আমার এক গুরজন একদিন আচমকা একটা প্রশ্ন করলেন। তিনি প্রায়ই আচমকা প্রশ্ন করে আমাকে ভড়কে দেন। ভড়কে যাই, কারণ তার প্রশ্নগুলো একটু ভিন্ন ধাঁচের। তাই আপত দৃষ্টিতে প্রশ্ন সহজ মনে হলেও উত্তরটা তত সহজে দিলে চলে না। প্রশ্নের নিরীহ-দর্শনের আড়ালে গভীর কোনো তাৎপর্য লুকিয়ে থাকে, তেমনি উত্তরের ভেতরেও ওই তাৎপর্যের প্রতিফলন চান।
যাক, যে কথা বলছিলাম। তাঁর এদিনের প্রশ্নটা ছিল, ‘বলো তো দুনিয়ার সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী কোনটা?’
এই প্রশ্নটা আমাকে বিব্রত করতে পারে নি। ভাবতে হয় নি এক মুহূর্তও। কারণ, তিনি যে উত্তর আশা করেন, তা আমিও বহুকাল থেকে নিজের ভেতরে পুষে রেখেছি। কী জানি, কবে আমার মনে প্রথম উদয় হয়েছিল মানুষই দুনিয়ার সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী? অনেকের হয়তো দ্বিমত থাকতে পারে, তবু সবকিছুর বিচারের শেষ রায় কিন্তু মানুষের বিপক্ষেই যায়।
তবে সবচেয়ে দরদি প্রণীও যে মানুষ, তার প্রমাণ পেয়েছি বিভূতিভূষণ আর জিম করবেটের বইয়ের পাতায় পাতায়। প্রকৃতির প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতার খবর প্রতিদিনই ছড়াছড়ি প্রেস আর ইলেকিট্রক মিডিয়ার দুনিয়ায়। তার মাঝেও খাঁ খাঁ মরুতে হঠাৎ করেই আসা এক পশলা বৃষ্টির মতো আমাদের সামনে হাজির হন বিরল প্রজাতির ওইসব প্রকৃতিপ্রেমীর মানুষেরা। সিলেটের সীতেসবাবুর বুনো পশু পাখিদের সাথে প্রেমের কথা কার অজানা। আমাদের দ্বিজেন শর্মা, মোকাররম হোসেন, শরীফ খান, এনাম আল হক, আলী ইমামদের প্রকৃতি প্রেমের খ্যাতি দেশজোড়া। এঁদের বাইরেও হাতেগোণা হলেও বেশ কয়েকজন প্রকৃতিপ্রেমী আছেন সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। আমি এঁদের একজনকে জানি। শুধু জানি বললে ভুল হবে, বিলুপ্তপ্রায় বুনো লতা-গুল্ম আর বৃক্ষদের প্রতি তাঁর প্রগাঢ় ভালবাসাই আমাকে তাঁর দিকে আকৃষ্ট হতে বাধ্য করেছে। তিনি আমাদের গামের প্রভাষক আব্দুল কুদ্দুস।
নিজের পার্কে বুনো উদ্ভিদ দেখাচ্ছেন আব্দুল কুদ্দুস
বছর পাঁচেক আগের কথা। তখন আমি যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজে পড়াশোনা করি। সেখান থেকেই একদিন খবর পেলাম, আমদের গ্রামে নাকি একটা পার্ক হয়েছে। কুদ্দুস পার্ক। প্রথম দিকে সেটা নিয়ে বেশ সমালোচনা তীর ধেয়ে আসতে লাগল কিছু নপুংসক মোল্লাদের কাছ থেকে। কুদ্দুস সাহেব নাকি পার্ক বানিয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েদের উচ্ছনে যাবার রাস্তাটা পরিষ্কার করেছেন। অথচ সতাতা ও নিষ্ঠতায় আমাদের বিশাল গ্রামটায় কেউ তাঁর সমকক্ষ হওয়া তো দূরের কথা, এক শতাংশ পরিমাণেও তুল্য হবেন- একথা কেউ জোর দিয়ে বলতে পারবেন না। সুখের কথা দুর্মুখদের সমলোচনা খুব বেশিদিন ধোপে টিকল না।
সেবার বাড়ি ফিরে সেই পার্ক দেখে সত্যিই মুগ্ধ হলাম। নয়নাভিরাম আধুনিক পার্ক যাকে বলে। এখানে যেসব ফুল-ফলের সমাবেশ ঘটেছে তার বেশিরভাগই গাঁয়ের লোকে কখনো দেখেনি। কিন্তু তখনো আমি আন্দাজ করতে পারিনি কী চমক আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি ইছামতী পারের মানুষ। প্রাকৃতি, বুনো গাছপালার প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ মিশে আছে আমার সত্তায়। সেই ছেলে বেলায় ঝোপ-জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে নাম না জানা লতাগুল্মের তালাশ করা ছিল আমার নিত্য দিনে রুটিন। বুনো গাছ-পালার প্রতি অদম্য আকর্ষণ বয়ে বেড়াচ্ছি আজো। তবে দুঃখের বিষয় জনসংখ্যার চাপ সামলাতে হিমশিম আমাদের পল্লিজননীর বুক থেকে হারিয়ে গেছে ছোট্টবেলার স্বপ্নমাখা সেইসব ঝোপজঙ্গল। এখন বুকে হাহাকারের মাদল বাজে।
এরকম গোটাদশেক মাঝারি সাইজের বৈঁচিঝোপের সন্ধান মিলবে কুদ্দুসপার্কে
কিন্তু বাস্তবতাকে অস্বীকার করার উপায় তো নেই! তো সেবার পার্কে বসে আমি আর এক বন্ধু গল্প করছি। একফাঁকে পার্ক দেখতে এসেছেন স্বয়ং কুদ্দুস সাহেব। আমরা তাঁকে চিনলেও তিনি আমাদের চেনেন না। আলাপ-পরিচয় হলো। একে একে মেলে ধরলেন তাঁর সোনালি অতীতের ঝাঁপি। সত্যিকারের নস্টালজিক মানুষের সাক্ষাত পেলাম। আমাদের কথাবার্তাও যেন তাঁর মনে ধরল। কথায় কথায় কখন আমার পরস্পরের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি সেকথা যেমন আমরাও বলতে পারব না, বলতে পারবেন না তিনিও। নস্টালজিয়াকে কীভাবে বাস্তবরূপ দিতে হয় তা তাঁর গল্প শুনেই বুঝলাম। কথা চলতে চলতেই তিনি আমাদের ঘুরে দেখালেন তাঁর পার্কের স্বর্ণখনি! চমকানোর কিছুই নেই। ছোট্টকালে যেসব গাছগাছালি সাথে সখ্য ছিল, যাদেরকে হারিয়ে আজ দীর্ঘশ্বাস ফেলছি তাদের সাক্ষাত পাওয়া স্বর্ণখনি আবিষ্কারের সমতূল্য নয় কি? শুধু তাই নয় তিনি আমাদের দেখালেন দাদির মুখের গল্পেশোনা শিয়াকুল গাছ।
কুদ্দস পার্কেই রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র (সম্ভবত) শিয়াকুল ঝোপটি। কিছু শিয়াকুলের চারাও উৎপাদন করেছেন প্রভাষক আব্দুল কুদ্দুস
এর কিছু দিন পর সাপ্তাহিক-২০০০-এর ঈদ সংখ্যায় উদ্ভিদবিজ্ঞানী মোকরম হোসেন জীবননান্দ দাশের কবিতা উপর ভিত্তি করে লেখা এক ফটো ফিচারের পরিñিষ্ট নোটে বৈঁচিগাছ সম্পর্কে লিখেছেন- বৈঁচিঝাড় (শিয়াকুল), বর্তমানে বিলুপ্ত। ব্রাকেটে শিয়াকুল লেখা মানে তিনি বৈঁচি এবং শিয়াকুলকে সমার্থক শব্দ
বুঝিয়েছেন। ধারণা করছি তিনি হয়তো বৈঁচি আর শিয়াকুলকে একই গাছ বলে বোঝাতে চেয়েছেন। দুটোকে যদি আলাদা করেও ধরি তবে শিয়কুল বা বৈঁচি বিরল হলেও একেবারে বিলুপ্ত নয়। কারণ ইছামতীর তীরে, মেঠো খালের কিনারে, বাঁশবাগানে কিংবা ভাটঝোপে ঠাসা আমবাগনে আজো কিছু কিছু বৈঁচি গাছকে দেখি অসহায়ের মতো মাথা উঁচু করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে। আর শিয়াকুল অন্য কোথাও না পাওয়া না গেলেও কুদ্দুসপার্কে তো আছে!
রাংচিতে আর তেলাকুচো গলাগলি করে বাস করছে কুদ্দুস পার্কে
এবারের ঈদে বাড়ি গিয়ে পার্কেই পেয়ে গেলাম কুদ্দুস কাকাকে। রাস্তার জন্য তাঁর বুকে হাহাকারটা রয়ে গেছে আজো। পার্কটা মাঠের ভেতরে। রাস্তা বলতে ক্ষেতের আইল। অন্তত গরুরগাড়ি যাওয়ার মতো রাস্তা তো চাই। নিজের গাটের পয়সা খরচ করে জমির মালিকদের কাছে রাস্তা কিনতে চেয়েছিলন। কিন্তু কেউ সদয় হয়নি তাঁর প্রতি। তাদের উপদেশ- ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর পাগলিমটা কুদ্দুস তোমার থাকলেও আমাদের নেই। পারলে পার্ক উঠিয়ে চাষবাসে মন দাও! বরাবরের মতো তাঁকে স্বান্তনা দেয়া ছাড়া করবার কিছুই নেই আমাদেরও। তবে আমি বরাবরই আশাবদী- একদিন রাস্তাওয়ালাদের মন গলবে
বিলুপ্তি পথে লাল ভেরেণ্ডা
যাইহোক, এবার আরো চমক অপেক্ষা করছিল আমার জন্য। কুদ্দসকাকার শিয়াকুলঝোপটা এবারো নুয়ে পড়েছে মটরদানার মতো কুলের ভারে। গতবারের বীজ থেকে চারাও গজিয়েছে অসংখ্য।
শেউড়াগাছগুলো মাথায় দশ-বারোফুট উচ্চতা ছাড়িয়ে গিয়ে সত্যিই যেন ভূতধারণ ক্ষমতা অর্জন করেছে। সঙ্গে আরো দেখলাম বহুদিন আগে আমাদের গ্রাম থেকে হারিয়ে যাওয়া লালভেরে-ার ঝোপ। গোটা দশেক ভেরে-ার চারাও দেখলাম। আমাকে কয়েকটা উপহারও দিতে চাইলেন। আমি এখন জায়গা খুঁজছি সেগুলো কোথায় লাগাবো।
পার্কে এক সাথে বেড়ে উঠছে তিনটি শেউড়া গাছ। আর কিছুদিনের মধ্যে এদের মাথায় ভূতের আনাগোনা শুরু হবে (!)
নাম না জানা মোহনীয় বনফুল
এরপর পর একে একে ঘুরে দেখালেন আরো কিছু বিলুপ্তপ্রায় গুল্মলতা। প্রথমেই নজর কাড়ল নাম না জানা লালরঙা বনফুল। ছোটবেলার কত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এর সাথে। দেখলাম পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর ফল কুঁচ-এর চারাগাছ। ছোট্ট মটরদানার আকারের টকটকে লাল এই ফলটার গায়ে কালো একটা ফুটকি থাকে। যে দেখেছে নিশ্চিত এর রূপের কথা ভুলতে পারে নি।
কুচ বরণ কন্যাদের অপেক্ষায় এই মা কুঁচগাছ
কুদ্দুস পার্কের আয়তন প্রায় দুইএকর। পরিচিত অপরিচিত মিলিয়ে একশ’রও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ আছে সেখানে। সব নাম যেমন আমার বা কুদ্দুস কাকার কারোরই মনে নেই। রাখা সম্ভব নয়।
কলাবতী
পার্কে আরো কিছু গাছ আছে যেগুলোর কথা উল্লেখ না করলেই নয়। যেমন- দুই প্রকারের সর্পগন্ধা, ছোট চণ্ডাল আর বড় চণ্ডাল নামে এদের চেনে গাঁয়ের লোক। বিপুল পরিমাণে ভাটফুলের ঝোপের দেখা পাওয়া যাবে পার্কে। আছে ঈশের মূল, কালোমেঘ, ঘৃতকুমারী, কুকুরশোঁকাও।
লজ্জাবনত লজ্জাবতী
গোটা পাঁচেক লজ্জাবতীর লতার সন্ধান মিলবে। এক জাতের গ্রাম্য অর্কিডও চোখে পড়ল। বারোমাসী ও পাহাড়ী কাঁঠালের গাছ দেখে নয়ন সার্থক করলাম। আছে কলাবতী আর এলাচের ঝোপ।
এলাচ ঝোপ
কালোমেঘ
একটা মজার ব্যপার জানালেন কাকা। সেদিন সকালে তিনি পার্কে এসে দেখেন দক্ষিণ দিকের ভাটঝোপগুলোর ভেতরে দুই জোড়া শিয়াল ঘুমিয়ে আছে। এই ব্যাপরাটা তাঁর মনে বেশ প্রভাব ফেলেছে বুঝলাম। ২০০০ সালের বন্যার পর থেকে আমাদের গ্রামে উল্লেখযোগ্য হারে কমতে শুরু করছে মেঠো পণ্ডিতের সংখ্যা। তিনি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তাঁর পার্কই একদিন হবে শিয়াল-বেজিদের নিরাপদ আশ্রয়।
ভাটঝোপের গায়ে জড়িয়ে আছে নাম না জানা বাহারী বুনোফলের লতা
এই নিষ্পাপ চেহারার শিমুলের চারা কি বলাইয়ের কথা মনে করিয়ে দেয় না?
পেটের পিড়ার মহৌষধ বেলের শরবত
নামেই কুকুরশোঁকা! গণ্ধ এত কটু কুকুর এর আশপাশে ঘেঁষে না
দিন যত সামনে এগুচ্ছে, প্রথিবীকে গ্রাস করছে নতুন প্রযুক্তি। জীবনকে বিলাসীতার চাদরে মোড়াতে মানুষ আরো নিষ্ঠুর হচ্ছে। ধ্বংস করছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র। কিন্তু এরপরেও যে প্রকৃতি চূড়ান্ত রুদ্ররূপ প্রদর্শন করে তার প্রতিশোধ নেয়নি তা কেবল হাতেগোণা কয়েকজন প্রৃকিতিপেমীর কারণেই। আমাদের কুদ্দুসকাকা নিঃসন্দেহে একালের হাতেগোণা কয়েকজন প্রকৃতিপ্রেমীদেরই একজন। কামনা করি তাঁর পার্ক অবহেলিত উদ্ভিদ-প্রাণীকুলের অভয়াশ্রম হয়ে থাক।
মন্তব্য
কয়েকটি সমস্যা:
১) প্রথম পাতায় অত্যধিক বড় আকারে সারসংক্ষেপ।
২) সারসংক্ষেপ পূর্ণ লেখায় আসেনি। সারসংক্ষেপটি কি পূর্ণ লেখার অংশ?
৩) ছবি গুলোর "তালিকা" টিক চিহ্ন সরিয়ে দেয়া হয়নি বলে দু'দুবার () করে এসেছে।
আপনি অনুমতি দিলে ঠিক করে দিতে পারি। অথবা সমস্যাগুলো সারিয়ে দ্বিতীয়বার পোস্ট দিতে পারেন।
আসলে ছবিযুক্ত ব্লগ আমার এই প্রথম। ঠিক করে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
ঠিক করে ফেলেছি বোধহয়
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
মুর্শেদ ভাই, ৩ এর ব্যাপারে ডিফল্ট টিক চিহ্ন আনচেকড থাকলে মনে হয় ইউজার ফ্রেন্ডলি হতো। এছাড়া লিস্ট অপশনটার দরকার আছে কি কোন?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অনেকে আপলোড করে ভুলে যায় ইনসার্ট করতে। তাদের জন্য লিস্ট করার ব্যবস্থা করেছিলাম।
একবার শিখে নিলে ব্যবস্থাটা কিন্তু দারুণ
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
দারুণ ব্যাপার।
পার্কে তরুণসমাজের উচ্ছন্নে যাবার কথা শুনে মনে পড়ে গেল, ইস্কুলে থাকতে বায়োলজি ক্লাসের প্র্যাকটিকাল খাতার জন্য নানারকম গাছের পাতা সংগ্রহ করতে হত। কলকাতা শহরে আর কই কিছু পাওয়া যাবে, উপকণ্ঠে সরকারি বনবিভাগের একটা বড় পার্ক + বোটানিকাল গার্ডেনমত আছে, সেখানে গেছিলাম। সেখানে জোড়ায় জোড়ায় ছাতার আড়ালে যুবসমাজের ভিড় দেখেছিলুম, দেখে সরল মনে কৌতূহল হয়েছিল এরা কী করছে?
এখনতো দেখি লন্ডনের বিভিন্ন পার্কে ঘুরে বেড়াতে। নিশ্চয় এখন বুঝেছেন, এরা কী করছে ।
কুদ্দুস পার্কে তেমন কিছু করার সুযোগ নেই
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
তবে এ পার্কে বসার ব্যবস্থা থাকলেও তার ব্যবস্থা ভিন্ন
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
সত্যই অনক হারিয়ে যাওয়া গাছ দেখলাম।
অপেক্ষায় থাকুন ভবিষ্যতে আরো দেখানো হবে
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
খুব ভালো লাগলো। ছোটোবেলায় একটা গ্রামে থাকতাম সেখানে গাছগাছালির অন্ত ছিলো না, আমরা বড় হতে হতে সেই গ্রাম বাড়ীঘরে আর রাস্তাঘাটে ভর্তি হয়ে হয়ে এক্কেবারে টাউন হয়ে গেল। আর বুনো গাছপালাগুলো হারিয়ে যেতে লাগলো।
রাঙচিতা, বেড়ালতা, চুকর, গুরুচি, পদ্মগুরুচি, কুঁচ, ডুমুর, মাদার, বকফুল, মৌসীম, বাসক, কালমেঘ, হেলেঞ্চা, হাসনুহানা ঘেঁটু, আংটিদূর্বা, চোরকাঁটা, খারকোন---এইসব গাছপালা চোখের সামনে থেকে হারিয়ে গেল।
এইরকম পার্ক করে করে এদের রক্ষা করার ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
একবার বাংলাদেশে আসুন। চুকর, কুঁচ, ডুমুর, মাদার, বকফুল, মৌসীম, বাসক, কালমেঘ, হেলেঞ্চা, হাসনুহেনা, ঘেঁটু, চোরকাঁটা দেখাতে পারবো। অঢেল নয়, তবে দেখাতে পারবো।
রাঙচিতা, বেড়ালতা, গুরুচি, পদ্মগুরুচি, আংটিদূর্বা, খারকোন কোথায় দেখতে পাওয়া যাবে শুনলে পরে জানাবেন। আমিই দেখতে যাবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আহ সবাই যদি বিভূতিভূষণের মতো নস্টালজিক হতেন!
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
এমন উদ্যোগের কথা শুনে খুবই ভাল লাগল, চেষ্টা করব দেশে থাকার সময় এখানে যাবার।
সিলেটের সীতেসবাবুর বুনো পশু পাখিদের সাথে প্রেমের কথা কার অজানা। --- খুবই অবাক হলাম এই তথ্য পরে, জনাব সীতেস অনেক আগেও যে শিকারি ছিলেনে এখনও সেই শিকারিই আছেন, কেবল নামের আগে জন্তুপ্রেমী শব্দটি বসিয়ে বাড়ীতে কিছু বুনো জন্তু জঘন্য পরিবেশে আঁটকে রেখেছেন, জানেন কি যে পরিযায়ী পাখিদের রক্ষার ডানা ছেঁটে আঁটকে রাখে তার বাড়ীর মানুষেরা? আরও অনেক ব্যাপার আছে, থলের বেড়াল বের হবে শীঘ্রই আশা করি।
facebook
শালার আলুর ব্চ্চারা তাইলে এদ্দিন আমাগোরে ভুল বুঝাইছে! মুসাকাণ্ড, পারসোনাকাণ্ড- আর কত লাটক দেখাইবো হালার পুতেরা!
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
পরিযায়ী পাখিদের রক্ষার ডানা ছেঁটে আঁটকে রাখে তার বাড়ীর মানুষেরা? এরা কি মানুষ!!
- শিয়াকুল আর বৈঁচি এক নয়।
- যে গাছটাকে লাল ভেরেণ্ডা বলছেন সেটা মোটেও ভেরেণ্ডা নয়। ভেরেণ্ডা পাতা বেশ বড় আকার তেলাকুচা পাতার মতো তবে অমসৃণ। ভেরেণ্ডার গাছ সরু, লম্বা, নরম এবং ঝোপ নয়।
- যে গাছটাকে শেউড়া গাছ বলছেন সেটা মোটেও শেওড়া গাছ নয়। শেওড়া গাছের পাতা এক পক্ষল, বেশ বড়, ধারালো রোমযুক্ত (গ্রামে হাঁড়িপাতিল মাজার কাজে ব্যবহৃত হয়)। শেওড়া গাছ ছোট বৃক্ষ, তবে নাগকেশর টাইপ ঝোপড়ানো নয়।
- কুঁচ তো নলখাগড়ার মতো ঝোপ, লজ্জাবতী লতার মতো কিছু নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১। শিয়াকুল আর বৈঁচি অবশ্যই এক নয়। এক বলেছিলেন আমাদের এক প্রখ্যাত উদ্ভিদবিদ- একথা উল্লেখও করেছি-
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
২। আমাদের এলকায় এটাকে ভেরেণ্ডা নামে কেউ চেনে না। কচা গাছ বলে জানে। তিন ধরনের কচাগাছ পাওয়া যায় আমাদের এলাকায়। একটা দিয়ে বেড়া তৈরি হয় সেটার ছবি দিলাম এখানে। ফেসবুক থেকে এর কমেন্টগুলো থেকেই জেনেছিলাম এই নাম। কমেন্ট গুলোতে সময়ে পেলে চোখ বুলিয়ে নেবেন একবার।এই কচার ফল হয় না।
আরেক রকম কচাগাছ যার ফল হয় কিন্তু পাতা সাদা। দেখুন এখানে। আরো দেখেুন এখানে। বাংলা দেখুন উইকিপিডিয়াতে
যেটাকেলাল ভেরেণ্ডা বলছি তার ফল কিন্তু বেড়া হয় না।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
তথ্যগুলো বিভ্রান্তিকর। ইংরেজী উইকি বলছে জেথ্রোফা কুরকাসকে বাংলাদেশে 'কচা' বলে। তাই যদি হয় তাহলে এই 'কচা'র অবশ্যই ফল হয়। কিন্তু আপনি বলছেন কচার ফল হয় না, এটা বেড়া গাছ (হেজ)। আবার বাংলা উইকি বলছে জেথ্রোফা কুরকাসের বাংলা নাম জামাল গোটা বা সাদা ভেরেন্ডা। তার মানে অবশ্যই এটার ফল হয়। তাহলে কে ঠিক?
আমি শুধু একটা কথা বলি। জামাল গোটা আর ভেরেন্ডা এক জিনিস নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আসলে আমি কচার তিনটি প্রজাতির কথা বলিছি। আমাদের এলাকায় আলাদা ভাবে কেউ এর নাম জানে না। বেড়া গাছও বলে না। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ঢোল কলমীকেউ সেখানে কচা বলে, কলমী কচা! জামাল গোটা আর ভেরেণ্ডা কখনোই এক, জামাল গোটা কী জিনিস একবার যে গায়ে মেখেছে সেই জানে কী মজা! আমাদের এলাকায় একে আলকোষী বলে।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
৩। আমদের এলাকায় এটাকে শেওড়া গাছই বলে। হ্যাঁ এর পাতা দিয়ে হাড়ি পাতিল মাজা যায়। তবে আপনি যেটার কথা বলছেন সেটা ডুমুর কিনা জানি না। এখন সাধারণত শেওড়াকে বেড়ে উঠতে দেয়া হয় না বলে ছোট থাকে। তাছাড়া গরছাগলের প্রিয় খাবার বলে সে বেড়ে উঠতে পারে না। শেওড়া ছোট জাতীয় বৃক্ষ খুব বেশি বড় এবং মোটা হয় না। এখানে যে গুলোর ছবি দেয়া হয়েছে সেগুলো প্রায় সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।
৪। কুঁচ গাছ অনেক ছোটবেলায় দেখেছি তাই সঠিক করে কিছু বলতে পারব না। কুদ্দুসকাকারা অবশ্যই কুঁচ গাছ দেখেছেন। তবে তিনি ভুল করছেন কিনা জানি না। দেখা যাকে আগামী গ্রিষ্মে এতে কুঁচ ধরে কিনা....
পাণ্ডবদা জানিয়ে দেয়া ভালো- আমি কিন্তু উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ নই। গ্রামের প্রচলিত নামই ব্যবহার করেছি। তাই ভুল হয়তো হয়েছে।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
না, আমি শেওড়া আর ডুমুর মিলিয়ে ফেলেনি। ডুমুরের পাতা শেওড়ার মতো বড়, তবে খস্খসে নয়। শেওড়া গরুছাগলের বিশেষ প্রিয় হবার কথা না।
উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ তো দূরে থাক, আমি নিজে উদ্ভিদবিজ্ঞানের ছাত্রও নই। গ্রামে প্রচলিত নাম ব্যবহারের ফলে ভুল হবার কথা না। ধরুন, চুকর/চুকুর/চুকুরি/চুকাই/মেট্টোশ/মেডশ একই জিনিস ভিন্ন ভিন্ন নামে বিভিন্ন জায়গায় পরিচিত। কিন্তু তাতেও কেউ চুকরকে আমলকি বা চালতা বলবে না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হয়তো আমারই ভুল। তবে জীবনের বিশটা বছর ঝোপ-জঙ্গল দাপিয়ে বেড়িয়েছি। সঠিক নামটা হয়তো জানি না কিন্তু যে নামটা একান্তই আমাদের সেটা তো না জানার কথা নয়।
ডুমুরের পাতা যে খসখসে নয়- একথা আমার জানা ছিল না।
ডুমুরের স্পষ্ট কোনো ছবি নেই যেটা আছে সেটার দিলাম।
ডুমুর গাছ
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
বেশ কয়েকটি ছবি দেখা গেলনা। সেগুলোর মধ্যে এই প্রকৃতি প্রেমী মানুষটির ছবি আছে কিনা বুঝতে পারলাম-না। যদি না থাকে তবে দিয়ে দিতে পারেন।
পোস্ট ভাল লেগেছে।
আছে। প্রথম ছবিটাই কুদ্দুসকাকার।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
প্রকৃতি প্রেমীক মোকরম হোসেন উদ্ভিদবিজ্ঞানী নয়।
এই কথাটাও জানা ছিল না।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
পার্কটি দেখে অভিভূত হলাম। সম্প্রীতি আমরা একটা এধরনের একটা বুনো গাছের বাগান করতে চাই। "নাম "বুনো গাছের অভয়ারণ্য"
নতুন মন্তব্য করুন