রাত পোহালেই পর্দা উঠছে 'দ্য গ্রেটেস্ট শো অন বাংলাদেশ' - বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১১ এর। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমরা সবাই। যতটা উদ্বোধনের তার চেয়েও হয়তো বেশি আমাদের লাল-সবুজে বর্ণিল ঐ ১১ জনের মাঠে নামার অপেক্ষা।
করবই বা না কেন? এই একটা জায়গাতে এসেই তো স্বাধীনতার চেতনা বাহক আমরা প্রায় সবাই ভেদাভেদ ভুলে যেতে পারি। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল, বার্সেলোনা-মাদ্রিদের সব ফুটবল সমর্থক এই আমাদের, তখন আশ্রয় মেলে একই ছাতার নিচে। আমরা একইসাথে গর্জে উঠি আবার হয়ত নীরব কান্নায় মেনে নিই পরাজয় একইসাথে। আমাদের সবার নাড়ী যে বাঁধা - এই লাল-সবুজের, আমাদের বাংলাদেশে।
গত বিশ্বকাপের ফরম্যাটটা আমাদের জন্য সুবিধাজনক ছিল কিছুটা। গ্রুপে ছিল দুর্বল বারমুদা। আর এবারকার আয়ারল্যাণ্ড, নেদারল্যাণ্ডস গত বিশ্বকাপের বারমুদার চেয়ে অনেক ভালো দল। ওয়ার্ম-আপ ম্যাচের ফলাফলও তাই বলে। তবুও সরল হিসাব মোতাবেক এই দু'টো দলের সাথে জয় আর যে কোন একটা বা দু'টো দৈত্যবধই আমাদেরকে পৌঁছে দিতে পারে শেষ আটে।
সহজ নয়। সরল অংকের মতই হিসাব মেলানোটা টাইগারদের জন্য জটিল হয়ে যেতে পারে। জটিলতার প্রথম ধাপ, ভারত। গতবারের মত এবারও টাইগারদের প্রথম খেলাটা ভারতেরই সাথে। এর আগে ভারত-বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছে ২৩ বার। বাংলাদেশের জয় দু'টিতে আর একটি পরিত্যক্ত। ঐ দু'টি জয়ের একটি এসেছিল গত বিশ্বকাপে, ভারতের ব্রাহ্মণগোত্রীয় বড়ভাইদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়ে। মন চায় আবারও ওরকম কিছু ঘটুক।
ভারত বধ অসম্ভব নয় এবারো, তবে দুরূহ। ভারতের সম্ভাব্য একাদশ হতে পারে এরকমঃ শেবাগ, টেণ্ডুলকার, গম্ভীর, কোহলি, ধোনি, যুবরাজ/রায়না, ইউসুফ, হরভজন, পিযূষ/অশ্বিন, জহির, নেহরা/শ্রীশান্ত। আমার ধারণা ভারত দুই পেসার নিয়ে মাঠে নামবে এবং ধোনির পছন্দের পিযূষ চাওলাকে দেখা যাবে প্রথম একাদশে। যারা কি না গতকালই শেষ ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে নিউজিল্যাণ্ডের সাথে ৩৬০ রান করলো তাদের দুর্বলতা খুঁজে বের করা একটু ধৃষ্টতাই বটে। তারপরও আমার চোখে ভারতের সমস্যাগুলো ধরা পড়েছে এইভাবে -
ক) ব্যাটিং: মিডল-অর্ডার অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। ক্রমাগত চাপের মুখে হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়তে পারে।
খ) বোলিং: নেহরা, শ্রীশান্ত, পিযূ্ষ এরা মোটামুটি খরুচে বোলার। উপরন্তু, ৪ স্পেশালিস্ট বোলার খেলালে ধোনিকে পঞ্চম বোলারের কোটা পূরণ করতে হবে ইউসুফ,যুবরাজ,শেবাগদের দিয়ে।
এবার আমাদের বাংলাদেশের দিকে তাকানো যাক। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই ১৫ জনই এসময়ের সেরা। মাশরাফির ইনজুরিতে বাদ পড়ে যাওয়া আমাদের জন্য অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। নাঈম আর মাহমুদুল্লাহ বল বা ব্যাট কোনটা হাতেই সেরকমভাবে জ্বলে উঠতে পারবে কি না তা নিয়ে আমি সংশয়গ্রস্ত। তাই বদলে আমি একজন পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যান খেলানোরই পক্ষপাতী। আমার মতে ভারতের বিরুদ্ধে একাদশ হতে পারে এরকমঃ তামিম, ইমরুল, জুনায়েদ, রকিবুল, সাকিব, আশরাফুল, রহিম, রাজ্জাক, সোহরাওয়ার্দী, রুবেল, শফিউল। নাঈম/মাহমুদুল্লাহ কেউ খেললে বাদ যেতে পারে রকিবুল অথবা আশরাফুল। আমি ঘোর আশরাফুল বিরোধী কিন্তু এখন এই শেষ সময়ে এসে ওর থেকে ভালো কোন হিটার আমি পাচ্ছি না। তবে আমি এও জানি, আশরাফুল হয়তো ধারাবাহিকভাবে আবারও আমাদেরকে নিরাশ করতে পারে। দেখা যাক।
এই দলের দুর্বলতাও অনেক আছে। সবচেয়ে বেশি যা চোখে পড়ছে এখন -
ক) ব্যাটিং: মিডল-অর্ডার, মিডল-অর্ডার এবং মিডল-অর্ডার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চার নম্বর পজিশনে এমন আস্থাশীল কেউ যে কি না ওভার প্রতি পাঁচটা সিঙ্গেলসও নিতে পারবে আবার ইনিংসের ভিত্তিও গড়ে দেবে, আমরা পাইনি অথবা তৈরি করিনি। সেক্ষেত্রে রকিবুল মনে হয় আরেকটা সুযোগ পেতে পারে। তবে রকিবুল বা রহিম যেই নামুক না কেন তাকে একেবারে খোলসবন্দী হয়ে গেলে চলবে না। আর লোয়ার-অর্ডার থেকেও আমাদের রান দরকার।
খ) ব্যাটিং পাওয়ার প্লেঃ বাংলাদেশের জন্য এই জিনিসটার প্রচলন মনে হয় খেলাটাকে আরও জটিল করে তুলেছে। আমার মতে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নেওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হল ৩০ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে যদি হাতে ৬/৭ উইকেট থাকে। আর যদি আশরাফুল থাকে দলে এবং ৪ উইকেট পড়ে গেলে ও নামতে পারে সেক্ষেত্রে ওকে সেট হওয়ার জন্য ২/৩ ওভার দিয়ে তারপরও পাওয়ার প্লে নেয়া যেতে পারে।
গ) বোলিং: রুবেল বেশ খরুচে। আর নাঈম বা মাহমুদুল্লাহ কেউ না থাকলে সাকিবের হাতে তেমন কোন সিক্সথ অপশন রইবেনা। সাকিবের উচিত হবে পেসারদেরকে আরেকটু বিশ্বাস করা।
হতাশ? হবেন না, দয়া করে। আমাদের মধ্যে কোন ঘোর আশাবাদীও কি ভেবেছিল আমরা নিউজিল্যাণ্ডকে বাংলাওয়াশ করতে পারবো? ভাবিনি আমরা। আবার তাই বলে একেবারে সাকিবের হাতে বিশ্বকাপ এই স্বপ্নও দেখবেন না যেন। তাহলে?
এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ওডিআই জয়ের সংখ্যা ৬৪টি। ৩৭ বার আমরা জিতেছি রান তাড়া করে। তথাপি ক্রিকেট বিশ্বের পরাশক্তিদের বিরূদ্ধে টাইগাররা যে জয়গুলো পেয়েছে তাতে আমরা সর্বোচ্চ রান তাড়া করেছি ২৪৯, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। একথা বলার মানে, রান তাড়া করে আমরা বড় দলগুলোর সাথেও জিততে পারি কিন্তু তা ২৫০/২৬০ এর বেশি নয়। তাই টস জিতলে আমি চাই টাইগাররা আগে ব্যাট করুক আর সেই পুরোনো তত্ত্ব - 'চাপমুক্ত হয়ে ব্যাট করে রান তোলো আর পরে প্রতিপক্ষকে চেপে ধর' কে আরও একবার প্রমাণ করুক। আমরা কিন্তু ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথম ভারতকে হারিয়েছিলাম আগে ব্যাট করেই। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে, ১৪ রানের ব্যবধানে। দিবা-রাত্রির খেলা ছিল ওটাও।
টসে জিতে ব্যাট করলে টাইগাররা যদি ২৫০+ ও করতে পারে, আমাদের বোলাররা কিছুটা হলেও লড়াইয়ের রসদ পাবেন। যদিও আমার ধারণা, মিরপুরের মাঠে পার স্কোর ২৭০। আর তা খুবই সম্ভব যদি একটা শতাধিক পার্টনারশীপ আমরা পেয়ে যাই। তারপর দরকার শুরুতেই ব্রেক-থ্রু। গত বিশ্বকাপে বা ২০০৪ এ ভারতকে হারানোর সময় যে কাজটা করেছিল মাশরাফি। এবার মাশরাফি নেই তবে শফিউল আছে, আছে রুবেল। ওদের ওপর ভরসা রাখুন। স্পিন-ত্রয়ীর ঘূর্ণিতে বাকিটাও ছেঁটে ফেলা সম্ভব যদি ফিল্ডিংটাও হয় অনেক ভালো। ডিউ-ফ্যাক্টর অবশ্য সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য সমস্যা হয়ে যেতে পারে এটা ঠিক। তবে সেই সাথে সাথে ভারতের রান তোলাও কষ্টকর হবে আউটফিল্ড ধীর হয়ে যাওয়ায়।
ভারত যদি আগে ব্যাট করে তবে টাইগারদের জেতার সম্ভাবনা মনে হয় একটু কম। ভারতকে অবশ্যই বেঁধে ফেলতে হবে ২৪০/২৫০ রানের মধ্যে। মিরপুরের উইকেটে এই কাজটা কঠিনই হবে। আর তাই বা বলি কী করে? গতবারই তো আমরা ওদেরকে ২০০'র নিচেই বেঁধে ফেললাম। তবে ওরকম ১৭ মার্চ কী বারেবারে আসবে?
ক্রিকেট নিয়ে ভবিষ্যদবাণী করাটাই বোকামীর চূড়ান্ত। মাঠে নেমে তো খেলতে পারি না, তাই এই বোকা পরিসংখ্যান আর এই বোকা আমি - দু'য়ে মিলে হিসাবের খাতায় চলে নানান আঁকিবুঁকি। এই ফাঁকে, কে জানে, টাইগাররা আরও একবার, আবারও একবার ফিরবে না বিজয়ের বেশে!
অপেক্ষায় রইলাম সেই ক্ষণের, লাল-সবুজে আঁকা পতাকা বুকে নিয়ে।
মন্তব্য
সবই ঠিকাছে! কিন্তু একটা জায়গায় ব্যাপক আপত্তি, কোন হিসাবে স্পিন বলের বিপক্ষে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে যাদের দুই-তিনজন আবার বাঁহাতি- তাদের আমরা তিনজন বাঁহাতি স্পিনার দিয়ে পরাস্ত করতে চাচ্ছি, যেখানে ভারতীয় দলের ভাল পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে ভাল কাঁপাকাঁপি শুরু হয়! বোলার খেলালে তিন পেসার বেশি যৌক্তিক মনে হয়!
আর সোহরাওয়ার্দীকে মূল দলে রাখার আমি কোন লজিক খুঁজে পাচ্ছিনা যেখানে আমাদের নাইম-রিয়াদের মত অলরাউন্ডার আছে, এবং যেখানে প্রতি ম্যাচে আমাদের ৭-৮ জন বোলার ব্যবহার করা হয় এবং সাকিব-রাজ্জাক ছাড়া আর কেউ কোটা পূরণ করতে পারেনা। আমি বলব, তিন স্পিনার সহ পাঁচ স্পেশালিস্ট বোলার খেলানো আমাদের মত দলের জন্য "অতীব" বিলাসিতা যেখানে আমাদের ব্যাটিং ব্যাপকভাবে ভঙ্গুর। আমি বলব আমাদের ব্যাটসম্যান-অলরাউন্ডার প্রেফার করা উচিত- সাথে রিয়াদ-নাইমের বোলিং একটা বৈচিত্র্য আনে, তারা আবার ফুল-টাইম স্পিনারের মত বল করে যা খুব একটা খারাপ কখনোই মনে হয়নি! তাছাড়া, শুভ'কে আমার কোনভাবেই ১১ নম্বরের আগে কোন জায়গায় নামার মত ব্যাটসম্যান মনে হয় না (তার যা ব্যাটিং দেখেছি! বেচারা এখনো ঠিকভাবে ব্যাটই ধরতে শেখেনি, মারে একদিকে যায় আরেকদিকে!)
যাই হোক, আমি চেষ্টা করব, ভারতের বিপক্ষে খুব বেশি আশা না করতে...যদি জেতে অসাধারণ লাগবে, হারলে যেন সেটা লজ্জাজনক-আত্মসমর্পণ না হয়। অন্ততপক্ষে জেতার চেষ্টাটা যেন থাকে...
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
ভাই, যে বোলিং এ ওদের কাঁপাকাঁপি শুরু হয় সেরকম পিচও নাই আর ১৪০কিমি+ গতিসম্পন্ন বোলারও নাই আমাদের। তাই তিন পেসার তত্ত্ব মানতে পারতেছি না।
আমাদের পেসাররা কোটা পূরণ করতে পারে না এই কথাটা না বলে বলা উচিৎ ওদের পূরণ করতে দেয়া হয় না। স্লগ ওভারে আমার মতে, স্পিনারদের চেয়ে পেসাররা বেশি কার্যকরী। পেসারদের স্লোয়ারগুলোও ভালো ফল দিতে পারে।
রিয়াদ-নাঈমের বোলিং কখনই আমার কাছে আহামরি মনে হয় না। স্রেফ টাইম-পাস টাইপ বোলিং। সোহরাওয়ার্দীর বোলিং ওদের চেয়ে অনেক ভালো।
মানুষ হয়ে বেঁচে থাকলে আশা থাকবেই। ভালো খেলুক, এইটাই চাওয়া।
[স্বপ্নহারা ভাইয়ের মন্তব্যের জবাবে]
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
একটু দৌড়ের উপর আছি, পুরোটা পড়ার সময় হোল না, পরে পড়ে নিব। আপাতত আমি শুধু চাই বাংলাদেশ নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে ভাল একটা ফাইট দিক। হারজিত তো থাকবেই, যারা অপেক্ষাকৃতভাবে ভাল খেলবে তারাই জিতবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটপ্রেমী দেশ। আশা করি আমাদের এই ইমেজ অক্ষুণ্ণ থাকবে। স্টেডিয়ামে বসে যারা খেলা উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা যেন স্পোর্টসম্যান স্পিরিট বজায় রাখতে পারেন। ফলাফল যাই হোক না কেন খেলা পন্ড করার মত কোন ঘটনা যেন আমাদের দেশে না ঘটে।
-রু
বস,
লেখাটা ভাল লাগল। প্রথমে একটু অবাকই হয়েছিলাম যখন তোমার সম্ভাব্য একাদশে আশ্রাফুলের নাম দেখলাম। অবশ্য পরের লাইনেই তুমি তোমার ব্যাখ্যাটা দিয়েছ---এবং স্বীকার করতে হবে, তোমার কথাটা হয়ত ভুল নয়।
আমি খেলা বিশেষজ্ঞ নই কোন মতেই।
আমি খেলাটা দেখব একটা কথা মাথায় রেখে।
আমি বাংলাদেশী।
আমার দেশ হারলেও আমি সাথে আছি, জিতলেও আছি।
এই মূহূর্ত্তে আমার দেশের এই এগারোটা ছেলে আমাদের কাছ থেকে নিরংকুশ সমর্থন আশা করে।
আমাদের সবার উচিত ওদের তাই দেয়া।
সমালোচনা করার জন্য দিন পড়ে আছে সামনে।
এই সময়টা ওদেরকে আর ক্ষত-বিক্ষত নাই করলাম।
আমার মনে হল, তোমার লেখাতেও আমি ঠিক এই সুরটাই শুনতে পেলাম।
বাকীরাও এখন এই সুরে সুর মেলালেই মঙ্গল------
জয় হোক!!
এই একাদশে একটা সমস্যা আছে। হাত ঘোরাতে পারে ঠিক পাঁচজনই। কাজেই কোন কারণে রুবেল বা রাজ্জাক বা অন্য কারো একটা খারাপ দিন গেলেই কোন অপশন থাকছে না চুপচাপ মার খেয়ে যাওয়া ছাড়া। একই সাথে আশরাফুল আর রকিবুলের ক্লিক করার সম্ভাবনা হিমাঙ্কের কাছাকাছি। এরচেয়ে নাইম বা মাহমুদুল্লাহ নামলে বোলিং ব্যালান্সড হয়। ব্যাটিং এরও খুব ক্ষতি হয় না।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে আশরাফুলকে বাদ দিয়ে রকিবুলকে নেয়ার পক্ষে। আশরাফুলের বিগ ম্যাচের অপেক্ষায় বসে থেকে টিম বাংলাদেশকে হারানোর পক্ষপাতী নই।
ঠিক। এটা একটা সমস্যা হতে পারে। নাইম বা মাহমুদুল্লাহ কে নিলে হয়ত বোলিং অপশন বাড়বে কিন্তু ব্যাটিং আমার ধারণা তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল হয়ে যাবে।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
নাইম আর রিয়াদ দুইজনই আগে ব্যাটসম্যান, পরে বোলার। কিন্তু দলে তাদেরকে আগে বোলার, পরে ব্যাটসম্যান হিসেবে দেখা হয়। দুজনই ছক্কা মারতে পারে; কিন্তু উইকেটে সেট হতে সময় লাগে। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে আনলাকি খেলোয়াড় সম্ভবত এই দুজনই। এদের কাউকে ৪ এ খেলাতে পারলে আশরাফুল আর রকিবুল এই দুই এলার্জি থেকে দল মুক্তি পেতো, লোয়ার অর্ডারে বিগ হিটে সক্ষম কোনো নতুন খেলোয়াড়কে প্রস্তুত করা যেতো। যেমন, লোয়ার অর্ডারে হিট করে খেলার জন্য সাব্বির (এশিয়ান কাপের হিরো) বা নতুন কেউ আর মাশরাফিই যথেষ্ট ছিলো। এখন যে দল আছে, তাতে পারমুটেশন-কম্বিনেশন করে আমরা খুব বেশিদূর যেতে পারবো না। সাকিবের ইনিংস মহা গুরুত্বপূর্ণ, সাথে নাইম বা রিয়াদ সেট হয়ে সেটা কাজে লাগাতে পারবে এই আশা করা ছাড়া উপায় নেই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ভারত বিপক্ষে বলেই ৩ জন স্পিনার খেলানো যাবে না, এই তত্ত্বে বিশ্বাস করি না আমি। খেলা জিতলে জেতার মতো করেই জিতবো, ভয় করে না। নিজেদের শক্তি অনুযায়ীই খেলা উচিত আমাদের। ভারতকেও বহু স্পিনার ধসিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ৩ জন ভালো স্পিনার না খেলিয়ে আর কী উপায় আছে আমাদের? একটা ভালো স্পিনার বসিয়ে মাঝারি মানের কোনো পেসার নামিয়েও লাভ নেই। সেওয়াগ-শচীনরা পেসও বেশ ভালোই খেলতে পারে বলে জানি।
আমাদের সেই মানের এবং গতিসম্পন্ন পেসার নেই যারা একের পর এক পাঁজর লক্ষ করে বল করে যেতে পারবে। সুতরাং, আমি তিন স্পিনারেরই পক্ষে।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
লেখা ভালো লাগলো, যদিও মতানৈক্য আছে কয়েক জায়গায়।
আশরাফুলের ব্যাপারে অধিকাংশের একটা ভুল ধারণা আছে যে, সে হিটার। সে একজন জেনুইন ব্যাটসম্যান, মূল সমস্যা মানসিক। আনলাইক আফতাব, আশরাফুলের ভালো ইনিংসগুলোর প্রায় প্রত্যেকটাই জেনুইন ব্যাটিং। সে খেললে ৪ নম্বরের নিচে না যাওয়াই ভালো। তবে জেমি সিডন্সের আন্ডারে কোনো ম্যাচে তার ভালো করার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। মানসিক চাপ প্রায় ১০ গুণ থাকে।
আমার মতে ইন্ডিয়ার বিপক্ষে জিততে হলে ফিলডিংটা পারফেক্ট হতে হবে। বোলিংয়ে কোনো এক্সপেরিমেন্টের দরকার নেই। কোনো ইজি রান না দিলে ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানরা চাপে পড়বে। ব্যাটিং দুধভাত, ২২০ পর্যন্ত লিমিট।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
হিটার বলতে আমি তাকে ইউসুফ বা আফ্রিদির মতন হিটার কিন্তু বলিনি। ওর হাতে শট আছে যা নাইম, মাহমুদুল্লাহর হাতে নেই। এইটুকুই।
ফিল্ডিং এ সহমত। দুই-তিনটা ভালো ক্যাচ ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
অপেক্ষায় রইলাম সেই ক্ষণের, লাল-সবুজে আঁকা পতাকা বুকে নিয়ে।
........আমরা সবাই অপেক্ষায় আছি ক্রিকেট মাঠে আমাদের আরেকটা সুসংবাদের জন্য।
আমরা সবাই ...
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
কোন জায়গার কমেন্ট কই যায়!!!
ধন্যবাদ অনিকেত'দা। আমরা যতটা বুঝি আমাদের টাইগাররা আমাদের থেকেও বেশি বুঝে খেলাটা এবং কোন অংশেই কম দেশপ্রেমিক নয়। সুতরাং, ওরা ভালো খেলুক আর আমরা ওদের সাথে থাকি।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
নতুন কমেন্ট করার আগে প্রোগ্রেস বার শেষ হওয়া পর্যন্ত করুন। এর আগেই নতুন কমেন্ট/জবাবে ক্লিক করলে আপনি এরকম অবস্থায় পড়বেন।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অনেক ধন্যবাদ।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
একসময় কিছুকাল খুলনার সেকেন্ড ডিভিশনে লীগে ক্রিকেট খেলেছি কিন্তু বর্তমান জাতীয় দলের প্লেয়ারদের স্কিল এ্যানালিসিস করার মতো টেকনিক্যালি সাউন্ড কোনওকালেই ছিলাম না। তবে একখান কথা, আমরা বুঝি আউটপুট, আমরা আরও বুঝি ট্রেন্ড এবং কন্সিস্ট্যান্সি। আমাদের মতো গরীব দেশেও কিন্তু প্লেয়ারদের পিছনে যথেষ্ঠ ইনপুট দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের আউটপুট আমাদের প্রায়শঃই হতাশ করে।
একক পারদর্শীতায় আমাদের এতদিনেও মাশরাফি, তামিম আর সাকিবের বাইরে নতুন তেমন কাউকে পেলাম না। মানের বিচারেও নেই নান্নুর মতো বিচক্ষণ অলরাউন্ডার, একদিনের ক্রিকেটের জন্যে উপযুক্ত জাহাঙ্গীরের মতো ঝোড়ো ওপেনার-উইকেটকিপার, ফারুকের মতো নিশ্ছিদ্র ফিল্ডার। তবে টিম-এফোর্ট বেড়েছে এটুকুই অনেক বড়ো।
আমরা কামনা করি আমাদের টাইগাররা আমাদের পতাকাটাকে অনেক উপরে তুলে ধরবে। সমস্যা জর্জরিত আমাদের জাতিকে একটুখানি উল্লাসের সূযোগ করে দেবে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বাংলাদেশের সবথেকে ভাল সম্ভাবনা স্পিনার খেলালে ও আগে ব্যাট করলে। দিনরাতের ম্যাচ হলেও পরে শিশির পড়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে হয়। সুতরাং, পিচ যদি আন্ডারপ্রিপেয়ার্ড ভাবে তৈরী করা হয় তাহলে প্রথম ইনিংসের ৩০ ওভারের পর থেকেই বল ঘুরতে শুরু করবে। যার অর্থ, ভারত পরে ব্যাট করলে পুরো ইনিংসই ঘূর্ণী পিচে খেলতে হবে। প্রথম ওভার দশেক বলের পালিশ তুলে তারপরে স্পিনারদের দিয়ে বল করালেই সবথেকে ভাল হয়। পেসার দিয়ে ভারত বধ এর থেকে সোজা কিন্তু মাশরাফি বাইরে থাকায় সে সম্ভাবনা কম।
টুর্নামেন্টে এর পরেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা আর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও বাংলাদেশ ঘূর্ণী পিচ বানাতে পারে, এরা কেউই খুব ভাল কিছু স্পিন খেলে না। বিশেষত দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডার আর ইংল্যান্ডের কিছু প্লেয়ার স্পিন খেলতে পারে না। তাই একটু রিস্ক নিয়েও ঘূর্ণী পিচ বানানোই যায়।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
নতুন মন্তব্য করুন