অবশেষে সচল হলাম। পড়ছিলাম অলৌকিক হাসানের পোস্টখানি।
বড়ই প্রীত হলাম হাসান মোর্শেদের মন্তব্যে:
"এই পরিবারের একজনের কোনো ভূমিকা যদি আরেকজনকে আহত করে সেটা চেপে না রেখে প্রকাশ করাটাই স্বাস্থ্যকর বলে মনে করি । এতে অন্যজন আহতবোধ না করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয়াটা আরো উত্তম নিঃসন্দেহে।"
বাক স্বাধীনতার মন্ত্র তো এটাই। যেমন বিলেতী লেখক স্যামুয়েল জনসন বলেছেন:
"প্রতিটি মানুষের সে যা সত্য মনে করে তা বলার অধিকার আছে। এবং অন্য যে কারো অধিকার আছে তাকে এর জন্যে তাকে ঘুষি মেরে ফেলে দেওয়ার। শহীদ হওয়াটাই আসল পরীক্ষা।"
আমি ব্যক্তিগতভাবে মডারেশনের বিপক্ষে। একজন মডারেটর কিভাবে শ্লীল অশ্লীলের সংজ্ঞা নির্ধারন করবেন? কিছু ব্যাপার থাকে যার সীমানা নির্ধারন করা খুবই কঠিন। এবং যেখানেই মডারেশন সেখানেই অবিবেচক অনেক কিছু ঘটে এবং বলি হতে হয় অনেককে।
ওইওয়ান লাম হংকংয়ের একজন ফ্রিলান্স গবেষক, অনুবাদক এবং সম্পাদক। গত বছর ডিসেম্বরে দিল্লিতে গ্লোবাল ভয়েসেস সম্মেলনে এই শান্ত-শিষ্ট মেয়েটির সাথে অনেক কথা হয়েছিল। সে যে হঠাৎ করে একটি এসটাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে লড়াই ঘোষনা করবে তা আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।
ইয়াহু গ্লোবাল মার্কেটে তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করার জন্যে স্থানীয় সরকারের সাথে আঁতাত করে বলেই সবাই জানে। ওরা এক চাইনিজ বিপ্লবির ব্লগ সেল্ফ সেন্সর করেছিল যাতে চায়নিজ সরকার পুরো ইয়াহু ব্যান না করে দেয়। ফ্লিকার হচ্ছে ইয়াহুর কিনে নেওয়া একটি কনসার্ন। আপনাদের অনেকেরই হয়ত জানা নেই যে ফ্লিকারে আপলোড করা কোন কোন ছবি চায়না, সিঙাপুর, হংকং বা জার্মানী ইত্যাদি দেশগুলোর লোক দেখতে পারেন না। কারন ঐসব দেশের নগ্নতা আইন এইসব ওয়েব সাইটে প্রযোজ্য হতে পারে বিধায় ফ্লিকার এইসব ছবি ফিণ্টার করে। আপনার একাউন্ট যদি চায়না, সিঙাপুর, জার্মানী বা কোরিয়ার ইয়াহু সাইট থেকে হয় তাহলে সারা বিশ্বের লোক যা দেখতে পাবে তা হয়ত আপনি দেখতে পারবেন না। এবং এই আইন নিয়েও বহু তর্ক রয়েছে। জার্মান আইনে বলা আছে নগ্ন ছবি দেখা যাবে কিন্তু এইজ ভেরিফিকেশন লাগবে (১৮ বছরের উপরে)। অথচ ফ্লিকার এইজ ভেরিফিকেশন সিস্টেম ব্যবহারের বদলে ঝামেলা এড়ানোর জন্যে ছবিগুলোই সেন্সর করছে।
ওইওয়ানের যুদ্ধ এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে। সে একটি সিটিজেন মিডিয়া ওয়েব সাইটে আর্টিস্টিক ন্যুড ছবি পোস্ট করে এর প্রতিবাদ করে। হংকংয়ের নগ্নতা সংক্রান্ত ট্রাইবুনাল তার পোস্টটিকে "ক্লাস টু ইনডিসেন্ট" হিসাবে শেনীভুক্ত করে এবং তাকে অভিযুক্ত করে। অভিযোগ প্রমানিত হলে তার সাজা হবে ৪ লাখ হংকং ডলার ফাইন অথবা ১ বছরের জেল। (বিস্তারিত এখানে)
মনে হচ্ছে কোর্টের লড়াইটি বেশ জমবে। তবে ফ্লিকার পার পেয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে কারন তার রুলসে সে যে কোন ছবি তুলে নেয়ার অধিকার রাখে।
অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে যে বাক স্বাধীনতার কথা আমরা বললেও আসলে এর প্রয়োগ কিন্তু সীমিত। পত্র পত্রিকায় এরকম এক্সপেরিমেন্ট বা ঔধ্যত্ব কল্পনা করা যায় না। একমাত্র ব্লগের জগতেই এটির প্রয়োগ সম্ভব হচ্ছে কিন্তু অথরিটির শ্যেন দৃষ্টি রয়েছে এর উপর। ফ্লিকারের ন্যুড ছবিটি একটি উদাহরন মাত্র। এমন যদি হয় যে বিশে্বর বিভিন্ন সরকারও শুরু করে যে ইন্টারনেট কন্টেন্ট তাদের মর্জিমাফিক সেন্সর করবে দেশের লোকের জন্যে সেটি কি ভয়ানক শাষরুদ্ধকর হবে কল্পনা করেন!
ওইওয়ানের মত অনেক ব্লগাররাই বাক স্বাধীনতার জন্য লড়ুক নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে। শুভকামনা রইল তাদের প্রতি।
মন্তব্য
স্বাগতম।
________________________
'আজকে না হয় ভালোবাসো, আর কোন দিন নয়'
রেজওয়ান ভাইকে তিন উল্লাস ।
সচলায়তন'কে আমি একটা পরিবার হিসেবেই দেখতে চাই । ভিন্নমত থাকবে । কিন্তু মুল্যবোধ একেবারে আকাশ পাতাল হয়ে যাবার সুযোগ বোধহয় একেবারেই কম ।
আপনাদের মতো অভিজ্ঞজনদের দরকার গাইডেন্সের জন্য ।কখনো কোনো কিছুতে আপত্তি হলে স্পষ্ট জানিয়ে দেবেন । এই আব্দার রইলো আপনার কাছে ।
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বাকস্বাধীনতার পোস্ট পড়ছিলাম। তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট, কোন সন্দেহ নাই। বাকস্বাধীনতার পোস্টে অতিথি হিসেবে মন্তব্য দিতে পারছি তাতেই এই পোস্টের স্বার্থকতা ফুটে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে।
(আমার নিক দিয়ে মন্তব্য দিতে পারলাম না। বলে, এটি একটি রেজিস্টার্ড সদস্যের নিক। আমি জানি; রেজিস্টার্ড, কিন্তু সচল না)
স্বাগতম।
চলুক এইসব কথকতা আর কথার কাব্য।
------ooo0------
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি ...
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
আমি খোলামেলা সংস্কৃতির পক্ষে, আবার বাড়াবাড়ির বিপক্ষে। মডারেশনের প্রশ্নটা এই কারণেই আমার কাছে একটু ধোঁয়াশা। কেউ মডারেট করলে ভালই হয়, কিন্তু তারাও তো ভুলের উর্ধ্বে নন। ক্যাচ ২২ তে আছি এটা নিয়ে নিজের মধ্যেই।
সচলায়তন'কে আমি একটা পরিবার হিসেবেই দেখতে চাই । ভিন্নমত থাকবে । কিন্তু মুল্যবোধ একেবারে আকাশ পাতাল হয়ে যাবার সুযোগ বোধহয় একেবারেই কম ।
ভিন্নমত কাম্য। কিন্তু ইল-মটিফ কাম্য নয়। হাসান মোরশেদ-এর উদ্ধৃত মন্তব্যের বিষয়ে আমি দিনদিন সংশয়ী হয়ে যাচ্ছি।
স্বাগতম রেজওয়ান ভাই।
সচলায়তনে সবার কাছে চাই ভিন্নমত,চাই তর্ক,চাই ঘুষোঘুষি,চাই.....।
-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...
স্বাগতম রেজওয়ান ভাই !
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
দারুন টপিক নিয়ে শুরু করা রেজওয়ান ভাইকে স্বাগতম।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
সবাইকে ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
স্বাধীনতা কিন্তু আলোচনা, বিতর্ক ও ভিন্নমতের মধ্য দিয়েই আসে। অযোগ্য এবং মতলববাজ লোকদের জন্যে আঘাত, সংঘাত ও অপরের অসম্মানই একমাত্র হাতিয়ার।
××××××××××××××××××××××××××××××××××
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
একমত
স্বাগতম রেজওয়ান ভাই।
নতুন মন্তব্য করুন