যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা

রিম সাবরিনা এর ছবি
লিখেছেন রিম সাবরিনা [অতিথি] (তারিখ: সোম, ০৫/০৪/২০১০ - ১:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা

একবিংশ শতাব্দীতে এসে মানুষ মারার নিষ্ঠুর খেলাটা এখনো কেন আমরা ভুলে যেতে পারি না? কোথায় রোগ-শোক-জরার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার কথা, তা না করে এখনও আমরা নিজেরা নিজেদেরকে মারছি। কালোর প্রতি সাদার বিদ্বেষ, মুসলিমের প্রতি খ্রিস্টানের আক্রোশ দেখতে দেখতে কি কখনও আমরা ক্লান্ত হই না? আমি হয়তো খুব বেশি মাত্রায় অজ্ঞ। রাজ রাজড়াদের সুচতুর রাজনৈতিক ছক্কাগুলোকে বড় বেশি অহেতুক মনে হয় আমার কাছে। তাই আফগানিস্তান যুদ্ধকে মনে হয় একটা পুরোপুরি অনর্থক যুদ্ধ। শুনেছি সেখানে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা নাকি আরো ত্রিশ হাজার সৈন্য পাঠানো চুড়ান্ত করেছেন। অদ্ভূত ব্যাপার হল, খবরটা শুনে যাদের পাঠানো হচ্ছে, সে সৈনিকেরাই বিচলিত। কারণ তারা এতদিনে জেনে গেছে, আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যের মৃত্য হয় খুব অবীরোচিতভাবে। হয় সে মারা যাবে রাস্তার ধারে পুঁতে রাখা গাড়ি বোমায়, কিংবা “ফ্রেন্ডলি ফায়ারে”। যারা যোদ্ধা তারা মরতে ভয় পায় না। তারা ভয় পায় অকারণ যুদ্ধে বীরত্বহীন মৃত্যকে।

এই ত্রিশ হাজার সৈন্য খুব বিমর্ষ মন নিয়ে আফগানিস্তানে যাবে। পরিবারগুলো এক অজানা আতংক মনের ভেতর লুকিয়ে বিদায় দেবে তাদেরকে। বিন লাদেনকে ধরার খোঁড়া অজুহাতে যে আজগুবি খেয়ালি যুদ্ধ শুরু করেছিলেন বুশ নামের এক অতি বুদ্ধিধর রাষ্ট্রনায়ক, ওবামা তারই যোগ্য উত্তরসুরী হিসেবে নিজেকে প্রমান করতে যাচ্ছেন আর কি। এতে দোষের কি আছে? দোষ কিছুই না। নইলে পৃথিবীর আর কেউ কিছু বলছে না কেন? কারণ আমাদের সয়ে এসেছে। হাজার হাজার আফগান নারীর সন্তান হারানোর আর্তনাদ আমাদের কানে আসে না। দিনে দিনে বেড়ে চলা পঙ্গু শিশুদের সংখ্যা আমাদের বিচলিত করে না। ধূসর এই দেশটার মানুষগুলো ইঁদুর কপাল নিয়ে দুনিয়ায় এসেছে। কষ্ট তো তাদের পেতেই হবে। আমি কেন যেন মানতে পারি না তাদের অবশ্যম্ভাবী মৃত্যকে। মানুষ না মেরে কি কোন রাজনীতি হয় না? নাকি আমরা এখনও সভ্যতার সেই স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছাই নি। আমি ঠিক বুঝতে পারি না।

মার্কিনি আগ্রাসনের চাপে পিষ্ঠ হয়ে ইরাক নামের দেশ তো ইতোমধ্যে ধূলিস্মাত হয়ে গেছে। মার্কিন মুখোশের আড়ালে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ফসফরাস বোমায় উড়িয়ে দিচ্ছে। ইরানও একই পরিণতির আশংকায় দিন কাটাচ্ছে। চাঁদ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকালে চীনের প্রাচীর দেখা যায় বলে গর্ব ছিল আমাদের। এখন চাঁদ থেকে এই নীলাভ গ্রহের দিকে তাকালে গোলাবারুদের হলকা দেখা যাবে। আমাদের গর্ব না হলেও নীলাভ গ্রহের অলিখিত মালিকদের ঠিকই গর্বে বুক ফুলে উঠবে।

-রিম সাবরিনা
(বেশ কয়েক মাস আগে লেখা)


মন্তব্য

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ইয়ে, মানে..., খেলাতো দুষ্ট ছেলেদের জন্যে, কিন্তু ডোবায় বসবাসরত আমাদের মত ব্যাঙদের কি হবে?

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

রিম সাবরিনা [অতিথি] এর ছবি

কি আর হবে...খোয়া যাওয়া হাত পা নিয়ে মানবেতর ব্যাঙজীবন কাটাতে হবে...

--রিম

অতিথি লেখক এর ছবি

চোখে ঠুলি পরানো আছে আমাদের, অত দেখার সময় কই?

মর্ম

রিম সাবরিনা [অতিথি] এর ছবি

ঠুলি ভাল জিনিস। অনেক কিছু দেখতে হয় না। দুশ্চিন্তাও করা লাগে না তাই। হাহা...

--রিম

নাশতারান এর ছবি

কঃ
মানুষের মতো আত্মবিধ্বংসী প্রাণী আর কোথাও কি আছে?
যুদ্ধ কোনদিনও শেষ হবে না। ক্ষমতালিপ্সুরা নিজেদের ক্ষিদে মেটাতে সাদাসিধে মানুষের বলি দেবে। আর পোড় খাওয়া মানুষেরা লড়ে যাবে নিজেদের বাঁচার অধিকারের জন্য।

খঃ
হাচলত্ব প্রাপ্তিতে অভিনন্দন রইল। হাসি

গঃ
টাইপো আছে সামান্য। অদ্ভুত আর মৃত্যু।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

রিম সাবরিনা [অতিথি] এর ছবি

ভুল ধরিয়ে দেয়াব্র জন্যে ধন্যবাদ। এর পর থেকে এদিকটা খেয়াল রাখা হবে।

--রিম

অতিথি লেখক এর ছবি

যুদ্ধ কখনও ভাল কিছু বয়ে আনে না।আগের যুদ্ধ গুলোই হয়তো ভাল ছিল।সাধারন আমজনতা কম ক্ষতিগ্রস্ত হতো। দিন যাচ্ছে আমরা সভ্যতার দিকে না গিয়ে যেন দিন দিন আরও বর্বরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।আপনার লিখা পড়ে তাদের জন্য মন খারাপ হয়ে গেল।

মিতু
রিফাত জাহান মিতু

রিম সাবরিনা [অতিথি] এর ছবি

আপনার মন্তব্যের সাথে একদম একমত!

--রিম

মাহবুব লীলেন এর ছবি

একবিংশ শতাব্দীতে এসে মানুষ মারার নিষ্ঠুর খেলাটা এখনো কেন আমরা ভুলে যেতে পারি না?

মানুষের ইতিহাসই বোধহয় মানুষ মারার ইতিহাস

মুস্তাফিজ এর ছবি

সহমত

...........................
Every Picture Tells a Story

সোহাগ [অতিথি] এর ছবি

"চাঁদ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকালে চীনের প্রাচীর দেখা যায় বলে গর্ব ছিল আমাদের।''-ইহা কি প্রমাণিত?

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সোহাগ [অতিথি] এর ছবি

হ। আমার বাপ ও একসময় ‌‌‍‍‍‍‌‌‌‌বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা হুনছে! কেউ কেউ আবার "চীনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান" -এডা হুনছে!

সোহাগ [অতিথি] এর ছবি

কেমনে?( ইমো দেয় কেমনে?)

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সুমন চৌধুরী এর ছবি

কেমনের ইমো মনে হয় নাই। তবে ব্র্যাকেটের মধ্যে চিন্তিত লিখলে চিন্তিত এরকম দেখা যায় ....



অজ্ঞাতবাস

ধুসর গোধূলি এর ছবি
রিম সাবরিনা [অতিথি] এর ছবি

আমার জানামতে প্রমানিত...তবুও একবার যাচাই করে নেবেন। গুগল আছে কি করতে... হাসি

--রিম

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- চান্দ থেকে চীনের প্রাচীর দেখার ঘটনা প্রমাণিত সত্য হলে আমিও চান্দে গেছি। এইটাও প্রমাণিত সত্য। দেঁতো হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সোহাগ [অতিথি] এর ছবি

হো হো হো হো হো হো হো হো হো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।