে। একসঙ্গে সিনেমা দেখার পর সে এসেছে লেখকের ঘরে। - কফির জন্য ধন্যবাদ।
- নাকি থেকে যাবে?
- এটা কি ভূমিকা?
- ভূমিকা নয়, আস্ত এক উপন্যাস, - চালাকি করার চেষ্টা করলেন পেত্রোভ।
- লেখকদের পরিভাষা বড়ো একটা বুঝি না আমি, - কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো নিনা। - তারচে’ সোজাসুজি বলো, কবে আমরা বিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে যাবো?
- শোনো, নিনা, - কী উত্তর দেবেন লেখক পেত্রোভ, ঠিক বুঝে উঠে পারছিলেন না, তবু বুদ্ধি করে বললেন, - পাঠকের দরবারে উপন্যাস পেশ করার আগে রাফ কপি লিখতে হয়।
- ঠিক আছে, রাফ কপিই লেখা হবে, - সম্মতি জানিয়ে মাথা নাড়লো নিনা। - কাল থেকেই কোনও আফ্রিকানের সঙ্গে প্রেম শুরু করে দেবো (রুশ ভাষায় ‘রাফ কপি’ বর্ণিত হয় ‘কালো কপি’ হিসেবে। - স. এ. স.) । - টেবিল থেকে ভ্যানিটি ব্যাগ তুলে নিয়ে সে হাঁটা ধরলো দরজার দিকে।
- দাঁড়াও, - প্রায় চিত্কার করে বললেন লেখক। - শুরুতেই আমাকে সূচিপত্র দেখাচ্ছো কেন?
দরজার পাশে দাঁড়ালো নিনা। পেত্রোভ তার কাছে গিয়ে মানভঞ্জনের চেষ্টা করলেন।
- তুমি নিশ্চয়ই জানো, প্রচ্ছদের নিচে কী আছে, তা বই কেনার আগে দেখে নিতে হয়, - তাঁর হাত ‘পৃষ্ঠা ওল্টানোর’ চেষ্টা করলো।
শোনা গেল চড়ের শব্দ। হাত সরিয়ে নিলেন পেত্রোভ।
- প্রচ্ছদের নিচে কী আছে, তা দেখার মানেই বইটা ভালো করে পড়ে ফেলা নয়! - মর্মভেদী দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকালো নিনা। - তারচে’ বড়ো কথা, কথা হচ্ছিলো রাফ কপি বিষয়ে। - হাত রাখলো সে দরজার হাতলে। - আমি চললাম আফ্রিকান ছেলে খুঁজতে।
- একটু দাঁড়াও, - তিক্তস্বরে বললেন পেত্রোভ। - আমি বলেছি শুধু রাফ কপির কথা, আর অমনি তুমি নিজেকে কার্বন পেপারের নিচে ফেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছো।
- তুমি অমন করে কথা বললে ব্যস্ত হয়ে তো পড়বোই, - ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো নিনা। - আমার আর কিচ্ছু কলার নেই, - কান্না-ভেজা চোখে সে তাকালো পেত্রোভের দিকে।
- কালই যাবো বিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে, - হার মেনে নিলেন পেত্রোভ। - শুধু এখন কেঁদো না।
নিনা আশ্বস্ত হলো।
- এই তো লক্ষী মেয়ে, - পেত্রোভ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। - এখন কি দেখতে পারি, কী আছে প্রচ্ছদের নিচে?
- কী আছে, তা তো সবাই জানে, - মুচকি হেসে বললো নিনা। -আছে শিরোনাম লেখা পৃষ্ঠা।
#
সকালে ঘুম থেকে উঠে নিনা বললো তৃপ্ত স্বরে:
- এখন বুঝলাম, কী করে উপন্যাস লেখা হয়।
- আর আমি বুঝলাম, বই কী করে বাঁধাই হয়, - দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন লেখক পেত্রোভ।
মন্তব্য
হো হো হো হো হো ... কায়দাটা দারুণ মনে ধরেছে। প্রয়োগ করার মতো বই খুঁজতে হবে একটা।
হাঁটুপানির জলদস্যু
নানাবিধ (সমাপ্ত বা অসমাপ্ত) উপন্যাস লেখার চেষ্টায় আমাদের, পুরুষদের, জীবন কেটে যায়
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
- আপনে কি মিয়া খাইষ্টা জিনিষ ছাড়া ভালো জিনিষের বুননে অভ্যস্ত নন?
আস্তাগফিরুল্লাহ দশবার পড়লেও তায়াম্মুম করা ছাড়া গতি নাই।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনের জ্বালায় এইসব ছাইড়া 'সহজ ধর্মশিক্ষা' টাইপের লেখা শুরু করতে হইবো
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ধন্যবাদ। আমি পুলকিত
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
হুই মিয়া,
আপনার লেখায় আর স্বনামে কমেন্ট করার সাহস পাইতেসি না, সেইজন্যে বেনামে।
জব্বর হইসে। সুবহানাল্লাহ।
বেনামে কমেন্ট করলেও পাবলিক তো ঠিকই বুঝে ফেলেছে অরণ্যের ভেতরে কে
প্রশংসা পেলে কৃতার্থ হয়ে যাই
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
'ছোট্ট গোল রুটি' গল্পটা প্রথমে বলে নিলে ভাল হতো না?
অসাধারণ গল্পট ওটা, অনেকেই পড়ে নি....
- অপ্রিয়
প্রিয় অপ্রিয়
ঠিকই বলেছেন। পুরো রূপকথাটা না হলেও অন্তত নামের শানে-নজুলটা বলে নেয়া উচিত ছিলো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
অসাধারণ!
তুমুল!
কঠিন!
চলুক।
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
আপনার মন্তব্যটা পড়ে এতোটাই জোশ পেলাম যে, কাল-পরশুর মধ্যে দ্বিতীয় পর্ব নামিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হলো না।
ধন্যবাদ দিয়ে আপনার উচ্চতা হ্রাস করতেই হচ্ছে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
এইটা একটু হাই থটের। দুইবার পড়া লাগছে।
সকল কৃতিত্ব গল্পকারের। অনুবাদকের ভূমিকা নেহাতই নগণ্য।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
গুল্লি না একেবারে গ্রেনেড . . . . .
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
লেখকের সঙ্গে চেনাজানা থাকলে বা তাঁর ঠিকানা-ফোন নাম্বার জানলে আপনার এই প্রতিক্রিয়া তাঁকে অতি অবশ্য জানাতাম। অবশ্য জানাতে গিয়ে কপিরাইট আইন ভঙ্গের কারণে ধরা খাবার সম্ভাবনাও তাতে থাকতো
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
উপন্যাস লেখা দূরের কথা, এখনো তো গল্পই মাথায় আনতে পারলাম না!
অনেকেই ছোট ছোট গল্প লিখে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তার পরেই কেবল হাত দেয় উপন্যাস রচনায়। অনেকের ছোট গল্প কোন অজান্তে উপন্যাসে পরিণত হয়ে বের হয় বই আকারে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
পঠিত বলে সিল মারা হল।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
পঠিত বলতে আপনি বুঝিয়েছেন আমার লেখা নাকি আমার লেখায় উল্লেখিত উপন্যাসের কথা?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
(বিপ্লব)
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বিপ্লব রহমানের বিপ্লব মানে তো বিশাল ব্যাপার!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
জটিলস্য!
বুদ্ধি কম তো, তাই (প্রথম পড়ায়) পুরোপুরি বুঝতে পারলাম না
সিরিজের নামটা অভিনব।
_______________
বোকা মানুষ
ওরে সব্বোনাশ! সেরাম গল্প!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
নতুন মন্তব্য করুন