আগের অংশ - http://www.sachalayatan.com/rongtuli/52525
এক্সিকিউটিভ পার্টি তো আর বাড়ির নাবালক ছেলের খৎনা না, যে চাইলাম আর দুম করে দিয়ে দিলাম। হাজারটা পরিকল্পনা, হাজারটা বন্দোবস্ত, হাজারটা চ্যালেঞ্জ থাকা লাগে। যার প্রত্যেকটাই হতে হয় একেবারে মাথা ঘুরানো, যাকে বলে ফুল শেইপড বিউটি। সবার আগে আসা যাক ইনভাইটেশন পর্বে, যা হলো এ পার্টির সবচেয়ে নাজুকতম চ্যালেঞ্জ। ডিপ্লোম্যাসি আর্টও বটে। কারো এব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান না থাকলে শুরুতেই ধরা খাবে, সন্দেহ নাই। এক্ষেত্রে সাধারণ কিছু বিষয় সাবধানে জটিল হিসেব কষে চূড়ান্ত করা লাগে, ‘আফটার অল লাইফ ইজ মেথমেটিকস, নট পোয়েট্রি।‘
প্রথম ও প্রাথমিক হিসেবের বিষয় হলো, পার্টির চিফ গেস্ট কে হবে তা নির্ণয় করা। এখানে যোগ্যতার স্কেল হিসেবে ধরা যায় চিফ গেস্টের পদমর্যাদা, প্রভাব এবং নিজের প্রজেক্টের সাথে তার প্রত্যক্ষ সম্পৃকতা।
চিফ গেস্ট বাছাই হলে তার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে, সুবিধাজনক নির্দেশ মোতাবেক আসে পার্টির দিনক্ষণ ধার্য করার প্রশ্ন। এরপর আসে দাওয়াত পর্ব। তবে অন্যদের দাওয়াতের সময় যে ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে তা হল, আদৌ কেউ চিফ গেস্টের বিশেষ সন্মান পেল কিনা, তা কৌশলে চেপে যাওয়া। একটা বড় প্রতিষ্ঠানের ভেতর একাধিক শাখা-প্রশাখা ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান থাকে। এই শাখা প্রশাখার প্রতিটার আবার নিজস্ব প্রধান বা চিফ থাকে। ধরা যাক এ টিমের চিফ, বি টিমের চিফ, সি টিমের চিফ এবং ডি টিমের চিফ। স্বাভবিকভাবেই যাদের প্রত্যেকের থাকে যার যার নিজস্ব চিফত্ব প্রীতি। এখানে মনোযোগের বিষয় হলো, প্রতিটা টিম প্রধানের যার যার চিফত্ব প্রীতি যেন জ্বলন্ত হ্যারিকেনের সৈলতের মত যথাস্থানে জ্বজ্জুল্যমান থাকে, একবিন্দু হাওয়ার অনুপ্রবেশ না ঘটিয়ে। চিফত্ব প্রীতি ঠিকঠাক সামলে নিলেও গোদের উপর বিষ ফোঁড় হয়ে থাকে এই চিফদের নিজেদের মধ্যে সদা চলমান কোল্ড ওয়ার। যেমন, এ টিমের হেড আসলে বি টিমের সাব হেড আসবে না, সি টিমের ডাইরেক্টরকে বলা হলে ডি টিমে প্রধান গোস্যা হবেন ইত্যাদি। ফরেন এক্সজিকিউটিভদের ভেতরের চলমান শীতল যুদ্ধ হাল্কা স্লেজিং ছোট্ট একটা ম্যাচের কাঠির ছোয়ায় কখন বিস্ফোরিত হয়ে মহা স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয় তা বলা মুস্কিল। অবশ্য এতসব আহাসানের জানা ছিল না। তার জানার কথাও নয়। তাই চিফ গেস্ট নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রতিটা নাজুক স্পর্শকাতর বিষয়ের দ্বায়িত্ব মিঃ জামশেদ স্ব-আগ্রহে তার সুবিশাল ডিপ্লোমেটিক কাঁধে তুলে নিলে আহসান সত্যিকার অর্থেই প্রথমবারের মত একটা বড় বাঁচা বাঁচে।
তুচ্ছ পরিচয় পর্ব টেনে রুপ দেয়া হলো বড় এক্সজিকিউটিভ পার্টির। মিতার সহজ স্বাভাবিক প্লান আপদোমস্তক বদলিয়ে করা হলো বিস্তর জমকালো আয়োজন। পার্টির ব্যাপকতা মাথায় রেখে মিসেস জামশেদের পরামর্শ মতে ভেন্যু ঠিক করা হলো তাদের বাড়ির লাগোয়া বড় অতলান্টিক ভিউ লন। সাহায্যের নামে একে একে সব দায়িত্ব সেই মহান দম্পতী নিলেও খাদ্য, পানীয় ও খরচাপাতির দিকটা রয়ে গেল আহসান ও মিতার ভাগে। এক্ষেত্রে মিঃ জামশেদ বরাবর ‘লাগে টাকা দেবে গৌরি সেন’ নীতিতে বিশ্বাসী।
নতুন জায়গায় নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার উত্তেজনাটা মিতার মিয়য়ে যেতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না, মিসেস জামশেদের পরামর্শের নামে প্রতিটা বিষয়ে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্ধত আচরণ থেকে। পার্টির দিন শখ করে মায়ের শেখানো আমডালটা রাঁধতে গিয়েও তিনি টিপ্পুনি কাটতে ছাড়েন না - “তোমাদের ওদিক বাসায় গেস্ট এলে বুঝি দাল-ভাত খেতে দেও?” যদিও পার্টির ডিনার টেবিলে আর সব খাবারের সাথে কি ভেবে সেই ডালটাও পরিবেশন করে ফেলেছিল, বোকা কোনো কালো চাকর।
পার্টির দিন ঠিক করা হয়েছিল শুক্রবার। সেদিন সকাল থেকেই মিসেস জামশেদ তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কাজে নিয়জিত চারটি লোকাল কালো চাকর নিয়ে মেতে যায়, বাড়ির প্রতিটা জৌলুশ ঘষে, মেজে আরো উজ্জ্বল করতে। প্রতিটা কোণা, প্রতিটা টেবিল নিজ চোখে পরখ করে তবেই সে নিজে তৈরি হতে যায়। সাজগোজে খুব একটা বাড়াবাড়ি না থাকলেও ক’দিন আগে আমেরিকা থেকে স্বামীর আনা এক্সক্লুসিভ আফ্রিকান হীরের হারটা পরতে সে ভুলে না।
মিস্টার জামশেদের ডাইরেক্ট বস এবং প্রোজেক্ট ডাইরেক্টর স্টিভ জনসন সপরিবারে আমন্ত্রিত। নির্দিষ্ট সময়ে সে তার চার ছেলে ও স্ত্রী জেন সহ পার্টিতে হাজির হন। মিঃ ও মিসেস জামশেদের তৎপরতা থাকে দেখার মতন। মিসেস জামশেদ অতি আহ্লাদে বাচ্চাদের গাল টিপে আদর করতে গিয়ে চোদ্দ বছরের জোসোয়ার গালটা বেখেয়ালে বুঝি একটু বেশিই টিপেছিল, জোসোয়া সাথে সাথেই বিদ্যুৎ গতিতে কদম দু'য়েক পিছিয়ে প্রায় চেচিয়ে ওঠে, “ইউউউ! নার্ড!” কিন্তু মিসেস জামশেদের বিনয় তখন এতোটাই বিগলিত অবস্থায় ছিল যে জোসোয়ার বলা শব্দগুলো তার কান অব্দি পৌছায় না।
স্টিভ পরিবার আসার সাথে সাথে অবধারিতভাবেই বিনা ঘোষণায় পার্টি শুরু হয়ে যায়। বাচ্চারা একের পর এক চকোলেট, ড্রিকন্স আর স্ন্যাক্সে মেতে যায়। মিস্টার জামশেদের একমাত্র ছেলে এগার বছরের ডালিম অন্যদের তার খেলনার লটবহর দেখানোর জন্যে নিজের প্লেরুমে নিয়ে যায়। সে তার থল থলে শরীর নিয়ে হাঁচড়ে পাচড়ে চার তাকের এক সেলফএ ওঠে, সেটা থেকে পাশের সাড়ে ছ'ফুট আলমিরার মাথায়, তারপর সেখান থেকে এক লাফে একদম নিচে মেঝেতে। হুলুস্থুল মাত্রায় সার্কাস দেখিয়ে সবাইকে তাক লাগানোর পরও সে ক্ষান্ত হয়না। বরং কে তারমতো এক বিন্দুও সামনে না ঝুকে সেই উঁচু আলমিরা থেকে লাফিয়ে সটান দু’পায়ে দাড়াতে পারবে, এই চ্যালেঞ্জ সে ছুড়ে দেয় অন্যদের মাঝে।
বাচ্চাদের আয়োজন আলাদা হলেও স্টিভ জনসনের ছোটে ছেলে একটু বেশি আদরের ছয় বছরের জাস্টিনকে কোন এক অদ্ভুদ-অজানা মোহে এক মুহূর্তের জন্যেও মিস্টার জামশেদের কোল ছাড়া হতে দেখা যায় না। তাকে তিনি পোষা বানরটার মত সেধে সেধে মুখে তুলে কখনো চকোলেট, কখনো আইসক্রিম, তো কখনো ভরা গ্লাস থেকে এক চুমুক জুস, নিদেনপক্ষে বাদাম নয়তো বা চিপস খাইয়ে যেতে থাকেন। হতভাগা ছেলেটা হঠাত হেন আদর-আতিথেয়তায় ভরকেই গিয়েছিল বুঝি। কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে ডিনার টাইমের বহু আগেই মিঃ জামশেদের দামি স্যুটের পরওয়া না করে তার গায়ে হরহর করে বমি করে দেয়। আচামকা চিফ গেস্টের সবচেয়ে আদরের ছানাটির এই দুর্দশায় পার্টির রঙ্গমঞ্চ কিছুটা ভঙ্গ হয়। সবাই ছোট জাস্টিনকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মিঃ জামশেদেরই বা দোষ কি নিজের ছেলে-কে তিনি সেই ন্যাদ্যাকালে কুচিৎ কদাচিৎ কোলে নিয়ে ছিলেন কিনা এখন আর তা অনুমান করা সম্ভব না। তারুপর শিশুদের খাদ্য ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে তার জ্ঞান আর নাপিতের ময়রা জ্ঞান প্রায় এক কথা। ছেলের খাওয়া-পরার সাথে জড়িত অর্থনৈতিক যে দিকটা আছে সেটা তিনি নিজ দায়িত্ব বলে মনে করলেও এর সাথে জড়িত দীর্ঘ যে কায়িক একটা দিক থাকে সেটা তিনি মেয়েলোকের অর্থাৎ স্ত্রীর উপযুক্ত কাজ বলেই জেনেছেন আজীবন।
চারদিকে একটা বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়, দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মিঃ জামশেদের সারা গায়ে বমির গন্ধ। কাপড় পাল্টাতে তিনি দ্রুত শোয়ার ঘরে চলে যান, কিন্তু আলমিরা খুলে সেখানে পার্টিতে পরার উপযুক্ত কিছুই পান না। গতকালই মিসেস জামশেদ আজকের পার্টির স্যুটটা আলাদা রেখে বাকিগুলো ড্রাইওয়াশে দিয়েছেন। সময় চলে যাচ্ছে। ডিনার টাইমের আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। স্ত্রী-কে ঘরে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে কাপড় ঠিকমত না রাখার অপরাধে কোষে দু’ঘা দিলেন। এতে মনের অস্থিরতা কিছুটা কমলেও পুরোপুরি ঠাণ্ডা হলো না। এরপর শব্দ না করে বিশেষ দক্ষতায় সিংহের মত চাপা গর্জনে চিবিয়ে চিবিয়ে বলতে লাগলেন, “ছোটলোকের বাচ্চা! এরপর যদি আমার কাপড় ঠিকঠাক না পাই তো তোর বাপ-কে ডাকিস এখান থেকে বিদেয় হতে!“
পার্টি শুরু বিকেল চারটা থেকে হলেও শেষ হতে হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। বাচ্চারা সোফায়, যেখানেসেখানে ঘুমে ঢলে পড়ে। সবাই যে যার মতো একে একে বিদায় নিতে থাকে। যাওয়ার সময় সভ্য কালচারমতে পার্টির নানা গুণমুগ্ধ প্রশংশার ফুলঝুরি বের হয় একেকজনের মুখ দিয়ে। তবে একটা ব্যাপারে প্রায়ই সবাই একমত ছিল এবং অন্তত একবার হলেও জানাতে ভুলে নাই তাহলো, ডাল। ডালটা তাদের আসলেই ভাল লেগেছিল। স্টিভ পত্নী জেন সাথে সিনিয়ার স্টাফ পচাত্তর বছরের বৃদ্ধ ডেভ তো গোঁ ধরেই বসলো এই ডাল রন্ধন প্রণালী তাদের শিখাতেই হবে!
“শিওর, মাই ওয়াইফ উড বি ভেরী গ্ল্যাড টু টিচ ইউ দ্যাট। শি গট দা ম্যাজিক! ম্যাজিক টু ডিল পিপল, ম্যাজিক টু নো দেয়ার টেস্ট! ম্যাজিক টু নো এভ্রিথিং... হা হা হা!” মিঃ জামশেদ তখন প্রশংসার আগুনে প্রকৃতই মোমের মত গলে গলে পড়তে লাগল।
মিসেস জামশেদের মুখে তখন লটকে ছিল একদম মাপা আড়াই ইঞ্চি চওড়া এক হাসি। এক সেমি কম বা বেশি নয়। বিগলিত, তোষামুদে বা হুজুরে হাজির কোনোটার সাথেই যায় না সে হাসি। ম্যালারিয়া প্রোজেক্টে ফান্ডিং টানাটানির সময়, দাতা গোষ্ঠীকে রোগ-শোকে জর্জরিত পশ্চিম আফ্রিকায় নজর দিতে আকুল আহোবান জানাতে গেল সেমিনারে অ্যামেরিকায় গিয়ে মিঃ জামশেদের প্রজেক্টরই টাকা বাঁচিয়ে আনা এক্সক্লুসিভ ডায়মন্ড নেকলেসটাও সেই ঠায় লটকে থাকা বিসৃত হাসিতে প্রাণ যোগাতে পারেনি, কোনোভাবেই। কে জানে কলোনিয়ালিজমের ছাপ রাখা এ আরেক কালচারই হবে কিনা, যেখানে হাসিও কারো ভেতরের হাহাকার, দৈন্যতা-কে ফুটিয়ে তুলতে পারে আরো স্পষ্ট! যেন অন্তত চপেটাঘাত হয়ে তা সেঁটে যায় কারো কারো নিয়তিতে, তারপর মুছে ফেলা অসম্ভব। সভ্যতার বাসে, ট্রেনে, এয়ারপোর্টে, মলে, পাঁচতারা হোটেল বা ব্যস্ত পথে হাজারো মানুষের ভিড়ে এরকম কৃত্রিম-চওড়া-সুখহীন হাসিগুলোকে আমরা ঘুরে বেড়াতে দেখি হরহামেশায়।
পুরো সময়টাতে একবারো হোস্টের নাম আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়নি। যদিও আহসান জুনিয়র প্রোজেক্ট অফিসার হিশেবে নিজ দায়িত্বে সবার সাথে পরিচিত হয়েছিল। পার্টি শেষে মাঝরাতের খানিক পর স্টিভ ও জামশেদের সাথে পাল্লা দিয়ে মাতাল হওয়ার আগ পর্যন্ত তার ভেতরে মিতার শব্দহীন মুখটা অতল্যান্তিকের ঢেউএর সাথে আছড়ে পড়ছিল। বারবার।
যে কিনা পার্টি ছেড়ে চলে গিয়েছিল বহু আগেই। কাউকে কিছু না বলে, শুধু আহসানকে শব্দহীন ছোট্ট একটা ভতসনা দিয়ে। এতো হট্টগোলের মাঝে তার খোঁজ অবশ্য আর কেউ করেনি। ভিনদেশে এসে অবিরাম এতসব আয়োজন আর অচেনা মানুষের ভিড়ে বাস্তবেই সে হারিয়ে গিয়েছে। আজ শুক্রবার রাত, ভরা পুর্ণিমা। এদেশে এই দিনটিকে বিশেষ অশুভ মানা হয়। প্রেত্নাতারা চাঁদের শক্তিতে খাঁচা ভেঙ্গে বেড়িয়ে শিকারের আশায় পুরো আকাশ জুড়ে উন্মাদনা করে বেড়ায়, রাতভর। ভাইবোনেরা ওকে সবসময় ভিতুর ডিম ডাকত। অনেকদিন পর্যন্ত তিন ভাইবোন যখন এক খাটে ঘুমাত, তখন রাতে হঠাত ঘুম ভেঙ্গে গেলে ভয়ে কারো না কারো গায়ে গা লাগিয়ে থাকা ছিল তার অভ্যাস। ছোটটি ছিল বলে কেউ বকত না। বরং বড় দুজন অসীম মমতায় তাকে বুকে আগলে নিত সবসময়।
আজ মিতা জ্যোৎস্না দেখবে। ঐ বড় খাঁখাঁ মাঠটায় প্রকাণ্ড বাউবাব দানবটার সাথে সারারাত, একা।
(সমাপ্ত)
বিঃ দ্রঃ- গল্পটা লেখার পর কি নাম রাখা যায় ভাবছিলাম। আহমেদ ছফার ‘গাভী বিত্তান্ত’ মনে পড়ে গেল। ‘পার্টি বিত্তান্ত’ নামটা সেখান থেকেই ধার নিলাম। সাথে ‘সবিশেষ’ জুড়ে দিলাম।
মন্তব্য
ঘুমুতে যাচ্ছিলাম, নূতন পর্ব দেখে দুটোই একসঙ্গে পড়তে শুরু করেছিলাম।
নাহ, আটকে যেতে হলো বারবার।
কারণ,
ক) প্রচুর ইংরেজি শব্দ। কথোপকথনের বেলায় গল্পের পটভূমি অনুযায়ী ঠিক আছে। কিন্তু অন্যান্য অংশে এনভায়রনমেন্ট বা রিজিয়ন না বলে পরিবেশ, অঞ্চল.. এরকম লিখলে চলতো না?
খ) ম্যালা টাইপো এবং বানানপ্রমাদ। এক নয়, একাধিক। যেগুলো চোখে পড়ল, দিলাম নিচে---
পর্ব (১)
বাঙ্গালীটা > বাঙালিটা, আগবাড়ায়ে > আগ বাড়িয়ে, ইউ সুড > শুড, পরদারিমূলক > সরদারি/ সর্দারিমূলক, ছ্যাঁদো > ছেঁদো, ম এবসোলুটলি > অ্যাবসলিউটলি, কি কি > কী কী, সি > শি গট, সংঙ্কৃতির > সংস্কৃতির, ফরফরানি > ফড়ফড়ানি, কেট > ক্যাট, এ্যারেঞ্জ > অ্যারেন্জ, এপ্রিশিয়েট > অ্যাপ্রিশিয়েট, ইন্টারন্যাশ্ন্যাল > ইন্টারন্যাশনাল, হঠাত> হঠাৎ, এটমোস্ফেয়ারে >অ্যাটমোস্ফেয়ারে, প্রাসংগিকভাবেই> প্রাসঙ্গিকভাবেই, অরগানাইজেশন > অর্গানাইজেশন, সিঙওয়ালা > শিংওয়ালা।
পর্ব (২)
বন্দবস্তো > বন্দোবস্ত, মেথমেটিকস > ম্যাথমেটিক্স, সৈলতের > সলতের, জ্বজুল্যমান > জ্বাজ্জল্যমান, ছোয়ায় > ছোঁয়ায়, স্বআগ্রহে > সাগ্রহে, আপদোমস্তক > আপাদমস্তক, তারমত > তার মতো, দাড়াতে > দাঁড়াতে, হাচরে পাঁচরে > হাঁচড়ে পাচড়ে, ভরকেই > ভড়কেই, ন্যাঁদ্যাকালে >ন্যাদাকালে, হরহর > হড়হড়, এক সিমি > সেমি, ম্যালারিয়া প্রজেক্টরই > প্রজেক্টেরই, চপোঘাত > চপেটাঘাত, হরহামেশায় > হরহামেশাই, আতলান্টিকের ঠেউ > আটলান্টিকের ঢেউ, ভতসনা > ভৎসনা, আহোবান > আহবান, ভেঙ্গে > ভেঙে, পুর্নিমা > পূর্ণিমা।
অভব্যতার জন্য দুঃখিত। আমারো দু-একটা ভুল হতে পারে অবশ্য।
পরের পোস্টের প্রিভিউতে আরেকটু খেয়াল রেখো আর কী।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তীথি, কষ্ট করে পড়ে এতোগুলা টাইপো বের করেছ বলে ধন্যবাদ। ভুলগুলোর জন্য পড়তে কষ্ট হওয়ায় আসলেই দুঃখিত। যদিও প্রতিটাই যে না জেনে বিভ্রাট এমন না। কিছু কিছু ইচ্ছাকৃত। ব্যাখ্যা করছি -
ক) ইংরেজি শব্দের বেশি মাত্রায় ব্যবহারে দুঃখিত। যেমনটা তুমি বল্লা গল্পের পটভূমি বিচারে এটা ঠিক আছে। আমার কাছেও তাই মনে হয়েছে, কথোপকথনে পটভূমির আবহ ধরে রাখতে এটার প্রয়োজনীয়তা ছিল। রিজিওন, এটমোস্ফেয়ার সেই পটভূমির খাতিরেই এসেছে।
খ) বাবান প্রমাদ নিয়ে বলি,
পর্ব (১)
বাঙ্গালী - (ভুল জানা ছিল না)
আগবাড়ায়ে - (ইচ্ছাকৃত। স্পেস দেয়া যেত)
পরদারিমূলক - (ইচ্ছাকৃত)
ছ্যাঁদো - (ডায়ালগে টেনে বলা। ভুল জানা ছিল না)
হঠাত, ভতসনা - ( অভ্রে খণ্ডক ত আসে না)
শিঙওয়ালা - ং ঙ নিয়ে আমারো প্রশ্ন আছে, রংতুলি ং ছোট বেলা থেকে পড়ে ও জেনে আসছি, আজাকাল রং এ ব্যাঙের ঙ লাগিয়ে দেয়া হয় কেন? মনে হয় ঙ আর ং নিয়ে আমাদের ব্যাতিক না থাকাই ভাল।
কেট, এ্যারেঞ্জ, এপ্রিশিয়েট, প্রাসংগিকভাবেই, অরগানাইজেশন ইত্যাদি - দেখেই বোঝা যায় হড়বড় করে টাইপিঙের ফল।
পর্ব (২)
মেথমেটিক, সৈলতে, জ্বজ্জুল্যমান, স্বআগ্রহে, চপোঘাত, হরহামেশায়, অতলান্তিক, ভেঙ্গে - ইচ্ছাকৃত
বাকিগুলা - হড়বড় টাইপিঙের ফল।
আহমেদ ছফা বৃত্তান্ত কে বিত্তান্ত লিখেছিল বলে কি এইবেলা বেঁচে গেলাম?
ছোট্ট একটা বাচ্চা সামলায় লিখা লাগে বাবা, উদারতা কাম্য।
যাক, চটে যাওনি আশা করি করি।
বানান প্রমাদ নিয়ে অনিচ্ছা নিয়েও আরেকটু বলি:
ং এবং ঙ নিয়ে আমার ব্যাতিক >বাতিক নেই। দুটোই লিখি। তবে She কে শি না লিখে সি লিখলে অর্থ বদলে যায়।
শেষমেশ তীথি?
আমার বলার কিছু ছিল না, নেই....
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
শি-কে ইচ্ছাকৃত সি বানাই নি, একখানে সি আরেকখানে শি হয়ে আছে দেখছি! নিড আ প্রুফ রিডার, গল্প লিখে তোমার কাছে পাঠায় দিমু... ভুল সবি ভুল...
তিথী (ঠিক লিখলাম মনে হয়!)
বিভ্রান্তিগুলো মাথা থেকে দূর করতে পারছিলাম না। তাই হয়ত এখানে প্রকাশ হয়ে গেল। উপরের কমেন্ট এডিট করলাম অজানা কারণে তাও আসলো না।
আমার সব লিখাই হাজার খতিয়ে দেখে পোস্ট করা হলেও গাদা গাদা ভুল বের হয়। কেউ যদি ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়, আমি বরং কৃতজ্ঞই হই। আমি যা বলতে চেয়েছি তা হয়ত পরিষ্কার হয়নি। আমার নিজের বিভ্রান্তিও দূর হয়নি। লেখা-লিখি, ব্লগিং এসবের অভিজ্ঞতা তোমার আমার চেয়ে বেশি, তাই তোমার কাছ থেকেই কনফিউশনগুলো দূর করি। অন্যকেউ যদি এসে উত্তরগুলো দিয়ে যায় তাও কৃতার্থ হব।
১) একাধিক বানান প্রমাদ, যেগুলোতে চোখ আটকে গেছে বলে শব্দগুলো তুলে দেয়া হয়েছিল তার মধ্য বেশিরভাগই যেমন - বাঙ্গালী, প্রাসংগিক, ভেঙ্গে, কি কি... আরো বেশ কিছু। এগুলো-কে কি আদৌ ভুল বলা যাবে? ব্যাকারণ ঝাড়ছি না, আমি যতদূর জানি - ভঙ্গ = ভাঙ্গা>ভেঙ্গে>ভেঙে। শব্দগুলো এভাবে বিবর্তিত হয়। এখন আমরা ভেঙে দেখে অভ্যস্ত বলে আদিরূপ ভেঙ্গে-কে প্রমাদ গুণে ফেলাটা কি ঠিক হবে?
২) আমি যেভাবে চিন্তা করি, কথা বলি তার কিছুটা ছোঁয়া যদি লেখায় না থাকে, তাহলে কি সেটা ন্যাচারাল থাকে অতি মাত্রায় কৃত্রিম/বানানো হয়ে যায় না? জ্বজ্জুল্যমান, আগবাড়ায়ে, পরদারিমূলক এগুলো বুঝতে কি খুব বেশি কষ্ট হওয়ার কথা? মানে শব্দের অর্থ তো বোঝা যায়।
৩) নিচের মন্তব্যে পাঠকের প্রত্যাশার কথা বললা। আর লেখকেরটা? দেখ এই লটে তুমি কতগুলা কমেন্ট করে ফেলছ। তোমার প্রথম কমেন্ট দেখে তো আমি মাঝরাতে খুশিতে নাচতে নাচতে লগিন হইছিলাম। কিন্তু আফসোস সেই বানান প্রমাদ ছাড়া তুমি আর কিছুই দেখো নি বলার মতো! আমরা প্রুফ রিডার বা মাস্টারের মানসিকতা নিয়ে যদি গল্প/লেখা পড়ি তো হয়ত আসল জিনিসই মিস করবো। শুধুই ধুলো ঝেড়ে সময় নষ্ট করলে, গল্পের রং ঢং চেহারা কিছুই দেখলে না! অভিমান!
৪) মূল লেখা ছেড়ে মন্তব্য প্রতিমন্তব্য থেকেও প্রমাদ বের করাটা কি একটু বেশি হয়ে গেল না? সচলে বানান নিয়ে এত রুঢ় নীতি তো আগে দেখি নি। আমি নিশ্চিত এই ব্যাতিক্রমটা কেবল এখানে আমার বেলাতেই হলো।
এবার রুড-ই হই।
হ্যাঁ, এবার তিথী ঠিকমতোই লিখেছো। তিথি লিখলেও ভুল হতো না, ওটাই আভিধানিকভাবে শুদ্ধ। তীথি ভুল। আমার নিকটা আমার মতো করে লিখো, প্লিজ!
১) ব্যাকরণ ঝাড়িনি। যে জিনিসগুলো চোখে পড়েছে, সেগুলো মন্তব্য আকারে লিখেছিলাম। তোমার সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় আছে বলে ওভারলুক করে যেতে পারতাম বা মেসেজে জানাতে পারতাম। সেটা ধরনে কোমল হতো, তোমাকেও উত্তর দিতে গিয়ে কঠোর হতে হতো না। সরি।
২) জ্বজ্জুল্যমান বানানটা ভুল, পরদারিমূলক বলে কোন শব্দ শুনিনি কখনো। লেখক এভাবেই বলেন বলে ধরে নিতে হবে। বুঝলাম।
৩) লেখা-লিখি, ব্লগিং এসবের অভিজ্ঞতা আমার তোমার চেয়ে বেশি-- হতে পারে।
সচলে বানান নিয়ে বহুকিছুই হয়েছে। এবং আমি নিশ্চিত এই ব্যতিক্রমটা কেবল এখানে তোমার বেলাতেই হলো না। আগেও হয়েছে, আমার মতো ফাউল চিড়িয়া থাকলে হয়তো ভবিষ্যতেও হবে। মন্তব্যে বানানভুল খুঁজে বের করা, কে কতো টাইপো খুঁজে বের করতে পারে সেটা নিয়ে পয়েন্ট জমানো প্রতিযোগিতা হয়েছে, শ ছাড়ানো মন্তব্যের ঘরে একজন অন্যজনকে আচ্ছাসে পচানো হয়েছে। বাদ যায়নি একটি শিশুও।
তোমার পুরোনো লেখাগুলো ঘেঁটে দেখলাম আগেও এরকম খ্যাঁকখ্যাঁক করেছি কিনা। চোখে পড়লো না সেরকম কিছু।
ধুলো ঝেড়ে সময় নষ্ট করা ঠিক হয়নি বোধহয় আসলেই। আমাকেও নানাকিছু সামলায়েই ব্লগিং করতে হয়। বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে চমৎকার লেগেছে এ পর্বটা বললেই তো ল্যাঠা চুকে যেতো।
৪) অভিমান করো না আফা। ঝট করে আরেকটা গল্প লিখে ফেলো দিকিনি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সংশধোনের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা কোন ভুল বোঝা যায়, কিন্তু এসব নিয়ে পয়েন্ট জমানো, প্রতিযোগিতার মানসিকতা অসুস্থ মনে হলো। শুধুমাত্র বানান নিয়ে শ' ছড়ানো মন্তব্যে একে অন্যকে পচানো(!) আসলেই মাথার উপর দিয়ে গেল। লেখা-লেখি তো মনের পথ্য। নিজে লিখি স্ট্রেস/ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকতে... লেখার বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে কেবল বানানের কারণে কারো অসুস্থ রোষের শিকার হতে চাই না। ব্লগিং আসলে আমার জন্য না। হ্যাপি ব্লগিং!
মাধ্যম টা মূদ্রণ না হয়ে অনলাইন হওয়াতেই কি এই অবহেলা? অতিরিক্ত ভুল বানানে সমৃদ্ধ একটা ছাপানো বই অথবা ব্লগ দুটোই পড়তে আমার খুবই বিরক্ত লাগে।
বাংলা তো আপনার নিজের ভাষা তাই না? কেউ যদি ধৈর্য্য ধরে আপনাকে সেটা আরো ভালভাবে শিখার সুযোগ করে দেয় তাতে অভিমান হবে কেন?
কাকাবাবু বা ফেলুদা পড়েছেন? ওখানে একটা মজার খেলার কথা বলা আছে, কে কতটা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করল কথার মধ্যে সেটার উপর মাইনাস পয়েন্ট। মূল উদ্দেশ্য যথাসম্ভব বিদেশি শব্দের অনাবশ্যক ব্যবহার কমানো। এখানে বানান শুদ্ধ করার উদ্যোগ টাকেও তাই আমার আড়ম্বর মনে হয় না।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
বানান শুদ্ধ করার উদ্যোগকে আড়ম্বর নয়, আসলে ভুলের লিস্টি দেখে ধাক্কা খেয়েছিলাম আর কি। বিশেষ করে - বাঙ্গালী, ভেঙ্গে, প্রাসংগিক, কি কি, স্ব-আগ্রহে, দাড়াতে, অরগানাইজেশন... এ টাইপ শব্দগুলো দেখে। তাই প্রতিক্রিয়া কেমন হওয়া উচিৎ হয়ত বুঝে উঠতে পারিনি!
আমি কখনোই ভাবি নাই এখানে লিখতে এসে আমি কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ফেলেছি। তবে প্রায়ই যে জিনিসটা আমার মনে হতো তা হলো - একটা খোলা জানালা’র টানে আমি বারবার ঘুরেফিরে এক বাড়িতে ঢুকে পড়ি, বাড়ির সবাইকে আমি যতই আপন ভাবি না কেন আমাকে কখনোই আগন্তুকের বাইরে কিছু বলে মনে করা হয় না। নানাভাবে বোঝানো হয় - আমার জামা ছেঁড়া, জুতো ময়লা, আমি বেমানান।
হ্যাঁ, বাংলা আমারই ভাষা। যখন ভাষা, শব্দ, বানান, যতিচিহ্ন/বিরামচিহ্নের যথেচ্ছা ব্যবহার এখানেই রোজ দেখি, তখন শিখতে হবে ‘বাঙ্গালী’ ভুল ‘বাঙালি’ ঠিক, ‘ভেঙ্গে’ ভুল ‘ভেঙে’ ঠিক – দুঃখিত, মানতে পারলাম না!
বানান ভুল করলে কেউ না কেউ এক সময় না এক সময় শুধরে দেবেই। হয়তো এমনভাবে দেবে যে আপনি উল্টো কিছু বলতেও পারবে না, মর্মান্তিক বিড়ম্বনার মধ্যে পড়বেন। আমরা সবাই কম-বেশি বানান ভুল করি, এতো মুষড়ে পড়ার কিছু নেই তো।
বানান ভুল শুধরে দেওয়া প্রয়োজন, কারণ এগুলো সংক্রামক। আপনাকে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। আপনি প্রায়ই দেখবেন, অনেকে "পরিস্থিতির স্বীকার" কথাটা লেখে, যেটার কোনো অর্থ আসলে হয় না। কথাটা হবে "পরিস্থিতির শিকার"। গুগলে "পরিস্থিতির স্বীকার" লিখে সার্চ করলে ৮,০৪০টা এন্ট্রির সন্ধান আসে। আমরা যদি কেউ কাউকে বানান ভুল শুধরে না দিই, এবং বানান ভুল করাকে স্বাভাবিক ও চর্চাযোগ্য কাজ বলে ধরে নিই, তাহলে এমনও সময় আসতে পারে, যখন "পরিস্থিতির শিকার" লিখলে একটা বাজে পরিস্থিতির শিকার হয়ে যেতে হতে পারে।
জানালা খোলা থাকলে সেই খোলা জানালা দিয়ে বানান ভুলের সংশোধনও আসবে। টেক ইট ইজি। আরো লিখুন।
ধন্যবাদ হিমু। মনে রাখবো, চেষ্টা করবো।
প্রথম পর্ব আগ্রহ জাগিয়েছিল, দ্বিতীয় পর্বের শুরুটাও সে আগ্রহ টিকে ছিল, তবে মাঝামাঝি গতানুগতিক লাগা শুরু করেছিল, কিন্তু শেষ অংশটা সবকিছু ছাপিয়ে উঠেছে। শেষের দিকটা চমৎকার হয়েছে, মাথার পাগড়ী খুলে সালাম করে গেলাম
প্রত্যাশা শেষমেশ পূরণ হইছে জেনে শান্তি শান্তি লাগতেছে!
বানানগুলো শুধরে নিলেই হল, আমরা সবাই ভুল করি, ভুল থেকেই শিখি। ভাললাগল গল্পের বিষয়বস্তু। লিখতে থাকুন।
aliahasan
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভুল বানানগুলো নাহয় ঠিক করে নিলাম, এখন 'ভেঙ্গে' 'কি কি' সবই যদি ভুল হয়ে থাকে তো খাতা কলম গুটায়ে বসে থাকাই উত্তম।
ভুলগুলো যেহেতু আমি দাগিয়েছি, গায়ে লাগল কথাটা।
ভুল সবারই হয়। আমি নিজেও প্রচুর বানান ভুল করি। কেউ ধরিয়ে দিলে ঠিক করে নিই।
যদি আমার জানা থাকে, অতিথি লেখক/ হাচল হিসেবে এডিটের সুযোগ নেই। হড়বড় টাইপিং পাঠকের পাতে তুলে দেবার আগে তাহলে করণীয় কি?
স্পেলচেকার ব্যবহার করা বা কাউকে খসড়া দেখানো। সে সুযোগ না থাকলে নিজে একাধিকবার পড়ে তারপর পোস্ট মডারেশনের জন্য জমা দেওয়া।
পাঠক হিসেবে আমি লেখকের কাছ থেকে এতটুকু যত্ন পাওয়ার আশা রাখতেই পারি।
ছোট্ট একটা বাচ্চা সামলায় লেখা লাগে জেনেও এরকম অনুদার আচরণের জন্য আসলেই দুঃখিত।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
গল্প ভাল লেগেছে। আরো ভাল লেগেছে বানান ভুলের লিস্ট । সচলে তাইলে আমার মত পাবলিক আরো আছে।
এহহে, ভুল করে 'সংরক্ষণ' বোতামে চাপ পড়ে গেছে। যাহোক আমার আগের মন্তব্যে যা বলছিলামঃ গল্প ভাল লেগেছে। আরো ভাল লেগেছে ভুল বানানের লিস্ট । সচলে তাহলে আমার মত পাবলিক আরো আছে!
সোহেল লেহস
হুম আছে, ভয় পাবার কিছু নাই!
অনুপুঙ্খ বিবরণ ভালো ধরা হয়েছে। কিন্তু এই শেষ পর্ব পড়ে লেখাটিকে যতটা গল্প লেগেছে তার থেকেও বেশী তথ্যমূলক বিবরণ লেগেছে। তাতে গল্প হিসেবে প্রত্যাশাপূরণে খানিকটা অসুবিধা ঘটিয়েছে। শেষ অংশটা ভাল লেগেছে। যে মসৃণতায় সেখানে পৌঁছান হবে বলে মনে হয়েছিল, সেটা অনুপস্থিত রয়ে যাওয়ার অনুভূতিটা না এলে আরো ভাল লাগত।
বানান নিয়ে আমিও খুঁতখুঁত করি। তবে ইতিমধ্যই যা কথোপকথন হয়ে রয়েছে তার পরে এ নিয়ে আর, আমার অন্ততঃ, কিছু যোগ করার কোন দরকার দেখছি না।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
কেউ গল্প এতো যত্ন নিয়ে পড়ে মতামত জানালে ভাল লাগে। আপনার মন্তব্য পড়ে মূল লেখায় আরেকবার চোখ বুলিয়ে এলাম, এ পর্বটা আসলেই বেশি তথ্যমূলক হয়ে গেছে। পরবর্তিতে গল্প লেখার ব্যাপারে আরেকটু মনযোগী হবো।
চমৎকার পর্যালোচনামূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমার যদি আপনার সাথে ব্যক্তিগত পরিচয় থাকত তবে অবশ্যই আমি আপনার প্রুফ রিডারের কাজটা নিতাম
যাই হোক নো চিন্তা ডু ফুর্তি। আপাতত আমার কবিতার এই চারটা লাইন আপনাকে উৎসর্গ করলাম হয়ত আপনার মন ভালো হলেও হতে পারে
আমি সারাটা জীবন
ফিরেছি তোমার খোঁজে
তোমায় হৃদয় কোনে ফেলে
আমি ছিলাম আঁখি বুজে
ফাহিমা দিলশাদ
সুন্দর কবিতা। ধন্যবাদ ফাহিমা দিলশাদ!
ভালো থাকবেন।
শুভকামনা।
-------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
দুটাই পড়লাম, গল্পের যে মোরাল তা বলার জন্য এত কষ্ট না করলেও চলে। খুবই টেনে টেনে পড়তে হয়েছে। শুরু দেখে যতটা টেনেছিল শেষে ততটা থাকেনি। নিশাচর জীব।
ভবিষ্যতে গল্প লেখার ব্যাপারে আরেকটু যত্নবান হবো। টেনে টেনে হলেও যে দু'টোই পড়েছেন সে জন্য ধন্যবাদ।
প্রথম পর্ব ভাল লেগেছে। ২য়টা লাগল না।
বানানের কথা উপরে আলোচনা হয়েছে, সেদিকে গেলাম না।
পাঠকের মন্ত্যব্যে আপনার প্রতিক্রিয়া দেখে অবাক হচ্ছি। পাঠকের মন্ত্যব্য সহজভাবে নিতে না পারলে পাবলিক প্ল্যাটফর্মে না লেখাই উচিত।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
প্রতিক্রিয়ার জন্য দুঃখিত, কারণটা উপরে ব্যাখ্যা করেছি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
বানান নিয়ে উপরে মন্তব্য করেছি। এবার গল্পের কথায় আসি। প্রথম পর্ব চমৎকার লেগেছিল, ২য় পর্ব ভাল লাগেনি। পুরো গল্পে মিতার সাথে পাঠকের পরিচয় হয়নি। তাই শেষ প্যারায় মিতার দীর্ঘশ্বাস কেন জানি দাগ কাটল না। যাই হোক পুরোপুরিই আমার অনুভূতি এটা।
আর প্রথম পর্বের আহসানের যে চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখলাম, খুব অল্প সময়ে সেটা ম্রিয়মান হওয়া দেখে মনে হল আসলে ওটা আহসানের ধাতেই ছিলনা। তাই তর্ক করাটা হয়তো শুধুই তর্কের জন্য ছিল। আহসান আসলেই বেদ্দপ
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
মিতার দীর্ঘশ্বাস দাগ না কাটলে পুরোটাই বরবাদ। যাক, ভুল আমারই, বুনন ঠিকমত হয়নি। আহসান বোধহয় বোনলেস, বেদ্দপ তো বটেই!
নতুন মন্তব্য করুন