..It is not the length of life, but the depth.
― Ralph Waldo Emerson
______________________________
বাড়ি ফিরেছি ক'দিন আগে, লম্বা ছুটিতে। ক'দিন মানে, অলরেডি অবশ্য মাস-ই গড়াতে চললো প্রায়।
ফেরার পথে নিউ ইর্য়কে, যেচে আতিথেয়তা নিয়েছিলাম অনিদার বাড়ি। ভদ্রলোক নিপাট ভালমানুষের মতো দেড় ঘন্টা ড্রাইভ করে এয়ারপোর্টে এসে অ্যায়সা ভারি বোঁচকাসমেত আমাকে স্বগৃহে নিয়ে গিয়ে, ভাবিকে খামোখাই খাটিয়ে এটাওটা বানিয়ে, খাইয়ে, বিনিময়ে দমবিহীন মুডে যখন যা মুখে আসে তা বলে গালিগালাজ করে গেলেন। বিদায়বেলায় আবার গাল শক্ত করে বললেনও, শোন-- তোকে নানা আজেবাজে কথা হয়তো বলেছি। কিছু মনে করিস না, যা যা বলেছি সব মিন করেই বলেছি। বোঝো!
অবশ্য দু-চারটে ছবি জমেছে মেমরি কার্ডে, বিগ অ্যাপলে একা একা এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে নেওয়া। ঐটুকুই কমপেনসেশান আর কী। দেখাই দু-একটা?
ক। শহরে নয়া 'মেয়েমানুষ'
খ) সবাই বিজিইইই!
গ) এরাও বিজিইইইইইই!
ঘ) মেলা..মেলা..মেলা!
ঙ) এনওয়াই ভালু পাই।
চ। হাঁপিয়ে গেছি, জিরায়া লই। এরপর বাইত যামু গা।
ওয়েল, স্বদেশে সাময়িক প্রত্যাবর্তন পরবর্তী প্রতিক্রিয়া একই সঙ্গে বিস্ময় এবং বিষাদ মাখানো। তিন-চারদিন গেলো জেট ল্যাগ আর গরমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিতে। নিজে থেকেই ফোন করে চমকে দিলেন অনেকজনা, মিললো নেহায়েত না জানার ঢঙে আরেএএ, তুই/তুমি/আপনি দেশে নাকি, কবে এলি/এলে/এলেন জাতীয় ভাণের দেখাশোনাও। দুটোই তৃপ্তিদায়ক, একার্থে।
আছি অবশ্য আপাতত মহা আরামে। খাইদাইঘুমাই আর বগল বাজাই। ল্যাপটপসমেত বিছানায় গড়াচ্ছি, শীতলপাটিসমেত মেঝেতে গড়াচ্ছি, আম্মু সক্কালে উঠেই ব্লেন্ডারে এক জগ আমের শরবত গুলে দিয়ে তারপর অফিসে যাচ্ছে, একবার হাঁক দিলেই দ্যুতি চা বানিয়ে দিয়ে যাচ্ছে, মুভি দেখি, সচল পড়ি, ফ্লিকার ঘাঁটি, গুডরিডস গুঁতাই...
ফল টার্ম ফান্ডিঙের সিদ্ধান্তজনিত একটি প্রত্যাখ্যানপত্র পেয়ে গভীর জলে পড়ার ভয়াবহ আতঙ্ক ছাড়া 'ছুটি ছুটি রে' জীবনে আপাতত কোথাও কোন ক্যাঁচাল নেই। অল কোয়াইট অন দ্য ইস্টার্ন ফ্রন্ট। হে হে।
বড়খালার কলেজ খোলা, পরীক্ষার ডিউটি, দেখতে আসতে পারেনি তাই। কাজিন সাকিবকে জানানো হলো তিথী আপ্পি এসেছে। ভদ্রলোকের বয়স সাড়ে পাঁচ।
: ওহ, আপি কি আবার চলে যাবে?
হ্যাঁ।
: আবার আসবে?
হ্যাঁ, আবার আসবে।
: বারবার এভাবে আসবে আর যাবে?
এরকম প্রশ্নগুলো, অন্যরকম যত্নগুলো মনে করিয়ে দেয় তুমি এখন আর এখানকার নও। এই বাড়তি আদর অতিথি হিসেবে। আবার ফিরে বা আপাতত আর না ফিরে শেষমেষ আসলে ঠিক কীভাবে, কখন, কোথায় ফিরতে চাই-- দগদগে প্রশ্ন ক'টার মুখোমুখি অযথাই হতে হয় তখন, অনেকবার।
কাছের স্বজনদের সময় দেয়ার ফাঁকে ফাঁকে ইচ্ছে ছিলো কয়েকটা জায়গায় ঘুরে ঘুরে ছবি তোলার। সিআরবি, নেভাল, শিল্পকলা একাডেমি, সার্সন রোড। পরিচিত পথগুলোর মানচিত্র কতটুকু বদলেছে মাপার। ও হরি! একদিন সদলবলে বেরিয়ে লেন্সফেন্স বের করার আগেই এমন বখাট্য টিজ খেলাম, একা এলে কী হতো কে জানে।
এরপর থেকে ফটুকগিরির আলগা তেল ঝেড়ে ফেলেছি। দেশে এমনিই কোবি আর ডিএসএলআরধারীদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক। খামোখা ভিড় বাড়ানোর দরকার কী? তারচেয়ে পুস্তক পাঠ প্রশস্থ পন্থা।
বই কেনার প্রিয়তম জায়গা ছিলো শহরতুতো বইবিপণী বাতিঘর। আল মাহমুদকে দাওয়াতে ডেকে এনে সে হতভাগা মুখ তেতো করে দিয়েছে। হাতে টেকাকড়িও ঠনাঠনাঠন, আপাতত পুরোনো প্রিয় বইগুলো পড়ি।
বই পড়া হলো অবশ্য অনেক, এ কদিনে। বিভূতির প্রায় সবগুলো উপন্যাস, আবারো। আহ, অপরাজিত! আর সঙ্গে, মানিক, মাহমুদুল হক, তারাশঙ্করের উপন্যাস সমগ্র, লীলা মজুমদার রচনাসমগ্র...
অদ্ভুতভাবে লক্ষ্য করলাম পাঠক হিসেবে আমি বদলেছি বেশ খানিকটা। মহাবিরক্ত লেগেছে 'গর্ভধারিণী' পড়তে গিয়ে। ইন ফ্যাক্ট সমরেশের লেখাই অসহ্য লাগে এখন। 'নাগিনী কন্যা' শেষ করতে কষ্ট-ই হয়েছে এবার, টু বি ভেরি অনেস্ট, অ্যাবসার্ড লাগছিলো পড়তে। লারা পড়তে গিয়ে অনেক লাইন মনে হয়েছে ইনফো গুঁজে দেওয়া। কর্ণেল তাহের যে লেখিকার মায়ের মামাত ভাই, কিঞ্চিৎ অপ্রাসঙ্গিকভাবেই সেলিনা সেটা জানিয়েছেন স্বপ্ন দেখার ছুতোয়। যদিও শেষ দুটো পাতায় চোখ শুকনো রাখা মুশকিল, কিন্তু ওভারঅল রেটিঙে এবার একটা তারা কমিয়ে দেবো আই গেস। সেলিনা হোসেনের লেখার ধরন আমার আদতেই ঠিক পছন্দের ছিলো না, তা বটে। কিন্তু লারা ছিলো পছন্দের বই।
তারপর এখন আবার আউট বই পড়ার মাঝেও টি ব্রেক লাগে, কানে ইয়ারফোন লাগে, ফেসবুকের নোটিফিকেশনে চোখ-কানপাতা লাগে। পাঠকের মৃত্যু না হোক এ যাত্রায়, বাঁ-দিকটায় প্যারালাইসিস হয়েছে আংশিক।
ও দিকটাতেই তো হৃদয়, না?
এখন হাতে সুখী মানুষের চাদর কেনার গল্প, The Art of Happiness। দালাই লামার জবানীতে, সম্মতিতে, হাওয়ার্ড কাটলারের লেখা। ৩৩৬ পাতার বই, পাঁচটা ভাগ আর ১৫টা চ্যাপ্টার। পড়ার সাজেশন দিয়েছেন তাসনীম ভাইয়া, পৌঁছেছি কেবল ৯০ পৃষ্ঠায়। মোটামুটি যা বোঝা গেল, তার এককথায় প্রকাশ ডোরা জোবায়েরের সেই লেখাটার শিরোনাম--- Happiness is a state of mind।
আমি নিম্নবুদ্ধিমত্তার মানুষ, বারবার অকপটে বলি সেটা। ক্রিটিক্যাল রিজনিং পারি না, এক জিনিয়াস বড়ে ধুমধামসে সে চোটপাট শুনিয়েছিলেন মাস আড়াই কী তিন আগে। কহেন যাহা গুণীজনে, তাহাই শিরোধার্য ইত্যাদি ইত্যাদি। আল্লার দুনিয়ায় লোকে কী সে যে হেফি হয় বা হেফিনেস আসলে ঠিক কী, খায় না মাথায় দেয় সেটাও বুঝতে পারি না তাও সত্যি। কেউ ভাসাভির শাড়ি পেয়েই খুশি, কোন উজবুক চদরি সাড়ে ছয় হাজার ডলার দিয়ে গাড়ি কিনে সে গল্প চিবিয়ে চিবিয়ে শুনিয়ে খুশি, কেউ খুশি হবে অনাঘ্রাতা (শারিরীক ও মানসিক) জীবনসঙ্গিনী পেয়ে, কারো তৃপ্তি দুনিয়া কাঁপানো ইউনিতে পোস্টডকের অফার পেয়ে। তৃপ্তিই তো সুখের রি-অ্যাকশন, নাকি?
মানবজমিনের প্রীতমের মতো আসলে ধরতে পারি না সাব কনশাস মাইন্ডে পার্থিব কী খুঁজি আমি সুখী হতে চেয়ে। কিংবা জাগতিক ঠিক কোন বস্তুটা পেলে মনে হবে আম অন দ্য টপ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, অ্যাট লিস্ট সেই মোমেন্টটার জন্যে।
এবং ইহাই হলো গেবনের মূল প্রবলেমাটিক সমস্যা।
বোজলেন?
এনএমে বাংলাদেশি ছাত্রসমাজের দেশি জিনিসপাতি কেনার উৎস আলবুকার্কির একমাত্র ভারতীয় দোকান। খুব ভালো চাপাতা পাওয়া যায় না আসলে, কফিতে জুত পাই না বলে চড়া দামে ওই পাতাই কিনি। কিন্তু আরামটা হয় না ঠিক।
এখনকার সকালগুলোতে হাত-মুখ ধুয়ে নাশতার টেবিলে বসার আগে চায়ের মিষ্টি যে সুবাসটা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ঘরে কিংবা ছাদের টবে বেলীর মোটকা কলিসমেত ডালটায় থ্যাবড়া নাকটা চেপে ধরলে কলজে পর্যন্ত যে ভুরভুরে গন্ধটা দুম করে আটকে যায়, ঐ মুর্হূতগুলোতে হঠাৎ হঠাৎ মনে হয় লাইফ ইজ বিউটিফুল। যারা বলেন, তারা মিথ্যে বলেন না।
এই যে সুখ বা হ্যানত্যান নিয়ে এতো ঘ্যানঘ্যান, তার পুরোটাই হয়তো একটা মিথ্যে রূপকথা, একটা বিষণ্নতা বিলাস। হয়তো এরকম পুরোপুরি উত্তরহীন চুপকথাময় জীবনও খুব একটা খারাপ না। অন্তত মিথ্যে কিছুর অপেক্ষা নিয়ে দিন পার করার চেয়ে।
জীবন জিনিসটা যাপন কিংবা বহনের, মানুষভেদে। কিন্তু হরেদরেকাশ্যপগোত্রে জীবন-ই তো, সব মিলিয়ে।
যে অংশটা কোট করতে চান সেটুকু সিলেক্ট করে উদ্ধৃতি (Alt+Q) চাপতে হবে।
পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
"নিম্নবুদ্ধিমত্তার মানুষ" - লিখতে লিখতে নিজেকে নিয়ে এমন কাটা ছেঁড়া আর বিনয় অনেক দিন পর চোখে পড়ল। চলতে থাকুক এমন সুন্দর লেখা।
--------------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/2015/05/for-blogger-to-blogger.html
দুনিয়ার বিষয়াদি নিয়ে লিখেছেন, কোনটা থুয়ে কোনটা নিয়ে কথা কই? বই-ই ভরসা।
সমরেশে কখনোই তেমন মুগ্ধ ছিলাম না অন্যদের মতো। ছোটবেলাতেই পেকে যাওয়ার ফজিলত। মৌষলকাল পড়ার সাহসটাই করে উঠতে পারিনি। ইচ্ছা আগ্রহ ধৈর্য্য কোনোটাই নেই।
সেলিনা হোসেনের লেখা আমারও ঠিক আরাম লাগে না, আমার ধারনা ছিলো এই সমস্যা বুঝি আমার একারই। এখন দেখি অনেকেই আমার দলের।
পাণ্ডবদা যেমন বললেন লারা তাঁদের সময়ের নায়িকা। আমি সেই সময়ের শেষটা দেখেছি। লারা আর মুনা আপা। দারুণ মুগ্ধতা ছিলো।
জীবন তো খুব সুখে গড়িয়ে কাটাচ্ছেন। ঈর্ষা জানিয়ে গেলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আর বইলেন না। বই ছাড়া ভাত খেতে পারি না তো, আলতু-ফালতু যত বাংলা পিডিএফ/ই-বুক পাওয়া যায়..নামিয়ে ফেলি।
সমরেশ-সুনীল-শীর্ষেন্দু এনাদের প্রায় সব বই-ই সাইটগুলোতে সহজলভ্য।
আর হুমায়ূন আহমেদ। উগগ, 'একজন হিমু ও একটি রাশিয়ান পরী' বইটা পড়ে এমন চরম মেজাজ খারাপ হয়েছিলো!
আপনাকেও ঈর্ষা নজ্রুল ভাই, সর্বকনিষ্ঠ এবং সর্বোৎকৃষ্ট কিউটিপাই ব্লগারের গর্বিত বাবা হিসেবে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
খুব তো আমার নামে বদনাম করে গেলি ! দাঁড়া আরেকবার সামনে পেয়ে নিই তোকে--
ভিন্ন প্রসঙ্গেঃ লেখা খুবই মুচমুচে হয়েছে! সেলিনা হোসেন আর সমরেশ 'মজুমদার' বিষয়ে আমিও একমত। লোকজন যখন খালি সমরেশ বলে তখন কনফিউজড হয়ে যাই। আমি সমরেশ 'বসু'-র বিশাল ভক্ত। যুগ যুগ জীয়ে আমার পড় অন্যতম সেরা বই। আমার মতে অত্যন্ত উপেক্ষিত হয়েই ভদ্রলোক জীবন কাটিয়ে গেলেন। তাঁর মাপের লেখকের আরো অনেক চর্চা হওয়া উচিত ছিল।
তওবা তওবা! বদনাম করলাম কোথায়? তিথী বাচাল হতে পারে, বানিয়ে কথা বলে না।
ইয়ে, আপনি বসুর ভক্ত? আমি তো এক 'বিবর' পড়েই চেতেছিলাম।
আমি মহা ভক্ত ঠাকুর বাড়ির লিখিয়েদের, মায় সুপ্রিয় ঠাকুর পর্যন্ত। এক অবনীন্দ্রনাথ-ই তো বহুবছর দখল করে রাখার ক্ষমতা রাখেন। এমন মায়া লেখায়...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সমরেশ বসুর ছোটগল্প "আদাব" একটা মাস্টারপীস। এইখানে আছে দেখলাম পড়ে দেখুন, আর এইখানে অডিও পডকাস্ট আছে শুনে দেখতে পারেন।
সমরেশ পেশাদার লেখক ছিলেন, দুই হাতে লিখতে হত। কিছু গল্প গার্বেজ ঠিকই (বিবর গার্বেজ বলছি না, বিবর এবং প্রজাপতি অসাম গল্প)। মহাকালের রথের ঘোড়া পড়েছেন কী?
..................................................................
#Banshibir.
ইয়ে, আমার কাছে তো 'বিবর' এবং 'প্রজাপতি' কোনটাই ভাল্লাগেনি।
'আদাব' পড়ে ফেললাম। চমৎকার! অনেক ধন্যবাদ লিঙ্কের জন্যে।
'মহাকালের রথের ঘোড়া' আর 'যুগ যুগ জীয়ে' ফ্রি ই-বুক পাওয়া গেলো না। গোগল অমনিবাস পেয়েছি। সাইটটায় ঢুঁ দিয়ে দেখতে পারেন, ম্যালা বই আছে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সমরেশ বসুর কোন কোন গল্প গার্বেজ একটু জানাবেন প্লিজ। তাহলে সেগুল আবার পড়তে হবে। জানতে হবে কেন গার্বেজ হয়ে গেছে।
--------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/
১। 'গ' ছবিটা প্রথমে অর্ধেক লোড হচ্ছিল, কেবল ওপরের অর্ধেক। মানুষের বিজি-নেস এর ধরণ দেইখা ডরাইছিলাম। পরে দেখি ঠিকাছে।
২। "... বারবার এভাবে আসবে আর যাবে? ..." কাজিন রকস
৩। আল মাহমুদের মত একমাত্র হালাল মুক্তিযোদ্ধা এবং হালাল কবিকে এত নিন্দেমন্দ করছেন কেন? এভাবে কানাকে কানা, খোঁড়াকে খোঁড়া, কোবিকে কোবি বলতে নেই। আজকালকার পোলা-মাইয়ারা যে কি! বাবা-মা কি কিছুই শেখায় নি?
৪। 'লারা' বইটার সাথে আমি আরেকটা বহুল বিক্রীত বইয়ের মিল পাই- আনিসুল হক রচিত "মা"। হক যেভাবে আজাদ ও তার মায়ের অত্যন্ত মর্মস্পর্শী কাহিনীকে (যা ভালো লেখকের হাতে পড়লে নিঃসন্দেহে ক্লাসিক সাহিত্যে রূপ নিতে পারত) একেবারে সম্পাদকীয় রিপোর্ট বানিয়ে ফেলেছেন। (ক্রাচের কর্ণেলে শাহাদুজ্জামানও অনেকটা তাই করেছেন) এই বইয়ে সেলিনা হোসেনও প্রায় একইভাবে ফারিয়া লারার মর্মস্পর্শী জীবনকাহিনীকে খবরের কাগজের ম্যাড়ম্যাড়ে রিপোর্ট বানিয়ে ফেলেছেন। তবে, লেখনীর তীব্র প্রতিরোধ স্বত্বেও, স্রেফ ঘটনার কারণে দুটি বইয়েরই শেষাংশ শেষ করা কষ্টকর বৈকি।
৫। হ, শেষমেশ জীবনই তো, কখনও চোষে, কখনও আবার জীবনানন্দ। হ্যাপি লিভিং।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কাজিন বহু অর্থেই রক্স।
সাম্প্রতিক শেষ ঘটনা বলি। সে বই পড়ছিলো, 'বোতল ভূত'। ওখানে স্যারের ৫/৪ নম্বুরি বেতের মার থেকে ব্যথা কমানোর জন্য হুমায়ূন হাত নরম করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেয়ার একটা অংশ আছে না? তো পড়েটড়ে আইডিয়া পছন্দ হলো তার। এখন বেত কই পাবে? বাঁশের খেলনা বাঁশি ছিলো একটা, সেটা খুঁজেপেতে বের করে নিয়ে এলো প্র্যাকটিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে।
কী যে হবে এগুলো একেকটা, বড় হয়ে!
বিশদ মন্তব্যের জন্যে ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কড়া লেখনী। শব্দে জাদু আছে।।
সুজন ভৌমিক
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
বেশ লাগলো লেখাটা।
"লারা" পড়তে ভালো লেগেছিল। বহু বছর আগে, "গর্ভধারিনী" আমার পড়া প্রথম দিককার মোটাতাজা বই। তখন অসাধারণ লেগেছিল। এখন পড়তে গেলে কেমন লাগবে জানি না। আপাতত পড়ছি মুরাকামির 1Q84. ঢাউস আকারের বই। ১৩১৮ পৃষ্ঠা মনে হয়। কোনোমতে ৫৯১-এ এসেছি। মূলত অফিস যাওয়ার পথে পড়ে এর বেশি হয়ত আশা করা ভুল।
ছুটি উপভোগ করেন। জীবনটাও। পারলে, যট্টুক সম্ভব ভালো থাকেন।
ফেসবুকে থাকেন না, সচলে থাকেন না (মানে লেখেন না), আপনি থাকেন কই?
অফিসে থাকেন ভালো কথা, কিন্তু বিদেশের পথে থাইকেন না। প্লিজজ!
দু'দিন পর পর ইউরোপ-আম্রিকায় এরাম ফরেন ট্রিপ দিলে আমরার মতো গরিব-দুঃখীদের মনের শান্তি নষ্ট হয়।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দু'দিন পর পর ইউরোপ-আম্রিকায় এরাম ফরেন ট্রিপ দিলে আমরার মতো গরিব-দুঃখীদের মনের শান্তি নষ্ট হয়।- তিথীডোর
বুঝলাম, এই জন্যই আল-বাঁদর মুজাহিদ কৈছিল- "দেশে কোনও যুদ্ধাপরাধী নাই ... ইত্যাদি...ইত্যাদি..."
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আম্রিকা একটা বজ্জাত, বড়লোকী দেশ, তায় বেশি বড়!
কিন্তু ইউরোপে আছে ফ্রান্স, মার্গারিট ম্যাথিউ..
ঐ দেশে গেসে এমন সক্কলরে আমি হিংসাই। বোঝলেন?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বোঝলাম, কুনুদিন য়ুরোপ যাইবার পারলে ....
সচিত্র ভ্রমণ ব্লগ আন্নেরে উৎসর্গ করণ লাগবো
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
২০১৬'র জুনে ইউরোপ থাকুম এনশাল্লাহ! (কোবি বলেছেন, কিপ ড্রিমিং)
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
জ্বলন্ত ফোস্কা, টাইফুন, হিপোপটামাস, জাহেল নমরুদ কাঁহিকা!
যাচাই না করা (!) জীবনের সাথে একমত হয়ে যাব কিনা ভাবছি।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
একটা ছড়া পড়েছিলেন?
বাবা বলে নরু, তুই এতো গরু/ রোজ খাস কানমলা
বাবার কী ভুল, আমি এতো ছোট/ উচিত বাছুর বলা।
আমি এতো গরু, তিনবার পড়তে হয়েছে আপনার মন্তব্যের দ্বিতীয় লাইনের মরতবা ধরতে।
আইচ্ছা, যে আগে ইউ'রূপ' যায়..সে ছবিব্লগ পোস্ট দিবে, আরেকজন সবার আগে সেটাতে কমেন্ট করবে। ডিল! (নেকু নেকু ভঙ্গিতে চোখ মটকানোর ইমো)
এলা ঘুমাই গিয়া।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
১।
খুকীদির সবকথা শেষমেশ "ছোট" তে গিয়েই ঠেকে
২।
জীবনঘনিষ্ঠ (!) এত নিরাপদ ন্যাকা হলে এমনই হয়
৩।
আপনেই যান, খালি পোস্টটা আমারে উৎসর্গ কইরেন না।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
পরশুদিন লেখা শুরু করেছিলাম। সরাসরি সচলায়তনের ব্লগ লেখার উইন্ডোতে। কিছুদূর লেখার পর মনে হলো কপি করে রাখা দরকার। পুরোটা সিলেক্ট করে কমান্ড+সি চাপতেই দেখি লেখা উধাও! কমান্ড+জেড চাপলাম, কাজ হয় না। আর ফিরে আসে না। মেজাজ খারাপ করে লেখা বাদ।
ফরাসি দেশের এক হোটেলের রিসেপশনিস্টের কাছ থেকে তুলনামূলক একটু বর্ণবাদী আচরণ পেয়ে একটু তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। এর বাইরে অভিজ্ঞতাটা ছিল অসাধারণ! পারলে ঘুরে আইসেন। সিন নদীর হাওয়া খাইলেন একটু, আর শেক্সপিয়ার অ্যান্ড কোম্পানির বইয়ের রাজ্যে ঘোরাঘুরি।
ctrl + v চাপলে লেখাগুলো ফেরত পেতেন বোধহয়
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ইউরোপবাসী এক ব্যাচমেটরে দুটো নিন্দে-মন্দ করেছিলুম, সে বেচারি পিছলে পড়ে ডান হাত ভেঙেছে।
আপনার তো লেখার উপর দিয়ে গেছে।
গরিবের বদ দুআর জোর অনেক, সুতরাং দুঃখ কইরেন না।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
পোস্ট ভালো লেগেছে। কিন্তু, অনি বকাবকি করল? কেন? খামখা সে লোক বকাবকি করবে কেন?
সাড়ে পাঁচের ভদ্রলোকটির কাহিনী চমৎকার লাগল, আরও বিস্তারিত শুনতে ইচ্ছে রইল।
কালবেলা যখন ধারাবাহিকভাবে বের হচ্ছিল অঙ্গরাজ্য বাংলায় নকশাল আমল-এর হানাহানির স্মৃতি তখন কিছুটা ফিকে হয়ে এসেছে, সবটা নয়। জনমানসে অনতিঅতীত সেই দিনগুলির বিদ্রোহ-বিপ্লবের রোমান্টিকতা আর তার বিপরীতে শাসকের নির্মমতার দ্বন্দ্বের স্মৃতি তখনও অনেক মনে ঢেউ তোলে। সেই দ্বন্দ্বের নাটকীয়তায়, মাধবীলতার ব্যথায় সমব্যথী হয়ে উপন্যাসটিকে ভাল লেগেছিল। এই লেখকের পরের আর কোন লেখার সাথে সেই ভালো লাগাকে মেলাতে পারিনি। আর, এই পোস্টের লেখা পড়ে ত মনে হচ্ছে সে লোকের লেখার মানে শুধু নয়, লেখার বিষয়েও ভালই অবক্ষয় ঘটে গেছে। তবে, অবাক লাগছে না।
"জীবন জিনিসটা যাপন কিংবা বহনের, মানুষভেদে। কিন্তু হরেদরেকাশ্যপগোত্রে জীবন-ই তো, সব মিলিয়ে।" - শুধু মানুষভেদে না গো দিদি, একই মানুষের জন্য সময়ভেদেও বটে। আর আমার মতন তুচ্ছ অনুল্লেখ্য লোকেদের জন্য কাশ্যপগোত্রটাই বা কম কি! যাপনেই হোক কি বহনে, জীবনের বেশীটা সময় পার করে এসে এটাকে অমূল্য বলেই মনে হয় এখন। খুব আনন্দে কাটুক বেড়াতে আসা দিনগুলো।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
হেহ, আমিও ভেবেছিলাম-- গানটান গায়, এমন মায়া দিয়ে লেখে, মন্তব্যে লক্ষ লক্ষ তারা বিলায়..মনে হয় ভাল মানুষ!
ও হরি! খোঁচা না দিয়ে এই লোক কথাই বলতে পারে না।
ক্ষণিকের অতিথির ওরকম ছাল ছাড়িয়ে দেওয়া জালিম নমরূদ ছাড়া আর কারো পক্ষে সম্ভব, বলেন?
'উত্তরাধিকার' যখন প্রথম পড়ি, তখন সম্ভবত আমি ক্লাস সিক্সে। মাধুরীকে চিতায় তোলার দৃশ্য, স্বগছেঁড়া ছেড়ে অনিমেষের সরিৎশেখরের সঙ্গে জলপাইগুঁড়ি চলে যাবার সময় রুমালে করে মাটি নেওয়া..বোধহয় এই দুই দৃশ্যেই চোখে পানি চলে এসেছিলো। এরপর 'কালবেলা', 'কালপুরুষ' পাঠ। সেও একাধিক বার, মেট্রিক পেরোনোর আগেই।
সমস্যাটা ওখানেই, বয়স বেড়ে যাওয়ায় এখন বাল্য-কৈশোরের সেই সরল পাঠকমন নষ্ট হয়ে গেছে। খুঁত/খামতি চোখে পড়ে শুধু, চোখ বুজে গেলার বদলে মুখ শক্ত করে উগরে দেয়ার অভ্যাস এসে যাচ্ছে।
শুধু একদম নিখাদ শৈশবের বইগুলো একইরকম টানে। উভচর মানুষ, পিতা ও পুত্র, সার্কাসের ছেলে, চুক আর গেক, সাগরতীরে, মণির পাহাড়, মালাকাইটের ঝাঁপি, ইশকুল....
প্রগতি আর ননী ভৌমিকের জায়গার নড়চড় হয়নি কোন! হবেও না।
শুভ কামনার জন্যে অ-নেক ধন্যবাদ!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
"জালিম নমরূদ" - আয় হায় রে!
তিথীদিদি, তোমার প্রতিমন্তব্য পড়তে পড়তে খেয়াল করলাম - ভুল হয়ে গেছিল। বলতে চেয়েছিলাম 'উত্তরাধিকার', বলে ফেলেছিলাম 'কালপুরুষ'। বস্তুতঃ 'উত্তরাধিকার'-ই ভাল লেগেছিল। 'কালপুরুষ' থেকেই আর কোন লেখা ভাল লাগেনি। এখন ফিরে পড়লে সম্ভবতঃ ঐ তুমি যেমন বলেছ, 'উত্তরাধিকার'-ও হয়ত সেই রকম আর ভাল লাগবে না।
যা বলেছে তুমি - "প্রগতি আর ননী ভৌমিকের জায়গার নড়চড় হয়নি কোন! হবেও না।" তবে, বড় হয়ে কিছু গল্প পড়েছি, কারো কারো, যা আজ পড়লে আজও একই ভাবে ভাল লাগে। কোন কোন লেখা ত নূতন করে অন্যরকম ভাল লাগে। ইচ্ছে আছে এই গল্পগুলোকে নিয়ে কোনদিন ঝাঁপি খুলে বসবার (বুড়োদের যেমন বকবক করতে ইচ্ছে হয় আর কি)।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
না ভেবে চট করে যে নামগুলো মনে পড়লো :
আশাপূর্ণা দেবী, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ মুজতবা আলী, লীলা মজুমদার, প্রতিভা বসু, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়--- এদের স্বাদ বদলায় নি।
'কালো বরফ', যতবার পড়ি.. মুগ্দ্ধতা কাটে না!
সত্যজিতের ফেলুদা আর শরদিন্দুর ব্যোমকেশ, আজীবন বারবার পড়া চলবে!
'মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি' বা '..বুরুন তুমি অঙ্কে তেরো' পড়তে পড়তে খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে ওঠার অভ্যাস মনে হয় না যাবে। কিন্তু শীর্ষেন্দুর 'যাও পাখি' চেষ্টা করবো আর সহজে হাতে না নেয়ার। পছন্দে কিছু বদল তো আসবেই, এরকম আর কী।
ঝাঁপি খুলে বকবক করে ফেলুন সময়-সুযোগ মিলিয়ে, পড়ার আগ্রহ থাকলো।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দেখছুইন?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মানুষ এত সুখে থাকে কেরে?
সমরেশের লেখা ভাল লাগেনা - এইডা কি বললেন। আমার তো দুই একপাতা পড়লেই ঘুম চইলা আসে।
ও হরি! একদিন সদলবলে বেরিয়ে লেন্সফেন্স বের করার আগেই এমন বখাট্য টিজ খেলাম, একা এলে কী হতো কে জানে।
কি যে হত, কি যে হয় !
মেয়ে মানুষ এইতা বড় ক্যাম্রা হাতে ছবি তুলবে, আর লোকে কি চুপচাপ বসে থাকবে?
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আসলেই তো, মেয়েমানুষ বড়জোর ঠোঁট গোল করে সেলফি তুলবে নয়তো কেক-পুডিং বানিয়ে ফেসবুকে ছবি আপাবে। বেগানা নারীকে একা একা নিজের মতো ঘুরে 'বেলেল্লাপনা' করতে দেখে দু-চারটে বাক্যসুধা না ঝাড়লে আবার বাঙালি পুরুষ কিসের!
তুমি তো আমার থেকেও সুখী, আরামসে ইউরোপ ঘুরতেসো।
পোস্টটোস্ট দিয়ে মাইনষের কইলজা জ্বালিয়ে দিতে পারো না?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আর এখানে (আম্রিকায়) মেয়েরা বাড়িতে, রাস্তায়, মাঠে যখন যেখানে দরকার, অনুষ্ঠানে বরাত পেয়ে বা আপন খেয়ালে অর্থাৎ তার ইচ্ছে হলে আর ক্যামেরা থাকলে ছবি তুলে যাচ্ছে। কারো তাতে সে মেয়ে বলে কোনই মাথাব্যাথা নেই। কোন ছেলেকে তাতে আওয়াজ দেওয়া ত দূরের কথা কোন ইস্পেশাল পোজ-ও দিতে দেখি না।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
দু'দিনের বৈরাগী, ভাতেরে কয় অন্ন টাইপ কিছু মনে হতে পারে। কিন্তু আমি আম্রিকা মিস করি। আর কিস্যু না, শুধু ক্যামেরাসমেত বা খালি হাতে যখন খুশি নিজের মতো ঘোরাঘুরির আরামটাকে। ক্লাস শেষে বেরিয়ে (মানে টেস্টে গাড্ডু খেয়ে) ক্যাম্পাস লেকের পাশে ঘাসে হাত-পা ছড়িয়ে বসে চোখ মোছার সুযোগটাকে। ফাইনাল উইকে রাত আড়াইটায় লাইব্রেরি থেকে একা হেঁটে ডর্মে ফেরার সাহসটাকে।
বঙ্গদেশে নারীসম্প্রদায়ের আইডিয়াল স্ট্যান্ডার্ড যেহেতু মহামতী শাবানা আর গাধী স্কোয়াড, সো ভুগতে তো হবেই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
উঃ! এইটা কি পড়াইলা তুমি! বমি বমি আসছে! কারা এরা! ওয়াক!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
স্কোয়াডের ফেসবুক ঘুরে আসলাম। ধোলাই ভালোই চলছে, আবার গলে যাওয়া ছেলের সংখ্যাও কম না।
"বিয়ে,ভালোবাসা,প্রেম এগুলো করা হয়নি তাই বুজতে পারতেছি না বিয়ে করলে বুজা যাবে মেয়েরা আসলেই কি এরম কিনা", "সমস্যা টা কোথায় জানেন আমরা এটা ভেবেই বিয়ে করি "
-সমস্যাটা কি? আর সমাধানটাই বা কি? ছেলেদের সামনে এমন সর্বংসহা কণ্যার রূপ তুলে ধরে বিজ্ঞাপন দেবার কি আছে? এত করে তো রাস্তা ঘাটে টিজ করে করে কি ছেলেরা মেয়েদের সহ্যক্ষমতার পরীক্ষা নেয়া শুরু করবে! অপ্রাসঙ্গিক বক বকরর জন্য দুঃখিত। মেজাজ বিলা হয়ে গিয়েছিল, তাই একগাদা টাইপ করে ফেলেছি
সমাধান হলো মেয়েমানুষকে গোড়া থেকে টাইট দেয়া।
যেখানে নারীজাতির জায়গা ঠিক করে দেয়াই আছে রুটি বেলার কাঠে, কাপড় কাচার ঘাটে আর রাইতের বেলা খাটে..
সেখানে সবকিছুতে মাতবরি করার মতো জায়গা্য় যেতে ক্যান এতো হুজ্জত করে এরা, বলেন দেখি!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
যাক, এতদিনে কোনও বিদেশে থিতু চাওয়া অভিলাষী(লেখাটার সুরে তাই বাজে) কাউকে দেখলাম সরাসরি বলতে নিজের দেশটা কত খারাপ, আর বিদেশ কত ভালো। আপনারা বিদেশে আরামে থাকবেন, ন্যাকা ন্যাকা সারহীন পোস্ট লিখে শত শত কমেন্ট পাবেন(ন্যাকামির বাজার ভালই)। আর আমরা আগুনে পোড়ার অপেক্ষায় রইবো। আই হেইট বাংলাদেশ ক্যাম্পেইন শুরুই করে দিন না শীঘ্রি। অনেকে দেশপ্রেমের অভিনয় বাদ দিয়ে যোগ নিশ্চয় দেবেন।
হ্যাঁ রে ভাই, আমরা খুউব খারাপ। এইজন্যে অধমের আম্রিকা ভ্রমণ নামে ন্যাকা ন্যাকা সারহীন পোস্ট দেই, থিতু হয়ে যাওয়ার খায়েশ ইনিয়ে-বিনিয়ে লিখি।
আরো লিখবো।
যেহেতু ন্যাকামির বাজার ভালোই, বুঝেনই তো!
নিজের দ্যাশকে খারাপ বলেছি কোথায় সেটা ঠিক খুঁজে পেলাম না। বঙ্গদেশের পুরুষদের অনাহুত বাক্যসুধা ঝাড়ার খাসলতের কথা বলেছি অবশ্য। ওটা গায়ে লাগে নি তো?
ক্যাম্পেইন শুরু করার আইডিয়া সমেত মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কে যেন বলেছিলেন, "মাঝে মাঝে আমার সার্কাজম এমন হয় যে কিছু লোক আমাকে বেকুবই ঠাউরে বসে!"
মোটেও না। মুখে নিজের মনগড়া কথা জোর করে বসিয়ে কেন দিতে চান? ন্যাকামির আড়ালে অন্তর্গত দেশের প্রতি ঘৃণাটুকু ধরিয়ে দিয়েছি বলে? আপনার ভণ্ডামিটা চিহ্নিত করেছি বলে? বিদেশে থিতু যখন হতেই চান আর দেশের প্রতি যখন এতই রাগ-ঘৃণা তো সেটা সরাসরি লিখুন না। ছদ্ম আবরণের কী দরকার? বাইরে আরামে বসে দেশপ্রেমের ভান করা আর দেশের মানুষকে ও দেশকে চুপিচুপি গাল দেবার মতো দ্বিচারিতা করার দরকার কী? আর যখন থিতু হবার কথা স্বীকার করেই বসলেন, এত দেশ দেশ বলে এখানে লেখার কী দরকার? আমেরিকার স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে লেখা শুরু করুন।
প্রিয় তিথীডোর,
কেহ কদলীভক্ষণ করিতে না চাহিলে তাহাকে ঠাকুরকক্ষাভ্যন্তরে সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ নিতান্তই অভদ্রতা! আমেরিকার রাজনীতি নিয়ে লেখা শুরু করুন।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
না হে ভাই জীবন, ছুটিতে আসছি তো, কাজকর্ম নাই, হাতে অনেক সময় আর তেল বলে।
সরাসরি লিখবো, ত্যানা পেঁচিয়ে লিখবো দেশের মানুষকে ও দেশকে গাল দিয়ে, আমরিকার স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে, ন্যাকামির আড়ালে অন্তর্গত দেশের প্রতি রাগ-ঘৃণা নিয়ে। যখন যা দরকার হবে, দরকারি মনে হবে, ভণ্ডামি করার খায়েশ হবে, বাজার চাহিদা অনুযায়ী ন্যাকামি সাপ্লাই করার হাউশ হবে..
অতি নিয়মিত, সব-ই লিখবো।
আমার সে অপশন আছে তো।
আপনার অপশন থাকবে আগুনে পুড়তে পুড়তে আমার/আমাদের এসব সারহীন দ্বিচারিতার তাবৎ ফাঁকফোকর ধরিয়ে দিয়ে যাবার। প্লিজজ!
ইউ উইল বি অলওয়েজ ওয়েলকাম!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ঐ তিথী আম্রিকার রাজনীতি নিয়া লিখো পিলিইজ! আম্রিকার রাজনীতি সম্পক্কে জানার অনেকদিনের খায়েশ। সেটা পুরা করে দেও মা!
দারুণ বলেছেন।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
এই ছবিগুলি তুলতে গিয়ে মনে আছে, সমুদ্র সৈকতে বেগানা নারীকে একা একা নিজের মতো ঘুরে 'বেলেল্লাপনা' করতে দেখে দু-চারটে বাক্যসুধা ঝেড়ে একদল বাঙালি পৌরষত্য প্রমাণ করিয়া তবেই ক্ষান্ত হয়েছিল।
পোষ্টঅফিস আপাতত সাময়িক বিরতিতে আছে, আগে অন্ন, বস্ত্রের ব্যবস্থা করে নেই।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
সুন্দর লিখা। পড়াশোনার অভ্যেস অনেকদিন আগে গত হয়েছে। হারানো স্বভাব ফিরে পাবার চেষ্টায় আছি। গর্ভধারিনী পড়েছি সেই উচ্চ মাধ্যমিক এর পরপরই। বছর বিশ-বাইশ হবে। সেবারই শেষ করতে খুব কষ্ট হয়েছে। যদিও সমরেশ বেশ প্রিয় ছিল সেসময়। ঘোরাঘুরি তো ভালোই করেন। খালি অন্য কেউ ঘুরতে দেখলেই হিংসা দিয়া আসেন
মাকশুম
পড়ার স্বভাব হারিয়ে ফেলা একটু দুঃখের ব্যাপার, ফিরে পাওয়া যায় না আর সহজে!
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মনটা খারাপ হল (নাকি হিংসা)। মাঝে মাঝে মনে হয়, ক্যান যে দেশে থাকতে ভুতের কিল খেয়ে বাইরে আসলাম। কেউ একটা টাইম মেশিন বানিয়ে দিলে এয়ারপোর্টে ফেরত গিয়ে নিজেকেই একটা অ্যায়সা ঘুষি মারতাম যে বিদেশে যাওয়াই বন্ধ করে দিতাম।
পাঠক হিসেবে আপনি তাও উঁচু ক্লাসের আছেন হে! আমি শেষবার মাসুদ্রানা কিনে সাথে করে বয়ে এনেছি, ছোট বেলায় পড়তে দেয়নি সেই অভিমানে। আজও পড়া হয়নি অনেকগুলো, খাটের নিচে ধুলোই জমছে কেবল।
চমৎকার লেখার সাথে ছবিব্লগটাও মাগনা পেলাম আমরা!
ভাল থাকুন শুভেচ্ছা
অপাঠ্য পুস্তক মানে আউটবই পঠনের ব্যাপারে আমার ধৈর্য এবং গতি মাশাল্লাহ ভালো।
দেশে ফিরবেন তো? ফিরেই নাহয় মাসুদ রানা পড়লেন।
ছবি দেখার জন্য বাড়তি ধন্যবাদ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বাহ কখন দেশে এসে ঘুরে গেলা জানি না। লেখা উপাদেয় হয়েছে যথারীতি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আন্তর্জালে কিছু মানুষ আছেন যাদের দেখে আমার বড় ভালো লাগে। মন হরণ করা ছবি তুলছে, চমৎকার সব বই পড়ছে, কি সুন্দর সব লেখা লিখছে!
নিজের দু আনার ঝামেলা পূর্ণ জীবনে এমন সুন্দর করে বাঁচার স্বপ্নই হারিয়ে ফেলেছি। তবু এইসব লেখা ও ছবি দেখে মন ভালো হয়ে যায়!
অনেকদিন ব্লগে আপনার লেখা পড়া হয় না।মন্তব্য করা হয় না! এইটা খুব ভালো লাগল।
আরো ছবি তুলুন, বই পড়ুন, অনেক অনেক লিখুন।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
চমৎকার লেখা। লেখার সাথে ভাবছি, ঘুরছি। মন্তব্যগুলো পড়ে নামছি আর একজায়গায় খটকা লাগলো, কোথাকার পানি টেনে কোথায় যে নিতে পারে মানুষ!
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
মন্তব্যগুলো পড়ে নামছি আর একজায়গায় খটকা লাগলো
সেটাই। লেখা, মন্তব্য করা দুটোই কমিয়ে দিতে হবে রে আফা, লোকজন সারকাজম ধরতে পারে না আসলে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
শোন গো দিদি, লোকজন লোকজনের মত চলবে, আমরা আমাদের মত!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
অন্য আরো অনেকেই যেমন বলেছেন ইতিমধ্যে - আসলেই দারুন 'উপাদেয় আর মুচমুচে', সুখপাঠ্য লেখা হয়েছে! পড়তে খুব আরাম পেলাম। মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যগুলিও। এমনকি ঐ 'এক মন দুধে এক ফোঁটা চোনা' টাইপের আকস্মিক চোনা-কমেন্টটার জবাবে আপনার উইটি প্রতিমন্তব্যটাও।
যে লেখাতে বইপত্তর আর পড়াপড়ি নিয়ে কথাবার্তা থাকে, সেটাতে আমার আগ্রহ এমনিতেই বেশি। তার উপর যদি লেখকের পাঠরুচি বা পছন্দের বইয়ের সাথে নিজের পছন্দের মিল পাই, তাহলে তো কথাই নাই। উপ্রে আপনার কিছু প্রিয় লেখকের আর বইয়ের নাম দেখে ঐ বিষয়ে আমারও অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে।
এই মুহূর্তে মনে পড়ছে স্কুল-কলেজ জীবনে পড়া - বঙ্কিম, শরৎ, রবীন্দ্রনাথ, বিভূতি, মানিক, তারাশঙ্কর, দুই বিমল - বিমল মিত্র ও বিমল কর, গজেন্দ্রকুমার, নরেন্দ্রনাথ (মিত্র?), অমিয়ভূষন মজুমদার, সমরেশ বসু ও মজুমদার (মজুমদারের বিষয়ে আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত) - এদের কথা। ঐ সময়ই এদের বেশিরভাগ উপন্যাসই মনে হয় ধুয়ে-মুছে সাফা করেছি একাধিকবার। চট্টগ্রাম ক্যান্ট পাব্লিকের স্কুল লাইব্রেরী থেকে শুরু করে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। এর পরে জগদীশ বসু, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, বুদ্ধদেব বসু ('তিথীডোর'), সতীনাথ ভাদুড়ী, অতীন বন্দোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, আশাপুর্ণা দেবী, মনোজ বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রমুখ। তবে একটা সত্যি স্বীকার করি যা হয়তো অনেকেরই পছন্দ হবে না - সুনীল, শীর্ষেন্দু, সমরেশ (মজুমদার) - এই ট্রায়োকে আমার কখনই খুব একটা ভাল লাগেনি। এদেরকে আমার সবসময়ই - শ্যালো, চটকদার, বাজারি, আর কোন কোন ক্ষেত্রে খুব সফল সাহিত্যিক টাউট বা চালবাজ-টাইপের কিছু একটা মনে হয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে বলছি না, একটা ভিন্ন লেভেলে তাদের লেখার বিচারে কথা বলছি। বাংলায় আপাতত এই মুহূর্তে এই লেখকদের কথাই মনে পড়ছে, বাকিদের হয় ভুলে গেছি বা এই মুহূর্তে মাথায় আসছে না। এদের মধ্যে যাদের লেখার পাঠসুখস্মৃতি এখনো মনে গেঁথে আছে এবং এই মুহূর্তে মনে পড়ছে, তাঁদের মধ্যে আছেন - অবধারিতভাবে তারাশঙ্কর, আছেন 'কালকূট' ছদ্মনামে সমরেশ বসু, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ বসু, প্রেমেন মিত্তির, সত্যেন সেন। প্রিয় উপন্যাস যেগুলির নাম মনে পড়ছে এই মুহূর্তে - রবীন্দ্রনাথের গোরা আর নৌকাডুবি, বিভূতির পথের পাঁচালী আর অপরাজিত, তারাশঙ্করের - কবি, কালিন্দি, আরোগ্য নিকেতন আর হাঁসুলিবাঁকের উপকথা। এই শেষেরটা এত ভালো লেগেছিল যে কাহিনিটার কিছুই আর মনে না থাকলেও, পড়ে ভাল লাগার অনুভূতিটা জীবনেও আর ভুলব কিনা সন্দেহ। তারাশঙ্করের আরও অনেক বইই প্রিয়, কিন্তু নাম মনে পড়ছে না এখন। এরপর আছে প্রমথনাথ বিশীর ঐতিহাসিক উপন্যাস 'লালকেল্লা', মানিকের 'পুতুলনাচের ইতিকথা', বিমল মিত্রের 'সাহেব বিবি গোলাম', খুব সম্ভবত বিমল করের 'দেওয়াল', নরেন্দ্রনাথের 'চেনামহল', সতীনাথ ভাদুড়ির 'জাগরী' ও 'ঢোড়াই চরিত মানস', অতীন বন্দোর অনেকগুলি বই - তবে বিশেষ করে তার নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে-অলৌকিক জলযান-ঈশ্বরের বাগান ট্রিলজি, মনোজ বসুর 'নিশিকুটুম্ব' (আমার মতে এটা বাংলা উপন্যাস-জগতে সেরা দশের তালিকায় আসতে পারে), মহাশ্বেতার 'হাজার চুরাশির মা' আর 'আঁধারমানিক' (এটা আমার পড়া বাংলাদেশের পটভূমিতে সেরা ঐতিহাসিক উপন্যাসের একটি), সমরেশ বসুর 'যুগ যুগ জীয়ে' (এই আরেকটা সেরা দশের ক্যান্ডিডেট), কালকূটের অনেক বই - যেমন - 'খুঁজিয়া ফিরি তারে', সত্যেন সেনের 'জেরুসালেম' ইত্যাদি, বাণী বসুর 'মৈত্রেয়ী জাতক' (তবে লেখিকার বিশ-শতকীয় পলিটিকাল ইডিওলজির ফিল্টারটির রেট্রোস্পেক্টিভ প্রয়োগ ভাল লাগেনি), ইত্যাদি।
আহ্, কি একেকটা দিন গেছে! বর্তমানে বড় কষ্টে আছি - বছর দশেক ধরে গল্প-উপন্যাস জাতীয় বই-টই আর পড়তে পারি না। মন বসাতে পারি না কিছুতেই। ব্রেইনের ভিতর বোধহয় শর্ট-সার্কিট হয়ে বইপড়া - সিনেমা দেখার সেল / নিউরনগুলি জ্বলে গেছে। তবে চেষ্টায় আছি। বইপত্র কিনি, তারপর জমিয়ে রাখি। দেখা যাক আবার রিস্টার্ট হয় কিনা।
এহহে, এই মন্তব্যটা মিস করে গিয়েছিলাম!
আপনার বিশাল তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখলাম :-
বঙ্কিম, শরৎ, রবীন্দ্রনাথ, বিভূতি (বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখোপাধ্যায় ), মানিক, তারাশঙ্কর, মহাশ্বেতা দেবী, আশাপূর্ণা দেবী, গজেন্দ্রকুমার, কালকূট, বাণী বসু.. এগুলো সব ঠিক আছে।
বুদ্ধদেব বসু বস! তিথিডোর , এবং অন্যান্য উপন্যাস, তাঁর প্রবন্ধ এমনকি কবিতাও (অনুবাদ ও মৌলিক) পছন্দের।
এবং প্রতিভা বসু। ঐ যে,পড়ার আরাম- এইটে ওনার লেখায় পাই।
এবং নবনীতা দেবসেন, এনার লেখাও আরামের।
অতীন বন্দোর ট্রিলজি কোথায়? নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে-অলৌকিক জলযান-ঈশ্বরের বাগান, সঙ্গে আরেকটা আছে তো সিরিজে, মানুষের ঘরবাড়ি।
মনোজ বসুর 'নিশিকুটুম্ব' অতো পছন্দ হয়নি। 'সাহেব'কে নিয়ে বা অন্যান্য কলেবর আরেকটু সংক্ষিপ্ত হলেও চলে যেতো, মানে খানিকটা অকারণে দীর্ঘ করা মনে হয়েছে।
ম্যালা বই পড়িনি! শেইম শেইম!
প্রমথনাথ বিশীর ঐতিহাসিক উপন্যাস 'লালকেল্লা', নরেন্দ্রনাথের 'চেনামহল', সতীনাথ ভাদুড়ির 'জাগরী' ও 'ঢোড়াই চরিত মানস', দুই বিমল - বিমল মিত্র ও বিমল কর (এক 'আসামি হাজির' পড়ে আগ্রহ চটে গিয়েছিল), অমিয়ভূষন মজুমদার এবং সমরেশ বসু। পড়ুয়াদের মতামতের গতি দেখে মনে হচ্ছে শেষোক্ত ভদ্রলোকের লেখাগুলো পড়া জরুরি। শুরু করবো তাহলে।
মহসীন কলেজের লাইব্রেরিতে বসে পড়া একটা বইয়ের কথা খুব করে মনে আছে। 'হুমায়ূন আহমেদের প্রেমের উপন্যাসসমগ্র'।
অফ পিরিয়ডগুলো ঐখানে বসে কাটাতাম।
একজনের নাম বাদ দেওয়াটা কবীরা গুনাহ, সুকুমার রায়! ইনি না থাকলে, বাকি সবাই থাকলেও বহু আগে দম আটকে মরে যেতাম!
রিস্টার্ট বাটন কাজ করতে শুরু করলে এবং এরমধ্যে না পড়ে থাকলে জয় গোস্বামীর উপন্যাস সব পড়ে ফেলুন। কবির গদ্য অদ্ভুত!
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যটার জন্য।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তোমার লেখার হাত যে খুব ভাল সেটা নতুন করে বলার নেই। তুমি যে পড়ুয়া সেটাও আমরা সবাই জানি, কবিতা থেকে গদ্য সব ই পড়ছো দিন রাত। বই পড়া ছাড়া খেতে পারো না সেটাও জানি। এই অভ্যেস টা কি মাঝে সাঝে বাদ দেয়া যায়? খাবার টেবিলেই সারাদিনের শেষে সবার সাথে কিছুটা আলাপ সালাপ হয়। তুমি একা বই পড়তে পড়তে খেতে পারো।বা বাথ নিতে নিতে তো পড়তেই পারো।
আমি খুব ছোটবেলা থেকেই বড়দের উপন্যাস পড়েছি। আমার মায়ের ভীষন রকম পড়ার নেশা। বাবা কাজের জন্য দেশের নানান শহরে বদলি হতেন। নুতন শহরে গিয়েই মা স্থানীয় লাইব্রেরিতে মেম্বার হয়ে যেতেন আর দুই তিন দিন পরপর ই বই আনাতেন। মার সাথে সাথে আমিও লুকিয়ে সব বই পড়ে ফেলতাম। অনেক বই বুঝতেও পারতাম না, আবার কিছু কিছু বই খুব ই ভাল লাগতো। পরে বড় হয়ে যখন সে বই গুলোই পড়েছি মোটেও ভাল লাগেনি। আবার কিশোর বয়েসে বা আজ থে বিশ পঁচিশ বছর আগে যে সব বই ভালো লেগেছিল সে গুলো এই মধ্য বয়েসে এসে ভাল লাগছে না। তবে কিছু লেখক আমার বরাবর প্রিয়। যেমন সুনীল। ওর প্রায় সব লেখাই আমি খুব পছন্দ করি। সমরেশ বসু, উনি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকলে আমরা আরও কত ভাল ভাল লেখা পেতাম। দেখি নাই ফিরে পড়ার পর শান্তিনিকেতনে গিয়ে রামকিংকরের ভাষকর্য গুলোর পেছনে যে কাহিনী তা জানা ছিল বলে অনেক বেশী ভাল লেগেছিল। বুদ্ধদেব বসু আমার অনেক অনেক প্রিয়।
যখন দেশে ছিলাম তখন আকতারউজ জামান ইলিয়াস, মাহমুদুল হক, আব্দুশ শাকুর, রশীদ হায়দার এদের লেখা পছন্দ করতাম। হুমায়ুন আহমেদের প্রথম দিকের তিনটি বই খুব ভাল লেগেছিল। এরপর উনার লেখার প্রতি আমি উৎসাহ হারিয়ে ফেলি। হয়তো এরপরেও উনি অনেক ভাল লিখেছেন কিন্তু আমার পড়া হয়নি। দেশে থাকলে হয়তো আরো অনেকের লেখা পড়া হত।
আয়নামতি আর তোমাকে ধন্যবাদ ফার্স্ট পারসন পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। ছুটিতে চুটিয়ে লিখে যাও।
ইয়ে আপু, আমি খুব-ই টুটাফুটা লেভেলের মামুলি মানুষ। এভাবে কবিতা থেকে গদ্য পড়ুয়াটড়ুয়া বললে বিব্রত হয়ে যাই।
পাবলিক লাইব্রেরি থেকে একবার-ই অনেক বই পড়েছি।
কক্সবাজারে ছোট খালার বাসায় ছিলাম বেশ কিছুদিন। খালু রোজ সক্কালে অফিসে যাবার সময় জেলা লাইব্রেরিতে নামিয়ে দিয়ে যেতেন, দুপুরে লান্চ পিরিয়ডে বাসায় আসার সময় আমাকে নিয়ে আসতেন আবার।
ছোট ছিলাম অবশ্য, মহানন্দে একা একা বসে বই গিলতাম।
শহীদুল জহির বা আর কোন লেখকের বই লাগলে জানিয়েন, ফেরার সময় নিয়ে আসবো নে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিনি আবদুশ শাকুর, আব্দুশ নন।
_______________
মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।
আপনার আলসেমীতে ঈর্ষা জানিয়ে গেলাম। আর বেশী ঈর্ষা লাগল আপনার লেখার এই সহজ ভঙ্গীটা দেখে। ভাল থাকবেন।
আমি তোমাদের কেউ নই
লেখা পড়ে আরাম পালাম। ভাবলাম জানায়া যাই।
শুভ দ্যাশাগমন।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
মন্তব্য
বেশ একটা লেখা পড়লেম হে!
প্রথম মন্তব্যকারীকে ধন্যবাদ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এক্কেরে এই কথাটাই কমেন্টাবো ভাবছিলাম লেখাটা শেষ করে, কাকেতালে সবার ওপরেই সেটা পেয়ে গেলাম। আগে কমেন্টেই একটা জাঝা মেরে দিই
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হ্যাপিনেসের মতো বড় হওয়াটাও একটা স্টেট অফ মাইন্ড। দিন দিন তোমার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি বড় হয়ে যাচ্ছো। ভালো লেগেছে।
ওই বইটাতে প্লেজার আর হ্যাপিনেসের পার্থক্য বলা আছে। আরো কিছুদূর পড়লেই সম্ভবত ওই অংশটা আসবে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
কতদিন ধরে ভারি ভারি কথার ব্লগ দিয়ে বড় হওয়ার চেষ্টা করছি বলেন তো ভাইয়া! তাও খুকি বদনাম ঘোচে না!
ওই বইটার সঙ্গে 'The Secret Life of Bees' আর 'দক্ষিণের বারান্দা' একসঙ্গে পড়ছি, মিলিয়ে-ঝুলিয়ে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
লেখাটা পড়েই আজকের সকাল শুরু করলাম। চমৎকার ঝরঝরে একটি লেখা। শুভকামনা তিথীডোর
@জিল্লুর রহমান সোহাগ
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার জন্য একগুচ্ছ ভালুবাসা এবং একরাশ রজনীগন্ধা। ইস্কুলে থাকার সময় গর্ভধারিনী পড়েছিলাম, পড়ে "একবারে সময়টাই নষ্ট" বলার পরে নানা বন্ধুবান্ধবের অপমানসূচক কথা হজম করতে হয়েছে।
আপাতত পড়ছি টমাস কিং এর দ্য ইনকনভিনিয়েন্ট ইন্ডিয়ান। নর্থ আমেরিকার আদিবাসীদের নিয়ে লেখা, আমি ইন্ডিয়া নিয়ে একটা সার্চ দেওয়ার পরে ভুলে এই বই রেজাল্টে চলে আসে, দুই পাতা পড়ে আমি মুগধ! তাছাড়া আমি ইদানিং সচলে কোন একটা বিষয় নিয়ে লেখার ভাও করলে যে দোটানার মধ্যে পড়ি তা হল, প্রবন্ধ লিখব না গল্প ফাঁদব। এই নিয়ে কিং সায়েব চমেতকার করে আমার মনের কথাটি কয়ে দিয়েছেনঃ
Truth be known, I prefer fiction. I dislike the way facts try to thrust themselves upon me. I’d rather make up my own world. Fictions are less unruly than histories. The beginnings are more engaging, the characters more co-operative, the endings more in line with expectations of morality and justice. This is not to imply that fiction is exciting and that history is boring. Historical narratives can be as enchanting as a Stephen Leacock satire or as terrifying as a Stephen King thriller.
Still, for me at least, writing a novel is buttering warm toast, while writing a history is herding porcupines with your elbows.
(আন্ডারলাইনটা কিং সায়েব দেননাই আমি দিলাম)
..................................................................
#Banshibir.
- হ্যাঁ, এভাবে হ্যাপিলি নেভার আফটার গল্পে হ্যাপিলি এভার আফটার হয়ে যায়। খোদ ইতিহাসের বইয়েই লেখকের গুণে কতো কুৎসিৎ সত্য কুড়ি হাত মাটির নিচে চাপা দিয়ে উপরে মহল তুলে ফেলা হয়, আর এতো ফিকশন মাত্র।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
'গর্ভধারিনী' কিন্তু এই প্রথম পড়িনি। ইন ফ্যাক্ট আগে অনেকবার-ই পড়েছি। এবারের বিরক্তি চরমে পৌঁছানোর কারণ অনেকগুলো!
ক) মৌষলকাল। কোন দরকার ছিলো না সিকুয়্যেলটা লেখার।
খ) এই আমি রেণু। স্বভাবদোষে 'পুনঃ' পাঠের মতো কুকর্ম করে ফেলেছিলাম।
খ) বৃষ্টিতে ভেজার বয়স।
পিওর পর্ণগ্রাফি। আর কিছু না বলি।
সবকিছু মিলিয়ে সমরেশের ওপর মগজ তেতে ছিলো আসলে। আর কখনো 'সাতকাহন' পড়বো না ঠিক করেছি, কৈশোরের মুগ্দ্ধতা বিরক্তিতে পৌঁছানো খুব বাজে ব্যাপার।
গল্প লিখুন, মেয়েকে নিয়ে। ছানার কান্ডকীর্তি পড়ি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আর ইয়ুভাল হারারির মতে (ভিডিও সূত্র) এই 'ফিকশন'-এর কল্যাণেই বা অন্যভাবে বললে ফিকশনে বিশ্বাস করার স্বভাবের কারনেই মানুষ আজকের মানুষ হতে পেরেছে, বিশাল বিশাল ফ্যাক্ট আবিষ্কার ও সৃষ্টি করার ক্ষমতা অর্জন করার সুযোগ পেয়েছে, নিয়ান্ডার্থাল বা এমনকি আরও আগের বান্দর টাইপের কিছু থেকে যায়নি বা বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। হ্যাপিলি এভার আফটার আমাদের অনেক আন-হ্যাপিনেসের পাশাপাশি এই পৃথিবীতে অন্তত আফটারটুকু বোধহয় দিয়েছে। সুতরাং আমি বরং বলবো, ফিকশন জিন্দাবাদ! 'হ্যাপিলি এভার আফটার' জিন্দাবাদ! জিন্দাবাদ কল্পকাহিনি!
****************************************
গোটা লেখাটা পড়তে গিয়ে 'লারা'র প্রসঙ্গে এসে থমকে দাঁড়াতে হলো। লারা ছিলেন আমাদের সময়ের নায়িকা। স্মার্ট, মেধাবী, এবং অবশ্যই সুন্দরী। তাঁকে ভালো অভিনয় করতে আর বিতর্ক করতে দেখেছি। আরো অনেক কিছু করতেন। তাঁর সাথে এক প্ল্যাটফর্মে কিছুদিন কাজ করেছি। ঐ সময়ে কিছু বিখ্যাত-অখ্যাত-কুখ্যাত রামছাগল লারাকে নিয়ে যে ঐতিহাসিক ছ্যাবলামি করে গেছে সেগুলো ভাবতেও গা ঘিনঘিন করে ওঠে।
লারার অকালমৃত্যু দুঃখজনক। সে দুর্ঘটনার তদন্ত হয়েছে এবং ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে। ক্ষতি যা হবার তা লারার নিকটজনদের হয়েছে।
লারাকে নিয়ে তাঁর মা সেলিনা হোসেনের লেখা বইয়ের কথা জেনেছিলাম। বইটা হয়তো সংগ্রহ করতাম, পড়তাম। একটু দোনোমনায় ছিলাম বইটা সেলিনা হোসেনের লেখা বলে। কারণ তাঁর লেখা হজম করার মতো পরিপাকতন্ত্র আমার এখনো গঠিত হয়নি। এর মধ্যে এক পত্রিকায় বইটার ওপরে আমার এক সাবেক বান্ধবীর লেখা তৈলচপচপ রিভিউ পড়ে বইটা পড়ার আগ্রহ উবে যায়। পাঁচ বাক্যে লেখা তিথীর এই রিভিউ পড়ে মনে হলো আমার সিদ্ধান্তটা ঠিকই ছিল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
লারাকে নিয়ে আমি এখনো মুগ্দ্ধ! অনেক, অনেক দিক থেকে অ-নেক বেশি শার্প আর দুঃসাহসী একটা মেয়ে।
কিন্তু স্মৃতিচারণের যে ভঙ্গি সেলিনা হোসেনের, তাতে পাঠক হিসেবে ঠিক আরামটা আসে না। আমি যেটা সবচেয়ে বেশি খুঁজি, পড়ায় আরাম, সেলিনা হোসেনের লেখার স্টাইল-ই তার সঙ্গে যায় না আসলে।
অবশ্য শেষ পাতাটায়, যেখানে মায়ের সামনে মেয়ের দগ্দ্ধ মৃতদেহের ছবি.. চোখ ভিজে যায়। ওটা আটকানো অসম্ভব!
আপনার মন্তব্য থাকলে আমি এট্টু ভয়ে ভয়ে ঢুকি। যাক, বকাটকা দেন নাই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মন্তব্যে আমি কাউকে বকা দেই কিনা মনে পড়ছে না। আমি পারতপক্ষে লোকজনকে বকা দেই না কারণ লোকে আমার বকাকে পাত্তা দেয় না, স্রেফ উপেক্ষা করে। লেখক যদি কোন পাঠকের মন্তব্য নিয়ে শঙ্কায় থাকে তাহলে ঐ পাঠকের উচিত অমন চেষ্টা আর না করা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরে বাপ রে! আমি আসলে ঐরকম বকাঝকার কথা বলিনি। ইভেন কখনো ঐরকম বকাঝকা করলেও বড়-একটা কিছু মনে করতাম বলে মনে হয় না।
এতো গুছিয়ে লেখেন, এমনিতে আপনার কোন মন্তব্য পাওয়াটাই তো আনন্দের ব্যাপার!
বেফাঁস কথায় কোনভাবে আহত করে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
পাণ্ডবদা'রে খতিব ভাবেন? নাকি নিজেরে মতি ভাবেন? হুমম??
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
[quoteজীবন জিনিসটা যাপন কিংবা বহনের, মানুষভেদে। কিন্তু হরেদরেকাশ্যপগোত্রে জীবন-ই তো, সব মিলিয়ে। ]
দেবদ্যুতি