আমার যদিও জার্মান টিভি বেশী দেখা হয় না তবে মাঝে মধ্যে কোন ডকুমেন্টারী হলে বসে চ্যানেল পাল্টানোর অভ্যাস ত্যাগ করে বসে পরি দেখতে। কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সত্যিই দুর্দান্ত হয়।
সেরকমই একটি প্রতিবেদন দেখছিলাম কাল। এদেশে (ইউরোপের অনেক দেশেই) প্রতিটি মুরগীর ডিমে একটি করে কোড সিল মারা থাকে যা থেকে বোঝা যায় কোন দেশ থেকে এটি এসেছে, কোন ফার্ম থেকে এবং এটি কিভাবে উৎপন্ন হয়েছে। চার ধরনের ডিম সাধারণত: বিক্রি হয়, খাঁচায় বদ্ধ মুরগী, আবদ্ধ যায়গায় পালা মুরগী, খোলা উঠোনে চড়া মুরগী এবং অর্গানিক ভাবে পালা মুরগী থেকে উৎপন্ন ডিম। এবং দামের হেরফেরও বেশ - খাঁচায় বদ্ধ মুরগীর ডিমের চেয়ে দ্বিগুণ দাম খোলা উঠোনে চড়ে খাওয়া মুরগীর ডিমের এবং অর্গানিক আরও বেশী। কারন অর্গানিকভাবে উৎপন্ন ডিমের জন্যে নাকি মুরগীকে ইচ্ছামত চড়তে দিয়ে খুশী রাখতে হয় আর অর্গানিক খাবার খাওয়াতে হয়। আজকাল অর্গানিক খাদ্যের প্রতি ইউরোপীয়ান লোকজনের আগ্রহের কারণে এদের বাজার খুবই রমরমা।
প্রতিবেদনে এইসব মুরগীর ডিম আসলেই ঘোষণা অনুযায়ী সঠিকভাবে উৎপন্ন হয় কি না সেটা পরখ করে দেখা হয়েছে। ইন্টারনেট থেকে একটি অর্গানিক মুরগীর ডিমের কোড থেকে তারা ফার্মটির অবস্থান বের করে সেখানে তদন্তে যায়। ফার্মটির ওয়েবসাইটে লেখা আছে প্রতিটি মুরগীর জন্যে ৪বর্গ মিটার জায়গা নিশ্চিত আছে এবং তারা সর্বদাই হাসিখুশী থাকে। অথচ সরেজমিনে দেখা গেল বিস্তীর্ণ ফার্ম এলাকার উঠোনে একটিও মুরগী নেই। বিশাল ফার্মহাউজের মধ্যে এক রুমে গাদাগাদি করে রাখা মুরগী। ফ্যাক্টরির লোকজন অপ্রস্তুত টিভি ক্যামেরা দেখে। তাদের দেখা গেল বিপুল পরিমান ডিম বিপণনের জন্যে মোড়কজাত করতে। দশ মিনিট খোঁজার পর বাইরে গুটি কয়েক মুরগি পাওয়া গেলেও তারা সুখী কিনা বোঝা গেল না। বরং দেখা গেল তাদের কয়েকটি অসুস্থ। ফার্মটির কর্মচারীরা কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করে। পরে এক লিখিত জবাবে ফার্মের মালিক বলে উঠোনে বেড়া দেওয়ার কাজের জন্যে এক সপ্তাহ ধরে মুরগীগুলোকে ফার্মের ভেতরে রাখা হয়েছে।
প্রতিবেদকরা আরেকটি ফার্মে যায়। সেখানেও একই অবস্থা। বাইরে কোন মুরগী নেই। তারা বলে খারাপ আবহাওয়ার জন্যে মুরগীকে ভেতরে রাখা হয়েছে। আসে পাশের লোকদের জিজ্ঞেস করে জানা গেল তারা বাইরে মুরগী চড়তে দেখে না।
ডিমের মোড়কে একটি মান নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সীল আছে। প্রতিবেদকরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা বলে ঠিক আছে আমরা তদন্ত করে দেখছি কারন মালিক আমাদের জানায়নি যে তাদের ওখানে কোন সমস্যার জন্যে মুরগীকে ভেতরে রাখছে। সরকারের মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলে যে এইসব মান নিয়ন্ত্রণ বেসরকারী পর্যায়ে হয়ে থাকে বলে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। তারাও তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
কেন যেন বাংলাদেশেরই প্রতিচ্ছবি দেখলাম পুরো ব্যাপারটিতে। তবে এই প্রতিবেদনটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পেটা আবিস্কার করেছে বার্লিনের এক ফার্মে প্রায় তিন লাখ ডিম এভাবে ভুলভাবে স্ট্যাম্প করে বেশী দামে বিক্রি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সাথে পার্থক্য এখানেই, এখানে এই সব প্রকারকদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের পর হয়ত কঠিন শাস্তি হবে আর আমাদের দেশে এর চেয়েও মারাত্মক প্রতারণার ঘটনার পরেও তারা আইনের ফাঁক ফোকর গলে বাইরে বেরিয়ে আসবে।
মন্তব্য
হুম......... ভেজালে খালি আমরা নাই তাইলে । ঐখানেও দেখি একি রকম কায় কারবার ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
বাংলাদেশে অর্গ্যানিক ফুড বিক্রি করে শস্য প্রবর্তনায়... টাঙ্গাইলে তাদের ফার্ম। সেখানে আমি বেশ কবার গেছি। আমার পরিচালিত একটা টিভি অনুষ্ঠানে তাদের এদের নিয়ে ছোট একটা প্রতিবেদও দেখিয়েছিলাম একবার। আমি মান নিয়ন্ত্রনওয়ালা না। তবে খোলা চোখে খুব বড় কোনো সমস্যা পাইনি। সেখানে চাষ করা শাক সব্জি খেলেও তফাত্টা বোঝা যায়। আর দামও সাধারণ-এর চেয়ে খুব বেশি না, ডবল তো নাই।
অবশ্য এখন আমি অর্গানিক বলতে যে দোকান থেকে কিনি... তাদের ফার্মে আমার যাওয়া হয়নি।
আর আমাদের সরকারের কাছে আমার প্রত্যাশা অনেক কমে গেছে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ঢেঁকি দেখি সবখানেই ধান ভানে। বাহ্ বাহ্ !!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আমার একটা বড়ই এর বাগান আছে (বাঊ কুল) ৫ একরের, সখের বাগান, চেষ্টা করসিলাম অর্গানিক করার, শেষদিকে আর পারিনাই, ছত্রাকনাশক দিতেই লাগসে
...........................
Every Picture Tells a Story
সেই বড়ই বাগানে গিয়া বড়ই খাইতে সাধ হইতেছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
যাইতে পারেন, বড় হইসে
...........................
Every Picture Tells a Story
পথ দেখাবে কে? আবীরের পোস্টে বিরিশিরি যাত্রার কথা তুলছিলেন সদলে... যাইবেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এই ডিম কি হালাল হবে ?
জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
সমস্যা আসলে সব দেশেই আছে। মূল ব্যাপার হলো ইনফ্রাস্ট্রাকচার। বাংলাদেশে এই রকম একটা প্রতিবেদন করলে প্রতিবেদকের খবর হয়ে যেত।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
সেটাই। দুই নম্বরি সবাই করার চেষ্টা করে কিন্তু ধরপাকড়ে দুই নম্বরি এসব দেশে কমই হয়। আর একবার ধরা খেলে বারোটা বেজে যায়।
আমিও অনুষ্টানটি দেখেছি।
আরও একটি প্রতিবেদনে হাঁস, মুরগীকে জোর করে পাইপ ঢুকিয়ে খাইয়ে কিভাবে অতি অল্প সময়ে মোটা-তাজা করা হচ্ছে দেখে আমার তো মাথা আউলাই গেছে। প্রতিবেদককে ফার্মের মালিক লাঠি নিয়ে তাড়া করতে দেখলাম।
ভেজালের ভিড়ে আসলের স্বাদ ভুলে যাচ্ছি
সুখ নাইরে পাগল।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
জাপানের খবর দেই।
১.
গত কয়েক মাস আগে ধরা পড়ে, সরকারিভাবে বাতিলকৃত খাবারের অযোগ্য চাল ব্যবহার করে সাকি(saki) আর রাইস কেক তৈরি করে গেছে জাপানের কয়েকটা খাবার তৈরির প্রতিষ্ঠান।
ফলোআপ - মন্ত্রী, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদত্যাগ, সেইসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল।
সেই সাথে আছে মিডিয়ার তুলোধুনো। সেই প্রতিষ্ঠানগুলো আর দাড়াবার সুযোগ পায় নি।
২.
তিন বছর পেছনের ঘটনা। এক মুরগির ফার্মে দেখা দেয় বার্ড ফ্লু। কিন্তু মালিক ভদ্রলোক ও তার গিন্নি প্রাথমিক অবস্থায় স্থানীয় সরকারকে না জানিয়ে গোপন রাখার চেষ্টা করে পুরো ব্যাপার। পরে যখন জানাজানি হয়, তখন অনেকদূর গড়িয়ে গেছে। সেইদিন রাতে আমি টিভির নিউজে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে সেই মালিক ও তার গিন্নির লজ্জ্বিত চেহারা দেখে একটু সহানুভূতিই অনুভব করি।
পরের দিন সকালের নিউজে জানানো হয়, দুজনকেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে নিজেদের ফার্মেরই অদূরে। নিজেদের কাজের প্রায়শ্চিত্তটুকু করতে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন দুজন।
----
দেশ ভেদে এইসব দুর্নীতি বা চুরি একরকম হলেও আমাদের সংস্কৃতির মাঝে ঢুকে যাওয়া দুটো জিনিষ - বড় পরিসরের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং আইনের প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধার অভাব - বেশি চোখে লাগে।
রাঘব বোয়াল চোরদের মাঝে চুরি করে ধরা পড়ার পরেও লজ্জ্বার অনুভূতিটুকু কারও মাঝে চোখে পড়ে না কখনো। ছিঁচকে চোরদের মাঝে সেই অনুভূতিটুকু আছে।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
বিষয়টা খুবই মজার, যা আগে জানা ছিল না।
আর বাংলাদেশের সাথে তুলনা দিয়ে লাভ নেই। বাঙালি গোটা সৃষ্টিজগতেই বোধয় মাস্টারপিস। বাঙালির সম্মান বড় শক্ত চিজ। এইটারে জুতাইলেও মানীর মান আল্লায়ই রাখে। যারা এর ব্যতিক্রম, ধরে নিতে হবে আদি ও অকৃত্রিম বাঙালি এরা আর নেই।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
"কেহই করে বেচাকেনা
কেহই কান্দে ... ।"
হাঁটুপানির জলদস্যু
আমাদের এখানে কুম্ভকর্ণের ঘুম কখনোই ভাঙ্গে না.....
যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
বজ্রপাত ছাড়া আমাদের মৃত্যু নাই
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
- তাইতো বলি রেগুলার ডিম খেয়েও গায়ে দুর্ব্বল পাইনা ক্যানো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কর্পোরেট/প্রতিষ্ঠানগুলো লাভ করতে চাইবেই .... .... ওখানে না পারলে এদিকে পাঠাবে (মেলামিন বা তেজষ্ক্রিয় দুধের কথা ভুলি নাই)।
যা হোক, অনায্য বেশি দাম নিলেও বিষ খাওয়াচ্ছে না ... এখানে পার্থক্য।
আর, অপরাধীর বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে - যেটা বাংলাদেশে হয় না .... এই পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি অসাধারণ নয়। কারণ, সৌরভ জাপানের উদাহরণ দিলেন। কিন্তু জাপানও একসময় আমাদের মতই ছিল।
আমি জাপানে ঘটা অতীতের দুটি ঘটনা জানাই এখন:
১. জাপানের মিয়াজাকিতে একটা মাইন থেকে আর্সেনিক দূষণ ঘটেছিল। আক্রান্তদের অসুখ/মৃত্যূর কারণ জানা সত্ত্বেও সরকার মাইন কর্তৃপক্ষের পক্ষ নিয়েছিল। অনেক আন্দোলনের পর সরকার ওদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল। ঘটনাটা ইন্টারনেটে সেভাবে নাই। এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়র্ক আগে সেই ভিকটিমদের সাপোর্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে একটা নাগরিক সংগঠন ছিল ... আর আমার প্রফেসর ঐ সংগঠনের বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট, তাই ঘটনাগুলো জেনেছি। AAN এর ওয়েবসাইটে ইতিহাসটা থাকতে পারে।
২. আরেকটি হল বিখ্যাত মারকারী দূষণের ঘটনা। মিনামাতা রোগ নামে যেটা পরিচিত। এখানেও সরকার ব্যাপারটা ধামাচাপা দিয়েছিল। উইকিপিডিয়া দেখুন।
পোস্টে (বিপ্লব) ।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
দশ মিনিট খোঁজার পর বাইরে গুটি কয়েক মুরগি পাওয়া গেলেও তারা সুখী কিনা বোঝা গেল না।
মাস কয়েক আগে এক জাপানী কোম্পানী ধরা খাইছিলো। এরা বাচ্চাদের স্কুলে গরুর মাংসের রান্না করা খাবার সাপ্লাই দিতো। কন্ট্র্যাক্টে গরু দেয়ার কথা থাকলেও, চুরি ক বেশি লাভ করার জন্য গরুর মধ্যে পর্ক-ও ঢুকায় দিতো। (ওই দেশে পর্কের দাম গরুর চাইতে কম) শেষে একদিন এক চালাক বাচ্চা টিফিন খাইতে গিয়া দেখে পর্কের মত লাগতেসে, সে টিচারের কাছে নিয়া গেল তার টিফিন। মাস্টাররা তারপর সিটি হলে জানাইলো, পুলিশ-এ খবর দিলো। পুলিশ গিয়ে দেখে ঠি্কই শুকরের মাংস মিশাইতেছে। তারপর ব্যাটাকেজেলে দিলো, আর কোম্পানীর লাইসেন্স বাতিল।
দুই নাম্বারী সব দেশেই করে চান্স পাইলে কেউই ছাড়েনা।
তবুও ভালো আমাদের মত মরা কুত্তা আর শিয়ালের মাংস খাওয়াইতেসে না।
নতুন মন্তব্য করুন