ছেলেটার কৈশোরও কেটে যায় ঐ গাছের ছায়ায়। দুরন্ত দুপুরে, অলস বিকেলে অথবা স্নিগ্ধ গোধূলি বেলায় কখনও বন্ধুদের সাথে; কখনওবা একা একা কারো কথা চিন্তা করে। কোন একদিন সন্ধ্যায় গাছটাকে জড়িয়ে ধরেই খুব কেঁদেছিল ও; লক্ষ্মীর বিয়ের দিন। লক্ষ্মীদের বাড়ি ওদের পাশেই। দু’জনের বেড়ে ওঠা একইসাথে; একই বাঁশঝাড় আর পুকুর ঘাট কে সাক্ষী রেখে। ঐ বয়সে কি আর ওভাবে ভালবাসা হয়; তবে ভাললাগাটুকুর কমতি ছিল না। তাইতো ওর ভাললাগার মানুষটির চলে যাওয়া দেখে অবাধ্য নোনাজল গড়িয়ে পড়েছিল; পরিণত হয়েছিল নিঃশব্দ কান্নায়।
একটা সময় আমাদের এই ছেলেটাও পা বাড়ায় ঘরের বাইরে। ইট, পাথর, বালির নগরীতে ঘুরে ঘুরে ওর মনটা পরিণত হয় কংক্রীটের দেয়ালে। মুছে যায় একেবারেই পুরোনো দিনের ছোপ ছোপ দাগগুলো। এখন ও জানে কাঁটা চামচ আর ছুরি কিভাবে ধরতে হয়। ভুলে যায় ঘুড়ির লাটাই ধরা। ভুলে যায় সেই সন্ধ্যাটার কথা; গাছটার কথাও কি ভুলে যায় ও?
অনেকদিন পরে আবার গ্রামে আসে ছেলেটি। এখন সে মধ্যবয়সী একজন। আজ ওদের বাড়ীটা বড্ড চুপচাপ; বাতাসে ভেসে আসে আগরবাতির গন্ধ। কেমন অস্থির লাগে ওর। বেরিয়ে যায়; হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যায় এমন একটা জায়গায়, খুব পরিচিত লাগে। কি যেন খোঁজে ও।
মাঠের এক ধারে সেই গাছটা কিন্তু এক দেখাতেই চিনতে পারে ও কে। নিজের কথা ভেবে লজ্জিত হয় গাছটা। আজ কি তবে ছেলেটা ওকে জড়িয়ে ধরবে না?
দূর থেকে পাঁচ-ছয় বয়সের একটা বাচ্চা খালিপায়ে এদিকেই এগিয়ে আসে। কিছুদূর এসেই বাচ্চাটা অবাক বিস্ময়ে দেখে ওর বাবা একটা পুড়ে যাওয়া গাছ জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন।
গাছটা ঝলসে গিয়েছে বজ্রপাতে, গতরাতের ঝড়ে।
মন্তব্য
দারুণ লিখেছেন রেশনুভা ভাই। পড়তে পড়তেই শেষ হয়ে গেলো, আর একটু কী বড় করা যেত না? যেই গল্পে ডুব দিলাম, তখনি দেখি পাড়, আর সাঁতার কাটা হলো না। তারপরও তৃপ্তি পেলাম।
ধন্যবাদ সুন্দর লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
দলছুট।
ধন্যবাদ দলছুট ভাই।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
ভাল লাগল... আরেকটু বড় হলেও খারাপ হত নাহ...
এটার শুরুটা ছিলো পূর্ণাঙ্গ গল্পের মত। কিন্তু কার্যত দেখা গেলো অণুগল্প। শেষটায় আসলে আমার একটু ভিন্ন আশা ছিলো...।
সে যাকগে- আশা করি পরেরটায় আরো জমাটি হবে।
---------------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
আশাহত করার জন্য দুঃখিত।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
- বেশ লাগলো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
ভালো লাগলো গল্পটি।
শেষটা ভাল লেগেছে
সুন্দর হয়েছে।
তবে আরেকটু বর্ণনা দিয়ে দীর্ঘ পরিসরে লিখলে ভালো হত। আমরা ঐ যুবকটির সাথে আরো বেশি একাত্ম হবার সুযোগ পেতাম।
আপনার দু-লাইনের উৎসর্গটা তাহলে আরো যথার্থ হত বলেই মনে হয়।
আরো লেখা পড়াত চাই। সময় নিয়ে লিখুন।
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
ঠিক কথা। কিন্তু বড় করে লিখতে পারি না ... । অগোছালো হয়ে যায়। এর পরে না হয় চেষ্টা করে দেখা যাবে। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
মন ছুঁয়ে গেছে লেখাটি।
সত্যি? অনেক ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
চলুক
জ্যোতি, ধুগো, তানিম, জুয়েইরিযাহ মউ, সাফি, মধ্যসমুদ্রের কোলে ... সবাইকে অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে এইসব আবজাব পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
নতুন মন্তব্য করুন