আজ সকালে মেইল চেক করার সময় বন্ধু চ্যাটে এল ও জানালো আজকের দিনের বিভীষিকাময় খবরটি - সাংবাদিক সাগর সরোয়ার ও টিভি রিপোর্টার মেহেরুন রুনীর নৃশংস হত্যাকান্ড । সে বলছিল "গতকাল রাতেই সাগরকে একটি প্রেস রিলিজ পাঠিয়েছিলাম - আজকে সেটাই হাতে নিয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছি।"
এইতো একদিন আগেও যারা ছিলেন সুখী দম্পতি, আজ শুধুই স্মৃতি আর ছবি। সারাদিন ফেসবুকে সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে সাগর-রুনী নিয়ে শোকগাথা ও স্মৃতিচারণ, তাদের ছেলে মেঘকে নিয়ে নানা কথা পড়তে পড়তে ও ছবি দেখে আমরাও শোকাচ্ছন্ন ও ভারাক্রান্ত হই বইকি।
সাগরের ডয়েশে ভেলেতে চাকুরির সুবাদে দম্পতিটি জার্মানিতে প্রবাস জীবন কাটিয়ে গত বছর ফিরে এসেছেন। অন্য অনেকের মত বিদেশে থেকে জাননি। হয়ত দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ভাগ্যে রইল বিভীষিকাময় মৃত্যু।
অনেকের মনেই নানা প্রশ্ন - এটা কি ডাকাতি না প্রতিহিংসামূলক খুন। তারা দুজন কি তাদের রিপোর্টিং এর জন্যেই কোন শক্র তৈরি করেছিলেন? নাকি এটি কোন পারিবারিক বিরোধ? সেসব হয়ত জানা যাবে অথবা যাবে না। তবে আমাদের সমাজ যে অমানবিক ও কলুষিত হয়ে গেছে তা বোঝা যায় ঘাতকদের আচরণে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ীঃ "সাগরের দেহে ১৯টি বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এছাড়া ছোটখাটো আরো ২০-২৫টি কাটা দাগ পাওয়া গেছে। বুকের বাম পাশে একটা ছুরির ৮০ ভাগ গেঁথে ছিল।" হায়, এ পোড়ার দেশে খুনেও রহম নেই।
এ মৃত্যু আমাদের অনেককেই নাড়িয়ে দিয়েছে। এসব জেনে নির্লজ্জ স্বাভাবিক থাকা যায় না। তবে বাস্তবতা এই যে দেশে নানান নৃশংসতা অব্যহত রয়েছে ও থাকবে। কারন আমরা কখনও মূল নিয়ে ভাবি না। সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। পাওয়া আর না পাওয়ার দলের মধ্যে একধরণের অবিশ্বাসের ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। ফলে দেখা যায় খুব অল্প খরচ করেই মানুষ খুন করা যায়। আর নৃশংসতার ব্যাপারটিও সমাজসৃষ্ট। কোরবানীর সময় অভিভাবকরা অতি উৎসাহে সন্তানদের পশু জবাই করা দেখাব। পাকিস্তান ও গুটি কয়েক দেশ ব্যতিত পৃথিবীর কোথাও প্রকাশ্যে পশু জবাইয়ের চল নেই। ফলে লক্ষ্য করবেন এসব দেখে দেখে শেখার ফলে দেশে জবাই ও ছুরিকাঘাতে মৃত্যুর হার বেশী। কিন্তু এ নিয়ে রাষ্ট্র বা বুদ্ধিজীবীরা ভেবেছে কখনও?
আজ আরেক প্রবাসী বান্ধবীর সাথে কথা হচ্ছিল। সে দেশে ফেরার জন্যে চাকুরি খুঁজছে কিছুদিন ধরে। আজকের সংবাদে মুহ্যমান সে বলল এখন আমি ফেরার ব্যপারে নতুন করে ভাবব। এতদিন ফিরে আসার জন্যে উদ্বুদ্ধ করলেও আজ তাকে কোন কিছু বলতে পারিনি। এই মৃত্যু উপত্যকা থেকে আমার দেশকে ফিরে কেড়ে না আনলে আমি তার নিরাপদ ভবিষ্যৎের প্রতিশ্রুতি দেই কিভাবে?
মন্তব্য
কি আর বলব! শুধুই দীর্ঘশ্বাস!
রেজওয়ান ভাই, এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই একজন অতিথি লেখা দিয়ে দিয়েছেন, আপনি সেখানে এটি মন্তব্য আকারে দিতে পারেন।
আমি লেখাটি শুরু করার সময় এ সংক্রান্ত কোন পোস্ট ছিল না। কেউ দেয়নি এ জন্যেই লেখা শুরু করেছিলাম। আপনাকে এটি বিব্রত করলে আমি প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে নিচ্ছি।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
বিব্রত করার কিছুনা রেজওয়ান ভাই, তবে একি বিষয়ে দুইটা লেখা থাকলে আলোচনার সূত্রে ধরে রাখা কঠিন হয়ে পরে। একই বিষয় নিয়ে একই সময়ে দুজন লেখা শুরু করাটা খুবই স্বাভাবিক, এরকম হতেই পারে।
এটি ব্যক্তিগত ভাবনা নিশ্চয়ই। একই বিষয়ে তিনটি ভিন্নধর্মী লেখা হলে তা একটি থ্রেডেই সন্নিবেশিত করতে হবে আলোচনার খাতিরে - সেটি হয়ত ফোরামের ক্ষেত্রে খাটে - ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে মনে হয় না। এই বিষয়ে আরও লেখা এসেছে প্রথম পাতায়। তবুও হয়ত আলোচনার সূত্র রাখার দায় আমারই -আমার লেখার অক্ষমতাকেই আমি দোষী মানছি। ইদানিংকালে আমার কম লেখার কারন কথাগুলো অন্যকেউ বলে ফেলে। আপনার প্রতিক্রিয়ায় এই ধারনাই দৃঢ় হলো যে না লিখলেই বরং নিরাশ হবার কিছু থাকে না।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
প্রকাশ্যে প্রাণী হত্যা বন্ধ করা উচিত, আমাদের দেশেও প্রকাশ্যে প্রাণী হত্যা এবং মাংস বিক্রি করার বিরুদ্ধে আইন আছে, কিন্তু তা মানা হয়না, যত্রতত্র মাংস বিক্রির দোকান দেখা যায়, এদের সব দোকানেই প্রানীদের হত্যার পরে দেহাংশ ঝুলিয়ে রাখা হয় প্রদর্শনীর জন্য যা রাস্তায় চলাচলকারী শিশুদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে, এর বিরুদ্ধে এখনি ব্যাবস্থা নেওয়া প্রয়োজন|
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
নতুন মন্তব্য করুন