ধুচ্ছাই, যুতসই একটি শিরোনামও মাথায় আসছে না। সচলায়তনে লেখা হয় না অনেকদিন। তাই এই গভীর রাতে ঘুমকে আগলে রেখে বসেছি লিখতে।
ঢাকায় ফিরেছি দুই সপ্তাহ আগে। বাবা-মার অসুস্থতার জন্যে দেশে ফেরার তাগিদ ছিল। গত জুনেই এ কারনে ঘুরে গেছি। এবারে একেবারেই ফিরেছি - তাই বেশ প্রশান্তি মনে। তার জন্যে সাহায্য করেছে নিয়তি। জুলাই মাসে আবেদন করেছিলাম ঢাকায় একটি চাকুরির জন্যে। সেটিই ত্বরান্বিত করল বাকি সবকিছু। প্রকল্পটি স্বল্প মেয়াদের কাজেই কয়েক মাস পরেই আবার চাকুরি অনিশ্চিত। কিন্তু সেটি কোন ব্যাপারই নয় আমার জন্যে। আমার দরকার ছিল একটি অজুহাত, ফেরার জন্যে।
এই ফেরাটা কেমন হল? বাড়ি ফেরার মধ্যে আলাদা একধরনের ভালোলাগা কাজ করে। কারও হয়ত প্রতিদিন বাড়ি ফিরতে ভাল লাগে। কারও হয়ত কয়েক মাস বা কয়েক বছর পর। আমি এত হিসাব কষি না। বাইরে থাকলে কখনই সেখানকার বসত বাড়িকে নিজের বাড়ি মনে হত না।
মানুষ একজীবনে সব অসম্পূর্ণতা ধুয়ে মুছে ফেলতে চায়। কিন্তু কালে সেই অসম্পূর্ণতাগুলো জীবনেরই অঙ্গ হয়ে যায়। বাড়ি ফেরা মানে হচ্ছে চেনা জীবনের সেই অসঙ্গতির মধ্যে ফিরে যাওয়া - সেই লোড শেডিং সেই ট্রাফিক। আর কিছু উপরি পাওনা আছে - মায়ের হাতের রান্না ঝোলের স্বাদ পুনরায় আয়েশ করে পাওয়া।
ঢাকা বদলেছে অনেক - লোক বেড়েছে - খাম্বায় তার বেড়েছে - অসহিষ্ণুতা বেড়েছে। আর বেড়েছে দ্রব্য মূল্য - রিক্সায় উঠেই দশ টাকা, সিএনজি একশ টাকা, ভিক্ষা পাঁচ টাকা। মানুষের বেতন কি বেড়েছে এই জ্যামিতিক হারে? চারিদিকে টাকা আয়ের জন্যে হাহাকার।
আমার বড় চাচার বড় ছেলে বিদ্যুৎ বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী, চাকুরির বয়স শেষ হল প্রায়। গেলবার হজ্ব করেছেন তাই দাড়ি রেখেছেন। তিনি ঘুষ খান না তাই তার শত্রু অনেক। এবার তার চাকুরি খাবার জোড় তদবির করছে সহকর্মীরা তিনি জামাতের লোক এই অপবাদ দিয়ে। প্রকারান্তরে জামাতের অবস্থানই মজবুত করছে এইসব স্বার্থান্বেষী অর্বাচীনরা।
প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় ঘন্টাখানেক সিএনজিতে জ্যামে বসে থাকি। মোবাইল ইন্টারনেটের কল্যানে ফেসবুক দেখি, এটা ওটা করি। আর ভাবি জাকার্তা/বার্লিনের মত যদি ওভারপাস আন্ডারপাস হত তাহলে ২০ মিনিটে অফিস পৌছানো যেত। বাস্তবতা এই যে এই অসঙ্গতি গুলো নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। তার পরেও বাড়ি ফেরার মধ্যে আনন্দ আছে।
সেই আনন্দ নিয়েই এখন ঘুমাতে যাচ্ছি। শুভরাত্রি।
ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতা: নাপিক্স
মন্তব্য
দাড়ি রাখলেই, সালাম দিলেই, ওয়াইন না খেলেই জামাত-- এই হাওয়া এখন দেশে-বিদেশে সবখানে। এরা কাউকে পছন্দ না হলেই জামাতের পোষাক পরিয়ে দেয়, কারণ সেখানেই এদের লাভ নিহিত রয়েছে।
মনে মনে যা ভাবছিলাম সেটাই লিখে ফেলেছেন...লেখা অনেক ভালো লেগেছে.....ঘরে ফেরার টান অনুভব করছি খুব...খুব...খুব....
tofayel71@gmail.com
কিছু মনে করবেন না একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি, আপনি কি সৈয়দ আনসার মুহাম্মাদ তোফায়েল?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ভালো লাগল আপনার ফিরে যাওয়া
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
পড়তে খুব ভাল্লাগছে।
-----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
লেখাটা খুব ভাল লেগেছে।
এত এত ঝামেলা আর হতাশার মাঝেও কাউকে ফিরে আসতে শুনলে মনটাই ভাল হয়ে যায়।
অজস্র শুভকামনা রইল আপনার জন্য, এই চিরচেনা পথচলায়।
ভাল থাকুন, অনেক ভাল। সবসময়।
ভাল লেগেছে।
দেশে ফিরেছেন জেনে ভালো লাগলো রেজওয়ান ভাই। ছিলেন বাড়ির কাছেই, তাও দেখা করার সৌভাগ্য হলো না। এমনকি একটা ব্যাপক সুযোগ আসার পরেও! অথচ আপনার সঙ্গে দেখা হওয়াটা একটা ইচ্ছা হিসেবেই ছিলো/আছে আমার। দেশে থাকলে সেটা কোনো না কোনো সময় হবেই। আমরা একসাথে ধানমণ্ডি মাঠের কোনায় বসে ফুচকা খাবো, যাদব ঘোষের রসগোল্লা খাবো, মরণ চাঁদের দই খাবো, রাস্তার ঝালমুড়ি খাবো, আলু পুরি খাবো। আর বালিকা? সে তো দেখবোই।
ততোদিনে ঢাকা অবশ্য বদলাবে না। ওভার-আন্ডার, কোনো পাসই হবে না। হওয়া সম্ভবও না। যতোদিন না ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হচ্ছে ততোদিন ঢাকার কফিনে একটা একটা করে পেরেকই ঠোকা হবে। ঢাকাকে সেবা করে বাঁচিয়ে তোলা আর হবে না। আমরা মৃত ঢাকাতেই সবকিছু করবো।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনার সাথে দেখা হবার কথা ছিল ২০০৬ সালের মে মাসের সেই দিনে যেদিন আমি বার্লিন থেকে বনে গেলাম বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে। মাসকাওয়াথ ভাইয়ের সাথে সেদিনই প্রথম পরিচয় - কিন্তু আপনি ছুটি না পাওয়ায় আসতে পারেন নি।
সেই আক্ষেপটি পূরণ হবে নিশ্চয়ই ভবিষ্যৎে কোন এক সময়। আপনার বিয়ের সময়ই দেখা হতে পারে
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
বিষয়ের কারণেই লেখাটা আগ্রহ জাগায়। লিখেছেন ভালো, তবে বড়োই সংক্ষিপ্ত, এই খেদটাও জানাই। ফিরে আসার আগে তল্পিতল্পা গোছাতে নানা অদ্ভুত সিচুয়েশন হয়, তার কথা লিখতে পারেন। ফিরে গিয়ে কিছু কিছু প্রত্যাশা মেলে না, আবার অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাপ্তিও ঘটে, সে সব কথা কিছু লিখলেও আরো শুনতে চাই। একটা ২য় পর্ব লিখবেন নাকি?
একটা টাইপো পেলাম:
বাস্তবতা এই যে এই অসঙ্গতি গুলো নিয়েই বেচে থাকতে হবে > বাস্তবতা এই যে এই অসঙ্গতি গুলো নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে।
আমাদের ফেরা হয় না ।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ফেরার সময় চলে যায় নি। ভালবাসাই নিয়ে যাবে এক দিন।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
ভাল লাগল দিনলিপিটা রেজওয়ান ভাই
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
কেন নয়। পর্ব নয় বরঞ্চ দিনলিপি হিসেবেই আসতে পারে। বানান ঠিক করার জন্যে ধন্যবাদ।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
ভাল্লাগলো!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
tofayel71@gmail.com, প্রকৃতিপ্রেমিক, সাইফ তাহসিন, শুভাশীষ দাশ, বিষণ্ণ বাউন্ডুলে, দুর্দান্ত, নিবিড়, দুষ্ট বালিকা ও অন্যান্য সবাইকে ধন্যবাদ।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
একদম মনের কথাগুলো লেখে ফেলেছেন ভাইয়া।
---আশফাক আহমেদ
ভাল লাগলো।
কেন ফিরলেন, আসলেই একেবারে ফিরেছেন কিনা?- এরকম প্রশ্নবানের মুখোমুখী হননি?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বাড়ি ফেরার মজাটাই আলাদা।
আদনান0০৭
আপনজনদের সান্নিধ্যে অসঙ্গতি পরাজিত হোক... ভাল থাকুন, শুভ কামনা রইলো...
"চৈত্রী"
ভালো লেগেছে খুব। সংক্ষিপ্ত, কিন্তু অনুভব করলাম।
নতুন মন্তব্য করুন