ভোটের সময় নিয়ে রঙ্গ

রেজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন রেজওয়ান (তারিখ: সোম, ০৫/০১/২০০৯ - ৭:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিএনপি সম্প্রতি অভিযোগ করেছে যে সাম্প্রতিক নির্বাচনে শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশী ভোট পড়েছে তাহলে প্রতি ভোটারের মাত্র ৫৫ সেকেন্ড হাতে থাকে ভোট দেয়ার জন্যে। তাই ভোটে কারচুপি হয়েছে।

ব্লগার সাদা কালো হিসেব করে দেখিয়ে দিয়েছেন:

১) ৩৫,০০০ পোলিং স্টেশন আছে বাংলাদেশে
২) ৮.১ কোটি ভোটার, যার ৮৭% মানে প্রায় ৭ কোটি ভোটার ভোট দিয়েছেন
৩) পোলিং স্টেশন ৮ ঘন্টা মানে ৪৮০ মিনিট খোলা ছিল
৪) নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ১৭৭, ৭০৭টি পোলিং বুথ ছিল
৫) প্রতি পোলিং বুথে গড়পরতা ভোট পড়েছে ৭ কোটি/১৭৭১০১ = ৩৯৫ ভোট। কাজেই প্রতিটি ভোটে সময় লেগেছে (৪৮০/৬০)/৩৯৫ = ৭২ সেকেন্ড

উনি হিসেব করে দেখিয়েছেন যে ২০০১ সালে গড়পড়তা প্রতিটি ভোটে সময় লেগেছে ৭৬ সেকেন্ড। গতবারের চেয়ে এবারে চার সেকেন্ড কম লেগেছে। এর কারন হচ্ছে ছবি সহ ইউনিক নম্বর যুক্ত ন্যাশনাল আইডি যার মাধ্যমে পরিচয় নির্ধারণে কম সময় লেগেছে (বাবার নাম ঠিকানা ইত্যাদি জিজ্ঞেস না করে)।

কাজেই বিএনপির যুক্তি ধোপে টিকছে না কারন এই সময়কে প্রশ্নবিদ্ধ করলে ২০০১ সালের ভোটের গ্রহনযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। যেমন তাদের নির্বাচনে কারচুপী হয়েছে এই মন্তব্য প্রায় সব আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাই নাকচ করে দিয়েছেন। দেলোয়ার হোসেনকে দেখলাম বলতে যে এটি বিএনপিকে হটানোর মহা ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এর সাথে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউএন ইত্যাদি সবাই যুক্ত আছে। কোন প্রমাণ ছাড়া কোন বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি তার এরকম ঢালাও অভিযোগে অবাক হলাম।

রাজনীতিবিদের মুখের কোন ট্যাক্স লাগে না। যা ইচ্ছা তাই বলে দিলেই হয়। এই সংস্কৃতি কবে বদলাবে? কবে জনগণ জবাবদিহীতা চাইবে প্রতিটি কর্মকান্ডের?


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

দেলোয়ার আঙ্কেলের পায়জামার দড়িও ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আইভরি কোস্ট প্রভৃতি পরাশক্তির ষড়যন্ত্রে ফেঁসে গিয়েছিলো।

দিক্কার!


হাঁটুপানির জলদস্যু

থার্ড আই এর ছবি

দেলোয়ার আঙ্কেলের পায়জামার দড়িও ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আইভরি কোস্ট প্রভৃতি পরাশক্তির ষড়যন্ত্রে ফেঁসে গিয়েছিলো।

হা হা হা.....
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ফেঁসে

উহু, খুলে। ফাঁস অক্ষত থাকলে তো সমস্যা ছিল না। চোখ টিপি

হিমু এর ছবি

আচ্ছা, আগামী নির্বাচনে তো তাহলে নির্বাচন কমিশনকে পোলিং বুদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। প্রতি ভোটারকে ৯০ সেকেন্ড সময় বরাদ্দ দিয়ে পোলিং বুদের সংখ্যা নির্ধারণ করা হোক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

অবাঞ্ছিত এর ছবি

ভালো লিখেছেন। তথ্যবহুল।

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

সাধু এর ছবি

বাংলাদেশে মানুষ একসময় এদের খ্যমতায় বসাইছিল, আবার একসময় তারাই তাদের লাথি মেরে খ্যদাইছে । এটাই বাস্তবতা । তাদের উত্পত্তি ও শ্রীবৃদ্ধির ইতিহাস এটাই প্রমান করে, কয়লা ধুলে ময়লা যায় না । এ বিষয়ে একটা আন্চলিক প্রবাদ মনে পড়ে গেল:
"সোনার কুকুর দোলায় ওঠে
গু দেখলে লাফ দিয়ে পড়ে ।"

বিপ্রতীপ এর ছবি

এই ডিজিটাল কারচুপির বিরুদ্ধে দিক্কার ঝানানোর বাসা কুঁজে পাচ্ছি না চোখ টিপি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...

আরিফ জেবতিক এর ছবি

১.
বলা হচ্ছে যে ভোট প্রদানের হার বেশি । এই কথাটি সবচাইতে অদ্ভুত । ভোটার লিস্টে যখন নাম লিখিয়েছে ,তখন তো ভোট দেয়ার জন্যই নাম লিখিয়েছে মানুষ , তাই না ? তাহলে তো ১০০% ভোট পড়লেও অবাক হওয়া উচিত নয় ।
তাছাড়া ভোটার লিস্টটি একেবারেই হালনাগাদ করা ছিল , এই সময়ের মাঝে খুব কম মানুষেরই ঠিকানা বদল হয়েছে , যার কারনে ভোট প্রদানের হার বেশি । তাছাড়া ভূয়া ভোটারদের আগেই ছাটাই করা হয়েছে , এর ফলে ভোটার লিস্টে নিট ভোটারের সংখ্যাই রয়ে গেছে এবং শুধু নিট ভোটারের হিসাব করায় ভোট প্রদানের হার বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক ।

২.
বাংলাদেশের প্রতিটি বুথেই ৪ দলের এজেন্ট সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাস্টিংয়ে এবং পরের ২/৩ ঘন্টা কাউন্টিংয়ে ছিল ।
সব কিছু ঘটেছে সবার চোখের সামনে ।
একটা দুইটা সিটে হয়তো উনিশবিশ হতে পারে , কিন্তু ২৯৯টা সিটের প্রতিটি বুথেই দুই নম্বরি হয়ে গেল এবং ১৭৭, ৭০৭ এজেন্টের কেউই বিষয়টি ধরতে পারল না , এমন ভোদাই সমাবেশ ৪ দল কোথা থেকে জোগাড় করেছে ? এরা কি হর্সের গ্রাস কাটছিল বসে বসে ?

---------
সাধারনত নেতা এগিয়ে যায় , তারপর জনগনকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানায় । আমাদের দেশে সবই চলে উল্টো দিকে ।
আমাদের জনগন সচেতন হয়ে গেছে , আর নেতারা এখনও সেই পুরোনো তেনা পেচিয়েই যাচ্ছে ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে তারা ( হেরে যাওয়া রাজনীতিবিদেরা) এগুলো বলার জন্য বলে। এই কথাগুলোকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই বলে আমার মনে হয়।
(মহসীন রেজা)

মুস্তাফিজ এর ছবি

গোপালের কেচ্ছা মনে নাই?

"গরু হারালে এরকমই হয় মা।"

...........................
Every Picture Tells a Story

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ভোট দেয়ার জন্য তো ৩০/৪০ সেকেন্ডই যথেষ্ট সময় হওয়া উচিত। ৫৫ সেকেন্ড হলেই বা সমস্যা কোথায়?
একজন ভোটারের ভোট দেয়ার পদ্ধতিটি কয়েকটা সিকুয়েনশিয়াল কাজে ভাল করা যায়, ১) তথ্যের সত্যায়ন, ২) ব্যালট পেপার কালেকশন, ৩) বুথে ঢুকে সিল মেরে ভাজ করে বক্সে রাখা। একজনের জন্য মোট সময় ১ মিনিটেরও বেশি হতে পারে। কিন্তু অনেক ভোটারের জন্য এই কাজগুলো সমান্তরালে চলে। অর্থাৎ একজন যখন ব্যালটে সিল মারছেন, অন্য আরেকজনের তথ্যের সত্যায়ন চলছে। সুতরাং ক্রিটিক্যাল টাইম হবে এই ধাপগুলোর যেটায় সবচেয়ে বেশি সময় লাগে। ১ এ ম্যাক্সম ২০/৩০ সেকেন্ড, ২ এ ৫ সেকেন্ডের বেশি লাগবে না। ৩ নির্ভর করে ভোটদাতার ওপর। কারো কারো বেশি সময় লাগলেও সবাই যেহেতু আগে থেকেই চিন্তা করে আসে কাকে ভোট দিবে, সেহেতু গড়পড়তা সময় ৩০/৪০ সেকেন্ডের বেশি হবে না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রেজওয়ান এর ছবি

আজ এক সহব্লগারের কাছ থেকে ইমেইল পেলাম:

can i just say that it took me literally ONLY 15 seconds to vote including finding my names, signing the paper, dropping it on the ballot box and return the seal? my sister took longest which is 30 seconds, my grandma took 20 seconds, my mum took 15 seconds like me. and there were other ladies on the line who took no more than maximum 30-35 seconds each!

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

সৌরভ এর ছবি

যেটা বলতে চাইসিলাম, সেটা বলাইদার কমেন্টে দেখি বলে ফেলছে।
ভোট দেওয়ার পুরো সিস্টেমটাই প্যারাল্যাল প্রোসেসিং এ চলে।

কাজেই সবচেয়ে বেশি সময় লাগে যে স্টেপে সেই স্টেপের টাইমই পুরো প্রসেসিং এর টাইম।

কাজেই আমার ধারণা যেটা ঘটতে পারে-
ওনারা
১. অংকে কাঁচা (হইতেই পারে, যে হারে টাকা চুরি করছে, হিসাবও রাখতে পারে নাই দুই সোনার রাজপুত্র মিলে)
অথবা
২. ভোট ক্যামনে নেয়-দেয় সেই বিষয়ে খু্ব একটা ধারণা নাই (মওদুদ আহমেদ এর জলজ্যান্ত প্রমাণ, উনি নাকি আনারসে ভোট দিয়েছেন)
কিংবা
৩. ওনাদের গরু হারিয়েছে (রেফারেন্স, গোপাল)


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অমিত আহমেদ এর ছবি
দ্রোহী এর ছবি

অত গণিত-ফণিত বুঝি না।

সোজা কথা একটাই - জিতলে নির্বাচন অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে আর হারলে নির্বাচনে কারুচুপি (ক্ষেত্রবিশেষে সুক্ষ শব্দটি ব্যবহৃত হবে) হয়েছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।