তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে রোজ না চাইলেও গুরুত্বপূর্ণ-অগুরুত্বপূর্ণ, প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়, নিত্যনতুন-বস্তাপচা তথ্য চোখের সামনে এসে হাজির হয়। তথ্য কখনো গল্প, গল্প কখনো রূপকথায় বিবর্তিত হয়, তাও চোখের সামনেই। ইবোলা নিয়ে এরকমই অদ্ভুত সব তথ্য, গল্প, রূপকথা শুনে শুনে, দেখে দেখে আমি হয়রান থেকে হয়রানতর। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই বিশেষত মিথ/ফিকশন ছড়াতে মানুষের কল্পনাশক্তির চমকে বরাবরের মত আমি অভিভূত! কাল যদি শুনি ইবোলা নামের এ ভাইরাসগুলো’র পিঠে চিলের ডানা, পায়ে রকেটবুস্টার গজিয়েছে, এবং এরা ছোঁ মেরে মেরে চোখের নিমেষে একের পর এক শিকার ধরছে আর ঘাড় মটকাচ্ছে তাতেও অবাক হবো না। হ্যাঁ, স্বীকার করছি সচেতনতা প্রয়োজন তবে তা সঠিক উপায়ে, আতংক বা বিভ্রান্তি দিয়ে নয়। কে জানে, হয়ত বা আমাদেরই জিনগত আদি প্রবৃত্তির কারণে আমরা সঠিক তথ্য ও সচেতনতার চেয়ে আতংক আর বিভ্রান্তিতেই আগ্রহী হই বেশি, তাই এসব ছড়ায়ও বন্য আগুনের চেয়ে দ্রুতগতিতে।
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশেগুলোর একটি। এই বাংলাদেশে যদি ইবোলা ঢুকে, তার পরিণামও হতে পারে ভয়াবহ - দ্বিমত নেই। সে পর্যন্ত ঠিক আছে, কিন্তু সমস্যা হলো এইটা নিয়ে যখন লোকজনকে হাইপার-টেন্সড হয়ে ব্লাড-প্রেশার হাই করতে দেখি! মূলত আমেরিকায় ইবোলা প্রবেশের ঘটনা এ আগুনে ঘিয়ের কাজ করেছে বলে মনে হয়। একে তো সেই ঘটনায় আমেরিকানদের প্রতিক্রিয়া দেখে হতবাক, তারুপর বাঙ্গালীদের 'ফিয়ারবোলা' সিনড্রোম দেখে নিজের রাতের ঘুম হারাম করে এই ফিকশন এন্ড ফ্যাক্ট বুস্টার লিখতে বসলাম।
ফিকশন এন্ড ফ্যাক্ট বুস্টারঃ
ফিকশনঃ অমুক গ্রামে তমুকের ইবোলায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। (নতুন কিছু না, প্রতিদিনের বস্তাপচা শেয়ার – বাংলাদেশ, ভারত, কাজাখস্তান, এখানে-সেখানে, টয়লেটে-বদনায় সবাখানেই ইবোলা... বলাবাহুল্য এসব নিউজের সাধারণত কোনো আপডেট থাকে না!)
ফ্যাক্টঃ ইবোলা লাইবেরিয়ান ডায়মন্ড না যে চাইলেই একে চুরি করে যদ্দিন ইচ্ছা সিন্দুকে লুকিয়ে রাখা যাবে। এটা এমন এক ভাইরাসের নাম যার প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের কারণে মানুষ চাইলেও একে লুকিয়ে রাখতে পারবে না। বরং সঠিক সাবধানতা (protocol) অবলম্বন না করলে এটা মানুষ থেকে মানুষে, গ্রাম থেকে গ্রামে নিজেই ছড়িয়ে পড়বে। কোন ব্যক্তিকে ইবোলায় সংক্রমণ হতে হলে তাকে অবশ্যই পূর্বআক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসতে হবে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে সে ব্যক্তির নামধামসহ স্ট্যাটাস, বাকগ্রাউন্ড পুঙ্খানুপুঙ্খ উল্লেখ প্রয়োজন।
ফিকশনঃ ২ থেকে ২১ দিনের ভেতর ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তির ভেতর কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না অথচ তার থেকে জনে জনে সংক্রমণ ছড়াতে থাকে।
ফ্যাক্টঃ শরীরে ইবোলা ভাইরাস প্রবেশের ২ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এর লক্ষণ অবশ্যই প্রকাশ পাবে। শারীরিক তাপমাত্রা ১০১.৫ ডিগ্রীর বেশি হলে সাথে অন্য লক্ষণ যেমন – শরীর ব্যথা, ডাইরিয়া, বমি ইত্যাদি দেখা দিলেই কেবল আক্রান্ত ব্যক্তি সংক্রামক হয়ে পড়ে, তার আগে নয়। সূত্র
ফিকশনঃ বাসভর্তি বা প্লেনভর্তি মানুষের ভেতর ভুলকরে একজন ইবোলা আক্রান্ত মানুষ ঢুকে পড়লে পুরো বাস বা প্লেনই (ভ্যানিশ!) ইবোলা’র কবলে পড়বে!
ফ্যাক্টঃ ইবোলা ভাইরাস এক শরীর থেকে অন্য শরীরে যায় শরীর নির্গত তরলের (bodily fluids) মাধ্যমে, যেমন – রক্ত, বমি, মল-মূত্র, ঘাম অথবা লালা এসবের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে (direct touch), এবং সেই কেবলমাত্র আক্রান্ত ব্যক্তির ভেতর সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ ও শারীরিক তাপমাত্রা ১০১.৫ এর বেশি হলে তবেই।
ইবোলা যদি গায়েবী ঘাতক হতো তাহলে থোমাস ডানকান ১যে প্লেনে করে আমেরিকা গিয়েছিল সেই প্লেনের সবার, নয়তো অন্তত দু’য়েক জনের ইবোলা সংক্রমণ দেখা যেত। অথচ তা না হয়ে সংক্রমণ ঘটলো কেবল সেই দুই নার্সের যারা গুরুতর অবস্থায় (হয়ত সঠিক প্রটোকল না মেনে) তার সংস্পর্শে এসেছিল। এখন পর্যন্ত যে ক’টা ইবোলা 'ইমপোর্টেড কেস' বিপর্যয় ঘটেছে, তাদের কারো সাথে একই প্লেনে ভ্রমন করায় অন্য যাত্রীরা সংক্রমিত হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায় নি।
ফিকশনঃ ইবোলা নীরব ঘাতক, ইহা বাতাসে ছড়ায়।
ফ্যাক্টঃ ইবোলা’র ডানা নেই, ইহা বাতাসে ছড়ায় না। ডাইরেক্ট কন্টাক্ট ছাড়া এ সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। হাঁচি-কাশিতে ভেতরের জলীয় পদার্থ (saliva) বেরুতে পারে অতএব বায়োলজক্যালী এভাবে সংক্রমণ সম্ভব। কিন্তু তাও নির্ভর করে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা এবং তার শরীরে ভাইরাসের মাত্রার উপর। শরীরের অনাবৃত অংশ দিয়ে এ ভাইরাস মূলত ভেতরে প্রবেশ করে, যেমন – মুখ, কান, চোখ। অতএব কেউ সেই পর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কারো মুখের উপর এসে হেঁচে না গেলে তার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।এ ভাইরাস শরীরে প্রবেশ পর নিজের ক্লোন তৈরি করে এবং তারপর সংক্রমণ ছড়ায়। ততক্ষনে অন্য মানুষের কাছে রোগী শনাক্ত করার যথেষ্ট সুযোগ থাকে।
মূলত রোগীর অবস্থা, শরীরে ভাইরাসের পরিমাণের উপর নির্ভর করে রোগী কতটা সংক্রামক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীর রক্ত, ক্ষত, ঘা, বমি অথবা অন্যান্য জলীয় পদার্থের সরাসরি সংস্পর্শে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। যে কারণে পরিবারের সদস্য, শুশ্রুষারত আত্নীয় বা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এ সংক্রমণ বেশি ছড়ায়। সিভিয়ার/গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় অথবা মৃত শরীর থেকে এই ভাইরাস ব্যাপক মাত্রায় ছড়ায়, তাই ঝুঁকিটাও তখন বেশি।
ফিকশনঃ ইবোলা এক দেশ থেকে আরেক দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং সবখানে মহামারী আকার ধারণ করছে।
ফ্যাক্টঃ ২০১৪’র ইবোলা মার্চ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত মহামারী রূপে বিরাজমান কেবল গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওন - পশ্চিম আফ্রিকার এই তিনটি দেশে। এর মধ্য এক লাইবেরিয়াতেই অর্ধেকের বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটেছে। এই তিনটি দেশের বাইরে আর কোথাও ইবোলা সেই মাত্রায় মহামারী আকারে ছড়ায়নি। বরং এই পশ্চিম আফ্রিকারই কিছু কিছু দেশ খুব সফলতার সাথে এর সংক্রমণ রুখে দিয়েছে, যা নিয়ে খুব একটা হৈ চৈ হতে দেখা যায় না।
এখন পর্যন্ত আফ্রিকার বাইরে এই ভাইরাসের ব্যাপ্তি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ দু’জন এবং দু’জনের অবস্থাই স্থিতিশীল। স্পেনে মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ একজন এবং অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। উল্লেখ্য এরা প্রত্যেকে স্বাস্থ্যকর্মী, রোগীর প্রত্যক্ষ সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে আমেরিকা আর প্সেনের উদাহরণ দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা বিবেচনা করা কতটা যুক্তিযুক্ত? মোটেও যুক্তিযুক্ত না, আমরা বরং আফ্রিকা থেকেই উদাহরণ নিতে পারি –
সেনেগালের রাজধানী ডাকার, ঢাকার মত না হলেও আরো একটি জনসংখ্যাবহুল উন্নয়নশীল দেশের রাজধানী। এখানে ইবোলার প্রথম কনফার্ম ‘ইম্পোর্টেড কেস’ ঢুকে ২০ অগাস্ট। তাও বাই রোড গিনি সীমানা পেরিয়ে। তারপরেও যথাযথ আইসোলেশন ও চিকিৎসায় রোগীর অবস্থা আশংকামুক্ত ও সংক্রমণ রোধ সম্ভব হয়। সেই প্রথম ও একমাত্র কেস থেকে আর কোনো সংক্রমণ ছড়ায়নি। অবশেষে ডাব্লিউ এইচ ও’র ৪২ দিন পর্যবেক্ষণ শেষে সেনেগাল-কে 'ইবোলা-ফ্রি' ঘোষণা করা হয়েছে।
আসা যাক নাইজেরিয়া প্রসঙ্গে। আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল ও দুর্নীতিপরায়ণ দেশ নাইজেরিয়া। এখানেও ইবোলা ‘ইম্পোর্টেড কেস’, প্যাট্রিক সয়্যার২ নামে এক ব্যক্তি লাইবেরিয়া থেকে ইবোলা সংক্রমণ নিয়ে প্রথম নাইজেরিয়ার লাগোসে প্রবেশ করে। আশংকাজনক অবস্থায় (ম্যালেরিয়া সন্দেহে) তাকে চিকিৎসার জন্য এয়ারপোর্ট থেকে প্রাইভেট ক্লিনিকে নেয়া হয়, এবং সেখানে কয়েক ঘণ্টা কালক্ষেপণ করা হয়, পরিণাম একজন দ্বারা ১৯ জন সংক্রমিত এবং প্যাট্রিকসহ ৮ জনের মৃত্যু। নাইজেরিয়ার বৃহত্তম নগরী লাগোস পরিচিত পৃথিবীর অন্যতম বস্তিপ্রধান নগরী হিসেবেও, যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ বস্তিবাসী। সেই লাগোসের মতো স্থানে আবস্যম্ভাবী অকল্পনীয় বিপর্যয় রোধ করে ইবোলা-কে জয় করা গেছে এবং সর্বশেষ সংক্রমণের ৪২ দিন পর্যবেক্ষণ শেষে নাইজেরিয়া ডাব্লিউ এইচ ও কতৃক ‘ইবোলা ফ্রি’ ঘোষণা করা হয়েছে। নাইজেরিয়ার উদাহরণ হতে পারে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব দেশের অনুকরণীয়।
কেন আতংক নয়
বাংলাদেশ বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার ঘোষিত ইবোলায় হাই রিস্ক জোনে তো নয়ই বরং নূন্যতম রিস্কি দেশগুলোর মধ্যেও পড়ে না। ভৌগলিকভাবেও বাংলাদেশে ইবোলার কোনো ইতিহাস আছে বলে আমার জানা নেই। ইবোলা ভয়ঙ্কর কিন্তু অপ্রতিরোধ্য নয়। লাইবেরিয়া, সিয়েরালিওন অথবা সেনেগাল, নাইজেরিয়া উদাহরণ যেখান থেকেই নেই না কেন, এটা অস্বীকার করা যায় না মানুষের মধ্যে সচেতনতা দিন দিন বাড়ছে, এয়ারপোর্টগুলোতে নেয়া হচ্ছে আগের চেয়ে বহুগুণ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই, ইবোলা ‘ইম্পোর্টেড কেস’ হয়ে বাংলাদেশে ঢুকল, তবে তার প্রতিরোধ হতে হবে দৃঢ়ভাবে, অহেতুক ভয়ের পুঁটুলি খোলা বন্ধ রেখে। পূর্ব-সতর্কতা, সচেতনতা প্রয়োজন, সেই সাথে প্রয়োজন একটু আত্মবিশ্বাস। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৪’র ইবোলা ‘ইম্পোর্টেড কেস’ হিসেবে বিশ্বের নানা দেশে এ পর্যন্ত যত সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটিয়েছে, বাংলাদেশে একদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় বা লঞ্চডুবিতে তার কয়েকগুণ বেশি মানুষ মরে, অতএব আতঙ্কিত হবার মত আরো গুরুতর উপাদান আমাদের দেশেই বিদ্যমান - এর জন্য ইবোলাকে আফ্রিকা থেকে আমদানি করা লাগে না।
বর্তমানে চলমান এই মহামারী’র ভয়াবহতা শুধু ৭১% মৃত্যুহার দিয়ে বিচার করা যায় না। এর প্রকোপে আক্রান্ত দেশগুলোর শিক্ষা, অর্থনৈতিক, অবকাঠামোগত পঙ্গুত্ব নেমে এসেছে, যার প্রভাব পড়ছে পুরো আফ্রিকাতেই। ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছে ইবোলার পরোক্ষ নানা অপূরণীয় প্রভাব। যদি নাইজেরিয়া, সেনেগালের মতো গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওনেও শুরুতেই আতঙ্কের বদলে যথাযথ সচেতনতা ছড়াত তাহলে কে জানে মহামারীর এ মাত্রায় কতটা আকাশ-পাতাল প্রভাব পড়ত। হয়ত ২০১৪ এর ইবোলা ইতিহাসের খাতায় সর্ববৃহতের পরিবর্তে জায়গা পেত ছোটখাটো এক সংক্রমণ হিসেবে! অতএব আতংকেই সর্বনাশ!
কোথায় সচেতনতা
‘গেল গেল’, ‘হায় হায়’, ‘কেয়ামত কেয়ামত’... যে কোন অস্থতিশীল পরিস্থিতিতে এরকম রব প্রায়ই উঠে। এক প্রকার মানুষ থাকে যারা সবকিছুতেই কেয়ামত খুঁজে পায়। তাদের বলব দু’বেলা মরার আগে না মরে, কেয়ামতবাদী না হয়ে যুক্তি ও সচেতনতা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শিখুন। শুধু নিজেকে নিয়ে না ভেবে তাদের কথাও একবার ভাবুন যাদের উপর প্রকৃতই ইবোলা গজব হয়ে নেমে এসেছে। হয়ত বলবেন আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতার বান ভেসে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে বলব এখানেও ‘ফিকশন এন্ড ফ্যাক্ট বুস্টার’ নামে আলাদা চ্যাপ্টার লিখে ফেলা সম্ভব, আপাতত সিএনএন’র - Where's the empathy for Ebola's African victims? রিপোর্টির একটা পয়েন্ট কোট করছি –
The United Nations has asked for $1 billion to fight the spread of the virus. As of Friday, it had collected only $100,000 -- or 0.01%. An additional $20 million has been pledged but not received, according to CNN Money. "We need to turn pledges into action," the U.N.'s Ban Ki-moon told reporters. "We need more doctors, nurses, equipment, treatment centers."
কোথায় মানবতা
সেই শিশুটির কথা ভাবি ইবোলা যার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে মা-বাবা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সাতজন মানুষ, যার চোখে পৃথিবী আজ অন্ধকার-অজানা, ইবোলা তার কপালে লটকে আছে অনন্তকাল হয়ে। এরকম হাজার হাজার শিশুর কথা ভাবি যারা কাল্পনিক নয় বাস্তব ইবোলায় অনাথ, এতিম। রোগীরা গাদাগাদি করে শুয়ে আছে মেঝেতে, পথে-ঘাটে মানুষ মরছে কুকুর-বেড়ালের মত। শিশুর সামনে মা যন্ত্রণায় কাতরিয়ে মরছে। তাদের বিশুদ্ধ পানি প্রয়োজন, স্বাস্থ্যকর আবাস প্রয়োজন, চিকিৎসা প্রয়োজন, জীবন বাঁচানোর সামগ্রী ও খাদ্য প্রয়োজন। পারলে নিজের আতংকের/আশঙ্কার পাশাপাশি এদের কথাও একটু বলি। সরকার-কে এয়ারপোর্টে স্ক্রিনিং, ইনকিউবেশন ওয়ার্ড, আইসোলেশন ইউনিট খোলার সাথে সাথে হাজার মাইল দূরে সেই আক্রান্ত দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর কথাও মনে করিয়ে দেই। নিজের উপার্জনের একটা ক্ষুদ্র অংশ অথবা দামী রেস্টুরেন্টে খাওয়ার একটা বিল খুব সহজেই তুলে রাখা যায় তাদের জন্য। গ্লোবালাইজেশনের যুগে কেয়ামতবাদীদের ফতোয়া ছাড়াও কিছু মহৎ উদ্যোগ আছে যারা এরকম পরিস্থিতিতে ফান্ড যোগাড় করে যথাস্থানে পৌঁছে দেয়, চাইলে সে মহৎ প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারি। এসব কোনোটাও যদি নাও পারি অন্তত আত্মিকভাবে তাদের পাশে থাকি, তাদের কষ্টের সমব্যথী হই। কারণ সীমারেখা যতই থাক না কেন, পৃথিবী একটাই।
---------
মন্তব্য
মহামারি আকারে ছড়ানো আশা করি প্রতিরোধ করা যাবে। আশা টা বেশি হয়ে গেল কিনা বুঝতে পারছিনা যদিও। সংক্রমিত রোগীকে একেবারে আলাদা করে ফেলার ব্যবস্হা আমাদের পাবলিক হাসপাতাল গুলোতে আছে?
এদিকে ঢাকা বিমানবন্দরে তো কোন ধরনের থার্মাল স্ক্যানার দেখলাম না, যা এখন অনেক বিমানবন্দরে বসানো হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আগত মানুষ জনকে পরীক্ষা করা হয় কি?
সংক্রমিত ব্যক্তিকে বাঁচানো কিন্তু প্রায় অসম্ভব। যিম্যাপের শেষ ডোজ ব্রিটিশ নার্স উইলিয়াম পুলিকে দেয়া হয়েছিল। সেরে উঠে সে আবার সিয়েরা লিওনে ফিরে গ্যাছে। ডিসেম্বরে যিম্যাপের ব্যাচ আরেকটা বের হবে, যেটা দিয়ে আশা করা যাচ্ছে প্রায় আশি জন পর্যন্ত পশ্চিম আফ্রিকানের উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হবে। তার মানে চাহিদার তুলনায় যোগান প্রায় নেই বললেই চলে। ব্যাপারটা আশংকাজনক।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আমার জানা মতে পশ্চিম আফ্রিকা থেকে সরাসরি কোন ফ্লাইট বাংলাদেশে যায় না। তাই ভ্রমণরত যাত্রীদের ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই দুই এক দফা বিভিন্ন অন্তর্বর্তী ট্রানজিট এয়ারপোর্টে স্ক্রিনিং এর ভেতর দিয়ে আসার কথা। যেহেতু আফ্রিকার সব এয়ারপোর্টেই এখন স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে, বাংলাদেশেও এ ব্যবস্থা শীঘ্রই চালু হবে বলে আশা করি।
আপনার প্রশ্নগুলো পড়ার পরে একজন প্রাক্তন আইসিডিডিআরবি’র ডক্টরের সাথে কথা বলে কিছু বিষয় নিশ্চিত হয়ে নিলাম, তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাস নিয়ে কাজ করেছেন। আইসিডিডিআরবি-তে বিভিন্ন রকম আইসোলেশন ইউনিট আছে – লং টার্ম, শর্ট টার্ম, আইসিইউ ইত্যাদি। তবে এগুলো সাধারণত ব্যবহৃত হয় সিরিয়াস রোগীদের ক্ষেত্রে – যেমন সিরিয়াস ডায়রিয়া, কলেরা’র রোগী। ইবোলা’র জন্য এই ইউনিটগুলো তৈরি নয়। যদি তেমন কিছু করতেই হয়, সেক্ষেত্রে মহাখালি’র আইডিএইচ (Infectious Diseases Hospital) কিছু করলেও করতে পারে – উনার দেয়া তথ্য মতে।
ইবোলা-আক্রান্ত এবং পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির ব্লাড সেরাম এই মুহূর্তে ইবোলা’র মহৌষধ হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে। আমি ডাক্তার নই, তাই এক্ষেত্রে আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে কিছু বলতে পারবো না। তবে ব্যাপারটা খানিকটা হয়তো এরকম যে, ঐ আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তকণিকা ইবোলা ভাইরাস শনাক্তকরণ এবং প্রয়োজনীয় এন্টিবডি তৈরির জন্য অন্য ব্যক্তিদের রক্তকণিকাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেয়। ডাব্লিউএইচও থেকে সারভাইবাল রোগীর ব্লাড সিরাম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কানাডা, চীন থেকে কিছু ভ্যাকসিন ডাব্লিউএইচও’কে সাজেস্ট করা হয়েছে।
আমরা জানি ইবোলা শুরুতে সনাক্ত করা গেলে রোগীর সেরে উঠার সম্ভাবনা বেশি থাকে, যেমন - আমেরিকান, স্প্যানিশ নার্সগুলো বা যারা সেরে উঠছে তাদের কথাই ধরা যাক, তাড়া কীভাবে সেরে উঠছে? সব অসুখের সিম্পটম অয়াইজ ট্রিটমেন্ট বলে একটা ব্যাপার থাকে, যেমন - তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ডিহাইড্রেশন নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। যাতে স্বাস্থ্যকর্মিদের ভূমিকা অসীম।
নাইজেরিয়ার ঘটনা তখনকার যখন এয়ারপোর্টে স্ক্রিনিং কেন, দেশটি’র কোন প্রকার ইবোলা প্রিকশন বলতে গেলে ছিল না, সেখান থেকে তারা যদি রিকভার করতে পারে তাহলে বাংলাদেশ বা অন্য কোন দেশ কেন পারবে না। আমি বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছি না, এই মুহূর্তে আক্রান্ত দেশগুলোতে নজর দেয়া, সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া আমাদের মানবিক দায়িত্ব, এটা ভুলে গেলে চলবে না।
সব নার্সদের কথা জানিনা, উইলিয়াম পুলির সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম। যিম্যাপ তার শরীরে প্রবেশ করানোর আগে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, এটাও বলা হয়েছিল যে এটা ট্রায়াল ওষুধ, পরবর্তী পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে এখনও ভাল ধারণা নেই। উনি রাজী হয়েছিলেন। এখন উনি সুস্থ এবং আবার সিয়েরা লিওনে ফিরে গ্যাছেন কাজে।
৪ জন রোগীকে দেখানো হল (ঠিক কোন দেশের মনে নেই, খুব সম্ভব নাইজেরিয়া) যারা স্বাভাবিক ভাবে সেরে উঠেছেন। কারণ তাদের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ইবোলাকে আটকে দিয়েছে। তাদের শরীর থেকে স্যাম্পল নিয়ে এখন গবেষণা হচ্ছে।
কন্সপিরেসি থিওরি শুনলে বিশ্বাস করতে মন চায়না যে এর সবই আসলে টাকা কামনোর ধান্ধা। তবে হ্যাঁ সুযোগের সদ্ব্যবহার হয়তো করছে তিলকে তাল বানিয়ে!
আরেকটা জিনিস দেখে মজা পেয়েছি, যিম্যাপ তৈরির প্রক্রিয়ায় তামাক গাছ ব্যবহৃত হয়। অনেক হাংকি পাংকি করে যে ভাইরাল ভেক্টর টা বানানো হয় ওইটা পুশ করে তামাক পাতায় কালচার করার জন্য।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
ভ্যাকসিন ট্রায়ালেও অনুমতি লাগে। যে দেশগুলো ইবোলা আক্রান্ত নয় কিন্ত রিস্কি জোনে সেগুলোতে কিছু ভ্যাকসিন অনটেস্ট আপ্লাই করার কথা, যেমন মালি, গাম্বিয়া। আমার জানা মতে গাম্বিয়ায় এখনো এপ্রুভ হয়নি। মানুষের মনে বিশ্বাস কমে গেছে কেউ শখ করে ভলান্টিয়ার হতে চায় না। সারভাইবাল কেস থেকে ব্লাড কালেক্ট শুরু হয়ে গেছে, ব্লাড ব্যাংক গঠন করে ডোনারদের থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। দেখা যাক সারভাইবরদের রক্ত আসলেই অন্যদের শরীরে ইবোলা এন্টিবডি তৈরি করতে কোন কাজে আসে কিনা।
এমনি বারবার গৃহযুদ্ধ আর এথনিক ক্ল্যাশে এই দেশগুলার অবস্থা এতোই খারাপ, শুনেছি সিয়েরা লিওনে ৫০জন রেজিস্টার ডক্টরও ছিল না। তারুপর ইবোলা, মরার উপর খাড়ার ঘা।
যারা ইমিউনিটির জোরেই হয়ত বেশিভাগটা সুস্থ হচ্ছে, তাও আর্লি ডায়াগনোসিস সবার জন্য ভাল।
কন্সপিরেসি থিওরি নিয়ে মাথা ঘামাই না আসলে, চোখের সামনে মানুষের যা প্রতিক্রিয়া দেখলাম, কিছুটা হতভম্ব। বিশেষ করে যখন বিবিসি, সিএনএন-এর মতো রিপোর্টে যারা আফ্রিকানদের প্রকাশ্যে ‘জার্মি আফ্রিকান’ ‘পুরা কন্টিনেন্ট অবরুদ্ধ করে এই স্পেসিসগুলারে পুড়ায়ে মারা উচিৎ’ এ টাইপ গালিগালাজ করতে দেখি। অবশ্য প্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়ায় সমালোচনাও দেখেছি।
হম, তামাক পাতার ব্যাপারটা শুনেছিলাম। এতে দাঁত বের করার কি আছে, তামাক পাতা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
গোছানো, pertinent, জার্গনমুক্ত, দরকারী লেখা।
তবে ফিয়ারবোলা'র আক্রমণ কখনোই ঠেকানো যাবে না। কারণ, এখানে বিশাল টেকাটুকা'র ব্যাপার আছে। দু'দিন ধরে সমানে ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন বলে মিডিয়াগুলো ফেনা তুলে ফেলছে। এতোদিন ফিয়ারবোলা ছড়িয়ে বাজার তৈরি করা হয়েছিল, এখন হারভেস্ট করা হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইবোলা ভয়ংকর। সেইসাথে ঔষুধ কোম্পানীগুলোর মিডিয়া কানেকশনও ভয়ংকর। দুইটাই বাস্তব। ফিকশন নহে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
টেকাটুকা’র ব্যাপার তো অবশ্যই। দু’সপ্তা আগে হুঁশিয়ারি জারি হইলো ডিসেম্বর নাগাদ আপ টু দশহাজার মানুষ সংক্রমণ হতে পারে; ইউএস’র সৈন্য ঢোকার সাথে সাথে লাইবেরিয়ায় কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে ‘ওয়ে টু কন্ট্রোল’ – কেমন জানি খটকা লাগে। তেলের খোঁজ, হীরার খনি, ভ্যাকসিন বাজার কিসের সাথে কি সমীকরণ যে মেলানো হয়, তা আমার মতো ছাপোষা মানুষের বোঝার বাইরে। কন্ট্রোল হইলেই ভাল, আশা (!) করি ইবোলার স্থায়ী ইমপ্যাক্ট এ দেশগুলো একদিন কাটায়ে উঠবে...
অঃ টঃ বহুদিন পর আপনার মন্তব্য পেয়ে ভাল লাগল, সচলে লেখা দিলেই মনে একটা সূক্ষ্ম আশা থাকে হয়ত আপনার চোখে পড়বে!
সঠিক তথ্য এবং পরিশ্রমটুকুর জন্য বিশেষ ধন্যবাদ রংতুলি।
ধন্যবাদ ইয়াসির আরাফাত।
বাহ চমৎকার!
এখন অনেকটা স্বস্তি বোধ করছি।
ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ এ. এম.।
ফেয়ারবোলা মানে কী?
ফেয়ারবোলা ইবোলা ভাইরাসের খুড়তুতো ভাই। ইহা এমন এক ভাইরাস যা ইবোলা-সংক্রান্ত যেকোন ছবি, ভিডিও, কমেন্ট দেখার সাথে সাথে মানুষের মস্তিষ্কে সরাসরি আঘাত করে, ফলশ্রুতিতে আক্রান্ত মস্তিষ্ক হতে নানা রঙের, নানা বর্ণের বিভিন্নরকম ফিকশন জন্মলাভ করে।
মূলত ইবোলা ভীতিকে ক্রিটিসাইজ করার জন্যই Fear-bola শব্দটির উৎপত্তি।
অঃ টঃ আমি এখন পশ্চিম আফ্রিকাতেই আছি। ইবোলা থেকে বাঁচতে পারবো কিনা জানি না, তবে ফেয়ারবোলায় আক্রান্ত হইনি।
ওহ, ফিয়ারবোলা। এবার বুঝলাম।
আমার একসেন্টের কারণে বুঝতে যেহেতু সমস্যা হচ্ছে শিরোনামটা ঠিক করে দিলাম। ধন্যবাদ।
যা বলতে চেয়েছিলাম ষষ্ঠ পান্ডবদা বলে দিয়েছেন "গোছানো, pertinent, জার্গনমুক্ত, দরকারী লেখা।"
লেখা পড়ে অনেকটা দুঃশ্চিন্তামুক্ত হলাম। আমি ইবোলা বিষয়ে বলতে গেলে কিছুই জানি না তাই মন্তব্যের গ্যালারিতে চোখ রাখছি গঠণমূলক আলোচনা দেখার আশায়
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
অনেক ধন্যবাদ রিক্তা।
একটানে ক্যাপশন সমেত নিচের ছবিটা দেখে ফেলায় এতদিন লেখাটা পড়তে ইচ্ছে হয়নি। আজ পড়লাম। চমৎকার লিখেছেন, আরো লিখুন। আর ইয়ে, কারো লাইফ সাপোর্টের নলদিয়ে যাওয়া তরলে এট্টূ ইবোলার ভাইরাস মিশাইয়া দিলে কেমন হয়, হ্যাঁ?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সবাই শুধু নিজের অঞ্চল, নিজের ভয়/আশংকা নিয়ে ফিকশন বানাতেই ব্যস্ত। ইবোলা’র বাস্তবতা, মানবিক দিকটা নিয়ে কেউ তেমন কিছু বলে না। ছবিটা এই কারণেই দেয়া।
আর, লাইফ সাপোর্টে ইবোলা’র ভাইরাস মিশানোর আইডিয়া খারাপ না। লাগলে আওয়াজ দিয়েন আমি কিছু সাপ্লাই করবোনে। ফাইনালি, আফ্রিকা থাকার ষোলকলা পূর্ণ করতাম আর কি!
না না, ছবিটা প্রাসঙ্গিক হয়েছে, আমিই সাহস পাইনি
আর ইবোলা সাপ্লাই... দেরি হয়ে গেল
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
গোলাম আযমের মতো শুয়োরেরা আরাম-আয়েশে দীর্ঘ জীবন কাটায়, তারপর ধীরেসুস্থে স্বাভাবিক মৃত্যুতে মরে। দাম নাই কেবল অসহায়/নিরপরাধ মানুষের জীবনের।
হুমম...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ইবোলা ফিয়ারবোলা
মানুষের মৃত্যু মানবতার মৃত্যু
দীপংকর চন্দ
নিষ্ঠুর সত্য
সুন্দর লিখেছেন রংতুলি
অনেক ধন্যবাদ আয়নামতি!
ইবোলামুক্ত নার্সটিকে বুকে টেনে নিলেন ওবামা এমন শিরোনামে নির্ঘাত এটা দেশের কিছু কাগজের খবর হবে; আর তা দেখে 'গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল' তত্ত্বে বিশ্বাসী মানুষের বুকে হয়ত কিছুটা ভরসা আসবে খবরটা পড়ে এই পোস্টের কথা মনে হলু। দিয়ে গেলেম তাই
অথবা, 'ইবোলা আক্রান্ত নার্সটিকে বুকে তুলে নিলেন ওবামা' এইটা দিলে তো আরেক কাঠি সেনসেশন্যাল শিরোনাম হয়ে যায়; তাতেও যদি তেলের দাম কিছুটা কমে।
সুন্দর আর গোছানো একটা লেখা।
আমি নিজে 'ভয় নাই' বলার পক্ষপাতি নই। আতঙ্ক না থাক, ভয়ের দরকার। সবার থেকে দরকার স্বাস্থ্যবিভাগের প্রস্তুতি। রোগ মশার সমান হতে পারে। কিন্তু হাতির জন্য প্রস্তুতি থাকা দরকার সবসময়। বাংলাদেশের মত দেশের (যেইখানে বার্ডফ্লু, নিপাহ, টিউবারকিউলোসিস আছে) সংক্রামক রোগ ঠেকানোর প্রস্তুতি দরকার পৃথিবীর সব দেশের চাইতে বেশি। কিন্তু যখন শুনি ইবোলার লক্ষণ দেখা গেলে নমুনা নিয়ে আমেরিকা পাঠিয়ে পরিক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া হবে, তখন আর মেজাজ ঠিক থাকে না।
আমার বিশ্বাস আর কিছুদিন পর থেকেই ইবোলার উপর গবেষণাপত্র প্রকাশ হওয়া শুরু করবে জোরেশোরে। সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি। অনেকগুলো তথ্যের ব্যাখ্যা জানা দরকার।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখাটা আপনার চোখে পড়েছে দেখে আপ্লুত।
আমেরিকায় নমুনা পাঠিয়ে ইবোলা সনাক্ত করিয়ে আনতে আনতে রোগী ও রোগের অবস্থা কি হবে সেটা ভেবে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল। স্বাস্থ্যবিভাগের যথাযথ প্রস্তুতি দরকার - সহমত প্রকাশ করছি।
ইবোলা নিয়ে গবেষণা অল্প পরিসরে পশ্চিম আফ্রিকার এমআরসি-এর শুরু করার সম্ভাবনা আছে। দেখা যাক...
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
নতুন মন্তব্য করুন