গুটিগুটি পায়ে ছোট্ট মেয়েটা ঘরময় হেঁটে বেড়াচ্ছে। একটু আগেই মা মাথায় ঝুঁটি বেঁধে দিয়েছেন। ওর হাঁটার তালে ছোট্ট ঝুঁটিদু’টো এদিক ওদিক দোল খায়। ড্রেসিং টেবিলের কাছে এসেই হাত বাড়িয়ে দেয় ও। পাউডার কেসটার প্রতি ওর অসীম আগ্রহ। এইতো সেদিন পাউডার কেসটা নামিয়ে মেঝেতে বসেই উল্টিয়ে ফেললো আর তারপর ওর সে কী আনন্দ। মা ছিলেন না তখন বাসায় আর নানু রান্নাঘরে। আর সেই সুযোগে নিজের মুখেই চুনকাম করা হয়ে গেলো মেঝেতে ফেলে দেওয়া পাউডার দিয়ে। আজও হয়ত ওরকম কিছুই ঘটতো যদি না হঠাৎ করে মা এসে কোলে তুলে নিতেন।
আজকে না কী ওরকম কিছু করা যাবে না, মা বলেছেন। সুন্দর জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যাবার ভয় আছে। তাই মেয়েটার আর খুব বেশি মন খারাপ হয় না। ওর গায়ে আজ খুব সুন্দর একটা গোলাপী ফ্রক। কোমরের কাছে আবার অনেকগুলো কাপড়ের ফুলও আছে। সেই ফুলগুলোর মাঝে আছে আবার ছোট্ট ছোট্ট সাদা গোল গোল জিনিস। ও ভালো করে দেখার জন্য জামাটা পরিয়ে দেয়ার সাথে সাথেই একটা ছিঁড়ে ফেলেছিল। মা তাই দেখে একটু চোখ পাকিয়ে তাকিয়েছিলেন। পরে মার কাছে শুনেছে ওগুলোকে পুঁতি বলে; কক্ষনো গিলে ফেলা যাবে না, পেটে তাহলে পুঁতির গাছ হবে। জামাটা অবশ্য ওর কাছে বেশ ভালোই লেগেছে কিন্তু এখন একটু গরম ও লাগছে।
বাসার দেয়ালে অনেক বেলুন ঝোলানো। আজ সারাদিন ধরেই ওর মামারা এই কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। সকালের দিকে ও তখন আপনমনে বিছানায় বসে খেলছিলো। ছোট মামা এসে বেলুন দিয়ে গিয়েছিলেন দুটো কিন্তু সব্বাই অনেক ব্যস্ত বলেই হয়তবা ওর পাশে বসে কেউ খেলেনি। ওর ও আর এখন আগের মতন মন খারাপ হয় না। আপনমনেই দুষ্টুমি করে যায়।
এখন ও মার কোলে। মা ওকে কোলে নিয়ে এঘর থেকে ওঘরে যান। মায়ের কোলে বসে থাকতে অনেক ভালো লাগে। ও মায়ের গলার চেইনটা ধরে থাকে। বাসার কলিংবেলটা বেজে উঠলে পরে মা ওকে নানুর কাছে রেখে ড্রয়িংরুমের দিকে চলে যান। ও আলতো পায়ে এসে দরজার কাছে দাঁড়ায়। দেখে, মা ঐ যে ঐ নতুন লোকটা, তার সাথে কথা বলছেন। ইদানীং প্রায়ই ঐ লোকটাকে এ বাসায় আসতে দেখে ও। ওর দিকে তাকিয়ে কী যেন বলে লোকটা; ও কিছু না বলেই আবার নানুর কাছে চলে আসে। লোকটা এখন ওদের সাথেই অনেক সময় কাটায়। বিকালে মার সাথে বাইরে বের হলেও লোকটা সাথে থাকে। ওর একদমই ভালো লাগে না। মেয়েটা আবার খেলনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
ওর খেলনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় লাল ঠোঁটের এই টিয়া পাখিটা। পাখিটার গা ভর্তি সবুজ রঙ। অনেকদিন আগে থেকেই এই পাখিটা ওর সাথে সাথেই আছে। আগে পাখিটা ঝোলানো ছিল একটা আংটার সাথে। ও দূর থেকেই দেখত। যখন বাতাসে দুলে উঠতো পাখিটা ওর মনে হত পাখিটা যেন লাল ঠোঁটটা দিয়ে ওকে ছুঁতে চায়। অনেক ভালো লাগতো তখন ওর। ক’দিন আগেই জেদ করে পাখিটাকে নামিয়ে এনেছে ও। এখন ওর সাথে সাথেই থাকে। পাখিটার ডানা ধরে সোজাসুজি রেখে ও পাখিটাকে দেখে আর আদর দেয় পাখিটাকে। মাঝেমাঝে কোলের মধ্যে পাখিটাকে জড়িয়ে ধরে রেখেই ঘুমিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর ওর মা ওকে নিয়ে যায় বাইরের ঘরে। ওখানে বেশ কিছু লোক দেখে ও। সবাইকে ও চেনেও না। সুন্দর একটা কেক দেখতে পায় ও আর পাশে জ্বলছে দু’টো মোমবাতি। ও শুধু মার হাত ধরেই কেক কাটে।
মেয়েটার টিয়া পাখিটাকেও নিয়ে আসতে খুব ইচ্ছে করছিল কেক কাটার সময়।
ঠিক কাছাকাছি সময়েই অন্য কোন এক বাসার দেয়ালে একটা ছবি টাঙানো দেখা যায়। একটা ঝুলন্ত সবুজ রঙের টিয়া পাখি আর পাশে দাঁড়ানো এক বাবার কোলে তার শিশুকন্যা – এটুকুই দেখা যায় ছবিটাতে।
কোনো ধূলো জমে নেই ছবির ফ্রেমে; কেউ নিশ্চয়ই রোজ মুছে দেয়।
মন্তব্য
কি মায়াবী গল্প....
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেকদিন পর ভ্রাতা ফর্মে ফিরিয়াছেন...
ওয়েলকাম ব্যাক
ডাবল কপি = ডাবল খুশি
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
ধুর মিয়াহ! মনটাই খারাপ হয়ে গেলো!
[পুনঃ সব ... বাবারাই কিন্তু লুক্ষ্রাপ হয়না...ভেরা পানোভার 'পিতা ও পুত্র' পড়ে দেখো!]
-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
মন ভালো করে ফেলো।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
সেরিওজা। মনে পড়ছে।
অমন বই আর পড়িনি পরে, অদ্ভুত সুন্দর সত্যের মত লাগে।
আলাদা করে নাম বলছিনা, তবে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের লেখনীতে সাধারণ বাবা চরিত্রগুলোকে অসাধারণ লাগে।
মর্ম
মর্ম, সুযোগ পেলে 'রেলওয়ে চিলড্রেন' বইটাও পড়ে ফেলবেন, আশা করি ভাল্লাগবে...
_________________________________________
সেরিওজা
মন খারাপ করে দিলেন।
▀ ▄
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আবার মন ভালোও হয়ে যাবে।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
একি!! মনটা বডড খারাপ করে দিলে যে।
বাবা যেখানেই থাকুন, মেয়ের মাথার উপর ভরসা হয়েই থাকেন - জেনে রেখো ভাইয়া...
কবিতাটি পড়ে দেখো, খুব ভালো লাগে পড়তে।
ভালো থাকো, অনেক অনেক ভালো
-------------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
কবিতাটা আসলেই বড্ড সুন্দর। কবিকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থেকো তুমিও।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
"..তাহলে পেটে পুঁতির গাছ হবে!"
কত কিছু বলেই না মায়েরা সাধের বাছাদের সামলান!
ছোট্ট মেয়েটার উত্সুক চোখ গল্পটা উপভোগ্য করেছে, বড় হয়ে এ চোখটা হারিয়েই আমরা মরেছি!
মর্ম
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
শেষে এসে চমৎকারিত্য টের পেলাম।
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
অনেক ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
- বেশ লিখেছেন!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
থ্যাংকস, ধুগো'দা।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
খুবই সুন্দর লেখা।তবে মন খারাপ করে দেওয়া...
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
________________________________________________
হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে
লেখা দাওনা কেন? তাত্তাড়ি লেখা দাও।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
মন খারাপ হলো। তবে মাঝে মাঝে এমন মন খারাপ হওয়া ভালো। চমৎকার লিখেছেন রেশনু ভাই। পাঁচ তারা
অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই। ভালো থাকবেন।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
ভাল্লাগসে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
সুন্দর লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
বাহ্!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
থ্যাংকস ভাইয়া।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
অনেক ভালো লেগেছে ছবির ফ্রেমে তোমার আলো আধারি খেলা
...............
মাঝ রাতে কখনও নিজেই শুনি নিজের ভেতর কিন্নর কণ্ঠ, ময়ূর শয্যার কথা ভুলে
অনেক ভালো লেগেছে ছবির ফ্রেমে তোমার আলো আধারি খেলা
...............
মাঝ রাতে কখনও নিজেই শুনি নিজের ভেতর কিন্নর কণ্ঠ, ময়ূর শয্যার কথা ভুলে
অসংখ্য ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
নতুন মন্তব্য করুন