অফিসে এসে রোজকের অভ্যেস মতো মেইলগুলো চেক করছিলাম। আনসোর্টেড লিস্টে একটি নামে হোঁচট খেলাম। গট আ মেইল ফ্রম এঞ্জেলিনা গোমেজ। গির্জার ঘন্টার মতো থেকে থেকে নামটা বাজতে থাকলো মাথায়। ধেয়ে আসা ঢেউয়ের সামনে দাঁড়াতে যতটুকু শক্তি প্রয়োজন তার শূন্য দশমিক দশ ভাগেরও কম নিয়ে আমি ওর মুখোমুখি হলাম। জানতে চেয়েছে - আমাকে মনে আছে তোমার? জেনে খুশি হবে আমার মেয়ে তোমার ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। আমি জানতাম আমার ছেলে-মেয়েরা তোমার মত বড় মানুষ হবে! এটা আমার জন্যে কত গর্বের ভাবতে পারো! ... চোখের সামনের অক্ষরগুলো অচেনা মনে হয়। যেন দূরে থেকে ভেসে আসা চলন্ত কোনো ট্রেনের একঘেয়ে ঝিকঝিক শব্দের সাথে মিশে হারিয়ে যাচ্ছে। আমি অজান্তে কাঁপতে থাকি। নাহ! ভুল নয়, সত্যি এঞ্জেলিনা।
স্রোতের অবিরাম ধারায় কতগুলো বছর পার হয়ে গেছে গুণে দেখা হয়নি। আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজের কাঁচাপাকা চুলদাড়ি মাখানো চেহারাটাও অদ্ভুত লাগে। আমি তো নাকি অন্য কেউ, দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগি! যাক, অন্তত সে থেমে থাকেনি। আমি খুশি হই। মেয়েটা দেখতে কেমন হবে, ভাবতে থাকি। কিছু ছোঁয়া তো থাকবে মায়ের।
বেড়ালছানা বাঁচাতে হাঁটু সমান নর্দমার পঁচা কাদা-পানিতে যে মেয়েটি নির্দ্বিধায় নামতে পারে, তাকে কি কেউ ভুলতে পারে! - দ্রুত হাতে টাইপ করতে লাগলাম কথাগুলো... তোমার মেয়েকে আমার শুভেচ্ছা জানিয়ো। আর ওকে বলো যেকোন প্রয়োজনে সে আমাকে পাশে পাবে, সবসময়। এটুকুই, মেসেজ হ্যাজ বিন সেন্ট।
এঞ্জেলিনার সাথে প্রথম দেখা, দিনটি মনে আছে স্পষ্ট।
সেদিন ঘাম দিয়ে জ্বর নামার মত করে পরীক্ষার ভুত নেমেছিল মাথা থেকে। ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে বসে পত্রিকায় কিছু একটা পড়ছিলাম। রান্নার রেসিপি। উচ্ছে দিয়ে কই মাছ। যদিও মাছে আমার তেমন রুচি নাই। তবুও এই অনাবশ্যক আগ্রহের কারণ হলো - সেদিন ছিল ছুটির দিন। সকাল থেকে আধবেলা অবধি পেপারটাও ছিল বাবার দখলে। দেন-দরবার শেষে যতক্ষণে সেটা হাতে পাই, ততক্ষণে কাগজটার মত খবরগুলোও বাসি হয়ে গেছে। তবুও যে কোন মুহূর্তে হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে, এই আশংকায় জোর করে নিজের আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা।
ডোরবেল বাজছিল। একবার। দুইবার। তিনবার... নাহ! এই বাসায় সাত সকালে নিউজপেপারের মত আলতো ঝুপ শব্দে ট্রয়ের সৈন্যের মতো যেখানে যে থাকে ছুটে এসে ঝাঁপায়ে পড়ে, দখল নিতে। অথচ ডোরবেলের কর্কশ আওয়াজে সবাই নির্লিপ্ত, তখন আর কেউ কানে শুনে না।
'লোঠাশ! এই লোঠাশ!!' লোকমান ছোট চাচার নাম হওয়ায় রাজশাহী থেকে আসা কাজের ছেলেটার নাম লোকমান বদলায়ে রাখা হয়েছিল 'লোটাস'। একই বাড়িতে দুই লোকমানের বিপত্তি এড়াতে। ছোট চাচা আমাদের আইডল, তিনি একজন প্রকৃত দার্শনিক গোত্রের মানুষ। যেহেতু তিনি লোটাস কে 'লোঠাঅ্যাশশ' বলে, তাই আমাদেরও একই ডাক।
'ভাইজান আবার ঠাশ ঠাশ শুরু কুরছেন ক্যান!' - লোটাসের ভাবসাব ছিল নবাবের মত।
'জ্বী, শুদ্ধি করে ডাকলে তো আপনারে পাওয়া যায় না, তাই। কখন থেকে বেল বাজছে, কানে যায় না!'
'তা, আপনার কানে তো যায়, দরজাটা খুলে দেন!' কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই নবাব তার অতি প্রিয় জায়গা রান্নাঘরের চিপায় চলে যায়।
টেটনা, বেয়াদ্দপ, অতি আস্কারায় মাথায় উঠছে - গজ গজ করতে করতে করতে দরজা খুললাম। একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জানতে চাইলাম - 'কি চাই?' লোটাসের উপর গজরানোর রেশটা ছিলই বোধহয়, হু কেয়ারস!
'ইয়ে, মানে...' মেয়েটা আমতা আমতা করতে লাগলো। 'বাসায় তোমার আব্বু আম্মু কেউ নাই?'
'আমি আছি। আমাকেই বলেন?' একে তো আমাকে তুমি বলছে, তার উপর মুরুব্বীয়ানা দেখায়ে বলছে যে আব্বু আম্মুর দরকার।
'আসলে এই গলির শেষে ফাঁকা যে মাঠটা আছে, সেখানে একটু আগে কেউ একজন এক রিক্সাওয়ালাকে মেরে তার কাছে যা কিছু ছিল কেড়ে নিয়েছে। বেচারা গরীব মানুষ, এখন কাঁদছে। জিগ্যেস করায় বলল, ওর কাছে পাঁচশ মত টাকা ছিল। ছেলের কোচিং এর জন্য জমানো। আমি চেষ্টা করছি আশেপাশের বাড়িগুলো থেকে সেই টাকাটা তুলে দিতে।'
আমাদের পাড়াটার পাশে আটকে পড়া পাকিস্তানীদের একটা কলোনি আছে। আমরা বলি বিহারীপট্টি। এসব ঘটনা ছিল সেখানকার প্রতিদিনের। জুবায়ের নামে এক উঠতি গুন্ডার দল এসব নানারকম ত্যাঁদড়ামি করে বেড়াত। সবাই জানলেও, ভয়ে কিছু বলার সাহস পেত না। আমাকে চুপ দেখে সে জানতে চেয়েছিল - 'তুমি কি আমাকে সাহায্য করবে?'
বেশ বুঝছিলাম, লোটাসের কারণে তাতায়ে ওঠা রোদটার উপর হালকা মেঘের ছায়া এসে পড়তে শুরু করেছে। তাকালাম মেয়েটার দিকে। মাসুদরানার সোহানার স্বপ্নে বিভোর এক কিশোর আমি। জুলফি কানের লতি ছাড়িয়ে গালে এসে ঠেকেছে, আর গলার স্বরেও পিউবারটি লেবেল পার হওয়া পুরুষালি দরাজ টোন। অন্যদিকে এঞ্জেলিনা ছোট-খাটো, চাপা রঙের অতিরিক্ত লিকলিকে একটি মেয়ে। সোহানার পাশে একবারেই বেমানান। তবে ওর ভেতরে কি জানি, কি একটা ছিল - গর্ব, শক্তি না আত্নবিশ্বাস কে জানে! যা এক অদ্ভুত ব্যক্তিত্বের আভা ছড়াচ্ছিল ওর চোখ দিয়ে। আজ অব্দি কোন মেয়ের ভেতর আমি তা দেখি নাই। তাই জীবনে প্রথম কোন মেয়ের প্রতি ক্রাশ খাওয়াতে আমি বলতে গেলে আজো গর্বিত।
পাড়ায় জুবায়ের গ্রুপের তাণ্ডব দিন দিন বেড়েই যাচ্ছিল। বাড়ছিল এঞ্জেলিনার সাথে আমার বন্ধুত্বও। মাঝে মাঝে ওদের বাসায়ও যাওয়া হতো, এঞ্জেলিনার মা আমাকে বিশেষ পছন্দ করা শুরু করে। ভালো ছাত্র হওয়ায় এই একটা বাড়তি সুবিধা আমি পেয়ে আসছি সবসময়। এঞ্জেলিনা প্রায়ই ঠাট্টা করে বলত তোমার রেজাল্ট ওরকমন বেখাপ্পারকম ভালো না হলে, মা তোমাকে বাড়ির ধারেও ঘেঁষতে দিত না। আর বন্ধুরা বলা শুরু করল, জামাই আদর। বলা বাহুল্য, কোনটাতেই আমার তেমন আপত্তি ছিল না।
এঞ্জেলিনার মার ওকে নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ ছিলো না, প্রায়ই বলত আমার মেয়েটা জানি কেমন। আর দশটা মেয়ের মত না। কখনো রাস্তা থেকে বাদাম-বুটওয়ালা, টোকাই, বস্তির ছেলে মেয়ে ধরে এনে নিজের সোয়েটার জামা দিয়ে দেয়। তো কখনো বাসার চালডাল, এটাসেটা চুরি করে ব্যাগ ভরে নিয়ে কোথাও বিলিয়ে দিয়ে আসে। এঞ্জেলিনা মা-কে থামিয়ে দিয়ে বলে - 'তুমি থামবে! শুধু শুধু এতো জামা-কাপড় আলমারিতে ফেলে রাখার তো কোনো মানে হয় না!'
জুবায়ের এঞ্জেলিনার পাশের বাড়ির এক মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল অনেকদিন, অবস্থা এতই ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছে যে মেয়েটির কলেজ যাওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। এঞ্জেলিনা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে, 'আমার অবাক লাগে, বদমাইশটাকে কেউ কিছু বলে না কেন!'
আমি ওর কথা শুনেও না শোনার ভান করি।
'চলো, ওকে একটা শিক্ষা দেই!' ওর চোখ চক চক করে ওঠে।
'পাগল! হাড়গোড় একটাও আস্ত থাকবে না।'
'তুমি এতো ভিতু কেন!' এঞ্জেলিনার স্বরে স্পষ্ট বিদ্রূপ। বলতে দ্বিধা নেই সেদিন ছেলে হওয়ায় ওর কাছে আমার মেল ইগো কিছুটা হার্ট হয়েছিল।
পরদিন খুব ভোরে এসে পাগলের মত বেল চাপছিল, আম্মার চোখের স্পষ্ট বিরক্তি উপেক্ষা করে সে আমাকে প্রায় টেনে নিয়ে বলল - 'গট এন আইডিয়া!'
ওর আইডিয়া শুনে আমার হাত-পা জমে যায়, 'নো ওয়ে... টু মাচ রিস্কি'।
'ট্রাষ্ট মি, নো রিস্ক নো গেইন!'
বুঝলাম উপায় নেই। বড় কারো হেল্প লাগবে। ছোট চাচা দার্শনিক মানুষ। সব খুলে বললাম তাকে। তিনি আমাদের সবরকম হেল্প করার প্রতিশ্রুতি দিলেন, সাথে থাকলো লোটাস। রাত বারোটার মধ্য দেড়শ পোস্টারে এঞ্জেলিনার দেয়া কথাগুলো প্রিন্ট করা হলো। আমার আর লোটাসের উপর দায়িত্ব পড়ল, একরাতের মধ্যে থানার সামনে, ডিসি অফিসের সামনেসহ আমাদের পুরো মহল্লায় যতটা পারা যায় নিশ্চুপে পোস্টার লাগানোর। লোটাস কে চরম আনন্দিত লাগে, যেন এতো মজার কাজ সে জীবনেও করেনি। আর আমি, প্রেমিকার কথায় কেউ কখনো জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরিতে ঝাঁপ দিয়েছে কিনা জানি না, আমার অবস্থা ছিল ভিসুভিয়াসের জ্বালামুখে ঝাঁপ দেয়ার চেয়েও ভয়াবহ। নির্ধারিত সময় আমি আর লোটাস বের হই। ভাগ্যে, অন্যদিনের মতই পাড়ার ল্যাম্পপোস্টের একটা বাতিও সেদিন জ্বলছিল না। প্রথম পোস্টারটা লাগানোর ঠিক আগ মুহূর্তে কেউ আমার পাশে এসে দাঁড়ায়, আমি ভয়ে একটা চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হওয়ার আগেই, এঞ্জেলিনা আমার হাত খাঁমচে ধরে কানের কাছে মুখ এনে ফিস ফিসিয়ে বলে - 'ভয় পেয়ো না, আমি'। আমি ভয় পাই না। এঞ্জেলিনার দুঃসাহসিকতা আমাকে অভয় দেয়। পরে অবশ্য ছোট চাচাও স্বীকার করেছিল, এঞ্জেলিনার মত সাহসী মেয়ে সে আর দেখে নাই! পরদিন ঈদের আমেজে দলে দলে লোক জুবায়েরের কীর্তিকলাপ পড়ে আমাদের লাগানো পোষ্টার থেকে, ছেলে-বুড়ো সবার মুখে সেদিন এক কথা, জুবায়ের। কোত্থেকে খবর পেয়ে পত্রিকা অফিস থেকে লোক আসে, মিথ্যা ভয়ের বেড়ি ছিড়ে অনেকেই সেদিন জুবায়েরের বিরুদ্ধে মুখ খোলে। পোষ্টারের ছবিসহ মাস্তান জুবায়েরের ত্রাসের খবর ফলাও করে ছাপানো হয় প্রথম পাতায়। আমি, এঞ্জেলিনা, লোটাস ও ছোট চাচা এমন ভাব করি যেন আমরা এর বিন্দু-বিসর্গও জানি না। ওর আইডিয়া কাজে লেগেছিল, জুবায়ের ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের পুলিশ কোমরে দড়ি বেন্ধে পুরো মহল্লা ঘুরিয়ে হাজত নিয়ে যায়।
এঞ্জেলিনা। যে আমাকে শিখিয়েছিল অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। অন্তত নিজের কাছে মাথা তুলে দাঁড়াতে।
ওকে আমি অফিসিয়ালি প্রপোজ করি, ইউনিভারসিটি পড়ার সময়। বন্ধুদের পীড়াপীড়ি, আর আশেপাশের নানা তরুণ জুটি দেখতে দেখতে আমার ভেতরের আবেগকে আর ধামাচাপা দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। ছোট চাচাকে জিগ্যেস করেছিলাম - 'আমি যদি কোনো খৃষ্টান মেয়েকে বিয়ে করি?'
'ভালোবাসার সামনে কোন ঈশ্বরের ঘাড়ে কটা মাথা আছে রে!' - ছোট চাচা জবাব দিয়েছিল।
তখনো বুঝি নাই এই ঈশ্বরই তার ছেলে-মেয়ে সমেত হাজির হবে, আমার আর এঞ্জেলিনার মাঝে।
আমার প্রস্তাবের জবাব সে আমাকে দিয়েছিল প্রায় সাতদিন পর, অনেক ভেবেচিন্তে, আর তা হলো - সে তার জীবন উৎসর্গ করতে চায় প্রভুর সন্তানদের সেবায়।
আমি অস্থির হয়ে বলেছিলাম - 'তুমি করো না, কে তোমাকে না করছে, যত চাও প্রভুর সন্তানের সেবা করো! শুধু আমাকে ফিরিও না!'
'আমার জীবনে এমন আত্নসুখের কোনো স্থান নেই, যা অন্যের কাজে আসে না। আমাকে ক্ষমা করো। ' - সে অবিচল, তার স্বর একটুও কাঁপে না, চোখ স্থির।
একটু থেমে, যেন নিজেকে আশ্বস্ত করছে এমন স্বরে বলে - 'তবে তুমি ভেবো না। নিজেকে আমি কখনো ঠকাই না।'
তার বলা কথাগুলোর মর্ম উপলব্ধির ক্ষমতা আমার তখন ছিল না, এখনো নেই। কেন জানি নিজেকে চরম প্রতারিত বলে মনে হয়। অক্ষম আবেগ বয়ে বেড়ানোর কোন মানে হয় না। দেশ ছাড়ি, ছাড়ি আপনজন, সবকিছু। এঞ্জেলিনাও আমার সাথে আর কোনো যোগাযোগ রাখে না। এতদিন পর সেই এঞ্জেলিনা।
দিনকালের হিসেব আমি কখনোই রাখতে পারি না, গুলিয়ে যায়। ঠিক এ মুহুর্তে আমার সামনে বসে আছে যে তরুণীটি, তার নাম মারিয়ামা জোওলা। এসেছে এক চিলড্রেন অরফানেজ থেকে। অনেক আগে লাইবেরিয়ার গৃহযুদ্ধে যখন স্বজাতির হাতে ওর বাবা মা খুন হয়। তখন তার দু'শ গজের ভেতর এক কাসাবার ঝোপে সে অচেতন পড়ে ছিল। এসব কিছুই তার কাছে ঝাপসা অতীত। আজ 'মা' শব্দটির সাথে তার ভেতরে যে উজ্জল মমতাময়ী নারী মুখটি ভেসে ওঠে... সেটি আর কারো নয় মাদার এঞ্জেলিনার!
মন্তব্য
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
রংতুলি'র কোনো রং আর বাকী নাই...সব এই গল্পে। আপ্নেরে সেলাম ভাই
সব বুঝলুম, কিন্তু... ভাই (?!)
ভালো লাগেনি। কেনো ভালো লাগেনি সেটা ব্যাখ্যা করে বলা প্রয়োজন কিনা বুঝতে পারছি না!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ব্যাখ্যা করলেই বোধয় ভালো হতো
সহজ সরল ভাবে বলা গল্প। ভাল লেগেছে।
বানান নিয়ে বলি একটু?
পঁচা --> পচা
পৌছে --> পৌঁছে
ছিড়ে --> ছিঁড়ে
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ। চন্দ্রবিন্দু বিভ্রাট দেখা যাচ্ছে, ঠিক করে নেবো
সিনেমার প্লট মত লাগলো!
--রা শা--
সিনেমার প্লটও তো কোনো না কোনো গল্প থেকেই আডাপ্টেড
রংতুলি, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে যা মনে হয়েছে গল্পটির প্লট একদিনের নয়। ভেবেছেন তারপরে লেখা। সমস্যা হলো ভাবনাগুলো হয়ত জমিয়ে রাখেননি। এই জন্যেই মাঝেমাঝে দুইটা প্যারার মাঝখানে খানিকটা সম্পর্কহীনতা এসেছে।
তাড়াহুড়ো করেছেন। নাহলে গল্পের মান নির্দ্বিধায় দশে সাড়ে নয় পাওয়ার মত। যদিও আমি আট দিলাম। কন্সেপ্ট সুন্দর। বয়সের রেঞ্জটা আমার কাছে একটু বেমানান লেগেছে। যদিও গুরুত্বের বিচারে সেটি খুব বেশি খারাপ না। এই গল্পেতো এডাল্ট কিছু নেই। আপনি আরেকটু ধৈর্য ধরে পড়বেন। বারবার দেখবেন। আপনার ষ্ট্যাইল বলে আপনার লেখার হাত নিঃসন্দেহে অনেক নতুন আইডিয়ার এবং ভাল। ভাল থাকবেন।
Shah Waez (শাহ্ ওয়ায়েজ।)
Facebook
..............................................................................................
কোথাও নেই ঝুমঝুম অন্ধকার
তক্ষক ডাকা নিশুতিতে
রূপকথা শুনে শিউরে উঠে না গা
স্বপ্নে আমার শরীরে কেউ ছড়ায় না শিউলি ফুল
আলোর আকাশ নুয়ে এসে ছোঁয় না কপাল
শাহ্ ওয়ায়েজ, আপনাকে প্রথম ধন্যবাদটা দেই, এতো সুন্দর পর্যালোচনামূলক একটা মন্তব্যের জন্য। সত্যি বলতে, আপনার লেখার মত মন্তব্যেও মুগ্ধ হলাম।
আমার সমস্যা হলো, লিখতে বসলেই না না প্রাসঙ্গিক অপ্রাসঙ্গিক ভাবনা এসে ভিড় করে। ভাবনাগুলোকে ধরে রাখার উপায় জানা নেই। এসব কারণে অনেকদিন লিখি নাই, এখন আবার শুরু করে, লিখার ভূতে পেয়েছে।
চার মাসের বাউন্সিং একটা বেবি গার্ল সামলায়ে লিখতে গেলে, তাড়াহুড়ো কিছুটা থেকেই যায়। যদিও গল্পের মান বিচারে এসব এক্সকিউজ খাটে না। সময় করে ধৈর্য নিয়ে পড়ে এর ত্রুটিবিচ্যুতি, সামঞ্জস্যহীনতা খুঁজে বের করে, অবশ্যই তা সমাধানের চেষ্টা করব। এতকিছুর পরেও যে গল্পটা আপনার কাছে আট পেয়েছে আমি তাতেই খুশি। আবারো ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করলাম। ভালো থাকবেন আপনিও।
রংতুলি, আপনার চার মাসের বাউন্সিং একটা বেবি গার্ল কে যদি বাকি দুই না দেই তাহলে অন্যায় হবে। কে জানে সামনেই চোখে পানি এসে যাওয়া একটা লেখা আপনার কাছ থেকে আসবেই!! আর হ্যাঁ, ভাবনা যখনই আসবে তখনই হয়ত আপনি লেখতে পারবেন না। এর সমাধান হলো একটা নোটে হাতে লিখে ফেলুন। যখনই ভাববেন পিসিতে বসবেন তখনই আর হয়ে উঠবে না।হয়ত বাচ্চাটা কেঁদে উঠলো, কেউ ডাক দিলো। আমি আমার ব্যাগে সব সময়ই একটা খাতা আর কলম রাখি। বাসে, ট্রেনে যেভাবেই থাকিনা না কেনো মাথায় আসলেই হিন্টস গুলো লেখে ফেলি। এরপরে একবারে বসে এদিক ওদিক করি। চরম ব্যাস্ত জীবনে এর বিকল্প নেই।
চার মাসের বাচ্চা সামলে আপনি যতটুকু লেখেছেন, লেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ততটুকুকে সালাম জানাতেই হয়। আপনি আপনার সময়কেই লেখার মাঝে নিয়ে আসেন। নিঃসন্দেহে খুব ভাল লেখা পাবো। আপনার বেবি কুইনের জন্যে এত্তগুলা ভালবাসা আর আদর থাকলো। ভাল থাকবেন
Shah Waez (শাহ্ ওয়ায়েজ।)
Facebook
..............................................................................................
কোথাও নেই ঝুমঝুম অন্ধকার
তক্ষক ডাকা নিশুতিতে
রূপকথা শুনে শিউরে উঠে না গা
স্বপ্নে আমার শরীরে কেউ ছড়ায় না শিউলি ফুল
আলোর আকাশ নুয়ে এসে ছোঁয় না কপাল
মন ভালো করে দেয়ার জন্য আর কি লাগে, এরকম একটা মন্তব্য থাকতে! বাউন্সিং বেবি গার্ল, সাথে মায়ের হাসি আপাতত এই কমেন্টের বদৌলতে দু'কানে গিয়ে ঠেকেছে। ভাবনা ধরে রাখাতে আপনার আইডিয়া নিঃসন্দেহে কার্যকর, অবশ্যই চেষ্টা করব। আমার ব্যাগে রাখার জিনিসের সংখ্যা দেখি দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে... ছেলের চশমা, মেয়ের ডায়াপার, চুষনি, ফিডার, আধ-পড়া বই... খাতা, কলম... ব্যাপার না, সব এঁটে যাবে।
প্রতিটা লাইনের জন্যে আপনাকে আলাদা করে থ্যাংকস! ভালো থাকবেন আপনিও।
সাব্বাস। লাল ছালাম। এইটা সহজ কাজ নয়।
..................................................................
#Banshibir.
facebook
সত্যপীর, আমার অবস্থা আপনি না বুঝলে আর বুঝবেটা কে। আপনাকেও লাল ছালাম সাথে বাবা হওয়ার শুভেচ্ছা!
বাহ্ এবং চমৎকার!
আর কিছু বলার নেই।
শুভেচ্ছা
অশংখ্য ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ।
আপু, তুমি আবার নিয়মিত হয়েছ দেখে খুব ভালো লাগছে।
পুচকুনটা কেমন আছে?
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
তোমাদের ছেড়ে বেশি দিন আর থাকতে পারলাম কই, ঐযে গান আছে না - 'সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তে তুমি...'!
পুচকুনটা আপাতত বাউন্সিং প্রাক্টিসে ব্যস্ত।
চমৎকার আপনার লেখনীশৈলী ৷ কিঞ্চিৎ বানান বিভ্রাট সংশোধন করে নিবেন ৷নির্মল, পরিছন্ন লেখা শেয়ার করার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল ৷
-----------------------------ঝিঝি পোঁকা
আলসেমিতে বানান বিভ্রাট আর সংশোধন করা হয়ে উঠছে না। সুন্দর মন্তব্যের জন্যে কৃতজ্ঞতা আমারও।
'রংতুলি' কী রঙিন নিকটা! আপনার লেখা আমি পড়িনি আগে।
মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায় খানিকটা ফাঁক হয়ত আছে যা সময় নিয়ে তুলি বুলিয়ে দিলেই চমৎকার একটা গল্প হয়ে যাবে সন্দেহ নেই। একলহমার চোখ এড়িয়ে গেছে যেসব টাইপো আমি বলি? একটুও পণ্ডিতি ভাববেন না যেন!
লাইনটা নিয়ে আরেকবার বসুন সময় পেলে। মত/মতো দু'ভাবে ব্যবহার করেছেন।
ভুত-ভূত,
জিগ্যেস-জিজ্ঞেস
পোষ্টার(শুধু এক জায়গায় এটা আছে)
মন খুলে লেখুন রংতুলি। অনেক শুভকামনা।
আয়নামতি, ভুল হতে পারে, কিন্ত কেন জানি মনে হচ্ছে আমার আগের কোনো এক লেখায় এমনই এক উৎসাহ মেশানো মন্তব্য পেয়েছিলাম, আপনার কাছ থেকেই। নিকটা ভালো লেগেছে জেনে আপ্লুত হলাম। যদিও এটা নিয়ে আমি মরমে মরে যাই, একদিন গুগল সার্চ দিয়ে দেখি ব্লগ দুনিয়ায় আরো রংতুলি বিদ্যমান, যদিও সচলের আগে যার পুরোটাই (ব্লগ দুনিয়া) আমার ছিল অজানা।
টাইপোগুলো ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। পন্ডিতি ভাবার কোনো কারণই নেই। জানি, বন্ধুরাই আগে ভুল সংশোধনে এগিয়ে আসে...
লাইনটা দেখে আক্কেলগুড়ুম, প্রথম 'মত'টা ছেটে ফেলে দিলে খুব একটা ক্ষতি হবে না বোধয়! জিজ্ঞাসায় 'জ্ঞ' সবখানেই থাকলেও জিজ্ঞেসের বেলায় আধুনিক সাহিত্যে মাঝে মাঝে 'জিগ্যেস' এর ব্যবহার দেখি। ভুত, পোষ্টার ঠিক করে নেবো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ইয়ে ক্যাটাগরি 'কিশোর' কেনু র্যা
সেই তো, প্রেম মুহাব্বত বেশি লিখে ফেললাম কিনা ভাবছিলাম!
এই মন্তব্যের সাথে একমত।
অসাধারন লাগল।
আর চার মাসের বাউন্সিং বেবি গার্লকেও আদর।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
অশংখ্য ধন্যবাদ শাব্দিক! গল্পটা আপনাদের এতো ভাল লেগেছে জেনে... কিঞ্চিৎ লজ্জিতও।
বাউন্সিং গার্ল তো বেশ বাউন্স দিয়ে দিয়ে আপনাদের আদর লুফে নিচ্ছে দেখছি।
বাচ্চা ভয়ংকরের জন্য অনেক আদর...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
(বাচ্চা ভয়ংকরের ভুবনজয়ী হাসির ইমো)
দেরী করে পড়লাম। লেখা ভালো লেগেছে। তবে তারচেয়েও বেশী ভালো লেগেছে লেখার প্রতি আপনার টান। আমি মা নই, তার পরও আমার পিচ্চিটা বছরখানেকের না হওয়া পর্যন্ত লেখায় হাত দিইনি। এখনও বেশ কয়েকটা লেখার প্ল্যান আপাতত শিকেয় তুলে রেখেছি ওর জন্য। আর আপনি চার মাসের বাউন্সি বেবিটাকে সামলেও চমৎকার একটা লেখা দিয়েছেন। আপনার জন্য অনেক ।
____________________________
এতো চমৎকার একটা মন্তব্য কেমন করে আমার চোখ ফসকে গেল!! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রফেসর সাহেব! পিচ্চির জন্য ভালবাসা!
গল্পটি অনেক পরে পড়লাম। আপনার গদ্য বেশ ভালো। লেখালেখিটা চালু রাখেন।
এই গল্পটির শেষাংশ আরেকটু বড় হলে পারতো। এঞ্জেলিনা ওকে প্রত্যাখ্যান করলেও পরে কি বিয়ে করেছিল? এখানে একটু অস্পষ্ট থেকে গেছে।
গল্পটির ট্যাগ কিশোর না দিলেই ভালো হতো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
মন্তব্যে ভীষণ উৎসাহ পেলাম নীড় সন্ধানী!
না এঞ্জেলিনা বিয়ে করেনি এতিম বাচ্চাদের মায়ের মমতায় পেলে বড় করাতেই সে তার জীবন উতসর্গ করেছিল। আসলে এস ও এস'র আম্মাদের দেখে এসে এই গল্পটার প্লট মাথায় আসছিল। তাই তখনই লিখে ফেলছিলাম। আরেকটু গুছিয়ে লেখা যেত, অবশ্যই।
জুবায়ের মাঝখানে গ্রেফতার হওয়ার আগে আগে জুবিয়ার হয়ে গেল কেন?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
উফ! আমি আর আমার ভুল! ঠিক করে নিলাম। ধন্যবাদ।
ইয়ে, বাউন্সিং বেবিগার্লের গল্প লিখলে কেমন হয়?
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
নারে ভাই, তাইলে সিরিজ লিখা লাগবে, অতো দম নাই!
প্রথমেই আপনার ছেলে-মেয়ের জন্য আদর রইল। আসলে বাচ্চার মায়েদের হাতা খুন্তির বাইরে বা সাথে অতিরিক্ত পেশাগত ব্যস্ততার পরে লিখতে বসা, সেটা আসলে কি যে এক অদম্য নেশার কারণে হয় তা বোঝানো মুশকিল। তবে প্রথমেই বেবিদ্বয়কে স্যালুট কারণ তারা মাকে অন্তত এই সময়টুকু ছাড় দেয়।
আর গল্পের ব্যাপারে বলি, আপনার প্রথম লেখা পড়লাম। ভাল লাগল। সাবলীল ভাষা আর কাহিনীতে চমক। আশা করছি অন্যগুলোও দ্রুত পড়ে নিবো।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
একদম ঠিক ঠিক পর্যালোনা আপনার সুলতানা সাদিয়া। এ এক ভয়ানক নেশা, বহুবার নিজেকে শাসন করি আর এমুখো হবো না, কিন্তু কিসের কি। দুইদিন পর আবার চুলায় তরকারী, সিঙ্কে বাসনের স্তূপ ফেলে সচলের নীড় পাতায় নিজেকে উঁকিঝুঁকি মারতে আবিষ্কার করি।
আপনার কাছ থেকে গল্পের প্রশংসা পেয়ে লজ্জিত বোধ করছি। আমি লিখি নিজের মতো চারপাশে অবিরাম ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে কল্পনার জালে বেঁধে ফেলতে। গল্পের ভাষা, শব্দ, বানান এসব ক্ষেত্রেই আমার হাজারটা শীমাবদ্ধতা আছে। এগুলো আসলেই গল্প হয় কিনা সে বিষয়েও আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আর হ্যাঁ, গল্পের চেয়ে আমার কিন্তু হাবিজাবি লেখার সংখ্যাই বেশি তাই আগেভাগেই আপনাকে সাবধান করে দিলাম, পরে অহেতুক সময় নষ্ট হলো বলে আক্ষেপ যাতে না করতে হয়।
নতুন মন্তব্য করুন