আমি তখনও স্কুলে পড়ি, কোন ক্লাশে সঠিক মনে নেই। দিনটি ছিল সিলেটের প্রধান কবি- দিলওয়ার এর জন্মদিন। কবির ভার্থখলার বাড়িতে জমাটি আড্ডা হচ্ছে। সিলেটের গণসঙ্গীত শিল্পী ভবতোষ চৌধুরী গান ধরেছেন আর সবাই যে যার মতো করে গলা মেলাচ্ছে । সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতি কর্মীদের অনেকেই সেখানে উপস্থিত। এর মধ্যে লুঙ্গি- পাঞ্জাবী পরা, ধুলোমাখা পা নিয়ে ছিপছিপে গড়নের লম্বা এক লোক ঢুকলো বৈঠকখানায়। আমি তাকে আগে দেখিনি। তিনি খেতে খেতে কবি দিলওয়ারের সাথে ছন্দ মিলিয়ে কথা বলতে লাগলেন। তারপর গান ধরলেন ভবতোষ চৌধুরীর সাথে। প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই কবির সাথে চললো তার ছন্দে -ছন্দে বাতচিত। জানলাম - ইনি চারণ কবি, নাম আব্দুল করিম। যানবাহন ধর্মঘটের কারনে দীর্ঘপথ হেঁটে -ছুটে এসেছেন কবিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে। আমি তার অন্তমিলের কেরামতিতে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। শিশু একাডেমির আবৃত্তির ক্লাশে ছন্দ শিখি তখন, স্বরবৃত্ত কোনো মতে আয়ত্বে আনলেও মাত্রাবৃত্ত আর অক্ষরবৃত্তকে বাগে আনতে হিমশিম খেতে হয় প্রতিদিন। টুকটাক ছড়া লেখি, একটা শব্দের সাথে আরেকটা শব্দের অন্তমিলের জন্য শব্দের দুনিয়া হাতরে বেড়াই- আর এই লোক দেখি খই-মুড়ি ভাঁজার মতো করে অন্তমিল বানায়! তার অন্য পরিচয় জানলাম খানিক পরে - ইনি গণসঙ্গীত এবং বাউল গান করেন। হতদরিদ্র অবস্থার মধ্যেও সঙ্গীত তার স্বর্ণ পিঞ্জিরায় পোষা- বিলাসী ময়না।
..............................................................................................................
তারপর আস্তে -ধীরে আব্দুল করিম সমন্ধে জানি অল্প অল্প করে। তার রাজনৈতিক পরিচয় - ভাসানী,বঙ্গবন্ধুর সাথে তার সাক্ষাত ইত্যাদি। এক-একটা অপূর্ব সুন্দর গান শুনি আর পদকর্তা শাহ আব্দুল করিম এর নাম শুনে পুলকিত হই। তার অসংখ্য গান জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিভিন্ন সময়ে শীর্ষে অবস্থান করেছে। খ্যাতি ছড়িয়েছে তার দ্বিগবিদিগে। ধীরে ধীরে শাহ আব্দুল করিম -বাউল সম্রাট এবং জীবন্ত কিংবদন্তী হয়ে উঠেন। ভূষিত হন একুশে পদক সহ নানান সম্মাননায়। তার গানকে পণ্য করে দেদারসে পয়সা কামায় সঙ্গীত বণিকরা কিন্তু এই ভাটির গানের রাজার দিন কেটেছে দারিদ্রকে সঙ্গী করে।
...........................................................................................................
যতদূর জানি- শাহ আব্দুল করিম এর গানকে ঢাকায় তথা মিডিয়ায় শুরুর দিকে পরিচয় করিয়ে দেন ফজলুল কবীর তুহীন, সেলিম চৌধুরী ,সঞ্জীব চৌধুরী 'রা। এর আগে বিদিত লাল দাস, সুবীর নন্দী, একরামুল হক, জামাল উদ্দিন হাসান বান্না সহ আরো কয়েকজন সিলেটি শিল্পী ঢাকায় তার গান গাইলেও গীতিকারকে শ্রোতারা সেইভাবে চিনতো না। হুমায়ুন আহমেদ এর নাটকে 'আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম', 'আজ পাশা খেলবো রে শ্যাম' প্রচারিত হবার পর হুমায়ুন আহমেদ নিজ উদ্যোগে নুহাশ থেকে নির্মান করেন করিমের গান নিয়ে বিশেষ টিভি অনুষ্ঠান। এর অডিও টিও ব্যপক জনপ্রিয়তা পায়।
এর পরের ইতিহাস সবার জানা - হাবিব এর 'কৃষ্ণ' সুপার-ডুপার হিট হলে করিমের গান কন্ঠে ধারন করবার জন্যে শিল্পীরা মরিয়া হয়ে উঠে। কথা আর সুরও যে গানের একটা প্রধান উপকরণ - তথাকথিত তারকা শিল্পীরা তা অবশেষে বুঝতে পারে, এবং 'এবার ফিরাও মোরে' জপতে জপতে তাদের অনেকেই করিমের গান সহ অন্যান্য লোকগান রেকর্ড করতে উঠে পড়ে লাগে।
................................................................................................................
বেশ কবছর আগে আমেরিকা থেকে তাজুল ইমাম বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র -লন্ডনের আমন্ত্রনে এখানকার বৈশাখী মেলায় গান গাইতে আসেন, গান শেষে করিমকে নিয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন- পয়সার অভাবে এই লোকটার ভালো চিকিতসা হচ্ছে না, পারলে বিলাত থেকে কিছু পয়সা তুলে তাকে পাঠান। একই কথা বলেন শাকুর মজিদও, তিনি তখন বাউল সম্রাটকে নিয়ে একটি ডকুফ্লিম বানাচ্ছিলেন ।
আমি আর ফজলুল কবীর তুহীন এটিএন বাংলা লন্ডন -এ কাজ করবার সময় এই প্রসঙ্গে একদিন কথা উঠলে তুহীন ভাই বলেন- করিমের জন্য কিছু করতে পারলে আমারও খুব ভালো লাগবে , কিন্তু করতে গেলেই দেখবা লোকজন বলাবলি করবে 'এইটা আরেক ধান্দা!'
আমার আগ্রহ মরে যায়। কথা সত্যি, বিলেতে দুস্থ শিল্পীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে নিজেদের পকেট ভারি করবার বিস্তর নজির আছে । আমরা শেষে এই সিদ্ধান্তে পৌছাই যে - নিজেরা পঞ্চাশ একশো পাউন্ড যা পারি করিমকে সরাসরি পাঠিয়ে দেবো।
................................................................................................................
আব্দুল করিম শেষবার লন্ডনে এসেছিলেন একটি শাহেদ আলী উপহার নামের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। এমনিতেই তিনি অসুস্থ ছিলেন তার ওপর দীর্ঘ আকাশপথ পাড়ি দেয়ার ধকলে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পড়েন। টাওয়ার অব লন্ডনের লাগোয়া চত্ত্বরে বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীরা যখন নেচে-গেয়ে দর্শকদের মনরঞ্জনে ব্যস্ত , বাউল সম্রাট তখন রয়েল লন্ডন হাসপাতালে মৃত্যূর সাথে লড়াই করছেন। সেই অনুষ্ঠানের সৌজন্য টিকেট পকেটে নিয়ে আমি হাসপাতালে যাই। সেখানে বিলেতের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অরো কয়েকজন সালমাদের গান উপেক্ষা করে অসুস্থ আব্দুল করিম এর কাছে ছুটে এসেছিলেন।
আমি দ্বিতীয়বার তাকে দেখি, কিন্তু সে দেখা মাত্র খনিকের, হাসপাতালের বেডে তিনি তখন প্রায় অচেতন। নার্সরা রুম থেকে সবাইকে বের হয়ে যেতে অনুরোধ করলে আমরা কয়েকজন হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাকে নিয়ে কথা বলি। সেবার শাহ আব্দুর করিম বিলেত আসতে চাননি, ছেলে শাহ জামাল বাবুলের আগ্রহ আর অনুষ্ঠান আয়োজকদের জোড়াজুড়িতেই তাকে অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে হয়েছিল। তার চিকিতসার খরচ কিভাবে যোগাড় হবে তা নিয়ে একান্ত ভক্তদের চিন্তিত মুখ গুলো যখন আমি গুনছিলাম- অনুষ্ঠান মঞ্চে হয়তো তখন হাজারো দর্শক-শ্রোতার সামনে কোন শিল্পী গাচ্ছিলো- কৃষ্ণ আইল্যা রাঁধার কুঞ্জে/ বসন্ত বাতাসে সইগো/ আমি কুলহারা কলংকিনী/বন্ধে মায়া লাগাইছে/ তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো/ আইলায় না আইলায় না রে বন্ধু/ আসি বলে গেলো বন্ধু / আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম/ কেনো পিরিতি শিখাইলায়রে বন্ধু/ কিংবা - গাড়ি চলেনা চলেনা - চলেনা রে... কিন্তু এইসব অমর গানের স্রষ্টার জীবন গাড়ি যে বিদেশ- বিঁভূয়ে প্রায় থেমে যেতে শুরু করেছিলো- সে খবর হয়তো তাদের অনেকেই জানতেও পারেনি। সেদিন হাসপতাল থেকে কেউ কেউ দেশী শিল্পীদের গান শুনতে গিয়েছিলো,আমার সে ইচ্ছে মরে গিয়েছিল কেনো জানি- আমি ধুসর আলোয় বিসন্ন মন নিয়ে হেঁটে হেঁটে ঘরে ফিরে এসেছিলাম ।
...............................................................................................................
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম চলে গেছেন ,জানি তার অসংখ্য সৃস্টি অমর হয়ে রবে - ছড়িয়ে যাবে কন্ঠ থেকে কন্ঠে। আজ বার বার মনে হচ্ছে - আমি সেইদিন ওই গানের অনুষ্ঠানে না গিয়ে যেটুকু ভালো লাগা বয়ে এনেছিলাম - তা সারা জীবন থাকবে আমার সাথে - এক টুকরো অমূল্য সঞ্চয় হয়ে আমৃত্যূ আমাকে তৃপ্তি দেবে !
মন্তব্য
ওনার কয়েকটা গান এত ভালো লাগতো যে কোনদিনই জানতাম না এগুলো ওনার লেখা। খুবই লজ্জার কথা অবশ্য।
আমার বেলায়ও এরকম হয়েছে।
..........................................................................
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কাব্য নিয়ে ঘুরি।
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কব্য নিয়ে ঘুরি।
কবি দিলওয়ার সম্পর্কেও সময় করে একটু লিখবেন কি? আপনার এই লেখাটা পড়ে তার কথা আবার মনে পড়ল। আর আব্দুল তো করিম আমাদের ভবিষ্যতের চিরসঞ্চয়। অনেক ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কবি দিলওয়ারকে নিয়ে কিছু লিখতে হলে সচলায়তনের সবচে সঠিক ব্যাক্তিটি হচ্ছেন মাহবুব লীলেন। চলুন না আমরা দুজনেই তাকে অনুরোধ করি কবি দিলওয়ারকে নিয়ে লিখতে।
--------------------------------------------------
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কাব্য নিয়ে ঘুরি।
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কব্য নিয়ে ঘুরি।
কবি দিলওয়ারের ব্যাপারে আপনার বক্তব্যর সাথে সহমত।
এই সচলেই আরো অনেকে আছেন যারা কবি দিলওয়ারকে খুব কাছ থেকে চেনেন। তারা উনাকে নিয়ে লিখলে একটা বিশাল বই হয়ে যাবে।
বাংলাদেশের কবিগণের মধ্যে যাঁরা ঢাকার চাকচিক্য, যশ, খ্যাতি পরিনামে অর্থ এইসব বস্তুগত বিষয়কে বিবেচনায় না এনে নিজের শহরেই একাগ্রচিত্তে কাব্যদেবীর সাধনা করে গেছেন/যাচ্ছেন কবি দিলওয়ার তাঁদের মধ্যে প্রধানতম। আফসোস আর দীর্ঘশ্বাস ফেলার আগেই তাঁকে নিয়ে বিস্তারিত পাঠ চাই।
মরবার পরে সোনা দিয়ে কবর মুড়ে দেবার চেয়ে জীবিত অবস্থায় পিতলের মাদুলীও বড় পাওয়া। অবশ্যই সচলের অনেকে কবি দিলওয়ারকে কাছে থেকে দেখেছেন তাদেরকে আমিও অনুরোধ করবো কবিকে নিয়ে সচলায়তনে লিখতে। আর আমি মাহবুব লীলেনের কথা বলেছি কারন, আমার ধারণা - লীলেন দিলওয়ার এবং কিশওয়ার ইবনে দিলওয়ারকে আপাদমস্তক পাঠ করেছে ।
আপনার প্রস্তাবটা উদ্যোগে রুপান্তরিত করা যায় কি'না এ বিষয়ে একটা আলোচনা হতে পারে।
-----------------------------------------------------
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কাব্য নিয়ে ঘুরি।
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কব্য নিয়ে ঘুরি।
মারুফ, মোস্তফা জামান আব্বাসীই বোধ হয় প্রথম এই শিল্পীকে টিভিতে নিয়ে এসেছিলেন। সম্ভবত ৮৭-৮৮র দিকে সিলেট স্টেডিয়ামের বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে একটা প্রোগ্রাম ছিলো আব্বাসী ও করিম শাহ'র গানের। সেদিন রিকাবীবাজার মসজিদ থেকে ছুটে আসা ভেস্তলুভিদের আক্রমনে অনুষ্ঠানটি পন্ড হয়ে গিয়েছিলো।
তোমার কথা ঠিক। মোস্তফা জামান আব্বাসী লোকসঙ্গীতের প্রসারে প্রচুর কাজ করেছেন। শাহ আব্দুল করিমের মতো অনেক স্বভাব বাউলকে তিনি টেলিভিশনে নিয়ে এসেছেন, কিন্তু টেলিভিশনে সে সময়ে তার অনুষ্ঠান গুলোর চেয়ে পরবর্তীতে হুমায়ুন আহমেদ এর নাটক ,নূহাশ এর প্রডাকশন ,দলছুট অনেক বেশী দর্শকপ্রিয় ছিল। আমি আসলে বলতে চাইছিলাম- সঞ্জিব দা, সেলিম ভাই, তুহীন ভাই সহ আরো দু'এক জনের মাধ্যমে করিমের গান ব্যপকভাবে শহুরে লোকেদের কাছে পৌছে যায়। এরপরে তো হাবিব,পলাশ,আনুশেহ 'রা তার গানকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়।
-------------------------------------------------
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কাব্য নিয়ে ঘুরি।
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কব্য নিয়ে ঘুরি।
সম্ভবত ৯৬-৯৭র দিকে শাহজালাল ভার্সিটি সংবর্ধনা দিয়েছিল তাকে
ভার্সিটির অসংখ্য ছেলে মেয়ে সামনে
যারা তাকে জানে না
যারা তাকে চেনে না
ভিসি হাবিবুর রহমান সভাপতি
প্রধান অতিথি গদ্যকাটুর্নিষ্ট আনিসুল হক
বক্তা আরো অনেক অনেক
সংগঠকদের একজন টিএম কায়সার আমাকেও মঞ্চে তুলে দেয়ায় টরোবোর করে কী কী যেন আমিও বললাম
কারো কথাই স্টুডেন্ট দর্শকরা শুনল বলে মনে হয় না। কথার ফাঁকে ফাঁকে তাদের হাউকাউ আর আলগা কমেন্ট ভেসে আসছিল সমানে
সব শেষে উঠলেন শাহ আবদুল করিম
একটু ভয় পাচ্ছিলাম আমরা। স্টুডেন্টরা না এমন কিছু করে যাতে বিব্রত অবস্থা তৈরি হয়
সিলেটি ভাষা না বোঝা স্টুডেন্ট দর্শকদের সামনে খসখসে গলায়। থেমে থেমে সুনামগঞ্জের গ্রামের ভাষায় কথা শুরু করলেন শাহ আবদুল করিম
কয়েকটা মিনিট গেলো
দর্শকরা চুপ
শাহ আবদুল করিম কথা বলছেন
বলতে বলতেই একটা জায়গা এসে বললেন- আপনারা শিক্ষিত মানুষ। আপনারা কইন ইসলাম মানে বুলে শান্তি
আমি দেখি বাংলাদেশো ইসলাম আছে কিন্তু শান্তি কই?
আর বিলাতো গিয়া দেখলাম হিনো ইসলাম নাই কিন্তু শান্তি আছে....
এবং তার পরেই গানে নয়
সুরে নয়
তালে নয়
থেমে থেমে তার খসখসে গলায় আর সুনামগঞ্জের উচ্চারণে মুখস্থ বলে যেতে লাগলেন তার দীর্ঘ বিলাতের চিঠি; কী দেখিলাম বিলাতে...
শুনতে শুনতে সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ভিসি প্রফেসর হাবিবুর রহমান আস্তে করে বললেন- সমাজবিজ্ঞান ভার্সিটির ডিপার্টমেন্টে নাই
এই লোকটার ওই ছেড়া স্যান্ডেলের তলায় সকল সমাজবিজ্ঞান...
০২
শাহ আবদুল করিম গানের সুর কিংবা তালকে খুব একটা ধার ধারতেন বলে মনে হয় না আমার
কোনোদিন তাকে সুরে কিংবা তালে বসে থাকতেও দেখিনি
আর তিনিই বোধহয় একমাত্র শিল্পী যিনি নিজে কোনো যন্ত্রই বাজাতেন না
তার গান যতবারই শুনেছি দেখেছি তিনি গানের সুর তাল বাদ দিয়ে
মাঝে মাঝেই কথার মতো বাণীগুলো বলে যাচ্ছেন
মাঝে তাল বাজানো তার শিষ্যদের একেবারে থামিযে দিয়ে এক টানা গানের বাণীগুলো বলে যাচ্ছেন কথার মতো করে
একটার পরে একটা
০৩
তার সমাজ দর্শনের এক বিশাল প্রকাশ এই - কী দেখিলাম বিলাতে
দীর্ঘ একটা গান
কোনোদিন কাউকে গাইতে শুনিনি
কিন্তু বহুবার দেখেছি তিনি কবিতার মতো মুখস্থ বলে যাচ্ছেন তার এই দীর্ঘ বাণী
০৪
সম্ভবত তার নিজের কাছে প্রিয় লেখাগুলোর মধ্যে একটা ছিল এই লেখাটা
লেখাটা ছিল তার প্রথম বিলাত ভ্রমণ নিয়ে
০৫
মারুফ কিছু বিষয় মনে করিয়ে দিলো...
'শুনতে শুনতে সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক ভিসি প্রফেসর হাবিবুর রহমান আস্তে করে বললেন- সমাজবিজ্ঞান ভার্সিটির ডিপার্টমেন্টে নাই
এই লোকটার ওই ছেড়া স্যান্ডেলের তলায় সকল সমাজবিজ্ঞান...'
'তার সমাজ দর্শনের এক বিশাল প্রকাশ এই - কী দেখিলাম বিলাতে
দীর্ঘ একটা গান
কোনোদিন কাউকে গাইতে শুনিনি'
কোথাও থেকে যোগাড় করে সচলে পোস্ট করা যায়না?
-----------------------------------------------------
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কাব্য নিয়ে ঘুরি।
আমার জীবন থেকে আধেক সময় যায় যে হয়ে চুরি
অবুঝ আমি তবু হাতের মুঠোয় কব্য নিয়ে ঘুরি।
লিলেন ভাই,
অনুষ্ঠানটা হয়েছিলো ৯৭ সালের ডিসেম্বর মাসে। সম্ভবত ৩/৪ তারিখে। তার অন্যরকম বক্তব্যের স্মৃতিটা আমার মনে এখনও জ্বলজ্বলে হয়ে আছে।
সেরাতে তিনি ক্যাম্পসেই ছিলেন।
পরের সকালে তাকে নিয়ে যে গাড়ি শহরে গেলো, সেটাতে আমিও ছিলাম। আনিসুল হক কে বিমান বন্দরে নামিয়ে দেয়ার আগে শাহ করিম এবং তার সঙ্গিদের মির্জাজাঙ্গাল পয়েন্টে নামিয়ে দেয়া হলো। গাড়ি থেকে নামার আগে হাত মেলালেন সবার সাথে...
টুকরো টুকরো স্মৃতি ভাসছে মনে, শহীদ মিনারে তাকে দেখে আসার পর থেকেই। সেই শিশুবেলা থেকে দেখে আসছি। কতো স্মৃতি...
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
... ... ...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
কোনোভাবেই কি এই গানটা পাওয়া যাবে? কোনোভাবেই? যে কোনোভাবে
______________________________________________
to be or not to be - that was never a question (jean-luc godard)
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
একটু স্মৃতি চারন করি। সময়টা হবে নব্বুইএর প্রথম দিকে। প্রয়াত সন্জীব তখন সম্ভবত: প্রথম আলোয়। ও আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল বাউল শাহ আব্দুল করিমের সাথে। আমি সন্জীব আর কাজল (রুহুল আমিন কাজল, ট্রাফিক আর্ট খ্যাত, ডেনমার্ক প্রবাসী) ওঁর গান শুনলাম। অনেকক্ষন ধরে। পুরো সময়টাতে কেউ টু শব্দটিও করিনি। গান শেষ হবার পর ও ঘোরের মধ্যে ছিলাম। কিছুক্ষন নয়, বেশ কিছু দিন। বউতো সন্দেহই করে বসলো নতুন করে প্রেমে পড়ে গ্যাছি (তখন ঘন ঘন প্রেমে পড়তাম)। এরকম ঘোর লাগা গান আমি আর শুনিনি।
trishonku,
দুমাস আগেও সিলেট ছিলাম ৫ দিন। ইচ্ছা ছিলো একবার দেখে আসবো। কিন্তু নানান ঝামেলায় যাওয়া হলো না ওদিকটায়। এই দুঃখ থেকে যাবে আজীবন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন