'ইতাক তুকে মানাইছে না গ, ইক্কেবারে মানাইছে না গ’
''লিখে লিখে এইসব; আর যদি নাই লিখি---
নিত্যদিনের অর্থহীন এই প্রাত্যহিকী?
না-ই বা যদি লিখি আর যা কিছু বেদনার ও বিষাদের,
বিজন ব্যথা তোমার-আমার, আমাদের.....''
শ্রীমান ভজহরি মুখুজ্যে বলেছিলেন ‘তত্ত্বাবধান মানে জীবে প্রেম!’
আমি চাঁটগাঁয়ের হাবুল বিবি, সারাবছর মাথার বেদনায় ভুগি আর হফতার ছ’দিন রাতের বেলা না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ি।
সকালে যত তাড়া থাক, একবার অন্তত নীড়পাতায় উঁকি মারা চাই-ই। আর মাঝেমাঝে হাত খুব বেশি নিশপিশ করলে একটা টকটক গন্ধের পোস্ট ঝোলানো। মোকদ্দমা ডিসমিস!
গত ক'দিন ধরে লিখতে হচ্ছে কেবল তিতকুটে সব মানুষের অচেতনবেতনসুচেতন রোজনামচা। কামলা খাটছি কিনা। আপিশ কোথায়? ওই হোথা….
এক চিমটিও ভাল্লাগে না.. তবু নাকমুখ কুঁচকে কাজকম্মো বোঝার চেষ্টা চালাই। তাত্ত্বিক জ্ঞানের সঙ্গে বাস্তব দুনিয়ার যে হাজার মাইল ফারাক, সেটা ভুলে গিয়ে গতকাল প্রশ্ন করে বসেছিলাম-- 'লেবার ল' মাফিক তো সর্বোচ্চ কর্মঘন্টা ১০। ১২-১৪ ঘন্টা কাজ করানো হচ্ছে যে বড়!?
সহ -ব্যবস্থাপক পদধারী মহিলাটি বেজায় আমুদে মানুষ। তৎক্ষনাৎ ঢোল পিটিয়ে দিলেন— একটি বিশেষ ঘোষণা! নবাগত কোমলপ্রাণ বালিকাটি ব্যথিত চিত্তে জানতে চাইছেন কেন শ্রমিকদের অতোটা খাটানো হয়?
আমি মহা বিব্রত। চারদিকে হাসির রোল। এরপর শিখতে হলো, বৈদিশি বায়ারদের বায়না সময়মত মেটাতে হলে দেশীয় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি না দেখালে চইলত ন।
''আমার তখন হলো না তেমন শক্তি।
যেন মনে হলো, স্রোত যেন বড় শক্ত!
মনে হলো নদী নয়.. এ তো সর্প।
কেন মনে হলো, পানি নয়.. এ-যে রক্ত!''
পুরোপুরি হেরে যাওয়ার ভয়ে বোকাটে আর আদতে আনাড়ি এই ছেঁদো, সস্তা আমাকে নিয়ে ঘষটানো পায়ে কেরানি হওয়ার মামুলি চেষ্টায় আজকাল বারবার ফটিককে মনে পড়ে।
‘এক বাঁও মেলে না, দো বাঁও মেলে না………………..’
'নবীন কিশোর, তোমায় দিলাম ভুবনডাঙার মেঘলা আকাশ’
৯৬তে কাজিন বহ্নি যখন পৃথিবীতে এলো, আমার বয়স তখন সাড়ে নয়। দীর্ঘদিন পর পরিবারে আগত শিশুর জন্য স্বাভাবিকভাবেই আদরের মাত্রা হয় লাগামছাড়া! বড়খালা ওকে ডাকতেন রাজকন্যা কঙ্কাবতী, এখনো তাই ডাকেন। এরপরে কয়েক বছরের মধ্যে মামা খালা সবদিকের মিলিয়ে ছানাপোনায় বাড়িতে বাঁদরের থুড়ি চাঁদের হাট বসে গেলেও বহ্নির দাম বড়- একটা কমেনি।
বোধহয় সেকেণ্ড ইয়ারে তখন। আমার জন্মদিন ছিল সেদিন। ভার্সিটি থেকে ফিরে দেখি টেবিলের ওপর একখানা ক্ষুদে চকলেটবার। সঙ্গে গোটাগোটা হরফে খাস সাধুভাষায় লেখা আরো ক্ষুদে চিরকুটের মর্মকথা সাংঘাতিক!
‘উপহারের আকার এবং মূল্য নয়, কতটুকু শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার সঙ্গে তা দেওয়া হচ্ছে তাই মুখ্য। খাইছে.. প্রায় টাশকি খেয়ে গেলাম।
♥রবিবুড়ো আমার পয়লা প্রেমিক। তিনি বলে গেছেন—
''নিতে যারা জানে তারাই জানে, বোঝে তারা মূল্যটি কোনখানে।
তাই তো বলি, যা কিছু মোর দান-- গ্রহণ করেই করবে মূল্যবান... আপন হৃদয় দিয়ে।''
এই পিচকি এত্ত দামি তত্ব শিখলো কেমন করে?
সেদিন ওদের বাসায় গিয়ে আরেকদফা টাশকি খেলাম। দেখি নীরস মুখে রসায়নের বুলি কপচাচ্ছে। ক্লাস সেভেনে কেমিস্ট্রি? মেয়ে গড়িয়ে হেসে বলে-- আপ্পি, আমি এবার নাইনে উঠেছি তো.. কী সর্বনাশ! লোকজন যে কথায় কথায় ইদানীং আমাকে বয়সের খোঁচা দেয়, তা দেখছি একেবারে অযৌক্তিক নয়!
''শুয়ে শুয়ে অশোকপাতায়, মুমূর্ষু শিশির বলে হায়…
কোন সুখ ফুরায়নি যার, তার কেন জীবন ফুরায়?''
‘মনে হয়, এর চেয়ে অন্ধকারে ডুবে যাওয়া ভাল…’
গেণ্ডিকালের 'ষষ্ঠ পাণ্ডব' সখিদের একজনের সঙ্গে ম্যালা দিন পর নেটে আড্ডাছিলাম। বালিকা দারুণ হতাশ, সেশনজটে অনার্স শেষ হয়নি এখনো। প্রচণ্ড স্বার্থপর সেজে কেবল নিজেকে নিয়ে ডুবে থাকি বলে এখন অন্যদের যাবতীয় হাহুতাশ শুনলে কেন যেন মেজাজ খিঁচড়ে যায়। কটমট করে বলে বসলাম-- পাশ করে কি দুটো বাড়তি হাত গজাবে? মন দিয়ে সংসার কর। (বাল্যপ্রেমিকের সঙ্গে বিবাহ হইয়াছে বছর দেড়েক আগে) বরের নাম তো ‘জনি’.. ছেলের নাম দিস রনি আর মেয়ের নাম টুনি। হেপ্পি ফ্যামিলি। সে চটেমটে একশা!
সুখদুঃখপাপপূণ্যবৈরাগ্যসংসার-- পাক্কা এক সপ্তাহ এইসব হাই কেলাশ থট মাথায় নিয়ে ঘুরলাম। বিভূতিভূষণের ‘দেবযান’ পড়ার কুফল!
''এই শহরের ভিড়ে পাখিদের ওড়াউড়ি নেই,
শুধু অচেনা মানুষের কোলাহল, গাড়ির কর্কশ শব্দ!
এখানে মানুষেরা এক সাথে হেঁটে যায়, কেউ কাউকে চেনে না....''
যতদিন যাচ্ছে, অনুভূতিহীনতার সংক্রমণ ছড়িয়ে যাচ্ছে আপাদমস্তক। পাখির জুলুম, মেঘের জুলুম খারাপ লাগে। এই যে মানুষ, মুখে একটা.. মনে একটা.. খারাপ লাগে। তারপর একসময় আসে, যখন কিছুতেই আর কিছু যায় আসে না। জানালার বাইরে ছড়ানো বিশাল আকাশের ঘের একটু একটু করে গুটিয়ে আসে। প্রতিবেশি দালান ৩..৪..৫..৬..৭-- খালি ওপরের দিকে ছোটে। ‘ ♫♪ ভিড় করে ইমারত, আকাশটা ঢেকে দিয়ে চুরি করে নিয়ে যায় বিকেলের সোনা রোদ’।
পটে ঝোলানো ছোট্ট চারায় গোলাপি কুঁড়ি দেখে আম্মু তৃপ্ত চোখে ঝাঁঝরি হাতে জল ছেটান। আমি চোখ সরিয়ে নেই। ঘাসফুল আর ঈর্ষাবিভোর তারাদের নিয়ে ঠুনকো বিলাসিতার জীবন রয়ে গেছে সেই উজানীয়ার দেশে…
''এখন আমি একটা পাহাড় কিনতে চাই।
সেই পাহাড়ের পায়ের কাছে থাকবে গহন অরণ্য,
একেবারে চূড়ায়, মাথার খুব কাছে আকাশ… নিচে বিপুলা পৃথিবী, চরাচরে তীব্র নির্জনতা!
আমার কণ্ঠস্বর সেখানে কেউ শুনতে পাবে না।''
দিনভিখারী হয়ে পাংশু চিবুকে একই বৃত্ত ঘুরে আসা এইসব বিচ্ছিরি বাস্তবতার মাঝেও কদাচিৎ আমারো মন পোড়ে। নিজের অসংখ্য সীমাবদ্ধতা সর্ম্পকে রোজ নতুন করে হয় জানাজানি।
কিন্তু বিসিএস, ম্যাট অথবা জিআরই পারাবার ডিঙিয়ে ইহলৌকিক স্বাচ্ছন্দ্য অর্জনের সাহস এবং অযোগ্যতা ইত্যাদির গোলকধাঁধা সংক্রান্ত আর সব ছাপিয়ে স্বপ্নহীন চোখে শুধুশুধুশুধু বেঁচে থাকার অপ্রয়োজনীয় কষ্টটাই সবচেয়ে তীব্র হয়ে ওঠে।
মন্তব্য
লাইনগুলো সুন্দর।
আবুল হাসানের লাইন।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
প্রতিদিন সকালে অফিসে আসি...আর মনে মনে আউড়াই- পৃথিবীতে নাই কোনো বিশুদ্ধ চাকুরী।
বেশ কয়েক বছর আগে এবিসি সিক্সটি মিনিট'স (সম্ভবত) একটা অনুষ্ঠান করেছিল- বাংলাদেশে গার্মেন্টসের একটা মেয়েকে নিয়ে। মেয়েটাকে আমেরিকাতে এনে সুপার মার্কেটে নিয়ে গিয়েছিল- নিজের তৈরি পোশাকের দাম দেখে মেয়েটা চোখের পানি- টাকার অভাবে বাবার চিকিৎসা হয়নি- অথচ ওর তৈরি পোশাক কত উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
যতই দিন যাবে ততই দেখবে বইয়ের নীতিকথার সাথে বাস্তবের কত যোজন দূর। এক সময় এগুলোও গায়ে সয়ে যাবে হয়ত।
সেই কারণেই ভজহরি মুখুজ্যে, কুশল মিত্র, স্বর্ণেন্দু সেন, প্যালারাম বাঁড়ুজ্জের (ভালো নামটা মনে পড়ছে না) সাথে লেগে থাক। ওই পৃথিবীটা অনেক আমোদময়। প্রতিদিন কাজের ফাঁকে একটু টেনিদার সঙ্গ পেলে ভালো কাটবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
প্যালারামের আসল নাম 'কমলেশ ব্যানার্জি'।
মন ভাল করতে 'টেনিদা আর পাগলা দাশু'র কোন বিকল্প নেই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আসল কোবতে আত্মস্থ করতে তো এখনো অনেক বাকি...
আপনার উল্লেখিত কর্মস্থলে কী ঘটিয়া থাকে জানি না তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৪-১৬ ঘন্টা যতটা না বৈদিশি বায়ারদের কারণে তাহার চাইতে অনেক বেশি আমাদেরই স্বদেশী কিছু মনুষ্যনামধারীর তথাকথিত প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন মডেলের খাতিরে এবং তাহার চাইতেও বেশি আরো কিছু অমেরুদন্ডী সামনে-দন্ডায়মানের-চামড়ার-রঙ-বিচারে মস্তক অবনত মনুষ্যনামধারীর তথাকথিত কর্মতৎপরতার প্রমাণ দাখিল করিবার তরে... ইহাদের মহৎ উদ্দেশ্য হাসিলে দুই চারখানা শ্রমিকপ্রাণ ঝরিয়া যাইতেই পারে, তাহা বলিয়া কি (নামে) দেশ, (কথায়) দশ এবং আসলে নিজের উন্নয়ন থামিয়া থাকিবে?
এবং এই চিত্র খালি এইখানে নহে, সর্বদা বিস্তৃত... এমনকি বৈদিশি বায়ার না থাকিলেও উহারা থাকেন...
সেই জন্যেই তো মনে হইতেছে এই জগত আমার নহে..।
তবু ''টাকাটাই শেষ কথা, বাকি সব বাতুলতা..
টাকা কথা রাখে।'' ♫♪
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হেহেহেহে, আবার মজা পাইলাম।
লেখা পড়ে মজা পাইছি, কিন্তু ঐ 'কোবতে'র যন্ত্রণায় কিছু মাথার উপর দিয়া গেছে। সে ব্যাপার না।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
আমি জানতুম, জানতুম... আর কেউ কিছু বলুক না বলুক, বয়সের খোঁচা দেবেন আপনি ঠিকই!
খুলনার মানুষ খুব খ্রাপ!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ভালো লাগা জানাই
চাঁটিগাঁয়ের হাবুল বিবি চাকুরীতে ঢুকে গেছেন নাকি? অভিনন্দন! লেখাটা ভালো লেগেছে
'হঃ, সৈত্যই কইসেন।'
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বয়স হয়েছে, অনেকতো দেখলাম। বয়স যখন কম ছিল তখন এইসব বৈষম্য খুব চোখে লাগতো, প্রতিবাদি হয়ে উঠতাম। এখন সয়ে গেছে। আমরা সত্যিকার অর্থে আর মানুষ নেই। অনুভূতিহীন, বিবেকবর্জিত অদ্ভুত এক প্রাণী।
৪১ বছর ঢাকা শহরে আছি। পরিবেশ, পরিস্থিতি, প্রকৃতি সর্বোপরি চোখের সামনে মানুষগুলো সব কেমন পালটে গেল। হিসাব মেলাতে পারিনা। এজীবনে হয়ত আমার হিসাব আর মিলবেনা।
আমরা এখন সত্যিই আর মানুষ নই।
হিসেব মেলানোর চেষ্টাও ছেড়ে দিতে হচ্ছে তাই....
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আর ইয়ে, 'সেদিনের ছানাপোনা'রা যদি বয়স বেড়ে যাওয়ার কথা বলে তাহলে আমার মত বয়সের ভারে ন্যুব্জ বুড়ো হাবড়ারা কই যাবে? পৃথিবীতে কি আমাদের বুড়ো হাড়গুলোর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলো?
ছুটির সেই ফটিককে টেনেছি কি সাধে?
কেউ ছোট বলে আগের মতো খাতির- তোয়াজ করে না, বড় হয়েছি বলেও কেউ পাত্তা দেয় না!
ক্যাম্নে কী!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এইবারের লেখাটা আমাকে খুব নাড়া দিল।
তুই এখন যে পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিস---কবিতার শহরের সাথে ইট-কাঠের শহরের তফাত যেভাবে চোখে পড়ছে---সেই একই বুক-ভাঙ্গা প্রক্রিয়ার মাঝে দিয়ে আমাদের সবাইকেই যেতে হয়েছে। তবে কেউ পার হয়ে গেছে তেমন কিছু অনুভব না করেই। আর কেউবা বা তোর মতো---প্রতিটা আঘাতে ব্যথিত চিত্তে থমকে দাঁড়িয়েছে। এই সময়টা বড় মূল্যবান। এই সময়টা ঠিক করে দেবে তুই শেষ পর্যন্ত কী হবি-- কবিতার শহরের কোকিল? নাকি ইট-কাঠের শহরের দেবতা?
শুভেচ্ছা অহর্নিশ
''অফিস বলে একটা কারাগার আছে... সেইখানে যমের মত কিছু মানুষ আছে, যারা কফিনে কফিনে মৃতদেহ সাজিয়ে রাখে।''
সঞ্জীব চ্যাটার্জির 'ইতি তোমার মা' বইটা পাঠিয়েছিলেন এক সচল। কয়েকটা লাইন খুব মনে ধরায় মুখস্ত করে নিয়েছি।
কৃতজ্ঞতা অহর্নিশ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার সেরা লেখাগুলোর একটি।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ, ধন্যবাদ!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কোন কিছু খুব ভালো লাগলেই আমার 'খেয়ে' ফেলতে ইচ্ছে যায় ( পেটুক বলে বোধ হয়) ।
এই লেখাটাও তেমনি গপ্ করে 'খেয়ে' ফেলতে ইচ্ছে হল
ছিক, এই পঁচা লেখা কেউ বুঝি খায়?
তার চেয়ে (গুড়) খান।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আগাগোড়া বাঁধিয়ে রাখার মতো পোষ্ট। দাড়ান প্রিন্ট করে নেই। তারপর বাঁধাবো।
আর ছোট্ট একটা অভিনন্দন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ইয়ে মানে.. কী যেন বলে..
থ্যাঙ্কু ভাইয়া।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপাত আলসে এবং ইদানিং 'চারকি'র 'যাঁতাকলে' পড়ে নিজেরে হারায়ে খোঁজা এ অধম আজকাল নিজেকে প্রবোধ দেওয়ার চেষ্টা করে-
"এই দিন দিন নয় আরো দিন আছে!"
মন নামের যে মোড়ল আছে, সে আবার অত তত্ত্ব মানতে নারাজ, আশার গলা চিপে হতাশা আনতে ওর জুড়ি নাই।
লেখা বরাবরের মত ভাল লাগল, কে জানে আড়ালে চাপা পড়া বিষাদটুকু একটু হাঁফ ছাড়ার সুযোগ পেল বলেই হয়ত।
কারাগারে ভাল লাগার কিছু নেই, খারাপ লাগাটা সয়ে যায় কেবল এই যা সান্ত্বনা!
'বন্দী জীবন' সহনীয় হোক, শুভেচ্ছা রইল।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আমি একে তো বোকার হদ্দ, তার ওপর চরম নৈরাশ্যবাদী।
বন্দিত্ব সয়ে যাবে কিংবা সয়ে নেয়ার মতো বন্দিত্বের সুযোগ আদৌ আসবে কখনো হাতে, সেররকম কিছু ভাবতেও ডরাই।
ধন্যবাদ রইলো মর্ম।
অনেকদিন লিখছেন না কিন্তু!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ঘ্যাচাং!!
কী-বোর্ডের অতি তত্পরতা নিত্য গ্রহনযোগ্য নহে!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমি বলতে চাই, এই খুকিটি বড্ড ভালো লেখে। কবিতা গুলো একেবারে মাপমতো লেখার মাঝখানে বসে যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় ওর লাগবে বলেই কবিরা এগুলো লিখে রেখেছেন।
আমি যেই লোভে আপনার লেখাগুলো পড়তে আসি, তা হচ্ছে কবিতার এই টুকরোগুলো। এবারের লেখায় এটা বেশি ভালো লাগলো,
''শুয়ে শুয়ে অশোকপাতায়, মুমূর্ষু শিশির বলে হায়…
কোন সুখ ফুরায়নি যার, তার কেন জীবন ফুরায়?''
বাকি যা বলতে চাইছিলাম অনিকেতদা বলে দিয়েছে।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
১) আমি বলতে চাই যে 'খুকি' বলে অপমানের তেব্র পেতিবাদ চলছে, চলবে!
২)
'রবি'র কবিতা ভালু তো লাগবেই।
৩) ''অক্ষরে অক্ষর গেঁথে সব হওয়া যায়...অক্ষরমালার কাছে নতজানু হয়ে থাকি।''
আর কিছু আপাতত না বলি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
১) কেবল খুকি ডাকটুকুই চোখে পড়লো? "বড্ড ভালো লেখে" সেটা দেখা গেলো না?
২) রবি ঠাকুর এর সব কবিতা ভালো লাগে না।
৩) "নবাগত কোমলপ্রাণ বালিকাটি" যেন ইট-পাথরের শহরে তার ভালোলাগা কবিতা গুলোকে হারিয়ে না ফেলে, আর কিছু আমিও আপাতত না বলি।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
লেখাটা ভালো লাগলো। কিন্তু তার চেয়ে বেশী ভালো লাগলো আপনি আমাদের মত বন্দী হয়ে গেছেন।
এইবার চুটিয়ে দুঃখালাপ করা যাবে।
অর্ক
''রাজার ছেলে নই, পতিত পাতার পাশে আমি পাতাকুড়ানির ছেলে...''
আমি নগন্য কামলা!
পড়ার জন্য
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিথীডোর কি কীবোর্ড চেপে লেখে? কীবোর্ড কি হাত দিয়ে চাপে নাকি যাদুর কাঠি দিয়ে?
সুমিমা ইয়াসমিন
''সচ্চরিত্র ফুল আমি যত বাগানের মোড়ে লিখতে যাই, দেখি
আমার কলম খুলে পড়ে যায় বিষ পিঁপড়ে, বিষের পুতুল!''
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ঠিকাছে! ব্লগরব্লগর হইলে এইরকমি হওয়া উচিত
শুধু "শুধু বেঁচে আছি" এই চিন্তাটা কিন্তু খুবই খারাপ হে! তাত্তাড়ি মাথা থেকে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করে দেন।
আর তিরিশ হইলে পরে না বয়সের চিন্তা। অবশ্য তিরিশের পরেও বয়েস বিশের কোঠায় আটকে রেখে দেয়া যাতে পারে। আমি ঠিক করেছি আমার টুয়েন্টি নাইনের পরে হবে টুয়েন্টি টেন, তারপরে টুয়েন্টি ইলেভেন, টুয়েন্টি টুয়েলভ ...
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
তিরিশ হতে আর বেশি দিন নেই তো... মাত্র ৫.৫ বছর বাকি!
''দাদাগো- দেখছি ভেবে অনেক দূর..
এই দুনিয়ার সকল ভাল, আসল ভাল নকল ভাল।
কিন্তু সবার চাইতে ভাল--
পাঁউরুটি আর ঝোলা গুড়!"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আহা, আপনাকে তো আর খুকিও বলা গেলো না দেখি, আপনি তো শিশুবিশেষ...
আগে শৈশব পার হোন, তারপরে না বয়স বাড়ার চিন্তা ।
ইয়ে, আমি তো ওই মাইলস্টোন পার হওয়ার আগেই বুড়িয়ে গেছি...
পার হতে অবশ্য বেশি বাকিও নেই আর... (দীর্ঘশ্বাস)
'এও এক ধরনের অসুখ…
এ বোধ, অতৃপ্তির আর অসর্ম্পূনতার…'
আজ একটা দারুণ উক্তি পড়লাম: ''মানুষের বয়স বাড়াটা বাধ্যতামূলক, কিন্তু বড় হওয়াটা ঐচ্ছিক।''
আম লাভিং ইট!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
''শুয়ে শুয়ে অশোকপাতায়, মুমূর্ষু শিশির বলে হায়…
কোন সুখ ফুরায়নি যার, তার কেন জীবন ফুরায়?''
আমার তো নিত্যই এমনই মনে হয়। তবু নিজেকেই প্রশ্ন করি,
"কাজের গুহায় আমি ইদানিং
শুনি মাঝে মাঝে টেলিফোনে যার গলা
মধ্যবয়সে ম্লান যৌবনে
তাকে প্রিয়তমা যাবে কি কখনো বলা?"
লেখার কথা আর কি বলবো, পিটিস ঝোপ থেকে উড়ে আসা একঝাক টিয়ের মতো।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
পড়ার জন্য ভাইয়া।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অন্যরকম।
লেখাটার ধরন অদ্ভুত রকম ভাল,
পড়ার সময় মগজ আর মন পুরাটাই দখল করে নেয়।
দুঃখের মাঝেই সুখ খুঁজে নিতে হয়,
হতাশার মাঝেই আনন্দ আর
অন্ধকারেই আলোর দেখা মিলুক।
ভাল থাইক,আপুনি..
কৃতজ্ঞতা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন