ক্লাস টুতে স্কুলের বাংলা টিচার আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে বড় হলে কি হব। আমি উত্তর দিয়েছিলাম 'পুলিশ'। কারন পুলিশরা তখন আমার চোখে ছিল বীরত্ব-ক্ষমতার প্রতীক। এখন যদি আমাকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়, তাহলে চোখ বুঁজে অবশ্যই বলব ভিআইপি।
ভিআইপির সঠিক কোন সংজ্ঞা নেই, স্বার্থ আর ক্ষমতাই তাদের নিয়ন্ত্রক। ভিআইপি হতে লাগে না কোন যোগ্যতা, ন্যুনতম মনুষ্যত্ব বা পড়াশোনা। 'লেখাপড়া করে যে গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে' ধরণের তত্ব এক্ষেত্রে অচল। বাংলাদেশের শতাধিক এমপির শিক্ষাগত যোগ্যতা "স্বশিক্ষিত"। সেই স্বশিক্ষিতদের হাতে আমার শৈশবের হিরো পুলিশকে অনায়াসেই চড় খেয়েও তা হজম করতে হয়। বহু বিচারকের একটি করে অন্তত থার্ড ডিভিশন রয়েছে। তারপরও আপনি যদি ভুলে যান যে তারা সাধারণ মানুষ নয়, বিচারপতি, তাহলে হয়ত আপনাকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে হবে।
এই ভিআইপি সংস্কৃতি কি করে বাঙ্গালীদের গ্রাস করল? মুগল সম্রাটেরা তাদের আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের জন্য বংশানুক্রমিক উত্তরাধিকারসূত্রে জমির মালিক ভূঁইয়া বা ভূপতিদের নিয়ে জমিদারতন্ত্র চালু করেন। মুগল আমলে জমি ছিল মর্যাদার প্রতীক এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির একটি উৎস - কারন জমিদারকে পুলিশ, বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীর কিছু দায়িত্ব পালন করতে হতো। উচ্চাভিলাসী জমিদাররা শাসকশ্রেণীকে তুষ্ট করার বিনিময়ে সার্বভৌম ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন। ঔপনিবেশিক আমলেও জমিদাররা ছিলেন বহাল তবিয়তেই তবে তাদের খাজনা আদায় ছাড়া অন্যান্য ক্ষমতা হ্রাস পায়। ১৯৫১ সালে জমিদারি ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক বিলোপ হলেও জমিদার বাহাদুররা ঠিকই রয়ে গেছেন অন্য চেহারায়। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে জমিদারতন্ত্রের মীথ প্রথিত। ফলে অর্থের প্রাচুর্য বা ক্ষমতাধর হলে সেই জমিদারী মানসিকতা জেগে ওঠে। তারা এবং তাদের আশেপাশের লোকেরা ভিআইপি স্ট্যাটাসের সুবিধা ভোগে তৎপর হয়ে ওঠে। এমনকি প্রভাবশালী নেতার মুরগীরও ভিআইপি স্ট্যাটাস পাবার নজির দেখা গেছে।
আপনার দৈনন্দিন জীবনে নানা সমস্যার মধ্যে আপনারা ভিআইপির উপস্থিতি টের পাবেন। এই দেশটি স্পষ্টতই ভিআইপিদের দেশ হয়ে উঠেছে। আপনি ভিআইপি হলেন তো বিনা ঘুষে, বিনা পুলিশী ঝামেলায় আপনার জীবন চলবে। আপনার ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হবে না, কারন বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থায় আপনার চলাচল। আপনি বিদেশের ভিসা সহজে পাবেন। ভিআইপিদের মধ্যে কি কেউ বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে মারা গেছে?
এই কারনেই আমরা সবাই ভিআইপি হতে চাই। পরিচয়ের পর কয়েকটি বাক্যের মধ্যে আমরা উচ্চারণ করে ফেলি আমরা কোন ভিআইপির কত কাছের। ভাবি এতেই যদি শিকে ছিঁড়ে। সকলের জন্যে সমান অধিকার এই জিনিষটি আমরা মুখে বললেও তলে তলে লালায়িত থাকি একটু ভিআইপি সুখের।
এই ভিআইপিতন্ত্রের বুকে কিছুটা চির ধরিয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর টুলস। ইন্টারনেট ও মোবাইল সহজলভ্য হবার সাথে সাথে যোগাযোগের নিমিত্ত এখন হাতের মুঠোয়। ব্লগে, ফেসবুকে সবাই আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি। এখন বুদ্ধিজীবীরা আগের মত আর বিবৃতি দিয়ে সুখ পান না- কারন আম জনতা তাদের চেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কথা বলে ফেলে। বিশ্বের অনেক নামিদামী পত্রিকা বিদেশী সংবাদদাতা তুলে নিচ্ছে - কারন ব্লগ-টুইটারে ব্রেকিং নিউজ মিলে। ওপেনসোর্স, ক্রিয়েটিভ কমন্স, ক্রাউডসোর্সিং, কমিউনিটি, কোলাবরেশনের মাধ্যমে শেয়ার্ড নলেজ - উইকিপিডিয়া, ইউটিউব, ফ্লিকার, ফেসবুক, ব্লগ কমিউনিটি। ওয়েবের মাধ্যমে কোটি লোকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সৃষ্টি সবার হাতের মুঠোয়। এইসব শত শত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ২০০৬ সালের ম্যান অফ দা ইয়ার সম্মান দেয়।
১৯৯৯ সালে ন্যাপস্টার সবার নিজস্ব সঙ্গীত আর্কাইভ উন্মুক্ত করার মাধ্যমে একে অপরের মধ্যে গান আদান প্রদান সহজলভ্য করে দিল। সঙ্গীত ইন্ডাস্ট্রি প্রমাদ গুনল। অচিরেই তাদের নামে মামলা হল এবং ২০০১ সালে এটি বন্ধ হয়ে গেল। ন্যাপস্টারের দুর্বলতাগুলো জয় করে পরে র্যাপিডশেয়ার, মেগাআপলোড, ড্রপবক্স এর মত শেয়ারিং সাইট জন্ম নেয়।
সম্প্রতি আবার এইসব শেয়ারিং সাইট ও কোলাবরেটিভ কন্টেন্ট এর বিরুদ্ধে আটঘাট বেঁধে লাগা হচ্ছে। বহুল আলোচিত সোপা ও পিপা আইন চালু হলে টুইটার বা ইউটিউবএর মত সাইটকে প্রতিটি পোস্ট পরীক্ষা করে পাবলিশ করতে হত (এখানে বিস্তারিত)- যা বাস্তবে সম্ভব নয়। ব্যপক প্রতিবাদের মুখে আইনগুলো পাশ করা থেকে বিরত রাখা গেছে, কিন্তু এরকম চাপ আরও আসবে মেধাস্বত্ত রক্ষার নামে।
মোগাআপলোডের বিরুদ্ধে কপিরাইট লংঘন আর ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী ক্ষতিসাধনের অভিযোগ এসেছে এবং একে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেগাআপলোড কোম্পানিটি হংকংএর এবং পাইরেসীর অভিযোগে অভিযুক্ত এর কিছু কন্টেন্ট আমেরিকার লিজড সার্ভারে রাখার কারনে ফেডারেল কোর্ট তাদের জুরিস্ডিকশন দাবী করে। আমেরিকার অনুরোধে নিউজিল্যান্ড থেকে এর তিনজন (জার্মান ও ডাচ) হর্তাকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর প্রতিবাদে বেনামী হ্যাকাররা আমেরিকার জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট, এফবিআই, কপিরাইট অফিস, ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ ইত্যাদির ওয়েবসাইট হ্যাক করে।
এক স্বদেশীর বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেবার জন্যে মামলা ঠোকা হয়েছে। ফেসবুক একটি ক্লোজড সাইট। কাজেই এখানে অসদাচরণ প্রদর্শনের (?) জন্যে বড়জোড় চাকুরিজীবির বিভাগীয় শাস্তি হতে পারে, মামলা নয় (জুরিস্ডিকশনের ব্যাপারটিও আছে), যেখানে সে ভুল স্বীকার করে স্ট্যাটাসটি মুছে দিয়েছে। তার অনুপস্থিতির কারনে আদালত অবমাননার শাস্তি প্রদান যেন ঝিকে মেরে বৌকে শেখান - খবরদার বাড়াবাড়ি করবে না। অথচ জামাত নেতা জনসভায় প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হুমকি দেয়। তার বিরুদ্ধে মামলা হয় না - কারন সে রাজনৈতিক ভিআইপি।
এইভাবে বিশ্বজুড়ে সাধারণ অনলাইন ব্যবহারকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সংবাদ বা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্যে। ওদিকে অসাধু ভিআইপি রাজনীতিবিদরা তাদের বিশ্বব্যাপী গোপন ব্যান্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ কোটি টাকা আদান প্রদান করে অস্ত্র বা নিষিদ্ধ জিনিষ কিনছে -কারুরই মাথা ব্যাথা নেই।
গুয়াতেমালাতে আমেরিকার চাপে একটি বিশেষ কোর্ট এবং দুটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে কপিরাইট আইনের জন্যে। দেড় কোটি মানুষের এই দেশে প্রতি বছর ৬০০০ লোক খুন হয় এবং খুনীদের বিচার হয় না। মাইকেল জ্যাকসনের পাইরেট গান ডাউনলোড করার জন্যে কারও পাঁচ বছরের সাজা হতে পারে - অথচ তাকে খুনের দায়ে ডাক্তারের সাজা হয়েছে একবছর।
ইন্টারনেটকে সাধারণ মানুষের হাত থেকে ভিআইপিদের কব্জায় নিয়ে আসার জন্যে তোড়জোড় হচ্ছে আমাদের দেশেও। কপিরাইট আর সাইবার আইনের পক্ষে সোচ্চার হচ্ছে কতিপয় গোষ্ঠি। প্রথমে একশ্রেণীর মিডিয়া কর্পোরেট ব্লগ চালু করে মতামত প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় নতুন নতুন ফন্দি আঁটছে। এটি করছে তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। বিভিন্ন সভা সমিতির মাধ্যমে তারা ব্লগ ভিআইপি সাজার চেষ্টায় ব্যস্ত।
ইন্টারনেটকে ভয় ভীতির উর্ধ্বে রেখে সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য না করতে পারলে এটি অন্য সব মাধ্যমের মতই ভিআইপি নিয়ন্ত্রিত হবে। মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে পারলে কাদের লাভ হয় তা মানুষ চীন, উত্তর কোরিয়া, ইরান ইত্যাদি স্বৈরাচারী শাসকের দেশ থেকে অনুমেয়। আমাদের তাই ভাবতে হবে - আমরা আমাদের এবং সাধারণ মানুষের অধিকারের লক্ষ্যে লড়ব না ভিআইপি হবার ইঁদুর দৌড়ে যোগ দেব।
মন্তব্য
লেখাটা চমৎকার লাগলো রেজওয়ান ভাই।
আমি যদ্দূর জানি, ইন্টারনেট সংক্রান্ত নানা ধরনের দমননীতির (মূলত মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে) ব্যাপারে আপনার জানার পরিধি অনেক। সেই প্রেক্ষিতে আপনি কি কিছুটা অনুমান করতে পারেন, আসছে দিনগুলিতে কী ধরনের দমননীতি আসতে পারে? বৈশ্বিক তো বটেই, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতেও আন্দাজ করতে পারলে ভালো হয়।
অলমিতি বিস্তারেণ
বাংলাদেশ প্রেক্ষিতে এ ব্যাপারে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। মনে আছে গত বছর কোন কোন আইএসপিতে গুগল সার্ভিস অ্যাক্সেস করা যাচ্ছিল না। আমি আপনাকেও জানিয়েছিলাম - কিন্তু কোন সুরাহা হয় নি। কয় মাস পরে আপনা-আপনি এটি ঠিক হয়ে যায়। বাংলাদেশে দুটি ইন্টারনেট গেট্ওয়ে রয়েছে। একটি ম্যাঙ্গো এবং অপরটি বিটিসিএল। গত ৭ই জানুয়ারী থেকে গ্লোবাল ভয়েসেস ইংরেজী আর বাংলা সাইট দুটি অ্যাক্সেস করা যাচ্ছে না যে সব আইএসপি বিটিসিএল থেকে ব্যান্ডউথ নিচ্ছে সেসব দিয়ে। একই ডোমেইনের অন্যান্য সাব ডোমেইন যেমন অ্যাডভোকেসি বা আরবী, ফরাসী ইত্যাদি ভাষার সাইটগুলি অ্যক্সেস করা যাচ্ছে। ফলে বোঝা যাচ্ছে স্পেসিফিক ইউআরএল ব্যান।
আমি খোঁজ খবর নিলাম নানা মহল থেকে। প্রথমে বলল মন্ত্রণালয় থেকে কিছু সাইট বন্ধ করা হয়েছে সেখানে এ দুটি সাইট থাকতে পারে। তারপর আবার খোঁজ নেবার পালা - না সেসব ছিল শুধু আইপি ব্যান - ভিওআইপি দমন করতে - জিভির আইপি ব্যান হয়নি - তাহলে অন্যান্য সাব-ডোমোইন পাওয়া যেত না। কিছু ব্লগ সাইটের লিস্ট হয়েছিল সামহোয়ারইন সহ - কিন্তু সেটি শেষ মুহুর্তে করা হয়নি। আমি আবার পরলাম অনিশ্চয়তার মধ্যে। পরে বিটিসিএল এর যে শাখা এই ব্যানগুলো করে সেখানে খবর লাগালাম। ইন্জিনিয়ার জানালেন যে না ব্যান করা হয় নি- হয়ত কোন কারিগরি ক্রুটি হবে।
কিন্তু এখনও ব্যাপারটি ঠিক হয় নি। কিউবিতে মনে হয় ম্যাঙ্গো - বিটিসিএল দুটোরই কানেকশন আছে - ফলে - যখন ম্যাঙ্গো দিয়ে কানেকশন হয় তখন পাই - নাহলে পাই না। এখন আমি সাধারণ নাগরিক হিসেবে কার কাছে যাব প্রশ্ন করতে? সাইট দুটি বাংলাদেশের না - যে এর মালিক খোঁজ নেবে কেন সার্ভিস পাচ্ছে না। এদেরকে কি তৃতীয় কোন গোপনীয় পক্ষ ফিল্টার করছে যার ব্যাপারটি বিটিসিএলও জানে না? আর এদুটি কেনই বা ফিল্টার করা হচ্ছে যদি ঘটনা সত্যি হয়- ভাবতে পারছি না।
আমার এক আত্মীয় - এক টেলিকম অপারেটরের ইন্জিনিয়ার জানালেন আমাদের গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন আড়িপাতার যন্ত্র এসেছে - যাতে ইমেইলও ইন্টারসেপ্ট করা যাবে। আমি বললাম যে অনেকে https encryption ব্যবহার করে -তাদের আড়াপাতা কঠিন। বিশেষ করে gmail এর encryption ভাঙ্গা খুব কঠিন। তিনি বললেন যে তাদের কাছে খোদ গুগলের decryption প্রযুক্তি আছে অন্যান্য উন্নত বিশ্বের আড়িপাতা প্রযুক্তির মত - এগুলো সরকার চাইলে গুগল দিতে বাধ্য। আমি জানিনা কি বিশ্বাস করব। আমরা এই সংক্রান্ত ডেভেলপমেন্ট গুলো সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি না।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
স্যরি রেজওয়ান ভাই, সারাদিন অফিসের ব্যস্ততায় এই পোস্টের কথা ভুলে গিয়েছিলাম, তাই দেরি হয়ে গেলো।
যেহেতু আমি নিজেই ডাটা কম্যুনিকেশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি, তাই কোড অভ কন্ডাক্টের কারণে অনেক কিছুই এখানে লিখতে পারবো না। আমার নম্বর সম্ভবত আপনার কাছে আছে (নাহলে ফেসবুকে পেয়ে যাবেন)- আগামীকাল লাঞ্চ টাইমে যদি ফ্রি থাকেন, কল দিতে পারেন। জিভির ব্যাপারে আলাপ করতে পারি।
তৃতীয় পক্ষের দ্বারা ব্লক কিংবা ব্যানের ভয়টা আমার মনে হয় অমূলক। অন্যকিছু হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আমি বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার কী যন্ত্র আছে জানি না, তবে এনক্রিপটেড ডাটা মনে হয় ওভাবে কেউ রিড করে না। এর জন্য আলাদা বুদ্ধি আছে, পৃথিবীর সর্বত্র সেইসব বুদ্ধিই ব্যবহার করে। আমার ভুল হতে পারে, তবে আমার মনে হয় না বাংলাদেশেও তার বাইরে কিছু করা হয়। আর আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, গুগল বোধহয় ডাটা দিতে বাধ্য না। অনেক দেশকেই গুগল ফিরিয়ে দিয়েছে, এমনটাই শুনেছিলাম।
যাই হোক, পাবলিক ফোরামে হয়তো এরচে বেশি আলোচনা করার সুযোগ নেই। সম্ভব হলে সাক্ষাতে কথা বলবো।
অলমিতি বিস্তারেণ
আমেরিকার মত ভারতেও ফেসবুক-টুইটারের উপর মন্ত্রীরা তেনাদের সম্বন্ধে 'অবমাননাকর মন্তব্য' বা 'ধর্মানুনুভূতিতে আঘাত' লাগানো মন্তব্য প্রকাশের দায়ে সেন্সরশিপ আনতে চাইছে। গুগল-ইয়াহু-ফেসবুকের উপর কোর্টে কেসও উঠেছে (নাকি সরকার তাদের ডেকে ধমকি দিয়েছে?) শুনলাম।
জয়তু ভিআইপি, জয়তু সরকারি হস্তক্ষেপ ...
এইসব ব্লগ ফেসবুক এইসব আসার পড়ে পত্রিকার 'লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক' ট্যাগওয়ালারা বেশি সুবিধে করতে পারছে না। ওরা তো মনখারাপ করবেই। সলিমুদ্দি কলিমুদ্দি এরাও এখন পলিটিক্যাল অ্যানালাইসিস করে! কোন মানে হয় এর??? ধর এদের গলা টিপে!
লেখা দুর্দান্ত হয়েছে- এইটা বলাই বাহুল্য
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
খোদ আমেরিকাতেই মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যার জন্য বিচারক শুধু লাইসেন্স স্থগিত করেই ক্ষান্ত দিয়েছেন অথচ এখন আইন হচ্ছে সামান্য লিঙ্ক পোস্ট করার জন্য ৫ বছরের জেল!
শুধু একটাই আশা আছে, মানুষ এখনও পর্যন্ত কোন না কোন উপায়ে নিজের কথা বলার স্বাধীনতার সুযোগ বের করে নিছে। তাই আইন করে আশা করি মানুষকে দমায়া রাখা যাবে না।
আমাদের মত গরিব দেশে তো এই অভিজাততন্ত্র আছেই, কিন্তু বিশ্বের মোড়লের আসনে বসে থাকা আমেরিকা তো কিছুটা দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারে, খালি গলা টিপে ধরার চেষ্টা। নাকি সৎ-ভদ্র হলে আর মোড়লের আসনে থাকা যায় না...
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
নতুন মন্তব্য করুন