বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-১৪ : বাঁশ

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল গাফফার রনি [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ০৭/০৫/২০১৩ - ৩:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হাঁসুলী বাঁকে বাঁশবনের তলায় পৃথিবীর আদিম কালের অন্ধকার বাসা বেঁধে থাকে। সুযোগ পেলেই দ্রুত গতিতে ধেয়ে ঘনিয়ে আসে সে অন্ধকার বাঁশবন থেকে বসতির মধ্যে।
...হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

কৈশরে অপুর গল্প আমি শুনিনি, পড়িও নি। পরে যখন অনেক বড় হয়ে ‘পথের পাঁচালী’ পড়লাম, তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অপুর সাথে নিজের জীবনের অমিল দেখেও মনে হতো কোথায় বুঝি দুজনার জীবন একসূতোয় গাঁথা। বিশেষ করে বাঁকা কঞ্চি নিয়ে অপুর বনে বাঁদাড়ে ঘুরে বেড়োনো, দিদির সাথে আমকুড়ানো কিংবা শকুনের ডিমের পেছনে হণ্যে হয়ে ছোটা। আসলে শুধু আমার নয়, আটপৌরের বাঙ্গালীয়ানার কৈশর জীবন যারা ফেলে এসেছেন অতীতের গর্ভে অজপাড়াগাঁয়ে তাদেরই মনে হবে, এই জীবন শুধু অপুর নয়, আমারও।
অপু বনে বাদাড়ে ঘুরত বাঁকা কঞ্চি হাতে। আমি ঘুরতাম অস্ত্র হাতে! হতে পারে সেটা বাঁশ বা ভেরেণ্ডার লাঠি, লোহার দা কিংবা আম ছিলা ছুরি। কখনো কখোনো কঞ্চিও থাকত—তা সে ধনুকের মতো বাঁকায় হোক আর তিরের মতো সোজাই হোক—মোটকথা একটা সম্বল আমার থাকতেই হবে। অপুর তো ভূতের ভয় ছিল না, তাই সে ঠিক কী কারণে বাঁকা কঞ্চি হাতে করে ঘুরে বেড়াতো তা আমার বোধগম্য নয়। তবে আমার হাতে অস্ত্র থাকত বেঁশো আর গেছো ভূতদের মোকাবেলা করার জন্য। অবশ্য ভূতে আমার আপত্তি ছিল। আমাদের শেখানো হয়েছিল, ভূত বলে আসলে কিছু নেই, ওসব বোকা হিন্দুরা মানে। আছে জ্বিন। দুষ্টু-ভালো-লম্পট নানা পদের জ্বিন। আরেক রকম জ্বিন ছিল। ছেলো ভোলানো জ্বিন। এরা নাকি ছোটো ছোট ছেলেদের ভুলিয়ে নিয়ে গিয়ে কোনো ডোবা খালের পানিতে চুবিয়ে মারত। তবে সবচেয়ে বেশি ভয় ছিল বেঁশো জ্বিনদের। মাঠে কোনো পথচারী যখন একা চলে তখন বাঁশের আগায় বসে থাকা অদৃশ্য জ্বিনটা বাঁশকে হেলিয়ে মাটির সাথে ঠেকিয়ে রাখে। পথচারী যখন সেই বাঁশ ডিঙিয়ে পার হতে চায় তখনই তাকেসহ বাঁশটাকে ওপরে উঠিয়ে নেয় বেঁশোজ্বিন। তারপর কী করে কারো জানা ছিল না। তবে বেঁশো জ্বিনের হাত থেকে বাঁচার একটা উপায় জানতাম। হাতে দা বা লাঠি থাকলে সেটা দিয়ে বাঁশের গায়ে জোরসে এ ঘা বসিয়ে দিলে বেঁশো জ্বিন বাপ বাপ করে পালাবে। বেঁশো জ্বিনকে অবিশ্বাস করার কিছু ছিল না। সুনসান দুপুরে বাঁশবাগানের শত শত বাঁশের মধ্যে হঠাৎ একটা বাঁশ মটমট শব্দ করে ওঠে কেন? আসলে তখন বেঁশো ভূত মটিমটি ভূতের রূপ ধারণ করে।
যাইহোক, পাশাপাশি বাঁশ আর আম মিলিয়ে বিঘে পাঁচেকের একটা বাগান আমাদের ছিল। ভাট-আশ্বড়-বিছুটিঝোপ আর উইঢিবি মিলিয়ে বাগানের ভেতরটাও একবারে কসমসে অন্ধকারের রাজত্ব ছিল। অর্থাৎ ভূত-জ্বিনকে মোকাবেলা করতে হলে আমার যে অস্ত্রের দরকার ছিল সেটা নিশ্চয়ই কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না! অস্ত্রকে যে বেঁশোভূতেরা যমের মতো ভয় করত সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোনোদিন আমার মুখোমুখি হওয়ার সাহস করেন নি তেনারা।
যাক ভূতের কথা ছেড়ে এবার বাঁশের কথায় আসি—


ছবি : উইকিমিডিয়া
এতোদিন সচলে যে শিরোনামে এই সিরিজটা চালাচ্ছি—বাংলার গুল্ম-তরু-লত—এই শিরোনামের সাথে বাঁশটা যায় না। কারণ বাঁশ গুল্ম-তরু-লতা কেনোটায় নয়। বাঁশ আসলে একপ্রকার ঘাস। মানে তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ। চিরহরিৎ। ৭০-৮০ ফুট লম্বা হয়। অর্থাৎ পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ঘাস।
বাঁশের ভেতরটা ফাঁপা। বাঁশের গায়ে আগাগোড়া অসংখ্য গিঁট থাকে।গোড়ার দিকে গিঁটগুলো আধাফুট অন্তর থাকে, উপরের দিকে ওঠার সাথে সাথে ৎএক গিঁট থেকে আরেক গিঁটের দূরত্ব বাড়তে থাকে। আগার দিকে গিয়ে গিঁটের দূরত্ব ২.৫-৩ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। প্রতি গিঁট থেকে একাধিক শাখা বের হয়। এই শাখাকে বলে কঞ্চি। কঞ্চি দেখতে হুবহু বাঁশের ক্ষুদ্র সংস্করণ।


কাঁচা বাঁশের রং গাঢ় সবুজ আর পাকা বাশ হালকা সোনালি-হলুদ। দেশি বাঁশের বেড় ৬-৮ ইঞ্চি। তল্লা বাঁশের বেড় ১২-১৬ ইঞ্চি। তবে দেশি বাঁশের ভেতর ফাঁপাটা কম। তাই বেশি মজবুত। বাঁশ দিয়ে যত কাজ করা যায় তার সবই সম্ভব দেশি বাঁশ দিয়ে।


ছবি : আমাদের প্রযুক্তি ডট কম
কিন্তু তল্লা বাঁশের ভেতরের ফাঁপাটা অনেক বেশি। তাই তল্লা বাঁশ ছেঁচা বা চাটাই তৈরি ছাড়া আরে কোনো কাজেই লাগে না।

সঙ্গে সঙ্গে করালী এসে তার হাত ধরে টেনে বলল—ওই ওই দেখো, তোমার কর্তা পড়ছে। বাঁশের ডগা থেকে।....হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

বাঁশ মূলত গুচ্ছ আকারে থাকে। এই গুচ্ছকে ঝাড় বলে। এক কথায় বাঁশঝাড়। প্রতিটা ঝাড়ে ১০-১০০ টা পর্যন্ত ছোট বড় বাঁশ থাকতে পারে।


ছবি : উইকিমিডিয়া
বাঁশের বংশবিস্তার ঘটে মূলত অঙ্গজ প্রজননের মাধ্যমে। বাঁশঝাড়ের গোড়া বা মূল থেকে মোঁচাকৃতির কোঁড়া বের। কুলোর মতো অনেকগুলো আবরণ দিয়ে কোঁড়া ঢাকা থাকে। সময়ের সাথে এই কোঁড়ার ভেতর থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসে নবীন বাঁশ। কোঁড়া আর নবীন বাঁশে গায়ে কুলোর মতো যে আবরণ পেচানো থাকে তাতে কালো কালে অসংখ্য শুঙ্গ থাকে। এই শুঙ্গ শরীরের কোথাও লাগলে ভীষন চুলকায়।


শুধু অঙ্গজ পজননই নয়। বাঁশের ফুল ও ফলও হয়। শুনেছি ৫০ বছর পর পর বাঁশঝাড়ে ফুল আসে। আগে বাঁশের ফুল আমার কাছে কাল্পনিক বস্তুই ছিল। কিন্তু গত গ্রিষ্মে বাড়ি গিয়ে দেখলাম, ঘরের কাছেই প্রতিবেশীর তল্লা বাঁশের ঝাড়ে ফুল এসেছে। ভ্যাগ্যকে সাধুবাদ জানায়—এ জিনিস হয়তো এ জীবনে আর দেখতে পাবো না।


বাঁশের ফুল যখন দেখতে পেলাম উপরন্তু হাতে মোবাইল ফোনের ক্যামেরা রয়েছে—টপটপ কয়েকটা ছবি তুলে ফেললাম। প্রিয় সচল বাঁশফুলের বিস্তারিত বর্ণণায় গেলাম না। ছবি দেখে নিজেরায় বর্ণণাটা করে নিন।


ছবি : উদ্ভিদ জগত
বাঁশের ফুল দেখার সৌভাগ্য হলে হলেও ফল দেখার সৌভাগ্য হয়নি। ফুল আসার পরপরই প্রতিবেশীর বাঁশঝাড়টা ঝাঁড়ে-বংশে নির্মূল হয়ে যায়। আসলে ফুল ফোটায় বাঁশ ঝাড়ের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ওপরের ছবিটা উদ্ভিদ জগত নামের একটা সাইট থেকে নেয়া ফল সম্পর্কে যা বোঝার ছবি থেকেই বুঝে নিন। আরো স্পষ্ট বুঝতে চান? নিচের ছবিটা দেখুন—


ছবি : উদ্ভিদ জগত
এটা মুলিবাঁশের ফল। ফল থেকেও যে বাঁশের বংশবিস্তার ঘটে এই ছবিটা দেখার পর প্রথম জানলাম।


বাঁশের পাতা সরল। লম্বা। চিকন। বহুপক্ষল। একটি বোঁটায় ৩-৭ টি পাতা থাকে। পাতা ৪-৮ ইঞ্চি লম্বা হয়। কাঁচা পাতার রং গাঢ় সবুজ।


শুকনো পাতার রং সোনালী হলুদ। শুকনো পাতা উৎকৃষ্ট দাহ্য বস্তু। বাঁশ ঝাড়ের কোথাও আগুন লাগিয়ে দিলে সেই আগুন ধীরে ধীরে সারা বাগানে ছড়িয়ে শুকনো পাতা আর আগাছা পুড়িয়ে মারে। কিন্তু বড় কোনো অগ্নিকাণ্ড ঘটায় না। তাই গ্রামের বাঁশবাগানের মালিকরা শিতকালে বাগান সাফ করার জন্য বাঁশের শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে দেন।


সাধারণ বাঁশের বৈজ্ঞানিক নাম Bambusa bambuseae আর তল্লা বাঁশের বৈজ্ঞানিক নাম Bambusa polymorpha

বাঁশ নিয়ে আরো ক্যাঁচাল

আমগাছ জামগাছ বাঁশঝাড় যেন
এক সাথে আছে ওরা আত্মীয় হেন....বন্দে আলী মিয়া

মূলত আমার ঝোপ ঝাড়ে ঘোরাঘুরি করার নেশা আর বুনো উদ্ভিদের সাথে মিতালির সুত্রপাত বাঁশবাগান থেকেই। এতে আমাদের বাঁশবাগানের ভুমিকা যেমন ছিল তেমনি আরেকটি বাঁশবাগানের ভূমিকাও কম নয়। সেটা আমাদের গ্রামের চৌধুরি ঠাকুরদের বাঁশবাগান। অতবড় বাঁশবাগান সিলেট আর পার্তত্য চট্টগামে অঞ্চলে থাকলে থাকতে পারে কিন্তু সমভূমি অঞ্চলের কোথাও এতবড় বাঁশবাগান আছে বলে মনে হয় না। বাঁশঝাড় কেটে আস্ত একটা পাড়া বসে গেছে ভেতরে, কিন্তু আজও এর যে বহর বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেয়। আমি নিশ্চিত এই বাগানে এলে যে কারও গুপি-বাঘার সেই বাঘের মুখোমুখি হওয়া বাঁশবাগানের কথা মনে পড়ে যাবে। এই পোস্টোর প্রথম এবং চতুর্দশ ছবিটা ঠাকুরদের বাঁশবাগানের। নিচের ছবিটাও—


এই বাঁশবাগানের ভেতর দিয়েই ছিল আমাদের স্কুলে যাবার পথ। কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে এর সাথে। তবে একটা কথা বার বার মনে হয়, তখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। আমাদের বাংলা বইয়ে একটা ছড়া ছিল। ছড়াকার নিজেকে ইসলামী রেনেসাঁর কবি সাজাতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য শুরু করেছিলেন, আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নকেও শুনেছি ভালো চোখে দেখেননি।এ-সব কথা জানার পর তাঁর প্রতি আমার করুণাই হতো। কিন্তু তাঁর হৃদয় ছোঁয়া ছড়াটার জন্য তাঁকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারি নি।হ্যাঁ ফররুখ আহমেদ-এর কথাই বলছি। ছড়াটার নাম বৃষ্টির ছড়া—

বৃষ্টি এলো কাঁশবনে
জাগল সাড়া ঘাসবনে
বকের সারি কোথায় রে
লুকিয়ে গেল বাঁশবনে...

যতবার ছড়াটা পড়তাম মনে পড়ত ওই চৌধুরীদের বাঁশবাগানের কথা। মনো হত সকল ঝড়-ঝঞ্ঝার নিরাপদ আশ্রয় বুঝি ওই বাঁশবনটায়।

আগুন লেগেছে বাঁশবনের বাঁশঝাড়ের তলায়। মাঘে পাতা ঝরেছে বাঁশের। সেই ঝরা শুকনো পাতায় আগুন লেগেছে।
....হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

শীতেকালে গ্রাম বাংলায় এভাবেই সুর্য হেলে পড়ে পশ্চিম দিগন্তে, বাঁশবনের ওপারে। ঝপ করে সন্ধ্যা নামে প্রকৃতিতে, আঁধারের চুম্বন তিলক আঁকে গাঁয়ের কপালে।


ছবি : কামাল উদ্দীন সামহোয়্যার ইন ব্লগ

বাঁশবাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ
মাগো আমার শোলক বলা কাজলা দিদি কই....যেত্যিন্দ্রমোহন বাগচী
বাঁশবাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠলে কার না কাজলা দিদিকে মনে পড়ে!


এখানে বাঁশের তৈরি জিনিস কয়টা আছে বলুন তো?


চাকা আর ধুরো বাদে গরুর গাড়ির পুরোটায় বাঁশের তৈরি। আবার গো খেদানো পাচনটাও বাঁশ চেঁছে তৈরি করা। (গরুমারা লাঠিকে বৃহত্তর নদীয়া-যশোর এলাকায় পাচন বলে)


বেড়া তৈরিতেও বাঁশের জবাব নেই


গৃহস্থের কত কাজে বাঁশ দরকার!


মাঠে শ্যালো মেশিনের জন্য যে কুঁড়ে ঘর করা হয় তার ছাউনাটাই শুধু হয় খড় নইলে পাটখড়ির বাকিটুক শুধুই বাঁশ। বেড়ায় শুকনো পাতাওয়ালা যে বস্তুগুলো দেখছেন ওগুলো আসলে কঞ্চি।


তোলাঘরের প্রধান উপাদান বাঁশের চাটাই


পুকুর ঘাটে বাঁশের সিঁড়ি


পুঁইমাচাটা সম্পূর্ণ বাঁশের তৈরি

ছবি : সংগৃহিত
গৃহিনীর সবসময়ের সাথি কুলা। বাঁশ আর কুলাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে কিছু মানুষের জীবন-জীবিকা। আমাদের গাঁয়েও কয়েকঘর আছেন এই বাঁশ-শিল্পিরা। এদের একজনকে নিয়ে সচলে একটা গল্প লিখেছিলা— ডোম ও টিয়াপাখি।


ছবি : বাসরীয় ডট কম
রাখালীয়া বাঁশি কী দিয়ে তৈরি বলুন তো?


লাঠি খেলা দেখেননি এমন হতভাগা সচল কে কে আছেন?
--------------------------------------------------------
এই সিরিজের অন্য পোস্টগুলো—
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-১ : শিয়ালকাঁটা
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-২ : ভাঁটফুল
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-৩ : কালকসুন্দা / কালকসিন্দা
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-৪ : আকন্দ
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-৫ : আশশেওড়া
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-৬: কচুরিপানা
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-৭ : বৈঁচি
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-৮ : শেওড়া
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-৯ : শিমুল
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-১০ : ভেরেণ্ডা / কচা
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-১১ : হাতিশুঁড়
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-১২ : বট
বাংলার গুল্ম-তরু-লতা-১৩: শিয়াকুল


মন্তব্য

ফ্রুলিংক্স এর ছবি

এইরকম মেঠোপথ দিয়ে আমিও প্রাইমারী, সেকেন্ডারী স্কুল শেষ করেছি। পুকুরের চারপাশে ছিলো বাশের ঝাড়। শীতের সময় কতো না বকা দিতাম বাশঝাড়কে পানি ঠান্ডা করে দেওয়ার জন্য। বাড়ির চর্তুদিকে শত-শত বাশ গাছ। শীতের সময় নতুন বাশের ঠুঙ্গা দিয়ে আগুন ঝালানো নিত্যদিনের খেলা।

এরকম মেঠোপথে ছবি দেখলেই মান খারাপ হয়ে যায়।

বাশের ফুল অনেকবারই দেখেছি।
লেখা+ছবি বরাবরের মতো ভালো হয়েছে।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ ফ্রুলিংক্স
কী নাম রে আপনার লিখতে গিয়ে কলম ভেঙে যায় (থুক্কু, কিবোর্ড ভেঙে যায়)

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

স্পর্শ এর ছবি

বাঁশের ফল প্রথম দেখি বান্দরবান গিয়ে। ফল আসার পরে পুরো ঝাড় মরে যায়। বাঁশের ফুল দেখারও সৌভাগ্য হয়েছে।
বরাবরের মতই পোস্টটা ভালো লাগলো। আপনাদের গ্রামটা সুন্দর।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ
আসলেই আমাদের গ্রামটা সুন্দর। এক দিকে ইছামতী, তিনটা বিল একটা বাওড় আমাদের বিশাল গ্রামটাকে আগলে রেখেছে। কিন্তু গ্রামের মানুষগুলো ইদানিং কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। জামাতি মৌলবাদের ফাঁদে পা দিয়েছে সাধারণ মানুষ। অথচ একসময় এখানে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজেও জামোতের দেখা মিলত না। মন খারাপ

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

ছাইপাঁশ  এর ছবি

আপনার লেখা দেখলে হাতে সময় না থাকলেও অন্তত ছবি গুলো দেখে যাই। আপনাদের গ্রামের নাম কি? আমাদের গ্রামও ইছামতীর পারে।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

শ্যামকুড়
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার একেবারে সীমান্তে

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শেষ পর্যন্ত বাঁশ দিলেন?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

হ্যাঁ ভাই, দিলাম। হেফাজত যা শুরু করেছিল, কখন আবার সচলে আক্রমণ করে, তাই আগে থেকে বাঁশ জোগাড় করে রাখলাম।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

তারেক অণু এর ছবি
আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুঃখিত। বাঁশডলা আর বাঁশ দেওয়ার বর্ণনা বাদ দিয়ে বাঁশ বিষয়ক রচনা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়...

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

লীলেনদা, আমার তো জানা নেই। লুৎফুজ্জামান বাবর আর বাবুনাগরীরা বলতে পারবে ভালো। উনাদের একদিনের হাজতবাস মওকুফ করে বেতারায়তনের মুখোমুখি বসিয়ে বাঁশডলা আর বাঁশ দেওয়ার গল্প শোনার ব্যবস্থা করলে কেমন হয়?

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনি তো দুষ্প্রাপ্য/স্বল্পপরিচিত গাছপালা নিয়ে পোস্ট দেন, বাঁশ কি তার মধ্যি পড়ে? খাইছে

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আমার লেখার শিরোনামটা খেয়াল করুন ‘বাংলার গুল্ম-তরু-লতা’; এরমধ্য দুষ্প্রাপ্য-সুপ্রাপ্য সবই পড়ে। আমার প্রথম দিকের পোস্ট গুলোর ভেতরেই ছিল, আশশেওড়া, ভাটফুল, হাতিসুড়--এগুলোর কোনোটাই কিন্তু দুষ্প্রাপ্য নয়। সামনে দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদের পোস্ট আরো আসছে

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

কৌস্তুভ এর ছবি

কিডা কন! কলকাতায় এসে দেখান দেখি হাতিশুঁড় কত সুপ্রাপ্য! আর কয়টা লোক চেনে সেটাও দেখবেন!

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

হাঃ হাঃ, গুটি কয়েক উদ্ভিদ ছাড়া ঢাকা-কোলকাতা বা শহরগুলোতে কোনো উদ্ভিদই সুপ্রাপ্য নয়।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

হাঃ, হাঃ ঢাকা-কোলকাতা বা বংলার অন্য যেকোনো শহরে গুটিকয়েক উদ্ভিদ ছাড়া আর কোনটা সুপ্রাপ্য কৌস্তভদা?

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

কাজি মামুন এর ছবি

খুব উপভোগ্য একটা লেখা! খুব সুখপাঠ্য ! ছবি-কাব্য আর স্মৃতিকথার ছলে বাংলার অতি পরিচিত একটা উদ্ভিদের আদ্যোপান্ত জানিয়ে দিলেন পাঠকদের।

একটি প্রশ্নে মাথায় ঢুকেছে, না করে পারছি নাঃ অঙ্গজ বংশবিস্তার যেখানে নিয়মিত বৈশিষ্ট্য, সেখানে ঠিক কোন ক্ষেত্রে ফলের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে বাঁশ?

কৌস্তুভ এর ছবি

অঙ্গজ বংশবিস্তারে তো জেনেটিক ভেরিয়েশন আসে না, কেবল ক্লোন সৃষ্টি হয়। কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে গুষ্টিশুদ্ধু ঝাড়েবংশে মারা যাবে। তাই মাঝে মাঝে যৌনজনন করে ভেরিয়েশনের সৃষ্টি করা আরকি।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

মাঝে মাঝে যৌনজনন করে ভেরিয়েশনের সৃষ্টি করা আরকি।

, দারুন বলেছেন কৌস্তভদা।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

যখন বাঁশের ফল হয় অর্থাৎ ৫০ বছর পর পর, তখনই কিছু ফলজ বংশবিস্তার ঘটে।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।