পরিবর্তন

রেশনুভা এর ছবি
লিখেছেন রেশনুভা (তারিখ: রবি, ২০/০৯/২০০৯ - ৬:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


১...
টিভির ঘোষিকাদের মাথার কাপড় আর দেখা যায় না। বারংবার প্রচারিত হয় সেই বহুল পরিচিত গান। মা ব্যস্ত হয়ে ওঠেন রান্নাঘরে। এক ফাঁকে ঘুরে আসি ছাদ থেকে ঐ একফাঁলি চাঁদ দেখার আশায়। বাইরে পটকা ফেটেই যাচ্ছে। অনেক রাতেও শোনা যায় রিকশার টুংটাং শব্দ। শুনতে শুনতেই ঘুমিয়ে পড়ি; খুব ভোরে উঠতে হবে যে কাল তাই।

২...
সবাই মিলে জড়ো হই মার্কেটের কোন এক কোণায়। শুরু হয় গুলতানী আর বিড়ি টানা। একটা বিড়িই ঘুরে বেড়ায় এই ঠোঁট থেকে ঐ ঠোঁটে। কোন বন্ধুর অশ্লীল, আধা-অশ্লীল কৌতুকে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ি সবাই। মাঝে মাঝে গরম এক ঝলক বাতাস ভাসিয়ে নিতে চায় সবাইকে। আর যদি ভাগ্য বিশেষ প্রসন্ন হয় তাহলে ঐ এক চিলতে হাসি নিয়েই কাড়াকাড়ি পড়ে যায় সবার মধ্যে। সবারই দাবী “তোদের ভাবী”। রাত আরও বাড়লে পড়ে আগামীকালের পরিকল্পনা চুড়ান্ত করে তারপর বাড়ি ফেরা।

৩...
ও এসেই বলে বেশি সময় দিতে পারবে না। মৃদু হেসে সায় জানাই এই ভেবে যে নিজেই পরে সময়ের হিসেব গুলিয়ে ফেলবে এই আশায়। রিকশায় উঠেই টুকটাক খুনসুটিতে মেতে ওঠা হয়। রিকশা এসে থামে কোন এক কোলাহলপূর্ণ ব্যস্ত বিপনীবিতানের সামনে। পাশাপাশি হাঁটার মত জায়গা দিতে চায় না কেউ। অগত্যা ও সামনে আর আমি পিছনে। ও থামলে পরে আমাকেও থামতে হয়। দু’য়েক পাতা টিপ পছন্দ করে আমার দিকে তাঁকায়; চোখের ইশারায় সম্মতি দেই। এভাবেই আরও সামনে এগিয়ে যাই; ভুলে যাই ঘড়ির কাঁটাটা যে টিক টিক করে ঘুরছেই। বাসার মোড় পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে যাই ওকে, সাথে নিয়ে প্রতিশ্রুতি কাল দেখা করার।

৪...
সকাল-দুপুর কাঁটিয়ে দেই ঘুমিয়ে। বিকালটা পার হয় একটা গল্পের বই কে সঙ্গী করে আর রান্নাঘরে বাসন-কোসন ঠোঁকাঠুঁকি করে। আর একটু সন্ধ্যা হতেই বেরিয়ে পড়ি। হেঁটে বেড়াই এদিক-সেদিক, এখানে-সেখানে। সময়টাকে বড্ড বেরসিক মনে হয় একেবারেই কাঁটতে চায় না বলে। পা দু’টো যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখন ততোধিক ক্লান্ত মনটাকে টানতে টানতেই ঘরে ফেরা হয়। ফিরে যাই নীরব সাথী ল্যাপটপের কাছে। ফেসবুকের পাতাটা দেখেই মনে পড়ে কাল তো ঈদ।

[উপরের ঘটনাগুলো একই দিনের ভিন্ন ভিন্ন বছরের। কোন একটা সময় হয়ত এত পরিবর্তিত ‘আমি’কে আর চিনতেই পারব না।]


মন্তব্য

শাহান এর ছবি

আহা !!
১... টাই ফিরে পেতে চাই সারাজীবন ...

খুব ভাল লাগল লেখাটা রেজওয়ান ভাই ।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

ঈদ নিয়া এত ভাইবা লাভ নাই ... ঘুম যান, বিকালে উঠেন, সিনেমা দেখেন একটা, ম্যান ইউ-ম্যান সিটির খেলা আছে, দেখেন ... দিন শেষ দেঁতো হাসি
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

মূলত পাঠক এর ছবি

ভালোই। তবে কতগুলো অতিরিক্ত চন্দ্রবিন্দু চোখে পড়লো: একফাঁলি, তাঁকায়, কাঁটিয়ে, ঠোঁকাঠুঁকি, কাঁটতে।

দ্রোহী এর ছবি

যা বলতে চাচ্ছিলাম মূলোদা ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

তারপরেও প্রতিটা দিন ভালো কাটুক।

রেনেসাঁ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

লেখাটা খুব ভালো লাগল। আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগল। ঈদের ঘটনা গুলো এমনি । সময়ের সাথে এর পরিবর্তন হয়।

দলছুট।
=========
বন্ধু হব যদি হাত বাড়াও।

রেশনুভা এর ছবি

যারা পড়লেন সব্বাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর আমারে চন্দ্রবিন্দু ভুতে পাইছে। আন্তরিকভাবে দুঃখিত ভুলগুলোর জন্য।
ঈদ মোবারক।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

এটাই...

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

তানবীরা এর ছবি

ঈদ - পার্বণ, ভ্রান্ম ধারমা, কান্না কাটি করে শরীর নষ্ট করিয়েন না
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মিঠু-IUT এর ছবি

অসাধারন সুন্দর হইছে---

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।